দেশনায়ক – ৩

নেতাজি সুভাষচন্দ্রের একনিষ্ঠ অনুরাগীদের অন্যতম ছিলেন বিপ্লবী জ্যোতিষচন্দ্র জোয়ারদার। তিনি তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, বিজ্ঞানী মন ও দৃষ্টিকোণ থেকে ‘সুভাষবাদ’কে ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর মত হল, সুভাষচন্দ্রের বিশ্বাস ছিল যে জীবনের মর্মবাণী হল প্রেম। মানব সভ্যতার কোনও পর্যায়কেই চূড়ান্ত বা শেষ সোপান বলা যায় না। মানুষের ক্রমেই উত্তরণ হচ্ছে। স্বাধীনতার মূল্য অপরিসীম। নিজের বিশ্বাসের জন্যে মৃত্যুবরণ করলে মানুষ অমরত্ব লাভ করে। সমাজ পুনর্গঠনের মূল ভিত্তি হল ব্যক্তির স্বাধীনতা। মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় অভিশাপ হল দাসত্ব, বন্ধনদশা ও অন্যায় অবিচারের সঙ্গে আপস করা। বৈষম্যের বিরুদ্ধে জীবনপণ সংগ্রামই হল শ্রেষ্ঠ পুণ্য। আত্মত্যাগ জীবনের পরমধর্ম। সামাজিক জীবনে পূর্ণ সাম্যের প্রতিষ্ঠাই হল শ্রেষ্ঠ লক্ষ্য। সমাজে বর্ণভেদ বা অনুন্নত শ্রেণী বলে কিছু থাকা কাম্য নয়। স্বত্বাধিকার ও পদমর্যাদার বৈষম্য অনুচিত। নারী সর্বতোভাবে পুরুষের সমমর্যাদার অধিকারিণী। মানুষের মর্যাদা ও পূর্ণ স্বাধীনতার আছে চারটি স্তম্ভ: বিবেকের মুক্তি (Freedom of Conscience); রাষ্ট্রিক স্বাধীনতা বা গণতন্ত্র (Political Democracy); অর্থনৈতিক গণতন্ত্র বা সমাজবাদ (Economic Democracy or Socialism); মানুষের মর্যাদা (Dignity of Man)। এই চারটি হল সর্বকালের, সর্বমানবের জীবনের লক্ষ্য ও অধিকার। সুভাষবাদে সাম্প্রদায়িকতা, সঙ্কীর্ণতার কোনও স্থান নেই। কে হিন্দু, কে মুসলমান, কে খ্রিস্টান বা কে অন্য কোনও ধর্মবলম্বী তাতে কিছু যায় আসে না। তা বিচার্য নয়। মূল প্রশ্ন হল সমঅধিকার, সমমর্যাদা। সর্বমানবের কল্যাণকামী ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রই হল সুভাষবাদের লক্ষ্য। সুভাষবাদের এই ব্যাখ্যা সামগ্রিকভাবে অবশ্যই সঠিক ও গ্রহণযোগ্য।

কীভাবে ‘সুভাষবাদ’ গড়ে উঠেছিল? রাজনৈতিক মানুষ ও রাষ্ট্রনেতা সুভাষচন্দ্র বসুর চমকপ্রদ জীবনে কী কী এবং কার কার প্রভাব এবং অনুপ্রেরণা কাজ করেছিল? সুভাষচন্দ্রের চরিত্র, দৃষ্টিভঙ্গি, জীবনদর্শন ও বিশ্বাস এবং জীবনের লক্ষ্য স্থির হয়েছিল ক্রমে ক্রমে। জীবনের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতির মাধ্যমে। সূত্রপাত হয়েছিল শৈশবেই। তার কিছু পরিচয় আমরা ইতিপূর্বেই পেয়েছি। কোনও ঐতিহাসিক চরিত্রের জীবন একটি মাত্র প্রভাবে গড়ে ওঠে না। সুভাষচন্দ্র তার ব্যতিক্রম ছিলেন না। তাঁর জীবনের প্রধান প্রধান প্রভাবগুলির মধ্যে ছিল: পিতা-মাতা; পারিবারিক পরিবেশ; শিক্ষা; দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন; মহাত্মা গান্ধী; জাতীয় কংগ্রেসের আদর্শ এবং তারই সঙ্গে সশস্ত্র বিপ্লবের আদর্শ ও লক্ষ্য; তৎকালীন আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ও রাজনীতি; দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও যুদ্ধজনিত সমস্যা-সম্ভাবনা। বহু মনীষীর জীবন ও বাণী তাঁকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করেছিল। এঁদের মধ্যে প্রধান ছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ, স্বামী বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ ও শ্রীঅরবিন্দ।

সুভাষচন্দ্রের জীবনে স্বামী বিবেকানন্দের অনুপ্রেরণা ও আদর্শ পর্যায়ক্রমে প্রতিফলিত হয়েছিল। সুভাষচন্দ্রের নিজের উক্তি, চিঠিপত্র ও রচনায় রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের প্রসঙ্গ এবং প্রভাবের উল্লেখ রয়েছে অসংখ্য। তাঁর বন্ধু, সহকর্মী, সমসাময়িক বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাক্ষ্য ও স্মৃতিচারণেও বহু প্রাসঙ্গিক তথ্য আছে। বিবেকানন্দের প্রভাব সুভাষচন্দ্রের চিন্তার জগতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। তাঁর কর্মজগতকেও বহুলাংশে প্রভাবিত করেছিল। মোহিতলাল মজুমদার সুভাষচন্দ্রকে স্বামীজির আদর্শের ‘জীবন্ত ভাষ্যরূপে’ প্রত্যক্ষ করেছিলেন। প্রখ্যাত সাহিত্যিক শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের দৃষ্টিতে ‘শ্রীরামকৃষ্ণ প্রতিফলিত বিবেকানন্দে, আর বিবেকানন্দ প্রতিফলিত সুভাষচন্দ্রে।’ ডঃ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, ডঃ রমেশচন্দ্র মজুমদার, চারুচন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায়, দিলীপকুমার রায় প্রমুখের রচনা ও স্মৃতিচারণেও সুভাষচন্দ্রের জীবনে ও চিন্তায় স্বামীজির প্রভাবের কথা আছে।

১৯১৩ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষা দেবার পূর্বে সুভাষচন্দ্রের জীবনে ‘স্বামীজি’র প্রবেশ ঘটেছিল। ওই প্রসঙ্গে সুভাষচন্দ্র লিখেছেন যে, একদিন দৈবক্রমে তিনি এমন একটি জিনিস পেয়ে গেলেন যা সঙ্কটকালে তাঁর প্রধান সহায় হয়ে দাঁড়াল। এই ‘সঙ্কট’ ছিল কিশোর সুভাষের জীবন জিজ্ঞাসা ও জীবনের লক্ষ্য সন্ধান। তিনি খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন একটি মূল নীতি যাকে অবলম্বন করে তাঁর সমগ্র জীবন গড়ে উঠতে পারে। অন্য কোনও কিছুর প্রতি আকৃষ্ট হতে তিনি অনিচ্ছুক ছিলেন। প্রবল ইচ্ছাশক্তির সাহায্যে সবকিছু প্রলোভন জয় করতে ও প্রয়োজনে নিজের জীবন উৎসর্গ করতে তিনি কৃতসঙ্কল্প হতে চাইছিলেন। তাঁর ধারণা ছিল, তিনি যদিও ‘দুর্বল’ তবু তাঁর লড়াই করার সঙ্কল্প প্রবল। তিনি ওই সঙ্কটের ব্যাখ্যা করে লিখেছেন, “আমি কিছুতেই পরাজয় স্বীকার করিনি—আমার মধ্যে এমন কিছু ছিল যা আমাকে তা করতে দিত না।” এই মনোবল, আদর্শনিষ্ঠা ও আপসহীন সংগ্রামী মানসিকতাই কিশোর সুভাষচন্দ্রকে কালক্রমে মৃত্যুঞ্জয়ী নেতাজি সুভাষে পরিণত করেছিল।

‘দৈবক্রমে’ যে জিনিসটি তিনি পেয়েছিলেন তা হল স্বামী বিবেকানন্দের রচনাবলী। পাশের বাড়ির এক আত্মীয়ের বই দেখতে দেখতে স্বামীজির বইগুলি তাঁর চোখে পড়ে। বইগুলি চেয়ে নিয়ে বাড়িতে এসে প্রথম পাঠেই তাঁর মধ্যে ‘শিহরণ খেলে’ যায়। দিনের পর দিন, সপ্তাহের পর সপ্তাহ, মাসের পর মাস তিনি গভীর মনোযোগ দিয়ে স্বামীজির রচনাবলী পড়তে থাকেন। জীবনের যে লক্ষ্যের তিনি সন্ধান করছিলেন তা পেয়ে গেলেন—নিজের মুক্তি ও মানবসেবা, আর, এই মানবসেবার মধ্যেই নিহিত রয়েছে স্বদেশসেবা। স্বামী বিবেকানন্দ সুভাষন্দ্রের জীবনে এক বিপ্লব ঘটিয়ে সব কিছু ওলটপালট করে দিলেন। পনেরো বছরের এই বালকের ‘হৃদয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিলেন’। নিজের মুক্তি, পার্থিব সব আশা-আকাঙক্ষা বিসর্জন দিয়ে, সব বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে মানবসেবাকে সফল করে তোলাই হল তাঁর জীবনের লক্ষ্য। ভবিষ্যতের চির বিদ্রোহী ‘নেতাজি’র জন্ম হল।

সুভাষচন্দ্রের মানসিক বিপ্লবের পিছনে আর একজন ছিলেন—বিবেকানন্দের গুরু শ্রীরামকৃষ্ণ। মা’র কাছে তিনি শুনতেন ‘কথামৃত’। বিবেকানন্দের রচনাবলী পড়তে পড়তে সুভাষচন্দ্র রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়লেন। সুভাষচন্দ্রের কাছে শ্রীরামকৃষ্ণের শিক্ষার সবচেয়ে মূল্যবান উপাদান ছিল চরিত্র-গঠন এবং আধ্যাত্মিক উন্নতি সম্পর্কে তাঁর বাস্তব নির্দেশ। পার্থিব সব আকাঙক্ষা ত্যাগ করলে তবেই ‘অবিনশ্বর জীবন’ লাভ করা যায়, এই শিক্ষা সুভাষচন্দ্র পান শ্রীরামকৃষ্ণের কাছে। শ্রীরামকৃষ্ণের ‘কাম ও কাঞ্চন ত্যাগের’ উপদেশ সুভাষচন্দ্রকে বয়ঃসন্ধি ও যৌবনের এক কঠিন বাস্তব সমস্যা থেকে মুক্ত হতে সাহায্য করে। সুভাষচন্দ্রের জীবনের এই দিকটি সম্বন্ধে কোনও উল্লেখই প্রায় হয় না। অথচ সুভাষচন্দ্র নিজে তাঁর জীবনের এই চিন্তার কথা খুব খোলাখুলিভাবে লিখেছেন। বিষয়টি হল যৌনচেতনা ও প্রবৃত্তি।

সুভাষচন্দ্র ছিলেন রক্ত-মাংসে গড়া। শারীরিক জৈব সব সমস্যা, কামনা-বাসনা প্রবৃত্তি তাঁর মধ্যেও ছিল। শ্রীরামকৃষ্ণের জীবন ও উপদেশ তাঁকে শিখিয়েছিল কী করে যৌনপ্রবৃত্তিকে মহৎ প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ করা যায়। প্রত্যেক নারীকেই মাতৃবৎ দেখা যায়। কটকে স্কুলে ছাত্র জীবনেই তাঁর যৌন-চেতনা শুরু হয়েছিল। সুভাষচন্দ্র এর ফলে বিচলিত বোধ করেন। তাঁর ধারণা জন্মে যে এই যৌন-চেতনা অস্বাভাবিক ও চারিত্রিক দুর্বলতার লক্ষণ। তিনি এই ‘দুর্বলতা’ দমন বা অতিক্রম করার জন্যে লড়াই করছিলেন। এই লড়াই তাঁর কাছে ছিল সবচেয়ে কঠিন ও তীব্র। ফলে তিনি প্রতিনিয়তই মানসিক উত্তেজনায় ও অশান্তিতে ভুগতেন। নৈরাশ্যবোধ করতেন। তাঁর যৌন প্রবৃত্তিকে তিনি যতই দমন বা মহত্তর প্রেরণায় রূপান্তরিত করার চেষ্টা করেছিলেন ততই তা আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। শ্রীরামকৃষ্ণের ত্যাগ ও শুদ্ধতার দৃষ্টান্ত তাঁকে সমস্ত কুপ্রবৃত্তির সঙ্গে প্রচণ্ড লড়াই করতে শক্তি জুগিয়েছিল। কাম ও কাঞ্চন আধ্যাত্মিক উন্নতির পথে সর্বপ্রধান বাধা—শ্রীরামকৃষ্ণের এই কথাটি সুভাষচন্দ্র ‘বেদবাক্য’ বলে মেনে নিয়েছিলেন। রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের দর্শন ও ভাবধারার মধ্যে তিনি খুঁজে পেয়েছিলেন তাঁর সব প্রয়োজন মেটাবার উপাদান। তিনি স্থির করেন তাঁর জীবনের লক্ষ্য হবে নিজের আধ্যাত্মিক কল্যাণ ও মানব সমাজের উন্নতি।

বাস্তব জীবনে তিনি যতদূর সম্ভব অনুসরণ করবেন রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দকে। এই সঙ্কল্পচ্যুত তিনি কখনও হননি। কিন্তু তাঁর নিজের মধ্যে যে লড়াই চলছিল তা কিন্তু তাঁর জীবনে কোনদিন শেষ হয়নি। এই কথাটি সুভাষচন্দ্র অকপটে স্বীকার করেছেন তাঁর আত্মজীবনীতে। তিনি লিখেছেন যে, শ্রীরামকৃষ্ণ শুদ্ধতার ও যৌন প্রবৃত্তিকে দমন করে মহত্তর প্রেরণায় রূপান্তর করার জন্যে যে উপদেশ দিয়েছিলেন তা অর্জন করা অসম্ভব বলে তাঁর মনে হয়েছিল। তাই তিনি মাঝে মাঝে অবসাদ ও মানসিক যন্ত্রণাও ভোগ করতেন। কিন্তু তাঁর চেষ্টার কোনও বিরাম ছিল না। তিনি সঙ্কল্প করেছিলেন যে তিনি অকৃতদার থাকবেন। বিবাহ না করার সিদ্ধান্তের কথা একাধিকবার তিনি উল্লেখ করেছেন। কিন্তু জৈব প্রবৃত্তিকে দমন করার চেষ্টা যে সহজ নয়, এই লড়াই যে নিরন্তর সে কথা তিনি উপলব্ধি করেছিলেন। সুভাষচন্দ্র তাঁর আত্মজীবনী লেখেন ১৯৩৭ সালের ডিসেম্বর মাসে। তখন তাঁর বয়স চল্লিশ। ওই সংগ্রাম তাঁর মনের মধ্যে তখনও চলেছে। এই প্রসঙ্গে একটি কথা বলা প্রাসঙ্গিক হবে। সুভাষচন্দ্র আজীবন অকৃতদার থাকেননি। কিন্তু বিবাহ করায় সুভাষচন্দ্র নিজের জীবনের আদর্শ, লক্ষ্য ও সঙ্কল্প থেকে বিচ্যুত হয়েছিলেন এবং তাঁর সর্বত্যাগী দেশপ্রেমিক দধীচির ভাবমূর্তি ম্লান হয়েছিল এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। সুভাষচন্দ্রের নিজের একটি কথা যদি আমরা স্মরণ রাখি তাহলে তাঁর জীবনের এই দিকটি বুঝতে বোধহয় সুবিধা হবে। নিজের অতীত জীবনের দিকে ফিরে তাকিয়ে তিনি বলেছিলেন, “নতুন করে আবার যদি আমার জীবন শুরু করতে পারতাম তাহলে খুব সম্ভবত আমি যৌন বিষয়ে অতিরিক্ত গুরুত্ব আরোপ করতাম না, বাল্যে ও যৌবনে যা করেছি। এর অর্থ এই নয় যে যা করেছি তার জন্য অনুতাপ করছি। যৌন-সংযমকে খুব বেশি গুরুত্ব দিয়ে যদি কোনও ভুল করে থাকি, সে ভুলে সম্ভবত আমার ভালই হয়েছে, কেননা এর ফলে ঘটনাচক্রে হলেও আমি উপকৃত হয়েছিলাম। দৃষ্টান্তস্বরূপ বলতে পারি, এর ফলে নিজেকে এমন একটা জীবনের জন্য তৈরি করে তুলেছিলাম যা চিরাচরিত পথ ধরে চলবে না এবং যাতে স্বাচ্ছন্দ্য, সুখ ও নিজের বৈষয়িক উন্নতির কোনও স্থান নেই।”

সুভাষচন্দ্রের অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়ে আর একটি আত্মজীবনীর কথা মনে আসে। বইটির নাম My Experiment with Truth। লেখক মহাত্মা গান্ধী। এক অসাধারণ ব্যক্তির এক অসাধারণ গ্রন্থ হওয়া ছাড়াও বইটির এক বৈশিষ্ট্য হল নিজের ব্যক্তিগত জীবনের অত্যন্ত গোপন দুর্বলতার কথাও গান্ধীজি অকপটভাবে লিখেছেন তাঁর আত্মজীবনীতে। সত্যের সঙ্গে নিজের জীবনে গান্ধীজি কীভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন সেই কাহিনীই তাঁর আত্মজীবনীর মুখ্য আকর্ষণ। সুভাষচন্দ্রের আত্মজীবনীও সত্যের মুখোমুখি সুভাষচন্দ্রের পরীক্ষা ও আত্মনিরীক্ষার এক অতুলনীয় স্বীকারোক্তি। সুভাষচন্দ্রের মতো নির্ভীক অনাবিল চরিত্রের একজন মানুষের পক্ষেই এই আত্মজীবনী লেখা সম্ভব ছিল। আর, এটি সম্ভব হয়েছিল তিনি স্বামী বিবেকানন্দের ‘অভী’ মন্ত্রে প্রকৃত অর্থে দীক্ষিত হয়েছিলেন বলেই। ভারতবাসীর ওপর স্বামীজির আশ্চর্য প্রভাব প্রসঙ্গে সুভাষচন্দ্র বলেন, “এই রকমের বলিষ্ঠ মানুষ বাঙালির মনকে যেমন আকৃষ্ট করে এমন আর কেউ করে না। ত্যাগে বে-হিসাবী, কর্মে বিরামহীন, প্রেমে সীমাহীন, স্বামীজির জ্ঞান ছিল যেমন গভীর তেমনি বহুমুখী। ভাবাবেগে উচ্ছ্বসিত স্বামীজি মানুষের ত্রুটি বিচ্যুতির নির্মম সমালোচক ছিলেন অথচ সারল্য ছিল তাঁর শিশুর মতো…পৌরুষপূর্ণ পূর্ণাঙ্গ মানুষ…মনে প্রাণে সংগ্রামী।” নেতাজি সুভাষচন্দ্রও প্রকৃত অর্থে স্বামী বিবেকানন্দের ভাবশিষ্য ছিলেন।

সকল অধ্যায়

১. দেশনায়ক – ১
২. দেশনায়ক – ২
৩. দেশনায়ক – ৩
৪. দেশনায়ক – ৪
৫. দেশনায়ক – ৫
৬. দেশনায়ক – ৬
৭. দেশনায়ক – ৭
৮. দেশনায়ক – ৮
৯. দেশনায়ক – ৯
১০. দেশনায়ক – ১০
১১. দেশনায়ক – ১১
১২. দেশনায়ক – ১২
১৩. দেশনায়ক – ১৩
১৪. দেশনায়ক – ১৪
১৫. দেশনায়ক – ১৫
১৬. দেশনায়ক – ১৬
১৭. দেশনায়ক – ১৭
১৮. দেশনায়ক – ১৮
১৯. দেশনায়ক – ১৯
২০. দেশনায়ক – ২০
২১. দেশনায়ক – ২১
২২. দেশনায়ক – ২২
২৩. দেশনায়ক – ২৩
২৪. দেশনায়ক – ২৪
২৫. দেশনায়ক – ২৫
২৬. দেশনায়ক – ২৬
২৭. দেশনায়ক – ২৭
২৮. দেশনায়ক – ২৮
২৯. দেশনায়ক – ২৯
৩০. দেশনায়ক – ৩০
৩১. দেশনায়ক – ৩১
৩২. দেশনায়ক – ৩২
৩৩. দেশনায়ক – ৩৩
৩৪. দেশনায়ক – ৩৪
৩৫. দেশনায়ক – ৩৫
৩৬. দেশনায়ক – ৩৬
৩৭. দেশনায়ক – ৩৭
৩৮. দেশনায়ক – ৩৮
৩৯. দেশনায়ক – ৩৯
৪০. দেশনায়ক – ৪০
৪১. দেশনায়ক – ৪১
৪২. দেশনায়ক – ৪২
৪৩. দেশনায়ক – ৪৩
৪৪. দেশনায়ক – ৪৪
৪৫. দেশনায়ক – ৪৫
৪৬. দেশনায়ক – ৪৬
৪৭. দেশনায়ক – ৪৭
৪৮. দেশনায়ক – ৪৮
৪৯. দেশনায়ক – ৪৯
৫০. দেশনায়ক – ৫০

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন