কোনাডা থেকে রেভুপাল ভরম – রতনলাল বিশ্বাস

অমরেন্দ্র চক্রবর্তী

পূর্বঘাট পাহাড় ভারতের পূর্ব উপকূল থেকে অনেকটাই দূরে ৷ তাই বঙ্গোপসাগরের উপকূল অঞ্চলে পাহাড় ও সাগরের মিলন হয়েছে খুবই কম অংশে ৷ বিশাখাপত্তনমের কাছাকাছি অঞ্চলে পূর্বঘাটের পাহাড় থেকে কয়েকটা শিরা এসে মিশেছে সাগরে ৷ সেখানেই সাগরের জল আছড়ে পড়ে পাহাড়ের গায়ে ৷ আর মাঝে মাঝেই তৈরি হয়েছে সুন্দর অর্ধচন্দ্রাকার সৈকত ৷ পর্বতপ্রেমী অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় পদযাত্রীরা এই অঞ্চলে পদযাত্রা করে খুবই আনন্দ পান ৷

২৭ জানুয়ারি, ২০০০ ভোররাতে করমণ্ডল এক্সপ্রেস থেকে নেমে পড়লাম বিশাখাপত্তনম ৷ স্টেশন চত্বর থেকেই ট্যাক্সি চেপে ৬০ কিলোমিটার উত্তরের কোনাডা পৌঁছলাম যখন, তখন সবে সকাল ৷ প্রাথমিক প্রস্তুতি কলকাতা থেকেই নেওয়া ছিল ৷ সৈকত পদযাত্রায় গাইড বা পোর্টার সংগ্রহের পাট নেই ৷ সাগরই পথ দেখাবে ৷ সামান্য প্রয়োজনীয় মালপত্র থাকবে নিজেদের পিঠে ৷ হালকা পোশাক পরে সাগর পাড়ে নেমে পড়লাম ৷ কোনাডা গ্রাম থেকে সৈকত খানিকটা দূরে, একটা খাড়ি পেরতে হবে ৷ ভাঁটার সময় জলের গভীরতা তেমন নয় ৷ শুরুতেই খালি পায়ে জলে নেমে পড়লাম ৷ শুরু হল এই পর্বের পথ চলা ৷ গোটা খাড়ি পেরতে হবে ৷ গোটা খাড়ি জুড়ে লোকজনেরা চিংড়ির পোনা ধরায় ব্যস্ত ৷ জল, বেলাভূমি, আবার জল ৷ এভাবেই প্রশস্ত খাড়িটি পেরিয়ে উঠে এলাম এক বালির ঢিবির ওপরে ৷ এটিকে টপকে নেমে এলাম সৈকতে ৷ উত্তাল সাগর, ইতস্তত ছড়িয়ে ছিটিয়ে কিছু পাথর আর ডানদিকে ধু-ধু বালিয়াড়ি-এই হল চলার সঙ্গী ৷ আঞ্চলিক লোকজনের চলাফেরা কদাচিৎ ৷ মাঝে মাঝে হাঁটতে হয় পাথরের ওপর দিয়ে ৷ কাছেপিঠে পাহাড় নেই ৷ অথচ পাথর আছে ৷ বালিয়াড়িতে এক ছোট্ট জেলেবসতি দেখতে পেয়ে উঠে এলাম পানীয় জলের আশায় ৷ গ্রামের নাম কানচেরি ৷ ধু-ধু বালিয়াড়ি, মাঝে কাছাকাছি তেমন বড় বসতি গড়ে ওঠেনি ৷ আবার চলা ৷ ডানদিকে শুরু হল পোড়ামাটি রঙের পাথুরে দেওয়াল ৷ নির্জনতার মাঝে এ জায়গাটি একটু অন্যরকম ৷ বাঁদিকে উত্তাল সাগর, পায়ের চলায় মাঝে মাঝে সমতল পাথুরে চাতাল, আর ডানদিকে ধারাবাহিক পোড়ামাটি রঙের দেওয়াল ৷ এমনই সুন্দর প্রকৃতির মাঝে হাঁটতে হাঁটতে দুপুর গড়িয়ে এল ৷ চাই পানীয় জল ৷ কাছেপিঠে গ্রাম নেই ৷ বছর ষোল আগে যখন এই অঞ্চলে ট্রেক করছিলাম, তখন এখানে পাহাড়ের গায়ে একটা ঝরনা পেয়েছিলাম ৷ দীপঙ্কর এগিয়ে গেল সেই ঝরনার খোঁজে ৷ হ্যাঁ, জল পাওয়া গেল ৷ লাল পাহাড় ধুইয়ে জল নামছে ৷ জলের পাশে পাথুরে কোটরে একটা ছোট্ট বট গাছ জন্মেছে ৷ জায়গাটি দারুণ ৷ এমন এক নির্জনতার মাঝে আমাদের দুপুরের বিরতি ৷ অনেকটা ভেতরে আছে তুরাও গ্রাম ৷ দুপুরের সাগরের রূপ অনন্য ৷ নীল ও পান্না সবুজের এক অদ্ভুত মিলন ঘটেছে ৷

বিরতির পর আবার চলা ৷ নেমে এলাম সৈকতে ৷ সেখানে বালি মেশানো পাথুরে অঞ্চল ৷ সোনালি বালির মাঝে কোথাও আবার বালির রং কালো ৷ ডানদিকে কাছাকাছি পাহাড় নেই ৷ কিন্তু মাঝে মাঝেই হাঁটতে হচ্ছে পাথুরে সৈকতের ওপর দিয়ে ৷ ঢেউ আছড়ে পড়ে পায়ের কাছে ৷ জল ছিটকে তৈরি হয় ফোয়ারা ৷ এমনই সুন্দর প্রান্তরের মধ্য দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে চলে এলাম বেলাভূমিতে ৷ প্রশস্ত সৈকত জুড়ে বেলাভূমি ধরে হাঁটতে হাঁটতে দিন শেষ হতেই গ্রামের সন্ধান করি ৷ উঠে এলাম আনারা গ্রামের মাঝে ৷ গ্রামবাসীরা থাকতে দিল স্কুলবাড়িতে ৷

ভোর হতেই নেমে এলাম প্রশস্ত সৈকতে ৷ বেলাভূমি ধরে জেলেনিরা ঝুড়ি মাথায় দ্রুত চলেছে দলে দলে ৷ ওরা মাছ নিয়ে চলেছে ভিমুনিপত্তনম ৷ যেন প্রথমে যাওয়ার প্রতিযোগিতা ৷ একটা খাড়ির পাশে পৌঁছে একটানা চলার ছন্দপতন ঘটল ৷ খেয়ার ব্যবস্থা আছে ৷ ওপারেই ভিমুনিপত্তনম ৷ ডাচ অধ্যুষিত অতীতের এই পোতাশ্রয়টি এখনও কিছু স্মৃতি বহন করছে ৷ সাগরপাড়ের স্মৃতিফলকগুলি বলে দেয় ভিমুনিপত্তনমের গোড়াপত্তন হয়েছিল বহু বছর আগেই ৷ পাহাড়ের কোলে অবস্থিত এ জায়গাটি খুবই মনোরম ৷ চারদিকে গাড়ির ছোটাছুটি এড়িয়ে আমরা আবার পাথুরে চাতালের ওপর দিয়ে হাঁটতে থাকি ৷ পাথরগুলি দেখে মনে হয় যেন কোনও গাছের গুঁড়ি পড়ে আছে ৷ পাথরের গায়ে জন্মেছে হলুদ ও সবুজ রঙের শ্যাওলা ৷ সেইসব পাথরের ওপর সাবধানে পা রেখে এগিয়ে চলি ৷ ডানদিকে খানিকটা দূরে ধারাবাহিক উঁচু পাথর ৷ সেই পাহাড়ের কোল ঘেঁসে ভিমুনিপত্তনম থেকে বিশাখাপত্তনম যাবার গাড়িপথ ৷ শুরু হল অর্ধচন্দ্রাকার সৈকত ৷ বেলাভূমি জুড়ে, লোকজনের জটলা ৷ নেংটি পরা কালো মানুষেরা টানা জাল টেনে তুলছে ডাঙায় ৷ মাছ উঠেছে সামান্য ৷ বরঞ্চ জালে ধরা পড়েছে বেশ কয়েকটা জেলিফিস ৷ ডানদিকে বালিয়াড়ি, মাঝে দু-চারটে জেলে ঝুপড়ি আর রয়েছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কিছু তালগাছ ৷ সেই অর্ধচন্দ্রাকার সৈকতের শেষ প্রান্তে উপারা গ্রামে পৌঁছে হল আমাদের দুপুরের বিরতি ৷ অর্থাৎ রান্না ও খাওয়ার পর্ব ৷ সেদিন দুপুরে জুটল গলদা চিংড়ি ৷ ভরদুপুরে সাগরের রং তীব্র নীলাভ ৷ সৈকত থেকে খানিকটা ভেতরে নোঙর করেছে নানা রঙের জেলে নৌকো ৷ সবই মোটরচালিত ৷ ঢেউয়ের তালে তালে নৌকোগুলি দুলছে আর এদিক ওদিকে সরে যাচ্ছে অনবরত ৷ আবার চলা ৷ ধারাবাহিক বালুবেলার মাঝে কখনও হাঁটতে হয় পাথুরে চাতালের ওপর দিয়ে ৷ অনবরত ঢেউ আছড়ে পড়ে সেইসব পাথরের ওপরে ৷ নোনাজলে পাথর ক্ষয়ে ক্ষয়ে তৈরি হয়েছে নানা কারুকার্য ৷ কোথাও তৈরি হয়েছে পোড়ামাটি রঙের এক সুন্দর বলয় ৷ ডানদিকে পর পর রয়েছে উঁচু পাহাড় ৷ সেই সুন্দর সৈকতে চলতে চলতে বেলা পড়ে এল ৷ সাদা রঙের পাথর ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে প্রশস্ত সৈকতে ৷ সূর্যাস্তের সোনালি আলোর ছোঁয়া তার ওপরে ৷ সামনে পাহাড়ের গায়ে কয়েকটা সাজানো গোছানো ঘর দেখে সহজেই বোঝা যায় ওগুলি হল ঋষিকোণ্ডার পর্যটন কটেজ ৷ আমরা ঢুকে পড়লাম তুফান বিল্ডিংয়ে ৷ পদযাত্রীদের থাকার জন্য সুন্দর আশ্রয়স্থল ৷

সৈকত জুড়ে ভোরের আলোর ছোঁয়া লাগতেই নেমে পড়লাম সৈকতে ৷ শুরু হল তৃতীয়দিনের হাঁটা ৷ পাথুরে এলাকা পেরিয়ে সোনালি সৈকত ৷ ডানদিকে পাহাড়ের ঢালে আছে গাড়িপথ ৷ ওপথে অনবরত গাড়ি চলাচল করছে ৷ সাগরনগর হয়ে খানিকটা এগিয়ে কৈলাসগিরি পাহাড় ৷ পাহাড়ের মাথায় পর্যটকদের বেড়ানোর জন্য আছে অনেক উপকরণ ৷ বিশাখাপত্তনম শহর আর বেশি দূরে নয় ৷ শহরের দূষিত বায়ু গ্রাস করেছে শহরের আকাশ, বাতাস আর সাগরকে ৷ সৈকত ক্রমশ নোংরা হয়ে উঠল ৷ শহরের সেই নোংরা সৈকত ধরে হাঁটতে ভালো লাগে না ৷ শহর শুরু হতেই উঠে এলাম বাস রাস্তায় ৷ অটোয় চেপে রামকৃষ্ণ বিচ হয়ে চলে এলাম ভাইজ্যাগ শিপইয়ার্ড ক্যানেলের জেটিতে ৷ পারাপারের জন্য ছোট লঞ্চ আছে ৷ এই ক্যানেলের সাহায্যে শিপইয়ার্ডের সঙ্গে সাগরের যোগাযোগ ৷ ক্যানেলটি পেরিয়ে চড়াই পথ ৷ একটানা সেই চড়াই পথটা শেষ হল ডলফিন নোজে ৷ বিশাখাপত্তনমের বাতিঘর এখানেই ৷ এখান থেকে দক্ষিণদিকে দেখা যায় বিশাখাপত্তনম শহর ও জাহাজ কারখানা ৷ সেই বাতিঘরকে বাঁদিকে রেখে নামার পথ উত্তরদিকে ৷ পাকা সড়ক ছেড়ে একসময় পায়ে চলা এবড়োখেবড়ো পথে নামতে থাকি ৷ সামনে দিগন্তবিস্তৃত বঙ্গোপসাগর ৷ সাগরপাড়ে সারি সারি তাল গাছ ৷ দক্ষিণদিকে স্পষ্ট হল ইয়ারডো গ্রাম ৷ গ্রাম ছাড়িয়ে সাগর ছুঁয়ে রয়েছে একের পর এক পাহাড় ৷ ওই পাহাড় পেরিয়েই আমাদের আগামীদিনের পথ ৷ নেমে এলাম গ্রামের মাঝে ৷ আগে দেখা এই গ্রামটি পালটে গেছে ৷ রাস্তাঘাট পাকা হয়েছে ৷ বিদ্যুৎ যোগাযোগ হয়েছে ঘরে ঘরে ৷ আর সেইসঙ্গে ঢুকে পড়েছে টেলিভিশন ৷ গ্রামের মধ্য দিয়ে নেমে এলাম সুন্দর সৈকতে ৷ প্রশস্ত বালুবেলায় ভিজে বালির ওপর দিয়ে হাঁটার চেষ্টা ৷ পথ চলার কষ্ট এখানেই কম ৷ একটানা সেই সুন্দর সৈকত শেষ হতেই সামনে দাঁড়িয়ে এক উঁচু পাহাড় ৷ পাহাড়টি পা ডুবিয়েছে সাগরের জলে ৷ সাগরের ঢেউ আছড়ে পড়েছে খাড়া পাহাড়ের গায়ে ৷ জল ছুঁয়ে যাওয়া সম্ভব নয় ৷ পাহাড়টি টপকাতে হবে ৷ একটা পায়ে চলা পথও রয়েছে ৷ ডানদিকে পাহাড়ের কোলে নারকোল গাছের ছায়ায় গড়ে উঠেছে একটা রিসর্ট ৷ নির্জনতার মাঝে এ জায়গাটি ভারি সুন্দর ৷ এবড়োখেবড়ো পাথর মাড়িয়ে ধীরে ধীরে উঠে এলাম পাহাড়ের ওপরে ৷ ঝোপঝাড়ে ঢাকা সেই পাহাড়ের ওপরে উঠে মূল পথ ছেড়ে বাঁদিক ঘেঁসে চলতে থাকি ৷ এক অস্পষ্ট পথ ধরে নেমে এলাম পাহাড়ে ঘেরা এক ছোট্ট সৈকতে ৷ ওখান থেকে বেরনোর জন্য দীপঙ্কর পাহাড়ের মাঝে একটা চিমনি ফাটলের সন্ধান পেয়ে গেল ৷ তারই মধ্য দিয়ে আশ্চর্যজনকভাবে বেরিয়ে এলাম ৷ হঠাৎই সেই পাহাড় পেরিয়ে চলে এলাম অর্ধচন্দ্রাকার বেলাভূমিতে ৷ বেলা পড়ে আসতেই ঢুকে পড়লাম দিব্বাপালেম গ্রামে ৷ গ্রামের ছেলেরা নিমেষের মধ্যে স্কুলঘর পরিষ্কার করে থাকার ব্যবস্থা করে দিল ৷ বিশাখাপত্তনম থেকে এখানে বাসেও আসা যায় ৷ গ্রামটি বেশ বড় ৷ দোকানপাট আছে ৷ ভোর হতেই গ্রাম লাগোয়া সৈকতে হৈ চৈ লেগেই থাকে ৷ মাছ ধরে নৌকো পারে ফিরতেই মাছ কেনার জন্য ভিড় জমায় ব্যবসায়ীরা ৷ সেই জটলা ছাড়িয়ে দাঁড়িয়ে পড়লাম এক ছোট্ট খাড়ির ধারে ৷ এক হাঁটু জল ভেঙে উঠে এলাম এক প্রশস্ত সৈকতে ৷ কিন্তু সেই সুন্দর সৈকত ধরে বেশিদূর এগনো গেল না ৷ সামনে খাড়া পাহাড় ৷ পাহাড়টিকে বাঁদিকে রেখেও গঙ্গাভরম পৌঁছনোর জন্য পায়ে চলা পথ আছে ৷ আমাদের চেষ্টা জলের ধারে ধারে পাথরের মধ্য দিয়েই এই বিপদসঙ্কুল জায়গাটি পার হতে হবে ৷ পাথরের ঢালে জলের ঝাপটা এড়িয়ে পেরিয়ে গেলাম সেই পাথুরে এলাকা ৷ নেমে এলাম এক অর্ধচন্দ্রাকার সৈকতে ৷ সুন্দর সৈকত ঘেঁসে সাগরের টলটলে জলে অল্প অল্প ঢেউ উঠেছে ৷ সামনে একটা টিলা পাহাড়ের ওপরে রয়েছে মন্দির ৷ সাগর পাড়ে রয়েছে বিশাখাপত্তনম স্টিল ফ্যাক্টরির সাজানো গোছানো বিশ্রামগৃহ ৷ বাঁধানো সিঁড়ি ভেঙে উঠে এলাম পাহাড়ের ওপরে মন্দির চত্বরে ৷ উত্তরদিকে দূরে দেখা যায় ডলফিন নোজ পাহাড় আর গঙ্গাভরম থেকে সেই পাহাড় পর্যন্ত রয়েছে এক বিশাল অর্ধচন্দ্রাকার সৈকত ৷ চোখ রাখি দক্ষিণদিকে ৷ সামনের পাহাড়টি জলের ধারে ধারে পেরনো যাবে না ৷ আরও দূরে রয়েছে একের পর এক অষ্পষ্ট পাহাড় ৷ গঙ্গাভরম থেকে জলের ধারে ধারে নয় ৷ পাহাড়টিতে বাঁদিকে রেখে ঢুকে পড়লাম এক সংরক্ষিত বনের মাঝে ৷ সাগর পাড়ের এই ছোট্ট বনাঞ্চলটি ভালো লাগল ৷ পায়ে চলা পথে বেরিয়ে এলাম সৈকতে ৷ সোনালি সৈকত, বালিয়াড়ি ও পর পর দুটো পাহাড় পেরিয়ে লোকজনের জটলা দেখে দাঁড়িয়ে পড়লাম ৷ জেলেরা বালির ওপর বসে জাল সারাচ্ছে ৷ কেউবা বুনছে নতুন জাল ৷ ওপরেই আপিগোন্ডা গ্রাম ৷ ওখানেই হল দুপুরের বিরতি ৷

আপিগোন্ডা থেকে কয়েক পা এগিয়ে একটা খাড়ি পেরিয়ে সামনে এক ছোট্ট পাহাড় ৷ তারপর একটানা সোনালি সৈকত ৷ ডানদিকে বালিয়াড়ির মাঝে গ্রাম নজরে পড়ে না ৷ তবে মাঝে মধ্যে কাজুবাগান দেখা যায় ৷ সামনে কংক্রিটের থামের ওপর একটা মোটা পাইপ লাইন রয়েছে ৷ সাগরের অনেকটা ভেতর থেকে জল এই পাইপের সাহায্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নার্সারিতে ৷ যেখানে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে চিংড়ির ডিম থেকে চিংড়ি পোনা ফোটানো হচ্ছে ৷ এই ধরনের প্রকল্পের ফলে সাগরতটে চিংড়িপোনা ধরার প্রবণতা অনেকটাই কমেছে ৷ বেলা পড়ে আসতেই ঢুকে পড়লাম এক জেলে বসতিতে ৷ গ্রামের নাম টিভি পার্লেম ৷ খুবই দরিদ্র গ্রাম ৷ রাতে আশ্রয় স্কুলের বারান্দায় ৷

সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে পড়লাম ৷ তালপাতার কুঁড়ে আর ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঝাউগাছের পিছন থেকে সূর্য উঠল ৷ সৈকতে জেলেদের ব্যস্ততা ছাড়িয়ে চলে যাই অনেক দূরে নির্জনে ৷ সামনে এক খাড়া পাহাড় ৷ এটিকে এড়িয়ে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব ৷ কিন্তু শান্তি, দীপঙ্কর ও ধনঞ্জয় চলল সেই খাড়া পাহাড়ে উঠতে ৷ পিছনে শুভময়ের ক্যামেরা ৷ কিছুক্ষণ রক ক্লাইম্বিং কসরতের পর আবার হাঁটা ৷ ভোরের সোনা রোদ্দুরে সৈকতকে আরও বেশি সুন্দর লাগে ৷ ডানদিকে বালিয়াড়ির মাঝে ঝাউবনের দেখা পেলেও গ্রাম নজরে পড়ল না ৷ দূরে বহু লোকজনের জটলা থেকে সহজেই বোঝা গেল ওখানে বড় গ্রাম আছে ৷ ওখানেই রয়েছে জনবহুল পুডিমাডাকা ৷ বাঁদিকে সৈকত বাঁক নিয়েছে ৷ আর সেই বাঁকের মুখে বালির ওপরে সারি সারি নৌকো ৷ তারপর সারিবদ্ধ নারকোল গাছের ছায়ায় জেলেদের ঝুপড়ি ৷ দুপুরের রান্না-খাওয়ার জন্য এমনই একটা খালি ঝুপড়িতে ঢুকে পড়লাম ৷ আমাদের ঘিরে বহু লোকজন বালিতে বসে পড়েছে ৷ দেখছে আমাদের কর্মকাণ্ড ৷ দুপুরের রোদ কমতেই নেমে এলাম সৈকতে ৷ চার টুকরো লম্বা কাঠ জুড়ে তৈরি ভেলা নৌকো ফিরছে গভীর সমুদ্র থেকে ৷ নৌকোয় লাগানো আছে কেরোসিন তেলচালিত মোটর আর রয়েছে নানারঙের পাল ৷ তাই গভীর সমুদ্র থেকে খুবই দ্রুত মাছ নিয়ে চলে আসছে পাড়ে ৷ মাছ নামানো, নৌকোকে ওপরে তোলা, মাছ বাছাবাছি, নিলাম ডাকা, সব মিলিয়ে চারদিকে দারুণ ব্যস্ততা ৷ পুডিমাডাকার ব্যস্ততা ছাড়িয়ে উঠে এলাম একটা ছোট্ট পাহাড়ের ওপরে ৷ ওপরে রয়েছে এক ছোট্ট মন্দির ৷ এখানেই মোহাবিষ্ট হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ি ৷ বিশাল সমুদ্রে নীল জলরাশির বুক চিরে লাল রঙের পালতোলা নৌকো ফিরছে দলে দলে ৷ পালের রং নীল, হলুদ, সাদা, বেগুনি, আবার কোনওটায় নানারঙের নকশা কাটা ৷ এ দৃশ্য দারুণ লাগে ৷ যেন দেখার আর ছবি তোলার শেষ নেই ৷ তারপর পা বাড়ালাম দক্ষিণদিকে ৷ সেখানে শুধুই নির্জনতা ৷ পায়ের কাছে ঢেউ ভাঙার শব্দ আর পাখিদের আনাগোনাই চলার সঙ্গী ৷ সেই নির্জনতার মাঝে একটা খাড়ির পাশে পৌঁছে দাঁড়িয়ে পড়লাম ৷ ভাঁটার সময় ৷ তাই জল কম ছিল ৷ এক হাঁটু জল ভেঙে আবার হাঁটা ৷ চলতে চলতে বেলা পড়ে এল, ডানদিকে মাঝে মাঝেই নজর রাখি ৷ কোথাও কোনও গ্রাম নেই ৷ আছে এক বিস্তীর্ণ জলাভূমি ৷ সামনে সাগরের জল ছুঁয়ে দাঁড়িয়ে একটা বড় পাহাড় ৷ এক সময় বালির ওপরে লোকজনের পায়ের ছাপ দেখে ডানদিকে ঢুকে পড়লাম ৷ গ্রাম আছে, তবে অনেকটা ভেতরে ৷ এক মেঠো পথ ধরে পৌঁছে গেলাম লোভাপালেম গ্রামে ৷ চলে এলাম তুফান হাউসে ৷ সবুজে ঢাকা এক উঁচু পাহাড়ের কোলে গ্রামটি খুবই সুন্দর ৷ সর্বত্রই গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় সব সমস্যাই মিটে যায় অনায়াসেই ৷

পরদিন সাগরপাড়ে সেই উঁচু পাহাড়টির পায়ের কাছে পৌঁছে গেলাম ৷ সরাসরি পাহাড়টি টপকে যাব, না জলের ধারে ধারে এগিয়ে যাব এই নিয়েই ভাবছিলাম ৷ এমন সময় দুটি আঞ্চলিক ছেলের দেখা পেলাম ৷ ওরা জানাল, জলের ধারে ধারে যাওয়া যায় ৷ কিন্তু পথ সহজ হবে না ৷ অতএব আমাদের ওটাই পছন্দ ৷ কখনও পাহাড়ের গায়ে গায়ে, আবার কখনও পাথর টপকে এগিয়ে চলি ৷ জল আছড়ে পড়ে বাদামি রঙের খাড়া পাহাড়ের গায়ে ৷ তখনই এগনো কঠিন হয় ৷ কোনওরকমে পা রাখার মতো জায়গা খুঁজে খুঁজে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি ৷ পাথরের গায়ে ভারি অদ্ভুত কারুকার্য ৷ পা হড়কালেই পড়তে হবে জলে আর তারপর ঢেউ তুলে আছাড় মারবে পাথরের গায়ে ৷ তবুও অ্যাডভেঞ্চারের নেশা সেই পথেই আমাদের নিয়ে চলে ৷ এক সময় সেই পথের শেষ হয় ৷ শুরু হল সোনালি সৈকত ৷ চলার গতিও যায় বেড়ে ৷ কিন্তু সেই চলা বেশিক্ষণ নয় ৷ সাগরপাড়ে একটা রুক্ষ খাড়া পাহাড় দাঁড়িয়ে ৷ এ পাহাড়ের ধারে ধারে জল ছুঁয়ে এগনো সম্ভব হল না ৷ অগত্যা এটিকে টপকানোর পথ খুঁজি ৷ পথ খুঁজে হয়রান হয়ে বসে পড়লাম এরই পদতলে ৷ আঞ্চলিক লোকজনের জন্য অপেক্ষা করি ৷ অনেকক্ষণ পর একটি মেয়ের দেখা পেলাম ৷ তার সামনে বেরোতেই সে তো ভয়ে কাঠ ৷ অনেক কষ্টে তার কাছ থেকে আকার ইঙ্গিতে জানা গেল ওঠার রাস্তাটি কোথায় ৷ কাছেই ছিল ওঠার পথটি ৷ কিন্তু নিচ থেকে বোঝার উপায় নেই ৷ সেই দেওয়াল ধরে চার হাত পায়ে উঠে এলাম পাহাড়টির ওপরে ৷ ওপর থেকে সাগরের অন্যরূপ ৷ দেখা যায় বহুদূর পর্যন্ত ৷ দিগন্তবিস্তৃত শান্ত জলরাশি ৷ এক সঙ্গে অনেক কিছু দেখার আনন্দই আলাদা ৷ পাহাড়টির দক্ষিণ ঢালের নামার পথটি এবড়োখেবড়ো পাথরের মধ্য দিয়ে ৷ সরাসরি নেমে এলাম বালুবেলায় ৷ ডানদিকে বাঁক নিতেই দূরে নজরে পড়ল মেয়েদের জটলা ৷ ওখানে কুয়ো রয়েছে ৷ পাশেই পাহাড়ের ঢালে রয়েছে একটা গুহা ৷ দুপুরের বিরতির জন্য এ এক আদর্শ জায়গা ৷ জায়গাটির নাম রেভাটারা ৷

সামনে এক ছোট্ট নদী মিশেছে সাগরে ৷ খেয়া নৌকোর ব্যবস্থা আছে ৷ তাই পারাপারের কোনও সমস্যাই নেই ৷ এছাড়াও বাঁশের বোনা বড় আকারের ঝুড়ির পিছনে পলিথিন চাদর মুড়ে তৈরি হয়েছে এক গোলাকার ভাসমান ঝুড়ি ৷ এই ঝুড়িতে চেপে একজন একজন করে পার হবার ব্যবস্থা আছে ৷ দক্ষিণদিকে একটানা সুন্দর সৈকত ৷ দূরে এক অস্পষ্ট পাহাড়কে লক্ষ্য করে এগিয়ে চলা ৷ সাগরবক্ষের এই পাহাড়টি ক্রমে স্পষ্ট হয় ৷ মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে এর সামান্যই যোগ আছে ৷ কাছেই রেভুপালভরম গ্রাম ৷ সাগরপাড়ে পুজোপাঠ দেখে দাঁড়িয়ে পড়লাম ৷ নারকেল ফাটানো হল, বলি দেওয়া হল একটি মোরগকে ৷ মাথাটি ছুঁড়ে দেওয়া হল সাগরের জলে ৷ বাকিটা প্রসাদ ৷ রক্ত মাখানো হল নতুন সুতোয় ৷ এই সুতো দিয়ে একটা নতুন জাল বোনা শুরু হবে, তাই এই পুজোপাঠের ব্যবস্থা ৷ সিঁড়ি ভেঙে উঠে এলাম পাহাড়ের ওপরে মন্দিরের মাঝে ৷ এ জায়গাটি অপূর্ব ৷ পূজারী খুবই সদাশয় ব্যক্তি ৷ এপথে সকল পদযাত্রী এখানেই রাত কাটায় ৷ এই মন্দিরের মাঝে, দক্ষিণদিকে সাগরের জল ছুঁয়ে আর কোনও পাহাড় দেখা যায় না ৷ ঝাউবনের পিছনে সূর্য মুখ লুকিয়েছে ৷ সাগরের জল আর সিক্ত বেলাভূমির রং তখন রক্তিম লাল ৷

এখান থেকে সূর্যোদয়ের দৃশ্যও অপূর্ব ৷ এক ঝলসানো আলোর মাঝে পালতোলা নৌকোর হারিয়ে যাওয়া দেখতে দারুণ লাগে ৷ এখানেই শেষ হল এই পর্বের ছয়দিনে সৈকত পদযাত্রা ৷ রেভুপালম থেকে বাসে ফিরে এলাম বিশাখাপত্তনম ৷

ভ্রমণ ডিসেম্বর, ২০০২

সকল অধ্যায়

১. অর্ধশতাব্দীর আগের বদ্রীনাথ যাত্রা – প্রতাপকুমার রায়
২. মানস অভয়ারণ্য – সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়
৩. জলদাপাড়া অরণ্য – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
৪. জলের ধারে ঘর – নবনীতা দেব সেন
৫. জয়ন্তীর মহাকাল মন্দির – উষা সেন
৬. তাহিতি – হরপ্রসাদ মিত্র
৭. মার্কন্ডেয় গঙ্গার উত্স সন্ধানে – অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়
৮. কেদার বদ্রী – মৈত্রেয়ী চট্টোপাধ্যায়
৯. তেহরানি হয়রানি – অমিতাভ চৌধুরি
১০. শোনপুরের মেলায় – বরুণ দত্ত
১১. এলেম নতুন দেশে – কমলা মুখোপাধ্যায়
১২. মস্কো থেকে সাইবেরিয়া হয়ে পিকিং – গীতা বন্দ্যোপাধ্যায়
১৩. পাতাল-ভুবনেশ্বর – বিশ্বদীপ দত্ত
১৪. ইছামতীর মশা – শঙ্খ ঘোষ
১৫. নিকোবরের দ্বীপে – তিলকরঞ্জন বেরা
১৬. তিরতিরে নদী আর শাল জঙ্গলের দেশে – নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
১৭. আমার ভ্রমণ – মহাশ্বেতা দেবী
১৮. সুন্দরবন – হীরক নন্দী
১৯. ওপারবাংলার সুন্দরবনে – সমীর সেনগুপ্ত
২০. সাইকেলে পাঁচ বছরে ভূ-পর্যটন – ভূপর্যটক বিমল দে
২১. আঙ্কোর ভাট – প্রীতি সান্যাল
২২. হিমালয়ের সাতকাহন – ত্রিদিব বসু
২৩. স্বপ্নের পথেই যাওয়া যায় – মহাশ্বেতা দেবী
২৪. ছোট কৈলাস – সুভাষ দত্ত
২৫. বালতাল হয়ে অমরনাথ – প্রতাপকুমার রায়
২৬. মধ্য এশিয়া অভিযান – গৌতম ঘোষ
২৭. পথ হারিয়ে সিকিমের জঙ্গলে – রতনলাল বিশ্বাস
২৮. নতুন করে পাব বলে – বন্দনা সান্যাল
২৯. সেবার ব্রেকজার্নি করে – জয়া মিত্র
৩০. চন্দ্রভাগার উৎস চন্দ্রতাল সুর্যতাল – সুনীলকুমার সরদার
৩১. ওঙ্কারেশ্বর – বিশ্বদীপ দত্ত
৩২. সুন্দরবনে দুদিন – পবিত্র সরকার
৩৩. মণিমহেশ – কমলা মুখোপাধ্যায়
৩৪. দিকবিদিকে – শক্তি চট্টোপাধ্যায়
৩৫. তিস্তানদীর উৎসে – শরৎ ঘোষ
৩৬. পশ্চিমে হাওয়াবদল – মধুপর্ণা দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
৩৭. এক টুকরো নীল চাঁদ – সুমিত মুখোপাধ্যায়
৩৮. কালিম্পং থেকে তিব্বত – অরুণকুমার মুখোপাধ্যায়
৩৯. সাইলেন্ট ভ্যালি – শিবনাথ বসু
৪০. মির্জা শেখ ইতেসামুদ্দিনের বিলেত যাত্রা এবং আমি – নবনীতা দেব সেন
৪১. বক্সা বাঘ-প্রকল্প – বুদ্ধদেব গুহ
৪২. গানতোক থেকে ইয়ুমথাং – সুতপা ভট্টাচার্য
৪৩. ক্যামেরুন, আগ্নেয়গিরি ও গভীর জঙ্গলের খুদে মানুষেরা – প্রীতি সান্যাল
৪৪. ডুয়ার্সের দুয়ার এখন খোলা – সমরেশ মজুমদার
৪৫. ইউরোপে দিন কয়েক – পূর্ণেন্দু পত্রী
৪৬. রামচন্দ্রের বনবাসের পথ পরিক্রমা – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৪৭. আসমুদ্রককেশাস – অমরেন্দ্র চক্রবর্তী
৪৮. নিরলংকার ভ্রমণ – শঙ্খ ঘোষ
৪৯. চেঙ্গিস খানের দেশে – প্রতাপকুমার রায়
৫০. মিজোরামের নীল পাহাড়ে – দীপঙ্কর ঘোষ
৫১. সিন্ধুদুর্গ – বিশ্বদীপ দত্ত
৫২. জিম করবেটের জঙ্গলে – মণিদীপা বন্দ্যোপাধ্যায়
৫৩. থর মরুভূমিতে ট্রেকিং – শিবনাথ বসু
৫৪. মরোক্কো ভ্রমণ – হরপ্রসাদ মিত্র
৫৫. ভাগীরথী, রূপনারায়ণ, নোবেল প্রাইজ – নবনীতা দেব সেন
৫৬. গন্তব্য মাচুপিচু – প্রতাপকুমার রায়
৫৭. কই যাইত্যাছি জানি না – শঙ্খ ঘোষ
৫৮. পারাংলা অভিযান – সুনীলকুমার সরদার
৫৯. পুশকিন, মলদভা আর কচি পাতার বাঁশিতে মোত্সার্ট – প্রীতি সান্যাল
৬০. আমাদের ছোট নদী : পার্বতী – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
৬১. দেবলোকের পথে পথে – অশোক চক্রবর্তী
৬২. না-ভ্রমণের বৃত্তান্ত – আশাপূর্ণা দেবী
৬৩. এভারেস্টের পাদদেশে যাত্রা – কমলা মুখোপাধ্যায়
৬৪. নীল নদে পাঁচদিন – হরপ্রসাদ মিত্র
৬৫. বারাণসীর ঘাটের কথা – মণিদীপা বন্দ্যোপাধ্যায়
৬৬. বালফাক্রমের পাহাড়-জঙ্গলে – সুমিত মুখোপাধ্যায়
৬৭. গৌরীগঙ্গার উৎসব মিলাম হিমবাহ – পুরুষোত্তম বন্দ্যোপাধ্যায়
৬৮. মরুভূমির দিনরাত্রি – পবিত্র সরকার
৬৯. ঢাকা : একুশ বছর পর – অন্নদাশঙ্কর রায়
৭০. ফোকসোমদো হ্রদ – ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত
৭১. ইন্টারলাকেন থেকে ইয়ুংফ্রাউ – মণিদীপা বন্দ্যোপাধ্যায়
৭২. কালিন্দী গিরিবর্ত্ম – রথীন চক্রবর্তী
৭৩. একযাত্রায় ভোরামদেরও আর কানহা – হীরক নন্দী
৭৪. মদমহেশ্বরের ডোলিযাত্রা – কাজল দত্ত
৭৫. কেনিয়ায় পাঁচ অরণ্য – প্রতাপকুমার রায়
৭৬. কোনাডা থেকে রেভুপাল ভরম – রতনলাল বিশ্বাস
৭৭. চাঁদের দেশ লাদাখ – কমলেশ কামিলা
৭৮. বোকের তোভ, ইজরায়েল – নবনীতা দেব সেন
৭৯. বিষ্ণুপুর মুকুটমণিপুর – হরপ্রসাদ মিত্র
৮০. ডোকরিয়ানি বামক – অনিন্দ্য মজুমদার
৮১. তাওয়াং থেকে তাসি-চু জং – কমলা মুখোপাধ্যায়
৮২. মেক্সিকো শহরের একটি দিন – প্রীতি সান্যাল
৮৩. আকাশচূড়ায় অভিযান – অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়
৮৪. ভ্রমণের ঝঞ্ঝাট – শঙ্খ ঘোষ
৮৫. সারেঙ্গেটির জঙ্গলে – হরপ্রসাদ মিত্র
৮৬. এবারের কুম্ভমেলায় – চিন্ময় চক্রবর্তী
৮৭. অন্য পথের পথিক – বুদ্ধদেব গুহ
৮৮. গরুমারা জঙ্গলে – টুটুল রায়
৮৯. নিশীথ সূর্যের দেশ – প্রতাপকুমার রায়
৯০. সবুজ নামদাফাতে – সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়
৯১. পঞ্চকেদার – শিবনাথ বসু
৯২. গোঁসাইকুণ্ড – কমলা মুখোপাধ্যায়
৯৩. অমরকন্টক – হীরক নন্দী
৯৪. আদিম ডুয়ার্সের আধুনিক রূপকথা – সূর্য ঘোষ
৯৫. পার্বতী উপত্যকায় সার পাস – বিদ্যুৎ দে
৯৬. মিয়ানমার, ইরাবতীর সঙ্গে – পবিত্র সরকার
৯৭. রূপসী রিশপ – হীরক নন্দী
৯৮. হিমবাহের জন্মভূমিতে – শেখর ভট্টাচার্য
৯৯. ভাবা জোত পেরিয়ে কিন্নর থেকে স্পিতি – অনিন্দ্য মজুমদার
১০০. ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত – হরপ্রসাদ মিত্র
১০১. বক্সা দুর্গ – টুটুল রায়
১০২. সিন্ধু নদের ধারে – রতনলাল বিশ্বাস
১০৩. মেঘালয়ের দাউকি – সুমিত মুখোপাধ্যায়
১০৪. আমাদের ছোট নদী : লিডার – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
১০৫. লাসা – সমীর রায়
১০৬. ২ নম্বর লোভালোয়া স্ট্রিট – অমরেন্দ্র চক্রবর্তী
১০৭. অযোধ্যা পাহাড় – বিশ্বদীপ দত্ত

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন