পৌলোমী সেনগুপ্ত
বিপদভঞ্জন ঠাকুরের সামনে ডান হাতখানা বাড়িয়ে ভ্যাবলা মুখে বসে আছে হাঁকু। চোখের কোণে কালি, শরীরটা শুকিয়ে আমশি। বেশ কিছুদিন হল তার বেজায় টাইট অবস্থা। দিনদিন বড় সেয়ানা হয়ে উঠেছে পাবলিক। চারপাশে পাকা বাড়ি, জানলায় লোহার গ্রিল, দরজায় মুম্বই সাইজের তালা। হাঁকু তো বাচ্চা ছেলে, তার বাপ, ঠাকুরদার ঠাকুরদা অবধি ফেল মারত। তার উপর কোনও বাড়িতে কুকুর, কোনও বাড়িতে রাতজাগা পড়ুয়া, কোথাও আবার অনিদ্রা রুগি। সারারাত ঘনঘন ঘড়ি দেখছে, জল খাচ্ছে আর বাথরুমে যাচ্ছে। এসব ম্যানেজ করে কোনও প্রকারে চালাচ্ছিল হাঁকু। কিন্তু তার কারবারে লালবাতি জ্বালিয়ে দিলেন রতনদারোগা। টোকাপুর থানায় নতুন এসেছেন রতন। খুব নিরীহ ভাল মানুষের মতো চেহারা। তাগড়াই গোঁফ নেই, ফুটবল সাইজের ভুঁড়ি নেই, চোখের দৃষ্টিটাও বেশ নরম নরম। ফিরিওলার মতো অমায়িক ভাবভঙ্গি। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই এলাকার ত্রাস হয়ে উঠেছেন রতনদারোগা। চোর-বদমাশ ধরা পড়লে তিনি মারধোরের হাঙ্গামায় বিশেষ যান না, কিন্তু তার বদলে যা করেন তা আরও ভয়ংকর। এই তো কিছুদিন আগে একবার ধরা পড়েছিল হাঁকু। রতনদারোগা প্রথমে তাকে পঞ্চাশ গ্রাম মুড়ির সঙ্গে একশো গ্রাম কাঁচালঙ্কা খাওয়ালেন, তারপর গরম চা। ওহ, বাপ রে বাপ! মনে পড়লে এখনও গায়ে কুলকুল করে ঘাম দেয় হাঁকুর।
এর মধ্যে আশার আলো বলতে এই বিপদভঞ্জন ঠাকুর। কয়েক দিন আগে টোকাপুরে এসেছেন। আস্তানা গেড়েছেন গ্রামের শেষ প্রান্তে করালকালী শ্মশানে। শোনা যাচ্ছে, উনি নাকি ত্রিকালসিদ্ধ পুরুষ। হিমালয়ের উপর পাঁচশো বছর আর গঙ্গার নীচে হাজার বছর একমনে তপস্যা করেছেন। সিদ্ধিলাভের পর সব পাজি গ্রহ-নক্ষত্রকে বশ করে ফেলেছেন উনি। এখন মানুষের হস্তরেখা বিচার করে তাগা-মাদুলি-আংটি ইত্যাদি দেন। অব্যর্থ সব বিচার আর মোক্ষম সব দাওয়াই, কাজ না হয়ে যায় না। দোগেছের রামরতন ঘোষালের মেয়ের বিয়ে হচ্ছিল না। আংটি ধারণ করে সৎ-পাত্রস্থ হল। পলাশপুরের ভজহরি দুধওলার ছেলেটা কলেজ থেকে পাশটাশ করে বেকার ঘুরে বেড়াচ্ছিল বহুদিন। মাদুলি ধারণ করে এখন এক দুধ তৈরির কোম্পানিতে খুব উঁচু পদে বহাল হয়েছে।
এই সব শুনে অনেক আশা নিয়ে হাঁকু এসেছে বিপদভঞ্জন ঠাকুরের কাছে। করালকালী শ্মশান দিনের বেলাতেও বেশ ছমছমে জায়গা। ঝাঁকড়া ঝাঁকড়া বট-অশ্বত্থ-পাকুড় গাছে চারপাশ বেশ অন্ধকার মতো। মোটা মোটা ঝুরি নেমেছে চারপাশে। শ্মশানের পিছন দিকে তিরতিরে সরু নদী, নদীর ওপারে ধূ-ধূ মাঠ। মোটা একটা বটগাছের নীচে ঠাকুরের ঝুপড়ি। ঝুপড়ির সামনে একটা কম্বলের আসনের উপর বসে আছেন ঠাকুর। ঠাকুরকে দেখলেই ভক্তিতে পেন্নাম ঠুকতে ইচ্ছে করে। রক্তাম্বর জটাজুট, গোঁফ-দাড়ি, তার সঙ্গে কপালে লাল তিলক আর গলায় রুদ্রাক্ষের মালা। দেখলেই ভিতরটা গুড়গুড় করে ওঠে। লাল গনগনে চোখ আর বুক হিম করে দেওয়া আগুনে দৃষ্টি। হাঁকু মনে মনে বেশ খুশি। হ্যাঁ, ঠিক লোকের কাছেই এসেছে সে। ইনিই পারবেন এক মন্তরে রতনদারোগাকে কায়দা করে দিতে।
হাঁকুর হাতখানা নিয়ে অনেকক্ষণ উলটেপালটে টিপে টিপে দেখছেন বিপদভঞ্জন। চোখ দুটো কখনও বড়, কখনও ছোট হয়ে যাচ্ছে, মাঝে মাঝে ভাঁজ পড়ছে কপালে। ঝোলা থেকে দু’-একবার আতশ কাচও বের করেছেন, কিন্তু মুখে কোনও কথা নেই। কয়েকবার শুধু ‘হুম’ ‘হাম’ শব্দ বেরিয়েছে মাত্র। তারপর ফের কুলুপ পড়ে গিয়েছে মুখে। ঠায় হাত বাড়িয়ে বসে থেকে হাতে ঝিনঝিনে ধরে গিয়েছে হাঁকুর। শেষে মরিয়া হয়ে বলেই ফেলল, “কী দেখলেন বাবা?”
বিপদভঞ্জন মুখটা একটু গম্ভীর করে বললেন, “হুঁ।”
“আজ্ঞে?”
“হুম।”
ভয়ের চোটে হাতের ঝিনঝিনে মাথায় উঠে এসেছে হাঁকুর। গলা শুকিয়ে কাঠ। কোনও রকমে মিউমিউ করে জিজ্ঞেস করল, “আজ্ঞে, হাতে খারাপ কিছু দেখছেন?”
হাঁকুর হাতটা ছেড়ে দিয়ে কিছুক্ষণ চোখ বুজে বসে থাকলেন বিপদভঞ্জন। তারপর বললেন, “হুম, গুরুচণ্ডালী দোষ।”
হাঁকুর বুকের ভিতরটা গুড়গুড় করে ওঠে। মাথাটা বাঁইবাঁই করে চক্কর দিচ্ছে। ঢোক গিলে সে বলল, “সেটা কী জিনিস বাবা?”
“পার্বতীপুরের মহিম চাটুজ্জের হয়েছিল, তখন তার একেবারে নাজেহাল দশা। গোরুর বাঁটে দুধ নেই, খেতের মুনিশগুলো ফাঁকি মারছে আর তেজারতি কারবারে ভয়ংকর মন্দা। স্রেফ তিন রতির একটা রক্তমুখী নীলা দিলাম। ব্যস। এখন গিয়ে দেখে আয় একবার অবস্থাটা।”
আতশ কাচটা বের করে ফের একবার হাঁকুর হাতটা ঘুরিয়েফিরিয়ে দেখলেন বিপদভঞ্জন। মুখটা আর-একটু গম্ভীর করে বললেন, “হুম, ভৌমদোষও রয়েছে দেখছি।”
এবার হাঁকুর মাথাটা ভোঁ-ভোঁ করতে থাকে। দরদর করে ঘাম দেয় শরীরে।
বিপদভঞ্জন বলে চললেন, “লাহাবাড়ির চিনুর হয়েছিল। বাগানের সব গাছপালা শুকিয়ে কাঠ। চিনুর তো পাগল পাগল দশা। দিলুম একটা মন্ত্রপড়া মাদুলি। ঠিক সাত দিনের মাথায় দোষ কেটে গেল। গাছভরতি তাল, নারকোল। কখন কার মাথায় পড়ে এই ভয়ে এখন কেউ আর চিনুর বাগানের পাশ দিয়ে হাঁটে না।”
হাঁকু মিউমিউ করে বলল, “তা ঠাকুর, আমাকে কিছু একটা দিন, দোষগুলো চুকেবুকে যাক।”
“সে তো দেবই, এই জন্যই তো আমার আবির্ভাব রে ব্যাটা। কিন্তু মায়ের পুজো এনেছিস তো?”
“আজ্ঞে!”
“মায়ের পুজো রে ব্যাটা, মায়ের পুজো। মায়ের পুজো ছাড়া এসব শুভ কাজ হয়? দে একশো এক টাকা, মায়ের ভোগ চড়াব।”
“একশো এক টাকা!” হাঁকুর চোখ কপালে ওঠে।
বিপদভঞ্জন খেঁকিয়ে ওঠেন, “কানে কম শুনিস নাকি? কতবার বলব?”
হাঁকু এবার ভ্যাক করে কেঁদে ফেলল, “অত টাকা কোথায় পাব বাবা। বাজার বড্ড মন্দা, রতনদারোগার জ্বালায় তিষ্ঠোতে পারছি না। একটু কমসম করুন বাবা।”
‘ওর কমে হয় না রে, একশো একান্ন টাকা রেট যাচ্ছে এখন। তোর মতো গরিবগুর্বোদের কিছুটা ডিসকাউন্ট দিই।” বলে ধ্যানস্থ হলেন বিপদভঞ্জন। পাশে বসে নাকিসুরে পিনপিন করে কাঁদতে থাকে হাঁকু।
সূর্যটা পশ্চিম দিকে ঢলে পড়েছে। আরও একটু অন্ধাকার ঘনিয়ে এসেছে শ্মশানে। কাঁদতে কাঁদতে একটু ঝিমুনিমতো এসেছিল হাঁকুর। হঠাৎ পিছন থেকে ঠেলা খেয়ে চমকে ওঠে৷ চেয়ে দ্যাখে, ছকু। এ লাইনে তার গুরুদেব। কিন্তু এ কী চেহারা হয়েছে ছকুর। পাকিয়ে একেবারে দড়ি হয়ে গিয়েছে। পাঁজরের হাড়গুলো পর্যন্ত গোনা যায়। এক সময় ছকুর কাছ থেকে লাইনের অনেক খুঁটিনাটি শিখেছে হাঁকু। আশপাশের দশ-বিশটা গাঁয়ে সবাই এক ডাকে চেনে ছকুকে। যেমন তুখোড় বুদ্ধি, তেমনই মোলায়েম হাতের কাজ। সবচেয়ে বড় কথা, সে দিনক্ষণ, তিথি-সময়ের বাছবিচার করে না। সে ভর দুপুরই হোক বা চাঁদনি রাত, ছকু কাজ সেরে ফেলতে পারে। অনেক হুদো হুদো দারোগাকে ঘোল খাইয়ে দিয়েছে। কিন্তু এই ছকুও ঠেকে গেল রতনদারোগার কাছে। মোক্ষম একটা ফাঁদ পেতে রতনদারোগা ধরেছিলেন ছকুকে। তারপর রতনের যা নীতি, মারধোরের তো কথাই নেই। একটা দাবড়ানি পর্যন্ত দিলেন না। চেয়ারে বসিয়ে ‘বাবা-বাছা’ করে অনেকক্ষণ গল্প করলেন। বউ ছেলেপুলের খবর, গ্রামের চাষবাস, বাজারদর এইসব আর কী। শেষে তাকে দশটা কাঁচা তেঁতুল খাইয়ে এক কেজি মটর কড়াই ভাজা খাওয়ালেন। সেই থেকে ছকুর একেবারে বিচ্ছিরি অবস্থা, শক্ত খাবার দেখলেই অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে।
সোজা বিপদভঞ্জন ঠাকুরের পা দুটো জড়িয়ে ধরে ছকু, “বাবা, দয়া করুন বাবা!”
“কে তুই?”
“আজ্ঞে, অধমের নাম ছকু।”
“কী চাইছিস বল?”
“আজ্ঞে, রতনদারোগার মরণ।”
চোখ দুটো অর্ধউন্মীলিত করলেন বিপদভঞ্জন, মুখে স্মিত হাসি। বললেন, “কেমন মরণ চাই, জলে ডোবা না গাড়ি চাপা?”
ছকু বলল, “জলে কি আর ও জিনিস ডুববে ঠাকুর। ভাল সাঁতার জানেন। সেবার তাড়া খেয়ে আমি তো ফটিকগাছির বিলে ডুবে বসে ছিলুম। তো রতনদারোগা সাঁতরে আমার চুলের মুঠি ধরে তুলে আনলেন। জলে উনি ডুববেন না।”
জটা ঝাঁকিয়ে, চোখ বড় বড় করে বিকট একটা অট্টহাস্য করলেন বিপদভঞ্জন। বললেন, “তা হলে আর আমি আছি কেন! মন্ত্রের জোরে সব হয়। এমন মন্ত্র ছাড়ব, জলে নেমে দারোগার হাত-পা এলিয়ে যাবে। দেখি, তোর হাতটা দে।”
বিপদভঞ্জনের পা দুটো ছেড়ে তাড়াতাড়ি হাতটা বাড়িয়ে দেয় ছকু। হাতটা এক পলক দেখে বিপদভঞ্জন বললেন, “হুম।”
ছকু বলল, “হবে ঠাকুর?”
“কী?”
“রতনদারোগার মরণ।”
আতশ কাচটা ছকুর হাতের উপর ঘোরাতে ঘোরাতে বিপদভঞ্জন বললেন, “হতে পারে, তবে তোর দোষটা আগে কাটাতে হবে।”
ছকু বলল, “অন্য কাজকাম জানি না। চুরি করে খাই, দোষঘাট তো একটু হবেই ঠাকুর।”
“দূর, সে দোষ নয়, এ হল কালসর্পদোষ, তোর হাতে দেখতে পাচ্ছি। বড় খতরনক জিনিস! যাকে ধরবে তার একেবারে সাড়ে-সর্বনাশ।”
ফের বিপদভঞ্জনের পা দুটো জড়িয়ে ধরে ছকু বলল, “আপনি আমায় বাঁচান বাবা, কী দোষ যেন বললেন, সেই দোষ কাটিয়ে দিন।”
চোখ দুটো বড় করে আবার অট্টহাস্য করলেন বিপদভঞ্জন। বললেন, “ভয় মত কর ব্যাটা, সব বিলকুল ঠিক হয়ে যাবে। সামনের অমাবস্যায় একটা হোম করব, খুব জাগ্রত হোম। এখন কী করে মারব বল? জলে ডুবিয়ে মারলে তিনশো এক টাকা, আর গাড়ি চাপা দিলে চারশো এক টাকা।”
হাঁকু জিজ্ঞেস করে, “আজ্ঞে, কীসের টাকা?”
“হোমের খরচ রে। জলে ডুবে মরলে তাড়াতাড়ি মরবে তাই রেট কম, আর গাড়ি চাপা পড়লে তিন মাস বিছানায় দগ্ধাবে। বলিস যদি ওটা ছ’মাস করে দিতে পারি। তবে পাঁচশো এক টাকা চার্জ লেগে যাবে।”
দাঁতকপাটি খেয়ে প্রায় পড়েই যাচ্ছিল ছকু, নেহাত টোকো দাঁত বলে সামলে নিল। তারপর হাউমাউ করে বলে উঠল, “আমাকে বেচলেও অত টাকা হবে না বাবা, একটু দয়া করুন।”
বিপদভঞ্জন দাবড়ে উঠলেন, “মায়ের সেবায় দরাদরি, তুই তো মহা পাপিষ্ঠ রে। ঠিক আছে, বলছিস যখন হার্ট অ্যাটাক করে দিই। একশো একান্ন টাকা রেট, কিন্তু তিন মিনিটে ফুটে যাবে।”
হাতজোড় করে ছকু বলল, “আপনার দয়ার শরীর বাবা, রেটটা আর-একটু নামে না?”
বিপদভঞ্জন খিঁচিয়ে উঠলেন, “এ কী মাছের বাজার পেলি নাকি, একশো এক টাকা থাকে তো বের কর, না হলে কেটে পড় এখান থেকে।”
ফের ধ্যানস্থ হলেন বিপদভঞ্জন। ছকু তাড়াতাড়ি বিপদভঞ্জনের পায়ের ধুলো নিয়ে মাথায় ঠেকায়। তারপর হাতের ঝোলা ব্যাগ থেকে একটা কৌটো বের করে। ছোট টিনের কৌটো। বিপদভঞ্জন চোখ পিটপিট করে দেখেন।
ছকু বলল, “এই নিন বাবা, হোমের খরচ।”
বিপদভঞ্জন হাত পাতলেন। ছকু কৌটোর মুখটা খুলে তাঁর হাতে উপুড় করে দিল। একটা হিলহিলে সাপ বেরিয়ে আসে কৌটো থেকে। বিপদভঞ্জনের হাত থেকে কোলে পড়ে কিলবিল করতে থাকে সাপটা। “ও রে বাপ রে সাপ!” বলে বিরাট একটা লাফ দিয়ে দৌড়তে থাকেন বিপদভঞ্জন। সেই সুযোগে পাশে পড়ে থাকা ছোট কাপড়ের থলেটা নিয়ে চম্পট দেয় ছকু। হাঁকু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে, তারপর সেও অনুসরণ করে ছকুকে।
শিবুময়রার দোকানে গরম জিলিপিতে একটা কামড় দিয়ে হাঁকু বলল, “জব্বর বুদ্ধি করেছ কিন্তু ছকুদা! এই জন্যই তোমাকে গুরু মানি।”
গোটা একটা জিলিপি মুখে পুরে ছকু বলল, “ব্যাটা জোচ্চোর কোথাকার, লোক ঠকাবার ধান্দা।”
হাঁকু বলল, “তুমি বুঝলে কী করে সাধুটা নকলি মাল?”
“আরে আমার চোখকে ফাঁকি দেবে। এমন শম্মা জন্মাতে বাকি। ওটার জটা দাড়ি দেখেই বুঝেছিলাম এসব ঝুটা। ক’দিন আগেও একবার এসেছিলাম, তখন কীসব রাহু-কেতু-শনি ডাউন আছে বলল। সেদিন থেকে তালে ছিলাম, আজ উঠোনে হেলে সাপটা দেখে মতলবটা মাথায় আসে।”
হাঁকু বলল, “যাই বলো, ঠাকুর জোর ভয় পেয়ে গিয়েছে। কেমন জোরে ছুটল দেখলে। ওহ, আমরা যদি অমন ছুটতে পারতাম তা হলে রতনদারোগার হয়ে নাকাল হতে হত না।”
ফের একটা জিলিপি মুখে পুরে ছকু বলল, “ব্যাটা পালানোর কায়দাটা আমাদের শেখাতে পারত, কিছু দক্ষিণা দিতাম। তা নয়, বলল কিনা কালসর্পদোষ! ওর নিজের কপালে যে হেলেসর্পদোষ নাচছে, সেটা বুঝতে পারেনি। ব্যাটা চোরের হদ্দ।”
ছকুর কথা শুনে হো-হো করে হেসে উঠল হাঁকু। তারপর আঙুলে লাগা রসটুকু চাটতে চাটতে বলল, “যা বলেছ!”
জুলাই ২০০৬
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন