দেশনায়ক – ১৬

প্রত্যক্ষভাবে জাতীয় আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্কিত বহুমুখী কাজে জড়িত হওয়া ছাড়াও সুভাষচন্দ্র ১৯২২-২৩ সালে নানাবিধ তাৎপর্যপূর্ণ সুদূরপ্রসারী ঘটনায় অন্যতম প্রধান ভূমিকা নেন। তিনি জাতীয় জীবনের বৃহত্তর সার্বিক সমস্যা সমাধানের প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে চিন্তিত হন। দেশবন্ধুর নেতৃত্বে এসব বিষয়ে গঠনমূলক কর্মসূচী ও পরিকল্পনা সম্বন্ধে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। এর মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হল দেশবন্ধুর সভাপতিত্বে লাহোরে নিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের অধিবেশন। অন্যটি কলকাতায় ইয়ং মেনস কনফারেন্স। লাহোরে ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসে দেশবন্ধু ঘোষণা করেন যে, ‘স্বরাজ’ কোনও শ্রেণী বিশেষের জন্যে নয়। সাধারণ মানুষের জন্যেই স্বরাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। শ্রমিক আন্দোলনের প্রতি দেশবন্ধুর বিশেষ আগ্রহ ও সমর্থন ছিল। সুভাষচন্দ্রও স্বাধীনতা সংগ্রামে শ্রমিক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা প্রসঙ্গে বিভিন্ন জনসভায় এই সময় থেকে ভাষণ দিতে শুরু করেন। হাওড়ার টাউন হলে এক সভায় তিনি বলেন যে, দিন মজুরদের অধিকার ও কর্তব্য সম্বন্ধে সচেতন করে তুলতে না পারলে দেশের কল্যাণ সম্ভব নয়।

কলকাতার যুব সম্মেলন বাংলা তথা সারা দেশে যুব আন্দোলনের পথপ্রদর্শকের কাজ করেছিল। এই যুব সভায় ঘোষণা করা যে, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস থেকে সম্পূর্ণ পৃথক এক সংগঠন ও আন্দোলন যুব সমাজের করা একান্ত প্রয়োজন। যুব সম্মেলনের অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতি হন সুভাষচন্দ্র। মূল সভাপতি নির্বাচিত হন প্রখ্যাত বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহা। সুভাষচন্দ্রের ভাষণটি ছিল স্মরণীয়। জনসভায় এত সুচিন্তিত, পাণ্ডিত্যপূর্ণ ও উদ্দীপ্ত ভাষণ তাঁর জীবনে এটাই ছিল প্রথম। বাংলার তরুণদের মনে এত উৎসাহ ও উদ্দীপনা ইতিপূর্বে কোনও বক্তৃতা সৃষ্টি করতে পারেনি। শুধুমাত্র ‘দৈনিক বসুমতী’তে পরের দিন ভাষণটি ছাপা হয়। ‘তরুণের আহ্বান’ নামে এটি পরে সুভাষ-রচনাবলীতে সঙ্কলিত হয়। তিনি বাংলার যুবশক্তির উদ্দেশে বলেন, “সর্বস্পৃহাশূন্য পুণ্য প্রচেষ্টার দ্বারা, নরনারায়ণের নিঃস্বার্থ সেবার দ্বারা মুহ্যমান জাতির উদ্বোধন করতে হবে। তর্কযুদ্ধ করে জাতির লজ্জা, দেশের দৈন্য, মনুষ্যত্বের অপমানকে আর বৃদ্ধি না করে দেশ ও জাতির দাসত্ব কালিমার রেখা মুছে ফেলতে হবে।” তিনি আরও বলেছিলেন, “আত্মপ্রসাদ লাভের জন্য নয়, পতিত জাতির উদ্ধারের অহঙ্কারের জন্য নয়, কর্ম-কর্তৃত্বের আত্মম্ভরী জ্ঞান থেকে মুক্ত হয়ে মনুষ্যত্বের বিকাশ সাধনায় ব্রতী হও। আচার-অনুষ্ঠানের গোঁড়ামি, ‘ছুৎমার্গ’, ‘অস্পৃশ্যতার ভূত’কে ঝেড়ে ফেলে দিয়ে সম্প্রীতি ও ঐক্যের জন্য বদ্ধপরিকর হও।” গভীর আবেগ ও আন্তরিকতার সঙ্গে সুভাষচন্দ্র বলেন, “আশা চাই, উৎসাহ চাই, সহানুভূতি ভাই, প্রেম চাই, অনুকম্পা চাই—সবার উপরে মানুষ হওয়া চাই। মানুষের মধ্যে দেবতার প্রতিষ্ঠাই আমাদের মুক্তি—নান্যঃ পন্থা।” সে দিন উপস্থিত যুবকরা সুভাষচন্দ্রের কাছে স্বামী বিবেকানন্দের স্বদেশমন্ত্রের নতুন পাঠ শুনে ওই স্বপ্ন সার্থক করে তোলার শপথ গ্রহণ করেছিল।

গয়া কংগ্রেসে দেশবন্ধুর প্রস্তাব গৃহীত না হওয়ায় স্বরাজ্যপন্থীরা খুবই হতাশ হয়ে ফিরে আসেন। বাংলাতেও কংগ্রেসের মধ্যে ‘নো-চেঞ্জার’দের সংখ্যাধিক্য হওয়ায় দেশবন্ধু ও তাঁর সহকর্মীরা খুবই বিরূপ পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন। বাংলার রাজনীতিতে দলাদলি, স্বার্থ ও ক্ষমতার লড়াই, স্বরাজ্যপন্থীদের সম্পর্কে মিথ্যাচার প্রকট হয়ে ওঠে। রাজনৈতিক পরিবেশ হতাশাব্যঞ্জক ও কলুষিত হবার লক্ষণ দেখা দিলেও দেশবন্ধু ও সুভাষচন্দ্রের মনোবল কিন্তু ক্ষুণ্ণ হয়নি। এক জনসভায় সুভাষচন্দ্র দলের বর্তমান অবস্থা ও দেশবন্ধুর সমর্থকদের কর্তব্য প্রসঙ্গে বলেন যে, জনসাধারণের চিত্তাকর্ষক কর্মসূচী গ্রহণের সময় এসেছে। শ্রমিক ও কৃষক সংগঠন করে, গঠনমূলক কাজ করে, আমলাতন্ত্রের প্রতিটি ঘাঁটি আক্রমণ করতে হবে।

১৯২৩ সালে রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন শুরু হয়। সুভাষচন্দ্র বছরটিকে ‘স্বরাজ বিদ্রোহ’ আখ্যা দিয়েছেন। সুশৃঙ্খল দৃঢ়প্রতিজ্ঞ কর্মীদের উৎসাহ ও অক্লান্ত প্রচেষ্টার ফলে স্বরাজ্যপন্থীদের শক্তি ও জনসমর্থন বাড়তে থাকে। দেশবন্ধু নিজের স্বাস্থ্যহানি ও দারুণ কষ্ট উপেক্ষা করে দক্ষিণ ভারতের গান্ধীবাদের ঘাঁটিগুলিতে প্রচার করতে যান। তাঁর এই দীর্ঘ দক্ষিণ ভারত ভ্রমণ ফলপ্রসূ হয়। এর প্রভাব দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও দেখা দেয়। বাংলাদেশেও ‘পরিবর্তন বিরোধীরা’ পরাজিত হন। বাংলা প্রদেশ কংগ্রেসে স্বরাজ্যপন্থীদের প্রধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়। সুভাষচন্দ্র বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদক হন। স্বরাজ্য দলের জনপ্রিয়তা ও শক্তি বৃদ্ধিতে গান্ধীজির সমর্থকরা উপলব্ধি করলেন যে, কংগ্রেসের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দলের (স্বরাজ্য দল গঠিত হলেও কংগ্রেসেরই অন্তর্ভুক্ত ছিল) মধ্যে মিটমাট হওয়া প্রয়োজন।

১৯২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দিল্লি কংগ্রেসের বিশেষ অধিবেশনে স্থির হয় যে, আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আইনসভার ভিতরে অবিচ্ছিন্নভাবে সরকারের বিরোধিতা চালিয়ে যাবার অনুমতি কংগ্রেস সদস্যদের দেওয়া হবে। গয়া কংগ্রেসে পরাজিত হবার দু’বছরের মধ্যে স্বরাজ্যপন্থীদের জয় হল। গান্ধীবাদীদের বিরুদ্ধে এই জয়লাভে সুভাষচন্দ্র অত্যন্ত উৎফুল্ল হয়েছিলেন। ‘গোঁড়া গান্ধীবাদী’দের সম্পর্কে তাঁর মনোভাব কতটা অপ্রসন্ন ছিল তা তিনি গোপন রাখেননি। কিন্তু গোঁড়া গান্ধীবাদীরা যা কিছু করতেন তার পিছনে স্বয়ং গান্ধীজির পূর্ণ সমর্থন সব সময়ই থাকত। গান্ধীজির অনুমোদন নেই বা তিনি অসন্তুষ্ট হবেন এমন কোনও কিছু বলা বা করা তাঁদের পক্ষে অসম্ভব ছিল। সুতরাং গান্ধীভক্তদের সম্বন্ধে সুভাষের সমালোচনা ও তির্যক মন্তব্যের প্রকৃত লক্ষ্য ছিলেন স্বয়ং গান্ধীজি। তাঁর সঙ্গে সুভাষের মানসিক দূরত্ব ক্রমেই বাড়ছিল।

১৯২৩ সালের নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে স্বরাজ্য দলের সাফল্য ছিল উল্লেখযোগ্য। পরের বছর অনুষ্ঠিত হল ভারতবর্ষের সর্ববৃহৎ পৌরসভা—কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের নির্বাচন। স্বরাজ্য দলের কাছে এই নির্বাচনে জয়লাভ করা ছিল এক বড় চ্যালেঞ্জের মতো। দলের স্থিতি ও ভবিষ্যতের পক্ষে ওই নির্বাচনে জয়লাভ করা ছিল একান্ত প্রয়োজন। তাই সর্বশক্তি দিয়ে স্বরাজ্যপন্থীরা নির্বাচন যুদ্ধে নামেন ও জয়লাভ করেন। এর পিছনে যাঁদের বিরাট ভূমিকা ছিল তাঁদের শীর্ষে অবশ্যই ছিলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন। তাঁর তরুণ সেনাপতি ছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। পৃথক মনোনয়নের ভিত্তিতে এই নির্বাচন হয়েছিল। অথাৎ হিন্দু ভোটদাতারা কেবল হিন্দু, আর মুসলমান ভোটদাতারা কেবল মুসলমান প্রার্থীদের ভোট দিতে পেরেছিলেন। স্বরাজ্য দলের জয়ী প্রার্থীদের মধ্যে বেশ কিছু মুসলমান ছিলেন। মুসলমানদের মধ্যে দেশবন্ধু তথা স্বরাজ্য দলের জনপ্রিয়তার এটিও একটি লক্ষণ।

নির্বাচনের পর কলকাতা পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন। ডেপুটি মেয়র হন শহীদ সুরাবর্দী। দেশবন্ধুর একান্ত অনুরোধে (যা প্রায় আদেশের নামান্তর ছিল) সুভাষচন্দ্র কর্পোরেশনের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (Chief Executive Officer) পদ গ্রহণে সম্মত হন। পৌরসভার নতুন গঠনতন্ত্র অনুসারে পরিচালন ব্যবস্থার সর্বপ্রধান ছিলেন চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার। সমগ্রভাবে কর্পোরেশনের প্রধান ছিলেন মেয়র। চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার পদে কোনও ব্যক্তির নিয়োগ সরকারি অনুমোদন সাপেক্ষ ছিল। স্বভাবতই সুভাষচন্দ্রের নিয়োগে সরকার মোটেই খুশি হয়নি। কিন্তু শেষপর্যন্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও সরকার অনুমোদন করে। সুভাষচন্দ্রের বয়স তখন মাত্র সাতাশ বছর। স্বরাজ্য দলের মধ্যেও একাংশ সুভাষচন্দ্রের নিয়োগে খুশি হননি। সুভাষচন্দ্রের অনস্বীকার্য যোগ্যতা ও দক্ষতা ছাড়াও, তিনি যে মাত্র অল্পদিন আগে উচ্চশিক্ষিত, উচ্চাভিলাষী ভারতীয় যুবকদের ‘স্বপ্নের’ চাকরি আই সি এস থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে এসে জাতীয় আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন—ঈর্ষা, ব্যক্তিস্বার্থ ও দলাদলির ফলে এই সবই তাঁরা বিস্মৃত হন। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ’কে প্রথম নির্বাচিত মেয়র, সুভাষচন্দ্র বসুকে কার্য পরিচালনার প্রধান কর্মকর্তারূপে যে পৌরসভা পেয়েছিল সেখানেও কিন্তু ক্ষুদ্র স্বার্থ ও গোষ্ঠীতন্ত্রের লড়াই সেদিন থেকেই শুরু হয়েছিল। সেই ধারা অব্যাহত থেকে ক্রমেই আরও বিস্তৃত ও পঙ্কিল হয়ে পড়ে। সুভাষচন্দ্র নিজে ওই পদ নিতে একেবারেই সম্মত ছিলেন না। চিত্তরঞ্জন যখন প্রথম এই প্রস্তাব করেন তখন তিনি কেঁদে ফেলেছিলেন। কলকাতা কর্পোরেশনের বেতনভুক উচ্চপদস্থ কর্মচারী হবার জন্যে তিনি আই সি এস থেকে পদত্যাগ করেননি—এ কথা বলার ও বোঝাবার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু দেশবন্ধুর মনে হয়েছিল বৃহত্তর স্বার্থে সুভাষচন্দ্রই ওই পদের যোগ্যতম ব্যক্তি। তাঁর ওই পদ গ্রহণ করা কর্তব্য। তাঁর মতো আস্থাভাজন সুদক্ষ সহযোগী ছাড়া চিত্তরঞ্জনের পক্ষে মেয়রের দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হবে না। শেষপর্যন্ত দেশবন্ধুর ইচ্ছা ও আদেশ উপেক্ষা করা সুভাষচন্দ্রের পক্ষে সম্ভব হয়নি। ওই পদের বেতন ছিল মাসিক তিন হাজার টাকা। কিন্তু সুভাষচন্দ্র দেড় হাজার টাকার বেশি না নেবার সিদ্ধান্ত করেন। ওই টাকাও তাঁর ব্যয় হত দুঃস্থ, দরিদ্র ছাত্র, কর্মীদের সাহায্য করতে এবং সেবা ও কল্যাণমূলক কাজে।

কলকাতা কর্পোরেশনের কর্মজীবন সুভাষচন্দ্র বসুর জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। কলকাতার মেয়র ও চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার শুধু বাংলায় নয়, সারা দেশের মানুষের কাছে ছিল অতি সম্মানজনক উচ্চপদ। কলকাতা কর্পোরেশন তখন ভারতে বৃহত্তম স্বায়ত্ত-শাসিত প্রতিষ্ঠান। বার্ষিক আয় দু’কোটি টাকারও বেশি। সমসাময়িক অনেক প্রাদেশিক সরকারের আয়ের চেয়ে কম নয়। সুভাষচন্দ্রের চরিত্রের বৈশিষ্ট্য ছিল, যখনই যে কাজ ধরতেন বা যে কাজের ভার নিতেন তা সর্বশক্তি ও আন্তরিকতা দিয়ে করতেন। কোথাও এতটুকু ফাঁকি বা শৈথিল্য থাকত না। তা বরদাস্তও করতেন না। কর্পোরেশনে দায়িত্বপূর্ণ পদে থাকার সময় তাঁর সারা দিন-রাতের কাজ ও চিন্তা ছিল কপোরেশনের সুষ্ঠু পরিচালনা। নাগরিক জীবনের সার্বিক উন্নতি, সুখ-সুবিধা, অভাব-অভিযোগের প্রতি লক্ষ্য রাখা। কলকাতা বলতে শুধু যে সাহেব-পাড়া চৌরঙ্গী বা পার্ক স্ট্রিট নয় তা তিনি প্রথম থেকেই সকলকে বোঝাতে শুরু করেন। সকল সুযোগ-সুবিধা সব পাড়ার মানুষ যেন পায় প্রথম থেকেই সে দিকে তিনি নজর দেন। সকাল সাতটায় কাজে বেরতেন। সঙ্গে থাকতেন কর্পোরেশনের বিভিন্ন বিভাগের কর্তারা। রাজনৈতিক চমক দেখাতে নয়, হাতে-কলমে, নিজের চোখে সবকিছু জানতে ও দেখতে। একদিন শরৎচন্দ্র বসু সুভাষের ঘরে ঢুকে দেখেন একজোড়া বিরাট আকারের গামবুট। বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, “এ আবার কী? এ দিয়ে কী হবে?” সুভাষ বললেন, তিনি পরবেন। ঠনঠনে কালীতলায় যাচ্ছেন। ড্রেনে নামতে হবে। কেন ওখানে অত জল জমে জানতে, প্রতিকারের ব্যবস্থা করতে। এরকম অভিযান ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। কোথাও জল জমে, কোথাও রাস্তার অবস্থা জরাজীর্ণ, কোথাও পরিশ্রুত জলের অভাব—সবকিছুই নিজে দেখার চেষ্টা করতেন। প্রতিকারের যথা সম্ভব ব্যবস্থা নিতেন। প্রভাতে শহর পরিদর্শনের পর অফিসে যেতেন সকাল দশটায়। বেশির ভাগ দিনই বাড়ি ফিরে খাবার সময় পেতেন না। আর, খাওয়া হয়ে উঠত না। শুধু মাঝে মাঝে চা পান। বাড়ি ফিরতে রাত ন’টা দশটা হয়ে যেত। বাড়িতেও তখন লোকের ভিড়। প্রায় সবাই প্রার্থী, কিছু না কিছু চাই! সকলের সঙ্গে কথা বলা শেষ হতে প্রায় মাঝ রাত। এরপর শুরু হত নিজের পড়াশোনা। কর্পোরেশনের নতুন আইন সংক্রান্ত সব কিছু খুঁটিয়ে পড়া। শরীরের ওপর এত ধকলের জন্যে সুভাষচন্দ্রকে মাশুল দিতে হয়েছিল পরে। কিন্তু নিজের স্বাস্থ্য, ভবিষ্যতের ভাল-মন্দর চিন্তা করার কোনও অবসর সুভাষচন্দ্র জীবনে পাননি।

সকল অধ্যায়

১. দেশনায়ক – ১
২. দেশনায়ক – ২
৩. দেশনায়ক – ৩
৪. দেশনায়ক – ৪
৫. দেশনায়ক – ৫
৬. দেশনায়ক – ৬
৭. দেশনায়ক – ৭
৮. দেশনায়ক – ৮
৯. দেশনায়ক – ৯
১০. দেশনায়ক – ১০
১১. দেশনায়ক – ১১
১২. দেশনায়ক – ১২
১৩. দেশনায়ক – ১৩
১৪. দেশনায়ক – ১৪
১৫. দেশনায়ক – ১৫
১৬. দেশনায়ক – ১৬
১৭. দেশনায়ক – ১৭
১৮. দেশনায়ক – ১৮
১৯. দেশনায়ক – ১৯
২০. দেশনায়ক – ২০
২১. দেশনায়ক – ২১
২২. দেশনায়ক – ২২
২৩. দেশনায়ক – ২৩
২৪. দেশনায়ক – ২৪
২৫. দেশনায়ক – ২৫
২৬. দেশনায়ক – ২৬
২৭. দেশনায়ক – ২৭
২৮. দেশনায়ক – ২৮
২৯. দেশনায়ক – ২৯
৩০. দেশনায়ক – ৩০
৩১. দেশনায়ক – ৩১
৩২. দেশনায়ক – ৩২
৩৩. দেশনায়ক – ৩৩
৩৪. দেশনায়ক – ৩৪
৩৫. দেশনায়ক – ৩৫
৩৬. দেশনায়ক – ৩৬
৩৭. দেশনায়ক – ৩৭
৩৮. দেশনায়ক – ৩৮
৩৯. দেশনায়ক – ৩৯
৪০. দেশনায়ক – ৪০
৪১. দেশনায়ক – ৪১
৪২. দেশনায়ক – ৪২
৪৩. দেশনায়ক – ৪৩
৪৪. দেশনায়ক – ৪৪
৪৫. দেশনায়ক – ৪৫
৪৬. দেশনায়ক – ৪৬
৪৭. দেশনায়ক – ৪৭
৪৮. দেশনায়ক – ৪৮
৪৯. দেশনায়ক – ৪৯
৫০. দেশনায়ক – ৫০

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন