মার্কোনি (১৮৭৪–১৯৩৭) – বেতারযন্ত্রের আবিষ্কারক

ভবেশ রায়

১৯০১ সালে যখন ইউরোপীয় ভূখণ্ড থেকে সর্বপ্রথম আটলান্টিক মহাসাগরের অপর পারে বেতার-সংকেত পাঠানো সম্ভব হয় তখন সারা বিশ্বের এই অভূতপূর্ব সাফল্যে বিস্ময়ের সীমা ছিল না। নিউ ইয়র্ক টাইমস্ পত্রিকার ১৪ ডিসেম্বর (১৯০১) তারিখের সংখ্যার প্রথম পৃষ্ঠার খবরে বলা হয়, আজ রাতে আধুনিককালের সবচেয়ে বিস্ময়কর বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনের কথা ঘোষণা করা হয়েছে।

অথচ এই চরম সাফল্যের দুদিন আগেও দেশের ঝানু ঝানু বিজ্ঞানী এই প্ৰচেষ্টাকে স্রেফ আহাম্মকি কাজ বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু সবার মুখে কালি দিয়ে তরুণ বিজ্ঞানী গুলিয়েলমো মার্কোনি (Guglielmo Marconi) তাঁর বেতারযন্ত্র আবিষ্কারকে সত্যি সত্যি চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হন।

মার্কোনির এই বিস্ময়কর আবিষ্কার কিন্তু রাতারাতি সম্ভব হয়নি, দীর্ঘদিনের অক্লান্ত পরিশ্রম আর নিষ্ঠার মাধ্যমেই তিনি এই অসাধ্য সাধন করেন।

বেতার মাধ্যমে সংকেতবার্তা প্রেরণের প্রথম চিন্তা যখন তাঁর মাথায় ঢোকে তখন তিনি মাত্র কিশোর।

ইতালির বোলোনে শহরের উপকণ্ঠে ‘ভিলা গ্রিফোন’ নামের বিশাল এক দোতলা বাড়ির দুটি ভিন্ন ভিন্ন চিলেকোঠায় বসে দুজন যুবক নানারকম যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করছিল। এদের একজন বিশ বছর বয়সী গুলিয়েলমো মার্কোনি এবং তাঁর বড় ভাই ঊনত্রিশ বছরের আলফনসো।

ছোট ভাই মার্কনি দোতলার চিলেকোঠার ঘরে স্থাপন করেছেন একটি ট্রান্সমিটার যন্ত্র এবং ঘরের অপর প্রান্তে একটি কম্পাস নিড্‌ল্। এই ট্রান্সমিটারে তিনি সাধারণ টেলিগ্রাফিক কি-বোর্ডের মাধ্যমে মোর্স কোড-এর মতো সংকেত প্রেরণ করলেই তা অন্য প্রান্তে রক্ষিত কম্পাস নিড়লে ধরা পড়ছে। মাঝে কোনো তার সংযোজনেরও প্রয়োজন হয় না।

আসলে মার্কোনি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পান যে, ট্রান্সমিটারের সাহায্যে সংকেত প্রেরণ করলে তার শব্দতরঙ্গ বাতাসে ভর করে চারদিকে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং এই সংকেতই দূরে রক্ষিত কম্পাস নিভূলে প্রতিফলিত হয়ে থাকে। ফলে সংকেত-শব্দ বেজে ওঠে।

এটা ছিল তাঁর কাছে প্রথমে একটি মজার খেলা। কিন্তু খেলাটি তিনি একা খেলতে পারছিলেন না। এতে দুজন মানুষের প্রয়োজন হয়। তাই তিনি তাঁর এই খেলার সঙ্গী করে নেন বড় ভাই আলফনসোকে। তবে পুরো কাজটি করতেন মার্কোনি নিজে।

বস্তুত তাঁরা দুজনেই ক্রমে দূরে, তারপর আরও দূরে সংকেত প্রেরণ করা যায় কি না, করছিলেন সেই চেষ্টাই।

কিন্তু মার্কোনির বাবা ব্যাপারটাকে মোটেও গুরুত্ব দিলেন না। ভাবলেন হয়তো ওটা ছেলেমানুষি খেলা ছাড়া আর কিছু নয়। তাই তিনি একদিন রেগে গিয়ে ছেলেদের খেলার যন্ত্রপাতিগুলোও সোজা ভেঙে ফেলে দিলেন। অবশেষে মা এসে শেষরক্ষা করেন।

বাবা যতই অপছন্দ করুন না কেন, ছোট ছেলে মার্কোনির মাথা থেকে কিন্তু বেতার তৈরির চিন্তা গেল না। বরং দু’ভাই দ্বিগুণ উৎসাহে শুরু করে দিলেন তাঁদের কাজ। আর কেবলি উপায় খুঁজতে লাগলেন, কীভাবে তাঁদের উদ্ভাবিত যন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করা যায়! ভাবনা মতো, তাঁরা এবার তাঁদের যন্ত্রটিকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে আসেন।

প্রথম দিকে তাঁরা ট্রান্সমিটারটি বসিয়েছিলেন চিলেকোঠার একটা ঘরের মধ্যে এবং ঘরের বাইরে সামান্য দূরেই এর গ্রাহকন্ত বা রিসিভারটি। এবার তাঁরা ট্রান্সমিটারটি স্থাপন করলেন চিলেকোঠায় আর রিসিভার স্থাপন করলেন একেবারে নিচের তলায়। এবং এবারই তাঁরা তাঁদের লক্ষ্য অর্জনে সফলকাম হলেন। মার্কনি অনায়াসে চিলেকোঠার ঘর থেকে সংকেত পাঠিয়ে তা নিচের তলার ঘরে রাখা রিসিভারের মাধ্যমে ধরতে সক্ষম হলেন। তাঁরা সংকেত পাঠিয়েছিলেন মাত্র একটি শব্দ। একটি ইংরেজি বর্ণমালা এস (S)। এই শব্দের উচ্চারণই রিসিভারে ধরা পড়ে।

মার্কোনির মনে তখন দৃঢ় বিশ্বাস জন্মালো, যদি তাঁর ট্রান্সমিটার থেকে শব্দতরঙ্গ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে তা নিচের তলার ঘর পর্যন্ত পৌঁছুতে পারে, তা হলে এই শব্দতরঙ্গ আরও দূরেও নিশ্চয়ই যেতে পারবে। তখন তাঁরা দুভাই ব্যপারটিকে আরও যাচাই করে দেখার জন্য এবার ঘর থেকে বাইরে নিয়ে গেলেন তাঁদের সমস্ত যন্ত্রপাতি।

বড় ভাইকে সঙ্গে নিয়েই মার্কোনি গেলেন বাড়ি থেকে দূরে একটি পাহাড়ে। এবার ট্রান্সমিটারটি তাঁরা স্থাপন করলেন একটি উঁচু পাহাড়ের মাথায়। ভাইকে বলে দিলেন, তিনি ট্রান্সমিটারের সামনে পিস্তল দিয়ে গুলি করবেন। যদি তাঁদের যন্ত্রপাতি ঠিকঠাক থাকে, তা হলে ট্রান্সমিটার থেকে বেশ দূরে পাহাড়ের ঢালে রাখা গ্রাহকান্ত্র বা রিসিভারে এই গুলির শব্দ ধরা পড়বেই।

অল্পক্ষনের মধ্যে সত্যি সত্যি তা-ই হলো। মার্কোনির কথামতো পাহাড়ের মাথায় বসানো ট্রান্সমিটারের সামনে বড় ভাই পিস্তল থেকে গুলি করতেই তার সব্দ স্পষ্ট প্রতিধ্বনিত হলো রিসিভার বা গ্রাহকযন্ত্রে। এখানে গাছপালা বা পাহাড় কোনোটাই বাধার সৃষ্টি করতে পারল না। সব ডিঙিয়ে তাদের শব্দতরঙ্গ এসে আছড়ে পড়ল রিসিভারে। তাঁরা এই সাফল্যজনক পরীক্ষাটি করেছিলেন ১৮৯৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে।

এই ঘটনা ঘটার পর থেকে মার্কোনির বাবা দু’ছেলের ব্যাপারে বেশ নরম আচরণ করতে শুরু করলেন। তিনি বুঝতে পারলেন তাঁর ছেলেরা, বিশেষ করে বেশি ধীরস্থির ও বুদ্ধিমান ছোট ছেলে মার্কোনি হয়তো সত্যি সত্যি একটা চমৎকার কিছু করে ফেলেছে। এখন আর তাদেরকে অবহেলা করা চলবে না।

গুলিয়েলমো মার্কনির জন্ম ১৮৭৪ সালের ২৫ এপ্রিল ইতালির বলোনে শহরে। পিতার নাম জুসেপ্পে মার্কোনি এবং মায়ের নাম ছিল অ্যানি জেমসন। তিনি ছিলেন আয়ারল্যান্ডের অধিবাসী। ইতালিতে এসেছিলেন সঙ্গীতের ওপর পড়াশোনা করাতে। কিন্তু পড়াশোনা শেষ হওয়ার আগেই ইতালির ধনাঢ্য ব্যক্তি জুসেপ্পে মার্কোনির সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। তখন অ্যানির সাথে জুসেপ্পের বয়সের পার্থক্য ছিল ১৭ বছর। এ ছাড়া তিনি ছিলেন বিপত্নীক। কিন্তু তারপরও অ্যানি জুসপ্পেকে ভালবেসে ফেললেন এবং অভিভাবকের সম্পূর্ণ অমতে বিয়ে করে বসলেন তাঁকে। তাঁর আর তাঁর দেশে যাওয়া হল না। তিনি উঠে এলেন জুসেপ্পের বোলোগ্নার রাজপ্রাসাদতুল্য বাড়ি ভিলা গ্রিফোর-এ।

বিয়ে হওয়ার দেড় বছরের মধ্যেই তাঁদের প্রথম সন্তান আলফনসোর জন্ম হয়। দ্বিতীয় পুত্র গুলিয়েলমোর জন্ম হয় এর নয় বছর পরে।

গুলিয়েলমোর যখন মাত্র দশ বছর বয়স, তখন থেকেই তিনি বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি নিয়ে নাড়াচাড়া করতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এ ব্যাপারে তাঁর মা অ্যানি ছেলেকে খুবই উৎসাহ দিতেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, তাঁর ছোট ছেলে গুলিয়েলমো নিশ্চয়ই ভবিষ্যতে একটা কিছু করবে। তাই তাঁকে উৎসাহ দেওয়া তাঁর নৈতিক দায়িত্ব। প্রয়োজন তাঁর জন্য একটি গবেষণাগারও প্রতিষ্ঠা করে দেওয়ার। তাই তিনি নিজেই বাড়ির ছাদের চিলেকোঠাটি তাঁদের গবেষণার জন্য বরাদ্দ করে দিলেন। এরপর এখানে বসেই মার্কোনি তাঁর বৈজ্ঞানিক গবেষণায় লাভ করেন প্রাথমিক সাফল্য।

আর এবার বাবা জুসেপ্পে নিজেই এগিয়ে এলেন ছেলেদের সাহায্যে। ভাবলেন, তাঁর ছেলের এই আবিষ্কার যদি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি লাভ করে, তাহলে একটা বড় কাজের কাজ হবে। বিশ্বজুড়ে তাঁর নাম ছড়াবে। একজন বিজ্ঞানী হিসেবেও স্বীকৃতি পাবে গুলিয়েলমো।

এই উদ্যেশ্য থেকে মার্কোনির বাবা জুসেপ্পে নিজেই উদ্যোগী হয়ে ছেলের পক্ষে ইতালির পোস্ট অ্যান্ড টেলিগ্রাফ বিষয়ক মন্ত্রীর কাছে ছেলের আবিষ্কারের স্বীকৃতির জন্য আবেদন জানালেন। কিন্তু কোনো লাভ হলো না। ইতালি সরকার মাত্র ২০/২২ বছরের একজন যুবকের আবিষ্কারের প্রতি কোনো গুরুত্বই দিলেন না। এই ঘটনায় ভয়ানক দুঃখ পেলেন মার্কোনি। দুঃখ পেলেন তাঁর মা-বাবাও। ছেলের আবিষ্কার নিয়ে তাঁদের দু’জনেই অসম্ভব আশাবাদী ছিলেন। কিন্তু যে দেশে তাঁর জন্ম, সেই দেশই তাঁকে স্বীকৃতি দিল না! কিন্তু হতাশ হলেও তাঁরা ভেঙে পড়লেন না। দেশে তাঁদের স্বীকৃতি নাই-বা মিলল। বিদেশে নিশ্চয়ই অনাদর হবে না।

এরপর মার্কোনি ইংল্যান্ডে যাবার সিদ্ধান্ত নিলেন। ছেলেকে অতদূরে একা যেতে রাজি ছিলেন না। মা অ্যানি তাই নিজেই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে রওনা দিলেন লন্ডনের পথে। সঙ্গে নিলেন মার্কোনির আবিষ্কৃত বেতারযন্ত্রের যাবতীয় সাজসরঞ্জাম।

কিন্তু পথেই ঘটল একটা অঘটন। তাঁরা যখন ইংলিশ চ্যানেল পার হচ্ছিলেন, তখন শুরু হলো কাস্টম চেকিং। কাস্টম অফিসাররা বুঝতেই পারলেন না এসব বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির গুরুত্ব। তাই তাঁরা ভড়কে গেলেন। ভাবলেন, নিশ্চয়ই এরা গুপ্তচর। মহারানি ভিক্টোরিয়াকে হত্যা করার জন্যই ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে জাহাজে চেপে বসেছে। তাই তাঁরা কিছু বুঝতে না চেয়েই মার্কোনির বেতারযন্ত্রটি ভেঙেচুরে একেবারে নষ্ট করে দিল। কী আর করা, মার্কোনি এবং তাঁর মা অ্যানি চোখের জল মুছতে মুছতেই বেতারের ভাঙা যন্ত্রাংশগুলো নিয়েই অবশেষে পৌঁছুলেন লন্ডনে।

এখানকার ভিক্টোরিয়া স্টেশনে অ্যানির এক মামাত ভাই থাকতেন। তাঁর বাড়িতেই গিয়ে উঠলেন মা ও ছেলে। ভাগ্নের এই কৃতিত্বপূর্ণ আবিষ্কারের কথা শুনে মামা তো মহাখুশি। আবার দুঃখিতও হলেন জাহাজে ঘটে যাওয়া অপ্রত্যাশিত ঘটনার জন্য। কিন্তু ওই পর্যন্তই। তারপর একটু ভেবে ভাগ্নে মার্কোনির দিকে ফিরে মামা বললেন, যা হবার হয়ে গেছে। ভাগ্নে, তুমি শিগগিরই যন্ত্রপাতি কিনে তোমার মেশিন আবার ঠিকঠাক করে ফেলো। আর আমি ততদিনে খোঁজখবর নিতে থাকি তোমার এই আবিষ্কারের কথা কারকাছে কিভাবে পেশ করা যায়।

মামা এবং মায়ের উৎসাহে মাসকয়েকের মধ্যেই মার্কোনি তাঁর ভেঙে ফেলা বেতার- যন্ত্রটি আবার নতুন করে তৈরি করে ফেললেন। তারপর মেশিন, মেশিনের নকশাসহ জমা দিলেন লন্ডনে পেটেন্ট অফিসে ১৮৯৭ সালের ২ জুলাই তারিখে। নতুন আবিষ্কার হিসেবে মার্কনি পেটেন্ট নম্বরও পেলেন। তাঁর বেতার-যন্ত্রের পেটেন্ট নম্বর ছিল ১২,০৩৯, ঠিকানা : গুলিয়েলমো মার্কোনি, ৭১ হেয়ারফোর্ড রোড, বয়েস ওয়াটার, লন্ডন।

এরপর তিনি মামার মাধ্যমেই তাঁর বেতারযন্ত্রটি পেশ করলেন পোস্টঅফিসের প্রধান প্রকৌশলী উইলিয়াম প্রিস-এর কাছে।

৬৩ বছর বয়স্ক প্রিস ছিলেন অত্যন্ত অমায়িক এবং নিজেও ছিলেন একজন প্রকৌশল-বিজ্ঞানী। তিনি সাদরে গ্রহণ করলেন এই তরুণ বিজ্ঞানীকে। তারপর মার্কোনিকে তিনি তাঁর নিজের গবেষণাগার ব্যবহার করারও অনুমতি দিলেন।

উল্লেখ্য, মার্কোনি যে বেতারযন্ত্রটি ইতিমধ্যে আবিষ্কারে সক্ষম হয়েছেন, সে- রকমেরই একটি যন্ত্র আবিষ্কারের জন্য উইলিয়াম প্রিসও দীর্ঘ দিন ধরে গবেষণা করে আসছিলেন। তিনি যা পারেননি, এই যুবক সেই অসাধ্য সাধন করেছেন জেনে তাঁর যেন খুশির অন্ত নেই। প্রথম দিনেই এই তরুণ ও প্রবীণ বিজ্ঞানীর মধ্যে গড়ে উঠল অন্তরঙ্গ সম্পর্ক।

প্রিসের গবেষণাগারে জর্জ কেম্প নামের একজন টেকনিশিয়ান ছিলেন। মার্কোনি তাঁরও আন্তরিক সহযোগিতা পেলেন।

ইতিমধ্যে তিনি তাঁর বেতারযন্ত্রের শক্তি আরও বাড়াতে সক্ষম হয়েছেন। ফলে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূর পর্যন্ত সংকেত পাঠাতে পারা যাচ্ছে। ব্যাপারটা একদিন তিনি প্রমাণ করেও দেখালেন।

সেন্ট মার্টিনে অবস্থিত পোস্টঅফিসের ছাদ থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরবর্তী কুইন ভিক্টোরিয়া স্ট্রিটের সেভিংস ব্যাংক ডিপার্টমেন্টের ছাদে সংকেত পাঠিয়ে তিনি উপস্থিত সবাইকে তাক লাগিয়ে দিলেন। মাঝখানে ছিল অনেক উঁচু উঁচু ভবন আর দেয়াল। সবকিছু ডিঙিয়ে তাঁর পাঠানো সংকেত রিসিভার বা গ্রাহকযন্ত্রে ধরা দেয়।

তিনি এবার তাঁর যন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করতে করতে লাগলেন। এ চেষ্টায় সফলকামও হলেন। প্রথমে তিনি এক কিলোমিটিার, পরে দুই কিলোমিটার— এভাবে পনেরো কিলোমিটার পর্যন্ত দূরে শব্দ-সংকেত পাঠাবার উপযোগী করে তুললেন তার আবিষ্কৃত যন্ত্রটিকে।

ফলে বিনা তারের এই টেলিগ্রাফ পদ্ধতি একটি ব্যবহারিক পর্যায়েও চলে আসে। পোস্টঅফিস, সেনাবাহিনী এবং জাহাজ চলাচলে এটি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হতে শুরু করে।

অবশ্য মার্কোনি আবিষ্কৃত যন্ত্রটি তখনও রেডিও নাম ধারণ করেনি। তাই তার সাহায্যে আজকের মতো বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান সম্প্রচারের কাজ তখন শুরু করা সম্ভব হয়নি। তখনও মার্কোনির যন্ত্রটি শুধু বেতার-সংকেত প্রেরণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।

পনেরো কিলোমিটারদূর সংকেতবার্তা পর্যন্ত পাঠাতে সক্ষম হওয়ার পরই আরও উচ্চাকাঙ্খী হয়ে ওঠেন। এই সময় তিনি তাঁর এক বন্ধুকে তাঁর সাফল্য সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছিলেন, “আমার জীবনের স্বপ্ন সফল হয়েছে এখন।”

১৮৯৭ সালে তিনি ইংলিশ চ্যানেলের এপার থেকে ওপার পর্যন্ত সংকেত পাঠাতে সক্ষম হন। সেই বছরেরই শেষের দিকে তিনি ইতালি সরকারের আমন্ত্রণে দেশে ফিরে আসেন। ইতিমধ্যেই তারা জানতে পেরেছিল যে, তাদের দেশের একজন নাগরিকেরই আবিষ্কৃত একটি বেতার ইংল্যান্ডে নানাভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টাকরা হচ্ছে। অথচ এটির ন্যায্য হকদার ইতালি। মার্কোনি দেশে ফিরেই ইতালির স্পেজিয়া নৌ ঘাঁটি থেকে অনেক দূরে সংকেত পাঠিয়ে তাঁর আবিষ্কৃত বেতার যন্ত্রের কার্যকারিতা প্রমাণ করে দেখালেন। ফলে ইতালি সরকার আগ্রহী হয়ে উঠলেন তাঁর আবিষ্কারের প্রতি এবং তাঁরা তাকে দেশেই স্থায়িভাবে বসবাস করার অনুরোধ জানালেন।

কিন্তু ততদিনে ইংল্যান্ডে তাঁর কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা হয়ে গেছে এবং সেখানে তাঁর বেতার-যন্ত্র বাণিজ্যিক ভিত্তিতে তৈরির তখন চেষ্টা চলছে। কোম্পানির নামকরণ করা হয়েছে মার্কনি’স ওয়্যারলেস টেলিগ্রাফ কোম্পানি।

শুধুতাই নয়, ইতিমধ্যে তাঁর বেতারযন্ত্র সমুদ্রের বিভিন্ন লাইটহাউসহ, জাহাজে পর্যন্ত ব্যবহৃত হতে শুরু করেছে এবং চারদিকে তা অত্যন্ত গুরুত্বও পেতে শুরু করেছে। এরপর ১৯০১ সালে আসে মার্কোনির জীবনের চরম সাফল্য। তিনি ইংল্যান্ড থেকে আটলান্টিক মহাসাগরের পশ্চিম পারে নিউফাউন্ডল্যান্ডে বার্তা পাঠাতে সক্ষম হন। এই দূরত্ব ছির ৩,৩৭৮ কিলোমিটার।

তাঁর এই বিস্ময়কর বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের জন্যই তিনি ১৯০৯ সালে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন। এর পর থেকেই তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে। তিনি একজন যুগস্রষ্টা বিজ্ঞানী বলেও স্বীকৃতি লাভ করেন। একসময় তারা যাঁকে অনাদরে-অবহেলায় দূরে সরিয়ে দিয়েছিলেন, সেই ইতালি সরকার তাঁকে আনুষ্ঠানিক ভাবে সম্মান জানান এবং নির্বাচিত করেন আজীবন সিনেট সদস্য।

প্রথম মহাযুদ্ধের (১৯৩৯-১৯৪৫) সময় মার্কোনি নিজের দেশেই ছিলেন এবং দেশের সেনা ও নৌবাহিনীতে কাজ করেন। কিছুদিন তিনি যুদ্ধে মিত্রপক্ষের বেতার যোগাযোগ বিষয়ক উপদেষ্টাও ছিলেন।

প্রথম মহাযুদ্ধের পর মার্কোনির বেতারের ব্যবহার আরও বেড়ে যায়। প্রত্যেকটি সামুদ্রিক জাহাজে বাধ্যতামূলকভাবে বেতারযন্ত্র ব্যবহার করা হতে থাকে।

এরপর শুরু হয় তাঁর আবিষ্কৃত বেতারযন্ত্রের আরও বিচিত্রমুখি ব্যবহার। এতদিন তার ব্যবহার ছিল কেবল বিপদসংকেত, আবহাওয়ার পূর্বাভাস এবং ঝড়ের সংকেত প্রেরণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এবার তাকে বিনোদনমূলক কাজেও ব্যবহার করা হতে থাকে। বেতার-যন্ত্রের মাধ্যমে শোনা যেতে লাগল গানবাজনা এবং ঘটে যাওয়া ও চলমান ঘটনার বিবরণ সংবলিত সংবাদ। বেতারযন্ত্র এভাবেই পেল তার পূর্ণাঙ্গ রূপ। ১৯২০ সালে মার্কোনির মা অ্যানির মৃত্যু হয়। অবশ্য মারা যাবার আগেই তিনি ছেলের চূড়ান্ত সাফল্য দেখে যেতে পেরেছিলেন।

এত সম্মান ও স্বীকৃতি লাভ করার পরও তিনি বেতার যন্ত্রের আরও উন্নতি সাধনে ব্যয় করতে থাকেন দিন ও রাতের প্রায় অধিকাংশ সময়। এরই এক পর্যায়ে তিনি দেখতে পান যে, শর্টওয়েভ বেতার সংকেতকে বিমের মধ্য দিয়ে চালানো সম্ভব। ১৯২৪ সালে তিনি বিম-পদ্ধতিতে শর্টওয়েভ বেতার সংকেতের মাধ্যমে সারা বিশ্বের সঙ্গে বেতার সংযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হন। অবশেষে এভাবেই বেতারযন্ত্র তার উন্নতির চূড়ান্ত পর্যায়ে উন্নীত হয়।

মার্কোনি জীবনে দুবার বিয়ে করেছিলেন। পিতার আদেশে প্রথমে বিয়ে করেন ব্রিটেনের এক মেয়েকে। কিন্তু তাঁর সেই বিয়ে সুখের হয়নি। এরপর তিনি নিজেই পছন্দ করে বিয়ে করেন এক ইতালিয়ান মেয়েকে। মেয়েটির নাম ছিল ম্যারিয়া ক্রিসটিনা বেজি স্ক্যালি। ম্যারির যখন বিয়ে হয় তখন মার্কনির বয়স ছিল ৫৬ বছর এবং ম্যারির তেইশ। বয়সের বিস্তর ব্যবধান সত্ত্বেও ম্যারিকে নিয়েই সুখী ছিলেন মার্কোনি।

তিনি মারা যান ১৯৩৭ সালের ৯ জুলাই। তিনি নেই, কিন্তু তাঁর বেতারযন্ত্র আজ বিশ্বজয় করে বসে আছে।

সকল অধ্যায়

১. হযরত মুহাম্মদ (দঃ) (৫৭০-৬৩২) – সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী
২. জরথুশত্র (৬২৮-৫৫১ খ্রি. পূ.) – পারশি ধর্মের প্রবর্তক
৩. বর্ধমান মহাবীর (৫৯৯–৫২৭ খ্রি. পূ.) – জৈন দর্শন ও ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা
৪. গৌতম বুদ্ধ (৫৬৩–৪৮৩ খ্রি. পূ.) – বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক
৫. কনফুসিয়াস (৫৫১–৪৭৯ খ্রি. পূ.) – চীনের প্রাচীনতম ধর্মমতবাদের প্রবর্তক
৬. সক্রেটিস (আনু. ৪৬৯–৩৯৯ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্রের আদিজনক
৭. প্লেটো (৪২৮–৩৪৭ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্র যাঁর হাতে পেয়েছিল পূর্নাঙ্গরূপ
৮. ডায়োজিনিস (৪১২–৩২২ খ্রি. পূ.) – একনিষ্ঠ জ্ঞান সাধক
৯. অ্যারিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খ্রি. পূ.) – যুক্তিশাস্ত্রের জনক
১০. যিশু খ্রিস্ট (আনু. ৬ খ্রি. পূ.–আনু. ২৯ খ্রি.) – খ্রিস্টানধর্মের প্রবর্তক
১১. অতীশ দীপঙ্কর (৯৮২–১০৫৩) – জ্ঞানসাধক বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক
১২. গুরু নানক (১৪৬৯–১৫৩৮) – শিখ ধর্মমতের প্রবর্তক
১৩. মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬) – ধর্মের সংস্কারক এবং ‘প্রটেস্টানিজম’ মতবাদের স্রষ্টা
১৪. মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩) – বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তক
১৫. রামমোহন রায় (১৭৭২–১৮৩৩) – ভারতবর্ষে নবযুগের প্রবর্তক
১৬. রামকৃষ্ণ পরমহংস (১৮৩৬–১৮৮৬) – ‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আমি ঈশ্বরকে দর্শন করেছি’
১৭. বারট্রান্ড রাসেল (১৮৭২–১৯৭০ ) – যুদ্ধ-বিরোধী ও মানবতাবাদী দার্শনিক
১৮. থ্যালিস (আনু. ৬২৪–৫৬৫ খ্রি. পূ.) – বিজ্ঞানশাস্ত্রের আদিপুরুষ
১৯. পিথাগোরাস (আনু. ৫৮২–৫০৭ খ্রি. পূ.) – তিনি বলেছিলেন—পৃথিবী গোলাকার
২০. হিপোক্র্যাটিস (আনু: ৪৬০–৩৭০ খ্রি. পূ.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আদিজনক
২১. আর্কিমিডিস (২৮৭–২১২ খ্রি. পূ.) – ঊর্ধ্বমুখী বল সূত্রের আবিষ্কারক
২২. ক্লডিয়াস টলেমি (১০০–১৮০ খ্রি.) – জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রথম কোষগ্রন্থ প্রণেতা
২৩. ক্লডিয়াস গ্যালেন (১৩১–২০১ খ্রি.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আধুনিক পদ্ধতির আদি জনক
২৪. ইবনে সিনা (৯৮০–১০৩৭) – জ্ঞানসাধনায় কাটিয়েছিলেন সমগ্র জীবন
২৫. কোপারনিকাস (১৪৭৩–১৫৪৩) – আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্ৰবক্তা
২৬. জিওর্দানো ব্রুনো (আনু. ১৫৪৮–১৬০০ ) – সত্যপ্রচারের অপরাধে যাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল
২৭. গ্যালিলিও গ্যালিলি (১৫৬৪-১৬৪২) – যাঁর গাণিতিক পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি
২৮. লিওয়েন হুক (১৬৩২–১৭৩৩) – মুদি দোকানদার থেকে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী
২৯. আইজাক নিউটন (১৬৪২–১৭২৭) – মাধ্যাকর্ষন শক্তির আবিষ্কারক
৩০. রিচার্ড আর্করাইট (১৭৩২–১৭৯২) – আধুনিক বস্ত্রশিল্পে বৈপ্লবিক ধারা প্রবর্তক
৩১. উইলিয়াম হার্শেল (১৭৩৮–১৮২২) – ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কারক
৩২. লরেঁ লাভোয়সিয়ের (১৭৪৩–১৭৯৪) – রসায়নশাস্ত্রের জনক
৩৩. মাইকেল ফ্যারাডে (১৭৯১-১৮৬৭) – তাড়িত-চুম্বক বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা
৩৪. চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) – প্রাণিজগতের বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যাদাতা
৩৫. লুই পাস্তুর (১৮২২–১৮৯৫) – জীবাণু আর জলাতঙ্ক রোগ প্রতিষেধকের আবিষ্কারক
৩৬. আলফ্রেড নোবেল (১৮৩৩–১৮৯৬) – যাঁর নামে দেয়া হয় নোবেল পুরস্কার
৩৭. আলভা এডিসন (১৮৪৭–১৯৩১) – সর্বাধিক আবিষ্কারের জনক
৩৮. জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৯–১৯৩৭) – যিনি বলেছিলেন গাছেরও প্রাণ আছে
৩৯. মাদাম কুরি (১৮৬৭–১৯৩৪) – সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহিলা বিজ্ঞানী
৪০. মার্কোনি (১৮৭৪–১৯৩৭) – বেতারযন্ত্রের আবিষ্কারক
৪১. আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯–১৯৫৫) – আপেক্ষিক তত্ত্বের জনক
৪২. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১–১৯৫৫) – পেনিসিলিনের আবিষ্কারক
৪৩. হোমার (আনু. ৭০০-? খ্রি. পূ.) – বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দুটি মহাকাব্যের রচয়িতা
৪৪. ঈশপ (আ. কা. ৬২০–৫৬০ খ্রি. পূ.) – কালজয়ী নীতিগল্পকার
৪৫. সোফোক্লেস (আনু. ৪৯৫-৪০৬ খ্রি. পূ.) – গ্রিক ট্র্যাজেডি নাট্যধারার রূপকার
৪৬. হেরোডোটাস (আনু. ৪৮৫–৪২৫ খ্রি. পূ.) – ইতিহাসশাস্ত্রের জনক
৪৭. অ্যারিস্টোফানিস (আনু. ৪৪৪–৩৮৫ খ্রি. পূ.) – যাঁর সাহিত্যকর্মে আর্তমানবতার কথা প্রতিফলিত
৪৮. মহাকবি কালিদাস (আনু. ৫৭০-৬৫০ খ্রি.) – সংস্কৃতি সাহিত্যের অমর কবি
৪৯. লেওনার্দো দা ভিঞ্চি (১৪৫২–১৫১৯) – সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী
৫০. মিকেলাঞ্জেলো (১৪৭৫–১৫৬৪) – পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাস্কর শিল্পী
৫১. তানসেন (১৫০৬–১৫৮৫) – কিংবদন্তির গায়ক
৫২. শেকসপিয়ার (১৫৬৪-১৬১৬) – বিশ্বসাহিত্যের কালজয়ী নাট্যকার
৫৩. ভলতেয়ার (১৬৯৪-১৭৭৮) – বিখ্যাত ফরাসি চিন্তাবিদ
৫৪. জঁ-জাক্ রুসো (১৭১২–১৭৭৮) – ফরাসি বিপ্লবের রূপকার
৫৫. লর্ড বায়রন (১৭৮৮–১৮২৪) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি
৫৬. ভিক্টর হুগো (১৮০২-১৮৮৫) – ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৭. ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন (১৮০৫–১৮৭৫) – যাঁকে বলা হয় রূপকথার জাদুকর
৫৮. চার্লস ডিকেন্স (১৮১২–১৮৭০) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৯. ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯-১৮৯২) – মার্কিন সাহিত্যের যুগ-প্রবর্তক কবি
৬০. লিয়েফ তলস্তোয় (১৮২৮–১৯১০) – বিশ্বের মহান সাহিত্যিকদের অন্যতম
৬১. জুল ভের্ন (১৮২৮–১৯০৫) – কল্পবিজ্ঞান কাহিনীর স্রষ্টা
৬২. মার্ক টোয়েন (১৮৩৫–১৯১০) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রসস্রষ্টা
৬৩. জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৫৬–১৯৫০) – যিনি প্রথম নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন
৬৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১) – শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনীষা, পৃথিবীর মহত্তম সাহিত্য-ব্যক্তিত্ব
৬৫. ম্যাক্সিম গোর্কি (১৮৬৮–১৯৩৬) – যাঁর সাহিত্যকর্মের প্রধান উপজীব্য গণমানুষের কথা
৬৬. হেলেন কেলার (১৮৮০-১৯৬৮) – যাঁর খ্যাতিকে নেপোলিয়নের সঙ্গে তুলনা করা হতো
৬৭. আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (১৮৯৮–১৯৬১) – জীবনবাদী মার্কিন কথাসাহিত্যিক
৬৮. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯–১৯৭৬) – বাংলার বিদ্রোহী কবি
৬৯. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২–১৭৯৯) – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৭০. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১) – ইতিহাসের কিংবদন্তির মহানায়ক
৭১. জুসেপ্পে গারিবলদি (১৮০৭–১৮৮২) – ইতালির জনক বলে যাঁর খ্যাতি
৭২. আব্রাহাম লিংকন (১৮০৯-১৮৬৫) – যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্রীতদাসপ্রথা রহিত করেছিলেন
৭৩. অটো ফন বিসমার্ক (১৮১৫–১৮৯৮) – জার্মান সাম্রাজ্যের স্থপতি
৭৪. মহাত্মা গান্ধি (১৮৬৯–১৯৪৮) – ‘সবকো সুমতি দে ভগবান’
৭৫. কমরেড লেনিন (১৮৭০–১৯২৪) – বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা
৭৬. উইনস্টন চার্চিল (১৮৭৪–১৯৬৫) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ডাকসাইটে প্রধানমন্ত্রী
৭৭. জোসেফ স্ট্যালিন (১৮৭৯–১৯৫৩) – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়েনের ‘লৌহমানব’
৭৮. কামাল আতাতুর্ক (১৮৮১–১৯৩৮) – নব্য-তুরস্কের জনক
৭৯. ডি ভ্যালেরা (১৮৮২-১৯৭৫) – আয়ারল্যান্ডের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৮০. জওহরলাল নেহরু (১৮৮৯-১৯৬৪) – ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
৮১. আইসেনহাওয়ার (১৮৯০-১৯৬৯) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক
৮২. শার্ল দ্য গল (১৮৯০-১৯৭০) – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা
৮৩. হো-চি-মিন (১৮৯০-১৯৬৯) – ভিয়েতনামের মুক্তিদাতা পুরুষ
৮৪. মার্শাল টিটো (১৮৯২–১৯৮০) – জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা
৮৫. মাও-সে-তুং (১৮৯৫–১৯৭৬) – চীন সাধারণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা
৮৬. সুভাষচন্দ্র বসু (১৮৯৭–১৯৪৫) – ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’
৮৭. জন এফ কেনেডি (১৯১৭–১৯৬৩) – গুপ্তঘাতকের হাতে যাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছিল
৮৮. ইন্দিরা গান্ধি (১৯১৭–১৯৮৪) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
৮৯. নেলসন ম্যান্ডেলা (১৯১৮) – দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তিদাতা পুরুষ
৯০. শেখ মুজিবর রহমান (১৯২০–১৯৭৫) – বাংলাদেশের জাতির জনক
৯১. প্যাট্রিস লুমুম্বা (১৯২৫-১৯৬১) – কঙ্গোর মুক্তিদাতা পুরুষ
৯২. মার্কো পোলো (১২৫৬–১৩২৩) – দুঃসাহসিক অভিযাত্রী
৯৩. ক্রিস্টোফার কলম্বাস (আনু. ১৪৪৬-১৫০৬) – আমেরিকার আবিষ্কারক
৯৪. ডেভিড লিভিংস্টোন (১৮১৩-১৮৭৩) – আফ্রিকার আবিষ্কারক
৯৫. উইলিয়াম জোন্স (১৭৪৬–১৭৯৪) – এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৬. ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (১৮২০–১৯১০) – আধুনিক ‘নার্সিং’ বৃত্তির অগ্রপথিক
৯৭. হেনরি ডুনান্ট (১৮২৮–১৯১০) – রেডক্রস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৮. ব্যাডেন পাওয়েল (১৮৫৭–১৯৪১) – বয়স্কাউট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা
৯৯. মাদার তেরেসা (১৯১০–১৯৯৭) – প্রেম, করুণা ও ধর্মের মূর্ত প্রতিমা
১০০. অ্যাডাম স্মিথ (১৭২৩–১৭৯০) – রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিজ্ঞানের জনক

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন