আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১–১৯৫৫) – পেনিসিলিনের আবিষ্কারক

ভবেশ রায়

জীবাণু নিয়ে নানাধরনের পরীক্ষানিরীক্ষা করছিলেন তিনি। কিন্তু বারবারই ব্যর্থ হচ্ছিলেন। ইনফ্লুয়েঞ্জা সম্পর্কিত জীবাণু প্রতিপালনের ডিশগুলোর কাছে তিনি যতবার যাচ্ছিলেন, ততবারই বিরক্ত হয়ে সেগুলোকে আবার নামিয়ে রাখছিলেন।

ব্যর্থতা আর বিরক্তিতে মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে উঠছিল ড. আলেকজান্ডার ফ্লেমিংয়ের (Alexander Fleming)। সব নষ্ট হয়ে গেল। যে জীবাণুগুলোকে তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য এতদিন ধরে যত্নে প্রতিপালন করছিলেন, তার সবই কিনা নষ্ট হয়ে গেল একটা সবুজ ছত্রাকের জন্য!

আর কী অবাক করা ঘটনা, যে-সবুজ ছত্রাকগুলোর জন্য তাঁর গবেষণা নষ্ট হয়ে গেল বলে দুঃখ করছিলেন, শেষ পর্যন্ত সেগুলোই তাঁকে এনে দিল বিশ্বজোড়া খ্যাতি। আসলে তিনি যা অনুসন্ধান করছিলেন, তা ছিল এই সবুজ ছত্রাক, যার বৈজ্ঞানিক নাম পেনিসিলিম নোটা টু উম (Penicillium Notatum)। তিনি প্রথমে দেখে চিনতে পারছিলেন না বলেই ঘটেছিল এই বিপত্তি।

পরবর্তীকালের চিকিৎসাশাস্ত্রের আলোড়ন সৃষ্টিকারী যে অধ্যায়, সেই পেনিসিলিন আবিষ্কারের এটাই ছিল গোড়ার কথা। ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯২৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে, লন্ডনের সেন্ট মেরি হাসপাতালে।

প্রথমটায় না পারলেও এই রহস্যময় সবুজ ছত্রাক চিনতে বেশিক্ষণ দেরি হয়নি ড. ফ্লেমিংয়ের। কৌতূহলের বশেই তিনি এই বিরক্তিকর সবুজ ছত্রাকটি কী, সেটা পরীক্ষা করতে গিয়েছিলেন। তিনি অণুবীক্ষণ যন্ত্রে পরীক্ষা করে দেখলেন রকফোর্ট পনিরের মতো দেখতে এই সবুর ছত্রাকের চারপাশে একটি আশ্চর্য চক্রের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বিস্ময়ে আরও লক্ষ্য করলেন যে, এই চক্রাকার স্থানটি জীবাণুমুক্ত। আর তখনই বুঝতে পারলেন, তিনি এমন কিছু আশ্চর্য পদার্থের সাক্ষাৎ পেয়েছেন, যা জীবাণুকে ধ্বংস করতে সক্ষম।

এভাবেই এক চরম হতাশাকর অবস্থা থেকে সহসাই আলোর সন্ধান লাভ করলেন ড. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং।

পরে তিনি এই সবুজ ছত্রাককে টেস্টটিউবে ভরে পরীক্ষা করে দেখলেন এগুলো রুটি, মাংস এবং পনিরের মধ্যে ভালো থাকে। তিনি এও লক্ষ্য করলেন এই সবুজ ছত্রাক জীবাণু ধ্বংস করে এবং রক্তের শ্বেতকণিকারও কোনো ক্ষতি করে না।

প্রাথমিক পর্যায়ে কৃতকার্য হলেও ড. ফ্লেমিং তাঁর গবেষণাকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হলেন না। এরপর ১৯২৯ সালে তাঁর গবেষণাকাজে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে এলেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. হাওয়ার্ড ফ্লোরে (Dr. Howard Florey)। তিনি ফ্লেমিংয়ের সূত্র অনুসারে সর্বপ্রথম তৈরি করতে সক্ষম হন স্বাভাবিক পেনিসিলিন। প্রথমে ইঁদুরের ওপর, পরে মানুষের ওপর গবেষণা চালিয়েও সফল হন তিনি।

১৯৪০ সাল নাগাদ পেনিসিলিনের জাদুকরি নিরাময়ক্ষমতা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। নিজের এই সাফল্যের আনন্দে অভিভূত হয়ে ফ্লেমিং বলেছেন, মানুষ এটাকে অলৌকিক জিনিস বলে অভিহিত করেছে। বিজ্ঞানী হিসেবে এই প্রথমবারের মতো আমিও স্বীকার করছি, এর সাহায্যে হাজার হাজার মানুষের জীবন রক্ষা পেয়েছে।

১৯৪৫ সাল থেকে পেনিসিলিনের ব্যাপকভিত্তিক উৎপাদন শুরু হয়।

পেনিসিলিন আবিষ্কারের জন্য ১৯৪৫ সালে ড. ফ্লেমিং এবং ফ্লোরেকে যৌথভাবে ‘নাইট’ উপাধিতে ভূষিত করা হয় এবং দেয়া হয় নোবেল পুরস্কার। এ ছাড়াও মার্কিন ঔষধ প্রস্তুতকারক সমিতি ফ্লেমিংকে অ্যাওয়ার্ড অব ডিস্টিংশন উপাধিতে ভূষিত করে।

তৎকালীন মহামান্য পোপ পায়াস তাঁকে মানবজাতির মহোপকারী বলে অভিহিত করেন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় ও প্যানিসিলভ্যানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ডক্টর অব সায়েন্স ডিগ্রি প্রদান করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বলেন, মানবজাতি আপনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞ।

তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি, এই মহান বিজ্ঞানীর, জীবন-বৃত্তান্ত সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায় নি। কারণ, তিনি সবার কাছ থেকে নিজের জীবনকে আড়াল করে রাখতে পছন্দ করতেন বেশি।

আলেকজান্ডার ফ্লেমিং-এর জন্ম ১৮৮১ সালে স্কটল্যন্ডের আয়র শহরে। পিতা ছিলেন একজন কৃষক। একেবারে ছোটবেলা থেকেই প্রচণ্ড কৌতূহলী ছিলেন তিনি। সবকিছুকেই খুঁটিয়ে দেখা ছিল তাঁর অভ্যাস। এটা ছিল তাঁর এক ধরনের খেলাও, যে অনুসন্ধানের খেলা খেলে গেছেন তিনি জীবনভর।

শুধু অনুসন্ধানী নয়, বাল্যকালে বেশ দুরন্তও ছিলেন তিনি। আধা-পাড়াগাঁ এবং আধা-শহর জাতীয় একটি গ্রামে ছিল তাঁদের বাড়ি। চারদিক ছিল বনজঙ্গলে ঘেরা।

আলেকজান্ডার আর তাঁর ভাই সারাদিন ঘুরে বেড়াতেন বনে-বাদাড়ে। খরগোশ ধরে বেড়ানো, নদীতে সাঁতার কাটা, পাখির ছানা পেড়ে আনা আর গাছের মগডালে চড়ে আকাশ দেখা ছিল তাঁদের নিত্য দিনের কাজ। মজার খেলাও।

এই খেলা নিয়েই ছিলেন তাঁরা ভয়ানক সুখি। বাল্যকালটা এরকমের এক গ্ৰাম্য পরিবেশে হেসেখেলেই দিন কেটে গিয়েছিল আলেকজান্ডারের।

গ্রামের পাঠশালাতে শুরু হয় তাঁর শিক্ষাজীবন। চৌদ্দ বছর বয়সে, তাঁকে ভালো কোনো স্কুলে পড়ার জন্য পাঠানো হয় লন্ডনে।

সেখানকার মেরিলিবোন রোডে থাকতেন ফ্লোমিংয়ের এক বড় বোন। তাঁর বাসাতে থেকেই পড়াশোনা করতে লাগলেন তিনি। কিছুদিন স্কুলে গেলেও কেন জানি পড়াশোনায় মন বসাতে পারলেন না। ফলে স্কুল যাওয়া ছেড়ে দিয়ে সামান্য বেতনের কেরানির চাকুরি নিলেন একটি জাহাজ কোম্পানিতে। এই চাকরি করার সময়েই তাঁর আরেক বড় ভাই টমের পরামর্শে তিনি ভর্তি হন মেডিকেল স্কুলে। ভর্তি তো হলেন, কিন্তু এই স্কুলের ছাত্রদের মধ্যে তিনি ছিলেন সত্যি বড় বেমানান। তাদের প্রত্যেকের চাইতে বয়সে বড়। যেন সকলের বড় ভাই।

কিন্তু এমনটা হলে কী হবে, রক্ষা করতে সক্ষম হলেন নিজের মর্যাদা। সমগ্ৰ গ্ৰেট ব্রিটেনের সমস্ত শিক্ষার্থীদের ডিঙিয়ে সর্বোচ্চ স্থান দখল করে মেডিকেল স্কুল থেকে পাশ করেন। সালটা ১৯০১। এবার ভর্তি হলেন প্রডিংটনের সেন্ট মেরিজ হাসপাতালে। এখানে তাঁর পরিচয় হয় জীবাণুবিজ্ঞানী অ্যাথ রাইটের সঙ্গে। এই রাইট সাহেবের ল্যাবরেটরিতেই তিনি প্রথম গবেষণা করার সুযোগ লাভ করেন। ফলে জীবাণু নিয়ে তাঁর গবেষণা কাজের অবারিত হয়ে যায়। এখানে তিনি টানা ১৯০৮ সাল পর্যন্ত কাজ করেন।

এই গবেষণাগারে কাজ করার সময়েই তিনি লন্ডনের চেলসিয়া আর্টস ক্লাবে যোগদান করেন। এখানে তিনি অন্যান্য খেলাধুলার পাশাপাশি রাইফেল চালনারও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

এরপর শুরু হয় প্রথম মহাযুদ্ধ। এ-সময় তিনি লন্ডন স্কটিশ টেরিটরিয়াল রেজিমেন্টে ডাক্তার হিসেবে যোগদান করেন। এখানেও তিনি চাকরি করেন বেশ কয়েক বছর ধরে। যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র সপ্তাহ কয়েক আগে পদত্যাগ করেন সেনাবাহিনী থেকে। ততদিনে তিনি পদে পদোন্নতি পেয়েছেন লেফটেন্যান্ট। যুদ্ধের শেষে তিনি ফ্রান্সের বোলন রিসার্চ সেন্টারে যোগদান করেন। এখানেই তিনি জীবাণুতত্ত্বের ওপর গবেষণা করতে গিয়ে লাভ করে প্রথন সাফল্য।

এই গবেষণা ক্ষেত্রে প্রতিদিন বহু রোগী আসত নানা রোগব্যাধি নিয়ে। তাদের মধ্যে এমন কিছু জীবাণুবহনকারী রোগীর সন্ধান তিনি পান, যাদের দেহে অ্যান্টিসেপটিক কোনো কাজে আসত না। শুধু তা-ই নয়, কোনো ওষুধেই তাদের দেহকোষে লুকিয়ে থাকা জীবাণুকে ধ্বংস করা সম্ভব হচ্ছিল না।

যেমন, গ্যাংগ্রিনের। ক্ষেত্রে প্রতিষেধক ব্যবহার করে কিছুক্ষণের জন্য ভালো ফল পাওয়া গেলেও, স্বল্প সময়ের ব্যবধানেই আবার তার প্রকোপ দেখা দিত।

এর মধ্যেই অবশেষে তিনি আশার আলো দেখতে পেলেন। ভাবলেন, এখানেই এমন কিছু আছে, যা জীবাণুকে ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু সেটা কোন্ বস্তু তার হশিদ তখনও তিনি করতে পার ছিলেন না।

১৯১৮ সালে তিনি আরও সক্রিয়ভাবে সেই আনুবীক্ষণিক বস্তুটির অনুসন্ধান করতে শুরু করলেন। অবশ্য ১৯২১ সালেই তিনি এ ব্যাপারে সবচেয়ে শক্তিশালী পদক্ষেপ রাখতে সক্ষম হন। তিনি লক্ষ্য করলেন, মানুষের অশ্রুবিন্দুতে এক জাতের পদার্থ লাইসোজাইম আছে, যা জীবাণুর বিস্তার রোধে সহায়তা করে। এরপর থেকেই তিনি জীবাণুর ওপর একনিষ্ঠভাবে গবেষণা চালিয়ে যান এবং পেনিসিলিন আবিষ্কার করতে সক্ষম হন।

১৯৩৯ সাল থেকেই দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের ঘনঘটা শুরু হলে এরপর তাঁর গবেষণা কাজ আর তেমন অগ্রসর হতে পারেনি। একই কারণে পেনিসিলিন আবিষ্কৃত হলেও বাণিজ্যিক-ভিত্তেতে এর ব্যাপক উৎপাদন করা সম্ভব হয়নি। এ-রকম অবস্থাতেও ৯৪১ সালে তিনি পেনিসিলিনের ইনজেকশন তৈরি করতে সক্ষম হন।

১৯৪৯ সালে তাঁর প্রথম স্ত্রীর মৃত্যু হলে তিনি খুবই ভেঙে পড়েন। তাঁর এই রকম বিধ্বস্ত মানসিক অবসস্থায় তাঁর পাশে এসে দাঁড়ান তাঁরই অনুরাগিণী ড. এমেমালিয়া ভোরেকা। প্রথমে সুন্দরী ভোরেকা এগিয়ে আসেন বন্ধু হিসেবে, পরে হন ফ্লেমিংয়ের জীবনসঙ্গিনী।

১৯৫৫ সালে ফ্লেমিং আয়ারল্যান্ডে ফিরে যাবেন বলে স্থির করেন। কিন্তু তা আর হয় নি। হঠাৎ করেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর কিছুদিন পরেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

সকল অধ্যায়

১. হযরত মুহাম্মদ (দঃ) (৫৭০-৬৩২) – সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী
২. জরথুশত্র (৬২৮-৫৫১ খ্রি. পূ.) – পারশি ধর্মের প্রবর্তক
৩. বর্ধমান মহাবীর (৫৯৯–৫২৭ খ্রি. পূ.) – জৈন দর্শন ও ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা
৪. গৌতম বুদ্ধ (৫৬৩–৪৮৩ খ্রি. পূ.) – বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক
৫. কনফুসিয়াস (৫৫১–৪৭৯ খ্রি. পূ.) – চীনের প্রাচীনতম ধর্মমতবাদের প্রবর্তক
৬. সক্রেটিস (আনু. ৪৬৯–৩৯৯ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্রের আদিজনক
৭. প্লেটো (৪২৮–৩৪৭ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্র যাঁর হাতে পেয়েছিল পূর্নাঙ্গরূপ
৮. ডায়োজিনিস (৪১২–৩২২ খ্রি. পূ.) – একনিষ্ঠ জ্ঞান সাধক
৯. অ্যারিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খ্রি. পূ.) – যুক্তিশাস্ত্রের জনক
১০. যিশু খ্রিস্ট (আনু. ৬ খ্রি. পূ.–আনু. ২৯ খ্রি.) – খ্রিস্টানধর্মের প্রবর্তক
১১. অতীশ দীপঙ্কর (৯৮২–১০৫৩) – জ্ঞানসাধক বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক
১২. গুরু নানক (১৪৬৯–১৫৩৮) – শিখ ধর্মমতের প্রবর্তক
১৩. মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬) – ধর্মের সংস্কারক এবং ‘প্রটেস্টানিজম’ মতবাদের স্রষ্টা
১৪. মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩) – বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তক
১৫. রামমোহন রায় (১৭৭২–১৮৩৩) – ভারতবর্ষে নবযুগের প্রবর্তক
১৬. রামকৃষ্ণ পরমহংস (১৮৩৬–১৮৮৬) – ‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আমি ঈশ্বরকে দর্শন করেছি’
১৭. বারট্রান্ড রাসেল (১৮৭২–১৯৭০ ) – যুদ্ধ-বিরোধী ও মানবতাবাদী দার্শনিক
১৮. থ্যালিস (আনু. ৬২৪–৫৬৫ খ্রি. পূ.) – বিজ্ঞানশাস্ত্রের আদিপুরুষ
১৯. পিথাগোরাস (আনু. ৫৮২–৫০৭ খ্রি. পূ.) – তিনি বলেছিলেন—পৃথিবী গোলাকার
২০. হিপোক্র্যাটিস (আনু: ৪৬০–৩৭০ খ্রি. পূ.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আদিজনক
২১. আর্কিমিডিস (২৮৭–২১২ খ্রি. পূ.) – ঊর্ধ্বমুখী বল সূত্রের আবিষ্কারক
২২. ক্লডিয়াস টলেমি (১০০–১৮০ খ্রি.) – জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রথম কোষগ্রন্থ প্রণেতা
২৩. ক্লডিয়াস গ্যালেন (১৩১–২০১ খ্রি.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আধুনিক পদ্ধতির আদি জনক
২৪. ইবনে সিনা (৯৮০–১০৩৭) – জ্ঞানসাধনায় কাটিয়েছিলেন সমগ্র জীবন
২৫. কোপারনিকাস (১৪৭৩–১৫৪৩) – আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্ৰবক্তা
২৬. জিওর্দানো ব্রুনো (আনু. ১৫৪৮–১৬০০ ) – সত্যপ্রচারের অপরাধে যাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল
২৭. গ্যালিলিও গ্যালিলি (১৫৬৪-১৬৪২) – যাঁর গাণিতিক পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি
২৮. লিওয়েন হুক (১৬৩২–১৭৩৩) – মুদি দোকানদার থেকে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী
২৯. আইজাক নিউটন (১৬৪২–১৭২৭) – মাধ্যাকর্ষন শক্তির আবিষ্কারক
৩০. রিচার্ড আর্করাইট (১৭৩২–১৭৯২) – আধুনিক বস্ত্রশিল্পে বৈপ্লবিক ধারা প্রবর্তক
৩১. উইলিয়াম হার্শেল (১৭৩৮–১৮২২) – ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কারক
৩২. লরেঁ লাভোয়সিয়ের (১৭৪৩–১৭৯৪) – রসায়নশাস্ত্রের জনক
৩৩. মাইকেল ফ্যারাডে (১৭৯১-১৮৬৭) – তাড়িত-চুম্বক বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা
৩৪. চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) – প্রাণিজগতের বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যাদাতা
৩৫. লুই পাস্তুর (১৮২২–১৮৯৫) – জীবাণু আর জলাতঙ্ক রোগ প্রতিষেধকের আবিষ্কারক
৩৬. আলফ্রেড নোবেল (১৮৩৩–১৮৯৬) – যাঁর নামে দেয়া হয় নোবেল পুরস্কার
৩৭. আলভা এডিসন (১৮৪৭–১৯৩১) – সর্বাধিক আবিষ্কারের জনক
৩৮. জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৯–১৯৩৭) – যিনি বলেছিলেন গাছেরও প্রাণ আছে
৩৯. মাদাম কুরি (১৮৬৭–১৯৩৪) – সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহিলা বিজ্ঞানী
৪০. মার্কোনি (১৮৭৪–১৯৩৭) – বেতারযন্ত্রের আবিষ্কারক
৪১. আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯–১৯৫৫) – আপেক্ষিক তত্ত্বের জনক
৪২. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১–১৯৫৫) – পেনিসিলিনের আবিষ্কারক
৪৩. হোমার (আনু. ৭০০-? খ্রি. পূ.) – বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দুটি মহাকাব্যের রচয়িতা
৪৪. ঈশপ (আ. কা. ৬২০–৫৬০ খ্রি. পূ.) – কালজয়ী নীতিগল্পকার
৪৫. সোফোক্লেস (আনু. ৪৯৫-৪০৬ খ্রি. পূ.) – গ্রিক ট্র্যাজেডি নাট্যধারার রূপকার
৪৬. হেরোডোটাস (আনু. ৪৮৫–৪২৫ খ্রি. পূ.) – ইতিহাসশাস্ত্রের জনক
৪৭. অ্যারিস্টোফানিস (আনু. ৪৪৪–৩৮৫ খ্রি. পূ.) – যাঁর সাহিত্যকর্মে আর্তমানবতার কথা প্রতিফলিত
৪৮. মহাকবি কালিদাস (আনু. ৫৭০-৬৫০ খ্রি.) – সংস্কৃতি সাহিত্যের অমর কবি
৪৯. লেওনার্দো দা ভিঞ্চি (১৪৫২–১৫১৯) – সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী
৫০. মিকেলাঞ্জেলো (১৪৭৫–১৫৬৪) – পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাস্কর শিল্পী
৫১. তানসেন (১৫০৬–১৫৮৫) – কিংবদন্তির গায়ক
৫২. শেকসপিয়ার (১৫৬৪-১৬১৬) – বিশ্বসাহিত্যের কালজয়ী নাট্যকার
৫৩. ভলতেয়ার (১৬৯৪-১৭৭৮) – বিখ্যাত ফরাসি চিন্তাবিদ
৫৪. জঁ-জাক্ রুসো (১৭১২–১৭৭৮) – ফরাসি বিপ্লবের রূপকার
৫৫. লর্ড বায়রন (১৭৮৮–১৮২৪) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি
৫৬. ভিক্টর হুগো (১৮০২-১৮৮৫) – ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৭. ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন (১৮০৫–১৮৭৫) – যাঁকে বলা হয় রূপকথার জাদুকর
৫৮. চার্লস ডিকেন্স (১৮১২–১৮৭০) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৯. ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯-১৮৯২) – মার্কিন সাহিত্যের যুগ-প্রবর্তক কবি
৬০. লিয়েফ তলস্তোয় (১৮২৮–১৯১০) – বিশ্বের মহান সাহিত্যিকদের অন্যতম
৬১. জুল ভের্ন (১৮২৮–১৯০৫) – কল্পবিজ্ঞান কাহিনীর স্রষ্টা
৬২. মার্ক টোয়েন (১৮৩৫–১৯১০) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রসস্রষ্টা
৬৩. জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৫৬–১৯৫০) – যিনি প্রথম নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন
৬৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১) – শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনীষা, পৃথিবীর মহত্তম সাহিত্য-ব্যক্তিত্ব
৬৫. ম্যাক্সিম গোর্কি (১৮৬৮–১৯৩৬) – যাঁর সাহিত্যকর্মের প্রধান উপজীব্য গণমানুষের কথা
৬৬. হেলেন কেলার (১৮৮০-১৯৬৮) – যাঁর খ্যাতিকে নেপোলিয়নের সঙ্গে তুলনা করা হতো
৬৭. আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (১৮৯৮–১৯৬১) – জীবনবাদী মার্কিন কথাসাহিত্যিক
৬৮. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯–১৯৭৬) – বাংলার বিদ্রোহী কবি
৬৯. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২–১৭৯৯) – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৭০. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১) – ইতিহাসের কিংবদন্তির মহানায়ক
৭১. জুসেপ্পে গারিবলদি (১৮০৭–১৮৮২) – ইতালির জনক বলে যাঁর খ্যাতি
৭২. আব্রাহাম লিংকন (১৮০৯-১৮৬৫) – যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্রীতদাসপ্রথা রহিত করেছিলেন
৭৩. অটো ফন বিসমার্ক (১৮১৫–১৮৯৮) – জার্মান সাম্রাজ্যের স্থপতি
৭৪. মহাত্মা গান্ধি (১৮৬৯–১৯৪৮) – ‘সবকো সুমতি দে ভগবান’
৭৫. কমরেড লেনিন (১৮৭০–১৯২৪) – বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা
৭৬. উইনস্টন চার্চিল (১৮৭৪–১৯৬৫) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ডাকসাইটে প্রধানমন্ত্রী
৭৭. জোসেফ স্ট্যালিন (১৮৭৯–১৯৫৩) – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়েনের ‘লৌহমানব’
৭৮. কামাল আতাতুর্ক (১৮৮১–১৯৩৮) – নব্য-তুরস্কের জনক
৭৯. ডি ভ্যালেরা (১৮৮২-১৯৭৫) – আয়ারল্যান্ডের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৮০. জওহরলাল নেহরু (১৮৮৯-১৯৬৪) – ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
৮১. আইসেনহাওয়ার (১৮৯০-১৯৬৯) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক
৮২. শার্ল দ্য গল (১৮৯০-১৯৭০) – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা
৮৩. হো-চি-মিন (১৮৯০-১৯৬৯) – ভিয়েতনামের মুক্তিদাতা পুরুষ
৮৪. মার্শাল টিটো (১৮৯২–১৯৮০) – জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা
৮৫. মাও-সে-তুং (১৮৯৫–১৯৭৬) – চীন সাধারণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা
৮৬. সুভাষচন্দ্র বসু (১৮৯৭–১৯৪৫) – ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’
৮৭. জন এফ কেনেডি (১৯১৭–১৯৬৩) – গুপ্তঘাতকের হাতে যাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছিল
৮৮. ইন্দিরা গান্ধি (১৯১৭–১৯৮৪) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
৮৯. নেলসন ম্যান্ডেলা (১৯১৮) – দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তিদাতা পুরুষ
৯০. শেখ মুজিবর রহমান (১৯২০–১৯৭৫) – বাংলাদেশের জাতির জনক
৯১. প্যাট্রিস লুমুম্বা (১৯২৫-১৯৬১) – কঙ্গোর মুক্তিদাতা পুরুষ
৯২. মার্কো পোলো (১২৫৬–১৩২৩) – দুঃসাহসিক অভিযাত্রী
৯৩. ক্রিস্টোফার কলম্বাস (আনু. ১৪৪৬-১৫০৬) – আমেরিকার আবিষ্কারক
৯৪. ডেভিড লিভিংস্টোন (১৮১৩-১৮৭৩) – আফ্রিকার আবিষ্কারক
৯৫. উইলিয়াম জোন্স (১৭৪৬–১৭৯৪) – এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৬. ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (১৮২০–১৯১০) – আধুনিক ‘নার্সিং’ বৃত্তির অগ্রপথিক
৯৭. হেনরি ডুনান্ট (১৮২৮–১৯১০) – রেডক্রস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৮. ব্যাডেন পাওয়েল (১৮৫৭–১৯৪১) – বয়স্কাউট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা
৯৯. মাদার তেরেসা (১৯১০–১৯৯৭) – প্রেম, করুণা ও ধর্মের মূর্ত প্রতিমা
১০০. অ্যাডাম স্মিথ (১৭২৩–১৭৯০) – রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিজ্ঞানের জনক

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন