কাক্কাবোক্কার ভুতুড়ে কাণ্ড – শৈলেন ঘোষ

পৌলোমী সেনগুপ্ত

কাক্কাবোক্কার ভুতুড়ে কাণ্ড – শৈলেন ঘোষ

কোথাও কিছু নেই, হঠাৎ সেদিন রাজা কাক্কাবোক্কা মন্ত্রীমশাইকে জিজ্ঞেস করে বসলেন, “মন্ত্রীমশাই, আপনি কোনওদিন ভূত দেখেছেন?”

রাজামশাইয়ের অমন একটা আলটপকা উদ্ভট প্রশ্ন শুনে মন্ত্রীমশাই থতমত খেয়ে গেছেন। কীরে বাবা! অসময়ে হঠাৎ এমন ভূতের চিন্তা রাজামশাইয়ের মাথায় এল কেন! সুতরাং মন্ত্রীমশাই কী বলবেন, আর কী না বলবেন, এই কথাটা যখন মনে মনে ভাবছেন, ঠিক তখনই রাজা কাক্কাবোক্কা মন্ত্রীমশাইকে কড়কে উঠলেন, “অমন পেঁচার মতো চোখ পিটপিট করছেন কেন? রাজা কিছু জিজ্ঞেস করলে মন্ত্রী যে উত্তর দিতে বাধ্য, এটা কি আপনাকে আবার নতুন করে শেখাতে হবে!” তারপর কে জানে কী ভেবে রাজা কাক্কাবোকা ফস করে বলে বসলেন, “আপনি দেখছি ঘোড়ারও অধম।”

ভূতের কথা বলতে গিয়ে রাজামশাই যে তাঁকে ঘোড়ার সঙ্গে তুলনা করে বসবেন, এ-কথাটা মন্ত্রীমশাই আদপেই ভাবতে পারেননি। তাই আমতা আমতা করে বলে উঠলেন, “আজ্ঞে, মানে…মার্জনা করবেন, আমি…ইয়ে…ঠিক বুঝতে পারলুম না।”

রাজা তড়পে উঠলেন, “কোনওদিন পারবেনও না।”

“তা নয়, আজ্ঞে, আপনি জিজ্ঞেস করছিলেন ভূত দেখার কথা। সেখানে ঘোড়ার কথা আসে কোত্থেকে?” ভয়ে বেশ জুজু হয়েই জিজ্ঞেস করলেন মন্ত্রীমশাই।

রাজা তেমনই বিরক্ত হয়েই বললেন, “আপনি একটি আস্ত আনাড়ি। এক্ষেত্রে ঘোড়ার কথাটা কেন উঠল, এ-কথাটা বোঝার মতো বুদ্ধি যার ঘটে নেই, সে যে মন্ত্রী হয় কেমন করে, এও তো আমার মাথায় ঢুকছে না।” বলে রাজা কাক্কাদোক্কা কটমট করে তাকালেন মন্ত্রীর মুখের দিকে।

রাজার চোখের সেই চাউনি দেখে মন্ত্রীর তো বুকের রক্ত হিম হয়ে যাওয়ার জোগাড়। তিনি মনে মনে ভাবলেন, গেছি রে বাবা! এবার বোধহয় ঘোড়াই আমায় নিকেশ করে ছাড়ল। নিত্যি-নতুন ঝামেলা মানুষ আর কাঁহাতক সহ্য করতে পারে!

মন্ত্রীর মুখের অমন করুণ অবস্থা দেখে কোথায় রাজার একটু দয়ামায়া হবে তা নয়, তিনি আবার ধমক দিলেন, “আপনি কী বলে আমায় বোকা ঠাউরালেন!”

মন্ত্রী হাতজোড় করে বললেন, “কই? না তো! আমি তো তেমন কোনও কথা বলিনি। আমি আপনাকে বোকা ঠাওরাব কেন? বোকা তো দূরের কথা, বোকার ‘বো’ পর্যন্ত মনে ভাবিনি।”

“বটে! তবে আপনি কেন বললেন, আমি আপনাকে ঘোড়ার অধম বলায় আপনি বুঝতে পারলেন না? আপনি কি বলতে চাননি, আমি বোকা বলেই আপনাকে বোঝাতে পারিনি?” রাজা চোখ পাকিয়ে খেঁকিয়ে উঠলেন, “আপনি কি মনে করেন, আপনি ঘোড়ার চেয়ে উত্তম? আর, আমি ঘোড়ার অধম?”

মন্ত্রী থতমত খেয়ে গেলেন। মুখে আর রা পর্যন্ত কাড়লেন না। কারণ, ঘটনা যেদিকে গড়াচ্ছে, তাতে মন্ত্রীমশাইয়ের মনে হল এখন মুখে কুলুপ এঁটে দাঁড়িয়ে থাকাই ভাল। কেননা, আবার কিছু বললে ‘উলটো বুঝিলি রাম’ হতে কতক্ষণ!

কিন্ত মন্ত্রীমশাই চুপ থাকতে চাইলেই বা কে থাকতে দিচ্ছে! রাজামশাইয়ের চোখ এড়ানো অতই সোজা! তিনি ঠিক জিজ্ঞেস করে বসলেন, “চুপ মেরে গেলেন কেন? বলুন, আপনি ঘোড়ার অধম নন?”

মন্ত্রীমশাই খুবই নরম গলায় উত্তর দিলেন, “সে-কথা আমি কেমন করে বলি!”

‘আপনাকে বলতে হবে না। আমিই বলি দিচ্ছি, একটি কারণেই আপনি ঘোড়ার অধম। সে কারণটি হচ্ছে, ঘোড়ার লেজ আছে, আপনার নেই।”

মন্ত্রীমশাই ভাবলেন, এ তো আচ্ছা হ্যাপায় পড়া গেল! ঘোড়ার মতো লেজ নেই বলে কোনও মানুষকে ঘোড়ার অধম বলা যায়!

“কী ভাবছেন?” হঠাৎ রাজা কাক্কাবোক্কা মন্ত্রীকে থ মেরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে জিজ্ঞেস করে বসলেন।

মন্ত্রী চমকে উঠলেন। বলে ফেললেন, “আজ্ঞে, আমার মাথায় ঠিক ঢুকছে না।”

রাজা রসিয়ে রসিয়ে উত্তর দিলেন, “আপনার মাথা থাকলে তবে তো ঢুকবে। শুনি, কোন কথাটা আপনার মাথায় ঢুকছে না?”

“আজ্ঞে ওই যে আপনি বললেন, আমার ঘোড়ার মতো লেজ নেই বলেই আমি ঘোড়ার অধম।”

মন্ত্রীর কথা শুনে রাজা ঠাট্টার সুরে ফিক করে হেসে ফেললেন। তারপর বললেন, “এমন মুখ্যু মন্ত্রী আমি জন্মে দেখিনি। এমন সহজ কথাটার মানে যে-মন্ত্রী বুঝতে পারে না, তার মন্ত্রিত্ব করার দরকার কী!”

মন্ত্রীমশাই এবার আর থাকতে পারলেন না। একেবারে সিধে বলে বসলেন, “আজ্ঞে হুজুর, আপনারও তো লেজ নেই।”

ব্যস! আগুনে ঘি পড়ল। দাউ দাউ করে জ্বলে উঠলেন রাজা। কী, যত বড় মুখ নয়, তত বড় কথা! একজন তুচ্ছ মন্ত্রী রাজার লেজ তুলে কথা বলেন।

রাজার মুখের সেই ভয়ংকর চেহারা দেখে তো মন্ত্রীর আত্মারাম খাঁচাছাড়া। এখন পালানো ছাড়া আর নিস্তার নেই। সুতরাং দে লম্বা। রাজা খপ করে ধরে ফেললেন তাঁকে। ধরেই ধাঁতিয়ে উঠলেন, “হামি নেহি ছোড়ে গা। আপনাকেও শূলে চাপাই গা।”

মন্ত্রীমশাই এবার সত্যিই ভূত দেখলেন। শূলের কথা শোনামাত্র তিনি গলগল করে ঘামতে লাগলেন। মাথা বোঁ বোঁ করে ঘুরতে লাগল। তিনি ‘ওরে বাবা রে’ বলে লাফালাফি লাগিয়ে দিলেন। তারপর চিৎকার করে বলে উঠলেন, “ওগো রাজামশাই গো, আপনি যা বলবেন আমি তাই করব। দয়া করে আমায় শূলে চাপিয়ে প্রাণে মারবেন না।”

“এই! এসো, এবার পথে এসো!” বলতে বলতে রাজা মন্ত্রীমশাইয়ের গালভরতি দাড়ির ভেতর হাত গলিয়ে দিলেন। তারপর আদর করে বললেন, “বাঃ! বাঃ! এই তো লক্ষ্মী ছেলের মতো কথা। এ-কথাটা আগে বললে তো এত কথাকাটাকাটির দরকার হত না।”

রাজার আদরের ঠেলায় মন্ত্রীমশায়ের দাড়িতে এমন সুড়সুড়ি লেগে গেল যে, আর একটু হলেই তিনি খিলখিল করে হেসে ফেলতেন। খুব সামলে গেলেন। তিনি ঝট করে নিজের দাড়িটা মুখ ঘুরিয়ে সরিয়ে নিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “আজ্ঞে, আপনি ভূতের কথা কী বলছিলেন?”

“হ্যাঁ, বলছিলুম, আমি ভূত হতে ইচ্ছে করি।”

“ভূত!” মন্ত্রী আঁতকে উঠলেন।

রাজা মন্ত্রীর চিৎকার শুনে দিলেন এক ধমক, “আস্তে কথা বলতে পারেন না? বলছি একটা গোপন কথা, আপনি চেচিয়ে-মেচিয়ে সব গুবলেট করে দিচ্ছেন।”

এবার মন্ত্রীমশাই খুবই চাপা স্বরে বললেন, ‘‘আজ্ঞে মহারাজ, না মরলে তো কেউ ভূত হয় না।”

“আমি হব। কারণ আমি রাজা। আমার যা ইচ্ছে তখনই যদি তা না হতে পারি, তবে আমার রাজা থাকাও যা, আর না-থাকাও তা। আপনি ব্যবস্থা করুন।”

মন্ত্রী ঢোক গিললেন, “মানে?”

“আপনি মন্ত্রী। আমার প্রধান পরামর্শদাতা। আমি না মরে কেমন করে ভূত হতে পারি, তার ব্যবস্থা আপনাকেই করতে হবে।” খুবই সহজ গলায় রাজা কাক্কাবোকা মন্ত্রীকে হুকুম করলেন।

মন্ত্রী চোখে সরষে ফুল দেখলেন।

রাজা বললেন, “আমি একবার দেখতে চাই, মানুষ রাজাকে বেশি ভয় পায়, না ভূতকে!”

মন্ত্রী ভয়ে ধরা ধরা গলায় বললেন, “দেখুন রাজামশাই, আপনি পদে পদে যদি আমাকে এমন করে বিপদে ফেলেন, তবে আমি দাঁড়াই কোথায় বলুন তো!”

রাজা তিরিক্ষি মেজাজে ধমক দিলেন, “আপনাকে দাঁড়াতে হবে না। সিংদরজা তো খোলাই আছে।”

“আজ্ঞে মহারাজ, আমি তো আগেই বললুম, আপনি যদি ভূত হতে চান তবে এখনই আপনাকে মরতে হয়। আর যদি রাজ-সিংহাসনে বসে থাকতে চান, তবে যতদিন না মরছেন, ততদিন বেঁচে থাকতে হয়।”

মন্ত্রীর কথা শেষ হলে রাজা কাক্কাবোক্কা টিপ্পনী কাটলেন, “এই না হলে মন্ত্রীর মগজ! যেন কচি তালশাঁস! মন্ত্রীমশায়ের রাত্রের খাওয়ার ব্যবস্থাটা কী, জানতে পারি?”

“আজ্ঞে, রাত্রে আমি লুচি খাই।”

“শুধু লুচি!”

“আজ্ঞে, রাবড়ি, লুচি।”

“কীসের রাবড়ি?”

“আজ্ঞে, দুধের রাবড়ি।”

“কী দুধ?”

“আজ্ঞে, গোরুর দুধ।”

“কী গোরু?”

“আজ্ঞে, শিংওলা গোরু।”

“কী শিং?”

“আজ্ঞে, লছমন সিং।”

“কে লছমন?”

“আর জানি না যান, আঙুল চুষে খান!” বলে মন্ত্রীমশাই মুখ খিঁচিয়ে উঠলেন।

এই রে! রাজা তো রেগে টং! “বটে আমাকে আঙুল চুষতে বলা হচ্ছে! দাঁড়ান, আপনাকে রাবড়ি খাওয়াচ্ছি। না, আমি আপনাকে শূলেও চাপাব না, ফাটকেও বন্দি করে রাখব না। আজ থেকে সাতদিন আপনার লুচি-রাবড়ি বন্ধ। সাতদিন স্রেফ উপোস। নির্জলা উপোস। আমাকে মুখ খিঁচিয়ে বলা, ‘আর জানি না যান, আঙুল চুষে খান!’ আঙুল চোষাচ্ছি!”

মন্ত্রীমশাই আকুল হয়ে বলে উঠলেন, “রাজামশাই গো, আমি আপনাকে ওসব কথা বলতে চাইনি। আমার ঠোঁট ফসকে কথাগুলো বেরিয়ে পড়েছে।”

রাজা কাক্কাবোক্কা তখন রাগে ঠকঠক করে কাঁপছেন। চেচিয়ে উঠলেন, “ঠোট ফসকে, কি দাঁত ফসকে আমি শুনতে চাই না। আমার সাফ কথা, সাতদিন খানা নেহি মিলেগা। আমাকে তাচ্ছিল্য করা—আর জানি না যান, আঙুল চুষে খান!”

মন্ত্রীমশাই কাকুতিমিনতি করে বললেন, “আজ্ঞে রাজামশাই, টানা সাতদিন আমায় কিছুই যদি খেতে না দেন, সত্যি বলছি, আমি মরে যাব। আপনি আমার হুজুর। লুচি-রাবড়ি খেতে না দেন, আমার দু’ বেলা দু’ বাটি হালুয়া হলেও চলবে। অন্তত হালুয়ার প্রার্থনাটা আপনি দয়া করে নাকচ করবেন না হুজুর!”

মন্ত্রীর কথা শুনে রাজা কাক্কাবোক্কার হাসি পেয়ে গেল। হাসতে হাসতেই বললেন, “হালুয়া! ঠিক আছে, অত করে যখন বলছেন, আপনাকে দু’ বেলা দু’ বাটি হালুয়াই দেওয়া হবে। তবে এক শর্তে।”

“কীসের শর্ত হুজুর?”

রাজা বললেন, “আজ থেকে তিনদিনের মধ্যে আমি কেমন করে ভূত হতে পারি তার হদিশ আপনাকে জানাতে হবে। মনে রাখবেন, আমি না-মরে ভূত হব।” বলতে বলতে রাজা কাক্কাবোক্কা আড়চোখে মন্ত্রীর মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন। সেই সময় মন্ত্রীর মুখখানা যদি দেখতে! ঠিক যেন আজবোজ একটি ধুমসো খোকা! মাথাটি নেড়ে রাজার শর্ত মেনে নিলেন।

বিপদ থেকে বাঁচার জন্য মানুষ কী না করতে পারে! আচ্ছা, হালুয়ার জন্য দুম করে মাথা নেড়ে মন্ত্রীমশাইয়ের সায় দেওয়াটা কি ঠিক হল? শুধু হালুয়া খেয়ে মানুষ বাঁচতে পারে? তার ওপর তিনি মন্ত্রী। রাজকাজের যত ঝকি, সেও তো তাঁকেই সামলাতে হয়। মন্ত্রিত্ব ছেড়ে যে পালাবেন, তারও উপায় নেই। নিজের সংসার চলবে কী করে? সুতরাং হালুয়া খেয়েই তিনি দু’ দিন কাটিয়ে দিলেন। তিনদিনের দিন তিনি আর পারলেন না। ঠিক করলেন রানিমার দ্বারস্থ হয়ে সব কথা তাঁকে খোলাখুলি জানিয়ে দেবেন।

হলও তাই। তিনদিনের দিন একফাঁকে তিনি সত্যিই রানিমার কক্ষের সামনে হাজির হলেন। ওদিকে নিজের কক্ষে রাজা কাক্কাবোক্কা দিবানিদ্রা দিচ্ছিলেন, আর, এদিকে নিজের ঘরে রানিমা লুকিয়ে লুকিয়ে আমসত্ত্ব চাটছিলেন। চাকুম-চুকুম। ঠিক তখনই মন্ত্রীমশাই রানির ঘরের দোরের সামনে দাঁড়ালেন। রেশমি পরদার আড়ালে দাঁড়িয়ে ডাক দিলেন, “রানিমা গো, রানিমা!”

রানিমা তাড়াতাড়ি মুখের আমসত্ত্ব গিলে ফেলে সাড়া দিলেন, “কে ডাকেন? মন্ত্রীমশাই?”

“আজ্ঞে।” মন্ত্রী উত্তর দিলেন।

“আসুন, ভেতরে আসুন।”

মন্ত্রীমশাই পরদা সরিয়ে আলতো পায়ে ঘরে ঢুকলেন। এই ফাকে রানিমা যে হঠাৎ দু’বার ঠোঁটের ওপর জিভ বুলিয়ে টুক করে জিভটি মুখের মধ্যে লুকিয়ে ফেললেন, সেটিও মন্ত্রীমশাই দেখতে পেলেন। কিন্তু তিনি আর জানবেন কেমন করে রানিমা জিভ দিয়ে আমসত্ত্বের সোয়াদ চাটছেন। তাই ভাবলেন, রানিমা বোধহয় তাঁকে দেখে ভেংচি কাটলেন। কাজেই তিনি রানিমাকে যে-কথাটা বলবার জন্য এলেন, সে-কথাটা বলবেন কি বলবেন না এই নিয়ে দোনোমনো করতে লাগলেন। এমন সময় রানিমাই অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘মন্ত্রীমশাই, এমন অবেলায় আমার ঘরে?”

মন্ত্রীমশাই কঁচুমাচু হয়ে উত্তর দিলেন, “আমি কি অবেলায় আপনার ঘরে ঢুকে ব্যাঘাত ঘটালুম?”

রানি বললেন, “না, না, ব্যাঘাত ঘটাবেন কেন?”

মন্ত্রীমশাই বললেন, “তবে আমায় দেখে আপনি জিভ বের করে ভেংচি কাটলেন যে!”

হাসির কথা শুনলে রানিদের যেমন করে হাসা উচিত, ঠিক তেমনই ফিক করে হেসে রানিমা লজ্জায় মুখে আঁচল চাপা দিলেন। তারপর বললেন, “সে কী কথা, আমি আপনাকে ভেংচি কাটব কেন! আমার জিভটার ওই দোষ, লোক দেখলেই কিলবিল করে ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে উকি মারে। জিভটা আমার ভারী বিচ্ছু। কিছু মনে করবেন না। বলুন, আপনার কী খবর?”

মন্ত্রী বললেন, “আজ্ঞে রানিমা, আমার খবর সে বলবার মতো নয়। রাজামশাইয়ের হুকুমে গত দু’দিন ধরে আমি শুধু হালুয়া খেয়েই আছি। একপ্রকার উপবাসই বলতে পারেন। অথচ দেখুন, আমি কোনওই দোষ করিনি। এখন আপনি ছাড়া আমার আর গতি নেই।”

“কেন, কী হয়েছে যে, আপনাকে হালুয়া খাবার হুকুম দিলেন মহারাজ?’ রানি অবাক হলেন।

“রাজামশাইয়ের ইচ্ছে হয়েছে, তিনি ভূত হবেন।”

“ভূত!” রানি এমনভাবে চমকে উঠলেন, মনে হল যেন ভূত তার চোখের সামনেই দাঁড়িয়ে।

“আজ্ঞে হ্যাঁ, ভূত।” মন্ত্রী উত্তর দিলেন। তারপর বললেন, “রাজামশাই হুকুম দিয়েছেন, তাঁর ভূত হওয়ার হদিশ আমাকেই বলে দিতে হবে। আচ্ছা রানিমা, বলুন তো, মানুষ না-মরলে ভূত হয়? তিনি আরও বলেছেন, তিনদিনের মধ্যে তাঁকে ভূত হওয়ার হদিশ না বলে দিতে পারলে আমায় শূলে চাপাবেন। আজ রাত কাটলেই তিনদিন শেষ। রানিমা, আপনিই বলুন, এখন আমি কী করি! আপনি আমাকে বাঁচান।”

রানিমা মুখের থেকে আঁচল সরিয়ে মন্ত্রীমশাইয়ের সেই ভয়ে-টসকানো মুখখানা দেখতে দেখতে বললেন, “আপনি অত ভয় পাচ্ছেন কেন?”

মন্ত্রী উত্তর দিলেন, “এখন ভয় ছাড়া আমার আর কী পাওয়ার আছে বলুন?”

“অয়! আপনার ওই একটিই দোষ। একটুতেই আপনি ভয় পেয়ে যান। আর ভয় পান বলেই তো রাজামশাই ভূত কেন, বেহ্মদত্যি পর্যন্ত করে দিতে পারেন।”

মন্ত্রীমশাই যেন একটু সাহস পেলেন। জিজ্ঞেস করলেন, “কেমন করে?”

“আমি যেমন করে বলছি ঠিক তেমন করে।” বলতে বলতে রানিমা পালঙ্ক থেকে মন্ত্রীকে বললেন, “দাঁড়ান, আমি আসছি।”

বেশিক্ষণ লাগল না। একটু পরেই রানিমা হাজির হলেন। হাতে একটা কাগজের ছোট্ট মোড়ক। মন্ত্রীর সামনে এসে মুচকি হাসলেন। হাসতে হাসতে বললেন, “এই নিন মন্ত্রীমশাই, মহারাজের ভূত হওয়ার ‘ফুসফাস’ মন্ত্র।” বলে কাগজের মোড়কটি মন্ত্রীর হাতে দিলেন।

মন্ত্রীমশাই মোড়কটি হাতে নিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “এইটি নিয়ে আমি কী করব?”

রানি বললেন, “রাজামশাইকে এই মোড়কটি দিয়ে বলবেন, রাত যখন অন্ধকার হবে, সেই অন্ধকার রাতে, শোবার সময় এই মোড়কটি খুললে রাজামশাই ফুসফাস মন্ত্রপড়া একটি ফুল পাবেন। সেই ফুলটি কচমচ করে খেয়ে ফেললেই তিনি ভূত হয়ে যাবেন।”

মন্ত্রীমশাই ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “আচ্ছা রানিমা, আমার কিছু হবে না তো?”

“কিচ্ছু হবে না। আমি আছি। আপনার ভয় কীসের!”

মন্ত্রীমশাই বললেন, “তবে আমি আসি?”

“হ্যাঁ, আসুন।”

যাই হোক, যখন রাজার দুপুরের ঘুম ভাঙার কথা, তখনই তাঁর ঘুম ভাঙল। যখন রাজার মন্ত্রীকে ডাকার কথা, তখনই তাঁর ডাক পড়ল। মন্ত্রীমশাই ফুসফাস মন্ত্রপড়া মোড়কটি ট্যাঁকে গুঁজে রাজা কাক্কাবোক্কার সামনে হাজির হলেন।

রাজা জিজ্ঞেস করলেন, “কী খবর?”

মন্ত্রী উত্তর দিলেন, “খবর ভাল।”

“ব্যবস্থা করতে পেরেছেন?”

“পেরেছি হুজুর।”

মন্ত্রীর উত্তর শুনে রাজা কাক্কাবোক্কার বিছানায় হেলানো চেহারাটি তিরের মতো সটান সিধে হয়ে গেল। তিনি বুঝি এই লাফিয়ে পড়েন পালঙ্ক থেকে। চেঁচিয়ে ওঠেন, “কী ব্যবস্থা করেছেন?”

ততক্ষণে মন্ত্রীমশাই ট্যাঁকে গোঁজা মোড়কটি বের করে ফেলেছেন।

রাজা জিজ্ঞেস করলেন, “কী ওটা?”

মন্ত্রী উত্তর দিলেন, “ভূত এটা। এই মোড়কের ভেতরে ফুসফাস মন্ত্রপড়া ফুল আছে। আজ খাবেন, আজই ভূত হবেন।”

“কই দেখি, দেখি!” রাজা ব্যস্ত হয়ে হাত বাড়ালেন।

“আজ্ঞে, দেখতে হবে না। চোখ বুজে খাবেন অন্ধকার রাতে।”

“আমার ভয় করবে না তো?” ভূতের নামে রাজার মুখ শুকিয়ে গেল।

মন্ত্রী উত্তর দিলেন, “আজ্ঞে, ভূত আবার ভূতকে ভয় পায় নাকি?”

রাজা বললেন, “তা হলে আমি যখন খাব, আপনি সঙ্গে থাকবেন।”

মন্ত্রী আবার পড়লেন ফাঁপরে। অবশ্য এবার আর তাঁকে মাথা চুলকোতে হল না। এবারকার বিপদ কাটানোর বুদ্ধিটা নিজে নিজেই মাথা খাটিয়ে বের করে ফেললেন। বললেন, “আজ্ঞে, কেউ সামনে থাকলে কাজ হবে না।”

“তবে থাক। আমি একাই খাব।” বলে রাজা কাক্কাবোক্কা মন্ত্রীর হাত থেকে মোড়কটি নিয়ে গন্ধ শুঁকলেন। তিনি গন্ধ পেলেন কি না বোঝা গেল না। তবে মন্ত্রীমশাই বিদায় নিয়ে সেখান থেকে কেটে পড়লেন। কিন্তু দুর্ভাবনা তার থেকেই গেল।

রাত এল। অবশ্য রাজবাড়ির কাজের ব্যস্ততা তখনও কমেনি। তখনও রাজবাড়ির এ-মহল সে-মহল সরগরম। এমনকী খাওয়াদাওয়ার পাটও চোকেনি। কিন্তু মন্ত্রীর দেওয়া ফুসফাস মন্ত্ৰপড়া মোড়কটি হাতে নিয়ে রাজা কাক্কাবোক্কা আর কিছুতেই থাকতে পারছিলেন না। তিনি এমন অস্থির হয়ে উঠলেন যে, আর মোড়কটি না-খুলে পারলেন না। তিনি নিজেই ঘরের দরজা বন্ধ করে, আগল আটকে দিলেন। কেউ না ঢুকে পড়ে। তারপর সেই কাগজের মোড়কটি ঝটপট খুলে ফেললেন। খুলে ফেলতেই তিনি দেখলেন, তার ভেতর সত্যিই একটি ফুল। তবে এটি কলার ফুল। মোচার ভেতর থেকে ছেঁড়া। তাঁর আর তর সইল না। ফুলটা মুখে পুরে ফেললেন। তারপর যেই কচমচ করে চিবিয়েছেন, ইস, কী তেতো। যেমন তেতো, তেমনই কষা। ওয়াক থু! কিন্তু থুতু আর ফেলতে হল না। ফেলার আগেই তাঁর মনে হল, যেন তাঁর পা আর মাটিতে পড়ছে না। তার হাতদুটো ভূতের মতো নড়বড় করে নড়ছে। মাথা-মুন্ডু সব টলমল করে টাল খাচ্ছে। তিনি নড়বড়ে হাত দিয়েই ঘরের আগল খুলে ফেললেন। তারপর ভূতের মতো গলা করে চেঁচাতে লাগলেন, “যাঁকে পাঁই, তাঁকে খাঁই।” চেঁচাতে চেঁচাতে বাইরে বেরিয়ে এলেন। এসেই তেড়ে গেলেন প্রহরীর দিকে। প্রথমটা প্রহরী অত খেয়াল করেনি। কিন্তু রাজা কাক্কাবোকা তাকে জড়িয়ে ধরে যেই “খাঁই-খাঁই” বলে চেঁচিয়ে উঠেছেন, তখন তো সে ভয়ে মরে আর কী! সেও চেঁচিয়ে-মেচিয়ে ধস্তাধস্তি লাগিয়ে দিলে। রাজার কবল থেকে কোনওরকমে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে সে চিৎকার করে ছুটতে লাগল, “রাজা খেপেছে, রাজা খেপেছে!” রাজাও চিৎকার করে তেড়ে গেলেন, “যাঁকে পাঁই, তাঁকে খাঁই।”

সে কী মূর্তি তখন রাজা কাক্কাবোক্কার। যে তাঁর সামনে পড়ে তাকেই তেড়ে যান। যাকেই রাজা তেড়ে যান, সে-ই “বাবা-রে মা-রে” বলে যেদিকে পারে সেদিকেই পালিয়ে ছোটে। নিমেষের মধ্যে রাজবাড়িতে দক্ষযজ্ঞ শুরু হয়ে গেল। সবাই চেঁচায়, “রাজা খেপেছে, পালা, পালা!” এ চেঁচায়, “পালা-পালা”, ও চেঁচায় “বাঁচাও-বাঁচাও”। বাঁচবার জন্যে ছুট মারে অনুচর, পার্শ্বচর, জমাদার, সুবেদার, পলটন, লশকর, দাস-দাসী, পরিচারক, রক্ষী, প্রহরী। রাজবাড়ির ভেতরে সে যেন এক হুডুদ্দুম কাণ্ড। রাজারও চিৎকার থামে না। রাজবাড়ির মানুষেরও ভয় ছাড়ে না। শেষে এমন কাণ্ড হল, রাজবাড়ির যত মানুষ কাক্কাবোক্কার আতঙ্কে রাজবাড়ি ছেড়ে পালাতে শুরু করল। পালাতে পালাতে সিংদরজা পেরিয়ে গেল। সিংদরজা পেরিয়ে যেতেই জমজমাট রাজবাড়ি নিমেষের মধ্যে খাঁ-খাঁ করে উঠল। কোনও সাড়া নেই, কারও তাড়া নেই। সব যেন কেমন নিঝুম হয়ে গেল চোখের পলকে। রাজা এ-ঘরে যান, কেউ নেই। ও-ঘরে যান, ভোঁ ভোঁ। ডাইনে-বাঁয়ে, সামনে-পেছনে কেউ নেই, কিচ্ছু নেই, ফক্কা। শুধু ছাতের ওপর ঘড়িঘরে লুকিয়ে বসেছিলেন মন্ত্রীমশাই। বসে বসে ভয়ে কাঁপছিলেন।

রাজা কাক্কাবোক্কা শূন্য রাজবাড়িতে এবার একাই হোঁ-হোঁ-হিঁ-হিঁ করে হেসে উঠলেন। একাই গলা ফাটিয়ে গান গাইতে শুরু করে দিলেন। একাই নাচানাচি করতে করতে মাটিতে গড়াগড়ি খেতে লাগলেন।

হঠাৎ তিনি থমকে গেলেন। হঠাৎ তিনি চমকে চাইলেন। হঠাৎ তিনি দেখতে পেলেন, তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে খিলখিল করে হাসছেন রানি। তিনি তিড়িং করে লাফিয়ে উঠলেন। তিনি “ধঁর ধঁর” করে তেড়ে গেলেন রানির দিকে। তিনি “যাঁকে পাঁই তাঁকে খাঁই” বলে রানির গলাটা টিপতে গিয়েও টিপতে পারলেন না। রানি কিন্তু একটুও ভয় না পেয়ে হেসেই চললেন।

রাজা কাক্কাবোক্কা হুংকার ছাড়লেন, “আঁমি ফুঁসফাঁস মঁন্ত্রপঁড়া ফুঁল খেঁয়েছি। সেঁই ফুঁল খেঁয়ে এঁখন আঁমি ভূঁত। আঁমার ভঁয়ে রাঁজবাড়ি থেঁকে সঁবাই পাঁলিয়েঁছে। শুঁধু তুঁমিই আঁছ।”

“কারণ আমি জানি আপনি ভূত নন।”

“তঁবে আঁমায় দেঁখে আঁর সঁবাই পাঁলাল কেঁন?”

“সবাই আপনার কাণ্ডকারখানা দেখে ভাবল, আপনি পাগল হয়ে গেছেন।” বলতে বলতে রানি ফিকফিক করে হাসতে লাগলেন।

রানির সেই ফিকফিক হাসি দেখেই রাজার মেজাজ গেল আরও বিগড়ে। তিনি ভূতের মতো মুখ খিঁচিয়ে রানিকে ভয় দেখালেন।

রানি ভয় পেলেন না। আরও জোরে হেসে উঠলেন।

সঙ্গে সঙ্গে রাজা কাক্কাবোক্কা ফুল দিয়ে পরিপাটি করে সাজানো রানির চুল খামচে ধরলেন। টান মারলেন। রানি ‘উঃ’ বলে আর্তনাদ করে উঠলেন।

রানির আর্তনাদ যেই শোনা, অমনই যেন রাজার চৈতন্য হল। ঝট করে রানির চুলের ঝুঁটি ছেড়ে দিলেন। রানি একেবারে সঙ্গে সঙ্গে মুখখানা ভার করে রাজার সামনে থেকে হনহন করে সটান নিজের ঘরের দিকে পা বাড়ালেন।

রাজা কাক্কাবোকা হকচকিয়ে গেলেন! ছিঃ, ছিঃ, তিনি এ কী করলেন! রানির চুল ধরে টান দিলেন। অনুতাপে ছটফট করে উঠলেন রাজা। তিনি রানির পিছু পিছু ছুট দিলেন। ছুটতে ছুটতে ডাক দিলেন, “রানি শোনো! শোনো! একটু দাঁড়াও!”

রানি দাঁড়ালেন না। রাজার কথাও শুনলেন না। তিনি নিজের ঘরে ঢুকে বিছানায় শুয়ে পড়লেন। বালিশে মুখ গুঁজে চুপ করে পড়ে রইলেন।

রাজা ছুটতে ছুটতে রানির ঘরের পরদা সরিয়ে যেই ভেতরে ঢুকেছেন, সামনেই চোখে পড়ল রানির সাজন-গোজনের মস্ত আয়নার দিকে। পড়বি তো পড়, রাজার মূর্তির ছায়া পড়ল সেই আয়নায়। আয়নায় নিজের মূর্তির ছায়া দেখে রাজা তো থ! কই তিনি ভূত! কই তাঁর ভূতের মতো খাবলানো চোখ। হাড়-ঠকঠক ঠ্যাং! লটর-পটর নড়া! হাড়-জিরজিরে পাঁজর। তিনি তো যেমনকে তেমনই আছেন। তবে কি মন্ত্রী তাঁকে ঠকালেন? তিনি রাগে গলা চড়িয়ে হাঁক দিলেন, “এই, কোই হ্যায়!”

তখন আর সেখানে কে থাকবে! যাদের থাকবার কথা, সেই প্রহরীরা পর্যন্ত পাগল-রাজার পাগলামি দেখে ভয়ে অনেক আগেই তো কাট। রাজার হাঁক শুনে সাড়া দেওয়ার মতো সেখানে তখন একজনই ছিলেন। তিনি রানি। বিছানা থেকে মুখ তুলে তিনি বললেন, “আমি হ্যায়! আপনার কাকে চাই?”

“মন্ত্রীকে।”

“কেন?”

“মন্ত্রী আমাকে ঠকিয়েছেন। আমাকে মিথ্যে একটা ফুল খাইয়ে বলেন কিনা আমি ভূত হব।”

রানি উত্তর দিলেন, “ফুল তিনি খাওয়াননি। আপনার খাওয়ার জন্য আমিই তাঁর হাতে পাঠিয়ে দিয়েছিলুম একটা কাঁচকলার ফুল।”

“তুমি?” রাজা অবাক হলেন।

“হ্যাঁ।” শান্ত গলায় উত্তর দিলেন রানি।

“কেন?”

“আপনাকে ভূতে পেয়েছিল বলে। আপনি কি জানেন না মহারাজ, কেউ না মরলে ভূত হয় না? আর আপনিও এমন, একটা কাঁচকলার ফুল খেয়ে ভূতের মতো নাচতে শুরু করে দিলেন। এমনকী, আমার চুলের মুঠি ধরে আমাকে অপমান করলেন।”

রানির কথা শুনে রাজা কাক্কাবোক্কা আস্ত বোকার মতো ফ্যালফ্যাল করে রানির মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন। তারপর তাঁর কী মনে হল, বোকারা যেমন করে হাসে, তেমনই করে হেসে উঠলেন। হাসতে হাসতে বললেন, “সত্যিই, আমি একটা অবুঝ! কোনও রাজা কখনও রানির চুলের কুঁটি ধরে টানে! ছিঃ!”

হঠাৎ কে যেন ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে পরদার আড়াল থেকে হাসতে হাসতে টিটকিরি কাটলেন, “রাজা কাক্কাবোক্কা টানেন।”

কে যে টিটকিরি কাটলেন, সেটি রাজার বুঝতে অসুবিধে হল না। তিনি এবার রাগলেন না। হাসলেনও না। শুধু বললেন, “মন্ত্রীমশাই, ভাল হবে না বলে দিচ্ছি!” বলে তিনি পরদা ঠেলে মন্ত্রীমশাইকে ধরতে গেলেন।

কিন্তু ততক্ষণে মন্ত্রীমশাই ভোঁ-কাট্টা!

১৩ অক্টোবর ১৯৯৩

সকল অধ্যায়

১. বিষে বিষক্ষয় – আশাপূর্ণা দেবী
২. আটচল্লিশ – অরবিন্দ গুহ
৩. ডোডো তাতাই পালা কাহিনি – তারাপদ রায়
৪. কৈলাসে চা পান – আশাপূর্ণা দেবী
৫. চোরে ডাকাতে – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৬. সাধু কালাচাঁদের নতুন কাজ – শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়
৭. ইলশেঘাই – লীলা মজুমদার
৮. শরচ্চন্দ্রের সন্ধিভেদ! – শিবরাম চক্রবর্তী
৯. ঝুনুমাসির বিড়াল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
১০. বিধু দারোগা – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
১১. সাধু কালাচাঁদের পালাকীর্তন – শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়
১২. কে ফার্স্ট? – আশাপূর্ণা দেবী
১৩. ফ্ল্যাট রেস – জরাসন্ধ
১৪. চিত্তশুদ্ধি আশ্রম – বিমল কর
১৫. টেনাগড়ে টেনশান – বুদ্ধদেব গুহ
১৬. হাতি-চোর – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
১৭. ছোটমাসির মেয়েরা – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
১৮. মোটরবাইক, ষাঁড় ও লাকি – সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
১৯. ব্যাঙাচিদের লেজ – তারাপদ রায়
২০. বাজারদর – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
২১. তেঁতুলমামার জগৎ – হিমানীশ গোস্বামী
২২. রাজার মন ভাল নেই – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
২৩. গজেনকাকার মাছ-ধরা – বিমল কর
২৪. দাদুর ইঁদুর – সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
২৫. সাত নম্বর – সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
২৬. মেজদার সার্কাস – চিত্তরঞ্জন সেনগুপ্ত
২৭. চোর – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
২৮. কুস্তির প্যাঁচ – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
২৯. দুঃখহরা বড়ির শিশি – লীলা মজুমদার
৩০. পিলকিন’স ইলেভেন – বিমল কর
৩১. রাত যখন বারোটা – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৩২. ভুনিকাকার চৌরশতম – বিমল কর
৩৩. গ্রামের নাম জাঁকপুর – আশাপূর্ণা দেবী
৩৪. নিখোঁজ নিরুদ্দেশ হতে গেলে – আশাপূর্ণা দেবী
৩৫. বাঘের দুধ – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৩৬. গগনবাবুর গাড়ি – দুলেন্দ্র ভৌমিক
৩৭. গাবু – দুলেন্দ্র ভৌমিক
৩৮. কুরুক্ষেত্র – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৩৯. কাক্কাবোক্কার ভুতুড়ে কাণ্ড – শৈলেন ঘোষ
৪০. হরিমতির বাগান – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৪১. বড়দার বেড়াল – সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
৪২. মহাকর্ম – সমরেশ মজুমদার
৪৩. পায়রাডাঙায় রাতে – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৪৪. মামার বিশ্বকাপ দর্শন – দুলেন্দ্র ভৌমিক
৪৫. গটমটে সাহেব বটে – শৈলেন ঘোষ
৪৬. রাঘব বোয়াল – ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়
৪৭. স্কন্ধকুমার এবং অর্ধচন্দ্র – তারাপদ রায়
৪৮. পাগল হইবার সহজপাঠ – দুলেন্দ্র ভৌমিক
৪৯. বিপিনবিহারীর বিপদ – সুচিত্রা ভট্টাচার্য
৫০. সাদা রঙের পাঞ্জাবি – অনির্বাণ বসু
৫১. জগু যাবে বেড়াতে – বাণী বসু
৫২. কুঞ্জবাবুর পিঁপড়ে বাতিক – অমিতাভ গঙ্গোপাধ্যায়
৫৩. ভুলে যাওয়া – সিদ্ধার্থ ঘোষ
৫৪. ঝগড়ুটে ফাইভ – প্রচেত গুপ্ত
৫৫. বিপদভঞ্জনের সর্পদোষ – উল্লাস মল্লিক
৫৬. মাসির বাড়ি – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৫৭. জাগ্রত অসুরের গল্প – দুলেন্দ্র ভৌমিক
৫৮. কাকাতুয়া ডট কম – প্রচেত গুপ্ত
৫৯. নতুন নাটকও ভন্ডুল – উল্লাস মল্লিক
৬০. রামখেলাওনের কেরামতি – সৌরভ মুখোপাধ্যায়
৬১. কলহগড়ের নিস্তব্ধতা – সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়
৬২. পটলার থিমপুজো – শক্তিপদ রাজগুরু
৬৩. সংকটমোচন কমিটি – প্রচেত গুপ্ত
৬৪. নতুন বন্ধু চিনু – জয়দীপ চক্রবর্তী
৬৫. বুঁচকির মেয়ের বিয়ে – নবনীতা দত্ত

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন