অমরেন্দ্র চক্রবর্তী
বিভূতিভূষণের চাঁদের পাহাড়ে কীভাবে যাওয়া যায়, জানা নেই ৷ তবে নীল পাহাড়, আমাদের দেশেই ৷ দক্ষিণ মিজোরামের ভারত-মায়ানমার সীমান্তে ব্লু মাউন্টেন ন্যাশনাল পার্ক ৷ মিজোরামের এই অঞ্চলটি চিমতুইপুই জেলার মধ্যে ৷ লাই জাতির মানুষের সংখ্যা বেশি হওয়ার জন্য চিমতুইপুইয়ের প্রশাসনের কাজ চালিত হয় লাই অটোনোমাস ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের মাধ্যমে ৷ মৃদুভাষী, সরল স্বভাবের মিজোদের রাজ্যে উগ্রপন্থার কোনও স্থান নেই ৷ বরং উত্তর-পূর্ব ভারতের বর্তমানে সবচেয়ে শান্তির জায়গা মিজোরাম ৷
জানুয়ারির মাঝামাঝি পৌঁছলাম গৌহাটি, এখান থেকে শিলচর যাব ৷ বেসরকারি সংস্থা মিজোরাম ট্র্যাভেলসের রাত্রিকালীন বাস ভোর চারটেয় নামিয়ে দিল শিলচর ৷ বাসস্ট্যান্ডে দেখি প্রচুর অটো আর রিকশা জমায়েত হয়েছে অন্ধকারের মধ্যেই ৷ একটি অটো নিয়ে গেলাম বাসস্ট্যান্ড থেকে দশ মিনিটের দূরত্বে অবস্থিত মিজোরাম হাউসে ৷ ভোররাতে রাইফেল হাতে একজন গার্ড ছাড়া সেখানে আর কোনও জনমানুষ চোখে পড়ল না ৷ সাড়ে পাঁচটা নাগাদ আলো ফুটতে শুরু করলে খোঁজ করলাম একখানা ঘর পাওয়া যাবে কিনা ৷ একজন বাঙালি কর্মচারীর সহায়তায় দুটি গেস্টহাউসের একটিতে সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকার অনুমতি পেলাম ৷ কারণ সেদিনই শিলচর থেকে মিজোরামে প্রবেশের জন্য ইনারলাইন পারমিট সংগ্রহ করা প্রয়োজন ছিল ৷
মিজোরাম হাউসের লিয়াজঁ অফিসারের সহায়তায় বেলা বারোটার মধ্যে পারমিট হাতে পেয়ে রাস্তার বিপরীতে মিজোরাম ট্র্যাভেলসের কাউন্টার থেকে সেদিন সন্ধ্যার আইজলগামী বাসের টিকিট কাটলাম ৷ গেস্টহাউসে খানিকক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে সন্ধ্যা সাতটায় চাপলাম আইজলগামী বাসে ৷ সহযাত্রীদের অধিকাংশই মিজো ভাষায় কথা বলছেন ৷ বাস চলতে শুরু করলে অন্ধকারে চুপচাপ বসে গান শুনতে লাগলাম ৷ ঘণ্টাতিনেক পরে এক জায়গায় বাস থামলে সহকারী চালক সবাইকে খালি হাতে বাস থেকে নেমে যেতে বললেন ৷ ঠান্ডার মধ্যে নিচে নেমে দেখি মিজোরামের দ্বারপ্রান্ত ভাইরেংতে-তে পৌঁছে গিয়েছি ৷ ইতিমধ্যে মিজোরাম এক্সাইজ ডিপার্টমেন্টের জনাকয়েক লোক বাসে উঠে সবার মালপত্র পরীক্ষা করতে শুরু করেছেন ৷ মিজোরামে বিনা অনুমতিতে মদ নিয়ে প্রবেশ করা বেআইনি ৷ হঠাৎ দেখলাম ভেতর থেকে একজন অফিসার চালককে ডাকছেন ৷ একটি স্যুটকেশ সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তার মালিকের খোঁজ পড়েছে ৷ মালিক এক ঘরফিরতি সেনাবাহিনীর জওয়ান ৷ কৌতূহলী জনতার সামনে সেটি খোলা হলে দেখলাম ভেতরে তিনটি রামের বোতল ৷ প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র সঙ্গে থাকায় সে যাত্রায় তিনি বেঁচে গেলেন ৷ এক্সাইজ চেকপোস্ট পেরিয়ে আবার কিছুদূরে বাস থামল পারমিটের জন্য ৷ প্রত্যেক অ-মিজো যাত্রীর পারমিটের তথ্যাদি জমা করে বাস আবার অন্ধকার চিরে রওনা দিল রাজধানীর দিকে ৷ জানলার বাইরে অন্ধকার থাকলেও বুঝতে অসুবিধা হয়নি সরু পাহাড়ি রাস্তায় কী অসামান্য দক্ষতায় চালক বাস নিয়ে এগিয়ে চলেছেন ৷ কোলাসিবে রাস্তার ধারে অর্ডার হোটেলে রাতের খাবার-ভাত, ডাল, সরষেশাক সেদ্ধ, শুয়োরের মাংস আর পেঁয়াজ-লঙ্কা দিয়ে তৈরি চাটনি দিয়ে খেয়ে নিয়েছিলাম ৷
বিলাসবহুল নরম বাসের সিটে কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম কে জানে, ঘুম ভাঙল লোকের চেঁচামেচিতে ৷ বাইরে প্রচুর গাড়ির আলোর রোশনাই ৷ দোকানের গ্লোসাইনে ঝলমল করছে আইজল ৷ বাকি লেখা সবই রোমান হরফে, তবে পড়ে অর্থ উদ্ধার করতে পারলাম না ৷ মিজো-ভাষা রোমান হরফেই লেখা হয় ৷ বাস থেমেছে শহরের মাঝে জারকতে ৷ বর্তমানে শহরে বাস ঢুকতে না দেওয়ায় সমস্ত বেসরকারি দূরপাল্লার বাস আইজলের উপকণ্ঠে এসে থামে ৷ সব ট্যাক্সি মারুতি কার বা ভ্যান ৷ এক যুবক ড্রাইভার এগিয়ে এসে ইংরিজিতে গন্তব্যস্থল জেনে মালপত্র গাড়িতে তুলে নিয়ে আমাদের বসতে বলল গাড়িতে ৷ মিনিট দশেকের মধ্যে পৌঁছে গেলাম চালৎলাংয়ের ট্যুরিস্ট লজে ৷ ভোরে সবাই ঘুমিয়ে ছিল ৷ চৌকিদার ও একজন কর্মচারীকে ডেকে তুলে খাতা দেখে জানতে পারলাম আমাদের জন্য ঘর বুক করা আছে ৷ নিশ্চিন্ত হয়ে ট্যাক্সির ভাড়া মেটাতে গিয়ে দেখি সেখানে মিটার নেই ৷ যুবক বলল, যা খুশি দিন ৷ প্রায় পাঁচ কিলোমিটারের জন্য পঁচিশ টাকা ভাড়া দিয়ে এসে ঘরে ঢুকলাম ৷ সুন্দর সাজানো ঘর আর পরিষ্কার স্নানঘর দেখে ভালো লাগল ৷
একটু ঘুমিয়ে স্নান করে প্রাতরাশ সেরে হাঁটা লাগালাম ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টে পূর্বপরিচিত অফিসারের সঙ্গে দেখা করে ব্লু মাউন্টেন যাওয়ার ছাড়পত্র নিতে ৷ অসম্ভব তৎপরতায় সেখানকার কর্মীরা সমস্ত ব্যবস্থা করে পারমিটের এক কপি আমার হাতে দিয়ে বললেন যে সেদিনই তাঁরা ওয়্যারলেস মারফৎ খবর পাঠাচ্ছেন, যাতে ব্লু মাউন্টেন আর পথে নাথিয়াল এবং সাঙ্গাউতে আমাদের জন্য বন দপ্তরের বাংলো সংরক্ষণ করা থাকে ৷
সেদিন অনেকটা সময় হাতে পেলাম আইজল শহরটা ঘুরে দেখার জন্য ৷ শহরের মধ্যেই চিড়িয়াখানা কাম বোটানিক্যাল গার্ডেন ৷ আর দেখার কিছু গির্জা ও ধর্মীয় সৌধ ৷ এসব দেখে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংগ্রহ করে সন্ধ্যায় ফিরলাম ট্যুরিস্ট লজে ৷ রিসেপশনিস্ট এবং তাঁর বন্ধুর সঙ্গে কফির টেবিলে আড্ডা মারতে মারতে একসময় নৈশভোজের ডাক পড়ল ৷
পরদিন ভোর পাঁচটায় ঘুম ভাঙল এক ফরেস্ট অফিসারের ডাকে ৷ ভদ্রলোক নিজের জিপসি নিয়ে পৌঁছে দিলেন বাসস্ট্যান্ডে ৷ চেপে বসলাম নাথিয়াল বাজার বাসে ৷ চালক কিশোর ভালো ইংরিজি জানে, জায়গার নাম করে করে বর্ণনা দিয়ে যাচ্ছিল ৷ বাস থামল সেলিংয়ে, সকালের খাওয়ার জন্য ৷ আবার ভাত, লাইপাতা বা সর্ষেশাক ও মাংসের ঝোল দিয়ে খাওয়া সেরে যাত্রা শুরু হল ৷ বাসরাস্তার ধারে আগুন রঙের কমলালেবু ভর্তি গাছে ব্লু ম্যাগপাইয়ের রাজকীয় ভঙ্গিমায় উড়ে এসে বসা আর উপত্যকার ওপর ক্রেস্টেড সারপেন্ট ঈগলের ওড়া দেখতে দেখতে পৌঁছে গেলাম চিনছিপ ৷ স্থানীয় মেয়েরা পথের পাশে বসে নানারকমের ফল ও সবজি বিক্রি করছে ৷ সেরছিপ থেকে দারুণ সুস্বাদু কলা আর কমলালেবু নিয়ে নিলাম ৷
বেলা দেড়টায় পৌঁছলাম নাথিয়াল, বাসরাস্তা থেকে চারশো মিটার দূরে বনবাংলো ৷ ঘরের দুদিকের জানলা দিয়ে তাকালে দুরকম রূপ ৷ একদিকে প্রায় শহরতলি নাথিয়ালের জনবসতির শান্ত জীবন, বাচ্চারা অলসভাবে কাঠ কাটছে রাতে আগুন জ্বালাবে বলে; অন্যদিকে পাহাড়ের ঢালু গা নেমে গিয়ে অনেক নিচে উপত্যকায় মিশেছে ৷ সেদিকে গাছের গায়ে ঝুলছে সাদা আর বেগুনি অর্কিড ৷ সন্ধ্যায় দেখলাম সেখান থেকে উঠে আসছে দুজন মানুষ ৷ একজনের হাতে ছোট মাছধরার জাল, সঙ্গে কয়েকটি পাহাড়ি নদীর মাছ -অন্যজনের কাঁধে ঝুড়িতে শুকনো কাঠের বোঝা, তার ওপর সত্যিই কিছু কচুজাতীয় শাকের আঁটি ৷ জিজ্ঞাসা করে জানলাম সকালে গিয়েছিল নিচে তুইপুই নদীর ধারে ভুট্টার জন্য খেত তৈরি করতে, ফিরে এসেছে রাতের খাবারের জোগাড় করে ৷ বৃদ্ধ চৌকিদার সুইয়া আগে সেনাবাহিনীতে ছিলেন, ভালো হিন্দি বলেন ৷ ঘরে মালপত্র ঠিকঠাক করে রেখে রাতের আহারের ব্যবস্থা করে রেখে হোটেলে আমাকে নিয়ে গেলেন নাথিয়ালের রেঞ্জ অফিসারের সঙ্গে পরিচয় করাতে ৷ জানলাম একটি নদী পেরিয়ে মোট ৬৮ কিলোমিটার গাড়িতে চেপে যেতে হবে সাঙ্গাউ, ব্লু মাউন্টেন জাতীয় উদ্যানের রেঞ্জ অফিস ৷ কোনও সাধারণ যানবাহন পাওয়া যায় না, দুয়েকটি চাল-গমবহনকারী ট্রাক ছাড়া ৷
পরদিন সকালে ঘুম ভাঙল কাছেই বাড়িগুলিতে পোষা মোরগের ডাক শুনে-বেরিয়ে দেখি ঝলমলে রোদ ৷ বকুল ফুলের মতো ফুল ফোটা বড় একগাছে পক্ষীকূল সমাগত প্রাতরাশের জন্য ৷ নাথিয়ালের ফুড অ্যান্ড সাপ্লাইজ ইন্সপেক্টর জুয়ালার সহায়তায় একটি ট্রাকে যাবার ব্যবস্থা হল ৷ ট্রাক বলতে সেনাবাহিনীর পরিত্যক্ত ওয়ান টনার ৷ বেলা নটায় চাল চিনির বস্তা নিয়ে ঘণ্টায় দশ কিলোমিটার গতিতে ট্রাক চলতে আরম্ভ করল ৷ কিছুদূর গিয়েই লুংলেইগামী হাইওয়ে ছেড়ে আমরা অন্যরাস্তা ধরলাম ৷ একসময় পৌঁছলাম বহুশ্রুত কলোডাইন বা চিমতুইপুই নদীর পাড়ে ৷ মারবোট বলে পরিচিত বড় এক গাদাবোটে গাড়িসুদ্ধু আমরা সবাই চেপে বসলাম ৷ কাচের মতো জল, সরু পাহাড়ি খরস্রোতা নদী পেরোতে সময় লাগল দু-মিনিট ৷ ছোট ছেলেমেয়েরা ভেলা নিয়ে মাছ ধরছে বা বালি পারাপার করছে ৷
ভয়ঙ্কর এবড়ো-খেবড়ো পথে পৌঁছলাম দারজো ৷ সেখানে বেশ কয়েকটি বাড়ির সামনে দেখলাম প্রচুর বন্যজন্তুর খুলি আর পাখির পালক দিয়ে অলংকৃত করা রয়েছে ৷ ট্রাক থামিয়ে নেমে গিয়ে জিজ্ঞাসা করে জানলাম সেগুলি বেশ কয়েকযুগ আগে বর্তমান অধিবাসীদের পূর্বপুরুষদের শিকার করা ৷ পরের গ্রাম দক্ষিণ ভনলাইফাইয়ে উপত্যকাটি বেশ বড় ৷ স্থানীয় লোক চাষের কাজে ব্যস্ত-অনেকটা গ্রামবাংলার ছবি ৷ বৃদ্ধ চাষী ততোধিক বয়স্ক বলদ নিয়ে হালচাষ করছেন ৷ ট্রাকড্রাইভার দেখাল দূরে দুটি পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে দেখা যাচ্ছে ব্লু মাউন্টেনের একাংশ ৷ গ্রামে রাস্তার ধারের দোকানে চা খেয়ে রওনা হলাম ৷
সন্ধ্যার মুখে পৌঁছলাম সাঙ্গাউ ৷ রেঞ্জ অফিসার জামা পথে অপেক্ষা করছিলেন ৷ সঙ্গে করে নিয়ে গেলেন বাংলোয় ৷ সামান্য মশলায় রান্না করে নানাপ্রকার খাবার নিয়ে প্রস্তুত ছিলেন তাঁর স্ত্রী ৷ সারাদিনের খিদে নিয়ে অনেকখানি খেয়ে যাত্রার ক্লান্তিতে শুয়ে পড়লাম ৷
পরদিন সকালে রসদপত্র কিনে নিয়ে পোর্টার ঠিক করে রওনা হলাম নয় কিলোমিটার দূরের ফারপাকে বনবাংলোর উদ্দেশে, খাড়া চড়াই রাস্তা ৷ আড়াইঘণ্টা সময় লাগল ৷ পাহাড়ের মাথায় ফারপাক, পাঁচ কিলোমিটার দূরে সবচেয়ে কাছের গ্রাম থালৎলাং ৷ সেখান থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে কলোভাইন নদী, অন্য পারেই মায়ানমার ৷ প্রচুর মিজো লোকের আত্মীয়স্বজন সীমান্ত সংলগ্ন মায়ানমারের গ্রামগুলিতে থাকেন ৷ সেদিন রান্না ও অন্যান্য কাজকর্মের তদারকিতে অনেক সময় কেটে গেল ৷ কারণ ফারপাকে লোকজন থাকে না ৷ কেউ এলে চৌকিদার আর গার্ডরা আসে গ্রাম থেকে ৷ রাতে খেয়ে দেয়ে বাংলোর ঘরে ঘুমোতে গেলাম কলারড স্কোপস আউল আর নাইটজারের ডাকের প্রতিযোগিতা শুনতে শুনতে ৷
দেশের সবচেয়ে পূর্বে হওয়ায় এখানে খুব তাড়াতাড়ি সূর্যোদয় হয় ৷ ঠিক ভোর চারটে পঞ্চাশে মায়ানমারের পাহাড়ের মাথায় সূর্য উঠল ৷ ঘন নীল আকাশ যেখানে সবুজ অরণ্যে মিশেছে সেখানে পাহাড়ের রং নীলাভ দেখায় ৷ এই জন্যই বোধহয় নাম নীল পাহাড় ৷ স্থানীয় ভাষায় ফাংপুই ৷
লাল রডোডেনড্রনের ফুলের ভারে নুয়ে পড়া গাছের ওপর ফায়ার টেলড সানবার্ড আর ইউহিনার ঝাঁক কিচিরমিচির করছে ৷ মাঝে মধ্যে পালাচ্ছে গ্রে সিবিয়ার তাড়া খেয়ে ৷ বেলায় পাহাড়ের প্রান্তের কাছে গিয়ে কিছু গোরাল চোখে পড়ল ৷ তিনঘণ্টা হেঁটে পৌঁছলাম উদ্যানের মধ্যে অবস্থিত ফাংপুই পিকে, ২,১৫৭ মিটার, মিজোরামের সর্বোচ্চ জায়গা ৷ চারপাশের দৃশ্য দেখার জন্য ওয়াচটাওয়ার তৈরি করা হয়েছে ৷ সঙ্গে টর্চ নিয়ে এসেছিলাম দেরিতে ফিরব বলে ৷ সকালে মায়ানমারের পাহাড়ের মাথায় সূর্যোদয় দেখেছিলাম, বিকেলের শেষে দেখলাম বাংলাদেশের চট্টগ্রামের পাহাড়ে সূর্যকে অস্ত যেতে ৷ ফেরার পথে সন্ধেয় জঙ্গলে যাওয়ার অন্য অনুভূতি ৷ পায়ের শব্দে সচকিত বার্কিং ডিয়ারের চিৎকার করে পালানো আর মাথার ওপর গাছের ডালে ভীতসন্ত্রস্ত কালিজ ফেজ্যান্টের ডানা ঝটপটানি বেশ গা ছমছমে পরিবেশের সৃষ্টি করে ৷ আমার কাজ ছিল ব্লাইথস ট্র্যাগোপান (স্থানীয় ভাষায় ভাঙা)-এর খোঁজ করা ৷ তার দেখা পেয়ে চোখ সার্থক হয়েছে ৷
দু-সপ্তাহ ব্লু মাউন্টেনে থেকে মনে হল আবার ফিরতে হবে এই জায়গায় ৷ যেখানে সূর্যের আলো গাছের পাতার ফাঁক না পেয়ে মাটিতে পৌঁছতে পারে না, বনের পাখির ডাকে সকালে ঘুম ভাঙে, সতেজ হাওয়ায় শরীর মনও সবুজ থাকে ৷
গৌহাটি থেকে সরাসরি বাসে আইজল যাওয়া যায় ৷ সময় লাগে ১৮ ঘণ্টা ৷ কলকাতা থেকে ইনারলাইন পারমিটের ব্যবস্থা করে নেওয়া সব থেকে ভালো ৷ যোগাযোগের ঠিকানা:
Liason Officer
Mizoram House, 24 Ashutosh Chowdhury Avenue (Old Ballygunge Road)
Kolkata-700 019 % (033) 2475-6430/7034
আইজলে ভালো হোটেল রিৎজ, অহিংস, সাংছিয়া, ক্যাপিটাল গেস্টহাউস ৷ এগুলির দ্বিশয্যাঘর ২৫০-৫০০ টাকা ৷ বনবাংলো সংরক্ষণ আর ন্যাশনাল পার্কে প্রবেশের জন্য অনুমতি সংগ্রহের ঠিকানা:
The Chief Wildlife Warden
Chief Conservator of Forests Office, Principal Tuikhuatlang, Aizawl
Mizoram-796 001 % (0389) 25371
যাওয়ার সব থেকে ভালো সময় অক্টোবর থেকে মার্চ ৷ তবে এরজন্য আগে থেকে ব্যবস্থা করা প্রয়োজন ৷
ভ্রমণ আগস্ট, ১৯৯৮
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন