মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩) – বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তক

ভবেশ রায়

নিমাই পণ্ডিত গয়া থেকে ফিরে এসেছেন নবদ্বীপে। কিন্তু তিনি সম্পূর্ণ এক নতুন মানুষ। পাণ্ডিত্যের অভিমান, শাস্ত্রীয় তর্কের বিলাস, কিছুই আজ তাঁর নেই। তিনি আজ নিরভিমান, আপনভোলা এক মহাসাধক। মুখে তাঁর শুধু কৃষ্ণনাম, দু চোখ বেয়ে ঝরে অশ্রুধারা। নবদ্বীপের লোকজনতো অবাক—কেমন করে তাঁর রাতারাতি এমন পরিবর্তন হয়ে গেল।

নিমাই পরলোকগত পিতার পিণ্ডদান করার জন্য গিয়েছিলেন গয়ায়। সেখানে ফল নদীতে স্নান করে শুদ্ধচিত্ত হয়ে বিষ্ণু-মন্দিরে প্রবেশ করেন। দলে দলে তীর্থযাত্রীরা আসছে, শ্রদ্ধা নিবেদন করছে— চারদিকে পবিত্র ভাব। এ সমস্ত দেখতে দেখতে নিমাই পণ্ডিতের এক সময় ভাবান্তর হলো। থরথর করে কেঁপে তাঁর সমস্ত শরীর। দু চোখ বেয়ে ঝরতে থাকে অবিরল অশ্রুধারা, ভক্তিরসের আবেশে তিনি আত্মহারা। একপর্যায়ে ভাবাবেশে মূর্ছা যাবার দশা হয়। এমন সময় একজন বৈষ্ণব তাঁকে ধরে ফেলেন। তাঁর বাহ্যজ্ঞানহীন দেহটাকে বুকে আশ্রয় দিয়ে আদর করতে থাকেন।

এই বৈষ্ণব আর কেউ নন, পরম ভগবত ঈশ্বরপুরী। নবদ্বীপের নিমাই পণ্ডিতের সঙ্গে তাঁর আগে থেকেই পরিচয় ছিল। জ্ঞান ফিরে আসামাত্রই নিমাই পণ্ডিত ঈশ্বরপুরীকে চিনতে পারেন এবং তাঁকে প্রণাম করে বিনীতভাবে বলেন, “প্রভু, কৃপা করে আমায় মন্ত্র দিন, চরণে আশ্রয় দিন। সংসারবন্ধন থেকে মুক্তিলাভের মন্ত্র আমায় দান করুন। কীভাবে কৃষ্ণলাভ হবে আমায় বলে দিন।”

কয়েকদিনের মধ্যে ঈশ্বরপুরী তাঁকে বৈষ্ণবধর্মে দীক্ষা দিলেন। সেদিনের নিমাই পণ্ডিত হলেন পরবর্তীকালের প্রেম-ভক্তিধর্মের প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য বা মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেব।

আজ থেকে পাঁচশো বছর আগে ১৪৮৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ফাল্গুনী দোল পূর্ণিমা তিথিতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নবদ্বীপ শহরের এক ব্রাহ্মণ পরিবারে শ্রীচৈতন্যদেব জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম পণ্ডিত জগন্নাথ মিশ্র এবং মাতার নাম শচীদেবী 1 জগন্নাথের পিতা উপেন্দ্র মিশ্রের আদি নিবাস ছিল সিলেট জেলার ঢাকা-দক্ষিণ গ্রাম। বিদ্যার্জনের জন্য জগন্নাথের সিলেট থেকে নবদ্বীপে আগমন। এখানে শচীদেবীকে বিয়ে করে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন। শ্রীচৈতন্য জন্মগ্রহণ করার আগেও তাঁর মাতা শচীদেবীর কয়েকটি সন্তানের অকাল মৃত্যু হয়। বেঁচে থাকেন কেবল জ্যেষ্ঠপুত্র বিশ্বরূপ ও কনিষ্ঠপুত্র চৈতন্য। শ্রীচৈতন্যের বাল্যনাম নিমাই। কথিত আছে, তিনি নিম গাছের নিচে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলে তাঁর নাম রাখা হয়েছিল নিমাই। তাঁর আরও একটি নাম ছিল বিশ্বম্ভর। পাড়ার লোকেরা তাঁর সোনার বরণ রূপ দেখে ডাকতেন শ্রীগৌরাঙ্গ বলে। আর ভক্তদের কাছে তিনি নবদ্বীপচন্দ্র, মহাপ্রভু এবং গৌরসুন্দর নামে পরিচিত হন।

নিমাইয়ের যখন দশ-এগারো বছর বয়স, তখন তাঁর পিতার মৃত্যু হয়। বিধবা মাতা পুত্রকে গঙ্গাদাস পণ্ডিতের টোলে পড়তে পাঠালেন। নিমাইয়ের ছিল অসাধারণ মেধা। অল্প কয়েকদিনের মধ্যে তিনি পাণ্ডিত্য অর্জন করে নিজেই অধ্যাপনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সেই কিশোর বয়সেই তিনি কাশ্মিরের বিখ্যাত পণ্ডিত কেশব মিশ্রকে শাস্ত্রীয় তর্কে পরাজিত করে খ্যাতি অর্জন করেন।

নিমাইয়ের বড় ভাই বিশ্বরূপ সংসার ছেড়ে চলে গেছেন— নিমাইও যাতে বিবাগী না হন, সেজন্য শচীদেবী এক পরমা সুন্দরী কন্যার সঙ্গে তাঁর বিয়ে দিলেন অল্প বয়সেই। চৈতন্যদেবের প্রথম বিয়ে হয়েছিল ১৫০২ সালে পণ্ডিত বল্লভাচার্যের কন্যা লক্ষ্মীদেবীর সঙ্গে।

এই সময় তাঁর খুব আর্থিক কষ্ট যাচ্ছিল। তার পিতৃপুরুষদের অনেক সম্পত্তি ছিল সিলেটে। সেই সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য তিনি জলপথে সিলেট গমন করেন। তাঁর অনুপস্থিতকালে সর্পদংশনে লক্ষ্মীদেবীর মৃত্যু হয়। টাকাকড়ি নিয়ে তিনি সিলেট থেকে নবদ্বীপ ফিরে আসেন। তিনি স্ত্রীর মৃত্যু সংবাদ শুনে ব্যথিত হন এবং ভক্তি অনুশীলনে মনোনিবেশ করেন। কিন্তু মায়ের অনুরোধে তিনি দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন রাজপণ্ডিতের কন্যা বিষ্ণুপ্রিয়াকে। কিন্তু সংসারের বন্ধন তাঁকে ধরে রাখতে পারল না।

ততদিনে চৈতন্যদেবের পাণ্ডিত্যের খ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। দিগ্বিজয়ী পণ্ডিত কেশব কাশ্মিরি, পুরীর বাসুদেব সার্বভৌম ও কাশীর প্রকাশনন্দ সরস্বতীকে বিদ্যার প্রতিযোগিতায় তিনি পরাজিত করেন।

তিনি মাত্র ২৩ বছর বয়সে পিতার পিণ্ডদানের জন্য গয়ায় গমন করেন ১৫০৮ সালে। সেখানে তিনি বৈষ্ণবভক্ত ঈশ্বরপুরীর কাছে দশাক্ষর গোপাল মন্ত্রে দীক্ষা গ্রহণ’ করেন। দীক্ষা গ্রহণের পর তাঁর মনে প্রবল ভক্তিভাবের উদয় হয়। কৃষ্ণপ্রেমে আসক্ত হয়ে তিনি গৃহে প্রত্যাবর্তন করেন। টোলের অধ্যাপনা ছেড়ে দিয়ে নিজে নাম-সংকীর্তন শুরু করলেন এবং অন্য আর সবাইকে উৎসাহিত করতে লাগলেন। তিনি ছাত্র ও শিষ্যদের স্বরচিত পদ গেয়ে সংকীর্তনে শিক্ষা দিতে লাগলেন এই বলে—

“হরি হরয়ে নমঃ কৃষ্ণ যাদবায় নমঃ।
গোপাল গোবিন্দ রাম শ্রীমধুসুগন। ”

অদ্বৈত আচার্য, নিত্যানন্দ, হরিদাস, শ্রীবাস পণ্ডিত, মুকুন্দ দত্ত প্রমুখ বৈষ্ণবভক্ত চৈতন্যদেবের সঙ্গে যোগ দিলে বৈষ্ণবদের প্রভাব বেড়ে যায়। এরপর নবদ্বীপের ঘরে ঘরে “হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে/হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে”–সংকীর্তন শুরু হয়ে যায়। কৃষ্ণপ্রেমের বন্যায় “শান্তিপুর ডুবু ডুবু নদে (নদীয়া) ভেসে যায়” অবস্থার সৃষ্টি হয়।

হিন্দুদের মধ্যে যারা বৈষ্ণমতের বিরোধী ছিল, তারা চৈতন্যদেবের কার্যকলাপকে হিন্দু ধর্ম বিরোধী বলে আখ্যায়িত করে নবদ্বীপের মুসলিম শাসক চাঁদ কাজির কাছে অভিযোগ করে। এছাড়া নবদ্বীপের মুসলিম শাসকরা তাঁকে ভুল বুঝতেও শুরু করেন। তাঁরা চৈতন্যদেবের কার্যক্রমের মধ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য খুঁজতে থাকেন। তারা এও বিশ্বাস করতে শুরু করেন যে, শ্রীচৈতন্যদেব তাঁর সংকীর্তন আন্দোলনের মধ্য দিয়ে হিন্দু জাগরণ এবং নিজের রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার ঘটাতে শুরু করেছেন।

শ্রীচৈতন্য প্রতিদিন তাঁর শিষ্যদের নিয়ে সন্ধ্যাউত্তীর্ণ হলেই সংকীর্তণ করে নগর পরিক্রমণ করতেন। মুসলিম শাসক বৈষ্ণবদের এই কীর্তন নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও শ্রীচৈতন্যদেব ব্যাপারটিকে সহজভাবে মেনে নিতে পারেননি। সেদিনই তিনি তাঁর শিষ্যদের নিয়ে সংকীর্তন শোভাযাত্রা করে কাজির বাড়ির কাছে পৌঁছুলেন। তখন তাঁর বাড়ির ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং তার ভক্ত হয়ে যান। চাঁদ কাজি তার সংকীর্তন সম্পর্কে জারি করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেন। এঘটনার পর চারদিকে শ্রীচৈতন্যের জয় জয়কার শুরু হয়ে যায়।

শ্রীচৈতন্যদেব প্রবর্তিত বৈষ্ণবতত্ত্ব হিন্দু ধর্মের নব সংস্করণ। তাঁর উদ্ভাবিত বৈষ্ণবধর্মের একটি সামাজিক তাৎপর্য বিদ্যমান। জাতিভেদ প্রথা অস্বীকার করায় বৈষ্ণবতত্ত্ব সমাজের নির্যাতিত মানুষের কাছে প্রবল আবেগের সঞ্চার করে।

তিনি সংসারের সমস্ত চিন্তা পরিত্যাগ করে বিভোর হয়ে থাকতেন কেবল ভগবানের ধ্যানে। তিনি কৃষ্ণনামের সংকীর্তন করার জন্য নবদ্বীপে গঠন করেন দল। দলে দলে বৈষ্ণবরা এসে তাঁর সাথে মিলিত হতে থাকে। শ্রীবাসের অঙ্গনে নিয়মিত কীর্তন চলতে থাকে। আর তিনি কৃষ্ণপ্রেমে মাতোয়ারা হয়ে থাকেন। একদিন তিনি তাঁর ভক্তদের ডেকে বললেন, এই নবদ্বীপে আরেক মহান পুরুষ আছেন। আমি তাঁর সঙ্গে মিলিত হবার জন্য বড়ই ব্যাকুল হয়ে পড়েছি। এরপর তিনি একদিন সকল শিষ্যকে নিয়ে সোজা নন্দন আচার্যের গৃহে গিয়ে উপস্থিত হলেন। যে মহাপ্রেমিক সন্ন্যাসীকে সেদিন তিনি আবিষ্কার করে নিয়ে এলেন, তাঁর নাম শ্রীনিত্যানন্দ। তিনি চৈতন্যদেবের পরম ভক্ত হয়ে তাঁরই নামের সাথে যুক্ত হয়ে আছেন গৌরনিতাইরূপে।

এভাবে চৈতন্যদেব তাঁর পাশে টেনে আনলেন চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক বিদ্যানিধিকে, দরিদ্র শ্রীধর পণ্ডিত এবং ভক্ত হরিদাসসহ আরও অনেককে। এমনি করেই তাঁর নবপ্রবর্তিত প্রেম-ভক্তির ধর্ম দেখতে দেখতে শক্তিশালী হয়ে উঠল। এ-রকম অবস্থাতেই নিমাই একদিন সংসারত্যাগী হলেন—হলেন সন্ন্যাসী। নাম হলো চৈতন্য। তখন তাঁর বয়স মাত্র ২৪।

এই বয়সেই তিনি অর্থাৎ ১৫১০ সালের ২৬ জানুয়ারি মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের একরাত্রে সন্ন্যাস গ্রহণের জন্য গৃহত্যাগ করে কাটোয়ায় গমন করেন। সেখানে কেশব ভারতী নামের একজন প্রসিদ্ধ আচার্যের কাছে সন্ন্যাসদীক্ষা গ্রহণ করেন। গুরু কেশবভারতী শিষ্যের নাম রাখেন শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য। সন্ন্যাস নেয়ার পর চৈতন্যভক্তির ভাবাবেগে আপ্লুত হয়ে দিগ্‌বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়লে শিষ্যরা বৃন্দাবন যাবার নাম করে তাঁকে ভুলিয়ে শান্তিপুরে অদ্বৈত আচার্যের বাড়িতে নিয়ে আসেন। কিন্তু সেখানেও তাঁকে বেশিদিন ধরে রাখা যায়নি।

চলে এলেন পুরীতে। পুরীতে জগন্নাথদেবের মন্দির। মন্দিরে ঢুকেই চৈতন্যদেব ভাবে বিভোর হয়ে গেলেন। দু হাত বাড়িয়ে জগন্নাথদেবকে বুকে জড়িয়ে ধরতে গেলে পাণ্ডারা বাধা দিলেন। শ্রীচৈতন্যদেব পড়ে গেলেন। জ্ঞানহারা হলেন। এ সময়ে মন্দিরে এলেন পুরীর রাজপণ্ডিত বাসুদেব সার্বভৌম। তিনি চৈতন্যদেবকে দেখে অবাক হলেন। তিনি তাঁকে এ-অবস্থায় নিয়ে গেলেন নিজের বাড়িতে। ভক্তরা সাথে গেলেন। বাসুদেব শ্রীচৈতন্যদেবের পরিচয় জানলেন। কিছুক্ষণ পরে তিনি সুস্থ হয়ে উঠলেন। বাসুদেব তাঁর সাথে শাস্ত্র আলোচনা করে অত্যন্ত আনন্দিত হলেন। শেষে তিনি শ্রীচৈতন্যদেবকে প্ৰভু বলে স্বীকার করলেন।

সেখান থেকে তিনি যান নীলাচলে। পুরী থেকে প্রেমভক্তি প্রচারের জন্য তিনি দাক্ষিণাত্য গমন করেন। সেখানে তিনি ১৫১০ থেকে ১৫১২ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ ভারতের তীর্থস্থানসমূহ দর্শন করে বেড়ান। এসময় রামানন্দ রায় এবং পরমানন্দপুরী তাঁর ভক্তিবাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তাঁর কাছে দীক্ষা গ্রহণ করেন।

এরপর তিনি সেখান থেকে বৃন্দাবন যান। সেখানে গিয়ে তিনি অনেক লুপ্ত তীর্থস্থান উদ্ধার করেন। এখানে রূপ, সনাতন, রঘুনাথ ভট্ট, শ্রীজীব ও গোপাল ভট্টকে বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষা দান করেন। তাঁরা ‘ছয় গোসাই’ নামে পরিচিত। চৈতন্যদেবের নির্দেশে তাঁরা বৈষ্ণব ধর্ম প্রচারে ব্রতী হন।

এরপর অরণ্যপথে কাশী, প্রয়াগ, মথুরা ও বৃন্দাবন ভ্রমণ করেন তিনি। ১৫১৬ সালে তিনি আবার নদীয়াতে ফিরে আসেন। নবদ্বীপ এসে মাকে শেষবারের মতো দেখে যান। তিনি এসেছেন জেনে পত্নী বিষ্ণুপ্রিয়া স্বামীকে দেখার জন্য আকুল হয়ে ওঠেন। মাকে দেখে তিনি বিষ্ণুপ্রিয়ার ঘরের দিকে তাকান। বিষ্ণুপ্রিয়াও স্বামীকে প্রণাম করলেন।

শ্রীচৈতন্যদেব পত্নীকে জিগ্যেস করেন, তুমি কে? বিষ্ণুপ্রিয়া উত্তর দেন, আমি বিষ্ণুপ্রিয়া।

—তুমি কৃষ্ণপ্রিয়া হও। একথা বলেই তিনি তৎক্ষণাৎ প্রস্থান করেন সেখান থেকে।

তখন বৃন্দাবনের খুবই দুরবস্থা। তাই শ্রীচৈতন্যদেব সেখানে বৈষ্ণবধর্মের প্রচার ও সংস্কার করলেন। বৃন্দাবনের কাজ শেষ করে তিনি গেলেন কাশীতে। এভাবে শ্রীচৈতন্যদেব ২০-২২ বছর কাটিয়ে দিলেন জীবনের শেষ আঠারো বছর তিনি পুরীতে বসবাস করেন। শেষ জীবনে তিনি সর্বক্ষণ শ্রীকৃষ্ণের ধ্যানে দিব্যভাবে বিভোর অবস্থায় দিন যাপন করতেন।

জয়ানন্দের ‘চৈতন্যমঙ্গল’ কাব্যে আছে রথের সামনে নাচবার সময় চৈতন্যদেবের পায়ে ইটের টুকরো বিধে যায়। পরে সেখান থেকেই বিষাক্ত ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এই ব্যাধিতেই তাঁর জীবনের অবসান ঘটে ১৫৩৩ সালের ২৯ জুন।

তাঁর মৃত্যুমুহূর্ত নিয়ে একটি কিংবদন্তিও প্রচলিত আছে। সেখানে বলা হয়েছে, তিনি সেদিন জগন্নাথদেবের মন্দিরে প্রবেশ করার। সঙ্গে সঙ্গে মন্দিরের দরজা গেল বন্ধ হয়ে যায়। সবাই বাইরে অপেক্ষা করছেন, ভেতরে শুধু তিনি আর জগন্নাথ।

তারপর যখন কপাট আপনা থেকেই খুলে গেল, তখন ভেতরে আর শ্রীচৈতন্যদেবকে দেখা গেল না। তিনি চিরতরে অন্তর্হিত হয়েছেন। অনেকের ধারণা, তিনি জগন্নাথদেবের বিগ্রহে বিলীন হয়ে যান।

শ্রীচৈতন্য ছিলেন বৈষ্ণব ধর্মান্দোলনের নেতা। প্রাচীন বৈষ্ণবধর্মের দ্বৈতবাদ অস্বীকার করে তিনি অচিন্ত্যভেদাভেদবাদের আদর্শে বৈষ্ণবধর্মকে নতুন রূপদান করেন। তাঁর মত অনুসারে ভক্তির দ্বারাই ঈশ্বর লাভ করা সম্ভব। ঈশ্বর প্রেমময় ও করুণার আধার। প্রেমাস্পদে ও সর্বজীবে মায়া ও মমতারূপে তাঁর প্রকাশ। ঈশ্বরকে প্রেমাস্পদের মতো ভালবাসলে তাঁকে লাভ করা যায়। রাধাকৃষ্ণের (জীবাত্মা-পরমাত্মা) প্রেমের রূপকল্পে তিনি ভগবানের প্রতি ভক্তের প্রেমের লীলামাধুর্য উপস্থাপন করে গেছেন। শ্রীচৈতন্যদেব প্রবর্তিত বৈষ্ণবতত্ত্ব হিন্দুধর্মের নব সংস্করণ। বর্ণাশ্রম প্রথাকে অস্বীকার করে গীতার ভক্তিবাদকে নতুনভাবে উপস্থাপন করে তিনি হিন্দুধর্মকে অবক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করে গেছেন। তাঁর উদ্ভাবিত বৈষ্ণব ধর্মের একটি সামাজিক তাৎপর্য বিদ্যমান। জাতিভেদ প্রথায় নিপীড়িত হিন্দুরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে থাকলে চৈতন্যদেব তাঁর ধর্মীয় আন্দোলনের মাধ্যমে তা প্রতিরোধ করতে সক্ষম হন।

ধর্ম সাধনায় নর্তন-কীর্তন ও শোভাযাত্রার প্রবর্তন এবং জাতিভেদ প্রথা অস্বীকার করায় বৈষ্ণবতত্ত্ব সমাজের নির্যাতিত মানুষের কাছে প্রবল আবেগের সঞ্চার করে। বর্ণাশ্রম প্রথায় নিপীড়িত বাঙালি হিন্দু-সমাজ ব্যাপকভাবে চৈতন্যবাদ গ্রহণ করে। ভক্ত হরিদাসের মতো অনেক মুসলমানও বৈষ্ণব ধর্ম গ্রহণ করে তাদের জীবন ধন্য করে।

চৈতন্যদেবের আবির্ভাব কেবল ধর্ম ও সামাজিক ক্ষেত্রে নয়, বাংলা সাহিত্যের অঙ্গনেও এক বৈপ্লবিক ঘটনা। তাঁর বৈষ্ণবতত্ত্বকে অবলম্বন করে বৈষ্ণব কবিরা রচনা করেন পদাবলী গান। বৈষ্ণবদের কীর্তনের জন্য রচিত হলেও প্রেমমূলক গীতিকবিতা হিসেবে এর মূল্য অসাধারণ। বৈষ্ণবতত্ত্বের অনেক শিক্ষাগুরু চৈতন্যদেবকেও ঈশ্বররূপে বিশ্বাস করে তাঁর প্রতি ভক্তি প্রকাশের জন্য তাঁর প্রশংসামূলক জীবনী রচনা করেন।

বৈষ্ণবতত্ত্বকে কেন্দ্র করে বাংলা কাব্যসাহিত্যে যে নতুন ধারার সৃষ্টি হয়, সাহিত্যের ইতিহাসবিদরা তাকে ‘চৈতন্যযুগ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। চৈতন্যদেবের ভক্তদের মতে তিনি কৃষ্ণের অবতার। কিন্তু তাঁর দেহকান্তি ও আচরণ বিরহিণী রাধার মতো। তাই তাঁকে বলা হয় রাধা ও কৃষ্ণের মিলিত বিগ্রহ।

সনাতন ধর্মের এক দুর্যোগপূর্ণ সময়ে শ্রীচৈতন্যদেবের আবির্ভাব হয়েছিল। এই সময়েই তিনি প্রচার করলেন ঈশ্বরের আরাধনায় সকলের সমান অধিকার। প্রাণে ভক্তি নিয়ে ঈশ্বরকে ডাকলে তাঁকে পাওয়া যায়। ভক্তিতেই মুক্তি।

যেই ভজে সেই বড় অভক্তিহীন ছার।
কৃষ্ণ ভজনে নাহি জাতি-কুলাদি বিচার

—শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত

তিনি সকল মানুষের জন্য যে মহানাম প্রচার করে গেছেন, তা হলো-

হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে,
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।

শ্রীচৈতন্যদেবের লীলা ছিল চিরন্তন এবং শাশ্বত।

সকল অধ্যায়

১. হযরত মুহাম্মদ (দঃ) (৫৭০-৬৩২) – সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী
২. জরথুশত্র (৬২৮-৫৫১ খ্রি. পূ.) – পারশি ধর্মের প্রবর্তক
৩. বর্ধমান মহাবীর (৫৯৯–৫২৭ খ্রি. পূ.) – জৈন দর্শন ও ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা
৪. গৌতম বুদ্ধ (৫৬৩–৪৮৩ খ্রি. পূ.) – বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক
৫. কনফুসিয়াস (৫৫১–৪৭৯ খ্রি. পূ.) – চীনের প্রাচীনতম ধর্মমতবাদের প্রবর্তক
৬. সক্রেটিস (আনু. ৪৬৯–৩৯৯ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্রের আদিজনক
৭. প্লেটো (৪২৮–৩৪৭ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্র যাঁর হাতে পেয়েছিল পূর্নাঙ্গরূপ
৮. ডায়োজিনিস (৪১২–৩২২ খ্রি. পূ.) – একনিষ্ঠ জ্ঞান সাধক
৯. অ্যারিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খ্রি. পূ.) – যুক্তিশাস্ত্রের জনক
১০. যিশু খ্রিস্ট (আনু. ৬ খ্রি. পূ.–আনু. ২৯ খ্রি.) – খ্রিস্টানধর্মের প্রবর্তক
১১. অতীশ দীপঙ্কর (৯৮২–১০৫৩) – জ্ঞানসাধক বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক
১২. গুরু নানক (১৪৬৯–১৫৩৮) – শিখ ধর্মমতের প্রবর্তক
১৩. মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬) – ধর্মের সংস্কারক এবং ‘প্রটেস্টানিজম’ মতবাদের স্রষ্টা
১৪. মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩) – বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তক
১৫. রামমোহন রায় (১৭৭২–১৮৩৩) – ভারতবর্ষে নবযুগের প্রবর্তক
১৬. রামকৃষ্ণ পরমহংস (১৮৩৬–১৮৮৬) – ‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আমি ঈশ্বরকে দর্শন করেছি’
১৭. বারট্রান্ড রাসেল (১৮৭২–১৯৭০ ) – যুদ্ধ-বিরোধী ও মানবতাবাদী দার্শনিক
১৮. থ্যালিস (আনু. ৬২৪–৫৬৫ খ্রি. পূ.) – বিজ্ঞানশাস্ত্রের আদিপুরুষ
১৯. পিথাগোরাস (আনু. ৫৮২–৫০৭ খ্রি. পূ.) – তিনি বলেছিলেন—পৃথিবী গোলাকার
২০. হিপোক্র্যাটিস (আনু: ৪৬০–৩৭০ খ্রি. পূ.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আদিজনক
২১. আর্কিমিডিস (২৮৭–২১২ খ্রি. পূ.) – ঊর্ধ্বমুখী বল সূত্রের আবিষ্কারক
২২. ক্লডিয়াস টলেমি (১০০–১৮০ খ্রি.) – জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রথম কোষগ্রন্থ প্রণেতা
২৩. ক্লডিয়াস গ্যালেন (১৩১–২০১ খ্রি.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আধুনিক পদ্ধতির আদি জনক
২৪. ইবনে সিনা (৯৮০–১০৩৭) – জ্ঞানসাধনায় কাটিয়েছিলেন সমগ্র জীবন
২৫. কোপারনিকাস (১৪৭৩–১৫৪৩) – আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্ৰবক্তা
২৬. জিওর্দানো ব্রুনো (আনু. ১৫৪৮–১৬০০ ) – সত্যপ্রচারের অপরাধে যাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল
২৭. গ্যালিলিও গ্যালিলি (১৫৬৪-১৬৪২) – যাঁর গাণিতিক পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি
২৮. লিওয়েন হুক (১৬৩২–১৭৩৩) – মুদি দোকানদার থেকে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী
২৯. আইজাক নিউটন (১৬৪২–১৭২৭) – মাধ্যাকর্ষন শক্তির আবিষ্কারক
৩০. রিচার্ড আর্করাইট (১৭৩২–১৭৯২) – আধুনিক বস্ত্রশিল্পে বৈপ্লবিক ধারা প্রবর্তক
৩১. উইলিয়াম হার্শেল (১৭৩৮–১৮২২) – ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কারক
৩২. লরেঁ লাভোয়সিয়ের (১৭৪৩–১৭৯৪) – রসায়নশাস্ত্রের জনক
৩৩. মাইকেল ফ্যারাডে (১৭৯১-১৮৬৭) – তাড়িত-চুম্বক বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা
৩৪. চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) – প্রাণিজগতের বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যাদাতা
৩৫. লুই পাস্তুর (১৮২২–১৮৯৫) – জীবাণু আর জলাতঙ্ক রোগ প্রতিষেধকের আবিষ্কারক
৩৬. আলফ্রেড নোবেল (১৮৩৩–১৮৯৬) – যাঁর নামে দেয়া হয় নোবেল পুরস্কার
৩৭. আলভা এডিসন (১৮৪৭–১৯৩১) – সর্বাধিক আবিষ্কারের জনক
৩৮. জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৯–১৯৩৭) – যিনি বলেছিলেন গাছেরও প্রাণ আছে
৩৯. মাদাম কুরি (১৮৬৭–১৯৩৪) – সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহিলা বিজ্ঞানী
৪০. মার্কোনি (১৮৭৪–১৯৩৭) – বেতারযন্ত্রের আবিষ্কারক
৪১. আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯–১৯৫৫) – আপেক্ষিক তত্ত্বের জনক
৪২. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১–১৯৫৫) – পেনিসিলিনের আবিষ্কারক
৪৩. হোমার (আনু. ৭০০-? খ্রি. পূ.) – বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দুটি মহাকাব্যের রচয়িতা
৪৪. ঈশপ (আ. কা. ৬২০–৫৬০ খ্রি. পূ.) – কালজয়ী নীতিগল্পকার
৪৫. সোফোক্লেস (আনু. ৪৯৫-৪০৬ খ্রি. পূ.) – গ্রিক ট্র্যাজেডি নাট্যধারার রূপকার
৪৬. হেরোডোটাস (আনু. ৪৮৫–৪২৫ খ্রি. পূ.) – ইতিহাসশাস্ত্রের জনক
৪৭. অ্যারিস্টোফানিস (আনু. ৪৪৪–৩৮৫ খ্রি. পূ.) – যাঁর সাহিত্যকর্মে আর্তমানবতার কথা প্রতিফলিত
৪৮. মহাকবি কালিদাস (আনু. ৫৭০-৬৫০ খ্রি.) – সংস্কৃতি সাহিত্যের অমর কবি
৪৯. লেওনার্দো দা ভিঞ্চি (১৪৫২–১৫১৯) – সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী
৫০. মিকেলাঞ্জেলো (১৪৭৫–১৫৬৪) – পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাস্কর শিল্পী
৫১. তানসেন (১৫০৬–১৫৮৫) – কিংবদন্তির গায়ক
৫২. শেকসপিয়ার (১৫৬৪-১৬১৬) – বিশ্বসাহিত্যের কালজয়ী নাট্যকার
৫৩. ভলতেয়ার (১৬৯৪-১৭৭৮) – বিখ্যাত ফরাসি চিন্তাবিদ
৫৪. জঁ-জাক্ রুসো (১৭১২–১৭৭৮) – ফরাসি বিপ্লবের রূপকার
৫৫. লর্ড বায়রন (১৭৮৮–১৮২৪) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি
৫৬. ভিক্টর হুগো (১৮০২-১৮৮৫) – ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৭. ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন (১৮০৫–১৮৭৫) – যাঁকে বলা হয় রূপকথার জাদুকর
৫৮. চার্লস ডিকেন্স (১৮১২–১৮৭০) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৯. ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯-১৮৯২) – মার্কিন সাহিত্যের যুগ-প্রবর্তক কবি
৬০. লিয়েফ তলস্তোয় (১৮২৮–১৯১০) – বিশ্বের মহান সাহিত্যিকদের অন্যতম
৬১. জুল ভের্ন (১৮২৮–১৯০৫) – কল্পবিজ্ঞান কাহিনীর স্রষ্টা
৬২. মার্ক টোয়েন (১৮৩৫–১৯১০) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রসস্রষ্টা
৬৩. জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৫৬–১৯৫০) – যিনি প্রথম নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন
৬৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১) – শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনীষা, পৃথিবীর মহত্তম সাহিত্য-ব্যক্তিত্ব
৬৫. ম্যাক্সিম গোর্কি (১৮৬৮–১৯৩৬) – যাঁর সাহিত্যকর্মের প্রধান উপজীব্য গণমানুষের কথা
৬৬. হেলেন কেলার (১৮৮০-১৯৬৮) – যাঁর খ্যাতিকে নেপোলিয়নের সঙ্গে তুলনা করা হতো
৬৭. আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (১৮৯৮–১৯৬১) – জীবনবাদী মার্কিন কথাসাহিত্যিক
৬৮. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯–১৯৭৬) – বাংলার বিদ্রোহী কবি
৬৯. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২–১৭৯৯) – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৭০. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১) – ইতিহাসের কিংবদন্তির মহানায়ক
৭১. জুসেপ্পে গারিবলদি (১৮০৭–১৮৮২) – ইতালির জনক বলে যাঁর খ্যাতি
৭২. আব্রাহাম লিংকন (১৮০৯-১৮৬৫) – যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্রীতদাসপ্রথা রহিত করেছিলেন
৭৩. অটো ফন বিসমার্ক (১৮১৫–১৮৯৮) – জার্মান সাম্রাজ্যের স্থপতি
৭৪. মহাত্মা গান্ধি (১৮৬৯–১৯৪৮) – ‘সবকো সুমতি দে ভগবান’
৭৫. কমরেড লেনিন (১৮৭০–১৯২৪) – বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা
৭৬. উইনস্টন চার্চিল (১৮৭৪–১৯৬৫) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ডাকসাইটে প্রধানমন্ত্রী
৭৭. জোসেফ স্ট্যালিন (১৮৭৯–১৯৫৩) – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়েনের ‘লৌহমানব’
৭৮. কামাল আতাতুর্ক (১৮৮১–১৯৩৮) – নব্য-তুরস্কের জনক
৭৯. ডি ভ্যালেরা (১৮৮২-১৯৭৫) – আয়ারল্যান্ডের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৮০. জওহরলাল নেহরু (১৮৮৯-১৯৬৪) – ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
৮১. আইসেনহাওয়ার (১৮৯০-১৯৬৯) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক
৮২. শার্ল দ্য গল (১৮৯০-১৯৭০) – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা
৮৩. হো-চি-মিন (১৮৯০-১৯৬৯) – ভিয়েতনামের মুক্তিদাতা পুরুষ
৮৪. মার্শাল টিটো (১৮৯২–১৯৮০) – জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা
৮৫. মাও-সে-তুং (১৮৯৫–১৯৭৬) – চীন সাধারণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা
৮৬. সুভাষচন্দ্র বসু (১৮৯৭–১৯৪৫) – ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’
৮৭. জন এফ কেনেডি (১৯১৭–১৯৬৩) – গুপ্তঘাতকের হাতে যাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছিল
৮৮. ইন্দিরা গান্ধি (১৯১৭–১৯৮৪) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
৮৯. নেলসন ম্যান্ডেলা (১৯১৮) – দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তিদাতা পুরুষ
৯০. শেখ মুজিবর রহমান (১৯২০–১৯৭৫) – বাংলাদেশের জাতির জনক
৯১. প্যাট্রিস লুমুম্বা (১৯২৫-১৯৬১) – কঙ্গোর মুক্তিদাতা পুরুষ
৯২. মার্কো পোলো (১২৫৬–১৩২৩) – দুঃসাহসিক অভিযাত্রী
৯৩. ক্রিস্টোফার কলম্বাস (আনু. ১৪৪৬-১৫০৬) – আমেরিকার আবিষ্কারক
৯৪. ডেভিড লিভিংস্টোন (১৮১৩-১৮৭৩) – আফ্রিকার আবিষ্কারক
৯৫. উইলিয়াম জোন্স (১৭৪৬–১৭৯৪) – এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৬. ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (১৮২০–১৯১০) – আধুনিক ‘নার্সিং’ বৃত্তির অগ্রপথিক
৯৭. হেনরি ডুনান্ট (১৮২৮–১৯১০) – রেডক্রস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৮. ব্যাডেন পাওয়েল (১৮৫৭–১৯৪১) – বয়স্কাউট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা
৯৯. মাদার তেরেসা (১৯১০–১৯৯৭) – প্রেম, করুণা ও ধর্মের মূর্ত প্রতিমা
১০০. অ্যাডাম স্মিথ (১৭২৩–১৭৯০) – রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিজ্ঞানের জনক

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন