আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯–১৯৫৫) – আপেক্ষিক তত্ত্বের জনক

ভবেশ রায়

যে মহাজ্ঞানী আইনস্টাইনের নাম আজ সারা বিশ্বে শ্রদ্ধার সঙ্গে সর্বত্র উচ্চারিত, যাঁকে এক নজর দেখা এবং যাঁর কথা শোনার জন্য সেকালেও সারা পৃথিবীর মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতেন, সেই মানুষটির ছোটবেলায় ঘটেছিল একটা মজার ব্যাপার। সেই তখন তাঁর প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক তাঁকে দেখে বলেছিলেন, ছেলেটি একটা আস্ত বোকা। ওকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না।

বালক আইনস্টাইন সম্পর্কে শিক্ষকদের এ-রকমটা বলার কিছু কারণও ছিল। কেননা, ওই বয়সে তিনি ক্লাসে কোনো প্রশ্নেরই ঝটপট জবাব দিতে পারতেন না। ভেবে বলতে হতো সবকিছু। আর ভাবতে গিয়েই বেধে যেত যত গোলমাল। শিক্ষকদের কাছে মনে হতো ছেলেটি বোকা।

বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের জন্ম ১৮৭৯ সালের ১৪ মার্চ জার্মানির মিউনিখ শহর থেকে ১৩৪ কিলোমিটার দূরে উম্ শহরে এক ইহুদি পরিবারে। কিন্তু তাঁর যখন মাত্র এক বছর বয়স, তাঁর বাবা-মা তখন উলম্ ছেড়ে মিউনিখে চলে যান। সেখানে এসেই তিনি ভর্তি হন শহরের উপকণ্ঠের এক প্রাইমারি স্কুলে।

শিক্ষকরা বোকা বললেও আইনস্টাইনকে নিয়ে তাঁর মায়ের বড় আশা ছিল। মা বলতেন, তোমরা দেখে নিও, ও বড় হয়ে অধ্যাপক হবে। শুনে সবাই হাসতেন।

দশ বছর বয়সে আইনস্টাইনকে ভর্তি করা হলো লুইটবোল্ড জিমনাসিয়াম স্কুলে। এখানে পড়ার সময়ও তিনি তেমন কোনো চমক সৃষ্টি করতে পারেননি।

এই সময় তাঁদের পরিবারে নেমে আসে একটা বিপর্যয়। পারিবারিক ব্যবসা হঠাৎ করেই মার খেল। ফলে গোটা পরিবারটির প্রায় পথে বসার উপক্রম হলো।

এই অবস্থার মুখে আইনস্টাইনের বাবা সিদ্ধান্ত নিলেন তাঁদের মিউনিখের বাড়ি বিক্রি করে দিয়ে চলে যাবেন ইতালির মিলান শহরে। ছেলেকে তিনি হোস্টেলে থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন। কেননা, তার শেষবর্ষের পরীক্ষা সামনেই। স্কুল বদল করলে তার পড়াশোনার ক্ষতি হতে পারে ভেবে, তারা তাকে মিউনিখে রেখেই চলে যান ইতালিতে। কিন্তু আইনস্টাইন পরিবারের আপনজনদের ছেড়ে বেশিদিন একা একা থাকতে পারলেন না। ফলে স্কুলের কাউকে কিছু না বলেই চলে এলেন বাবা-মার কাছে।

মিলানে এসেই কিন্তু নতুন স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেলেন না তিনি। এ ছাড়া বাবা তাঁকে এক বছর বিশ্রাম নিয়ে আবার স্কুলের পড়াশোনা নতুন করে শুরু করার কথা বললেন। বালক আইনস্টাইনের জন্য এ ছিল এক মজার ব্যাপার। পাক্কা একটা বছর পড়াশোনা নেই। ফলে প্রচুর ঘুরে বেড়ানো যাবে। কী মজাটাই-না হবে!

এদিকে আইনস্টাইনের বাবার ব্যবসা আবার লোকসানের মুখে পড়ল। ফলে মিলানেও থাকা সম্ভব হলো না তাদের। এমনকি আইনস্টাইনের পড়াশোনার খরচ চালানোও অসাধ্য হয়ে পড়ল।

শেষে এক দূর-সম্পর্কের মামার অর্থ সাহায্যে তাঁরা তখন চলে এলেন ইতালিরই আরেকটি ছোট্ট শহর প্যাভিয়াতে। বছরখানেক পর তিনি ভর্তি হন জুরিখের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে। এখানকার সবগুলো পরীক্ষাতেই ভালো ফলাফল করে কৃতিত্বের সঙ্গে শেষ করেন তিনি তাঁর শিকক্ষা-জীবন।

কিন্তু পাস করে বের হবার পর চরম হতাশার শিকার হন তিনি। পেয়ে বসল গভীর ভাবনায়, এবার কী করবেন? কে দেবে তাঁকে চাকরি? ঘুরতে লাগলেন পথে-পথে একবার একটা টেকনিক্যাল স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি জুটিয়েও বেশিদিন সেখানে থাকা সম্ভব হলো না তাঁর পক্ষে। অবশেষে এক বন্ধুর সুপারিশে বার্নের পেটেন্ট অফিসে সামান্য বেতনে কেরানির চাকরিতে ঢুকে পরলেন।

তারপর হুট করেই তাঁর কলেজ-জীবনের সহপাঠিনী সিলেভা ম্যারিচের সঙ্গে বেঁধে ফেললেন ঘর। ছোট্ট একটি সংসার। এই সামান্য বেতনের চাকরিটা ভালই লাগছিল আইনস্টাইনের। এখানে তাঁকে বড় বড় ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে কাজ করতে হয়। ভালই লাগে। আর অবসর সময়ে চলে তাঁর গবেষণা, আপেক্ষিক মতবাদের ওপর নানা চিন্তাভাবনা আর পরীক্ষানিরীক্ষার কাজ।

এরই মধ্যে তিনি গবেষণালব্ধ ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে লিখে ফেললেন একটি বিজ্ঞানবিষয়ক নিবন্ধ। অনেক খেটেখুটে তৈরি করা নিবন্ধটি তিনি পাঠিয়ে দিন জার্মানির লিপজিগ শহর থেকে প্রকাশিত ‘অ্যানালোগ ফর ফিজিক’ (Analogue for Physic) পত্রিকায়। মাস কয়েক পর লেখাটি ছাপাও হলো। নিবন্ধ প্রকাশের এই ঘটনাই জীবনের মোড় আমূল ঘুড়িয়ে দেয় আইনস্টাইনের। সেটা ছিল ১৯০৫ সাল। নিবন্ধটি বিজ্ঞানীমহলে দারুণ আলোড়ন সৃষ্টি করল। বার্লিন, প্যারিস এবং লন্ডনের বিজ্ঞানীরা অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করলেন, এই মতবাদ যে সম্পূর্ণ মৌলিক! কে এই আইনস্টাইন? চারদিকে শুরু হলো তোলপাড়।

আইনস্টাইনের আপেক্ষিক মতবাদ পড়ে বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ফন লাউ নিজেই ছুটে এলেন তাঁর সঙ্গে আলোচনা করতে। এর কিছুদিন পরেই অস্ট্রিয়ার সালবার্গে অনুষ্ঠেয় বিজ্ঞান সম্মেলনে যোগদানের আমন্ত্রণপত্র পেলেন তিনি। এটাই ছিল বিজ্ঞানী হিসেবে আইনস্টাইনের প্রথম স্বীকৃতি।

এরপর তিনি জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানের পার্টটাইম প্রফেসর হিসেবে যোগদান করেন। পরে লাভ করেন এখানে সহকারী অধ্যাপকের পদ। তখনও আইনস্টাইনের বয়স কুড়ি পার হয়নি। নিজের মেধা ও মননের স্বীকৃতি পেয়ে তিনি তো মহাখুশি। যাক, এবার থেকে তাহলে তিনি গবেষণার কাজে পুরোপুরি আত্মনিয়োগ করার সুযোগ পাবেন।

কিছুদিন যেতে-না-যেতেই একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এল তাঁর পুরোপুরি অধ্যাপকের পদে যোগদানের আমন্ত্রণ। প্রাগ বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ইউরোপের সবচেয়ে পুরনো বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি। কিন্তু এখানে বেশি দিন চাকুরি করা সম্ভব হয়নি তাঁর পক্ষে। আবার তিনি জুরিখে ফিরে যোগ দিলেন পুরনো প্রতিষ্ঠান ফেডারেল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে।

এবার আমন্ত্রণ এল বার্লিনের প্রুশিয়ান অ্যাকাডেমি অব সয়েন্সের সদস্যপদ লাভের। এ আমন্ত্রণ অনেক সম্মানের। আর সেখানে গেলে তিনি তাঁর গবেষণার কাজটিও করতে পারবেন একাগ্রমনে। তিনি আমন্ত্রণ গ্রহণ করলেন। কিন্তু তাঁর স্ত্রী মিলেভা কিছুতেই জুরিখ ছেড়ে যেতে চাইছিলেন না। আইনস্টাইন স্ত্রী আর ছেলেদের সেখানে রেখেই চলে এলেন বার্লিনে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই মিলেভার সাথে আইনস্টাইনের শেষপর্যন্ত ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।

এরপর থেকে আপনভোলা বিজ্ঞানী আইনস্টাইনকে দেখাশোনা করার দায়িত্ব নিলেন তাঁরই এক বিধবা কাকাতো বোন এলসা। ক্রমে এলসার সাথে তাঁর হৃদয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং প্রথম স্ত্রী মিলেভাকে তালাক দিয়ে এলসাকে বিয়ে করেন ১৯১৯ সালে।

বিজ্ঞানী আইনস্টাইন ছিলেন একেবারেই আত্মভোলা, বেখেয়ালি ধরনের মানুষ। একবার এক সম্মেলন উপলক্ষ্যে এলসা স্বামীকে এক সেট নতুন পোশাক দেন, যাতে তা পরে তিনি সম্মেলনে বক্তৃতা দিতে যান। কিন্তু সম্মেলন শেষে স্বামীর ফিরে আসার পর, এলসা দেখলেন, যেমনকার নতুন পোশাক তেমনি পড়ে আছে। ঘটনা দেখে লজ্জিত আইনস্টাইন হেসে বললেন, তোমার দেওয়া পোশাকটার কথা আমার মনেই ছিল না, দুঃখিত! আর আসল কথা কী জানো? ওঁরা তো আমার পোশাক দেখতে আসেননি, এসেছিলেন আমার বক্তৃতা শুনতে। এ-রকমই আত্মভোলা আর কৌতুকপ্রবণ ছিলেন তিনি।

এদিকে জার্মানিতে ক্রমেই ইহুদিবিদ্বেষ প্রবল আকার ধারণ করতে থাকে। তাই তাঁকেও এর শিকার হতে হল। নাৎসিবাদীরা বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের আপেক্ষিক মতবাদকে ইহুদিবিজ্ঞান বলে অপ প্রচার শুরু করলেন। এতে করে তিনি ভয়ানক মর্মাহত হলেন।

১৯২১ সালে তিনি প্রথমবারের মতো যান আমেরিকা সফরে। আমেরিকাবাসীরা তাঁকে প্রায় রাজকীয় সংবর্ধনা দান করে। পরের বছর অর্থাৎ ১৯২২ সালে তিনি এলসাকে নিয়ে বের হন মধ্যপ্রাচ্য সফরে। এই সফরে বেরিয়েই তিনি শুনতে পান একটি চাঞ্চল্যকর খবর। সুইস অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স তাঁকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করেছে।

১৯২৯ সালে তিনি আবিষ্কার করেন আরও একটি যুগান্তকারী বৈজ্ঞানিক সূত্রে ভর শক্তি সমীকরণ E = mc2। এখানে E = শক্তি, m = ভর ও c = আলোর গতিবেগ।

বছর কয়েক তিনি ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে আমেরিকায় বসবাস করেন। সেখানে থাকতেই তিনি একবার নিউ ইয়র্কের রিভারসাইড গির্জা দেখতে যান। সেখানে পাদরি তাঁকে সমস্ত গির্জা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখানো শেষে বলেন, এখানে ইতিহাসের বিখ্যাত ছয়জন মনীষীর প্রতিকৃতি অঙ্কিত আছে। তাঁদের মধ্যে মাত্র একজন জীবিত এবং সে হলেন আপনি।

১৯৩৩ সালে হিটলার জার্মানির রাষ্ট্রনায়ক হন। তিনি ক্যালিফোর্নিয়ায় বসে এই খবর পেয়েই তিনি স্থির করে ফেলেন, জার্মানির সাথে তাঁকে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। এই সময় জার্মানিতে চলছিল ইহুদিদের ওপর অকথ্য-অমানবিক নির্যাতনের পড় নির্যাতন। অহরহ তিনি পাচ্ছিলেন এসব খবর। আইন স্টাইন তাই এর একটা সুরাহা করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন। কালবিলম্ব না করে তিনি রওয়ানা হলেন বেলিজিয়ামের উদ্দেশ্যে। যাওয়ার পথেই তিনি খবর পেলেন, জার্মানিতে তাঁর যাবতীয় সম্পত্তি হিটলারের নাৎসি সরকার বাজেয়াপ্ত করেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদস্বরূপ তিনি তাঁর অ্যাকাডেমির চাকরি ছেড়ে দিলেন। কারণ তিনি জানতেন, তাঁর আর জার্মানিতে যাওয়া হবে না।

চাকুরিতে ইস্তফা দেয়ার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জার্মানিতে তাঁর বিরুদ্ধে চলতে লাগল আরও জোর অপপ্রচার। কোনো কোনো পত্রিকা তাঁর ফাঁসির জন্য পর্যন্ত সুপারিশ করতে লাগল।

বেলজিয়ামে আইনস্টাইনের আগমনের সংবাদ পেয়ে দেশটির রাজা ও রানি তো মহাখুশি। তাই তাঁরা এই মহান অতিথিকে রাজপ্রাসাদে অনুষ্ঠানিক নিমন্ত্রণ পাঠালেন আইনস্টাইন রাজ-দম্পতির দাওয়াত রক্ষা করার জন্য একলাই পায়ে হেঁটে রওনা দিলেন। অন্য দিকে রানি তাঁকে প্রাসাদে আনার জন্য পাঠিয়েছেন গাড়ি। কিন্তু রাজকর্মচারীরা গিয়ে খবর দিলেন আইনস্টাইন বাসায় নেই। এর কিছুক্ষণ পরেই আইনস্টাইন রাজপ্রাসাদে এসে হাজির। রানি বিস্ময় প্রকাশ করলে তিনি বললেন, ‘এটুকুই তো পথ, হেঁটেই চলে এসেছি।” আদর অভ্যর্থনা ও আন্তরিক আলাপ আলোচনা শেষে বেলজিয়ামের রানি তাঁকে সাদরে রাজনৈতিক আশ্রয় দিতেও সম্মত হন। কিন্তু জার্মানির নিকটবর্তী কোনো দেশে থাকা তাঁর জন্য নিরাপদ নয় ভেবে তিনি ঠিক করলেন, যুক্তরাষ্ট্রেই ফিরে যাবেন। ·

তারপর তা-ই হল। তিনি নিউজার্সির প্রিন্সটন শহরে ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্স স্টাডিতে যোগ দেন। এখানে আসার পর স্ত্রী এলসার মৃত্যু হয় ১৯৩৬ সালে।

এই ঘটনার পর থেকে আইনস্টাইন বিষণ্ন হয়ে পড়েন। তারপরও বাদবাকি জীবন তিনি এই প্রিন্সটনেই কাটান। এখানেই এই মহান বিজ্ঞানীর মৃত্যু হয়।

বৈচিত্র্যে ভরপুর ছিল এই মহান বিজ্ঞানীর জীবন। তাঁর জীবনীকাররা বলেছেন, বিজ্ঞানী হিসেবে তিনি যতখানি শ্রদ্ধার অধিকারী ছিলেন, ব্যক্তিক বা পারিবারিক জীবনে ছিলেন একেবারেই মন্দ-চরিত্র বৈেিষ্ট্যর ধারক। কিন্তু সে আরেক অধ্যায়। সব কিছু ছাপিয়ে তাঁর যে যুগান্তর সৃষ্টিকারী বৈজ্ঞানিক অবদান, আমাদের কাছে সেটাই তাঁর আসল পরিচয়, আইনস্টাইন যাঁর নাম। ১৯৫৫ সালের ১৮ এপ্রিল।

সকল অধ্যায়

১. হযরত মুহাম্মদ (দঃ) (৫৭০-৬৩২) – সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী
২. জরথুশত্র (৬২৮-৫৫১ খ্রি. পূ.) – পারশি ধর্মের প্রবর্তক
৩. বর্ধমান মহাবীর (৫৯৯–৫২৭ খ্রি. পূ.) – জৈন দর্শন ও ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা
৪. গৌতম বুদ্ধ (৫৬৩–৪৮৩ খ্রি. পূ.) – বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক
৫. কনফুসিয়াস (৫৫১–৪৭৯ খ্রি. পূ.) – চীনের প্রাচীনতম ধর্মমতবাদের প্রবর্তক
৬. সক্রেটিস (আনু. ৪৬৯–৩৯৯ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্রের আদিজনক
৭. প্লেটো (৪২৮–৩৪৭ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্র যাঁর হাতে পেয়েছিল পূর্নাঙ্গরূপ
৮. ডায়োজিনিস (৪১২–৩২২ খ্রি. পূ.) – একনিষ্ঠ জ্ঞান সাধক
৯. অ্যারিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খ্রি. পূ.) – যুক্তিশাস্ত্রের জনক
১০. যিশু খ্রিস্ট (আনু. ৬ খ্রি. পূ.–আনু. ২৯ খ্রি.) – খ্রিস্টানধর্মের প্রবর্তক
১১. অতীশ দীপঙ্কর (৯৮২–১০৫৩) – জ্ঞানসাধক বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক
১২. গুরু নানক (১৪৬৯–১৫৩৮) – শিখ ধর্মমতের প্রবর্তক
১৩. মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬) – ধর্মের সংস্কারক এবং ‘প্রটেস্টানিজম’ মতবাদের স্রষ্টা
১৪. মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩) – বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তক
১৫. রামমোহন রায় (১৭৭২–১৮৩৩) – ভারতবর্ষে নবযুগের প্রবর্তক
১৬. রামকৃষ্ণ পরমহংস (১৮৩৬–১৮৮৬) – ‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আমি ঈশ্বরকে দর্শন করেছি’
১৭. বারট্রান্ড রাসেল (১৮৭২–১৯৭০ ) – যুদ্ধ-বিরোধী ও মানবতাবাদী দার্শনিক
১৮. থ্যালিস (আনু. ৬২৪–৫৬৫ খ্রি. পূ.) – বিজ্ঞানশাস্ত্রের আদিপুরুষ
১৯. পিথাগোরাস (আনু. ৫৮২–৫০৭ খ্রি. পূ.) – তিনি বলেছিলেন—পৃথিবী গোলাকার
২০. হিপোক্র্যাটিস (আনু: ৪৬০–৩৭০ খ্রি. পূ.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আদিজনক
২১. আর্কিমিডিস (২৮৭–২১২ খ্রি. পূ.) – ঊর্ধ্বমুখী বল সূত্রের আবিষ্কারক
২২. ক্লডিয়াস টলেমি (১০০–১৮০ খ্রি.) – জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রথম কোষগ্রন্থ প্রণেতা
২৩. ক্লডিয়াস গ্যালেন (১৩১–২০১ খ্রি.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আধুনিক পদ্ধতির আদি জনক
২৪. ইবনে সিনা (৯৮০–১০৩৭) – জ্ঞানসাধনায় কাটিয়েছিলেন সমগ্র জীবন
২৫. কোপারনিকাস (১৪৭৩–১৫৪৩) – আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্ৰবক্তা
২৬. জিওর্দানো ব্রুনো (আনু. ১৫৪৮–১৬০০ ) – সত্যপ্রচারের অপরাধে যাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল
২৭. গ্যালিলিও গ্যালিলি (১৫৬৪-১৬৪২) – যাঁর গাণিতিক পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি
২৮. লিওয়েন হুক (১৬৩২–১৭৩৩) – মুদি দোকানদার থেকে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী
২৯. আইজাক নিউটন (১৬৪২–১৭২৭) – মাধ্যাকর্ষন শক্তির আবিষ্কারক
৩০. রিচার্ড আর্করাইট (১৭৩২–১৭৯২) – আধুনিক বস্ত্রশিল্পে বৈপ্লবিক ধারা প্রবর্তক
৩১. উইলিয়াম হার্শেল (১৭৩৮–১৮২২) – ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কারক
৩২. লরেঁ লাভোয়সিয়ের (১৭৪৩–১৭৯৪) – রসায়নশাস্ত্রের জনক
৩৩. মাইকেল ফ্যারাডে (১৭৯১-১৮৬৭) – তাড়িত-চুম্বক বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা
৩৪. চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) – প্রাণিজগতের বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যাদাতা
৩৫. লুই পাস্তুর (১৮২২–১৮৯৫) – জীবাণু আর জলাতঙ্ক রোগ প্রতিষেধকের আবিষ্কারক
৩৬. আলফ্রেড নোবেল (১৮৩৩–১৮৯৬) – যাঁর নামে দেয়া হয় নোবেল পুরস্কার
৩৭. আলভা এডিসন (১৮৪৭–১৯৩১) – সর্বাধিক আবিষ্কারের জনক
৩৮. জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৯–১৯৩৭) – যিনি বলেছিলেন গাছেরও প্রাণ আছে
৩৯. মাদাম কুরি (১৮৬৭–১৯৩৪) – সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহিলা বিজ্ঞানী
৪০. মার্কোনি (১৮৭৪–১৯৩৭) – বেতারযন্ত্রের আবিষ্কারক
৪১. আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯–১৯৫৫) – আপেক্ষিক তত্ত্বের জনক
৪২. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১–১৯৫৫) – পেনিসিলিনের আবিষ্কারক
৪৩. হোমার (আনু. ৭০০-? খ্রি. পূ.) – বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দুটি মহাকাব্যের রচয়িতা
৪৪. ঈশপ (আ. কা. ৬২০–৫৬০ খ্রি. পূ.) – কালজয়ী নীতিগল্পকার
৪৫. সোফোক্লেস (আনু. ৪৯৫-৪০৬ খ্রি. পূ.) – গ্রিক ট্র্যাজেডি নাট্যধারার রূপকার
৪৬. হেরোডোটাস (আনু. ৪৮৫–৪২৫ খ্রি. পূ.) – ইতিহাসশাস্ত্রের জনক
৪৭. অ্যারিস্টোফানিস (আনু. ৪৪৪–৩৮৫ খ্রি. পূ.) – যাঁর সাহিত্যকর্মে আর্তমানবতার কথা প্রতিফলিত
৪৮. মহাকবি কালিদাস (আনু. ৫৭০-৬৫০ খ্রি.) – সংস্কৃতি সাহিত্যের অমর কবি
৪৯. লেওনার্দো দা ভিঞ্চি (১৪৫২–১৫১৯) – সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী
৫০. মিকেলাঞ্জেলো (১৪৭৫–১৫৬৪) – পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাস্কর শিল্পী
৫১. তানসেন (১৫০৬–১৫৮৫) – কিংবদন্তির গায়ক
৫২. শেকসপিয়ার (১৫৬৪-১৬১৬) – বিশ্বসাহিত্যের কালজয়ী নাট্যকার
৫৩. ভলতেয়ার (১৬৯৪-১৭৭৮) – বিখ্যাত ফরাসি চিন্তাবিদ
৫৪. জঁ-জাক্ রুসো (১৭১২–১৭৭৮) – ফরাসি বিপ্লবের রূপকার
৫৫. লর্ড বায়রন (১৭৮৮–১৮২৪) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি
৫৬. ভিক্টর হুগো (১৮০২-১৮৮৫) – ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৭. ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন (১৮০৫–১৮৭৫) – যাঁকে বলা হয় রূপকথার জাদুকর
৫৮. চার্লস ডিকেন্স (১৮১২–১৮৭০) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৯. ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯-১৮৯২) – মার্কিন সাহিত্যের যুগ-প্রবর্তক কবি
৬০. লিয়েফ তলস্তোয় (১৮২৮–১৯১০) – বিশ্বের মহান সাহিত্যিকদের অন্যতম
৬১. জুল ভের্ন (১৮২৮–১৯০৫) – কল্পবিজ্ঞান কাহিনীর স্রষ্টা
৬২. মার্ক টোয়েন (১৮৩৫–১৯১০) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রসস্রষ্টা
৬৩. জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৫৬–১৯৫০) – যিনি প্রথম নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন
৬৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১) – শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনীষা, পৃথিবীর মহত্তম সাহিত্য-ব্যক্তিত্ব
৬৫. ম্যাক্সিম গোর্কি (১৮৬৮–১৯৩৬) – যাঁর সাহিত্যকর্মের প্রধান উপজীব্য গণমানুষের কথা
৬৬. হেলেন কেলার (১৮৮০-১৯৬৮) – যাঁর খ্যাতিকে নেপোলিয়নের সঙ্গে তুলনা করা হতো
৬৭. আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (১৮৯৮–১৯৬১) – জীবনবাদী মার্কিন কথাসাহিত্যিক
৬৮. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯–১৯৭৬) – বাংলার বিদ্রোহী কবি
৬৯. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২–১৭৯৯) – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৭০. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১) – ইতিহাসের কিংবদন্তির মহানায়ক
৭১. জুসেপ্পে গারিবলদি (১৮০৭–১৮৮২) – ইতালির জনক বলে যাঁর খ্যাতি
৭২. আব্রাহাম লিংকন (১৮০৯-১৮৬৫) – যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্রীতদাসপ্রথা রহিত করেছিলেন
৭৩. অটো ফন বিসমার্ক (১৮১৫–১৮৯৮) – জার্মান সাম্রাজ্যের স্থপতি
৭৪. মহাত্মা গান্ধি (১৮৬৯–১৯৪৮) – ‘সবকো সুমতি দে ভগবান’
৭৫. কমরেড লেনিন (১৮৭০–১৯২৪) – বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা
৭৬. উইনস্টন চার্চিল (১৮৭৪–১৯৬৫) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ডাকসাইটে প্রধানমন্ত্রী
৭৭. জোসেফ স্ট্যালিন (১৮৭৯–১৯৫৩) – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়েনের ‘লৌহমানব’
৭৮. কামাল আতাতুর্ক (১৮৮১–১৯৩৮) – নব্য-তুরস্কের জনক
৭৯. ডি ভ্যালেরা (১৮৮২-১৯৭৫) – আয়ারল্যান্ডের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৮০. জওহরলাল নেহরু (১৮৮৯-১৯৬৪) – ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
৮১. আইসেনহাওয়ার (১৮৯০-১৯৬৯) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক
৮২. শার্ল দ্য গল (১৮৯০-১৯৭০) – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা
৮৩. হো-চি-মিন (১৮৯০-১৯৬৯) – ভিয়েতনামের মুক্তিদাতা পুরুষ
৮৪. মার্শাল টিটো (১৮৯২–১৯৮০) – জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা
৮৫. মাও-সে-তুং (১৮৯৫–১৯৭৬) – চীন সাধারণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা
৮৬. সুভাষচন্দ্র বসু (১৮৯৭–১৯৪৫) – ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’
৮৭. জন এফ কেনেডি (১৯১৭–১৯৬৩) – গুপ্তঘাতকের হাতে যাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছিল
৮৮. ইন্দিরা গান্ধি (১৯১৭–১৯৮৪) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
৮৯. নেলসন ম্যান্ডেলা (১৯১৮) – দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তিদাতা পুরুষ
৯০. শেখ মুজিবর রহমান (১৯২০–১৯৭৫) – বাংলাদেশের জাতির জনক
৯১. প্যাট্রিস লুমুম্বা (১৯২৫-১৯৬১) – কঙ্গোর মুক্তিদাতা পুরুষ
৯২. মার্কো পোলো (১২৫৬–১৩২৩) – দুঃসাহসিক অভিযাত্রী
৯৩. ক্রিস্টোফার কলম্বাস (আনু. ১৪৪৬-১৫০৬) – আমেরিকার আবিষ্কারক
৯৪. ডেভিড লিভিংস্টোন (১৮১৩-১৮৭৩) – আফ্রিকার আবিষ্কারক
৯৫. উইলিয়াম জোন্স (১৭৪৬–১৭৯৪) – এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৬. ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (১৮২০–১৯১০) – আধুনিক ‘নার্সিং’ বৃত্তির অগ্রপথিক
৯৭. হেনরি ডুনান্ট (১৮২৮–১৯১০) – রেডক্রস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৮. ব্যাডেন পাওয়েল (১৮৫৭–১৯৪১) – বয়স্কাউট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা
৯৯. মাদার তেরেসা (১৯১০–১৯৯৭) – প্রেম, করুণা ও ধর্মের মূর্ত প্রতিমা
১০০. অ্যাডাম স্মিথ (১৭২৩–১৭৯০) – রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিজ্ঞানের জনক

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন