অমরেন্দ্র চক্রবর্তী
হঠাৎ একদিন কলকাতার বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনার জনাব জাহাঙ্গীর সাদত সাহেব টেলিফোনে জানালেন বিজয় উৎসবের রজত জয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার আমাকে বিশেষ অতিথি রূপে যোগ দিতে আমন্ত্রণ করছেন ৷ আমি কি ১৪ ডিসেম্বর ঢাকা যেতে ও সেখানে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকতে রাজি? যাত্রা হবে আকাশপথে ৷
এই আমন্ত্রণটির জন্য আমি একুশ বছর ধরে প্রতীক্ষা করেছি ৷ আমার পণ ছিল আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের স্মৃতিসৌধ হবে, তারপরে আমি যাব ৷ একুশ বছরেও যা হল না তা কি আদৌ কখনও হবে? এদিকে আমার বয়স বাড়তে বাড়তে বিরানব্বই পার ৷ এ বয়সে কি বিমানযাত্রার ঝুঁকি নেওয়া যায়?
আমি সময় চেয়ে নিই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শের জন্য ৷ ভেবে দেখি আমার পণ রক্ষা হল কি না ৷ ইতিমধ্যে খবরের কাগজে প্রস্তাব করেছিলাম যে মুজিবরের স্মরণে যেন একটি স্তম্ভ নির্মাণ করা হয় ৷ তার নাম হবে ‘মুজিব মিনার’ ৷ শোনা গেল সেরকম কিছু হবে ৷ তবে মুজিবের নামে আপাতত সম্ভব নয় ৷ এটাই আমার পক্ষে যথেষ্ট ৷
ডাক্তার মত দিলেন ৷ কিন্তু আমার পুত্রকন্যা নারাজ ৷ তাদের আশঙ্কা ঢাকায় আমাকে নিয়ে যে টানাহ্যাঁচড়া হবে, আমার স্বাস্থ্যের পক্ষে সেটা ভালো নয় ৷ আমার ভাই সুব্রত তা শুনে আমাকে অভয় দেয় ৷ সে আমার সঙ্গে যাবে, ও আমাকে সাবধানে রাখবে ৷ মাত্র পঁচিশ মিনিটের বিমানযাত্রা ৷ ঢাকাই তো নিকটতম বিমানবন্দর ৷ ঝুঁকি কিসের, মনের জোরটাই আসল ৷
সুব্রত রায় ভারত সরকারের পাবলিক সেক্টরের Bridge and Roof-এর Managing Director ৷ তাকে নানা দেশে ঘুরতে হয় ৷ চট্টগ্রামের একটা কোম্পানি থেকে ঠিক সেই সময় তার আমন্ত্রণ ছিল, সেটা সে আমার খাতিরেই মুলতুবি রাখে ৷ স্টেট গেস্ট হলে একইকালে প্রাইভেট গেস্ট হওয়া যায় না ৷
অন্যান্য বার আমার সঙ্গে যেতেন আমার স্ত্রী লীলা রায় ৷ এবার তিনি নেই ৷ কে আমাকে ঠিক সময়ে ঠিক ওষুধটি খাওয়াবে ৷ আমার চোখে ঠিক ড্রপটি দেবে ৷ এইসব কথা ভেবে আমি আমার বারো বছরের নিত্যসেবক অর্ধেন্দু মাইতিকে সঙ্গে নেওয়া স্থির করি ৷
এছাড়া আমার একজন সেক্রেটারির দরকার ছিল ৷ ঢাকায় আমার বহু সাহিত্যিক বন্ধুবান্ধব ৷ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য গৌতম রায়কে সঙ্গে নিতে চাই ৷ বাংলাদেশ সরকার আমার অনুরোধে আমাদের সবাইকে অতিথিরূপে গ্রহণ করেন ৷ তখন আমার আর পিছু হটবার জো থাকে না ৷
কিন্তু তা সত্বেও ছেলেমেয়েরা বলে সঙ্গে একজন ডাক্তার নিয়ে যেতে ৷ ডাক্তার বন্ধু ব্যস্ত মানুষ ৷ তিনি যেতে রাজি হন না ৷ কিন্তু একগাদা ওষুধের নাম লিখে দেন ৷ সর্দি, কাশি, জ্বরজারি, উদরাময়, কোষ্ঠবদ্ধতা, অনিদ্রা, রক্তের চাপ সব রকম সম্ভবপর আধি-ব্যাধির জন্য একপ্রকার চলন্ত ডাক্তারখানা বহন করতে হল মাত্র চারদিনের সফরে ৷ ফলে ছেলেমেয়েরা শান্ত ৷
তবে আমার ভয় ছিল বিমানকে নয় ৷ বিমানবন্দরের সিঁড়িকে ৷ সিঁড়ি ভেঙে উঠতে গেলে বুকে ব্যথা হতে পারে ৷ সুখের বিষয় দমদমের নবনির্মিত নেতাজি সুভাষচন্দ্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সিঁড়ির বদলে হয়েছে এসক্যালেটর ৷ প্রায় সত্তর বছর আগে লন্ডনে প্রথম এসক্যালেটরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ওঠানামা করেছিলাম ৷ ছড়াও লিখেছিলুম তা নিয়ে ৷ ভয়ের বদলে এল ফুর্তি ৷ সেই যে আমি ফুর্তি করে এসক্যালেটর দিয়ে ওপরে উঠলুম তারপর থেকে ফুর্তি করে বিমানে উড়লুম, ফুর্তি করে চারদিন চার রাত কাটিয়ে দিয়ে ফুর্তি করে ফিরে এলুম ৷ ডাক্তারখানা কোনও কাজে লাগল না ৷ তবে নিত্য নিয়মিত ওষুধ আগেকার মতো খেতুম বা চোখে লাগাতুম বৈকি ৷
কিন্তু বিজয় উৎসবের দিন ঠাসা প্রোগ্রাম ছিল তাই আমি দাড়ি কামানো বা স্নান করবার সুযোগ পাইনি ৷ সেকথা পরে ৷
চোদ্দই ডিসেম্বর ছিল শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ৷ আত্মসমর্পণের দুদিন আগে পাকিস্তানি হানাদারদের বাঙালি তাঁবেদাররা ঢাকার বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি থেকে ভুলিয়ে নিয়ে গিয়ে বধ্যভূমিতে নির্মমভাবে হত্যা করে ৷ এঁদের মধ্যে আমার চেনা শান্তিনিকেতনের প্রাক্তন ছাত্র মোফেজজল হায়দার চৌধুরী ছিলেন ৷ শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মরণে যে মূল অনুষ্ঠানটি হয় সেখানে যোগ দিতে হলে একদিন আগে ঢাকায় যাওয়ার প্রয়োজন ছিল ৷ কিন্তু সরকার তার ব্যবস্থা না করায় সেই অনুষ্ঠানটির পরেই অবশ্য পৌঁছই ৷
বলতে ভুলে গেছি যে এবারকার ঢাকা যাত্রা বাংলাদেশ বিমানে ৷ ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমানে নয় ৷ খুব ভালো লাগছিল বিমানে বাংলাভাষার ব্যবহার ৷ বিমানটি যত ছোট হোক না কেন বাঙালি পাইলট ও বিমানবালা তো আমার আপনজন ৷ একটা আত্মীয়তার ভাব অনুভব করি ৷
দুপুরবেলায় যাত্রা ৷ ওঁরা লাঞ্চ না দিয়ে একটা প্যাকেট দেন ৷ তাতে কেক-পেস্ট্রির সঙ্গে ছিল এক টিন কোকাকোলা ৷ সে কী! দেশটা কি মার্কিন মুলুক? সেই প্রথম, পরে বার বার মার্কিন প্রভাব লক্ষ করেছি ৷ আমাদের হোটেলটাই তো মার্কিন শেরাটন হোটেলমালার অন্যতম হোটেল ৷ এই আগে ছিল ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল ৷ বলা বাহুল্য, ফাইভ স্টার ৷ দশতলায় আমাদের আস্তানা ৷
জিয়া ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে শেরাটন হোটেল পর্যন্ত রাস্তা দেখলে মনে হয় প্যারিসের বুলভার্দে ৷ তেমনই প্রশস্ত, তেমন মসৃণ ৷ রাস্তা দিয়ে প্রাণপণ বেগে ছুটেছে অসংখ্য রিকশা, অগুনতি অটো, অগুনতি মোটরগাড়ি ৷ অটোর ঢাকনায় বিচিত্র বাহার ৷ রিকশারও হরেকরকম সাজ ৷ কলকাতার সঙ্গে মিল বলতে একটাই-ট্র্যাফিক জ্যাম ৷ আশ্চর্যের বিষয় ট্যাক্সি একটাও চোখে পড়ে না ৷ এখানে কলকাতার জিৎ ৷
রাস্তার দুধারেই অজস্র বিপণি ৷ আগে তো আমি বাংলা ভিন্ন অন্য কোনও ভাষার সাইনবোর্ড বা বিজ্ঞাপন লক্ষ করিনি ৷ এবার দেখছি ইংরিজিও আসরে নেমেছে ৷ আন্তর্জাতিক কারবারের ভাষা ইংরিজি ৷ বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক কারবারে অনেক দূর এগিয়েছে ৷ পাশ্চাত্য পোশাক তৈরি করে পাশ্চাত্য দেশে চালান দেয় ৷ আমেরিকাতেও তার খদ্দের রয়েছে ৷ আমার এক সাহিত্যিক বন্ধু এখন সাহিত্য ছেড়ে পোশাক তৈরি করে পাশ্চাত্য দেশে চালান করছেন ৷ শুনছি তাতেই আজকাল সহজে শ্রীবৃদ্ধি হয় ৷
আরও অনেকরকম ব্যবসা আছে, তাতেও প্রচুর মুনাফা ৷ দিকে দিকে বহুতল অট্টালিকা ৷ কোনও কোনওটা কলকাতার বহুতল অট্টালিকার চেয়েও উচ্চতর ৷ এসব তো একুশ বছর আগে দেখিনি ৷ এসব রাস্তাও তখন ছিল না ৷ কিংবা থাকলেও এত বেশি নয় ৷ ঢাকার এটা একটা নতুন সংযোজন ৷ বলা যেতে পারে নয়া ঢাকা ৷ এখানে বড়লোকের বসতি ৷ বড়লোকরাও নয়া বড়লোক ৷ কলকাতায় এমন বড়লোক নিশ্চয়ই আছেন ৷ কিন্তু এমন তাড়াতাড়ি বড়লোক নন ৷ ঢাকা এখন যেন City of Palaces, হ্যাঁ খুব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ৷
আমার ঢাকা ভ্রমণ এবার নয়া ঢাকাতেই সীমাবদ্ধ ৷ পুরনো বড়জোর রমনা রেসকোর্স ৷ যার নাম এখন সোহরাবর্দী উদ্যান ৷ খালি মাঠ নয় ৷ বড় বড় গাছপালায় ভরা উপবন ৷
বিজয় উৎসবের দিন মূল অনুষ্ঠান হয়েছিল দূরে সাভারে ৷ যেখানে যেতে হলে আমাকে রাত চারটের সময় উঠতে হত ৷ সুব্রত উঠেছিল ৷ তাই ও সাভার ঘুরে এল ৷ আমার ঘুম ভাঙে দেরিতে ৷ তাই আমার সেখানে যাওয়া হয়নি ৷ পরে ঢাকায় কুচকাওয়াজেও আমি যাইনি ৷ মধ্যাহ্নে সোহরাবর্দী উদ্যানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতা স্তম্ভের ভিত্তি পাত করেন ৷ সেসময় আমি তাঁর ভাষণ শুনি ৷ এক বিরাট নেতা তাঁর সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে জয়ধ্বনি করে ৷ জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ দীর্ঘজীবী হোক ৷’ একজন বক্তা চমৎকার বাংলায় বক্তৃতা দিয়ে উল্লেখ করেন আমার কবিতার পংক্তি-
‘যতকাল রবে পদ্মা যমুনা 
গৌরী মেঘনা বহমান 
ততকাল রবে কীর্তি তোমার 
শেখ মুজিবর রহমান ৷’
সভাস্থল থেকে যেতে হয় বিদেশমন্ত্রীর মধ্যাহ্নভোজে ৷ ‘পদ্মা’ অতিথিশালায় ৷ সেখান থেকে যেতে হয় বঙ্গভবনে, রাষ্ট্রপতির দেওয়া সংবর্ধনায় যোগ দিতে ৷ সেখান রাষ্ট্রপতি বিচারপতি শাহাবউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে আলাপ হয় ৷ এরপর যাই প্রধানমন্ত্রীর নৈশভোজে ৷ সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ হয় ৷ বেগম তাজউদ্দিনের সঙ্গেও ৷
তার আগের দিনও একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়েছিল ৷ তাঁকে আমার ছড়াসমগ্র দিই ৷ তাতে ছিল তাঁর বাবার সম্বন্ধে ছড়া, অন্য একটিতে ছিল খালেদা ও হাসিনা উভয়ের উল্লেখ ৷
সেদিন সন্ধ্যাবেলায় একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারে মিলিত হই আমরা ভারত, জাপান, ইংল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড ও আমেরিকার অতিথিগণ ৷ প্রত্যেকেই মুক্তিযুদ্ধের সময় সহায়তা বা সমর্থন করেন ৷ একজন মার্কিন সাংবাদিক তখনকার রাজনীতির একটি গোপনীয় তথ্য প্রকাশ করেন ৷ তৎকালীন মার্কিন কনসাল জেনারেল পাকিস্তানি সেনার অত্যাচারের বিবরণ শোনান ৷ সোহরাবর্দী সাহেবের পুত্র রাশেদ এখন ব্রিটিশ নাগরিক ৷ তিনিও এসেছিলেন বিদেশি অতিথি হয়ে ৷ মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি প্রচার করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে ৷ একই পরিবারে দুই মত ৷ দুই মেরু ৷
ইতিমধ্যে বিদেশি অতিথি হিসাবে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, শান্তিময় রায়, ভবানী সেনগুপ্ত, মুচকুন্দ দুবে ও পি এন ধার ভারত থেকে নিমন্ত্রিত হয়েছিলেন ৷ আমরা চারজন সমেত মোট চব্বিশ জন ৷ মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলির প্রকৃত ইতিহাস এখনও লিপিবদ্ধ হয়নি ৷ শেখ হাসিনার বারবার আবেদন ছিল প্রকৃত ইতিহাস লিখতে ৷ আমিও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে একই আবেদন করলুম ৷
এই পঁচিশ বছরে বাংলাদেশ সরকারের শ্রেষ্ঠ কীর্তি হল সাভারের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ৷ সেটি না দেখে আমি ফিরতে পারছিলাম না ৷ শেষ দিন সুব্রতর বন্ধু হাসান সাহেবের সৌজন্যে সাভার ঘুরে আসি ৷ যেদিন সরকারি প্রোগ্রাম ছিল না ৷
সাভার থেকে ফিরেই কলকাতার জন্য সন্ধ্যার প্লেন ধরি ৷ আলো ঝলমল ঢাকা ৷ অন্ধকার গ্রামবাংলা ৷ মনে পড়ছিল, ‘পরো দীপমালা নগরে নগরে/তুমি যে তিমিরে তুমি সে তিমিরে’, কিন্তু এটা কি পশ্চিমবাংলার বেলায়ও সত্য নয়! ভালো কথা, বিজয় উৎসবের রাতে ঢাকার সর্বাঙ্গ ছিল অপূর্ব আলোকোজ্জ্বল ৷ যতদূর দৃষ্টি যায় ৷
ভ্রমণ করে খালি হাতে কি কেউ ফেরে? যাবার সময় সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলুম দশ হাজার টাকার ডলার ৷ তা দিয়ে দুই বৌমা, দুই মেয়ে ও এক নাতনির জন্য ঢাকার শাড়ি কিনে আমার ভার অর্ধেন্দুর ওপর দিয়েছিলুম ৷ সে তো ঢাকার কিছু জানে না ৷ তাই সাহায্য নিয়েছিল দাউদ হায়দারের ভাই মাকিদ হায়দারের ৷ ওদের দুজনের পছন্দ এত ভালো হয়েছিল যে শাড়ি পেয়ে সবাই খুশি ৷ শাড়ির চেয়েও মনোহর নকশি কাঁথা ৷ কোথায় পাব, কী করে টাকায় কুলোবে এসব ভেবে পাচ্ছিলুম না ৷ না চাইতেই, না জানাতেই উপহার পেলুম হাসান সাহেবের কাছ থেকে ৷ অনেক দিনের একটা সাধ পূর্ণ হল ৷
ঢাকার ভাষায় খাওয়াকে বলে খাওন ৷ যাওয়াকে বলে যাওন ৷ খাওনের জন্য যাওন ৷ বিশেষ করে পদ্মার ইলিশের ও কই মাছের ৷ বন্ধুজন নিমন্ত্রণ করে সেসব খাওয়ালেন ৷ সরকারি ভোজেও সুব্যবস্থা ছিল ৷ একটা পার্টিতে দই যা দিয়েছিল তা যেন অমৃত ৷ আরেক জায়গায় পিঠেপুলিও খেয়েছি ৷ এক মেয়েকে বললাম বাখরখানি এনে দিতে পার? সে এনে দিল একরাশ বাখরখানি ৷ সুব্রত কখনও বাখরখানি খায়নি, জানতও না সেটা কী ৷ অর্ধেন্দুর তো স্বপ্নই ছিল পদ্মার ইলিশ ৷
ওষুধপত্র আমার কোনও কাজে লাগেনি ৷ ডাক্তারখানা বয়ে নিয়ে যাওয়াই সার ৷ তবে একদিন দাড়ি কাটতে গিয়ে রক্ত বেরিয়ে পড়ে ৷ তখন হোটেলে খবর দিতেই তুলো, ডেটল ইত্যাদি নিয়ে আসে আমার স্যুইটের ভারপ্রাপ্ত তরুণী ৷ ‘কী নাম?’ ‘স্টেলা ৷’ সালওয়ার কামিজ পরা ৷ কন্যাটিকে জিজ্ঞাসা করি, ‘স্টেলা? স্টেলা কী’? ‘স্টেলা বিশ্বাস ৷ আমরা খিস্ট্রান’ ৷ কিন্তু সৈকত চৌধুরী নামক লেখকটি যে কী তা সাহস করে শুধাইনি ৷ একটু কৌশলে প্রশ্ন করি, ‘তোমার বাড়ি তো চাঁদপুরে’ ৷ উত্তর পাই ‘জি’ ৷ জানলুম যা জানার কৌতূহল ছিল ৷
ভ্রমণ মার্চ, ১৯৯৭
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন