নন্দ মহারাজের ছোট ভাই-এর নাম—নন্দন। ভদ্র, অংশু, তোককৃষ্ণ ইত্যাদি গোঠের মাঠে যারা কানুর নিত্য সখা, তারা সকলেই পিতৃব্য (কাকা) নন্দনের পুত্র। এরা সব একাধারে কানুর জ্ঞাতিভাই এবং অন্যদিকে তাঁর নিত্য পরিকর মণ্ডলীর অন্যতম কয়েকজন। নন্দনের সন্তান সন্ততির মধ্যে সবচেয়ে ছোট কন্যা অজয়া।
ফর্সা-ছিপছিপে চেহারার দাদাদের সাথে খেলতে খুব ভালোবাসে। অজয়া ভেবে পায় না ব্রজমণ্ডলে সবাই কেন তাকে অংশু তোককৃষ্ণ ও ভদ্রের বোন বলে। দাউ দাদা, কানু ভাইয়াও তো তাকে বোন বলেই ডাকে। তাহলে ওকি তাদেরও বোন নয়? তোককৃষ্ণ প্রায়ই ছোটবোনের সঙ্গে খুনসুটি করে। মধ্যে মধ্যে তাঁর চুলের গোছা ধরে টেনে দেয়। পরিবর্তে অজয়াও ভেংচি কাটে, কখনও বা জলের পাত্র থেকে জল নিয়ে ভাইয়ের গায়ে (তোককৃষ্ণ) ছিটিয়ে দেয়। এইভাবে চলতে থাকে ভাই-বোনের নিত্যমধুর কলহ-কলরব। কলহ-মারামারি করলেও ভাইয়া যে তাঁকে খুব ভালোবাসে তা অজয়া ভালো করেই জানে। বিশেষ করে ভাইয়ারা যখন কানু-দাউদাদাদের সঙ্গে গোচারণ করে ঘরে ফিরে আসে—তখন তাঁরা বন থেকে ছোট বোনের জন্য নানা রঙ-বেরঙের পাথরের টুকরো, ফলফুল আরও কত কী যে সংগ্রহ করে নিয়ে আসে, তা বলে শেষ করা যাবে না। বন থেকে ধেণুর পাল নিয়ে দাদাদের যখন ঘরে ফেরার সময় হয় তখন অজয়া অস্থির ভাবে পায়চারি করতে থাকে বাড়ির বাইরের প্রাঙ্গণে। কখনও বা দাদাদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য সে গ্রাম ছেড়ে বনের দিকেও রওনা দেয়। সারাদিন দাদারা মাঠে ধেণু চরায়, খেলা করে। বোন অজয়ার বাড়িতে একা একা ভালো লাগে না—তাই তাঁদের ঘরে ফেরার প্রত্যাশায় সে সারাদিন ছটপট করে। বিশেষ করে ভাইয়া কানু যখন বন থেকে ফিরে এসে তাঁকে কোলে তুলে নিয়ে আদর করে বলে, ‘বোন অজয়া, আজ তোর জন্যে অনেক রঙ-বেরঙের ফুল এনেছি। আয় আজ তোকে মনের মতো করে আমরা তোকে সাজিয়ে দিই।’ তখন অজয়ার সারামন প্রাণে যে কী আনন্দের হিল্লোল বয়ে যায়—তা সে কাউকে বলে বোঝাতে পারে না। শুধু হৃদয় দিয়ে অনুভব করে কানু ভাইয়ার পরশে মিশে আছে অনির্বচনীয় অমৃতের স্বাদ। কানু ভাইয়ের এই ছোঁয়াটুকু পাওয়ার জন্যই সে সারাদিন বন পথ পানে চেয়ে আকুলি বিকুলি করে। বন থেকে ফিরে এসে, কানুভাই সখাদের নিয়ে তাঁকে ফুল দিয়ে সাজাতে সাজাতে বলে—’অজয়া তুই দেবী। আয় তোকে বেদীতে বসিয়ে আমরা সবাই পূজা করি।’ দাদা ভদ্র অংশু এরাও বলে—’হ্যাঁ, বোন আমাদের দেবী বটে, তবে ছোট্ট দেবী।’ তা শুনে অজয়া বলে—”আমার বড় দাদারা সব দেবতা, আমি ছোট বোন, তাই ছোট দেবী।”
অজয়ার কথা শুনে সকলে হো-হো করে হেসে ওঠে। অজয়ার মনে বড় দুঃখ, দাদারা কেউ তাকে কোন কাজ করতে দেয় না। এমনকি তাঁর নিজের মা কুবলাও তাঁকে বাসনপত্র ধুতে দেয় না। ঘর ঝাড়ু দিতে দেয় না। অথচ তাঁর কত কাজ করতে ইচ্ছা করে। গোশালার গোবর জমে স্তুপ হয়ে গেলেও অজয়াকে গোবর পর্যন্ত স্পর্শ করতে দেওয়া হয় না। গোবর সরিয়ে পরিষ্কার করতে গেলেই মা নয়তো কোন দাদা ছুটে এসে বলবে—’অজয়া, তোর এই ছোট্ট ছোট্ট কোমল হাত কাজ করার যোগ্য নয়।’
দাউ দাদা দেখা হলেই বলে—’যা পেট ভরে কিছু খেয়ে আয়। না খেয়ে খেয়ে দিন দিন খুব রোগ পাতলা হয়ে যাচ্ছিস তুই।’ তা শুনে অজয়া বলে—’দাউ দাদা, আমাকে রোগা-পাতলা বলছো কেন? তোককৃষ্ণ দাদা, অংশু দাদার সমান আমিও দৌড়াতে পারি।’ তা শুনে বলরাম হেসে বলে ‘ঠিক আছে, তুই ব্রজের মস্ত বীরাঙ্গনা।’ কথার মাঝে মা এসে বলেন, ‘মেয়েটা বড় চঞ্চল—’দাউ।’
মা শুধু আমাকেই চঞ্চল বলে। ভদ্র, তোক, অংশু দাদাদের কিছু বলে না। অভিমান হয় অজয়ার।
অভিমানে বোনকে চুপ থাকতে দেখে, কানু ভাইয়া কাকীমাকে উদ্দেশ্য করে বলে—’কাকীমা, তুমি আমাদের বোনকে কিছু বোলো না।’
”বাবা কানু, ভুলে যেও না, ও তোমাদের আদরের বোন হলেও কিন্তু মেয়ে। এত চঞ্চলতা ভালো নয়। দু-চার বছর পরে বধু হয়ে ওকে কোন গোপ-এর ঘরে যেতে হবে। তখন তুমিই বলবে, ‘কাকীমা বোনের বিয়ের ব্যবস্থা কর।” কুবলা কাকী অর্থাৎ অজয়ার মা কানুকে বললেন।
—’ওসব নিয়ে তুমি ভেব না কাকী, দেখবে আমরা বোনের বিয়ে দেব কোন গোপ-রাজের ঘরে।’ কানু ও মায়ের কথা শুনে অজয়ার মুখ রাগে লাল হয়ে উঠে। সে ভাবে—মেয়ে একটু বড় হয়েছে কিনা, সব বিয়ে বিয়ে করে পাগল করে তুলবে। বিয়ে ছাড়া সবার মুখে যেন অন্য কথা নেই। তবে হ্যাঁ, কানু ভাইয়া তাঁকে কথা দিয়েছে, বড় হয়ে সে অনেক বিয়ে করবে। কানু ভাইয়া বড় ভালো। সে কখনও তার এই ছোট বোনের কথাকে অগ্রাহ্য করে না। গতকাল বন থেকে ফিরে এসে তাকে যখন দেবী সাজিয়ে পূজা করছিল, তখন সে দেবীর আবেশে হঠাৎ বরদানের ভঙ্গীতে সবাইকে বলল, ‘তোমাদের পূজায় আমি সন্তুষ্ট, তোমরা বর প্রার্থনা কর।’ তাঁর কথা বলার ভঙ্গী দেখে অন্য সবাই হাসলেও কানু ভাইয়া কিন্ত হাসেনি। সে বরং নতশিরে বলেছিল—’হে দেবী আমি অবোধ গোঠের রাখাল, সারাদিন মাঠে গরু নিয়ে পড়ে থাকি। দেবীর কাছে কী বর চাইতে হয় আমি জানি না—তুমি নিজ করুণায় খুশী হয়ে আমার মনোমত বর দাও।’ তখন দেবীর আবেশে থেকে অজয়া বলল, ‘তুই প্রথমে নিজে বিয়ে কর, অন্য সখাদেরও বিয়ে করতে বল।’ আমি তোকে বর দিলাম, তোর অনেক বউ হবে।”
—’আমার অনেক বউ হলে তোমার কি লাভ হবে, দেবী?’ কানু দেবী ভাবাপন্না বোনকে জিজ্ঞাসা করল।
—তুই বন থেকে রঙ-বেরঙের ফুল-পাতা এনে দিবি। বউরা তা দিয়ে আমাকে সাজাবে।
—কিন্তু অনেক বউয়ের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দরী হবে, প্রধানারানী হবে তাঁর নাম কি? সে এখন কোথায় থাকে?
—তোর প্রধান বউ যে হবে তাঁর নাম শ্রীরাধা। থাকে বর্ষাণায়। আগামীকাল তোরা যখন বাবা-মা ও অন্যান্য গোপগোপীদের সঙ্গে গিরিগোবর্ধনের তটে গিয়ে তাঁর (গোবর্ধনের) পূজা করবি, সে তখন সখীদের নিয়ে সেখানে পূজা দিতে আসবে। তোর সঙ্গে তার বিয়ে হয়েই আছে। তুইও তাকে ভালো করে জানিস, সেও তোকে ভালো করে জানে। খুব ছোটবেলায় ব্রহ্মার পৌরহিত্যে তোদের দু-জনের বিবাহ অনুষ্ঠান সবার অগোচরে হয়ে গেছে। এখন শুধু প্রকাশের অপেক্ষা।
ইতিমধ্যে মা যশোমতি কানু ও বলাইকে দুধ খাওয়ার জন্য ডাকতে আসেন। ফলে অজয়ার দেবীভাবে আবিষ্ট হয়ে বরদানে বিরতি পড়ে। বোনকে দেবী সাজিয়ে-বরদানের খেলায় সমাপ্তি ঘটে।
পরদিন প্রভাতের আলো ফুটতে না ফুটতেই নন্দ মহারাজ-যশোমতী মা, ব্রজের গোপ-গোপীরা, সখাসহ কানু-বলাই গোশকটে গিরিগোবর্ধনের পদপ্রান্তে উপস্থিত হল। কানুর কথায় রাজী হয়ে নন্দ মহারাজসহ বয়স্ক গোপরা এবার ইন্দ্রপূজার পরিবর্তে জীবন্ত দেবতা গিরিগোবর্ধনের পূজা করবেন। তাই সবাই পূজার উপকরণ সহ উপনীত হয়েছেন গিরিরাজের পদপ্রান্তে। বর্ষাণা গ্রাম থেকে মহারাজ বৃষভানু—কীর্ত্তিদা মাইয়া (রাধারাণীর পিতামাতা) এবং সখীসহ রাধারাণীও এসেছেন। সুবল-শ্রীদামা রাধারাণীর দুই ভাইও এসেছেন। গোপ পুরোহিত মহর্ষি শাণ্ডিল্য পূর্বেই সেখানে শিষ্যদের নিয়ে হাজির হয়েছেন। গিরিরাজ-এর পূজার কোন নিয়ম-বিধান তাঁর জানা নেই। তাই তিনি শঙ্খ ধ্বনি করে নন্দ পুত্র কৃষ্ণকেই পূজার জন্য পৌরহিত্য করতে বললেন। কারণ ব্রজপুরে এ-বারেই প্রথম এই পূজার প্রচলন হতে চলেছে।
একরূপে গিরি গোবর্ধন রূপে প্রকট হয়ে পূজা গ্রহণ করল কৃষ্ণ, আবার অন্যরূপে পুরোহিত হয়ে পূজাও করল কৃষ্ণ। প্রজ্বলিত হোমাগ্নিতে কৃষ্ণের সঙ্গে মন্ত্রোচ্চারণ করতে করতে গোপরা ঘৃতাহুতি দিতে শুরু করলেন। ঘৃতাহুতির শেষে পুষ্পাঞ্জলি ও নৈবেদ্য প্রদানের পালা। অজয়া অর্ঘ্য ডালা হাতে নিয়ে পূজার জন্য এগিয়ে যেতেই ললিতা সখি বাধা দিয়ে বলেন—’মেয়েদের পূজা করা নিষেধ।’ অজয়া থমকে হতাশ হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল। তাকে হতাশ দেখে রাধারাণী ললিতাকে তিরস্কার করে বলল,—”ললিতা, তোকে কে বলেছে, মেয়েদের পূজা করা নিষেধ। এই তো আমিও কুসুম নৈবেদ্য নিয়ে গিরিরাজকে পূজা করতে যাচ্ছি, আয় অজয়া, তুইও আমার সঙ্গে আয়। ললিতা-বিশাখা তোরা কেউ অজয়াকে বাধা দিবি না, ওর ইচ্ছায় আমার সানন্দ-সম্মতি আছে।”
রাধা যে কাউকে তিরস্কার করতে পারে—অজয়া এই প্রথম দেখল। ওদিকে তখন পূজার মন্ত্রপাঠ চলছে। বিশাখা বলে,—”অজয়া, দাঁড়িয়ে পড়লি কেন? এগিয়ে চল। ঐ দেখ চৌষট্টিটি স্বর্ণপাত্রে গঙ্গা-যমুনার জল পূর্ণ করে তাতে তুলসীপত্র দিয়ে কেমন সুন্দর সারি সারি সাজিয়ে রেখেছে দেখ!”
গৃহে নারায়ণ পূজা যে ভাবে হয়—সেইভাবেই কৃষ্ণ গিরি গোবর্ধনের পূজা সম্পন্ন করল। মহর্ষি শাণ্ডিল্য তন্ত্র ধারকের ভূমিকা দক্ষতার সঙ্গে পালন করলেন। পূজা শেষে ভোগের থালায় যখন তুলসী দিয়ে গিরি গোবর্ধনকে ভোগ গ্রহণের জন্য আহ্বান জানাল কৃষ্ণ—তখন গিরি গোবর্ধন দেবতা রূপে প্রকট হয়ে ভোগ চেয়ে চেয়ে খেতে শুরু করলেন। গোপ-রা ছুটোছুটি করে থালা-থালা ভোগ এনে দিলেন কানুর হাতে, কানুর হাত থেকে সেই ভোগ মুখে ঢেলে দেন দেবতারূপে প্রকাশিত গিরিরাজ। চার হাত বের করে গিরিরাজ ভোগ খেতে থাকেন। তাঁর (গিরিরাজের) খাওয়ারভঙ্গী দেখে রাধারাণী হেসে ফেলল। হাসতে হাসতে অজয়াকে জিজ্ঞাসা করল, ”ভালো করে দেখ তো অজয়া—এই চার হাত ওয়ালা বিশাল দেবতা দেখতে অনেকটা তোর কানু ভাইয়ার মতো নয়?”
‘ওই বিরাট দেবতার যদি চার হাত না হত, তাহলে অবশ্যই বলতাম ও আমাদের কানু ভাইয়া। যদি ঐ দেবতা এত উঁচু না হত, তাহলে সবাই ওকে কানু ভাইয়া মনে করতো। ওরই মতো চোখ, কেশ, বাহু, বসন, অলংকার—সবেতেই মিল। শুধু আমাদের ভাইয়ার দুহাত-আর দেবতার চার হাত। ভাইয়া ছোট—দেবতা বিশাল উঁচু ও বড়।’
দেবতারূপে গিরিগোবর্ধনকে প্রসাদ গ্রহণ করতে দেখে অজয়ার সাহস যায় বেড়ে। সে একটা বড় মিঠাই নিয়ে হাজির হল বিরাট দেবতার কাছে। কানু ভাইয়া বলল, ”বোন, তুই নিজের হাতে করে গিরিরাজকে খাইয়ে দে।” কানু ভাইয়ার কথায় অজয়া মিঠাই তুলে দেয় গিরিরাজের মুখে—তিনি হাসতে হাসতে তা গ্রহণ করেন। অজয়া মিঠাই নিবেদন করে ফিরে আসতেই গিরিরাজ প্রসন্ন গম্ভীর স্বরে বললেন, ”বোন প্রসাদ নিয়ে যাও।” গিরিরাজের মুখে বোন সম্বোধন শুনে অজয়ার খুব আনন্দ। সে যেমন কানু ভাইয়ার বোন, তেমনি আজ থেকে গিরিরাজেরও বোন। গিরিরাজ আজ থেকে তাঁর আর এক ভাই। গিরিরাজ প্রসাদরূপে তাঁর হাতে মিঠাই-এর বড় অংশ প্রত্যর্পণ করেছেন। সে আনন্দে তা নিয়ে এসে রাধারাণী হাতে দিল। রাধারাণী ওই প্রসাদের টুকরো ভাঙতেই তার ভেতর থেকে বেড়িয়ে এল একজোড়া দিব্য কর্ণকুন্তল। কুন্তলের ছটার দীপ্তিতে চোখ ধাঁধিয়ে ওঠে। অজয়ার দুই কর্ণ থেকে পুরনো কুন্তল দুটি খুলে নিয়ে রাধারাণী প্রসাদরূপে পাওয়া দিব্য কুন্তল দুটি অজয়ার কর্নে পরিয়ে দিল। রাধারাণীর স্নেহস্পর্শে অজয়া নিজেকে ধন্যা-কৃত কৃতার্থা মনে করল। রাধারাণী যখন তাঁর কর্ণে কুন্তল পরিয়ে দিচ্ছে—সে তখন মনে মনে গিরিরাজের কাছে প্রার্থনা করে—”হে জাগ্রত ভগবান গিরিরাজ, তুমি রাধাজীকে আমার ভাবী করে দিও। আমাদের কানু ভাইয়া যেন রাধাজীর বর হয়। ওদের দুজনকে পাশাপাশি বসিয়ে আমি যেন আজীবন ওদের চরণ পূজা করতে পারি।”
”তুই বিড় বিড় করে কি প্রার্থনা করছিস অজয়া? কুন্তল তো পেয়েছিস, এখন বুঝি ওই দেবতাকে বিয়ে করার জন্য প্রার্থনা করছিস?”—ললিতা টিপ্পনী কেটে জিজ্ঞাসা করল।
”ঐ পাহাড়ের মতো দেবতাকে বিয়ে করতে হয় তো তুমি কর। আমাকে বোন বলে ডেকেছে, সুতরাং ঐ দেবতা এখন থেকে আমার ভাই। তুমি যদি বিয়ে করতে চাও তাহলে নয় বলে-কয়ে দেখতে পারি।” অজয়ার প্রত্যুত্তরে ললিতা চুপ হয়ে যায়।
বিশাখা বলে—’তবে বিড়বিড় করে তুই কী বলছিলি?’
‘আমি আমার কানু ভাইয়ার বিয়ের জন্য দেবতার কাছে মানত করছিলাম। বলছিলাম, হে দেবতা তুমি রাধাজীকে আমার কানু ভাইয়ার বউ করে দাও। ও যেন আমার ভাবী হয়।’ অজয়ার কথা শুনে রাধারাণীর মুখ লজ্জায় লাল হয়ে যায়। লজ্জাবনত মুখে রাধা স্বীয় করপল্লব দিয়ে অজয়ার মুখ চেপে ধরে—তাঁর শিরে স্নেহচুম্বন বর্ষণ করতে থাকল। সখীরা আনন্দে করতালি দিল। পূজা শেষে ভোজনান্তে সবাই গোশকট যোগে আপন আপন গৃহাভিমুখে রওনা দিলেন।
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন