কনফুসিয়াস (৫৫১–৪৭৯ খ্রি. পূ.) – চীনের প্রাচীনতম ধর্মমতবাদের প্রবর্তক

ভবেশ রায়

মানবতার কল্যাণ ও মানুষের মুক্তির জন্য পৃথিবীতে যাঁদের আবির্ভাব, তাঁদেরই একজন মহাপণ্ডিত কনফুসিয়াস (Confucius)। তিনি ছিলেন সমগ্র চীন তথা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং মানবতাবাদী ব্যক্তিদের অন্যতম।

কনফুসিয়াস ছিলেন শিক্ষাগুরু, দার্শনিক এবং রাজনৈতিক প্রবক্তা। তাঁর আদর্শ ও শিক্ষা সেই সময় থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত সমগ্র চীনে গভীর প্রভাব বিস্তার করে আছে। আজও তিনি চীনের কোটি কোটি মানুষের মহান গুরু এবং ধর্মীয় নেতা।

কনফুসিয়াসের প্রকৃত নাম খুঙ্, চীনা ভাষায় যার অর্থ খুঙ্ ফু-জু অর্থাৎ শিক্ষক বা গুরু খুঙ্।

জন্ম ৫৫১ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে চীনের লু প্রদেশে। বাল্যকালেই পিতৃহীন হন কনফুসিয়াস। তাঁর পারিবারিক অবস্থাও খুব ভালো ছিল না। পিতার মৃত্যুর পর তার অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে পড়ে।

কনফুসিয়াসের জন্ম নিয়ে এক মজার গল্প প্রচলিত আছে। তাঁর মা ছেলের জন্মের ঠিক আগের রাতে দেখেছিলেন এক অদ্ভুত স্বপ্ন। স্বপ্নে দেখলেন, তিনি গিয়েছেন ‘নি’ পর্বতে, যেখানে স্বর্গের দেবতারা তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তিনি যেতেই দেবতারা তাঁকে নিয়ে একটি গুহায় প্রবেশ করলেন এবং তাঁকে দ্যুতি-ছড়ানো ফুটফুটে এক ছেলেসন্তান উপহার দিলেন। মা সেই সন্তানকে কোলে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন। দেবতারা বলে দিয়েছিলেন, তাঁর সন্তান হবে এক মস্ত জ্ঞানী মহাপুরুষ। এই স্বপ্নের পরদিনই কনফুসিয়াসের জন্ম হয়।

কনফুসিয়াসের পিতার নাম ছিল হেই। প্রচলিত কিংবদন্তি মতে, হেই-এর শরীরে নাকি ছিল প্রচণ্ড শক্তি। একদিন তিনি একদল সৈন্য নিয়ে ঢুকে পড়লেন ইয়ং শহরে। ঠিক এই সময় শহরের প্রধান ফটকের মস্ত বড় দরোজাটা ওপর থেকে নিচের দিকে নেমে আসতে থাকে। ফলে তাঁদের শহরে ঢোকবার পথ বন্ধ হয়ে যায় যায় অবস্থা। কিন্তু দেখা গেল, দরোজাটা পুরো নামল না। খানিকটা নেমেই আবার থেমে গেল। থেমে গেল মানে আপনা থেকেই থেমে যায়নি। মহাশক্তিশালী হেই নিজেই দরোজাটা তুলে ধরেছিলেন, যাতে ওটা থেমে থাকে এবং তাঁর সৈন্যদের চাপা দিতে না পারে। তাই তিনি দরোজাটা দুহাতে ঠেলে ধরেছিলেন ওপর দিকে।

এ-রকমই এক বীর বিক্রমের সন্তান হলেন মহাজ্ঞানী কনফুসিয়াস। কিন্তু পিতাকে কখনও চোখে দেখেননি তিনি। তাঁর জন্মের আগেই মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। তবু মায়ের ইচ্ছে ছিল ছেলেকে তিনি মানুষের মতো মানুষ করে তুলবেন। তাই তাঁকে পাঠানো হলো স্কুলে। ছোটবেলাতেই অত্যন্ত মেধাবী আর ধীরস্থির ছিলেন কনফুসিয়াস। অল্পদিনের মধ্যেই গণিত, সাহিত্য আর জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী হয়ে উঠলেন তিনি।

লেখাপড়ার প্রতি ছিল তাঁর দারুণ আগ্রহ। কিন্তু কনফুসিয়াসের সময় গ্রামের ছেলেমেয়ে শিক্ষার সুযোগ পেত না। স্কুলে পড়ার সুযোগ হতো না অনেকেরই। ফলে থেকে যেত তারা অজ্ঞানতার অন্ধকারে।

ব্যাপারটা দারুণভাবে স্পর্শ করল কনফুসিয়াসের মনকে। তিনি চিন্তা করতে লাগলেন কী করে তাদের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়ানো যায়। কী করে তাদেরকে ঈশ্বরের পথ, সুন্দর জীবনের পথ দেখানো যায়। ওটাই যে তাদের মুক্তির পথ!

চীনে চলছে তখন খুবই দুঃসময়। চারদিক জুড়ে শুধু গোলমাল আর অরাজকতা। রাজ্যের কোথাও নেই আইন-শৃঙ্খলার লেশমাত্র। প্রজাদেরও সবাই পথ ও চরিত্রভ্রষ্ট। তিনি ভাবলেন, আগেকার দিনে যেসব নিয়মকানুন, হয়তো সেগুলো সঠিকভাবে মেনে চললেই দেশে আবার শান্তি ফিরে আসবে।

ভাবনা শেষে নিজের প্রচেষ্টাতেই যুবক কনফুসিয়াস নিজের গ্রামে খুলে বসলেন একটি স্কুল। শিক্ষার আলো ছড়াতে লাগলেন গ্রামের লোকজনের মধ্যে। এমনি করে কেটে গেল বেশ কয়েকটা বছর।

সেকালের লু প্রদেশ ছিল আজকের শান টুং প্রদেশ। এই শান টুং শহরেই চীনের রাজার ছিল বিশাল এক পাঠাগার। শি হুয়াং তি তখনও চীনের রাজা হননি। তাই পাঠাগারগুলো তখনও অক্ষত ছিল। উল্লেখ্য, রাজা শি হুয়াং তি ছিলেন একজন কুখ্যাত ব্যক্তি। যদিও তিনিই নির্মাণ করেছিলেন চীনের মহাপ্রাচীর। তাঁর মস্তবড় দোষ ছিল এই যে, তিনি রাজা হয়েই আদেশ দিলেন, দেশের যত পাঠাগার আছে আর সেখানে যত বই আছে, তার সবই পুড়িয়ে ফেলতে হবে। কারণ, তাঁর ইচ্ছে, চীনের মানুষ যদি কোনো রাজা-বাদশার ইতিহাস পড়তে চায় তো তারা কেবল তাঁর কথাই পড়বে, অন্যের কথা পড়তে পারবে না। তাঁর বিশ্বাস ছিল, তাঁর মতো রাজা চীনে আর কখনও জন্মায়নি, আর ভবিষ্যতেও কখনও জন্মাবে না। তাই অন্যের কথা ইতিহাসে লেখা থাকবে কেন?

অবশ্য তখনও তিনি সিংহাসনে বসেননি। তাই ওই কুখ্যাত হুকুমও তখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জারি করা হয়নি। কনফুসিয়াসের ইচ্ছে জাগল তিনি পাঠাগারে গিয়ে ইতিহাসের বইগুলো পড়বেন। তিনি জানবেন এদেশের অতীত ইতিহাসকে। এরপর তিনি সোজা চলে গেলেন রাজধানীতে। ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলেন পাঠাগারের সমস্ত বই। শুরু হল তাঁর জ্ঞানসাধনা।

পাঠাগার হলেও তখনকার বইপত্র কিন্তু আজকের মতো ছিল না। তখনও কাগজ আবিষ্কার হয়নি। তাই তখনকার বইপত্র কাগজে মুদ্রিত আধুনিক বই ছিল না। সেগুলো ছিল গাছের ছালের ওপর তুলি দিয়ে অক্ষর এঁকে এঁকে লেখা বই। রাজধানীতে বেশ কয়েক বছর কাটিয়ে পড়াশোনা শেষ করে কনফুসিয়াস আবার ফিরে এলেন তাঁর নিজের বাসস্থান লু প্রদেশে।

কনফুসিয়াসের পাণ্ডিত্যের খবর এবার ছড়িয়ে পড়ল দেশ-দেশান্তরে। বহু লোক আসতে লাগল তাঁর কাছে জ্ঞানের কথা শোনার জন্য, তাঁর উপদেশ শোনার জন্য। তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্য, সততা ও ব্যক্তিত্বের জন্যই তাঁকে লু প্রদেশের শাসনকর্তা নিয়োগ করা হয়েছিল।

তিনি সবাইকে বলতে লাগলেন দেশ শাসনের কথা। কেমন করে দেশ শাসন করা উচিত, সে কথা। কী করলে দেশের সাধারণ মানুষের মঙ্গল হবে, সে কথা। ফলে ক্রমশ তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়তে লাগল। জুটে গেল তাঁর অনেক ভক্ত আর শিষ্য।

তিনি বলতে লাগলেন, রাজা হলেন স্বর্গের প্রতিনিধি। তাই রাজাকে ভালো হতে হবে। রাজা ভালো হলেই প্রজারা ভালো হবে। রাজা খারাপ হলে দেশ জুড়েও নেমে আসবে অমঙ্গল।

তিনি নিজেও যেসব জনকল্যাণমূলক যেসব কাজ করেছেন, তা নিয়েও আছে অনেক সুন্দর সুন্দর ঘটনা। একবার তিনি তাঁর শিষ্যদের নিয়ে যাচ্ছিলেন তাই পর্বতের দিকে। এমন সময় শুনতে পেলেন কার যেন কান্নার শব্দ। তিনি শিষ্যদের নিয়ে এগিয়ে গিয়ে দেখলেন, একজন মহিলা বসে বসে কাঁদছেন।

এমন নির্জনে বসে কেন তিনি কাঁদছে, জিগ্যেস করতেই মহিলাটি বললেন, তার স্বামী আর শ্বশুরকে বাঘে খেয়েছে আর আজ তার ছেলেও বাঘের শিকার হয়েছে।

কনফুসিয়াসের একজন শিষ্য তখন মহিলাটিকে বললেন, এখানে যখন এতই বাঘের উৎপাত, তা হলে তুমি আগে পালালে না কেন? তা হলে তো আর তোমার ছেলেটাও বাঘের হাত থেকে আজ রেহাই পেতে পারতো।

মহিলাটি তখন উত্তর দিলেন, পালাব কেন? এখানকার রাজা যে খুব ভালো। এমন ভালো রাজার দেশ ছেড়ে কি পালানো যায়?

স্ত্রীলোকটির এ কথা শুনে কনফুসিয়াস খুব অবাক হলেন। তারপর তিনি বললেন, দ্যাখো, এই সাধারণ মহিলার কাছ থেকে তোমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। হিংস্র বাঘের চেয়েও যদি দেশে কোনোকিছু থেকে থাকে সে হলো খারাপ রাজা।

এমন করেই তিনি চীনাদের আচার-ব্যবহার, সমাজ, রীতিনীতি এবং ঈশ্বরের আরাধনা সম্পর্কে উপদেশ দিতেন। কারও ভদ্রতা শেখার ওপরে জোর দিতেন। আরও ভদ্র ব্যবহার এবং সুসভ্য আদব-কায়দা শিখে চরিত্রের দিক দিয়ে চীনাদের হতে হবে আরও উন্নততর, এটাই ছিল তাঁর একান্ত ইচ্ছে। তাঁর প্রধান শিক্ষাই ছিল এই যে, অন্যের কাছ থেকে তুমি যে ব্যবহার পেতে চাও না, অপরের সাথে সেরকম ব্যবহার কখনও কোরো না।

চীন দেশে তিনি তাঁর নিজের প্রবর্তিত একটি ধর্মমতেরও প্রচার করেন, ইতিহাসে সেটাই ‘কনফুসীয় মতবাদ’ নামে খ্যাত। আজও চীনে প্রায় তিরিশ কোটি মানুষ মহান কনফুসিয়াসের প্রবর্তিত মতবাদের অনুসারী। সমগ্র চীন দেশে তাঁর ছিল অগণিত শিষ্য। কিন্তু এর মধ্যে ৭০/৮০ জন শিষ্য সবসময় তাঁকে ঘিরে থাকতেন। তাঁর আদেশ মেনে চলতেন এবং তাঁর মুখের বাণী লিখে রাখতেন।

তাঁর শিষ্যদের মধ্যেও চারজন ছিলেন প্রধান। তাঁরা হলেন ইয়েন-ইয়েন, ইয়েন হবু ইব্বু, ৎজিনু এবং ৎজি-কুং।

নিজের ধর্মমত প্রচার করতে গিয়ে তিনি শিষ্যদের সাথে নিয়ে ঘুরে বেড়ান দেশ থেকে দেশে। বৃদ্ধ বয়সে শিষ্যদের আহ্বানে তিনি তাঁর স্বদেশ লু-তে ফিরে আসেন। আমৃত্যু সেখানে থেকেই তিনি তাঁর মতবাদ প্রচার করেন। আবার তিনি মনোনিবেশ করেন গ্রন্থরচনায়। অবশ্য খুব বেশি বই তিনি লেখেননি। জীবনে একটি মাত্র বই তিনি পুরোপুরি লিখেছিলেন। সেটার নাম হলো ‘চুন বিউ’, যার বাংলা অর্থ ‘বসন্ত ও শরৎ’। এ ছাড়া তিনি প্রাচীন শাস্ত্র নিয়েও আরেকখানি গ্রন্থ লিখে গেছেন। তার নাম “লি-কিং’। এ ছাড়া ‘শু-কি’ এবং ‘শিহ-কিং’ নামে যে দুটো বই আছে, এ দুটোরও অংশবিশেষ তিনি রচনা করেছিলেন। এর পর তাঁর শিষ্যরা তাঁর মুখের বাণী ও উপদেশকে একত্র করে একটি গ্রন্থ তৈরি করেছিলেন। তার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘লুম-ই আই’। এর সবগুলোই চীনে আজও পবিত্র গ্রন্থ বলে বিবেচিত।

কনফুসিয়াস নিজেকে কখনও দেবতা বলেননি। এমনকি তিনি এ ধরনের মিথ্যে প্রচারও করেননি যে, ঈশ্বর তাঁকে বিশেষ ক্ষমতা দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। তিনি ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করতেন। কিন্তু তিনি বলতেন, ঈশ্বরের কথায় মানুষের কোনো কাজ নেই। তার নিজের পরিবারের এবং সমাজের যাতে ভালো হয়, সেটা দেখাই তার প্রধান ধর্ম। মানুষ ভালো, তাই তাকে ভালোর পথেই চলতে হবে।

কনফুসিয়াসের জন্ম নিয়ে যেমন সুন্দর গল্প প্রচলিত আছে, তেমনি তাঁর মৃত্যু নিয়েও একই ধরনের গল্প আছে। একবার তাঁর এক শিষ্য গেলেন পর্বতে শিকার করতে। তিনি শিকার করে নিয়ে এলেন এক অদ্ভুত প্রাণী। এমন অদ্ভুত প্রাণী কেউ কোনোদিন দেখেননি। প্রাণীটির মাথায় একটি ফিতে বাঁধা।

কনফুসিয়াস কিন্তু তাকে দেখেই চিনে ফেললেন। এর নাম কি-লিন। তাঁর জন্মের আগের রাতে তাঁর মা এই জন্তুটাকেই স্বপ্নে দেখেছিলেন। আর স্বপ্নেই তাঁর মা এর শিঙে ফিতে বেঁধে দিয়ে এসেছিলেন।

এর কিছুদিন পরেই তিনি শয্যাগত হলেন। আর উঠলেন না। তাঁর মৃত্যু হয় ৪৭৯ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে। আজও, তাঁর মৃত্যুর আড়াই হাজার বছর পরেও তিনি চীনের কোটি কোটি মানুষের কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞানী বলে সম্মানিত। তাঁর সমাধির ওপর লেখা আছে :

সর্বশ্রেষ্ঠ ঋষিতুল্য পণ্ডিত
সর্বগুণের আধার এবং সর্বজ্ঞানময় রাজা।

সকল অধ্যায়

১. হযরত মুহাম্মদ (দঃ) (৫৭০-৬৩২) – সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী
২. জরথুশত্র (৬২৮-৫৫১ খ্রি. পূ.) – পারশি ধর্মের প্রবর্তক
৩. বর্ধমান মহাবীর (৫৯৯–৫২৭ খ্রি. পূ.) – জৈন দর্শন ও ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা
৪. গৌতম বুদ্ধ (৫৬৩–৪৮৩ খ্রি. পূ.) – বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক
৫. কনফুসিয়াস (৫৫১–৪৭৯ খ্রি. পূ.) – চীনের প্রাচীনতম ধর্মমতবাদের প্রবর্তক
৬. সক্রেটিস (আনু. ৪৬৯–৩৯৯ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্রের আদিজনক
৭. প্লেটো (৪২৮–৩৪৭ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্র যাঁর হাতে পেয়েছিল পূর্নাঙ্গরূপ
৮. ডায়োজিনিস (৪১২–৩২২ খ্রি. পূ.) – একনিষ্ঠ জ্ঞান সাধক
৯. অ্যারিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খ্রি. পূ.) – যুক্তিশাস্ত্রের জনক
১০. যিশু খ্রিস্ট (আনু. ৬ খ্রি. পূ.–আনু. ২৯ খ্রি.) – খ্রিস্টানধর্মের প্রবর্তক
১১. অতীশ দীপঙ্কর (৯৮২–১০৫৩) – জ্ঞানসাধক বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক
১২. গুরু নানক (১৪৬৯–১৫৩৮) – শিখ ধর্মমতের প্রবর্তক
১৩. মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬) – ধর্মের সংস্কারক এবং ‘প্রটেস্টানিজম’ মতবাদের স্রষ্টা
১৪. মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩) – বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তক
১৫. রামমোহন রায় (১৭৭২–১৮৩৩) – ভারতবর্ষে নবযুগের প্রবর্তক
১৬. রামকৃষ্ণ পরমহংস (১৮৩৬–১৮৮৬) – ‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আমি ঈশ্বরকে দর্শন করেছি’
১৭. বারট্রান্ড রাসেল (১৮৭২–১৯৭০ ) – যুদ্ধ-বিরোধী ও মানবতাবাদী দার্শনিক
১৮. থ্যালিস (আনু. ৬২৪–৫৬৫ খ্রি. পূ.) – বিজ্ঞানশাস্ত্রের আদিপুরুষ
১৯. পিথাগোরাস (আনু. ৫৮২–৫০৭ খ্রি. পূ.) – তিনি বলেছিলেন—পৃথিবী গোলাকার
২০. হিপোক্র্যাটিস (আনু: ৪৬০–৩৭০ খ্রি. পূ.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আদিজনক
২১. আর্কিমিডিস (২৮৭–২১২ খ্রি. পূ.) – ঊর্ধ্বমুখী বল সূত্রের আবিষ্কারক
২২. ক্লডিয়াস টলেমি (১০০–১৮০ খ্রি.) – জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রথম কোষগ্রন্থ প্রণেতা
২৩. ক্লডিয়াস গ্যালেন (১৩১–২০১ খ্রি.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আধুনিক পদ্ধতির আদি জনক
২৪. ইবনে সিনা (৯৮০–১০৩৭) – জ্ঞানসাধনায় কাটিয়েছিলেন সমগ্র জীবন
২৫. কোপারনিকাস (১৪৭৩–১৫৪৩) – আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্ৰবক্তা
২৬. জিওর্দানো ব্রুনো (আনু. ১৫৪৮–১৬০০ ) – সত্যপ্রচারের অপরাধে যাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল
২৭. গ্যালিলিও গ্যালিলি (১৫৬৪-১৬৪২) – যাঁর গাণিতিক পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি
২৮. লিওয়েন হুক (১৬৩২–১৭৩৩) – মুদি দোকানদার থেকে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী
২৯. আইজাক নিউটন (১৬৪২–১৭২৭) – মাধ্যাকর্ষন শক্তির আবিষ্কারক
৩০. রিচার্ড আর্করাইট (১৭৩২–১৭৯২) – আধুনিক বস্ত্রশিল্পে বৈপ্লবিক ধারা প্রবর্তক
৩১. উইলিয়াম হার্শেল (১৭৩৮–১৮২২) – ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কারক
৩২. লরেঁ লাভোয়সিয়ের (১৭৪৩–১৭৯৪) – রসায়নশাস্ত্রের জনক
৩৩. মাইকেল ফ্যারাডে (১৭৯১-১৮৬৭) – তাড়িত-চুম্বক বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা
৩৪. চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) – প্রাণিজগতের বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যাদাতা
৩৫. লুই পাস্তুর (১৮২২–১৮৯৫) – জীবাণু আর জলাতঙ্ক রোগ প্রতিষেধকের আবিষ্কারক
৩৬. আলফ্রেড নোবেল (১৮৩৩–১৮৯৬) – যাঁর নামে দেয়া হয় নোবেল পুরস্কার
৩৭. আলভা এডিসন (১৮৪৭–১৯৩১) – সর্বাধিক আবিষ্কারের জনক
৩৮. জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৯–১৯৩৭) – যিনি বলেছিলেন গাছেরও প্রাণ আছে
৩৯. মাদাম কুরি (১৮৬৭–১৯৩৪) – সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহিলা বিজ্ঞানী
৪০. মার্কোনি (১৮৭৪–১৯৩৭) – বেতারযন্ত্রের আবিষ্কারক
৪১. আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯–১৯৫৫) – আপেক্ষিক তত্ত্বের জনক
৪২. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১–১৯৫৫) – পেনিসিলিনের আবিষ্কারক
৪৩. হোমার (আনু. ৭০০-? খ্রি. পূ.) – বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দুটি মহাকাব্যের রচয়িতা
৪৪. ঈশপ (আ. কা. ৬২০–৫৬০ খ্রি. পূ.) – কালজয়ী নীতিগল্পকার
৪৫. সোফোক্লেস (আনু. ৪৯৫-৪০৬ খ্রি. পূ.) – গ্রিক ট্র্যাজেডি নাট্যধারার রূপকার
৪৬. হেরোডোটাস (আনু. ৪৮৫–৪২৫ খ্রি. পূ.) – ইতিহাসশাস্ত্রের জনক
৪৭. অ্যারিস্টোফানিস (আনু. ৪৪৪–৩৮৫ খ্রি. পূ.) – যাঁর সাহিত্যকর্মে আর্তমানবতার কথা প্রতিফলিত
৪৮. মহাকবি কালিদাস (আনু. ৫৭০-৬৫০ খ্রি.) – সংস্কৃতি সাহিত্যের অমর কবি
৪৯. লেওনার্দো দা ভিঞ্চি (১৪৫২–১৫১৯) – সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী
৫০. মিকেলাঞ্জেলো (১৪৭৫–১৫৬৪) – পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাস্কর শিল্পী
৫১. তানসেন (১৫০৬–১৫৮৫) – কিংবদন্তির গায়ক
৫২. শেকসপিয়ার (১৫৬৪-১৬১৬) – বিশ্বসাহিত্যের কালজয়ী নাট্যকার
৫৩. ভলতেয়ার (১৬৯৪-১৭৭৮) – বিখ্যাত ফরাসি চিন্তাবিদ
৫৪. জঁ-জাক্ রুসো (১৭১২–১৭৭৮) – ফরাসি বিপ্লবের রূপকার
৫৫. লর্ড বায়রন (১৭৮৮–১৮২৪) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি
৫৬. ভিক্টর হুগো (১৮০২-১৮৮৫) – ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৭. ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন (১৮০৫–১৮৭৫) – যাঁকে বলা হয় রূপকথার জাদুকর
৫৮. চার্লস ডিকেন্স (১৮১২–১৮৭০) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৯. ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯-১৮৯২) – মার্কিন সাহিত্যের যুগ-প্রবর্তক কবি
৬০. লিয়েফ তলস্তোয় (১৮২৮–১৯১০) – বিশ্বের মহান সাহিত্যিকদের অন্যতম
৬১. জুল ভের্ন (১৮২৮–১৯০৫) – কল্পবিজ্ঞান কাহিনীর স্রষ্টা
৬২. মার্ক টোয়েন (১৮৩৫–১৯১০) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রসস্রষ্টা
৬৩. জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৫৬–১৯৫০) – যিনি প্রথম নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন
৬৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১) – শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনীষা, পৃথিবীর মহত্তম সাহিত্য-ব্যক্তিত্ব
৬৫. ম্যাক্সিম গোর্কি (১৮৬৮–১৯৩৬) – যাঁর সাহিত্যকর্মের প্রধান উপজীব্য গণমানুষের কথা
৬৬. হেলেন কেলার (১৮৮০-১৯৬৮) – যাঁর খ্যাতিকে নেপোলিয়নের সঙ্গে তুলনা করা হতো
৬৭. আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (১৮৯৮–১৯৬১) – জীবনবাদী মার্কিন কথাসাহিত্যিক
৬৮. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯–১৯৭৬) – বাংলার বিদ্রোহী কবি
৬৯. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২–১৭৯৯) – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৭০. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১) – ইতিহাসের কিংবদন্তির মহানায়ক
৭১. জুসেপ্পে গারিবলদি (১৮০৭–১৮৮২) – ইতালির জনক বলে যাঁর খ্যাতি
৭২. আব্রাহাম লিংকন (১৮০৯-১৮৬৫) – যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্রীতদাসপ্রথা রহিত করেছিলেন
৭৩. অটো ফন বিসমার্ক (১৮১৫–১৮৯৮) – জার্মান সাম্রাজ্যের স্থপতি
৭৪. মহাত্মা গান্ধি (১৮৬৯–১৯৪৮) – ‘সবকো সুমতি দে ভগবান’
৭৫. কমরেড লেনিন (১৮৭০–১৯২৪) – বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা
৭৬. উইনস্টন চার্চিল (১৮৭৪–১৯৬৫) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ডাকসাইটে প্রধানমন্ত্রী
৭৭. জোসেফ স্ট্যালিন (১৮৭৯–১৯৫৩) – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়েনের ‘লৌহমানব’
৭৮. কামাল আতাতুর্ক (১৮৮১–১৯৩৮) – নব্য-তুরস্কের জনক
৭৯. ডি ভ্যালেরা (১৮৮২-১৯৭৫) – আয়ারল্যান্ডের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৮০. জওহরলাল নেহরু (১৮৮৯-১৯৬৪) – ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
৮১. আইসেনহাওয়ার (১৮৯০-১৯৬৯) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক
৮২. শার্ল দ্য গল (১৮৯০-১৯৭০) – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা
৮৩. হো-চি-মিন (১৮৯০-১৯৬৯) – ভিয়েতনামের মুক্তিদাতা পুরুষ
৮৪. মার্শাল টিটো (১৮৯২–১৯৮০) – জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা
৮৫. মাও-সে-তুং (১৮৯৫–১৯৭৬) – চীন সাধারণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা
৮৬. সুভাষচন্দ্র বসু (১৮৯৭–১৯৪৫) – ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’
৮৭. জন এফ কেনেডি (১৯১৭–১৯৬৩) – গুপ্তঘাতকের হাতে যাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছিল
৮৮. ইন্দিরা গান্ধি (১৯১৭–১৯৮৪) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
৮৯. নেলসন ম্যান্ডেলা (১৯১৮) – দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তিদাতা পুরুষ
৯০. শেখ মুজিবর রহমান (১৯২০–১৯৭৫) – বাংলাদেশের জাতির জনক
৯১. প্যাট্রিস লুমুম্বা (১৯২৫-১৯৬১) – কঙ্গোর মুক্তিদাতা পুরুষ
৯২. মার্কো পোলো (১২৫৬–১৩২৩) – দুঃসাহসিক অভিযাত্রী
৯৩. ক্রিস্টোফার কলম্বাস (আনু. ১৪৪৬-১৫০৬) – আমেরিকার আবিষ্কারক
৯৪. ডেভিড লিভিংস্টোন (১৮১৩-১৮৭৩) – আফ্রিকার আবিষ্কারক
৯৫. উইলিয়াম জোন্স (১৭৪৬–১৭৯৪) – এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৬. ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (১৮২০–১৯১০) – আধুনিক ‘নার্সিং’ বৃত্তির অগ্রপথিক
৯৭. হেনরি ডুনান্ট (১৮২৮–১৯১০) – রেডক্রস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৮. ব্যাডেন পাওয়েল (১৮৫৭–১৯৪১) – বয়স্কাউট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা
৯৯. মাদার তেরেসা (১৯১০–১৯৯৭) – প্রেম, করুণা ও ধর্মের মূর্ত প্রতিমা
১০০. অ্যাডাম স্মিথ (১৭২৩–১৭৯০) – রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিজ্ঞানের জনক

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন