৩. অতলে অন্তরীণ – ০৮

তসলিমা নাসরিন

এগারো জুন, শনিবার

সেই চার তারিখে বাড়ি ছেড়েছি যে কাপড়ে, সে কাপড়েই এখনও আছি। ঘামের দুর্গন্ধ সারা শরীরে। গা আঠা আঠা হয়ে আছে ধুলোয়, ঘামে, চোখের জলে। অসহ্য গরম। এক পশলা হাওয়া ঢোকার কোনও সুযোগ নেই ঘরে। যেন জ্বলন্ত চুলোর ওপর বসে আছি। দুর্গন্ধ বা আঠা দূর করতে নয়, গোসলখানায় যাই গা থেকে আগুন দূর করতে। গোসলখানায় কোনও সাবান নেই, কোনও তোয়ালে নেই। কোনও বালতি নেই, কোনও লোটা বা মগ নেই। কলটি মেঝে থেকে দু ফুট উঁচুতে। কলের তলে বসে গায়ের ওপর জল ছেড়ে দেওয়া ছাড়া আর কোনও কায়দা নেই গা ভেজানোর। এই কলের তলে বল্টু গোসল করে উঠতে পারে, আমি পারি না। আমার পিঠ যায় তো মাথা যায় না। অগত্যা আলাদা আলাদা করে পা হাত মাথা ইত্যাদি কলের তলে নিয়ে ভেজাই, দুহাতে জল নিয়ে বুক পিঠ। জল তো জল নয়, যেন ফুটোনো জল, এমন গরম। এক চিলতে সাবান লেগে ছিল গোসলখানার মেঝেয়, সম্ভবত বল্টুর কাপড় ধোয়ার সাবান। সেটিকেই চিমটি দিয়ে তুলে তুলে গায়ে মাখি। মাখা ফুরোনোর আগেই সাবানের অস্তিত্ব ফুরিয়ে যায়। এর পর কি? গা মুছব কি করে! পরনের শাড়িটি দিয়ে গা মুছে ঘ র দেওয়া লম্বা জামাটি পরি। ঘ র জামাটি ও বাড়ি ছাড়ার সময় আমি খুলে রেখেছিলাম, ঘ আমার হাতে দিয়ে জামাটি, বলেছিলেন নিয়ে যেতে। গোসল হল কিন্তু এর নাম গোসল নয়। এর নাম যে ঠিক কী, জানি না। গোসলখানার গরম জল থেকে ফিরে আসি জ্বলন্ত উনুনের ওপর আবার। সারা শরীরে কুটকুট করে কামড়াতে থাকা ঘামাচি নিয়ে বসে থাকি, বসে থাকি আর দীর্ঘশ্বাস ফেলি। এ ছাড়া করার কিছু নেই আমার। বসে থাকি আর অপেক্ষা করি কারওর। অপেক্ষা আমাকে একটি ঘরের মধ্যে স্থির বসে থেকে করতে হয়। কারওর অপেক্ষা করলে যে দরজা খুলে দাঁড়াবো, জানালা খুলে তাকাবো, যে অভ্যেসটা ছিল এতকাল, অভ্যেসটা শক্ত করে খামচে ধরে তোশকের তলায় রেখে দিই। বরং কান পেতে রাখি। কান পেতে রাখি পায়ের শব্দ পাওয়ার। কান দুটো বেড়ালের পায়ের শব্দও শোনে।

ঙ এলেন দুপুরে খুশির খবর নিয়ে। আজ বুদ্ধিজীবীদের বিবৃতি ছাপা হয়েছে পত্রিকায়। সই যোগাড় করেছেন ঙ। তসলিমার বিরুদ্ধে মামলা মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। গতকাল শুক্রবার বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীগণ এক বিবৃতিতে বলেন, সরকার ইচ্ছাকৃত ভাবে আইনের অপব্যাখ্যার মাধ্যমে লেখিকা তসলিমা নাসরিনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে মৌলবাদী চক্রের সঙ্গে একাত্ম হয়েছে। সরকারের এ আচরণকে সততা ও নাগরিকের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী অভিহিত করে বিবৃতিতে এর নিন্দা এবং তসলিমা নাসরিনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার তসলিমা নাসরিনের বিরুদ্ধে যে অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে, লেখিকা তার সত্যতা অস্বীকার করে নিজের অবস্থান পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করেছেন। লেখিকা স্পষ্ট করে বলেছেন, তিনি পবিত্র কোরান সংশোধনের কথা বলেননি, সুতরাং তিনি যে কথা বলেননি সে কথা দ্বারা কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগার অভিযোগ অবাস্তব এবং অলীক। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, শরিয়া আইন সংশোধনের দাবি করার অধিকার সকল নাগরিকের আছে এবং এ দাবি ইতিমধ্যে একাধিক মহল থেকে উত্থাপিত হয়েছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এ ব্যাপারে সরকারের আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে ইতিমধ্যে বিল দাখিল করেছে।

মৌলবাদী শক্তির চাপে পড়ে সরকারের এই আচরণের আমরা নিন্দা করি এবং তসলিমা নাসরিনের বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছে তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করার দাবি জানাই। আমরা লেখিকার ও তার পরিবারের নিরাপত্তার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি। উগ্র মৌলবাদীরা বারবার তসলিমা নাসরিনসহ দেশের কয়েকজন বরেণ্য বুদ্ধিজীবীর প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে, অথচ সরকার এদের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে লেখক ও সাংবাদিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। আমরা এই দুঃসহ পরিস্থিতির অবসান চাই। অবাক হয়ে লক্ষ্য করছি জনগণের দ্বারা নির্বাচিত এই সরকার একটির পর একটি গণতন্ত্রবিরোধী কর্মে লিপ্ত হয়ে পড়ে গণতন্ত্রকে ক্রমশ বিপন্ন করে তুলছে।

বাইশ জন বুদ্ধিজীবী সই করেছেন, কে এম সোবহান, খান সারওয়ার মুরশিদ, শামসুর রাহমান, কবীর চৌধুরী, জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, কলিম শরাফী, মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ফয়েজ আহমেদ, রফিকুননবী, কাইউম চৌধুরী, আমিনুল ইসলাম, হাশেম খান, মোহাম্মদ রফিক, শফি আহমেদ, হায়াৎ মামুদ, পান্না কায়সার, আসাদুজ্জামান নূর, আলী যাকের, হারুন হাবীব, নাসিরুদ্দিন ইউসুফ, আখতারুজজ্জামান, আলী আনোয়ার..।

আজ আটদিন পর একটি বিবৃতি। মাঝখানে এঁরাই বিবৃতি দিয়েছেন আমার মামলার পরে জারি হওয়া মামলার বিরুদ্ধে। আমি এমন একটি নাম, যে নামটি উচ্চারণ করতে লজ্জা হয়, ভয় হয়। আমি জানি যাঁরা আমার মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে, যাঁরা আমার লেখার সঙ্গে একশ ভাগ একমত তাঁদেরও লজ্জা ভয় যায় না। কি জানি কি বলে লোকে, এই আশংকা। কি জানি কি বিপদ ঘটে, আশংকা। আশংকার পরোয়া করে না গার্মেণ্টেসএর ওই দরিদ্র শ্রমিকেরা। সাজু, জাহেদা, লাভলী বিবৃতি দিচ্ছে, সভা করছে। গার্মেন্টসএর আরও শ্রমিক নিয়ে আমরা কজন তসলিমা পক্ষ নামে দল করে সভা করেছে আবার, লিফলেট ছেপেছে। ওরা অচেনা অজ্ঞাত মানুষ, ওদের সভা বা বিবৃতির মূল্য নেই, কিন্তু তারপরও মরিয়া হয়ে অসাধ্য সাধনে নেমেছে। ওরা যেদিন খবর শুনেছে, সেদিনই প্রতিবাদ করেছে। আর আজ যাঁরা প্রতিবাদ করলেন, ভেবে চিন্তে করেছেন, তবু তো করেছেন, করুণা করে হলেও তো করেছেন, নাও করতে পারতেন। যে বিষাদ আমাকে গ্রাস করেছিল গতকাল, তা দূর হয়। দূর হলেও দুর্ভাবনা থেকে মুক্তি জোটে না। এই বিবৃতির কারণে আমার ওপর থেকে মামলা তুলে নেওয়া হবে না, কিন্তু আমার কি অন্তত জামিন পাওয়া হবে? ঙ বললেন যে ক তাঁকে জানিয়েছেন যে আগামীকাল সকালে যে কোনও সময় সম্ভবত আমাকে আদালতে উপস্থিত হতে হবে। হঠাৎ করে আদালতে উদয় হয়ে জামিন চাইতে হবে, এমন একটি ব্যবস্থা করছেন আমার উকিল। ক প্রায়ই উকিলের কাছে খবর নিচ্ছেন কি হচ্ছে না হচ্ছে। জামিনের জন্য যখন আমার উপস্থিতির প্রয়োজন হবে, তখন যেন তাকে জানানো হয়, বলে রেখেছেন উকিলকে। ক ব্যবস্থা করবেন আমাকে আদালতে নেওয়ার। আগামীকাল কটার সময় যেতে হবে, কিভাবে যাবো তার আমি এখনও কিছুই জানি না। ঙর বক্তব্য, আগে থেকে কেউ আসলে কিছুই জানে না। উকিল ককে খবর দেওয়ার দশ মিনিটের মধ্যে আমাকে আদালতে যেতে হবে। বাতাসে খবরটি ওড়ার আগেই যেন আমি উপস্থিত হয়ে জামিন নিয়ে বেরিয়ে যেতে পারি। যাকে বলা হয় ঝড়ের বেগে। কিন্তু বেগটি আদপেই ঝড়ের হবে কি না এ বিষয়ে ঙ ঠিক নিশ্চিত নন। জামিন না হওয়াতক অনিশ্চিত প্রতিটি মুহূর্ত। জামিন আদৌ হবে কি না, হলে কবে হবে। লুকিয়ে থাকা সম্ভব আর হবে কি না, না হলে কী হবে! কে উত্তর দেবে এসবের! পুলিশের চেয়ে শত গুণ আশংকা মোল্লাদের নিয়ে। আজকাল ঘরে ঘরে মোল্লা। এ বাড়ির আশে পাশে কজন মোল্লা বাস করছে কে জানে! যদি কেউ একবার গন্ধ পেয়ে যায় আমার, কী হবে তা আমি এবং ঙ দুজনই অনুমান করতে পারি। ঙ চলে যেতে চান, তাঁকে আরও কিছুক্ষণ বসার জন্য অনুরোধ করি। ঙ আধঘন্টা থাকলেও আধ মুহূর্ত বলে মনে হয়। ক বা ঙ এলে ঘড়ির কাঁটা আচমকা লাফাতে থাকে। এ সময় আমার আপন আর কে আছে ক আর ঙ ছাড়া! ক আর ঙ না থাকলে আমার কবেই তো মৃত্যু হত। একএকটা মুহূর্ত বেঁচে থাকি, এর মানে একএকটা মুহূর্ত ক আর ঙ আমাকে বাঁচিয়ে রাখেন।

অবকাশে বাবার চেম্বারে তিন দফা হামলা। বাড়ি চেম্বার ভাঙচুর। জানিনা বাবা বা দাদার গায়ে কটা চাপাতি বা রামদার কোপ পড়েছে। জানিনা বাবার রক্তচাপ এই দুশ্চিন্তায় কতটা বেড়েছে। হৃদপিণ্ডে আরও একটি ধাককা লেগেছে কি? মস্তিষ্কে কি রক্তক্ষরণ হচ্ছে! কিছু একটা হচ্ছে নিশ্চয়ই। বাবাকে দেখেছি সামান্য কিছু ঘটলেই তাঁর রক্তচাপ এমন বেড়ে যায় যে হৃদপিণ্ডের ক্রিয়া বন্ধ হয় হয় এমন অবস্থা হয়, রক্তচাপ দ্রুত কমানোর জন্য নিফিডিপিন ট্যাবলেট দুটো তিনটে গিলে তিনি মৃত্যুকে ঠেকিয়ে রাখেন। বাবা কি এই ভয়ংকর সময়ে যখন তাঁর সামনে দিয়ে প্রতিদিন যাচ্ছে তাঁর কন্যাকে খুন করার জন্য বিশাল বিশাল মিছিল, তাঁর চোখের সামনে অবকাশের দেয়াল আর চেম্বারের দরজায় লাগানো হচ্ছে পোস্টার, কুখ্যাত মুরতাদ তসলিমার ফাঁসি চাই, তিনি কি পারছেন রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে! যে কোনও মুহূর্তে এসে যাওয়া মৃত্যুকে আর ঠেকাতে ঠেকাতে পারার তো কথা নয়! পত্রিকা কি সব খবর পায় আর! এমনও হতে পারে, বাবাকে ওরা কুপিয়েছে। পাঞ্জাবির তলে তো ওরা রামদা নিয়ে ঘোরে, কত কত মানুষকে তো কুপিয়ে মেরেছে, কোরবানির গরুর মত মানুষের গলা জবাই করেছে ওরা! বাবাকেও কি ওরা জবাই করবে, কুপিয়ে মারবে! জেল থেকে বেরিয়ে কি আমি আমার বাবাকে জীবিত দেখতে পাবো না! যন্ত্রণা হচ্ছে বুকে, যন্ত্রণাটি বুক থেকে ছড়িয়ে পড়ছে সারা শরীরে। কাল বায়তুল মোকাররম মসজিদ থেকে হাজার হাজার লোকের মিছিল শান্তিনগরে গিয়ে উত্তেজিত হয়েছে! কেন উত্তেজিত হয়েছে! আমার অ্যাপার্টমেণ্টে গিয়ে আমার আত্মীয়দের গলা কাটার জন্যই তো! পুলিশ তো আর ওদের বাধা দেবে না এখন। কাল কি শুনতে হবে যে আমার পরিবারের চারজন অথবা পাঁচজন সদস্যকে খুন করা হয়েছে! চোখ বুজে বসে থাকি। হাতের পত্রিকা হাতে ঝুলতে থাকে। পত্রিকায় তপন দের ছবি। গতকাল দৈনিক খবরের সাংবাদিক তপন দে যখন মিছিলের ছবি তুলছিল, পুরানা পল্টনের মোড়ে মৌলবাদীরা তার ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেছে, প্রচণ্ড মেরেছে তপন দেকে, শেষ পর্যন্ত কিছু সাংবাদিক তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তপন দে পুলিশের সাহায্য চেয়েছিল, পুলিশ সাহায়্য করেনি, সামনেই নিষিক্রয় দাঁড়িয়েছিল।

জামাতে ইসলামি এবং আর সব মৌলবাদী দলের সঙ্গে এখন আরও রাজনৈতিক দল যোগ হয়েছে, ফ্রীডম পার্টি –শেখ মুজিবর রহমানের হত্যাকারীরা যে রাজনৈতিক দলটি বানিয়েছে সেটি তো আছেই, একসময়ের বাম রাজনীতিবিদ আনোয়ার জাহিদ তাঁর দল নিয়ে ঢুকে গেছেন ইসলামি ঐক্যে, শফিউল আলম প্রধান একসময়ের প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলের নেতা, তিনিও তাঁর জাগপা দল নিয়ে ঢুকেছেন। মৌলবাদীদের বিশাল বিরাট শক্তি দেখে এমনই মুগ্ধ তাঁরা যে ভেবে নিয়েছেন এই শক্তিটিই দেশের সবচেয়ে বড় শক্তি হয়ে ক্ষমতায় আসছে, সুতরাং এই দলের সঙ্গে ভিড়ে যাওয়া এখন সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। আনোয়ার জাহিদ আর প্রধানের মুখে মৌলবাদীদের ভাষা, তসলিমার ফাঁসির জন্য তাঁরাও মিছিলের অগ্রভাগে থাকছেন, তাঁরাও স্লোগান দিচ্ছেন। গতকাল জুম্মাহর নামাজের পর হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমানের সভা হয় বায়তুল মোকাররমে। বক্তৃতা করেন বিখ্যাত সব ইসলামী নেতা। শায়খুল হাদিস মাওলানা আজিজুল হক বলেছেন, ধর্মদ্রোহিরা শুধু ইসলামের শষনু নয়, তারা দেশ ও জনগণেরও শষনু। ধর্মদ্রোহী নাস্তিক মুরতাদের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে তা শুধু আলেম ওলামা বা পীর মাশায়েখদের আন্দোলন নয়, দেশের সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মানুষ আজ এ ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এই আন্দোলনের বিজয় হবে ইনশাআল্লাহ। ইসলামি শাসনতন্ত্র আন্দোলনের নেতা বরগুনার পীর মাওলানা আব্দুর রশিদ বলেছেন, তসলিমা ও জনকণ্ঠ আমাদের মূল লক্ষ নয়, মূল লক্ষ হল ইসলাম ও কোরানের বিরুদ্ধে চক্রান্ত নস্যাৎ করে ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠা করা। তসলিমাকে গ্রেফতার করা না হলে বিএনপি সরকারের অবস্থা ভয়াবহ হবে। মাওলানা ওবায়দুল হক এম.পি বলেছেন, সংসদে চলতি অধিবেশনেই ধর্মদ্রোহিতা বিরোধী আইন পাস করুন। অন্যথায় জনগণ ধর্মদ্রোহীদের শাস্তির ব্যবস্থা নিজেরাই করতে বাধ্য হবে। ব্যারিস্টার কোরবান আলী বলেন, জনগণের দাবিকে উপেক্ষা করা হবে আগুন নিয়ে খেলা করার সামিল। ইসলাম ও রাষ্ট্রদ্রোহী তৎপরতার প্রতিরোধ মোর্চার আহবায়ক মাওলানা মহিউদ্দিন আহমেদ নাস্তিকদের জানাজা না পড়ানোর জন্য সব মোল্লা মুসল্লির প্রতি অনুরোধ জানান। লালবাগ মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা ফজলুল হক আমিনী বলেন, ঈমান ও ইসলামের কথা বলা হলে আমাদের বলা হয় মৌলবাদী, ফতোয়াবাজ ইত্যাদি। নামাজ রোজা হজ্ব পালন করলে যদি মৌলবাদী বলা হয় তবে হাসিনা খালেদাও মৌলবাদী। আমিনী ৩০ জুনের মধ্যে বিশেষ ট্রাইবুনালে তসলিমা নাসরিনের বিচারের দাবি করেন।

৩০শে জুনের আগেই তসলিমার ফাঁসি দিতে হবে। ইসলাম ও রাষ্ট্রদ্রোহী তৎপরতা প্রতিরোধ মোর্চার পক্ষ থেকে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ ৩০ শে জুন পর্যন্ত সরকারকে চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন, এর মধ্যে তসলিমার ফাঁসি না হলে দেশব্যাপী অর্ধদিবস হরতাল এবং পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে। ৩০শে জুন হরতালের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন।

পত্রিকায় মিছিলের ছবি দেখি। হাজার হাজার লোকের মিছিল। নগরীর রাজপথ সাদা হয়ে আছে সাদা টুপিতে সাদা পাঞ্জাবিতে। সামনে ব্যানার, ব্যানারে লেখা তসলিমা নাসরিনসহ সকল নাস্তিকদের ফাঁসি, এনজিওদের অপতৎপরতা ও জনকণ্ঠ বন্ধের দাবিতে প্রতিবাদ, সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল। এটি ইসলাম ও রাষ্ট্রদ্রোহী তৎপরতা প্রতিরোধ মোর্চার মিছিল। ঈমান বাঁচাও দেশ বাঁচাও আন্দোলনের মিছিলের ব্যানারে লেখা তসলিমা নাসরিন সহ সকল ধর্মদ্রোহী ও নাস্তিক মুরতাদের ফাঁসি ও বিদেশি মদদপুষ্ট ইসলাম বিরোধী এনজিওদের অপতৎপরতা বন্ধের দাবি। জামাতে ইসলামির মিছিলের ব্যানারে লেখা, আল্লাহ, রাসুলুল(সাঃ) ও ইসলাম অবমাননাকারী ধর্মদ্রোহীদের শাস্তি চাই, সংসদে ধর্মদ্রোহীদের শাস্তিমূললক আইন পাশ কর। এনজিওদের অপতৎপরতা ও নাস্তিক মুরতাদ প্রতিরোধ আন্দোলনের মিছিলের ব্যানারে লেখা, তসলিমা নাসরিন সহ সকল নাস্তিক মুরুরতাদদের ফাঁসি চাই। ধর্মদ্রোহীতা বিরোধী আইন প্রণয়ন কর। এনজিওদের অপতৎপরতা বন্ধ কর। ঢাকার রাজপথ কেবল টুপিতে সাদা হয়নি, ঢাকায় যা ঘটছে, ঢাকার বাইরেও তা ঘটছে, টুপিতে সাদা। রাস্তায় যানবাহন চলছে না, মিছিল চলছে।

আমার জীবদ্দশায় আমি মৌলবাদীদের এত বড় আন্দোলন দেখিনি। আমার জীবদ্দশায় মৌলবাদীদের এত সংগঠিত আর শক্তিশালী হতে দেখিনি।

তসলিমা ও মুরতাদ নাস্তিকদের শাস্তি দাবি অব্যাহত। এখনও আমাকে সরকার গ্রেফতার করতে পারেনি বলে সরকারের নিন্দা করছে বিভিন্ন গোষ্ঠী। চট্টগ্রামের জনসভায় বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মোহাম্মদ জাফরুল্লাহ খান বলেছেন, কুলাঙ্গার তসলিমা কিতাবুল্লাহর সংশোধনী দাবির ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। অতএব ঈমান নিয়ে বাঁচতে হলে এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। মুসলমান হওয়া সত্ত্বেও তার আনুগত্য কোরানের প্রতি নেই, বাংলাদেশের নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও তার আনুগত্য এ দেশের প্রতি নেই। আছে ব্রাহ্মণ্যবাদী ভারতের প্রতি। সুতরাং ধর্মদ্রোহীতার পাশাপাশি রাষ্ট্রদ্রোহীতার অপরাধে তাকে অবশ্যই ফাঁসি দিতে হবে। তসলিমাকে নিয়ে সরকার ভানুমতির খেল শুরু করেছে। এক সপ্তাহ পার হয়ে গেছে, এখনও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি। অথচ দেশের ভেতরে থেকেই সে স্পীকারের কাছে চিঠি লিখে যাচ্ছে। নতুন নতুন সংগঠন যোগ দিচ্ছে আমার ফাঁসির দাবিতে। নারী অধিকার আন্দোলনের সভানেষনী অধ্যাপিকা চেমন আরা ও সেক্রেটরি হাবিবা চৌধুরী বিবৃতি দিয়েছেন, তসলিমা নাসরিন একজন নারী হয়েও নারী সমাজের অমর্যাদা করে চলেছেন, সুতরাং তাঁকে গ্রেফতার করা হোক, তাকে ফাঁসি দেওয়া হোক। সাংস্কৃতিক চেতনা বিকাশ কেন্দ্রও আমার গ্রেফতার এবং বিচার দাবি করেছে। আরেকটি সংগঠন গড়ে উঠেছে, নাম ইয়ং হিন্দু সোসাইটি। এরাও আমার শাস্তি দাবি করেছে। ইয়ং হিন্দু সোসাইটির নেতা স্বপন কুমার বিশ্বাস, শ্রী কৃষ্ণ চন্দ্র দে, সুভাষ চন্দ্র দে ধর্মীয় উত্তেজেনা সৃষ্টির চেষ্টায় নিয়োজিত তসলিমা নাসরিন গংদের শাস্তির এবং ব্লাসফেমি আইনের আওতায় হিন্দু ধর্মকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান।

আজ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের একটি বিবৃতিও ছাপা হয়েছে। মৌলবাদীরা সামাজিক সংহতি এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্টে পাঁয়তারায় লিপ্ত। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের পক্ষ থেকে জোটের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রামেন্দু মজুমদার এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম কুদ্দুস গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমরা অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ করছি যে দেশে উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠী চক্রান্তমূলকভাবে সামাজিক সংহতি ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিনষ্ট করার কাজে লিপ্ত হয়েছে এবং ধর্মানুভূতির অপব্যবহার করে এই ষড়যন্ত্র জোরদার করে চলেছে। তাদের এইসব অপতৎপরতা বন্ধের ব্যবস্থা না করে অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে সরকার বরং মৌলবাদী গোষ্ঠীর ক্রীড়নক হয়ে উঠছে। উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় নারীদের বর্ধমান অংশগ্রহণের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অপব্যাখ্যাকারীদের ফতোয়া, জাতীয়ভাবে সম্মানিত প্রতিষ্ঠিত লেখক বুদ্ধিজীবীদের মুরতাদ আখ্যাদান ও উস্কানিমূলক বক্তব্য, জাতীয় সংসদে স্বাধীনতার অবমাননাকর পাল্টা পতাকা উত্তোলন, সরকারি পত্রিকার স্থলে অশালীন অননুমোদিত পত্রিকা বিতরণ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র শিবিরের নতুন করে সশস্ত্র হামলা ইত্যাদির ১৩৯ বিরুদ্ধে সরকার নিষিক্রয় ভূমিকা পালন করে চলছে। পক্ষান্তরে কথিত অভিযোগের ভিত্তিতে জাতীয় দৈনিক জনকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক শ্রদ্ধাভাজন প্রবীণ সাংবাদিক তোয়াব খান ও নির্বাহী সম্পাদক বোরহান আহমেদকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেষেন আনীত অভিযোগের সুরাহার জন্য প্রেস কাউন্সিলের শরাণাপন্ন না হয়ে সরকার যেভাবে পুলিশি ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন তা গণতান্ত্রিক সমাজের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন করেছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে সাংবাদিকদের মুক্তি দাবি করছি।

সেই সঙ্গে লেখিকা তসলিমা নাসরিন কর্তৃক প্রদত্ত অস্বীকৃতির পরও তার সাক্ষাৎকারের বিকৃত ভাষ্য নিয়ে ফায়দা হাসিলের খেলা বন্ধ এবং লেখিকার সুস্পষ্ট বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে আনীত মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। আমার প্রসঙ্গ লেজের দিকে বলা হলেও বলা হয়েছে। কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ হই। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট বড় ব্যাপার। ছোট দল তসলিমা পক্ষ একটি পোস্টার ছেপে ঢাকা শহরের বিভিন্ন দেয়ালে সেঁটেছে।

আমি পবিত্রত্রত্রত্র কোরান সংশোধনের কথা কখনও কোথাও বলিনি
–তসলিমা নাসরিন

০ তসলিমা নাসরিনএর উপর দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার কর
০ স্বাধীন সংবাদপত্র এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা চাই
০ ফতোয়াবাজদের রুখে দাঁড়াও

একটি লিফলেটও বের করেছে মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে। জানি না এই কেন্দ্রটিতে সাজু জাহেদাদের দল আছে কি না। আমার নামটি উচ্চারণ করতে ওদের কোনও আড়ষ্টতা নেই।

তসলিমা নাসরিনের হুলিয়া প্রত্রত্যাহার কর
ফতোয়াবাজদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও

প্রিয় দেশবাসী,

তসলিমা নাসরিনের কথিত কোরান সম্পর্কে উক্তির কারণে তার উপর সরকার মামলা দায়ের ও হুলিয়া জারি করেছেন। যে কথিত উক্তির জন্য তার বিরুদ্ধে মামলা, সে উক্তি সম্পর্কে তসলিমা নাসরিন নিজেই বলেছেন, তিনি তা বলেননি। কলকাতার স্টেটসম্যান পত্রিকা ভুল ছেপেছে। স্টেটসম্যান পত্রিকায় পাঠানো প্রতিবাদ লিপিতে তসলিমা নাসরিন বলেছেন, কোরান পরিবর্তনের কথা তিনি বলেননি। তিনি বলেছেন শরিয়া আইন পরিবর্তনের কথা।

স্টেটসম্যান পত্রিকায় প্রকাশিত তসলিমা নাসরিনের কথিত এই উক্তি সম্পর্কে প্রথমে খবরটি প্রকাশিত হয় দৈনিক বাংলাবাজারে। তারপর খবরটি লুফে নেয় দৈনিক ইনকিলাব। এরপর প্রায় প্রতিদিনই ইনকিলাব পত্রিকায় তসলিমা নাসরিনের বিরুদ্ধে খবর ছাপা হচ্ছে। এই গ্রুপের সাপ্তাহিক পূর্ণিমা গত দুবছর ধরে তসলিমা নাসরিনকে নিয়ে একের পর এক করেছে কভার স্টোরি। অর্ধেক পৃষ্ঠার লেখায় দেড় পৃষ্ঠাব্যাপী তসলিমার ছবি ছাপিয়ে পত্রিকাটি ব্যবসায়িক ফায়দা লুটেছে। কারণ তসলিমা নাসরিনের বিষয় নিয়ে কিছু লিখলে পত্রিকা চলে বেশি, পত্রিকার কাটতি বেশি। সম্প্রতি এই পত্রিকার নেপথ্য মালিক কুখ্যাত মাওলানা মান্নানের উস্কানিতে গঠিত সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীগুলি এনজিওদের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড বিষোদগার করছে। স্বাধীন বাংলাদেশ অভ্যুদয়ের পর থেকেই এনজিওরা এদেশে কাজ করে আসলেও এনজিওদের বিরুদ্ধে বিরোধিতা এত চরমে ছিল না। এখন এর বিরোধিতা করার কি কারণ? এনজিওরা এখন ব্যাপক প্রাথমিক ও বয়স্ক শিক্ষার কার্যক্রম শুরু করেছে। এই সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী চায় না যে, আমাদের দেশের মানুষ শিক্ষিত হোক। তারা তাদের মাতব্বরি খবরদারি টিকিয়ে রাখার জন্য এ দেশের মানুষকে অশিক্ষিত রাখতে চায়। এনজিওদের অর্থনৈতিক কর্মসূচী ও গ্রামীণ মানুষদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এদের আঁতে ঘা লেগেছে। কারণ তাদের মহাজনি ও দাদন ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। এইসব সাম্প্রদায়িক ও ফতোয়াবাজ গোষ্ঠীর ব্যাপারে সরকার একেবারে নীরব। বরং বলা যায় পঈচ্ছত সমর্থন দিয়ে চলেছে। তসলিমা নাসরিন ও জনকণ্ঠের বিরুদ্ধে মামলা তারই প্রমাণ করে। তাই আজকের প্রশ্ন, স্বার্থপর ধুরন্ধর এই সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর খপ্পরে পড়ে দেশ কি মধ্যযুগে ফিরে যাবে? নাকি আমরা গণতন্ত্রের পথে, ব্যক্তি স্বাধীনতার পথে, মানুষের মানবিক মূল্যবোধের পথে অগ্রসর হব! আমাদের দাবি অবিলম্বে তসলিমা নাসরিনের বিরুদ্ধে আরোপিত মামলা ও হুলিয়া প্রত্যাহার করা হোক। দৈনিক জনকণ্ঠের সাংবাদিকদের উপর আরোপিত মামলা প্রত্যাহার করা হোক। ফতোয়াবাজদের বেআইনি কার্যক্রম বন্ধ করা হোক।

————– মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র ————-

 

আজকের আরেকটি খবরের কথা আমি এখনও বলিনি। খবরটি খুব বড় খবর। পত্রিকার প্রথম পাতার খবর। না বলার কারণটি সম্ভবত বেঁচে থাকার একটি আশা, যত ক্ষীণই হোক তা, আঁকড়ে ধরে রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমি জানি আমার বাঁচার আর কোনও সম্ভাবনা আর নেই। এই ফতোয়া সিলেটের ছাহাবা সৈনিক পরিষদের দেওয়া ফতোয়ার মত নয়। এ ফতোয়া অন্যরকম। এই ফতোয়া মুফতীর দেওয়া ফতোয়া। ইসলামি আইনে একমাত্র মুফতীরই অধিকার আছে ফতোয়া দেওয়ার। সম্ভবত আমার মৃত্যু না হলে কেউ এইসব অন্যায়ের প্রতিবাদ করবে না। যে কোনও সময় যে কেউ আমার মাথাটি কেটে নেবে। আগের পঞ্চাশ হাজার, আর এখনকার এক লক্ষ, মোট দেড়লক্ষ টাকা মূল্য আমার এই মাথার। মূল্যবান মাথাটি বনবন করে ঘোরে, মূল্যবান মাথাটি বাঁচাবার কোনও বুদ্ধিই এই মাথায় নেই।

তসলিমাকে হত্যার জন্য লাখ টাকা পুরুরস্কার ঘোষণা

খুলুনা, ১০ই জুনুন। আজ বিকেলে স্থা্থানীয় শহীদ পার্কে আয়োজিত এক সীরাতুন্নুন্নবী সম্মেলনে লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে হত্যার জন্য এক লাখ টাকা পুরুরস্কার ঘোষণা করা হয়।
জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম এর খুলুলনা জেলা কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মাওলানা রফি আহমেদ মহল্লী। সীরাতুন্নুন্নবী সম্মেলনের অন্যতম বক্তা মুফুফতী সৈয়দ নজরুল ইসলাম তসলিমা নাসরিনকে হত্যার ঘোষণা দিয়ে বলেন, ইসলামের দুশমন, কোরানের অপব্যাখ্যাকারী তসলিমা নাসরিনকে যে ব্যক্তি হত্যা করতে পারবে, তাকে ১ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। এ সময় তিনি তাঁর ব্যাংকের হিসাব নম্বরও উল্লেখ করেন। তসলিমার হত্যাকারীকে তিনি তাঁর ঢাকার বাসার (৩১৪/২ লালবাগ) ঠিকানায় যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানান।

সকল অধ্যায়

১. ১. প্যারিসের ডায়রি – ০১
২. ১. প্যারিসের ডায়রি – ০২
৩. ১. প্যারিসের ডায়রি – ০৩
৪. ১. প্যারিসের ডায়রি – ০৪
৫. ১. প্যারিসের ডায়রি – ০৫
৬. ১. প্যারিসের ডায়রি – ০৬
৭. ২. তাণ্ডব – ০১
৮. ২. তাণ্ডব – ০২
৯. ২. তাণ্ডব – ০৩
১০. ৩. অতলে অন্তরীণ – ০১
১১. ৩. অতলে অন্তরীণ – ০২
১২. ৩. অতলে অন্তরীণ – ০৩
১৩. ৩. অতলে অন্তরীণ – ০৪
১৪. ৩. অতলে অন্তরীণ – ০৫
১৫. ৩. অতলে অন্তরীণ – ০৬
১৬. ৩. অতলে অন্তরীণ – ০৭
১৭. ৩. অতলে অন্তরীণ – ০৮
১৮. ৩. অতলে অন্তরীণ – ০৯
১৯. ৩. অতলে অন্তরীণ – ১০
২০. ৩. অতলে অন্তরীণ – ১১
২১. ৩. অতলে অন্তরীণ – ১২
২২. ৩. অতলে অন্তরীণ – ১৩
২৩. ৩. অতলে অন্তরীণ – ১৪
২৪. ৩. অতলে অন্তরীণ – ১৫
২৫. ৩. অতলে অন্তরীণ – ১৬
২৬. ৩. অতলে অন্তরীণ – ১৭
২৭. ৩. অতলে অন্তরীণ – ১৮
২৮. ৩. অতলে অন্তরীণ – ১৯
২৯. ৩. অতলে অন্তরীণ – ২০
৩০. ৩. অতলে অন্তরীণ – ২১
৩১. ৪. দেশান্তর – ১
৩২. ৪. দেশান্তর – ২
৩৩. ৪. দেশান্তর – ৩
৩৪. ৪. দেশান্তর – ৪ (শেষ)
৩৫. ৩. অতলে অন্তরীণ – ২২
৩৬. ৩. অতলে অন্তরীণ – ২৩
৩৭. ৩. অতলে অন্তরীণ – ২৪
৩৮. ৩. অতলে অন্তরীণ – ২৫
৩৯. ৩. অতলে অন্তরীণ – ২৬
৪০. ৩. অতলে অন্তরীণ – ২৭
৪১. ৩. অতলে অন্তরীণ – ২৮
৪২. ৩. অতলে অন্তরীণ – ২৯
৪৩. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৩০
৪৪. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৩১
৪৫. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৩২
৪৬. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৩৩
৪৭. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৩৪
৪৮. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৩৫
৪৯. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৩৬
৫০. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৩৭
৫১. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৩৮
৫২. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৩৯
৫৩. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৪০
৫৪. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৪১
৫৫. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৪২
৫৬. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৪৩
৫৭. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৪৪
৫৮. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৪৫
৫৯. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৪৬
৬০. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৪৭
৬১. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৪৮
৬২. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৪৯
৬৩. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৫০
৬৪. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৫১
৬৫. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৫২
৬৬. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৫৩
৬৭. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৫৪
৬৮. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৫৫
৬৯. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৫৬
৭০. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৫৭
৭১. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৫৮
৭২. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৫৯
৭৩. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৬০
৭৪. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৬১
৭৫. ৩. অতলে অন্তরীণ – ৬২

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন