পৌলোমী সেনগুপ্ত
“ব্যাপার কী বলো তো ভেলকুনমামা?” অবাক গলায় টিকলু বলল, “বাড়িতে ক্রীড়া সংগ্রহশালা গোছের কিছু একটা বানাচ্ছেন নাকি?”
প্রশ্নটা আমার আর পল্টুর মনেও ভুড়ভুড়ি কাটছিল। হঠাৎ করে আজ সকালে ভেলকুনমামার জরুরি তলব পেয়ে আমরা তিনজন একটু আশ্চর্যই হয়েছিলাম। কিন্তু মামার বৈঠকখানা-কাম-গবেষণাগারে পা রেখে পুরো হতভম্ব হয়ে গিয়েছি। ভেলকুনমামা তার নানারকম বিদ্ঘুটে বৈজ্ঞানিক কাণ্ডকারখানা নিয়েই থাকেন বলে তো জেনে এসেছি এত কাল। খেলাধুলো নিয়ে এতখানি মাতামাতি কবে থেকে শুরু হল? এই তেরো বাই দশের চিলতে ঘরে আর লাগোয়া একফালি বারান্দায় রাজ্যের খেলাধুলোর সরঞ্জাম জড়ো করেছেন। দেওয়ালে ঝুলছে টেনিস আর ব্যাডমিন্টনের র্যাকেট, মেঝের উপর ক্রিকেট আর বেসবলের ব্যাট, ঝুড়িভরতি বিভিন্ন রকমের বল, টেবিলের পাশে ঠেস দেওয়া খানকয় হকিস্টিক। বারান্দায় একটা পাঞ্চিং ব্যাগ ঝুলছে দেখতে পাচ্ছি, বক্সিং গ্লাভসও রাখা আছে তাকে। সব মিলিয়ে বিস্ময়ের ধাক্কাটা বেশ জোরালোই।
আমাদের বোকা বনে যাওয়া চোখমুখগুলো বেশ তারিয়ে তারিয়ে দেখছিলেন ভেলকুনমামা। ভাল নাম একটা আছে আমার। কিন্তু সেই হাফপ্যান্ট পরা বয়স থেকে নানান ভেলকি দেখিয়ে আসছেন বলে কিম্ভূত ডাকনামটাই পার্মানেন্ট হয়ে গিয়েছে। ব্যাপারটা নিয়ে কিঞ্চিৎ আত্মপ্রসাদও উপভোগ করেন ভদ্রলোক।
টিকলুর বিস্মিত প্রশ্ন শুনে চোখ দুটো আধবোজা হয়ে গেল। চেয়ারে হেলান দিয়ে দুলে দুলে হাসলেন একটু। তারপর আমার আর পল্টুর দিকে তাকিয়ে বললেন, “আর তোমাদের? তোমাদের কী মনে হচ্ছে শুনি?”
“সম্ভবত আপনি খেলাধুলোর বিবর্তন, মানে এভলিউশন নিয়ে একটা রিসার্চ করছেন।” পল্টু দুর্দান্ত একটা আন্দাজের ঢিল ছুড়ে দিল।
“উঁহু, উঁহু…” দুলুনির ছন্দেই মাথা নেড়ে আমার দিকে ফিরলেন মামা, “এবার শতদল বলো দেখি।”
মরিয়া হয়ে বললাম, “ইয়ে, এই স্পোর্টসগুলোকে আরও কীভাবে উন্নত করা যায়, সায়েন্টিফিক্যালি…।”
“ডাহা ফেল!” তৃপ্তির হাসি হেসে উঠে দাঁড়ালেন ভেলকুনমামা। তারপর হঠাৎ বাজখাঁই গলায় চেঁচিয়ে উঠলেন, “রামু উঁ-উঁ-উঁ!”
আমরা মুখ চাওয়াচাওয়ি করছিলাম। মামার বাজারহাট, রান্নাবান্না ইত্যাদি যা কিছু কাজকর্ম, সব তো বৃদ্ধ কাজের লোক মংলু একাই করে বলে জানি। রামুটা আবার কে!
দরজা দিয়ে যে ঢুকল, তাকে ছেলে বলব না লোক বলব ঠিক করতে পারলাম না। ন্যাড়া মাথা, ভাবলেশহীন চোখ, গাট্টাগোট্টা চেহারা। হাইট আমাদেরই মতো, মানে নাইন-টেনে পড়া ছেলেদের যেমনটা হয়। কিন্তু মুখের ভাবখানা এমন ল্যাপা-পোঁছা যে, বয়স আন্দাজ করা মুশকিল।
“বলুন বাবু।”
গলাটাও নিতান্ত কাঠ কাঠ। একদম সিধে-সটান দাঁড়িয়ে আছে, দৃষ্টি মামার দিকে। আমাদের যেন দেখতে পায়নি। কাজের লোক হিসেবে বেশ অভদ্রই বলতে হবে।
ভেলকুনমামা আমার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসলেন, “শতদল, তোমার প্রিয় খেলা দাবা, তাই না?”
একটু গর্বিতভাবে বললাম, “হ্যাঁ, আমি ডিস্ট্রিক্ট চ্যাম্পিয়ন, জানেন তো!”
“আমার রামুর সঙ্গে খেলবে একদান?”
“ওর সঙ্গে!” বিস্ময়ের চেয়ে তাচ্ছিল্যটাই বেশি ফুটল আমার গলায়।
‘দ্যাখোই না খেলে!” ড্রয়ার খুলে ভেলকুনমামা দাবার ছক আর ঘুঁটি বের করলেন। একঝলক উঁকি মেরে দেখলাম, তাস-লুডো-চাইনিজ চেকার সমেত যাবতীয় টেবিলগেমের সরঞ্জামে ড্রয়ার ঠাসা। এই রামুর সঙ্গে মামা এই সব খেলেন নাকি?
ঘুঁটি সাজিয়ে ডাকলেন মামা, “এসো রামু, আমাদের শতদলবাবুর সঙ্গে একটু খেলো তো।”
পরের পাঁচ মিনিটের মধ্যে অনূর্ধ্ব যোলো ডিস্ট্রিক্ট দাবা চ্যাম্পিয়ন শতদল বসুর অহংকার ধূলিসাৎ হয়ে গেল। পাঁচটা চালেই আমাকে মাত করে দিল রামু নামে কাজের লোকটি।
পৌরুষে ঘা লাগতে আবার একদান খেলব বললাম। না বললেই ভাল হত। এবার পৌনে তিন মিনিটেই মেট। বাকরুদ্ধ হয়ে বসে রইলাম।
ভেলকুনমামা আর-একটু রহস্যের হাসি হেসে পল্টুর দিকে ফিরলেন, “তুমি ফার্স্ট বোলার, তাই না? দ্যাখো তো রামুকে এক ওভার বল করে।”
ঠোঁট উলটে হাসল পল্টু, তারপর একটা চকচকে লাল বল হাতে নিয়ে বাড়ির সামনের মাঠে গিয়ে দাঁড়াল। মিনিট দুয়েকের মধ্যেই ব্যাট-প্যাড-হেলমেটে রামুকে সুসজ্জিত করে উইকেটের সামনে দাঁড় করিয়ে দিলেন ভেলকুমামা। একটা আগুনে চাউনি ছুড়ে দিয়ে আমাদের স্কুলটিমের হায়েস্ট উইকেট টেকার দৌড় শুরু করল।
ওভারটা কিন্তু শেষ করতে পারল না পল্টু। রামুর পঞ্চম ছক্কাটা ছাদে গিয়ে পড়তেই সে একবার করুণ চোখে তাকাল। তারপর, “এই পর্যন্তই থাক,” বলে বসে পড়ল।
টিকলু আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বুদ্ধিমান। সে বক্সিং শেখে আমরা জানি। কিন্তু রামুর সঙ্গে লড়তে সে একদম রাজি হল না। বলল, “আমার হাত মচকে গিয়েছে।”
অতঃপর আমরা তিন জন চেপে ধরলাম ভেলকুনমামাকে। রহস্যটা খুলে বলতেই হবে।
মামা যা বললেন, শুনে আমাদের চোখ গোল গোল হয়ে গেল। রামু আসলে মানুষই নয়! নিখুঁত মানুষের আকৃতিতে তৈরি ওই রোবটটি ভেলকুনমামার সাম্প্রতিকতম সৃষ্টি। তিনটি বছর লেগেছে সাধনায় সফল হতে।
“ওর ঠিক ব্ৰহ্মতালুতে দ্যাখো, একটা সরুমতো চেরা জায়গা রেখেছি। আর এই যে মাইক্রোচিপগুলো দেখছ, এক-একটায় এক-একরকম খেলার প্রোগ্রামিং সেট করা আছে। যেটা লাগিয়ে দেব, সেই খেলাটা ও একদম চ্যাম্পিয়নের মতো খেলবে।”
খুদে খুদে কার্ডের মতো মাইক্রোচিপগুলো আমাদের দেখালেন ভেলকুনমামা। প্রত্যেকটায় একটা করে ছোট্ট অক্ষর লেখা। কোনওটায় ‘ফু’, কোনওটায় ‘ক্রি’, কোনওটায় ‘ব্যা, এই রকম।
“বুঝতে পারছি, অ্যাব্রিভিয়েশন— ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, তাই না?” উত্তেজিত গলায় বলল টিকলু।
ঘাড় নাড়লেন ভেলকুনমামা, “এমনিতে ও নর্মাল লোকের মতোই আচরণ করে। শুধু চিপটা গুঁজে দিয়ে ডান দিকের কানটা আচ্ছা করে মলে দিলে খেলোয়াড়ি সিস্টেমটা চালু হয়ে যায়।”
“আর অফ করতে হলে?”
“তখন বাঁ কানটা। ব্যস, আবার নর্মাল।”
আমরা চুপ। মামাই আবার বলতে লাগলেন, “মাইক্রোচিপগুলো বানাতে খুব মেহনত হচ্ছে, বুঝলে? ওয়েবসাইট দেখে দেখে সব খেলার খুঁটিনাটি জানা চাই, তবে তো! এখনও অনেক বাকি। আমার ইচ্ছে যাবতীয় ইন্ডোর আর আউটডোর গেম প্রোগ্রামবন্দি করার। একদম তোমার লুডো থেকে শুরু করে ওয়েটলিফটিং পর্যন্ত, সব খেলা!”
একটু থেমে, আহ্লাদী গলায় ভেলকুনমামা বললেন, “ওর ভাল নামটা কী রেখেছি জানো তো? রামখেলাওন! নামের ইয়েটা বুঝতে পারছ নিশ্চয়ই?”
আমরা একসঙ্গে ঘাড় নাড়লাম।
॥ ২ ॥
এরপর মাসদুয়েকের মধ্যেই অবশ্য রামখেলাওনের কথা ভুলে গিয়েছিলাম আমরা। স্কুলে অঙ্ক পরীক্ষা, সবুজ দ্বীপে পিকনিক, টিভিতে লিটল চ্যাম্প মিউজিক কনটেস্ট, টিকলুর দাদার বিয়ে, একটার পর একটা উত্তেজনার ঢেউ এসে পড়ায় ভেলকুনমামা কিংবা রামুর কথা তেমন করে মনে পড়েনি আর।
মনে পড়ল মোক্ষম সময়ে।
হরসুন্দরী স্মৃতি চ্যালেঞ্জ শিল্ড ফুটবলের ফাইনাল ম্যাচে আমাদের ঝাঁপড়দা বুলেটস তখন গাবতলা ইলেভেনের কাছে এক গোলে হারছে। উথালপাথাল প্রেস্টিজ-ম্যাচ। বেদম রেষারেষি দুই টিমের। কোনওবার আমাদের দল জেতে, কোনওবার ওরা। গতবার গাবতলা জিতে যায়। সারা বছর ওদের ছেলেরা টিটকিরি দিয়ে গিয়েছে আমাদের। এবার আমাদের না জিতলেই নয়। কিন্তু খেলা শেষ হতে পনেরো মিনিট বাকি, এখনও গোল শোধ করতে পারেনি আমাদের ছেলেরা। স্ট্রাইকার হারান চারখানা সিটার মিস করেছে। মিডফিল্ডার তপেশ ক্রমাগত ভুল পাশ বাড়াচ্ছে। আমাদের টিমের কর্তাব্যক্তিরা ছটফটিয়ে উঠছেন। সাইডলাইনের ধার থেকে চেঁচিয়ে গলা চিরে ফেলছি আমরা। কিন্তু খেলার মোড় ঘোরার কোনও লক্ষণ দেখছি না।
“না, হল না এবারও!” প্রায় ফুঁপিয়ে উঠলেন আমাদের সেক্রেটারি ঢোলগোবিন্দ মিত্তির, “সব ক’টা অপদার্থ! এবারও মুখ পুড়িয়ে তবে ফিরবে…।”
“এ ম্যাচ জেতাতে হলে জিদানকে দরকার, বুঝলি?” পল্টু হতাশ গলায় মজা করার চেষ্টা করল।
হঠাৎ টিকলু লাফিয়ে উঠল, “আরে জিদানকে তো আনাই যায়।”
“মানে?”
“ভেলকুনমামার রামখেলাওনকে মনে নেই? ন্যাড়া মাথায় একটা ফুটবলের চিপ গুঁজে দিলেই বিলকুল জিদানের খেল দেখিয়ে দেবে!”
“আইডিয়া!” চেঁচিয়ে উঠলাম আমি, “আর দেরি নয়! এখনও আছে সময়…”
টিকলু তড়িদ্গতিতে সাইকেলে উঠে পড়েছে। প্যাডেলে চাপ দিতে দিতে বলল, “তোরা ঢোলগোবিন্দজ্যাঠাকে দু’-চার কথায় একটু ব্যাপারটা বুঝিয়ে রাখিস। আমি রামুকে নিয়েই ধাঁ করে চলে আসছি। পাঁচ-সাত মিনিটও যদি খেলে দিতে পারে, ব্যস!”
শেষ বাঁশি বাজার ঠিক ছ’মিনিট আগে তিরবেগে এসে পৌঁছল টিকলু। রডে রামু বসে। আমরা জয়ধ্বনি করে উঠলাম। টিকলু হাঁফাতে হাঁফাতে বলল, “মাইক্রোচিপ লাগিয়ে দিয়েছেন মামা। ড্রেস পরিয়ে কারওর জায়গায় নামিয়ে দে তাড়াতাড়ি।”
হারানকে তুলে নিয়ে রামুকে নামানো হল। সাইডলাইনের ধারে নিয়ে গিয়ে রামুর ডান কানে একটা মোক্ষম পাক দিয়ে ছেড়ে দিলাম আমরা। পল্টু চেঁচিয়ে বলল, “খেল দেখিয়ে দাও রামখেলাওন…”
ধীরেসুস্থে, বেশ গদাইলশকরি চালে হেঁটে বিপক্ষের পেনাল্টি বক্সের দিকে চলেছে রামু। অনেকটা জিদানের মতোই যেন। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। শুধু পায়ে বল পড়ার অপেক্ষা।
“হ্যাট্রিক হবে কি?” বলল পল্টু।
টিকলু বলল, “দু’ গোল হলেই চলবে। জেতা নিয়ে কথা!”
হঠাৎ মাঠের দিকে তাকিয়ে আমরা যেন বোবা হয়ে গেলাম। যা দেখছি, বিশ্বাস হচ্ছে না! গলার কাছটা শুকিয়ে আসছে।
গাবতলা ইলেভেনের গোলকিপারকে জাপটে ধরে একটা ল্যাং মেরে মাটিতে পেড়ে ফেলেছে রামু। তারপর তার বুকের উপর চেপে বসে সাপটে ধরেছে মাটির সঙ্গে। নড়তে দিচ্ছে না।
“এই রে, রোবটটা খেপে গিয়েছে!” আর্তনাদ করে উঠল টিকলু।
“খেপে যায়নি হে।”
এ কী, এ যে ভেলকুনমামার গলা! পিছনে তাকিয়ে দেখি, হাঁপাতে হাঁপাতে ছুটে আসছেন। হাতে একটা খুদে মাইক্রোচিপ। ইঙ্গিত করে সেটা দেখাচ্ছেন আমাদের। কাছে এসে লজ্জিত গলায় বললেন, “আমারই ফল্ট! ঘুমচোখে ভুল মাইক্রোচিপ গুজে দিয়েছি ওর মাথায়!”
“সে কী?” আমরা হাঁ।
“আরে, দেওয়ার কথা ফ-য়ে হ্রস্ব-উ ‘ফু’, দিয়ে ফেলেছি ক-য়ে হ্রস্ব-উ ‘কু’ লেখা চিপ।”
“কু মানে?”
“কুস্তি হে, কুস্তি…! দেখছ না কেমন একখানা প্যাঁচ দিয়েছে ব্যাটা!”
“সর্বনাশ! এখন তা হলে কী হবে?” আমরা হতবুদ্ধি।
ইতিমধ্যে মাঠের বিভ্রাট আরও ঘোরালো আকার নিয়েছে। রেফারি রামুকে লাল কার্ড দেখাতে এগিয়ে এসেছেন। আর রামু গোলকিপারকে ছেড়ে তাঁকে পাকড়ে ধরেছে। গোলকিপার মাঠের উপর পড়ে কাতরাচ্ছে। দক্ষযজ্ঞ বাধার উপক্রম।
টিকলু বলল, “মামা, ওর কানটা মলে অফ করে দিতে হবে!”
“না, না, সুইচ অফ করলে এক্ষুনি সকলেই ধরে পালটা মার দেয় যদি? ড্যামেজ হয়ে যাবে যে বেচারা। আমি অন্য একটা চিপ লাগিয়ে ওকে বাঁচাচ্ছি!” ভেলকুনমামা ব্যস্ত হয়ে উঠলেন।
“কী চিপ?”
“দাঁড়াও, পরে বলছি, আগে ওদিকটা ম্যানেজ করে আসি…।”
এক ছুটে মাঠের মধ্যে ঢুকে পড়লেন ভেলকুনমামা। ভিড়ভাট্টা ঠেলে রামুর ঠিক পিছনে গিয়ে দাঁড়ালেন। তারপর হইহট্টগোলের মধ্যেই চকিতে হাতসাফাইয়ের ভঙ্গিতে বদলাবদলি করে দিলেন চিপ দুটো।
সঙ্গে সঙ্গে ম্যাজিক! রামখেলাওন ইতিমধ্যেই রেফারিকে চাগিয়ে মাথার উপর তুলে ফেলেছিল। এক ঝটকায় নামিয়ে দিল মাটিতে। এপাশ ওপাশ একবার দেখে নিয়ে সোজা একটা দৌড় লাগাল। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে মাঠ ফেলে রাস্তায়। তারপর এক্কেবারে নাকবরাবর।
“ধর ধর।” বলে তাড়া লাগাল কয়েকজন। কিন্তু ধরে কার সাধ্যি।
ভেলকুনমামা একটা নিশ্বাস ফেলে বললেন, “ও একদম বাড়িতে পৌঁছে তবে থামবে। কিন্তু খেলাটা যে ভন্ডুল হয়ে গেল! একটা মিটমাট করে নিতে হবে গাবতলার সঙ্গে।”
“সেসব হবে’খন,” আমি আর কৌতুহল চাপতে পারছিলাম না, “নতুন যে মাইক্রোচিপটা লাগালেন, ওটা কীসের বললেন না তো?”
“বুঝতে পারিসনি এখনও?” একটু যেন খেকিয়েই উঠল টিকলু, “অত লম্বা দৌড়, ম্যারাথন রেস-এ নিশ্চয়ই!”
গম্ভীরভাবে মাথা নাড়লেন ভেলকুনমামা, “হুঁ, আজই সকালে সদ্য কমপ্লিট করেছি। যাক, টেস্টিংটা অন্তত হয়ে গেল।”
২ জুলাই ২০০৭
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন