অমরেন্দ্র চক্রবর্তী
এবছরের ১২ এপ্রিল পুণ্য কুম্ভক্ষেত্রে ঘুম ভাঙল মাইকের সরকারি ঘোষণায়-‘যমনা বাঈ জিনকী উমর সত্তর, যো জম্মুসে আঁয়ে হ্যাঁয়, আপনে সাথী সে বিছর কর, বহুত থকে হুয়ে খোয়া পায়া কেন্দ্রমে আপনে সাথীকা ইনতেজার কর রহে হ্যাঁয় ৷ সুরেশ, বিক্রম ইয়া উনকা কোই ভি সাথী উনকো ইঁহাসে লে যায়ে’ ৷ মিনিটখানেক পরেই আরেকটি ঘোষণায় জানা যায় কেরল থেকে আসা একটি দশ বছরের ছেলের হারিয়ে যাবার কথা ৷ কদিন ধরে সারাদিন, সারারাত সরকারি ঘোষণা কেন্দ্র থেকে এই ধরনের ঘোষণা প্রমাণ করে ভারতের প্রত্যেকটি কোণ থেকে লোক এসেছে কুম্ভমেলায় ৷ শুধু ভারত কেন, আমার সঙ্গে এই দুদিনে পরিচয় হয়েছে জার্মানির উলফগ্যাঙের, লস এঞ্জেলসের স্বামী-স্ত্রী জুটি জন আর নাটালিয়ার, ইটালি থেকে আগত একটি দলের, ইংল্যান্ডের ফটোগ্রাফার স্টুয়ার্টের ৷
নারদ-পুরাণে আছে যে ব্যক্তি হরিদ্বারে কুম্ভরাশিস্থ বৃহস্পতি ও মেষরাশিস্থ সূর্যযোগে (কুম্ভযোগে) স্নান করে সে সাক্ষাৎ বৃহস্পতিত্ব ও সূর্যত্ব প্রাপ্ত হয় ৷ এই মহাপুণ্যের লোভেই আপামর ভারতের সাধু-সন্ত আর সাধারণ মানুষেরা কুম্ভযোগে হরিদ্বারের গঙ্গায় স্নানার্থে আসেন ৷ যেসব উচ্চকোটির সাধকরা মানুষের সামনে আসেন না, তাঁরাও নাকি পূর্ণকুম্ভে স্নান করতে তাঁদের গুপ্ত আবাস ছেড়ে হরিদ্বারে আসেন ৷ আর সাধুসঙ্গ ও স্নানের পুণ্যলাভের আশায় আসেন লাখ লাখ পুণ্যার্থী ৷
হরিদ্বার শহরের বাইরে বাস থেমে গেল ৷ আর যাবে না ৷ সরকারি গাড়ি আর রিকশা ছাড়া অন্য যানবাহনের শহরে প্রবেশ নিষেধ ৷ হাজার হাজার যাত্রী বোঁচকা-বুঁচকি কাঁধে হেঁটে চলেছে হরিদ্বার শহর অভিমুখে ৷ আমিও সামিল হই সেই মিছিলে ৷
সারা হরিদ্বার বাঁশে বাঁশে ঘেরা আর তাঁবুতে তাঁবুতে ছাওয়া ৷ সব ফাঁকা মাঠে সার সার তাঁবু ৷ হর-কি-পৌড়ির অপর পারে নীলধারা আর চণ্ডী পাহাড়ের দিকটা বাঁশে বাঁশে ব্যারিকেড করা ৷ সব রাস্তাই একমুখী ৷ চারদিকে পুলিশের কড়া পাহারা ৷ রাস্তা একমুখী হওয়াতে যাত্রীদের ব্রহ্মকুণ্ড অঞ্চলে যেতে হাঁটতে হচ্ছে বেশি, কিন্তু উল্টো জনস্রোত না থাকায় ভিড়ের ধাক্কাধাক্কি নেই ৷ প্রতি কুম্ভে এই ধাক্কাধাক্কি আর হুড়োহুড়িতে পদদলিত হয়ে মারা যান বেশ কিছু তীর্থযাত্রী ৷
১৯৫৪-র কুম্ভে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে স্নান করাতে গিয়ে প্রশাসন সাধারণ স্নানার্থীদের স্নান কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ রাখে ৷ অধৈর্য স্নানার্থীদের ধাক্কাধাক্কিতে, ভিড়ের চাপে আর পদদলিত হয়ে প্রাণ হারান ১০০০ জন পুণ্যার্থী ৷ ১৯৮৬-র হরিদ্বারেই পূর্ণকুম্ভে উত্তরপ্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীকে স্নান করাতে গিয়ে আবার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ৫০ জন স্নানার্থী ৷ এইসব ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ১৯৮৯-এর প্রয়াগের কুম্ভেয় ভি আই পি স্নান বন্ধ করা হয় ৷ সেই নিষেধাজ্ঞা এবছরও বহাল ছিল ৷ ভি আই পি স্নানের জন্য ব্রহ্মকুণ্ড অঞ্চলে ছিল নিষিদ্ধ এলাকা ৷
১৪ জানুয়ারি, মকরসংক্রান্তি থেকে স্নান শুরু হয় ৷ প্রথম শাহী বা মহাস্নান ছিল ২৫ ফেব্রুয়ারি শিবরাত্রিতে ৷ ওইদিন ব্রহ্মকুণ্ড ও সংলগ্ন অঞ্চলে ২০ লক্ষ পুণ্যার্থী স্নান করেন ৷ দ্বিতীয় শাহী স্নান ২৮ মার্চ মৌনি অমাবস্যায়, ২৫ লক্ষ লোক স্নান করেন ৷ আর তৃতীয় তথা শেষ শাহী স্নান হয় ১৪ এপ্রিল ৷ সংবাদ সংস্থার দেওয়া হিসাব অনুসারে ওইদিন কুম্ভক্ষেত্রে মোট ১ কোটি পুণ্যার্থী স্নান করেন ৷
১৩ এপ্রিল রাত বারোটা থেকে লাখ লাখ মানুষের ঢল নামে হরিদ্বারের পথেঘাটে ৷ সবার লক্ষ্য হর-কি-পৌড়ি আর ব্রহ্মকুণ্ড ৷ এত লোকের পক্ষে ব্রহ্মকুণ্ডে স্নান সম্ভব নয় ৷ তাই অধিকাংশ স্নানার্থীকেই হর-কি-পৌড়ির কয়েক মাইলের মধ্যে আসতে দেওয়া হয়নি ৷ ১৩ ও ১৪ তারিখ হরিদ্বারে সমস্ত যানবাহন মায় রিকশা চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয় ৷ হাজার হাজার পুলিশ, র্যাফ, বি এস এফ ও ভলান্টিয়ার পথে নামে ভিড় সামলাতে ৷ সবার উদ্দেশ্য এক, দুর্ঘটনা না ঘটে ৷ কেননা, ২৮ মার্চের স্নান নিয়ে এক খণ্ডযুদ্ধ হয়ে গেছে সাধু আর পুলিশে ৷ আহত হয়েছে বিস্তর ৷ নিহত একজন পুণ্যার্থী ৷
২৮ মার্চ আগে থেকে তৈরি ক্রমানুযায়ী ও প্রথাগত নিয়ম মেনে নিরঞ্জনী আখড়ার সাধুরা প্রথমে স্নানে আসেন ৷ তাতে জুনা আখড়ার সন্ন্যাসীদের গোঁসা হয় ৷ তাঁরা স্নান করতে এসে তাঁদের স্নানের জন্য নির্দিষ্ট সময় যথেষ্ট নয় বলে ব্রহ্মকুণ্ড থেকে উঠতে অস্বীকার করেন ৷ পুলিশ এসে জোর করে তুলতে গেলে দাঙ্গা বাঁধে ৷ সাধারণ দাঙ্গাকারীদের মতো সন্ন্যাসীরা ভাঙচুর করেন ও অন্য আশ্রমে আগুন ধরিয়ে দেন ৷ পুলিশ-সাধুতে খণ্ডযুদ্ধ চলে ৷
তবে কুম্ভয় প্রথম স্নানের অধিকার নিয়ে এই দাঙ্গা নতুন নয় ৷ ১৭৬০ সালে অর্থাৎ প্রায় ২৩৮ বছর আগে গোস্বামী আর বৈরাগীদের দাঙ্গায় প্রাণ হারান ১৮,০০০ পুণ্যার্থী ৷ ১৭৯৬-এ ৫০০ স্নানার্থীর মৃত্যু হয়, ১৮১৯ সালে মারা যায় ৪৫০ নরনারী ৷
এই দাঙ্গার ভয়েই ১৪ এপ্রিল ছিল কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা ৷ ২৮ মার্চের গণ্ডগোলের ফলে আখড়ায় আখড়ায় প্রচণ্ড বিবাদ শুরু হয় ৷ তাই ১৪ এপ্রিলের স্নানে কোন আখড়া প্রথম স্নান করবে, পরবর্তী ক্রম কী হবে তার কোনও সর্বসম্মত সূচি তৈরি করা যাচ্ছিল না ৷ অগত্যা প্রশাসন ১৪ এপ্রিলের স্নানই নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন ৷ এই অভূতপূর্ব ঘোষণায় হতবাক হয়ে যান স্নানার্থে আসা লাখ লাখ পুণ্যার্থী ও সাধু সম্প্রদায় ৷ এই অচলাবস্থা কাটাতে একটানা বৈঠক চলে সাধুসমাজ আর প্রশাসনের ৷ ১৪ এপ্রিল রাত আড়াইটায় সমঝোতা সূত্র বেরোয় ৷ স্নানের বাধা ওঠে ৷ কিন্তু জুনা আখড়া স্নান বয়কট করেন ৷ আর শেষ মুহূর্তে নিষেধাজ্ঞা ওঠাতে সাধুদের বর্ণাঢ্য মিছিলের জৌলুস কমে যায় ৷ এত কম সময়ে সব জোগাড় সম্ভব করে উঠতে পারে না বিভিন্ন আখড়া ৷
অবশেষে ১৪ এপ্রিল বেলা ১২টা নাগাদ নিরঞ্জনী আখড়ার সাধুরা শোভাযাত্রা করে স্নানে আসেন ৷ তারপর মহানির্বাণ ও আনন্দ আখড়ার সন্ন্যাসীরা ৷ যদিও শোভাযাত্রায় ছিল না বাদ্যযন্ত্র, ছিল না জৌলুস, তবু নাগা সন্ন্যাসীদের দর্শনার্থে পুণ্যার্থীদের ভিড় জমে ৷ শেষে স্নানে আসেন বৈরাগী, উদাসীন ও অন্য আখড়ার সাধুরা ৷
হরিদ্বার স্টেশনের কাছে জুনা আখড়ায় সার সার তাঁবু পড়েছে ৷ হাজার কুড়ি নাগা সন্ন্যাসী এই আখড়ার অন্তর্ভুক্ত ৷ পুণ্যার্থীরা ভিড় করে দর্শনে মত্ত ৷
বৈরাগ্য আর ত্যাগের মূর্ত প্রতীক নাগা সন্ন্যাসীদের বিলাস-ব্যসন দেখে হতবাক হয়ে গেলাম ৷ আখড়ায় আখড়ায় নরম দামি কার্পেট পাতা ৷ রঙিন টিভি, টেবিল ফ্যান আর টু-ইন-ওয়ানের ছড়াছড়ি ৷ টেপে ভক্তিগীতি বাজছে ৷ এদিক-ওদিক ছড়ানো ছিটানো গাঁজার কলকে আর বিদেশী সিগারেট ৷ বাবা উদোম হয়ে, সারা গায়ে ভস্ম মেখে, পদ্মাসনে বসে টেবিল ফ্যানের হাওয়া খাচ্ছেন ৷ দেশী-বিদেশী পুরুষ-মহিলা ভক্তদের আনাগোনা আর উপঢৌকন প্রদান চলছে ৷ বাবা কলকেয় টান মেরে অর্ধ নিমীলিত চক্ষে বুঁদ হয়ে বসে আছেন ৷ হুঁশ নেই ৷
১৪ এপ্রিল রাত দুটো ৷ চলেছি হর-কি-পৌড়ির ব্রহ্মকুণ্ডের দিকে ৷ সারাটা রাত ধরে লাখ লাখ যাত্রী চলেছেন ব্রহ্মকুণ্ডের দিকে ৷ এক নিরবচ্ছিন্ন মনুষ্য-প্রবাহ ৷ রাস্তা দেখা যাচ্ছে না ৷ শুধু কালো কালো মাথা ৷ কে নেই সে মহামিছিলে-বুড়ো-বুড়ি, প্রৌঢ়-প্রৌঢ়া, যুবক-যুবতী, বাচ্চা, বিদেশী-দেহাতি ৷ মানুষের সে ঢল না দেখলে মনে হবে অবিশ্বাস্য ৷ সমস্ত রাস্তা একমুখী ৷ যে রাস্তায় যাওয়া সে রাস্তায় ফেরা নয় ৷ দুই বিপরীতমুখী জনস্রোত না থাকায় ধাক্কাধাক্কি কম ৷ কিছুদূর অন্তর পুলিশের ব্যারিকেড ৷ যদিও এই মিছিল মোটামুটি মসৃণ গতিতে এগোচ্ছে, তবুও পুণ্যার্থী মানুষ বড় অবুঝ ৷ সবারই তাড়া ব্রহ্মকুণ্ডে পৌঁছনোর ৷ বেলা দশটা থেকে ব্রহ্মকুণ্ডে সাধারণের স্নান নিষিদ্ধ ৷ তখন স্নান করবে সন্ন্যাসীরা ৷ তাই চেষ্টা চলছে পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে ব্যারিকেডের ফাঁকফোকর দিয়ে শর্টকাট পথে চলার ৷ ধৈর্য হারিয়ে পুলিশকে বেশ কবার মৃদু লাঠিচার্জ করে ভিড়কে নিয়ন্ত্রণে আনতে দেখলাম ৷
হর-কি-পৌড়ির ওপরে দুটি টাওয়ার করা হয়েছে ৷ একটিতে ভিড়ের ওপর নজর রাখার জন্য বসেছে ক্লোজ সার্কিট টিভি ৷ অন্যটি দেশ-বিদেশের সংবাদ মাধ্যমের ফটোগ্রাফারদের জন্য সংরক্ষিত ৷ এই টাওয়ারেই জুটে গেল একটু জায়গা ৷ আলোয় আলোয় হর-কি-পৌড়িতে দিন-রাতের পার্থক্য ঘুচে গেছে ৷ দূরে চিল্লা অরণ্যের ওপর শিবালিক পর্বতমালায় সূর্যোদয় হয় ৷ আলতারাঙা ভোরে সূর্যের তির্যক প্রথম রশ্মি এসে পড়ে ব্রহ্মকুণ্ডে স্নানরত নরনারীর ওপরে ৷
বেলা দশটায় বন্ধ হয় সাধারণের স্নান ৷ ব্রহ্মকুণ্ডকে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে প্রস্তুত করা হয় সন্ন্যাসীদের শাহী স্নানের জন্য ৷ বেলা বারোটা নাগাদ আসে প্রথম সন্ন্যাসী দল শোভাযাত্রা করে ৷ সে দলে নাগা সন্ন্যাসীদের আধিক্য ৷ ততক্ষণে ব্রহ্মকুণ্ডের এপারে আর চারপাশে হাজার হাজার দর্শনার্থীর ভিড় ৷ নাগাদের পর অন্য সম্প্রদায়ের সাধুরাও একে একে মিছিল করে স্নান করে গেলেন ৷ সাধুদের পিছনে পিছনে একই মিছিলে সামিল গৃহী ভক্তরাও স্নান করে গেলেন ৷ একেকটা আখড়ার স্নানের পর ব্রহ্মকুণ্ড ধুয়ে মুছে ঝকঝকে করে দেওয়া হয় পরের আখড়ার জন্য ৷ সন্ন্যাসীদের এই স্নান পর্ব চলল সন্ধে সাতটা পর্যন্ত ৷
হরিদ্বারে সন্ধে সাতটায় বেশ দিনের আলো ৷ হর-কি-পৌড়ির ঘাটে ঘাটে ঘুরে বেড়াই ইতস্তত ৷ রাজস্থানের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসা ভগৎরামের সঙ্গে দেখা ৷ সে এক বিশাল প্ল্যাকার্ড নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে হরিদ্বারের পথেঘাটে ৷ প্ল্যাকার্ডে দহেজ তথা পণবিরোধী স্লোগান ৷ আমেরিকার শিকাগো থেকে মিলার আর তাঁর বান্ধবী শ্যারন এসেছেন সৎগুরুর খোঁজে ৷ আর নিউজিল্যান্ডের মার্গারিটা এসেছেন এক বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে ৷ বিশাল প্ল্যাকার্ড বয়ে একদিনে চষে ফেলেছেন হরিদ্বারের পথঘাট ৷ প্ল্যাকার্ডে তাঁর হারিয়ে যাওয়া স্বামী জনের ছবি ৷ জন ভারতে এসে নিখোঁজ আজ তিন বছর ৷ কেউ খোঁজ দিলে দশ হাজার টাকা পুরস্কার ৷ ভারতের প্রত্যেক কোণ থেকে এক কোটির ওপর লোক এসেছে হরিদ্বারের কুম্ভে ৷ মার্গারিটার স্থির বিশ্বাস কেউ না কেউ ঠিক খোঁজ দেবে জনের ৷
কুম্ভমেলা ভাঙার মুখে ৷ মানুষের ঢল বিপরীতমুখী, রেলস্টেশন আর বাসস্টেশনের দিকে ৷ আমি এসেছিলাম কুম্ভমেলা দেখতে ৷ পুণ্যস্নান করা হয়নি ৷ কিন্তু কুম্ভে হরিদ্বারে এলেই যদি পুণ্য হয়, তবে আমার অর্জিত পুণ্যের পুরোটাই আমি মার্গারিটাকে দিলাম ৷ সার্থক হোক তাঁর অণ্বেষণ ৷
ভ্রমণ জুলাই, ১৯৯৮
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন