মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬) – ধর্মের সংস্কারক এবং ‘প্রটেস্টানিজম’ মতবাদের স্রষ্টা

ভবেশ রায়

ষোড়শ শতাব্দীতে ইউরোপসহ সমগ্র খ্রিস্টান বিশ্বের ধর্মীয় পুনর্গঠনের পাশাপাশি প্রোটেস্টানিজম (Protestanism) মতবাদের যিনি অভ্যুদয় ঘটিয়েছিলেন, সেই মহাপুরুষের নাম মার্টিন লুথার। তিনি তাঁর মুক্তনির্ভর রচনা আর কাজকর্মের মাধ্যমে এমন ব্যাপক আন্দোলনের সৃষ্টি করেছিলেন যে, তার ফলে খ্রিস্টান সমাজে কেবল একটি ধর্মীয় বিপ্লবই নয়, সমগ্র পাশ্চাত্য সভ্যতার ধর্মীয়, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও সাধিত হয়েছিল এক ব্যাপক পরিবর্তন।

মার্টিন লুথারের আবির্ভাবের আগে গোটা বিশ্বের খ্রিস্টান সম্প্রদায় ছিল রোমের গির্জার আওতাভুক্ত। তাদের সর্বময় কর্তা ছিলেন রোমে অবস্থানকারী মহামান্য পোপ। তখন পোপের এমন ক্ষমতা ছিল যে, ধর্মীয় ব্যাপারে যাবতীয় চূড়ান্ত মত দেবার অধিকার ছিল একমাত্র তাঁর এবং তাঁর অনুমোদিত ধর্মযাজকদের হাতে। এর ফলে ধর্মযাজকদের মধ্যে দেখা দিয়েছিল নানারকম দুর্নীতি এবং অনাচার।

মার্টিন লুথারই প্রর্বপ্রথম প্রতিবাদ জানালেন ধর্মযাজকদের বিরুদ্ধে। শুধু তা-ই নয়, তিনি বাইবেলেরও সরল অনুবাদ ও ব্যাখ্যা করে দেখিয়ে দিলেন যে, এই পুণ্য গ্রন্থের কোথাও লেখা নেই যে, পোপের ক্ষমতা ধর্মবিষয়ে চূড়ান্ত বলে গ্রহণ করতে হবে।

মহান ধর্মসংস্কারক ও সন্ন্যাসীপুরুষ মার্টিন লুথারের জন্ম হয়েছিল ১৪৮৩ সালের ১০ নভেম্বর জার্মানির থুরিনজিয়ান স্যাক্সনির অন্তর্গত ইসলেবেন নামক এক গ্রামে। পিতার নাম ছিল হ্যান্স লুথার এবং মা ছিলেন মার্গারেট লুথার। বাবা প্রথম জীবনে চাকরি করতেন ম্যান্সফিল্ডের এক দস্তার খনিতে। কিন্তু পরে তিনি খনির চাকরি ছেড়ে দিয়ে ১৪৯১ সালে ম্যান্সফিল্ড শহরের কাউন্সিলার হয়েছিলেন।

মার্টিন লুথারের বাল্যকাল কেটেছে খুব সুশৃঙ্খলভাবে। পিতার কড়া শাসন আর তত্ত্বাবধানে তাঁর প্রাথমিক শিক্ষাজীবন শুরু হয় ম্যান্সফিল্ডেরই ল্যাটিন স্কুলে। এরপর ম্যাগডেবার্গের এক স্কুলে পড়েছিলেন কিছুদিন।

লুথার ১৪৯৮ সালে জার্মানির সর্বাপেক্ষা প্রাচীন ও ছাত্রবহুল বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব এরফুর্ট স্কুল শাখা থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাস করেন।

লুথার বাল্যকাল থেকেই ছিলেন খুবই চিন্তাশীল এবং গুরুগম্ভীর প্রকৃতির। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় সবাই তাঁকে ডাকত দার্শনিক বলে। আসলেও তিনি ছিলেন দার্শনিক।

শুধু চিন্তশীলই নন, ছাত্র হিসেবেও তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। তিনি কৃতিত্বের সাথে ১৫০২ সালে বি. এ. এবং ১৫০৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসের মোট ১৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বী ছেলের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে এম. এ. ডিগ্রি লাভ করেন।

এভাবে তিনি বাবা-মায়ের আশা পূরণ করলেন। তাদের স্বপ্ন, ছেলে অনেক বড় ডিগ্রি নিয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করবে। তাই তাঁর বাবা তাঁকে আইন পড়তে বললেন। কারণ, এ-সময় দেশে আইনজীবীদের ছিল খুবই সম্মান আর অর্থ। তাই বাবা চাইছিলেন লুথারও আইন পড়ুক। কিন্তু কোথা থেকে কী যেন হয়ে গেল। আইন পড়তে গিয়েও তাঁর আর আইন পড়া হলো না। বাপ-মায়ের একান্ত বাধ্য ছেলে লুথার কাউকে না জানিয়ে একদিন আইন পড়া ছেড়ে দিয়ে ভর্তি হলেন এরফুর্টের অগাস্টিয়ান হারমিট নামের ধর্মীয় স্কুলে।

তিনি কেন আইন পড়া ছেড়ে দিয়ে সহসা ধর্মযাজক হতে গেলেন, সে সম্পর্কে পরবর্তীকালে তিনি তাঁর টেবিল টক (Table talk) গ্রন্থে বলেছেন : সে ছিল ১৫০৫ সালের ২ জুলাই তারিখের কথা। তিনি বাবা-মায়ের সাথে সাক্ষাৎ করে ফিরে আসছিলেন। পথে পড়ে গেলেন এক মারাত্মক ঝড়ের কবলে। ঝড় ঠেলতে ঠেলতে তাঁকে নিয়ে এল স্টোটার্নহেইম নামের একটি গাঁয়ে। সেখানে তিনি আশ্রয় নিলেন এক গির্জায়। রাতে এক ভয়ংকর স্বপ্ন দেখে তিনি আতঙ্কে আর ভয়ে চিৎকার দিয়ে উঠলেন, আমাকে বাঁচাও, সেন্ট অ্যান আমি ধর্মযাজক হবো। আমাকে বাঁচাও 1

ঘটনার মাত্র দিন পনেরো পরেই অর্থাৎ ১৭ জুলাই (১৫০৫ খ্রি.) তিনি এসে ভর্তি হলেন যাজকদের স্কুলে এবং ১৫০৬ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে পুরোপুরি যাজকের পেশা গ্রহণ করলেন। তিনি জনসমক্ষে প্রথম ধর্মীয় বক্তৃতা শুরু করেন ১৫০৭ সালের এপ্রিল মাসে।

এই সময় তাঁর জীবনে ঘটল এক মোড়-ফেরানো ঘটনা।

একদিন লুথারের বাবা তাঁর কয়েকজন বন্ধুকে সাথে নিয়ে এলেন ছেলের সাথে সাক্ষাৎ করতে। লুথার পিতার সাথে কথা বলতে বলতেই ধর্মালোচনা শুরু করলেন। শুরু করলেন রোমের তখনকার পোপের নানা অনাচার-অবিচারের কথা।

বাবা তখন রেগে গিয়ে বললেন, তোমার ধর্মগ্রন্থে অনেক কথা লেখা আছে; কিন্তু এসব কিছুতো লেখা নেই; কেমন করে পিতা-মাতাকে শ্রদ্ধা করে কথা বলতে হয়, তাও বুঝি জানো না?

লুথার আর কিছু বলতে পারলেন না। নিশ্চুপ হয়ে গেলেন। এরপর বাবার সাথে তাঁর খুব একটা সম্পর্ক ছিল না।

এর কিছুকাল পরেই তিনি রোম সফরে গেলেন। রোমে এসে নিজের চোখে পোপ এবং যাজকদের সীমাহীন অধর্মাচার ও তাদের নানা উচ্ছৃঙ্খলতা দেখে তিনি শুধু মর্মাহতই হলেন না, গভীরভাবে ক্ষুব্ধও হলেন তার মন বিদ্রোহীও হয়ে উঠল। রোম থেকে তিনি জার্মানি ফিরে আসেন ১৫১১ সালে। জার্মানি এসে ধর্মশাস্ত্রে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন এবং গুটেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার কাজে যোগদান করেন। তিনি বক্তৃতার পর বক্তৃতা দিতে লাগলেন তাঁর বক্তৃতায় আকৃষ্ট হতে লাগল বিপুলসংখ্যক ছাত্র ও জনতা। ক্রমে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ল সারা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

এই সময়ই ঘটল আরও একটা ঘটনা। গুটেনবার্গে টেটসেল নামে জনৈক রোমান ক্যাথলিক ধর্মযাজক মানুষের পাপমুক্তির জন্য অর্থের বিনিময়ে সার্টিফিকেট বিতরণ করতে শুরু করেন। তিনি কাজ করতেন আর বলতেন, এই সার্টিফিকেট বা সনদের জোরেই তারা স্বর্গবাসী হবে। তাদের সকল পাপমোচন হয়ে যাবে। লোকজন ল্যাটিন ভাষায় লিখিত বাইবেলের শ্লোকের কোনো অর্থ না বুঝেই ওগুলো কিনে নিত।

এই অনাচার লুথারের দৃষ্টি আকর্ষণ করল। মানুষের পাপমুক্তির জন্য যাজকরা কেমন করে সনদ দান করতে পারে? তিনি ভাবলেন, নিশ্চয়ই ল্যাটিনের মতো দুর্বোধ্য ভাষায় বাইবেল লেখা বলেই তারা কিছু জানতে পারছে না। বুঝতে পারছে না তারা কী কিনছে। কারণ বাইবেলে কোথাও এমন কথা লেখা নেই যে, এই শ্লোক পয়সা দিয়ে কিনে নিলেই তাগের পাপমোচন হয়ে যাবে। তখনই তিনি শুরু করলেন কাজ। তিনি জার্মান ভাষায় বাইবেলের ৯৫টি টীকা ও সমালোচনা লিখে দেখালেন—বাইবেলের কোথাও এমন কথা লেখা বা বলাও নেই। এগুলো সব অনাচার, যাজকদের কারসাজি। তিনি তাঁর লিখিত থিসিস গুটেনবার্গ চার্চে টাঙিয়ে দিলেন, যাতে তা ধর্মযাজকেরা দেখতে পারেন।

তখন চার্চের ছিল দোর্দণ্ড ক্ষমতা। চার্চের কার্যকলাপের সমালোচনা করার ক্ষমতা কারও ছিল না। অবশ্য চার্চের সমালোচনা করার ইচ্ছে লুথারেরও ছিল না। তিনি শুধু বিষয়টির প্রতি চার্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছিলেন; চেয়েছিলেন কিছু অনাচারের প্রতিকার।

এরপর তিনি তাঁর থিসিস জার্মান ভাষায় প্রকাশ করে বিলি করতে লাগলেন। সারা দেশের মানুষ—বিশেষ করে তরুণসমাজ তাঁর নতুন মতবাদ ও ব্যাখ্যায় বিপুলভাবে সাড়া দিল। সারা দেশে গড়ে উঠল আন্দোলন——চার্চের অনাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন। তারপর কেটে গেল আরও তিনটি বছর। এই তিন বছরে লুথার তাঁর মতবাদ ও আন্দোলনের পক্ষে আরও ব্যাপক গবেষণা চালান এবং তৈরি করেন আরও কিছু গবেষণাধর্মী গ্রন্থ।

প্রথম প্রথম পোপ ব্যপারটিকে খুব একটা পাত্তা দেননি। কিন্তু আন্দোলন যখন ব্যাপক আকার ধারণ করল, তখন তাঁর টনক নড়ল। ১৫২০ সালে মহামান্য পোপ মার্টিন লুথারকে সমাজচ্যুত করার জন্য এক ডিক্রি জারি করলেন। লুথারও পোপের এই অন্যায় আদেশের তীব্র প্রতিবাদ করে তার সমস্ত যুক্তি খণ্ডন করলেন।

এর পরের বছর অর্থাৎ ১৫২১ সালে পোপ রোমান সম্রাট পঞ্চম চার্লসকে এই মর্মে নির্দেশ জারি করার অনুরোধ করলেন যে, চার্চ-বিরোধী মার্টিন লুথারকে যেন কোনো রকম আইনের আশ্রয় না দেওয়া হয়।

তখন পোপের অনুরোধে রাজা চার্লস জার্মান প্রিন্সকে তাঁর দেশেই লুথারের বিচার করার নির্দেশ দিলেন। জার্মানি তখন ছিল রোমান সাম্রাজ্যের অধীনস্থ। ফলে জার্মান প্রিন্স বাধ্য হয়েই মার্টিন লুথারের বিচারের ব্যবস্থা করলেন।

কিন্তু এই বিচার-অনুষ্ঠানেও খুব সুবিধা হলো না। বিচারসভায় স্যাক্সনিদের সমর্থনে মার্টিন লুথার মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়ে গেলেন।

শুধু তাই নয়, জার্মানিতে রোমান ক্যাথলিক চার্চের অধীনে যে বিশাল স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ছিল, তার সবটাই বাজেয়াপ্ত করা হলো। আর এমনি করে উত্তর, দক্ষিণ ও কেন্দ্রীয় জার্মানির গোটা অংশই চলে এল লুথার-সমর্থকদের দখলে। গোটা খ্রিস্টান সমাজ হয়ে গেল দুই প্রধান অংশে বিভক্ত। মার্টিন লুথারের সমর্থকরা হলেন প্রতিবাদী দল বা প্রোটেস্টান্ট, আর যারা পুরনো পোপের দলে রইল তারা হলেন রোমান ক্যাথলিক। এই বিভক্তি আজও আছে খ্রিস্টানদের মধ্যে।

মহাপুরুষ মার্টিন লুথার দেহত্যাগ করেন ১৫৪৬ খ্রিস্টাব্দে।

সকল অধ্যায়

১. হযরত মুহাম্মদ (দঃ) (৫৭০-৬৩২) – সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী
২. জরথুশত্র (৬২৮-৫৫১ খ্রি. পূ.) – পারশি ধর্মের প্রবর্তক
৩. বর্ধমান মহাবীর (৫৯৯–৫২৭ খ্রি. পূ.) – জৈন দর্শন ও ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা
৪. গৌতম বুদ্ধ (৫৬৩–৪৮৩ খ্রি. পূ.) – বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক
৫. কনফুসিয়াস (৫৫১–৪৭৯ খ্রি. পূ.) – চীনের প্রাচীনতম ধর্মমতবাদের প্রবর্তক
৬. সক্রেটিস (আনু. ৪৬৯–৩৯৯ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্রের আদিজনক
৭. প্লেটো (৪২৮–৩৪৭ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্র যাঁর হাতে পেয়েছিল পূর্নাঙ্গরূপ
৮. ডায়োজিনিস (৪১২–৩২২ খ্রি. পূ.) – একনিষ্ঠ জ্ঞান সাধক
৯. অ্যারিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খ্রি. পূ.) – যুক্তিশাস্ত্রের জনক
১০. যিশু খ্রিস্ট (আনু. ৬ খ্রি. পূ.–আনু. ২৯ খ্রি.) – খ্রিস্টানধর্মের প্রবর্তক
১১. অতীশ দীপঙ্কর (৯৮২–১০৫৩) – জ্ঞানসাধক বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক
১২. গুরু নানক (১৪৬৯–১৫৩৮) – শিখ ধর্মমতের প্রবর্তক
১৩. মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬) – ধর্মের সংস্কারক এবং ‘প্রটেস্টানিজম’ মতবাদের স্রষ্টা
১৪. মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩) – বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তক
১৫. রামমোহন রায় (১৭৭২–১৮৩৩) – ভারতবর্ষে নবযুগের প্রবর্তক
১৬. রামকৃষ্ণ পরমহংস (১৮৩৬–১৮৮৬) – ‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আমি ঈশ্বরকে দর্শন করেছি’
১৭. বারট্রান্ড রাসেল (১৮৭২–১৯৭০ ) – যুদ্ধ-বিরোধী ও মানবতাবাদী দার্শনিক
১৮. থ্যালিস (আনু. ৬২৪–৫৬৫ খ্রি. পূ.) – বিজ্ঞানশাস্ত্রের আদিপুরুষ
১৯. পিথাগোরাস (আনু. ৫৮২–৫০৭ খ্রি. পূ.) – তিনি বলেছিলেন—পৃথিবী গোলাকার
২০. হিপোক্র্যাটিস (আনু: ৪৬০–৩৭০ খ্রি. পূ.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আদিজনক
২১. আর্কিমিডিস (২৮৭–২১২ খ্রি. পূ.) – ঊর্ধ্বমুখী বল সূত্রের আবিষ্কারক
২২. ক্লডিয়াস টলেমি (১০০–১৮০ খ্রি.) – জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রথম কোষগ্রন্থ প্রণেতা
২৩. ক্লডিয়াস গ্যালেন (১৩১–২০১ খ্রি.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আধুনিক পদ্ধতির আদি জনক
২৪. ইবনে সিনা (৯৮০–১০৩৭) – জ্ঞানসাধনায় কাটিয়েছিলেন সমগ্র জীবন
২৫. কোপারনিকাস (১৪৭৩–১৫৪৩) – আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্ৰবক্তা
২৬. জিওর্দানো ব্রুনো (আনু. ১৫৪৮–১৬০০ ) – সত্যপ্রচারের অপরাধে যাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল
২৭. গ্যালিলিও গ্যালিলি (১৫৬৪-১৬৪২) – যাঁর গাণিতিক পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি
২৮. লিওয়েন হুক (১৬৩২–১৭৩৩) – মুদি দোকানদার থেকে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী
২৯. আইজাক নিউটন (১৬৪২–১৭২৭) – মাধ্যাকর্ষন শক্তির আবিষ্কারক
৩০. রিচার্ড আর্করাইট (১৭৩২–১৭৯২) – আধুনিক বস্ত্রশিল্পে বৈপ্লবিক ধারা প্রবর্তক
৩১. উইলিয়াম হার্শেল (১৭৩৮–১৮২২) – ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কারক
৩২. লরেঁ লাভোয়সিয়ের (১৭৪৩–১৭৯৪) – রসায়নশাস্ত্রের জনক
৩৩. মাইকেল ফ্যারাডে (১৭৯১-১৮৬৭) – তাড়িত-চুম্বক বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা
৩৪. চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) – প্রাণিজগতের বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যাদাতা
৩৫. লুই পাস্তুর (১৮২২–১৮৯৫) – জীবাণু আর জলাতঙ্ক রোগ প্রতিষেধকের আবিষ্কারক
৩৬. আলফ্রেড নোবেল (১৮৩৩–১৮৯৬) – যাঁর নামে দেয়া হয় নোবেল পুরস্কার
৩৭. আলভা এডিসন (১৮৪৭–১৯৩১) – সর্বাধিক আবিষ্কারের জনক
৩৮. জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৯–১৯৩৭) – যিনি বলেছিলেন গাছেরও প্রাণ আছে
৩৯. মাদাম কুরি (১৮৬৭–১৯৩৪) – সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহিলা বিজ্ঞানী
৪০. মার্কোনি (১৮৭৪–১৯৩৭) – বেতারযন্ত্রের আবিষ্কারক
৪১. আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯–১৯৫৫) – আপেক্ষিক তত্ত্বের জনক
৪২. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১–১৯৫৫) – পেনিসিলিনের আবিষ্কারক
৪৩. হোমার (আনু. ৭০০-? খ্রি. পূ.) – বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দুটি মহাকাব্যের রচয়িতা
৪৪. ঈশপ (আ. কা. ৬২০–৫৬০ খ্রি. পূ.) – কালজয়ী নীতিগল্পকার
৪৫. সোফোক্লেস (আনু. ৪৯৫-৪০৬ খ্রি. পূ.) – গ্রিক ট্র্যাজেডি নাট্যধারার রূপকার
৪৬. হেরোডোটাস (আনু. ৪৮৫–৪২৫ খ্রি. পূ.) – ইতিহাসশাস্ত্রের জনক
৪৭. অ্যারিস্টোফানিস (আনু. ৪৪৪–৩৮৫ খ্রি. পূ.) – যাঁর সাহিত্যকর্মে আর্তমানবতার কথা প্রতিফলিত
৪৮. মহাকবি কালিদাস (আনু. ৫৭০-৬৫০ খ্রি.) – সংস্কৃতি সাহিত্যের অমর কবি
৪৯. লেওনার্দো দা ভিঞ্চি (১৪৫২–১৫১৯) – সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী
৫০. মিকেলাঞ্জেলো (১৪৭৫–১৫৬৪) – পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাস্কর শিল্পী
৫১. তানসেন (১৫০৬–১৫৮৫) – কিংবদন্তির গায়ক
৫২. শেকসপিয়ার (১৫৬৪-১৬১৬) – বিশ্বসাহিত্যের কালজয়ী নাট্যকার
৫৩. ভলতেয়ার (১৬৯৪-১৭৭৮) – বিখ্যাত ফরাসি চিন্তাবিদ
৫৪. জঁ-জাক্ রুসো (১৭১২–১৭৭৮) – ফরাসি বিপ্লবের রূপকার
৫৫. লর্ড বায়রন (১৭৮৮–১৮২৪) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি
৫৬. ভিক্টর হুগো (১৮০২-১৮৮৫) – ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৭. ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন (১৮০৫–১৮৭৫) – যাঁকে বলা হয় রূপকথার জাদুকর
৫৮. চার্লস ডিকেন্স (১৮১২–১৮৭০) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৯. ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯-১৮৯২) – মার্কিন সাহিত্যের যুগ-প্রবর্তক কবি
৬০. লিয়েফ তলস্তোয় (১৮২৮–১৯১০) – বিশ্বের মহান সাহিত্যিকদের অন্যতম
৬১. জুল ভের্ন (১৮২৮–১৯০৫) – কল্পবিজ্ঞান কাহিনীর স্রষ্টা
৬২. মার্ক টোয়েন (১৮৩৫–১৯১০) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রসস্রষ্টা
৬৩. জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৫৬–১৯৫০) – যিনি প্রথম নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন
৬৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১) – শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনীষা, পৃথিবীর মহত্তম সাহিত্য-ব্যক্তিত্ব
৬৫. ম্যাক্সিম গোর্কি (১৮৬৮–১৯৩৬) – যাঁর সাহিত্যকর্মের প্রধান উপজীব্য গণমানুষের কথা
৬৬. হেলেন কেলার (১৮৮০-১৯৬৮) – যাঁর খ্যাতিকে নেপোলিয়নের সঙ্গে তুলনা করা হতো
৬৭. আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (১৮৯৮–১৯৬১) – জীবনবাদী মার্কিন কথাসাহিত্যিক
৬৮. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯–১৯৭৬) – বাংলার বিদ্রোহী কবি
৬৯. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২–১৭৯৯) – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৭০. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১) – ইতিহাসের কিংবদন্তির মহানায়ক
৭১. জুসেপ্পে গারিবলদি (১৮০৭–১৮৮২) – ইতালির জনক বলে যাঁর খ্যাতি
৭২. আব্রাহাম লিংকন (১৮০৯-১৮৬৫) – যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্রীতদাসপ্রথা রহিত করেছিলেন
৭৩. অটো ফন বিসমার্ক (১৮১৫–১৮৯৮) – জার্মান সাম্রাজ্যের স্থপতি
৭৪. মহাত্মা গান্ধি (১৮৬৯–১৯৪৮) – ‘সবকো সুমতি দে ভগবান’
৭৫. কমরেড লেনিন (১৮৭০–১৯২৪) – বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা
৭৬. উইনস্টন চার্চিল (১৮৭৪–১৯৬৫) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ডাকসাইটে প্রধানমন্ত্রী
৭৭. জোসেফ স্ট্যালিন (১৮৭৯–১৯৫৩) – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়েনের ‘লৌহমানব’
৭৮. কামাল আতাতুর্ক (১৮৮১–১৯৩৮) – নব্য-তুরস্কের জনক
৭৯. ডি ভ্যালেরা (১৮৮২-১৯৭৫) – আয়ারল্যান্ডের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৮০. জওহরলাল নেহরু (১৮৮৯-১৯৬৪) – ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
৮১. আইসেনহাওয়ার (১৮৯০-১৯৬৯) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক
৮২. শার্ল দ্য গল (১৮৯০-১৯৭০) – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা
৮৩. হো-চি-মিন (১৮৯০-১৯৬৯) – ভিয়েতনামের মুক্তিদাতা পুরুষ
৮৪. মার্শাল টিটো (১৮৯২–১৯৮০) – জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা
৮৫. মাও-সে-তুং (১৮৯৫–১৯৭৬) – চীন সাধারণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা
৮৬. সুভাষচন্দ্র বসু (১৮৯৭–১৯৪৫) – ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’
৮৭. জন এফ কেনেডি (১৯১৭–১৯৬৩) – গুপ্তঘাতকের হাতে যাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছিল
৮৮. ইন্দিরা গান্ধি (১৯১৭–১৯৮৪) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
৮৯. নেলসন ম্যান্ডেলা (১৯১৮) – দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তিদাতা পুরুষ
৯০. শেখ মুজিবর রহমান (১৯২০–১৯৭৫) – বাংলাদেশের জাতির জনক
৯১. প্যাট্রিস লুমুম্বা (১৯২৫-১৯৬১) – কঙ্গোর মুক্তিদাতা পুরুষ
৯২. মার্কো পোলো (১২৫৬–১৩২৩) – দুঃসাহসিক অভিযাত্রী
৯৩. ক্রিস্টোফার কলম্বাস (আনু. ১৪৪৬-১৫০৬) – আমেরিকার আবিষ্কারক
৯৪. ডেভিড লিভিংস্টোন (১৮১৩-১৮৭৩) – আফ্রিকার আবিষ্কারক
৯৫. উইলিয়াম জোন্স (১৭৪৬–১৭৯৪) – এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৬. ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (১৮২০–১৯১০) – আধুনিক ‘নার্সিং’ বৃত্তির অগ্রপথিক
৯৭. হেনরি ডুনান্ট (১৮২৮–১৯১০) – রেডক্রস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৮. ব্যাডেন পাওয়েল (১৮৫৭–১৯৪১) – বয়স্কাউট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা
৯৯. মাদার তেরেসা (১৯১০–১৯৯৭) – প্রেম, করুণা ও ধর্মের মূর্ত প্রতিমা
১০০. অ্যাডাম স্মিথ (১৭২৩–১৭৯০) – রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিজ্ঞানের জনক

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন