তসলিমা নাসরিন
তিরিশ জুলাই, শনিবার
সকালে খুব মৃদু ঠক ঠক ঠক। ঠ এলেন। হাতে নাস্তার ট্রে। নাস্তা খাওয়ার চেয়ে পত্রিকা পড়ায় আগ্রহ আমার বেশি। পত্রিকা চাইলে ঠ কয়েকটি পত্রিকা এনে দেন। প্রায় ধাতব কণ্ঠে বলেন, সকাল নটার মধ্যেই তৈরি হয়ে থেকো। ঙ আমাকে জানিয়েছেন যে নটার পর তিনি যে কোনও সময় ফোন করবেন, কোর্টে যেতে হবে। কোর্টের নাম শুনলে বুক কাঁপে আমার।
কাঁপা বুকে নটার আগেই তৈরি হয়ে বসে থাকি। বারোটার সময় ঙর ফোন আসে। জানিয়ে দেন আজ হচ্ছে না, কাল যেন নটার সময় তৈরি থাকি। হাঁফ ছেড়ে বাঁচি। গতকালের খবর পুরো পত্রিকা জুড়ে। মহাসমাবেশের ছবি পুরো প্রথম পাতায়। না, এবার আর কয়েক হাজার নয়, এবার লক্ষ লক্ষ টুপি। আমার মনে হয় না, আজ পর্যন্ত এ দেশের কোনও রাজনৈতিক দল এত বড় কোনও সমাবেশ করতে পেরেছে। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে যখন সব দল এক হয়ে মাঠে নেমেছিল, তখনও এত লোক জোগাড় করতে পারেনি। অবশ্য এরা সারা দেশ থেকে এসেছে। মৌলবাদী সংগঠন খুব শক্ত সংগঠন। কেবল সংগঠনের লোকই নয়, দেশের সবগুলো মাদ্রাসার ছেলে এসেছে। কোনও দল করে না, কিন্তু ইসলাম বাঁচাতেই নিজ দায়িত্বেই অনেক ধার্মিকই চলে এসেছে। আজ যদি আওয়ামী লীগ বা বিএনপি কোনও লং মার্চের আয়োজন করে, সারা দেশ থেকে এত লোক ঢাকায় আসবে বলে আমার মনে হয় না। মহাসমাবেশে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব বলেছেন, আমাদের এ সমাবেশ ভাড়াটিয়া লোকের সমাবেশ নয়। এখানে যারা সমবেত হয়েছেন, সকলে ঈমানী জজবায় নিজের পয়সা খরচ করে সমাবেশে উপস্থিত। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের উদ্দেশে বলেন, ভাড়াটিয়া লোক ছাড়া আপনাদের সমাবেশ হয় না। ভাড়া করা লোক দিয়ে এই সমাবেশের একশ ভাগের এক ভাগও জড়ো করতে পারেন না। খতিব লোকটি বদ হলেও কথাটি কিন্তু ভুল বলেননি।
লং মার্চ শেষে মানিক মিয়া এভিনিউর মহাসমাবেশে বুলন্দ আওয়াজে ঘোষণা
আল্লাহর প্র্রভুত্ব ছাড়া আর কিছু মানি না
শির দেগা, নাহি দেগা আমামা। সাম্রাজ্যবাদ, ইহুদিবাদ ও ভারতীয় ব্রাহ্মণ্যবাদী চক্র বিশ্বের দ্বিতীয় মুসলিম রাষ্ট্র এই বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব, জনগণের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তথা অস্তিত্বের বিরুদ্ধে যে অঘোষিত যুদ্ধ শুরু করেছে, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহর ঈমানী চেতনায় তার জাল নিশ্চিহ্ন করে অধর্মের বিরুদ্ধে ধর্মের পতাকাটি সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার ঘোষিত হয়েছে গতকালের মহাসমাবেশে। ঐতিহাসিক লংমার্চ আর মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হল ধর্মদ্রোহী, স্বাধীনতা বিরোধী চক্রান্তের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ গর্জে উঠেছে। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত যে অভূতপূর্ব গণজাগরণ শুরু ও পুনরুত্থান শুরু হয়েছে তাতে মুসলিম জাতিসত্তার বিকাশের স্বর্ণতোরণ উন্মোচিত হল। .. কোরআনের মর্যাদা রক্ষা আর স্বাধীনতা সংরক্ষণের লড়াই আজ এক ও অভিন্ন ধারায় মিলিত হয়েছে। বিজয় অবধি এ লড়াই চলবে। এ লড়াইয়ে বিজয় সুনিশ্চিত।
বক্তাদের মধ্যে বিভিন্ন অঞ্চলের জনপ্রিয় পীর আছেন, বড় বড় ধর্মীয় রাজনৈতিক দলের নেতারা আছেন, টুপিদাড়িহীন বক্তাদের মধ্যে এনডিএর আনোয়ার জাহিদ, ফ্রীডম পার্টির সেক্রেটারি জেনারেল মেজর বজলুল হুদা, জাগপার নেতা প্রধান, পিপলস ন্যাশনাল পার্টির শেষ শওকত হোসেন নীলু, কৃষক শ্রমিক পার্টির এ এস এমন সোলায়মান আছেন। বক্তারা পুরোনো কথাই বলেন, পুরোনো দাবিই তোলেন। তসলিমা সহ মুরতাদদের ফাঁসি, ব্লাসফেমি আইন প্রণয়ন, এনজিওগুলোর ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপ নিষিদ্ধ ইত্যাদি। —৩০ জুনের হরতালের মধ্য দিয়ে এসব দাবির পক্ষে যে গণরায় ঘোষিত হয়েছে, সরকার আজও তা মেনে নেয়নি। যদি সরকার গণরায়ের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন না করে তবে তৌহিদী জনতার এই আন্দোলন সরকার পতনের আন্দোলনের দিকে ধাবিত হতে বাধ্য হবে। যে সংসদ ব্লাসফেমি আইন পাস করতে পারে না, এদেশের জনগণ সে সংসদের প্রতি আর কোনও আস্থা রাখতে পারে না। ভারতের সাথে ২৫ সালা গোলামী চুক্তির জিঞ্জির ভাঙতে যে সরকার সাহস পায় না, সেই দুর্বল সরকারের টিকে থাকার কোনও অধিকার নেই। বক্তারা ঘোষণা দেন, বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত এই সংগ্রাম চলবেই।
জুমার নামাজের পর কথা ছিল মহাসমাবেশ হবে। কিন্তু মিছিল নিয়ে জনতা আসতে শুরু করে মানিক মিয়া এভিনিউএর বিস্তৃত সুদীর্ঘ রাজপথে। মহাসমাবেশে ছিল ১শ ৫০টি মাইক। জুম্মার নামাজের আযান ভেসে আসে মাইকে। টুপি পাঞ্জারি পরা লক্ষ লক্ষ লোক দাঁড়িয়ে যায় নামাজ পড়তে। এত বড় জামাতে নামাজ পড়া সৌভাগ্য মনে করে আশে পাশের এলাকা থেকেও এসে মানুষ নামাজে শরিক হয়। সমাবেশে পরবর্তী কর্মসূচী দেওয়া হয়, ১২ আগস্ট দোয়া দিবস পালন হবে, এবং সংসদের আগামী অধিবেশনের প্রথম দিনে সংসদভবন ঘেরাও করতে হবে। ১১ দফা দাবি পেশ করা হয় মহাসমাবেশে। দাবিগুলো হচ্ছে, ১. ব্যক্তি পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের সকল স্তরে পূর্ণাঙ্গ ইসলাম অর্থাৎ আল্লাহর নির্দেশিত সার্বজনীন ইনসাফ, হক ও মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। ২. আল্লাহ, আল কোরআন, রাসুলে খোদা মোহাম্মদ (সাঃ), শরীয়ত সম্পর্কে সামান্যতম অবমাননা সহ্য করা হবে না। বাংলাদেশে বসবাসরত অপরাপর ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় স্বাধীনতা, অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। ৩. ধর্ম অবমাননাকারীদের কঠোর শাস্তির নিশ্চয়তাবিধানে ব্লাসফেমি আইন চালু করতে হবে।৪. কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। ৫. রেডিও টেলিভিশনসহ সকল প্রচার মাধ্যমে অপসংস্কৃতি,অশ্লীলতা ও জাতীয় মূল্যবোধবিরোধী প্রচার প্রকাশনা নিষিদ্ধ করতে হবে। ৬.এনজিওদের সকল কার্যক্রম রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। উμচ পর্যায়ের তদন্তসাপেক্ষে রাষ্ট্রদ্রোহী ধর্মদ্রোহী এনজিওদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা ও শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ৭. বাংলাদেশের জাতীয় স্বাধীনতা, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায়(ক)ভারতের সাথে সম্পাদিত ২৫ সালা গোলামী চুক্তি, সাপটা চুক্তি, নৌ ট্রানজিট চুক্তি বাতিল করতে হবে। (খ) ফারাককা, তালপট্টি, শান্তিবাহিনীসহ অপরাপর সমস্যাসমূহ জাতিসংঘ, ওআইসিসহ আন্তর্জাতিক ফোরামে উত্থাপন করতে হবে। অবিলম্বে গঙ্গাবাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করতে হবে। (গ) শত্রুতা ও আগ্রাসন পরিহার না করা পর্যন্ত ভারতীয় পণ্য আমদানি, বিক্রয় ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে। (ঘ) ওয়ার্ল্ড ব্যাংক আইএমএফসহ যে কোনও বিদেশি ঋণ বা সাহায্য শর্তহীন হতে হবে। (ঙ) শক্তিশালী সেনা নৌবাহিনীসহ গণফৌজ গঠন করতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় শক্তির ভারসাম্য রক্ষায় ভারত পাকিস্তানের মত বাংলাদেশকেও আণবিক শক্তি অর্জনের প্রচেষ্টা চালাতে হবে। (চ) রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের সকল স্তর থেকে চিহ্নিত রাষ্ট্রদ্রোহী, ধর্মদ্রোহীদের উচ্ছেদ করতে হবে। ৮. পর্যায়ক্রমে সকল ক্ষেষেন সুদ নামক নির্মম শোষণ নিষিদ্ধ করতে হবে। অবিলম্বে কৃষকদের সকল রকম সুদ মওকুফ করতে হবে। ইতিমধ্যে এনজিও, কৃষিব্যাংকসহ অপরাপর ব্যাংকে কৃষকদের পরিশোধিত সুদ ফেরত দিতে হবে। ৯. সার্বভৌমত্বের মালিক আল্লাহ। প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক চাহিদা পূরণে প্রাপ্ত সকল রাষ্ট্রীয় সম্পদের সুষম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রীয় সম্পদের নির্বিচার লুণ্ঠন বন্ধ এবং অবৈধ উপায়ে অর্জিত সকল সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে বেকার ও দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থান ও বাস্তুহারাদের পুনর্বাসনে ব্যয় করতে হবে। ১০. কেবল নৈতিক ও সামরিক শিক্ষায় শিক্ষিত একটি সুশৃঙ্খল জাতি রাষ্ট্র পরিচালনা ও আজাদী রক্ষায় মূল্যবান অবদান রাখতে পারে। কাজেই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় শিক্ষা ও সামরিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। ১১. ৭৪ এর কুখ্যাত কালাকানুন ও ৯২ এর সন্ত্রাস দমন আইন অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
মহাসমাবেশে এই দাবিগুলো মেনে নেবার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানানো হয়। অন্যথায় উদ্ভূত যে কোনও পরিস্থিতির জন্য সরকারই দায়ি থাকবে বলে বলা হয়। কামার, কুমোর, জেলে, তাঁতি, কৃষক, শ্রমিক, মুক্তিযোদ্ধা, ছাত্র, শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবী, সাংস্কৃতিক কর্মী, বুদ্ধিজীবী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, রাজনীতিক, আলেম ওলামা, পীর মাশায়েখ, ও মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টানসহ সকল স্তরের দেশপ্রেমিক ও ধর্মপ্রিয় জনগণকে সম্মিলিত সংগ্রাম পরিষদের পতাকাতলে শামিল হয়ে জাতীয় স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, ইনসাফ ও মানবতার মুক্তি সংগ্রামে শরিক হওয়ার আহবান জানানো হয়।
অনেক দাবিই টুপিদাড়িহীন রাজনৈতিক নেতাদের তৈরি করা, তা বোঝা যায়। কিছু দাবি আমার মন্দ লাগে না। সংখ্যালঘুদের অধিকারের দাবি, কৃষকদের সুদ মওকুফের দাবি, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের শর্তহীন ঋণ বা সাহায্যের দাবি। সম্পদের সুষম বণ্টনের দাবি। যে দাবিই হোক না কেন মানুষ এসেছে কোরান বাঁচাতে, তসলিমাকে ফাঁসি দিতে। লক্ষ লক্ষ মানুষের স্লোগান ছিল,
নারায়ে তকবির, আল্লাহ আকবার,
কুখ্যাত তসলিমার ফাঁসি চাই দিতে হবে,
ইসলামের শত্রুরা হুঁশিয়ার সাবধান,
নাস্তিকদের আস্তানা এই বাংলায় রাখবো না,
মুরতাদদে আস্তানা এই বাংলায় থাকবে না,
আমরা সবাই রসুল সেনা ভয় করি না বুলেট বোমা,
জিহাদ জিহাদ জিহাদ চাই জিহাদ করে বাঁচতে চাই।
ইনকিলাব বর্ণনা করেছে, এসব স্লোগান আকাশ বাতাস প্রকম্পিত করে। লাখো জনতার কণ্ঠে উচ্চারিত তাকবীর ধ্বনি যেন সপ্ত আসমান ভেদ করে আরশে আজীমে গিয়ে নাড়া দিচ্ছিল। অনুষ্ঠান শুরু হয় কোরান তেলওয়াত দিয়ে। এরপর ইসলামি সঙ্গীত, সঙ্গীতের কথাগুলো এরকম, আল্লাহর জমিনে এই বাংলার জমিনে মুরতাদ বেদ্বীনের স্থান নেই। এদেশ ইসলাম মুসলিম জনতার, এখানে ঠাঁই নেই মুরতাদ খোদাদ্রোহীতার.. . .
সমাবেশ ঘিরে চারদিকে বসেছিল ক্ষুদে হকাররা। বুট বাদাম কলা রুটি শশা এমনকি ভ্যানে করে ভ্রাম্যমান বিরানি ও তেহারির দোকানও বসেছিল। সমবেত জনতার জন্য মহাসমাবেশের উদ্যোক্তারা খাবার পানির ব্যবস্থা করেছিলেন। দুশতাধিক কাঁচা পায়খানার ব্যবস্থাও করেছিলেন। মহাসমাবেশটি এক কথায় সার্থক। তবে ৫টি বোমা ফাটার ঘটনা ঘটে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়। যখন মহাসমাবেশ শেষে লোকেরা ট্রাক বাসে করে ঢাকার বাইরে যেতে থাকে, মৌলবাদ বিরোধী দল যেখানেই তাদের পেয়েছে, পেটাতে চেষ্টা করেছে, এই করে আহতের সংখ্যা সত্তর জন। একটি জিনিস একটু খটকা লাগে, জামাতে ইসলামী আলাদা ভাবে জনসমাবেশ করেছে গতকাল। জামাতে ইসলামীর নেতারা মানিক মিয়া এভিনিউএ ছিল না, গোলাম আযম চট্টগ্রাম তো চট্টগ্রাম, খোদ ঢাকা শহরের মাঝখানে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে জনসমাবেশে বক্তৃতা করেন। শেখ হাসিনা ওদিকে নোয়াখালির বেগমগঞ্জে গিয়ে বক্তৃতা করছেন মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে নয়, সরকারের বিরুদ্ধে। ধর্মের গুণগান গেয়েছেন, এক পর্যায়ে গর্ব করে বললেন, আমরা ধর্মহীনতায় বিশ্বাস করি না। কারণ বঙ্গবন্ধুই প্রথম মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও ইসলামিক ফাউণ্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। আমাদের একজন সংসদ সদস্য মদ জুয়া বন্ধের বিল উত্থাপন করলেও বিএনপি সরকার তা পাস করেনি।
ইত্তেফাকের খবরটি লিখেছে এভাবে, মানিক মিয়া এভিনিউর মহাসমাবেশের আহবান, জীবনের সকল ক্ষেষেন ইসলামী অনুশাসন প্রতিষ্ঠা করুন। বঙ্গবন্ধু এভিনিউএ নগর আওয়ামী লীগের সমাবেশে কাল ১২ টি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আহত হয়েছে ওখানেও বেশ কজন। জনকণ্ঠের খবর, জিপিও এলাকা রণক্ষেষেন পরিণত, পুলিশের লাঠিচার্জে ৪০ জন ছাত্র আহত, ককটেলের আঘাতে পুলিশ জখম, অবস্থা গুরুতর। সংবাদের খবর, সংঘর্ষ ও বোমায় ছাত্র পুলিশ অধ্যাপকসহ অর্ধ শতাধিক আহত। এদিকে সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী ছাত্র সমাজ আজ সারা দেশে পূর্ণ দিবস হরতালের ডাক দিয়েছে। আওয়ামী লীগ ডাক দিয়েছে অর্ধ দিবসের হরতাল। চট্টগ্রামে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এই হরতাল।
ঠ দুপুরে ভাত নিয়ে এসেছেন ঘরে, রাতেও খাবার নিয়ে এসেছেন। আমার শুধু শুয়ে বসে থাকা ছাড়া বই পড়া, পত্রিকা পড়া, আর ঠ এলে কথা বলা ছাড়া আর কোনও কিছু করার নেই। কথা যা হয়, মূলত রাজনীতি নিয়েই হয়। অনেক রাতে ঠর স্বামী এলেন কথা বলতে। পুরো বাড়ির মধ্যে কেবল ঠ আর ঠর স্বামীই জানেন যে আমি এই ছোট ঘরটিতে থাকছি। ঠর স্বামীটি একসময় বামপন্থী শ্রমিক নেতা ছিলেন, বললেন তাঁকেও এরকম দীর্ঘদিন গা ঢাকা দিতে হয়েছিল। তিনি জানেন এরকম বেঁচে থাকা ঠিক কি রকম বেঁচে থাকা। তিনি জানেন কী ভয়াবহ তখনকার প্রতিটি মুহূর্ত, যখন রাতের অন্ধকারে প্রাণ বাঁচানোর জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে আশ্রয় নিতে হয়।
ঠ এবং ঠর স্বামী দুজনই দেশের বর্তমান রাজনীতি নিয়ে তিতিবিরক্ত। কিন্তু তারপরও দুজনের একজনও মনে করেন না যে দেশে মৌলবাদী আন্দোলন খুব বেশিদূর এগোবে। আগামী নির্বাচনে এই সরকার ভোটে জিতবে বলেও তাঁরা মনে করেন না।
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন