ডোডো তাতাই পালা কাহিনি – তারাপদ রায়

পৌলোমী সেনগুপ্ত

ডোডো তাতাই পালা কাহিনি – তারাপদ রায়

রাস্তার পাশে একটা বাড়ি, বাড়িটির একতলায় জানলার ধারে বসে ডোডোবাবু ভূগোল পড়ছেন। জানলার ওপারে রাস্তায় ফুটপাথের উপরে একটি সাদা কুকুর থাবার উপর থুতনি রেখে অনিমেষ নয়নে ডোডোবাবুর দিকে তাকিয়ে রয়েছে, ডোডোবাবু পড়তে পড়তে যদি কখনও চোখ তুলে কুকুরটির দিকে তাকাচ্ছেন কুকুরটি সঙ্গে সঙ্গে মৃদু লেজ নাড়াচ্ছে। কুকুরটির নাম তুষারকণা, তার রং সম্পূর্ণ সাদা বলে এই নাম দেওয়া হয়েছে। তুষারকণা স্বভাবত লোভী, ডোডোবাবুর হাতে দুটো বিস্কুট রয়েছে, ভূগোল পড়তে পড়তে বিস্কুট খাচ্ছেন, দুই এক খণ্ড যদি খেতে খেতে ছুড়ে দেন এই আশায় তুষারকণা বসে রয়েছে।

এই সময় বাড়ির ভিতর থেকে ‘ডোডো, ডোডো’ ডাক শোনা গেল। ডোডোবাবুর মা ডোডোবাবুকে ডাকলেন। ভূগোলের বইয়ের উপর অবশিষ্ট বিস্কুটটুকু রেখে ডোডোবাবু জানলার উপরে বইটি ফেলে বাড়ির ভিতরে গেলেন। লোভী তুষারকণা একটু ইতস্তত করে তারপর হঠাৎ সামনের পা দুটো জানালার দিকে বাড়িয়ে বিস্কুটসুদ্ধ ভূগোল বইটা মুখে তুলে নিল।

ফুটপাথ দিয়ে তাতাইবাবু যাচ্ছিলেন, তিনি এই দৃশ্য দেখে চিৎকার করে উঠলেন, ডোডোবাবুও বাড়ির ভিতর থেকে ছুটে এলেন। বেগতিক দেখে তুষারকণা ভূগোল বইটা মুখ থেকে ফেলে বিস্কুটটুকু নিয়ে ছুট দিল, দুঃখের বিষয় বিস্কুটের সঙ্গে ভূগোলের দুটো পাতাও তুষারকণার সঙ্গে চলে গেল।

ডোডোবাবু-তাতাইবাবু দু’জনেই পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে জানেন তুষারকণার সঙ্গে এখন ছুটে লাভ নেই। দু’জনেই পলায়মান তুষারকণার দিকে কিছুক্ষণ একদৃষ্টে তাকিয়ে থেকে জানালার তাকে এসে পাশাপাশি বসলেন।

ডোডোবাবু (বিমর্ষ স্বরে): সর্বনাশ হয়ে গেল।

তাতাইবাবু: এ তো সামান্য। এতে হতাশ হচ্ছেন কেন? জানেন বিড়ালে আমার পুরো অঙ্ক খাতাটা ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলেছে।

ডোডোবাবু: সে তো আপনি ইচ্ছে করে বিড়াল দিয়ে ছিঁড়িয়েছেন, সে আমি সব জানি। কিন্তু আমি কী করি এখন?

তাতাইবাবু (রেগে গিয়ে): আমি ইচ্ছে করে বিড়াল দিয়ে অঙ্ক খাতা ছিঁড়িয়েছি? কী বলছেন আপনি?

ডোডোবাবু: ঠিকই বলছি, আমি সব দেখেছি, সেদিন সন্ধ্যাবেলা অঙ্ক কষতে কষতে আপনি যতবার অঙ্ক মিলছে না বারবার বিড়ালটার দিকে খাতা ছুড়ে দিচ্ছিলেন আর সে খেলা ভেবে আঁচড়াচ্ছিল, আমি সব দেখেছি। আপনি মাকে তারপর বললেন, বিড়ালে খাতা ছিঁড়ে দিয়েছে। আর আপনার জন্যে নির্দোষ বিড়ালটা মার খেল। আপনি ভাবছেন, আমি কিছু জানি না। একদিন দেব আপনার মাকে সব বলে।

তাতাইবাবু (ভয় পেয়ে): আরে আপনার কাছে আমার কি কিছু গোপন আছে? সে যা হোক, আপনার ভূগোলের কী করা যায় বলুন তো?

ডোডোবাবু: কী আর করা যাবে? দুটো পাতার উপর দিয়ে গিয়েছে এই যথেষ্ট।

তাতাইবাবু (একটু ভেবে): দুটো পাতা মানে চারটে পৃষ্ঠা তো মাত্র।

ডোডোবাবু: মাত্র চারটে পৃষ্ঠা ঠিকই, কিন্তু সেই চার পৃষ্ঠা এখন কোথায় পাই?

তাতাইবাবু: কোন চার পৃষ্ঠা? খুলুন না ভূগোল বইটা, কোথায় পাতা খোয়া গেছে একটু দেখাই যাক না।

ডোডোবাবু (ভূগোল বইটা খুলে একটু দেখে নিয়ে): এশিয়ার শেষ আর আফ্রিকার শুরু। চিন, জাপান, ব্রহ্মদেশ, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এর পরে এখানে কী একটা দেশ ছিল।

তাতাইবাবু: ঠিক আছে।

ডোডোবাবু: কী ঠিক আছে?

তাতাইবাবু: এত দেশের বিবরণ এতকাল পড়ছি, আরেকটা দেশের বিবরণ নিজেরা তৈরি করতে পারব না।

ডোডোবাবু: করুন দেখি।

তাতাইবাবু: দেশটার খুব সুন্দর নাম দিতে হবে। বর্ণনাও সুন্দর করতে হবে।

ডোডোবাবু: কী নাম দেবেন?

তাতাইবাবু: তাই ভাবছি।

ডোডোবাবু: তাই ভাবুন।

তাতাইবাবু (একটু থেমে উত্তেজিত কণ্ঠে পাঠ্যপুস্তকের ভাষায়): যেখানে এশিয়া মহাদেশ শেষ হইয়াছে আফ্রিকার শুরু হইয়াছে সেইখানে মরুভূমির প্রান্তে একটি ছোট সুন্দর দেশ আছে, স্থানীয় অধিবাসীরা দেশটির নাম বলে মানু-মানু।

ডোডোবাবু: আপনার বিড়ালছানাটার নাম না মানু-মানু?

তাতাইবাবু: তাতে কী হয়েছে? জানেন ভারত সরকার নামে কত লোক আছে।

ডোডোবাবু: জানি। কিন্তু তারপর।

তাতাইবাবু: তারপর। (একটু থেমে।) মানু-মানু রাজ্যের প্রাকৃতিক দৃশ্য অতীব মনোরম। ইহার একদিকে বিশাল পর্বত অপরদিকে গভীর সমুদ্র আর দুই দিকে ধূ ধূ মরুভূমি এবং গহন জঙ্গল। এখানে কয়েকটি সুন্দর নদী আছে, তাহার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর নদীটির নাম রিয়ামিয়া।

ডোডোবাবু: এবার আমি বলি। রিয়ামিয়া নদীর তীরে একটি শহর আছে তাহার নাম থরহরি। এই শহরটির এইরূপ নামকরণের কারণ মাঝেমধ্যে এখানে ভূ-কম্পন অনুভূত হয়।

তাতাইবাবু: অবশ্য এই ভূকম্পনে কোনওদিন কোনওরূপ ক্ষতি হয় না, শুধু শিশুদের দোলনাগুলি একটু বেশি পরিমাণে দোলে।

ডোডোবাবু: রিয়ামিয়া নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে প্রচুর কুল, জলপাই এবং চিনাবাদাম উৎপন্ন হয়। মানু-মানু দেশ রবারের জন্য বিখ্যাত। এখানে বালকদের খেলিবার রবারের বল প্রায় বিনামূল্যে পাওয়া যায়।

তাতাইবাবু (একটু বিরক্ত হয়ে): আপনি খালি একা একা বলে যাচ্ছেন।

ডোডোবাবু: ঠিক আছে এবার আপনি বলুন।

তাতাইবাবু: মানু-মানু দেশের জীবজন্তুর মধ্যে হলুদ শৃগাল এবং ট্যাঁচু পাখি অতি প্রসিদ্ধ।

ডোডোবাবু: হলুদ শৃগাল, ট্যাঁচু পাখি এসব আবার কী বলছেন!

তাতাইবাবু: আরে মশায় বলছি শুনুন আগে, এ দুটো এই মাত্র বানালাম।

মানু-মানুর হলুদ শৃগালের সঙ্গে পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের শৃগালের প্রধান তফাত এই যে অন্ধকার হইলে এই জাতীয় শৃগালগুলি ডাকে না। ফলে গ্রামাঞ্চলে শিশুরা রাত্রিতে শৃগালের ডাক শুনিয়া ভয় পায় না।

ট্যাঁচু এক ধরনের ঘন কালো রঙের চড়ুই-এর আকারের পাখি, ইহারা মশা খাইয়া জীবনধারণ করে, রাত্রিবেলা ইহাদের কালো রং অন্ধকারে সম্পূর্ণ মিশিয়া যায়, ফলে মশারা ইহাদের দেখিতে পায় না। মানু-মানু দেশে কোনও মশার উৎপাত নাই!

ডোডোবাবু: এবার আমাকে বলতে দিন। মানু-মানুর আবহাওয়া চমৎকার। সত্যিকারের নাতিশীতোষ্ণ, সমস্ত বৎসর ধরিয়া প্রতিদিনই যাহাকে বলে শীত ও গ্রীষ্ম সমান সমান। এখানে বৃষ্টিপাত সাধারণ, কিন্তু সরস্বতীপূজা, দুর্গাপূজা, ফুটবল খেলার দিন কখনও একটু বৃষ্টি হয় না।

তাতাইবাবু: আবহাওয়ার কথা যখন বললেন, এবার তা হলে এখানকার অধিবাসীদের কথা বলুন।

ডোডোবাবু (যেন মুখস্থ বলছেন, ক্লাসের পড়া বলার মতো গড়গড় করে): এখানকার অধিবাসীরা অতি শান্ত স্বভাবের, তাহারা শিশু বা বালকদের কখনও মারধোর করে না। কিন্তু তাহারা স্বাধীনচেতাও বটে, শিশু বা বালকদের কার্যকলাপে কখনও হস্তক্ষেপ করে না।

তাতাইবাবু (হাততালি দিয়ে): চমৎকার। আপনার দেখি মাথা খুলে গেছে। এবার আমার কাছে শুনুন।

এখানকার শহরগুলি চমৎকার। কখনও আলো নেভে না। শহরের সর্বত্র ছেলেমেয়েদের খেলিবার জন্য যথেষ্ট বন্দোবস্ত আছে। ইহা ছাড়া ছেলেমেয়েরা যে সকল পথে খেলাধুলা করে, সেখানে কোনও গাড়িঘোড়া যাতায়াত করে না।

ডোডোবাবু: আইসক্রিমের গাড়িও না?

তাতাইবাবু: ভূগোল বইয়ে আবার আইসক্রিমের গাড়ি কি মশায়?

ডোডোবাবু: ট্যাঁচু পাখি, হলুদ শৃগাল, থরহরি শহর থাকতে পারে আর আইসক্রিমের গাড়ি থাকতে পারে না?

তাতাইবাবু: পারে, কিন্তু মানু-মানু রাজ্যের আসল কথাটাই এতক্ষণ আপনাকে বলা হয়নি।

ডোডোবাবু: আসল কথা? সেটা কী?

তাতাইবাবু: আসল কথাটা হল, এই দেশে ভূগোল বইয়ের পৃষ্ঠা হারাইয়া গেলে বা কুকুরে লইয়া গেলে তাহা আবার রাস্তায় কুড়াইয়া ফেরত পাওয়া যায়।

ওই দেখুন (একটু দূরে আঙুল দিয়ে দেখালেন)।

সত্যিই দেখা গেল একটু দূরে ফুটপাথের পাশ ঘেঁষে ভূগোলের পাতা দুটি পড়ে রয়েছে, ডোডোবাবু দৌড়ে গিয়ে কুড়িয়ে নিলেন, তারপর হাততালি দিয়ে উঠলেন, তাতাইবাবুও হাততালি দিলেন। হাততালির শব্দ শুনে তুষারকণাও কোথা থেকে ছুটে এসে লেজ নাড়তে লাগল।

আষাঢ় ১৩৮২

সকল অধ্যায়

১. বিষে বিষক্ষয় – আশাপূর্ণা দেবী
২. আটচল্লিশ – অরবিন্দ গুহ
৩. ডোডো তাতাই পালা কাহিনি – তারাপদ রায়
৪. কৈলাসে চা পান – আশাপূর্ণা দেবী
৫. চোরে ডাকাতে – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৬. সাধু কালাচাঁদের নতুন কাজ – শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়
৭. ইলশেঘাই – লীলা মজুমদার
৮. শরচ্চন্দ্রের সন্ধিভেদ! – শিবরাম চক্রবর্তী
৯. ঝুনুমাসির বিড়াল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
১০. বিধু দারোগা – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
১১. সাধু কালাচাঁদের পালাকীর্তন – শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়
১২. কে ফার্স্ট? – আশাপূর্ণা দেবী
১৩. ফ্ল্যাট রেস – জরাসন্ধ
১৪. চিত্তশুদ্ধি আশ্রম – বিমল কর
১৫. টেনাগড়ে টেনশান – বুদ্ধদেব গুহ
১৬. হাতি-চোর – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
১৭. ছোটমাসির মেয়েরা – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
১৮. মোটরবাইক, ষাঁড় ও লাকি – সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
১৯. ব্যাঙাচিদের লেজ – তারাপদ রায়
২০. বাজারদর – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
২১. তেঁতুলমামার জগৎ – হিমানীশ গোস্বামী
২২. রাজার মন ভাল নেই – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
২৩. গজেনকাকার মাছ-ধরা – বিমল কর
২৪. দাদুর ইঁদুর – সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
২৫. সাত নম্বর – সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
২৬. মেজদার সার্কাস – চিত্তরঞ্জন সেনগুপ্ত
২৭. চোর – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
২৮. কুস্তির প্যাঁচ – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
২৯. দুঃখহরা বড়ির শিশি – লীলা মজুমদার
৩০. পিলকিন’স ইলেভেন – বিমল কর
৩১. রাত যখন বারোটা – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৩২. ভুনিকাকার চৌরশতম – বিমল কর
৩৩. গ্রামের নাম জাঁকপুর – আশাপূর্ণা দেবী
৩৪. নিখোঁজ নিরুদ্দেশ হতে গেলে – আশাপূর্ণা দেবী
৩৫. বাঘের দুধ – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৩৬. গগনবাবুর গাড়ি – দুলেন্দ্র ভৌমিক
৩৭. গাবু – দুলেন্দ্র ভৌমিক
৩৮. কুরুক্ষেত্র – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৩৯. কাক্কাবোক্কার ভুতুড়ে কাণ্ড – শৈলেন ঘোষ
৪০. হরিমতির বাগান – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৪১. বড়দার বেড়াল – সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
৪২. মহাকর্ম – সমরেশ মজুমদার
৪৩. পায়রাডাঙায় রাতে – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৪৪. মামার বিশ্বকাপ দর্শন – দুলেন্দ্র ভৌমিক
৪৫. গটমটে সাহেব বটে – শৈলেন ঘোষ
৪৬. রাঘব বোয়াল – ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়
৪৭. স্কন্ধকুমার এবং অর্ধচন্দ্র – তারাপদ রায়
৪৮. পাগল হইবার সহজপাঠ – দুলেন্দ্র ভৌমিক
৪৯. বিপিনবিহারীর বিপদ – সুচিত্রা ভট্টাচার্য
৫০. সাদা রঙের পাঞ্জাবি – অনির্বাণ বসু
৫১. জগু যাবে বেড়াতে – বাণী বসু
৫২. কুঞ্জবাবুর পিঁপড়ে বাতিক – অমিতাভ গঙ্গোপাধ্যায়
৫৩. ভুলে যাওয়া – সিদ্ধার্থ ঘোষ
৫৪. ঝগড়ুটে ফাইভ – প্রচেত গুপ্ত
৫৫. বিপদভঞ্জনের সর্পদোষ – উল্লাস মল্লিক
৫৬. মাসির বাড়ি – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৫৭. জাগ্রত অসুরের গল্প – দুলেন্দ্র ভৌমিক
৫৮. কাকাতুয়া ডট কম – প্রচেত গুপ্ত
৫৯. নতুন নাটকও ভন্ডুল – উল্লাস মল্লিক
৬০. রামখেলাওনের কেরামতি – সৌরভ মুখোপাধ্যায়
৬১. কলহগড়ের নিস্তব্ধতা – সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়
৬২. পটলার থিমপুজো – শক্তিপদ রাজগুরু
৬৩. সংকটমোচন কমিটি – প্রচেত গুপ্ত
৬৪. নতুন বন্ধু চিনু – জয়দীপ চক্রবর্তী
৬৫. বুঁচকির মেয়ের বিয়ে – নবনীতা দত্ত

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন