আদিম ডুয়ার্সের আধুনিক রূপকথা – সূর্য ঘোষ

অমরেন্দ্র চক্রবর্তী

আদিম ডুয়ার্সের আধুনিক রূপকথা – সূর্য ঘোষ

ডুয়ার্স পরিক্রমা শুরু নিউ জলপাইগুড়ি রেলস্টেশন বা শিলিগুড়ি থেকে ৷ অকৃপণ প্রকৃতি এখানে বিছিয়ে রেখেছে সবুজ চাদর ৷ সমান করে কাটা মায়াময় চায়ের বাগান, যত্রতত্র খরস্রোতা পাহাড়ি নদী বা ঝোরা, অসমতল ছোট ছোট টিলা, কখনও বা পাহাড়ি দিগন্ত, আকাশছোঁয়া ক্লাইম্যাক্স শাল-সেগুনে ঢাকা কখনও রোদ-ঢোকে-না এমন গা-ছমছমে জঙ্গল, হঠাৎ অনেক উঁচু থেকে দেখা বার্ডস-আই-ভিউ-এর মতো সবুজ উপত্যকা-সব মিলিয়ে ডুয়ার্স এক অনন্য অভিজ্ঞতা ৷ হিমালয়ান ফুট হিলস, ন্যাশনাল পার্ক, অভয়ারণ্য, নদী, ঝরনা, উপত্যকা, মাইল মাইল জোড়া চা-বাগিচা, চতুর্দিকে নীল পাহাড়ের বেষ্টনী, দারুণ রৌদ্রের দিনে ঝকঝকে তুষারচূড়া-বৈচিত্র্যে যেন অনিঃশেষ ৷ একশৃঙ্গী গণ্ডারের প্রিয় বিচরণভূমি গরুমারা ন্যাশনাল পার্কে বাইসন, হাতি, হরিণের মতো তৃণভোজীদের পাশাপাশি আছে অজস্র পাখির ঝাঁক ৷ আছে মাংসাশী লেপার্ডের দল ৷

কীভাবে যাবেন: যাওয়া খুব সহজ ৷ যাব মনে করলেই হল ৷ নিউ জলপাইগুড়ি যাওয়ার সাতশো উপায় ৷ দার্জিলিং মেল, কাঞ্চনকন্যা, কাঞ্চনজঙ্ঘা, তিস্তা-তোর্সা, কামরূপ ৷ রকেট বাসও প্রচুর ৷ ভূটান সরকার, সিকিম সরকার, নানা প্রাইভেট বাস ৷ কলকাতা থেকে ১৪ ঘণ্টায় শিলিগুড়ি ৷ তারপর উঠতে হবে বাসে ৷ ৫-৬ জনের দল হলে এবং ৫-৬ দিনের যাত্রা হলে একটা অ্যাম্বাসাডর বা মারুতি ভ্যান ভাড়া করে নেওয়া ভালো ৷ দিনপ্রতি ৬০০ টাকায় তেনজিং নোরগে টার্মিনালের কাছ থেকে ভাড়া পাওয়া যায় ৷ তেল-মবিল আলাদা ৷ ট্যুর সার্কিট হতে পারে এরকম: প্রথমদিন যাত্রা শুরু, দ্বিতীয়দিন শিলিগুড়ি থেকে সামসিং বা সুনতালেখোলা, সেখানে রাত্রিবাস ৷ তৃতীয়দিন গরুমারা, চালসা বা লাটাগুড়িতে রাত্রিবাস ৷ চতুর্থদিনও তাই ৷ জায়গা পেলে কেউ থাকতে পারেন মূর্তি বনবাংলোতেও, জীবন সার্থক হয়ে যাবে ৷ পঞ্চমদিন চাপড়ামারি দেখে চলে যাওয়া উচিত ঝালং হয়ে বিন্দু ৷ পঞ্চমদিন বিন্দুতে রাত্রিবাস ৷ ষষ্ঠদিন ফেরার পথে রাত্রিবাস ঝালং-এ ৷ সপ্তমদিন ঝালং থেকে শিলিগুড়ি হয়ে অষ্টমদিনে কলকাতায় ফেরা ৷ সবক্ষেত্রেই একটা কি দুটো দিন ছেঁটে ফেলার সুযোগ আছে ৷

শিলিগুড়ি থেকে সেবক রোড, করোনেশন ব্রিজ, মংপং, ডামডিম, মালবাজার হয়ে চালসা পর্যন্ত যেতেই হবে ৷ শিলিগুড়ি থেকে চালসার দূরত্ব ৬০ কিলোমিটার ৷ চালসা হয়ে কেউ কেউ চলে যেতে পারেন গরুমারা বা লাটাগুড়ি ৷ যাঁরা সামসিং যাবেন, তাঁদের চলে যেতে হবে অন্য রাস্তায় ৷ চালসা হিলটপে সিনক্লেয়ার্স রিসর্টকে পাশে ফেলে মেটেলি হয়ে সামসিংয়ের রাস্তা ৷ শিলিগুড়ি থেকে রোজ বাস ছাড়ছে সামসিংয়ের ৷ বিধান রোডের ডুয়ার্স বাসস্ট্যান্ড থেকে ৷ সকাল সাতটায়, দুপুর দুটোয় ৷ দূরত্ব ৮০ কিলোমিটার ৷ বাসে চার, গাড়িপথে তিনঘণ্টা ৷

সামসিং-সুনতালেখোলা

যে রাস্তা দিয়ে চালসা হিলটপে এসে পৌঁছেছি, সেই রাস্তা ধরেই আরও একটু এগিয়ে গিয়ে পড়বে মেটেলি ৷ দুপাশে অপূর্ব সব চা-বাগান-ইনডং, থার্বো ৷ মেটেলিতে চা খেয়ে উঠুন সামসিং ৷ পাহাড় কেটে পাকদণ্ডী রাস্তা ৷ বিকেলের মরা রোদে একটু যেন হিমেল হাওয়া ৷ সামসিং বনবাংলোর অবস্থান দুর্দান্ত ৷ চারদিকে লোমশ ভালুকের মতো পথজুড়ে পাহাড় ৷ ওপাশের পাহাড়ে রোদ পড়েছে, দেখে একটাই কথা মনে হচ্ছে-‘হাউ গ্রিন ইজ মাই ভ্যালি ৷’ সঙ্গে চলেছে মূর্তি নদী ৷ বনবাংলো ছাড়িয়ে আরও একটু এগিয়ে একটা খোলা জায়গা ৷ ওখানে এখন রোপওয়ে করে মৌচুকি থেকে কাঠ আসে ৷ মৌচুকি পর্যন্ত যাওয়ার উপায় ট্রেকিং ৷ শুনেছি সে নাকি এক রূপকথার জঙ্গল ৷ নেওড়া ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কের একটা অংশ পড়েছে এখানে ৷ বেশ কিছুটা গড়্গড়িয়ে নেমে একটা পাথরসঙ্কুল পাহাড়ি নদী ৷ তারই পাশে ঘন জঙ্গলের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ বন উন্নয়ন নিগমের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে ‘সুনতালেখোলা ওয়াইল্ডারনেস ক্যাম্প ৷’ বেশ ঘন জঙ্গল, বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা লাগবে ৷ গেট দিয়ে ঢুকে ছোট্ট ছোট্ট কয়েকটি কাঠের কটেজ ৷ একটা ছাতার তলায় গোল হয়ে বসে কয়েকটি কলেজের ছেলেমেয়ে ৷ ঘন জঙ্গলের মধ্যে, পৃথিবীর এক কিনারে, পাহাড়ের কোলে নদীর বেষ্টনে ঘিরে রাখা নিরালা জায়গাটাকে ভালোবেসে ফেলতে হবে তৎক্ষণাৎ ৷ শিলিগুড়ি থেকে সামসিং পর্যন্ত তো বাসই আসছে, তারপর ২ কিলোমিটার অরণ্যপথে হাঁটা ৷ অজস্র পাখির কলতান আর নদীর প্রবহমানতার গান ছাড়া যেখানে কোনও শব্দ নেই ৷ অরূপরাজ্যে একটা রাত কাটাতেই হবে, দুরাত কাটাতে পারলে আরও ভালো ৷ এখান থেকে ফেরার পথে দেখেছি সন্ধে নেমে এলো, কিন্তু অন্ধকার নয় ৷ প্রায় পূর্ণপ্রকাশিত চাঁদের আলোয় ভাসছে পাহাড়, চা-বাগান ৷ সামসিং বনবাংলোও ভারি চমৎকার ৷ চারদিকে পাহাড় ৷ বুনো জন্তুর জন্য চারদিকে কাঁটাতারের বেড়া ৷ বুকিং পেলে একটা রাত এই স্বপ্ন-আবাসে কাটানোও উচিত হবে ৷

চুকচুকি

সুনতালেখোলা থেকে চালসা ফিরতে ১৬ কিলোমিটার ৷ পরদিন থাকতে হবে গরুমারা বা লাটাগুড়ি ৷ গরুমারা ন্যাশনাল পার্ক আর চাপড়ামারি ওয়াইল্ড লাইফ স্যাঙ্কচুয়ারি দেখতে হলে ডে-ভিজিট পাস নিতে হয় লাটাগুড়ি থেকে ৷ লাটাগুড়িতেই আছে গরুমারা প্রকৃতি পরিচয় কেন্দ্র বা নেচার ইন্টারপ্রিটেশন সেন্টার ৷ সেখান থেকে ইস্যু করা হয় এই ডে-ভিজিট পাস ৷ গরুমারা ন্যাশনাল পার্কে ঢোকার রাস্তাও বাঁয়ে রেখে গাড়ি ছুটবে, আলো-ফুটি-ফুটি ভোরে দুপাশে জঙ্গলের মহীরুহদের দেখে কিছুটা আঁচ পাবেন অন্দরমহল কীরকম আদিম ৷ লাটাগুড়ি পৌঁছে দেখি গাড়ির মেলা ৷ হতাশ হতে হল ৷ আমরা পৌঁছেছি পৌনে ৬টায় ৷ তখন ৬টা থেকে ৮টার শিফটে ঢোকার পাস তো নেই-ই, ৮টা থেকে ১০টার সেকেন্ড শিফটেরও পাস নেই ৷ বিষণ্ণমনে ফিরছি ৷ অদূরেই দেখি রেঞ্জ অফিস ৷ যা থাকে কপালে, সেই ভোরবেলা ঘুম থেকে তুলে রেঞ্জ অফিসারকে অনুরোধ করি, কিছু একটা ব্যবস্থা করুন ৷ অমায়িক ভদ্রলোক গরুমারা রেঞ্জের অফিসার বিমল দেবনাথ ৷ বললেন, ‘আলাদা বা স্পেশ্যাল পারমিশন দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই ৷ আপনারা ‘ভ্রমণ’-এর লেখক, ফটোগ্রাফার-জঙ্গল দেখাবার কিছু একটা ব্যবস্থা তো করতেই হয় ৷ এক কাজ করুন ৷ ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করুন ৷ আমি তৈরি হয়ে রাউন্ডে যাব ৷ আপনারা আমার সঙ্গে, আমার জিপে চড়ে জঙ্গলে যাবেন ৷’ আর আমাদের পায় কে! এ তো মণিকাঞ্চন যোগ! রেঞ্জ অফিসারের জিপ লাটাগুড়ি পেরিয়ে গিয়ে আরেকটা জায়গা দিয়ে জঙ্গলে ঢুকল ৷ এখানে হয়েছে একটা নতুন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র-চুকচুকি ৷ জিপে বন্দুকধারী ফরেস্ট গার্ডরাও আছেন ৷ চুকচুকি ওয়াচ টাওয়ারের সামনে প্রথম জিপ থামল ৷ এবছর ১০ অক্টোবর উদ্বোধন হয়েছে এই ওয়াচ টাওয়ারের ৷ কাঠের তৈরি চমৎকার প্যাগোডা-টাইপ ওয়াচ-টাওয়ার ৷ বাইরেটা সবুজ, ভেতরটা উড-গ্লো ৷ তিনতলা সমান উঁচু চুকচুকি পক্ষী পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র ৷ সামনেই একটা সরু ফিতের মতো জলাশয় ৷ তার পাশে ঘাসভূমি, শুনলাম ‘সল্ট লিক’ও করা হয়েছে যাতে জানোয়াররা নুন চাটতে আসে ৷ ‘পরিযায়ী পাখিরা এখানে আসে, একটু এগিয়ে যান, কিছু পাখি এসেছে, দেখতে পাবেন,’ বললেন বিমলবাবু ৷ বেশ সুন্দর পায়ে চলা রাস্তা ওয়াচ টাওয়ারের ডানপাশে ৷ সামান্য এগিয়ে বেঞ্চ ৷ বসে বসেই দেখা গেল বেশ কিছু পানকৌড়ি ৷ তাদের ওপাশে আরেকটা ঝাঁক ৷ এসে গেছে হুইসলিং টিল ৷ হিমালয় থেকে সরালের ঝাঁকই প্রথম নেমে আসে ৷ শীতে নিশ্চয় আরও পাখি আসবে ৷ উল্টোদিকের সল্ট লিকে নুন চাটতে আসবে হরিণ, বাইসন, গণ্ডার ৷ একটু অভ্যস্ত হতে হবে তাদের ৷ মাছরাঙা প্রচুর ৷ নীল ঝলক ঝিকিয়ে উঠছে রোদ্দুরে ৷ চুকচুকি পক্ষী পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রকে ভালোবেসে ফেলতেই হবে ৷ প্রথম দর্শনেই প্রেম ৷ গরাতি এখন বন্ধ আছে ৷

যাত্রাপ্রসাদ

চুকচুকি থেকে রেঞ্জারের জিপে চড়ে এলাম গরুমারা বনবাংলো ৷ বাংলোর সামনেই রাইনো পয়েন্ট ৷ সামনে ঘোলা জলে লাল ইনডং নদী ৷ উল্টোদিকে ঘাসভূমি ৷ বিশাল সমতল ঘাসভূমি গণ্ডার, বাইসনদের প্রিয় রম্যভূমি ৷ পাকিডার্ম-রা এরকম জায়গাই ভালোবাসে ৷ রাইনো পয়েন্ট থেকে যাত্রাপ্রসাদে ৷

যাত্রাপ্রসাদে বসে চোখ ভরে যাবে ৷ উল্টোদিকে অদ্ভুতভাবে যেন বাতাসিয়া লুপের মতো বেন্ড নিয়েছে মূর্তি নদী ৷ তার ওপাশে বিস্তীর্ণ ঘাসভূমি ৷ এখানে সকাল ৬টার ট্রিপে এলে প্রায়শই একশৃঙ্গী গণ্ডার দেখা যায় ৷ অপূর্ব, মায়াবী এই বনাঞ্চল ৷ রোদ্দুর ঝিমঝিম করছে ৷ দূরের পাহাড় যেন মায়ার আবেশে সবেষ্টনে ঘিরে রেখেছে এই সবুজ বনাঞ্চলকে ৷ কোথাও কোনও শব্দ নেই ৷ সবকটি ইন্দ্রিয় তীক্ষ্ণ করে রাখুন ৷ ভুলেও ধূমপান করবেন না ৷ যখন-তখন তাঁরা দেখা দিতে পারেন ৷ বাইসন, গণ্ডার, হাতি-পাকিডার্মদের দলবল ৷ নিঃশব্দ বনভূমি, নিস্তব্ধ নদী ৷ হঠাৎই ঠিক ডানদিকে গাছের ওপর দূরবীনে ধরা পড়ল একটি শ্যেনপক্ষী ৷ শ্যেনদৃষ্টিতে সে বহতা জলের দিকে নজর রাখছে ৷ অর্জুনের পাখির চোখ দেখার মতোই এই শ্যেনপক্ষী জলে মাছের আনাগোনা দেখছে ৷ তুলবে একটাকে ৷ ভালো করে দেখে নিশ্চিত হওয়া গেল ক্রেস্টেড সারপেন্ট ঈগল ৷

গরুমারা জঙ্গলের মধ্যে তো গাড়িতে ঘুরতে ভেতরে চোখ চলে না! সবুজ মহীরুহরা জঙ্গল আঁধার করে নিথর দাঁড়িয়ে ৷ আকাশছেঁায়া শাল-সেগুনের সমাহার ৷ মধ্যে এত বেশি ঘন আন্ডারগ্রোথ বা স্ট্রে ভেজিটেশন, যে চোখ চলে না ৷ কাজেই চুকচুকি, রাইনো পয়েন্ট আর যাত্রাপ্রসাদ-এই তিন ওয়াচ টাওয়ারে এসেই শুধু দেখা যাবে প্রসারিত বনভূমি, প্রশস্ত আকাশ ৷ সম্ভব হলে একটা গোটা দিন-সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত-চুপ করে বসে থাকুন যাত্রাপ্রসাদে ৷ বন্যজন্তু দর্শন না-ই বা হল, প্রকৃতিই তো বনলক্ষ্মীর ডালা ভরে রেখেছে ৷ নদীর ওই অসম্ভব বাঁক ভাবা যায় না! যাত্রাপ্রসাদের পাশেই একটা গাছে বনবিভাগের সতর্কবাণী-‘এই স্থান অতিক্রম করে পর্যটকরা ভেতরে ঢুকবেন না ৷’ আকাশছেঁায়া মহীরুহ-ঘেরা জঙ্গলে আর পায়ে হেঁটে ঢোকা হল না ৷ রেঞ্জার সাহেব আমাদের যাত্রাপ্রসাদে রেখে বন্দুকধারী বনকর্মীদের নিয়ে ভেতরে কোথায় উধাও হয়ে গিয়েছিলেন ৷ ফিরলেন ঘণ্টাখানেক পর ৷ তখনও শ্যেনপক্ষী বসে ৷ উনিও আমাদের সঙ্গে একমত হলেন পাখিটি ক্রেস্টেড সার্পেন্ট ঈগলই ৷ বললেন, ‘বাব্বা! ভেতরে গিয়েই আমরা একশৃঙ্গীর মুখোমুখি!’

ফেরার পথে হঠাৎ দেখা রাজ বসুর সঙ্গে ৷ হেল্প ট্যুরিজমের সর্বজনপ্রিয় কর্ণধার ৷ ‘ভ্রমণ’-অনুরাগী রাজ বলল, ‘চলো আমাদের ক্যাম্পে ৷ ট্রাইবাল ড্যান্স দেখাব ৷’ ওর সঙ্গে ভিড়ে গেলাম ৷ গরুমারা-চালসার মাঝামাঝি গরুমারা জাঙ্গল ক্যাম্প করেছে হেল্প ৷ সেটা ছাড়িয়ে একটা ওরাওঁ গ্রামে ৷ চার্চ-সংলগ্ন মাঠে আদিবাসীদের নাচের আয়োজন ৷ সেখানে এক চমক ৷ দেখি সুচিত্রা মিত্র বসে ৷ প্রবাদপ্রতিম এই রবীন্দ্রগায়িকা ওরাওঁ শিল্পীদের ‘বাল্মীকি প্রতিভা’ গেয়ে শোনাচ্ছেন ৷ ‘ভ্রমণ’ থেকে এসেছি শুনে শিশুর মতো উচ্ছ্বসিত ৷ চিরপরিচিত মন্দ্র গলায় বললেন, ‘চমৎকার কাগজ ৷ দারুণ মানুষ তোমাদের সম্পাদক ৷ আমার ছোট ভায়ের মতো ৷ এতো সুন্দর কাগজ করেছেন, ভাবাই যায় না ৷’ আমরাও উদ্বেলিত ৷ ট্রাইবাল-ড্যান্স হল, ওরাওঁ শিল্পীরা নাচলেন-গাইলেন ৷ সুচিত্রা মিত্রের উদাত্ত গলায় ‘মধুর তোমার শেষ যে না পাই’ শুনতে শুনতে গরুমারা ভ্রমণ সম্পূর্ণ হল মধুরেণ সমাপয়েৎ-এ ৷

পাখির রাজ্য চাপড়ামারি

গরুমারা থেকে চালসা হয়ে চাপড়ামারি যাওয়া যায় ৷ কিন্তু কখনও তা করবেন না ৷ নিজস্ব যান ভাড়া করে যেতে হবে মূর্তি, খুনিয়া মোড় হয়ে ৷ গরুমারা থেকে চালসা ফেরার পথে বেশ কিছুদূর এসে ডানদিকে চলে গেছে মূর্তি-র রাস্তা ৷ সেই রাস্তা ধরে সামান্য এগোলেই মূর্তি বনবাংলো ৷ রিভারবেডে অনেকদূর পর্যন্ত ছড়ানো নুড়ি-পাথর ৷ তারপর প্রবহমান ফেনায়িত স্রোতস্বিনী ৷ চারদিক জঙ্গল-পাহাড়ে ঢাকা ৷ মূর্তি নদীর ওপর একটা সেতু ৷ তার ওপাশে ঘন জঙ্গল ৷ নদীর তীরে দাঁড়িয়ে হু-শ করে কেটে যায় সময় ৷ বাংলোর ব্যালকনিতে বসে থাকতে পারলে তো অর্ধেক নয়, পূর্ণ রাজত্ব ৷ সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত-মূর্তি থেকে দুটোই দেখবার জিনিস ৷ পূর্বরাগ বা অস্তরাগের খুনখারাপি রঙে রাঙানো আকাশ, জলে সেই লাল সিঁদুরখেলার প্রতিফলন, চারদিকের ঘনসবুজ পাহাড়-জঙ্গল-সব মিলিয়ে মূর্তি যেন স্ব-মহিমায় স্বমূর্ত ৷ বাংলো-বুকিং না মিললেও একটা ডে-স্পেন্ড করে যাওয়া উচিত হবে এইখানে ৷ সকালে চ্যাঁ-চ্যাঁ করে উড়তে থাকে টিয়া-চন্দনার ঝাঁক, নদীর বুকে দেখা মিলতে পারে দুয়েকটি রিভার-টার্ন-এর ৷ প্রচুর পাখি এ জঙ্গলে ৷ তেমনই তাদের সমস্বর কলকাকলি ৷ ব্রিজ থেকে দাঁড়িয়ে নদীর বাঁক দেখতে দেখতে ক্যামেরাধারীদের হাত নিশপিশ করবেই ৷ ব্রিজের ওপাশে দুর্ভেদ্য জঙ্গল ৷ সেই জঙ্গল চিরে গাড়ি ছুটবে ৷ এ জঙ্গলেই আমরা দেখলাম হলুদ রঙের বাঁকানো ঠোঁটের তিনটি ধনেশ পাখি ৷ ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে দেখতে পারেন আপনারাও ৷

গরুমারার জঙ্গল ভয় উদ্রেককারী ৷ মূর্তির জঙ্গল রহস্যময় ৷ কেউ যেন সবুজ কাজল পরিয়ে দিল চোখে ৷ দুপাশে রূপসী জঙ্গল, পথচিরে পিচরাস্তা ৷ জঙ্গলে জঙ্গলে পথ পেরিয়ে খুনিয়া মোড় হয়ে আবার জঙ্গলে ৷ এই জঙ্গল চাপড়ামারি ওয়াইল্ড লাইফ স্যাঙ্কচুয়ারির ফ্রিনজ এরিয়া ৷ বেশ কিছুটা গিয়ে বাঁদিকে চাপড়ামারির রাস্তা ৷ চাপড়ামারিতে ভিউ পয়েন্ট একটাই আর সেটা ঠিক বনবাংলোর সামনে ৷ গরুমারার মতোই ছিমছাম দোতলা বনবাংলো ৷ তার কম্পাউন্ডে বসে থাকতে হবে ৷ বসে দেখতে হবে সামনে অনতিদূরে একটি ওয়াটার-হোল ৷ পাশে স্যালাইন ট্রেল ৷ ওখানেই নুন চাটতে, জল খেতে জানোয়ারের আনাগোনা ৷

বনবাংলোর চৌহদ্দিটি বেশ ৷ চমৎকার কেয়ারি করা বাগান ৷ নানা সুদৃশ্য গাছ মাটিতে, টবেও ৷ জঙ্গলের গহনে এই বাংলোর অবস্থান ৷ চতুর্দিকে অসম্ভব ঘন অরণ্য এবং সেখানে পর্যটকের প্রবেশ নিষেধ ৷ পাখিদের স্বর্গরাজ্য বোধহয় চাপড়ামারি ৷ ওয়াটার-হোলের আশপাশে গলা উঁচু করে বসে আছে অনেক লার্জ ইগ্রেট ৷ তাই বলে শুধু বকের কলোনিই নয়, চতুর্দিকে উঁচু গাছে গাছে নানারকমের পাখি ডাকছে ৷ ডাক না বলে গানই বলা ভালো ৷ মিষ্টি শিসেলা গান ৷ ফরফর করে উড়ে এ-গাছ সে-গাছ করছে জাঙ্গল ব্যাবলারের দল ৷ টিয়ার ঝাঁকও দেখতে পাবেন ৷ ভাগ্য ভালো ছিল তাই দুটো গ্রিন পিজিয়ন (হরিয়াল) দেখতে পেলাম ৷ চৌকিদার জানাল, কাল রাতে ওয়াটার-হোলে গণ্ডার এসেছিল ৷ শুনশান, নিস্তব্ধ এক আদিম জঙ্গল ছেড়ে এগিয়ে চলুন ঝালংয়ের দিকে ৷

দেশ যেখানে শেষ

চাপড়ামারি থেকে ঝালং যাওয়ার রাস্তাটা একদম আলাদা ৷ মংপং-ডামডিম-মাল-চালসা-গরুমারা-লাটাগুড়ি, চেনা ডুয়ার্সের সঙ্গে এর কোনও মিল নেই ৷ দুপাশে জঙ্গল, মাঝখান দিয়ে রাস্তা ৷ মাঝেমধ্যে ছোট ছোট গোর্খা গ্রাম ৷ দেশলাই বাক্সের মতো ছোট ছোট ঘরবাড়ি ৷ যত ছোট বাড়িই হোক, বাড়ির সামনে একচিলতে বাগান ৷ সেখানে রকমারি রংবাহারি ফুল ৷

গাঁদা-জবায় বেশিরভাগই উজ্জ্বল লাল-হলুদ জার্সি ৷ আরও নানারকম, নানা রঙের লতানো গাছ, ফুলের জলসা ৷ এইসব সাতসতেরো দেখতে দেখতে হঠাৎ গাড়ি উঠবে পাকদণ্ডী ঘুরে ঘুরে অনেক ওপরে ৷ পাহাড়ের প্রায় মাথায় উঠে গাড়ি থামল ৷ এখান থেকে অনেক নিচে স্পষ্ট দেখা যায় ঝালং উপত্যকা ৷ ওই স্থানে দাঁড়িয়ে স্তব্ধ ৷ সবুজ উপত্যকার মধ্য দিয়ে এঁকেবেঁকে চলে যাচ্ছে জলঢাকা নদী ৷ বিদ্যুৎ পর্ষদের কর্মকাণ্ডের পাশে পিকচার-পোস্টকার্ডের মতো একটুকরো পাহাড়ি জনপদ-ঝালং, নদীর ওপারেই ভুটান ৷ জলঢাকা নদীই সীমান্তনির্দেশ, দেশ এখানে শেষ ৷ চোখজুড়োনো সবুজে মনরাঙানো সুন্দর ৷ এখানে, এই হিলটপে একটা রিসর্ট হলে জমে যাবে ৷ গাড়ি আবার গড়্গড়িয়ে নামল ৷ অসম্ভব বর্ণময় ঝালং বনবাংলো ৷ ঘর মাত্র দুটি ৷ দৈনিক ভাড়া ৪০০ টাকা ৷ কিন্তু বাংলোর সন্নিহিত বাগানটা দেখবার মতো ৷ লাল, নীল, হলুদ, সাদা জানা-অজানা ফুল ৷ সবুজ, মেরুন-নানারঙের পাতাবাহারি গাছ ৷ বাংলোর ঠিক পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে পাথরভরা এক নৃত্যপর নদী, নাম তার রংবু ৷ নদীর কলতানে, নদীর নাচ-গানে ঘুম ভাঙানোর, ঘুম পাড়ানোর মূর্ছনা ৷

ছোট্ট দোকানে মোমো আর চা খেয়ে নিজের খুশিমতো ঘুরে বেড়ানো যাবে এদিক-সেদিক ৷ শহরটা ছোট আর ঘিঞ্জি ৷ আশপাশে ঘোরাঘুরি করাই ভালো ৷ জলঢাকা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কর্মযজ্ঞ দেখে কেউ ফিরে যাবেন, কেউ দুদণ্ড বিশ্রাম নেবেন নদীতীরে ৷ যাঁর বুকিং আছে তিনি থাকবেন ৷ ঝালং থেকে আবার একটা পাহাড়ে ১৮ কিলোমিটার চড়াই উঠে বিন্দু ৷ মধ্যিখানে পড়ে প্যারেন নামে খুব সুন্দর একটা জায়গা ৷ জলঢাকা নদীর ওপারে খাড়াই পাহাড় উঠে গেছে ৷ ওসব ভুটানের, ভারতের নয় ৷ দেশের শেষপ্রান্তে এসে পৌঁছেছেন আপনি ৷ এখানে যুদ্ধ নেই, যুদ্ধের কালো ছায়াও নেই ৷ এত সুন্দর এই পৃথিবী, এত সবুজ এই উপত্যকা, এত অতিথি-বৎসল হাস্যমুখ রংবেরঙের পোশাক পরা মানুষজন-তবুও মানুষ যুদ্ধ করে?

ভ্রমণ ডিসেম্বর, ২০০১

সকল অধ্যায়

১. অর্ধশতাব্দীর আগের বদ্রীনাথ যাত্রা – প্রতাপকুমার রায়
২. মানস অভয়ারণ্য – সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়
৩. জলদাপাড়া অরণ্য – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
৪. জলের ধারে ঘর – নবনীতা দেব সেন
৫. জয়ন্তীর মহাকাল মন্দির – উষা সেন
৬. তাহিতি – হরপ্রসাদ মিত্র
৭. মার্কন্ডেয় গঙ্গার উত্স সন্ধানে – অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়
৮. কেদার বদ্রী – মৈত্রেয়ী চট্টোপাধ্যায়
৯. তেহরানি হয়রানি – অমিতাভ চৌধুরি
১০. শোনপুরের মেলায় – বরুণ দত্ত
১১. এলেম নতুন দেশে – কমলা মুখোপাধ্যায়
১২. মস্কো থেকে সাইবেরিয়া হয়ে পিকিং – গীতা বন্দ্যোপাধ্যায়
১৩. পাতাল-ভুবনেশ্বর – বিশ্বদীপ দত্ত
১৪. ইছামতীর মশা – শঙ্খ ঘোষ
১৫. নিকোবরের দ্বীপে – তিলকরঞ্জন বেরা
১৬. তিরতিরে নদী আর শাল জঙ্গলের দেশে – নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
১৭. আমার ভ্রমণ – মহাশ্বেতা দেবী
১৮. সুন্দরবন – হীরক নন্দী
১৯. ওপারবাংলার সুন্দরবনে – সমীর সেনগুপ্ত
২০. সাইকেলে পাঁচ বছরে ভূ-পর্যটন – ভূপর্যটক বিমল দে
২১. আঙ্কোর ভাট – প্রীতি সান্যাল
২২. হিমালয়ের সাতকাহন – ত্রিদিব বসু
২৩. স্বপ্নের পথেই যাওয়া যায় – মহাশ্বেতা দেবী
২৪. ছোট কৈলাস – সুভাষ দত্ত
২৫. বালতাল হয়ে অমরনাথ – প্রতাপকুমার রায়
২৬. মধ্য এশিয়া অভিযান – গৌতম ঘোষ
২৭. পথ হারিয়ে সিকিমের জঙ্গলে – রতনলাল বিশ্বাস
২৮. নতুন করে পাব বলে – বন্দনা সান্যাল
২৯. সেবার ব্রেকজার্নি করে – জয়া মিত্র
৩০. চন্দ্রভাগার উৎস চন্দ্রতাল সুর্যতাল – সুনীলকুমার সরদার
৩১. ওঙ্কারেশ্বর – বিশ্বদীপ দত্ত
৩২. সুন্দরবনে দুদিন – পবিত্র সরকার
৩৩. মণিমহেশ – কমলা মুখোপাধ্যায়
৩৪. দিকবিদিকে – শক্তি চট্টোপাধ্যায়
৩৫. তিস্তানদীর উৎসে – শরৎ ঘোষ
৩৬. পশ্চিমে হাওয়াবদল – মধুপর্ণা দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
৩৭. এক টুকরো নীল চাঁদ – সুমিত মুখোপাধ্যায়
৩৮. কালিম্পং থেকে তিব্বত – অরুণকুমার মুখোপাধ্যায়
৩৯. সাইলেন্ট ভ্যালি – শিবনাথ বসু
৪০. মির্জা শেখ ইতেসামুদ্দিনের বিলেত যাত্রা এবং আমি – নবনীতা দেব সেন
৪১. বক্সা বাঘ-প্রকল্প – বুদ্ধদেব গুহ
৪২. গানতোক থেকে ইয়ুমথাং – সুতপা ভট্টাচার্য
৪৩. ক্যামেরুন, আগ্নেয়গিরি ও গভীর জঙ্গলের খুদে মানুষেরা – প্রীতি সান্যাল
৪৪. ডুয়ার্সের দুয়ার এখন খোলা – সমরেশ মজুমদার
৪৫. ইউরোপে দিন কয়েক – পূর্ণেন্দু পত্রী
৪৬. রামচন্দ্রের বনবাসের পথ পরিক্রমা – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৪৭. আসমুদ্রককেশাস – অমরেন্দ্র চক্রবর্তী
৪৮. নিরলংকার ভ্রমণ – শঙ্খ ঘোষ
৪৯. চেঙ্গিস খানের দেশে – প্রতাপকুমার রায়
৫০. মিজোরামের নীল পাহাড়ে – দীপঙ্কর ঘোষ
৫১. সিন্ধুদুর্গ – বিশ্বদীপ দত্ত
৫২. জিম করবেটের জঙ্গলে – মণিদীপা বন্দ্যোপাধ্যায়
৫৩. থর মরুভূমিতে ট্রেকিং – শিবনাথ বসু
৫৪. মরোক্কো ভ্রমণ – হরপ্রসাদ মিত্র
৫৫. ভাগীরথী, রূপনারায়ণ, নোবেল প্রাইজ – নবনীতা দেব সেন
৫৬. গন্তব্য মাচুপিচু – প্রতাপকুমার রায়
৫৭. কই যাইত্যাছি জানি না – শঙ্খ ঘোষ
৫৮. পারাংলা অভিযান – সুনীলকুমার সরদার
৫৯. পুশকিন, মলদভা আর কচি পাতার বাঁশিতে মোত্সার্ট – প্রীতি সান্যাল
৬০. আমাদের ছোট নদী : পার্বতী – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
৬১. দেবলোকের পথে পথে – অশোক চক্রবর্তী
৬২. না-ভ্রমণের বৃত্তান্ত – আশাপূর্ণা দেবী
৬৩. এভারেস্টের পাদদেশে যাত্রা – কমলা মুখোপাধ্যায়
৬৪. নীল নদে পাঁচদিন – হরপ্রসাদ মিত্র
৬৫. বারাণসীর ঘাটের কথা – মণিদীপা বন্দ্যোপাধ্যায়
৬৬. বালফাক্রমের পাহাড়-জঙ্গলে – সুমিত মুখোপাধ্যায়
৬৭. গৌরীগঙ্গার উৎসব মিলাম হিমবাহ – পুরুষোত্তম বন্দ্যোপাধ্যায়
৬৮. মরুভূমির দিনরাত্রি – পবিত্র সরকার
৬৯. ঢাকা : একুশ বছর পর – অন্নদাশঙ্কর রায়
৭০. ফোকসোমদো হ্রদ – ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত
৭১. ইন্টারলাকেন থেকে ইয়ুংফ্রাউ – মণিদীপা বন্দ্যোপাধ্যায়
৭২. কালিন্দী গিরিবর্ত্ম – রথীন চক্রবর্তী
৭৩. একযাত্রায় ভোরামদেরও আর কানহা – হীরক নন্দী
৭৪. মদমহেশ্বরের ডোলিযাত্রা – কাজল দত্ত
৭৫. কেনিয়ায় পাঁচ অরণ্য – প্রতাপকুমার রায়
৭৬. কোনাডা থেকে রেভুপাল ভরম – রতনলাল বিশ্বাস
৭৭. চাঁদের দেশ লাদাখ – কমলেশ কামিলা
৭৮. বোকের তোভ, ইজরায়েল – নবনীতা দেব সেন
৭৯. বিষ্ণুপুর মুকুটমণিপুর – হরপ্রসাদ মিত্র
৮০. ডোকরিয়ানি বামক – অনিন্দ্য মজুমদার
৮১. তাওয়াং থেকে তাসি-চু জং – কমলা মুখোপাধ্যায়
৮২. মেক্সিকো শহরের একটি দিন – প্রীতি সান্যাল
৮৩. আকাশচূড়ায় অভিযান – অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়
৮৪. ভ্রমণের ঝঞ্ঝাট – শঙ্খ ঘোষ
৮৫. সারেঙ্গেটির জঙ্গলে – হরপ্রসাদ মিত্র
৮৬. এবারের কুম্ভমেলায় – চিন্ময় চক্রবর্তী
৮৭. অন্য পথের পথিক – বুদ্ধদেব গুহ
৮৮. গরুমারা জঙ্গলে – টুটুল রায়
৮৯. নিশীথ সূর্যের দেশ – প্রতাপকুমার রায়
৯০. সবুজ নামদাফাতে – সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়
৯১. পঞ্চকেদার – শিবনাথ বসু
৯২. গোঁসাইকুণ্ড – কমলা মুখোপাধ্যায়
৯৩. অমরকন্টক – হীরক নন্দী
৯৪. আদিম ডুয়ার্সের আধুনিক রূপকথা – সূর্য ঘোষ
৯৫. পার্বতী উপত্যকায় সার পাস – বিদ্যুৎ দে
৯৬. মিয়ানমার, ইরাবতীর সঙ্গে – পবিত্র সরকার
৯৭. রূপসী রিশপ – হীরক নন্দী
৯৮. হিমবাহের জন্মভূমিতে – শেখর ভট্টাচার্য
৯৯. ভাবা জোত পেরিয়ে কিন্নর থেকে স্পিতি – অনিন্দ্য মজুমদার
১০০. ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত – হরপ্রসাদ মিত্র
১০১. বক্সা দুর্গ – টুটুল রায়
১০২. সিন্ধু নদের ধারে – রতনলাল বিশ্বাস
১০৩. মেঘালয়ের দাউকি – সুমিত মুখোপাধ্যায়
১০৪. আমাদের ছোট নদী : লিডার – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
১০৫. লাসা – সমীর রায়
১০৬. ২ নম্বর লোভালোয়া স্ট্রিট – অমরেন্দ্র চক্রবর্তী
১০৭. অযোধ্যা পাহাড় – বিশ্বদীপ দত্ত

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন