মার্শাল টিটো (১৮৯২–১৯৮০) – জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা

ভবেশ রায়

একেবারেই এক সাধারণ ঘরে যাঁর জন্ম পরবর্তীকালে তিনিই হয়েছিলেন যুগোস্লাভিয়ার লৌহমানব বলে খ্যাত। নাম তাঁর মার্শাল ইওসিপ্ ব্রোজ টিটো (Josif Broz Tito)। তিনি ছিলেন দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় দেশটির অন্যতম প্রধান সেনানায়ক। পরে হয়েছিলেন যুগোস্লাভিয়ার প্রথম প্রেসিডেন্ট।

যুদ্ধের পর তিনিই প্রথম যুগোস্লাভিয়াকে সমাজতান্ত্রিক আদর্শে গড়ে তুলেছিলেন। লৌহকঠিন দৃঢ়তার সঙ্গে দেশকে ঢেলে সাজিয়েছিলেন তিনি নতুন করে তাই তাঁকে অভিহিত করা হয় আধুনিক যুগোশ্লভিয়ার জনক হিসেবে। তিনি দেশ ও তাঁর নিজের ব্যক্তিত্বকে এমন দৃঢ়তার সঙ্গে দাঁড় করিয়েছিলেন যে, রাশিয়ার মতো বৃহৎ শক্তির প্রভাবকে পর্যন্ত অস্বীকার করা সম্ভব হয়েছিল। এত বিরোধিতা ও প্রভাবকে অস্বীকার করেও তিনি দাঁড়িয়েছিলেন মাথা তুলে। আর এমনি করে তিনি সমাজতান্ত্রিক বিশ্বে সৃষ্টি করেছিলেন নিজস্ব মত ও পথের।

লৌহমানব ইওসিপ ব্রোজ টিটোর জন্ম ১৮৯২ সালের ৭ মে যুগোস্লাভিয়ার ক্রোয়েশিয়া এবং স্লোভেনিয়া প্রদেশের সীমান্তবর্তী কুমরোভেক নামের একটি শহরে।

পিতা ছিলেন গাঁয়ের এক গরিব কৃষক। ঘরে ছিল একপাল সন্তানসন্ততি। টিটো ছিলেন এমনই নিঃস্ব পরিবারের ১৫টি ভাইবোনের মধ্যে ৭ম স্থানীয়। স্বাভাবিক কারণেই বাল্যকালে স্কুলে যাবার সৌভাগ্য হয়নি তাঁর। ফলে ১৩ বছর বয়সেই বের হতে হয় উপার্জনের ধান্ধায়। বাবা তাঁকে পরিচয় করিয়ে দেন পার্শ্ববর্তী মফস্বল শহর সিসাকের এক তালাওয়ালার সঙ্গে। সেখানে তিনি তালা মেরামত করতেন।

তারপর সেখান থেকে কয়েক বছর পরে চলে আসেন এয়েস্তে শহরে। শিখতে শুরু করলেন কামারের কাজ। লোহার কাজ শেখার অবসরে সময়ে তিনি ঘুরতে লাগলেন এ দেশ থেকে সে দেশে। এয়েস্তে থেকে বোহেমিয়া সেখান থেকে জার্মানি।

কামারের এই কাজ নিয়ে দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতেই তিনি কর্মকার শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে মিশে যান। অচিরেই সদস্য হন ক্রোশিয়ার সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির।

এর পর-পরই শুরু হয়ে যায় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। তিনি কামারের কাজ ছেড়ে দিয়ে যোগদান করলেন সেনাবাহিনীতে। নাম লেখালেন যুগোস্লাভ ২৫তম রেজিমেন্টে। তাঁদের বাহিনী তখন যুদ্ধরত ছিল সাইবেরিয়ায়। সালটা ১৯১৪। কিন্তু সেখানে তিনি যুদ্ধ বিরোধী প্রচারণা চালানোর দায়ে গ্রেফতার হন।

পরে অবশ্য তিনি এই অভিযোগ থেকে মুক্তি পান এবং তাঁকে কারপাথিয়ান ফ্রন্টে বদলি করা হয়। সেখানেই তিনি যুদ্ধে অসীম সাহসিকতা ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিলে কর্তৃপক্ষ খুশি হয়ে তাঁকে পদোন্নতি দেন।

যুদ্ধের পরে তাঁকে বুকোভিন ফ্রন্টে পাঠানো হয়। সেখানেই তিনি গুরুতরভাবে আহত হয়ে রুশ বাহিনীর হাতে বন্দি হন। রাশিয়ার বন্দিদশা থেকে তিনি ফিরে আসেন ১৯২০ সালে। তবে ঘরে ফেরার সময় তিনি একটি রাশিয়ান মেয়েকে বিয়ে করে নিয়ে আসেন। এ বিয়ে অবশ্য বেশিদিন টেকেনি। ১৯৩৫ সালে টিটোর এই বিয়ে ভেঙে যায়।

যুদ্ধ থেকে ফিরে এসে তিনি আবার যোগ দেন তাঁর পুরনো পেশায়—লোহালক্কড়ের কাজে। বিজেলোভার শহরে একটি মিলে তিনি চাকরি নেন টেকনিশিয়ান হিসেবে। এসময়ই তিনি কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করেন। ১৯২৩ সালে বরণ করেন তিনি গ্রেফতারি।

এই সময় তাঁর আর্থিক অবস্থা ছিল খুবই খারাপ। দারিদ্র্য ছিল তাঁর নিত্যসঙ্গী। তাঁর আর্থিক অবস্থা এমন ছিল যে, তাঁর দু-দুটো সন্তান বিনা চিকিৎসায় এবং অনাহারে মারা যায়। তিনি অর্থের জন্য নিজের সন্তানদের বাঁচাতে পর্যন্ত পারেননি।

১৯২৫ সালে ক্রাভিকা শিপ ইয়ার্ডে কাজ করার সময়ও তিনি একবার গ্রেফতার হন এবং তাঁর সাত মাসের জেল হয়। জেল থেকে বের হওয়ার পর ১৯২৭ সালে জাগরেবের প্রাদেশিক কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য নির্বাচিত হন।

এরপর ১৯২৮ সালেই যুগোস্লাভ কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির পুলিটব্যুরোর ডেপুটি মনোনীত হন এবং আগস্ট মাসে ক্রোয়েশিয়ান ও স্লোভেনিয়ান কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সেই বছরই তাঁর পাঁচ বছর জেল হয়। জেল থেকে মুক্তি পান ১৯৩৫ সালে। এর পর থেকেই পার্টিতে তাঁর অবস্থানের দ্রুত উন্নতি হতে থাকে। তিনি সেন্ট্রাল কামিটির পুলিটব্যুরোর সদস্য হন। পার্টির সাংগঠনিক কাজে ভ্রমণ করেন মস্কো, প্যারিস, প্রাগ, ভিয়েনা প্রভৃতি শহর।

এই সময় আত্মগোপন করার জন্য তাঁকে নানারকম ছদ্মবেশ নিতে হতো—নিতে হতো ছদ্মনামও। এই ছদ্মানামগুলোর মধ্যে একটি ছিল টিটো। নামটি তিনি প্রায়ই ব্যবহার করতেন। তখন থেকেই টিটো শব্দটি তাঁর নামের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়ায়।

টিটো ১৯৩৫ সালে মস্কোতে কমিউনিস্ট পার্টির বলকান সেকশনে কাজ করেন এবং ১৯৩৭ সালে কুয়োমিনতাং-এর এক্সিকিউটিভ কমিটির সেক্রেটারি জেনারেল নির্বাচিত হন। ১৯৪০ সালে যুগোস্লাভ কমিউনিস্ট পার্টির যে সম্মেলন হয়, তাতে তিনি সর্বসম্মতিক্রমে পার্টির সেক্রেটারি জেনারেল নির্বাচিত হন।

১৯৩৭ সালে টিটো স্পেনের গৃহযুদ্ধ দমনের জন্য ১৩০০ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রেরণ করেন। এই স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীই পরে যুগোস্লাভিয়ার জাতীয় মুক্তিবাহিনীতে রূপান্তরিত হয়।

১৯৩৯ সালে শুরু হয় দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ। ১৯৪১ সালের ৬ এপ্রিল জার্মানি যুগোস্লাভিয়া আক্রমণ করে। টিটো দেশের এই মহাদুর্যোগ মুহূর্তে সকল দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। স্বাধীনতা রক্ষার জন্য দেশের যুবসমাজকে সংঘটিত করে তিনি প্রতিরোধ বাহিনী গড়ে তোলেন জার্মানির বিরুদ্ধে।

প্রথম ধাক্কায় হিটলার যুগোস্লাভিয়া দখল করে নিলেও টিটো তাঁর মুক্তিবাহিনী নিয়ে পরে দেশের অধিকাংশ অঞ্চল মুক্ত করেন এবং পশ্চিম সাইবেরিয়ার ইউজিস নামক স্থানে তাঁর হেড কোয়ার্টার স্থাপন করেন। এখান থেকেই হিটলারের দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে চলতে থাকে সংগ্রাম।

১৯৪৩ সালের দিকে টিটোর মুক্তিবাহিনীর সদস্য সংখ্যা বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় আড়াই লাখে। এই সময়েই টিটোকে মার্শাল উপাধি দেওয়া হয়। তখন থেকেই তিনি পরিচিত হন মার্শাল টিটো নামে।

১৯৪৪ সালের ২৫ মে হিটলার মার্শাল টিটোর বসনিয়ায় অবস্থিত হেড কোয়ার্টারে ট্যাংক ও বিমান নিয়ে প্রচণ্ড আক্রমণ চালান। টিটো অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। মে মাসে হিটলারের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য উইনস্টন তিনি চার্চিল এবং স্ট্যালিনের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকে মিলিত হন।

যুদ্ধে অবশেষে মিত্রবাহিনীর জয় হয়। হিটলারের নাৎসি বাহিনী পরাজিত হয়। দীর্ঘ কয়েক বছরের সংগ্রামের পর দখলদারের হাত থেকে রক্ষা পায় যুগোস্লাভিয়া। কিন্তু দীর্ঘ চার বছরের একটানা যুদ্ধে গোটা দেশই বিধ্বস্ত। দেশের প্রায় শতকরা এগারো ভাগ লোক নিহত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে। গোটা দেশ তখন এক ধ্বংসস্তূপ

এই ধ্বংসস্তূপ থেকেই তিনি আবার শুরু করেন সংগ্রাম- দেশকে গড়ে তোলার সংগ্রাম। ১৯৪৫ সালে তিনি নির্বাচিত হন দেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট।

কিন্তু দেশগড়ার কাজেও তাঁকে প্রতিমুহূর্তে মোকাবেলা করতে হয়েছে নানারকম বাধাবিঘ্নের। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর বৃহৎ দেশ রাশিয়া চাইত তার পার্শ্ববর্তী দেশ যুগোস্লাভিয়া তার বশ্যতা স্বীকার করুক, রাশিয়ার প্রভুত্ব মেনে চলুক।

কিন্তু মার্শাল টিটো ছিলেন স্বাধীনচেতা ও দৃঢ় মনের অধিকারী। তিনি নিজের দেশকে রাখতে চাইলেন স্বাধীন ও সার্বভৌম।

কিন্তু স্ট্যালিন যখন দেখলেন টিটো সহজে তাঁর কাছে মাথা নত করছেন না, তখন আশ্রয় নিলেন কূট কৌশলের। ইচ্ছাকৃতভাবে যুগোস্লাভিয়ার সীমান্তে গোলযোগ সৃষ্টি এবং দেশে অশান্তি বাধানোর চেষ্টা করতে লাগল রাশিয়া। কিন্তু হিতে বিপরীত হলো। টিটো রাশিয়ার এই কূটকৌশলগত ব্যাপার-স্যাপার তুলে ধরলেন দেশবাসীর সামনে। আহ্বান জানালেন রাশিয়ার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার। সারা দেশে আবার গড়ে উঠল ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। দেশের সমগ্র মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলো টিটোর পেছনে। টিটো তখন সারা দেশের জনপ্রিয় নেতা।

১৯৫৩ ফলে সালে স্ট্যালিনের মৃত্যু হলো। এরপর যাঁরা রাশিয়ায় নেতৃত্বে এলেন, তাঁদের মনোভাব ততটা কূট ষড়যন্ত্রী ছিলেন না। ফলে রাশিয়ার সঙ্গে আবার সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়ে এলো যুগোস্লাভিয়ার। ১৯৫৩ সালের ৭ এপ্রিল যুগোস্লাভিয়াকে সোশ্যালিস্ট ফেডারেল রিপাবলিক ঘোষণা এবং প্রণয়ন করা হয় নতুন সংবিধান।

১৯৭০ সালে মর্শাল টিটো দেশশাসনের জন্য একটি নতুন পদ্ধতির প্রবর্তন করেন। দেশে যৌথ প্রেসিডেন্সি পদ্ধতি চালু করা হয়।

এই পদ্ধতির আলোকেই ১৯৭৪ সালে যুগোস্লাভিয়ার সংবিধান পুনঃ প্রণয়ন করা হয় এবং এই পদ্ধতি কার্যকর করা হয় মার্শাল টিটোর মৃত্যুর পর। টিটোর মৃত্যু হয় ১৯৮০ সালে ৪ মে। মার্শাল টিটো শুধু যুগোস্লাভিয়ার নন, আজও তিনি গোটা ইউরোপের সর্বশ্রেষ্ঠ সমরনায়ক এবং সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে পরিগণিত।

সকল অধ্যায়

১. হযরত মুহাম্মদ (দঃ) (৫৭০-৬৩২) – সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী
২. জরথুশত্র (৬২৮-৫৫১ খ্রি. পূ.) – পারশি ধর্মের প্রবর্তক
৩. বর্ধমান মহাবীর (৫৯৯–৫২৭ খ্রি. পূ.) – জৈন দর্শন ও ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা
৪. গৌতম বুদ্ধ (৫৬৩–৪৮৩ খ্রি. পূ.) – বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক
৫. কনফুসিয়াস (৫৫১–৪৭৯ খ্রি. পূ.) – চীনের প্রাচীনতম ধর্মমতবাদের প্রবর্তক
৬. সক্রেটিস (আনু. ৪৬৯–৩৯৯ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্রের আদিজনক
৭. প্লেটো (৪২৮–৩৪৭ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্র যাঁর হাতে পেয়েছিল পূর্নাঙ্গরূপ
৮. ডায়োজিনিস (৪১২–৩২২ খ্রি. পূ.) – একনিষ্ঠ জ্ঞান সাধক
৯. অ্যারিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খ্রি. পূ.) – যুক্তিশাস্ত্রের জনক
১০. যিশু খ্রিস্ট (আনু. ৬ খ্রি. পূ.–আনু. ২৯ খ্রি.) – খ্রিস্টানধর্মের প্রবর্তক
১১. অতীশ দীপঙ্কর (৯৮২–১০৫৩) – জ্ঞানসাধক বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক
১২. গুরু নানক (১৪৬৯–১৫৩৮) – শিখ ধর্মমতের প্রবর্তক
১৩. মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬) – ধর্মের সংস্কারক এবং ‘প্রটেস্টানিজম’ মতবাদের স্রষ্টা
১৪. মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩) – বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তক
১৫. রামমোহন রায় (১৭৭২–১৮৩৩) – ভারতবর্ষে নবযুগের প্রবর্তক
১৬. রামকৃষ্ণ পরমহংস (১৮৩৬–১৮৮৬) – ‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আমি ঈশ্বরকে দর্শন করেছি’
১৭. বারট্রান্ড রাসেল (১৮৭২–১৯৭০ ) – যুদ্ধ-বিরোধী ও মানবতাবাদী দার্শনিক
১৮. থ্যালিস (আনু. ৬২৪–৫৬৫ খ্রি. পূ.) – বিজ্ঞানশাস্ত্রের আদিপুরুষ
১৯. পিথাগোরাস (আনু. ৫৮২–৫০৭ খ্রি. পূ.) – তিনি বলেছিলেন—পৃথিবী গোলাকার
২০. হিপোক্র্যাটিস (আনু: ৪৬০–৩৭০ খ্রি. পূ.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আদিজনক
২১. আর্কিমিডিস (২৮৭–২১২ খ্রি. পূ.) – ঊর্ধ্বমুখী বল সূত্রের আবিষ্কারক
২২. ক্লডিয়াস টলেমি (১০০–১৮০ খ্রি.) – জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রথম কোষগ্রন্থ প্রণেতা
২৩. ক্লডিয়াস গ্যালেন (১৩১–২০১ খ্রি.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আধুনিক পদ্ধতির আদি জনক
২৪. ইবনে সিনা (৯৮০–১০৩৭) – জ্ঞানসাধনায় কাটিয়েছিলেন সমগ্র জীবন
২৫. কোপারনিকাস (১৪৭৩–১৫৪৩) – আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্ৰবক্তা
২৬. জিওর্দানো ব্রুনো (আনু. ১৫৪৮–১৬০০ ) – সত্যপ্রচারের অপরাধে যাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল
২৭. গ্যালিলিও গ্যালিলি (১৫৬৪-১৬৪২) – যাঁর গাণিতিক পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি
২৮. লিওয়েন হুক (১৬৩২–১৭৩৩) – মুদি দোকানদার থেকে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী
২৯. আইজাক নিউটন (১৬৪২–১৭২৭) – মাধ্যাকর্ষন শক্তির আবিষ্কারক
৩০. রিচার্ড আর্করাইট (১৭৩২–১৭৯২) – আধুনিক বস্ত্রশিল্পে বৈপ্লবিক ধারা প্রবর্তক
৩১. উইলিয়াম হার্শেল (১৭৩৮–১৮২২) – ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কারক
৩২. লরেঁ লাভোয়সিয়ের (১৭৪৩–১৭৯৪) – রসায়নশাস্ত্রের জনক
৩৩. মাইকেল ফ্যারাডে (১৭৯১-১৮৬৭) – তাড়িত-চুম্বক বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা
৩৪. চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) – প্রাণিজগতের বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যাদাতা
৩৫. লুই পাস্তুর (১৮২২–১৮৯৫) – জীবাণু আর জলাতঙ্ক রোগ প্রতিষেধকের আবিষ্কারক
৩৬. আলফ্রেড নোবেল (১৮৩৩–১৮৯৬) – যাঁর নামে দেয়া হয় নোবেল পুরস্কার
৩৭. আলভা এডিসন (১৮৪৭–১৯৩১) – সর্বাধিক আবিষ্কারের জনক
৩৮. জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৯–১৯৩৭) – যিনি বলেছিলেন গাছেরও প্রাণ আছে
৩৯. মাদাম কুরি (১৮৬৭–১৯৩৪) – সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহিলা বিজ্ঞানী
৪০. মার্কোনি (১৮৭৪–১৯৩৭) – বেতারযন্ত্রের আবিষ্কারক
৪১. আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯–১৯৫৫) – আপেক্ষিক তত্ত্বের জনক
৪২. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১–১৯৫৫) – পেনিসিলিনের আবিষ্কারক
৪৩. হোমার (আনু. ৭০০-? খ্রি. পূ.) – বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দুটি মহাকাব্যের রচয়িতা
৪৪. ঈশপ (আ. কা. ৬২০–৫৬০ খ্রি. পূ.) – কালজয়ী নীতিগল্পকার
৪৫. সোফোক্লেস (আনু. ৪৯৫-৪০৬ খ্রি. পূ.) – গ্রিক ট্র্যাজেডি নাট্যধারার রূপকার
৪৬. হেরোডোটাস (আনু. ৪৮৫–৪২৫ খ্রি. পূ.) – ইতিহাসশাস্ত্রের জনক
৪৭. অ্যারিস্টোফানিস (আনু. ৪৪৪–৩৮৫ খ্রি. পূ.) – যাঁর সাহিত্যকর্মে আর্তমানবতার কথা প্রতিফলিত
৪৮. মহাকবি কালিদাস (আনু. ৫৭০-৬৫০ খ্রি.) – সংস্কৃতি সাহিত্যের অমর কবি
৪৯. লেওনার্দো দা ভিঞ্চি (১৪৫২–১৫১৯) – সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী
৫০. মিকেলাঞ্জেলো (১৪৭৫–১৫৬৪) – পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাস্কর শিল্পী
৫১. তানসেন (১৫০৬–১৫৮৫) – কিংবদন্তির গায়ক
৫২. শেকসপিয়ার (১৫৬৪-১৬১৬) – বিশ্বসাহিত্যের কালজয়ী নাট্যকার
৫৩. ভলতেয়ার (১৬৯৪-১৭৭৮) – বিখ্যাত ফরাসি চিন্তাবিদ
৫৪. জঁ-জাক্ রুসো (১৭১২–১৭৭৮) – ফরাসি বিপ্লবের রূপকার
৫৫. লর্ড বায়রন (১৭৮৮–১৮২৪) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি
৫৬. ভিক্টর হুগো (১৮০২-১৮৮৫) – ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৭. ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন (১৮০৫–১৮৭৫) – যাঁকে বলা হয় রূপকথার জাদুকর
৫৮. চার্লস ডিকেন্স (১৮১২–১৮৭০) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৯. ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯-১৮৯২) – মার্কিন সাহিত্যের যুগ-প্রবর্তক কবি
৬০. লিয়েফ তলস্তোয় (১৮২৮–১৯১০) – বিশ্বের মহান সাহিত্যিকদের অন্যতম
৬১. জুল ভের্ন (১৮২৮–১৯০৫) – কল্পবিজ্ঞান কাহিনীর স্রষ্টা
৬২. মার্ক টোয়েন (১৮৩৫–১৯১০) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রসস্রষ্টা
৬৩. জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৫৬–১৯৫০) – যিনি প্রথম নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন
৬৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১) – শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনীষা, পৃথিবীর মহত্তম সাহিত্য-ব্যক্তিত্ব
৬৫. ম্যাক্সিম গোর্কি (১৮৬৮–১৯৩৬) – যাঁর সাহিত্যকর্মের প্রধান উপজীব্য গণমানুষের কথা
৬৬. হেলেন কেলার (১৮৮০-১৯৬৮) – যাঁর খ্যাতিকে নেপোলিয়নের সঙ্গে তুলনা করা হতো
৬৭. আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (১৮৯৮–১৯৬১) – জীবনবাদী মার্কিন কথাসাহিত্যিক
৬৮. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯–১৯৭৬) – বাংলার বিদ্রোহী কবি
৬৯. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২–১৭৯৯) – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৭০. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১) – ইতিহাসের কিংবদন্তির মহানায়ক
৭১. জুসেপ্পে গারিবলদি (১৮০৭–১৮৮২) – ইতালির জনক বলে যাঁর খ্যাতি
৭২. আব্রাহাম লিংকন (১৮০৯-১৮৬৫) – যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্রীতদাসপ্রথা রহিত করেছিলেন
৭৩. অটো ফন বিসমার্ক (১৮১৫–১৮৯৮) – জার্মান সাম্রাজ্যের স্থপতি
৭৪. মহাত্মা গান্ধি (১৮৬৯–১৯৪৮) – ‘সবকো সুমতি দে ভগবান’
৭৫. কমরেড লেনিন (১৮৭০–১৯২৪) – বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা
৭৬. উইনস্টন চার্চিল (১৮৭৪–১৯৬৫) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ডাকসাইটে প্রধানমন্ত্রী
৭৭. জোসেফ স্ট্যালিন (১৮৭৯–১৯৫৩) – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়েনের ‘লৌহমানব’
৭৮. কামাল আতাতুর্ক (১৮৮১–১৯৩৮) – নব্য-তুরস্কের জনক
৭৯. ডি ভ্যালেরা (১৮৮২-১৯৭৫) – আয়ারল্যান্ডের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৮০. জওহরলাল নেহরু (১৮৮৯-১৯৬৪) – ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
৮১. আইসেনহাওয়ার (১৮৯০-১৯৬৯) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক
৮২. শার্ল দ্য গল (১৮৯০-১৯৭০) – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা
৮৩. হো-চি-মিন (১৮৯০-১৯৬৯) – ভিয়েতনামের মুক্তিদাতা পুরুষ
৮৪. মার্শাল টিটো (১৮৯২–১৯৮০) – জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা
৮৫. মাও-সে-তুং (১৮৯৫–১৯৭৬) – চীন সাধারণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা
৮৬. সুভাষচন্দ্র বসু (১৮৯৭–১৯৪৫) – ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’
৮৭. জন এফ কেনেডি (১৯১৭–১৯৬৩) – গুপ্তঘাতকের হাতে যাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছিল
৮৮. ইন্দিরা গান্ধি (১৯১৭–১৯৮৪) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
৮৯. নেলসন ম্যান্ডেলা (১৯১৮) – দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তিদাতা পুরুষ
৯০. শেখ মুজিবর রহমান (১৯২০–১৯৭৫) – বাংলাদেশের জাতির জনক
৯১. প্যাট্রিস লুমুম্বা (১৯২৫-১৯৬১) – কঙ্গোর মুক্তিদাতা পুরুষ
৯২. মার্কো পোলো (১২৫৬–১৩২৩) – দুঃসাহসিক অভিযাত্রী
৯৩. ক্রিস্টোফার কলম্বাস (আনু. ১৪৪৬-১৫০৬) – আমেরিকার আবিষ্কারক
৯৪. ডেভিড লিভিংস্টোন (১৮১৩-১৮৭৩) – আফ্রিকার আবিষ্কারক
৯৫. উইলিয়াম জোন্স (১৭৪৬–১৭৯৪) – এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৬. ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (১৮২০–১৯১০) – আধুনিক ‘নার্সিং’ বৃত্তির অগ্রপথিক
৯৭. হেনরি ডুনান্ট (১৮২৮–১৯১০) – রেডক্রস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৮. ব্যাডেন পাওয়েল (১৮৫৭–১৯৪১) – বয়স্কাউট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা
৯৯. মাদার তেরেসা (১৯১০–১৯৯৭) – প্রেম, করুণা ও ধর্মের মূর্ত প্রতিমা
১০০. অ্যাডাম স্মিথ (১৭২৩–১৭৯০) – রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিজ্ঞানের জনক

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন