কমরেড লেনিন (১৮৭০–১৯২৪) – বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা

ভবেশ রায়

রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক দল নামে ১৮৮১ সালে একটি বিপ্লবী দল গড়ে উঠেছিল। এই দলের উদ্দেশ্য ছিল পৃথিবীর সব দেশের ধনীদের হাত থেকে দেশশাসনের ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে কৃষক ও শ্রমিকদের প্রভুত্ব কায়েম করা। দেশের কোনো লোক খুব ধনী হতে পারবে না, একজন লোকও গরিব থাকবে না, সকলেই উপার্জন করার, লেখাপড়া শেখার ও সুখে-শান্তিতে বাস করার সুযোগ পাবে। সমাজের সব লোকের মঙ্গলের জন্য এই দল কাজ করবে বলেই এর নাম হয়েছিল সমাজতান্ত্রিক দল।

এই সমাজতান্ত্রিক দলের সবচেয়ে বড় নেতা ছিলেন কমরেড লেনিন। লেনিনের প্রকৃত নাম ভ্লাদিমির ইলিচ উলিয়ানভ (Vladimir Ilyich Ulyanov)। কমরেড লেনিনের নেতৃত্বেই রাশিয়ায় সংঘঠিত হয় ঐতিহাসিক বিপ্লব এবং সেখানে অত্যাচারী জার শাসনকে উৎখাত করে প্রতিষ্ঠিত হয় সমাজতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা।

কমরেড লেনিলের জন্ম ১৮৭০ সালের ২২ এপ্রিল ভলগা নদীর তীরে অবস্থিত সিমবির্স্ক শহরে। পরে লেনিনের সম্মানে এই শহরটির নতুন নাম দেয়া হয় উলিয়ানভস্ক।

এক সাধারণ ঘরেই জন্ম হয়েছিল লেনিনের। লেনিনের বাবা ইলিয়া নিকোলায়েভিচ ছিলেন সিমবির্স্ক শহরের একজন স্কুল পরিদর্শক।

লেনিনের মা মারিয়া আলেক্সান্দ্রভনা ছিলেন একজন চিকিৎসকের মেয়ে। তিনি একজন সংগীত আনুরাগিণী ছিলেন। ফরাসি, জার্মান এবং ইংরেজি ভাষাও তিনি জানতেন। তিনি ছিলেন প্রকৃতপক্ষে একজন সুগৃহিণী এবং আদর্শ মা বলতে যা বোঝায়, তাই।

এমন একটি পারিবারিক পরিবেশেই বড় হয়ে ওঠেন লেনিন। লেনিন ছিলেন বাবা- মায়ের তৃতীয় সন্তান। হই-হুল্লোড়ে ওস্তাদ এক দুরন্ত ছেলে। সদাচঞ্চল, হাল্কা-পাতলা গড়নের বাদামি রঙের চোখ দুটো নিয়ে সারা দিন ঘুরে বেড়াতেন বাড়ির সর্বত্র।

তাঁর মায়ের জবানি থেকে জানা যায়, শিশুকালে কোনো খেলনা পেলেই তা ভেঙে ফেলার বাতিক ছিল তাঁর। পাঁচ বছর বয়সে মায়ের তত্ত্বাবধানেই লেখাপড়া শুরু হয় লেনিনের। তাঁর মেধা ছিল অত্যন্ত প্রখর। একেবারে শিশুকালেই অনেক বড় বড় কবিতাও মুখস্থ করে ফেলতে পারতেন তিনি অনায়াসে।

এ ছাড়া বাল্যকাল থেকে তিনি মিথ্যে কথাকেও অত্যন্ত ঘৃণা করতেন। তাঁর এই মিথ্যের প্রতি বিতৃষ্ণা নিয়ে একটি চমৎকার গল্পও প্রচলিত আছে। একবার তিনি মায়ের সঙ্গে গিয়েছিলেন তাঁদেরই এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে। সেই বাড়িতে গিয়ে তিনি নিজের অনিচ্ছায় একটি দামি কাচের কুঁজো ভেঙে ফেলেছিলেন। কেউ দেখেনি ওটা কে ভেঙেছে। তারপর বড়রা এসে যখন জিগ্যেস করলেন সবাইকে, ওটা কে ভেঙেছে, তখন সব ছেলেমেয়েই ‘আমি না’ ‘আমি না’ বলে চিৎকার করে উঠল। তখন লেনিনও তাদের সাথে ‘আমি না’ বলতে বাধ্য হন।

কিন্তু বাড়িতে ফিরে এসে এই মিথ্যে কথা বলার যন্ত্রণা তিনি ভুলতে পারলেন না। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলেন। মা জিগ্যেস করলে তিনি কাঁদতে কাঁদতে বললেন, আমি তখন সত্যি কথা বলতে পারিনি মা। কাচের কুঁজোটা আসলে আমিই ভেঙেছিলাম। মা ছেলেকে বুঝিয়ে শান্ত করলেন। কিন্তু এর থেকেই প্রমাণিত হয়, তিনি মিথ্যেকে কতখানি ঘৃণা করতেন।

নয় বছর বয়সে লেনিন প্রথম স্কুলে ভর্তি হন। আগেই বলা হয়েছে তিনি ছিলেন খুবই মেধাবী। সবচেয়ে বড় কথা হলো, বাল্যকাল থেকেই তিনি যা কিছুই করতেন, অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে করতেন। কাজ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলার ব্যাপারেও ছিল তাঁর প্রচণ্ড আগ্রহ।

তারপর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যখন স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে তিনি বেরিয়ে আসেন, তখন তাঁর মধ্যে গুণটি তাঁর চরিত্রের এক বিশেষ লক্ষণ হিসেবে দেখা দেয়। লেনিন যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, তখন জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডারকে হত্যা করার ষড়যন্ত্রে লেনিনের বড় ভাই জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হন এবং তাঁর ফাঁসি হয়। তা ছাড়া আরও অনেকে এই অভিযোগে নানাভাবে দণ্ডিত ও নিগৃহীত হয়। এই ঘটনাই লেনিনের মনে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি করে। তাঁর মন সেই থেকেই জার সরকারের প্রতি বিষিয়ে ওঠে 1 তিনি বিপ্লবী দলে যোগদান করেন।

লেনিনের বড় ভাইকে যখন ফাঁসি দেওয়া হয়, তখন লেনিন কাজান বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনশাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করছিলেন।

কিন্তু ভাইয়ের মৃত্যুতে তাঁর মন প্রচণ্ড রকমে ভেঙে পড়ে। তিনি কাজান বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা ছেড়ে দেন। পরে ১৮৯০ সালে তিনি সেন্ট পিটার্সবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিরাগত ছাত্র হিসেবে আইন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেন।

আইন পড়ার সময় থেকেই তিনি মার্কসবাদের ওপর পড়াশোনা শুরু করেন। কার্ল মার্কসের সমস্ত রচনা পড়তে থাকেন এবং বিপ্লবীদলে যোগদান করেন।

আইন পাস করে এসে ২৩ বছর বয়সে তিনি বারে যোগদানও করেছিলেন। কিন্তু ওকালতি ব্যবসা তাঁর হল না। সব ছেড়ে দিয়ে তিনি সার্বিকভাবে জড়িয়ে পড়লেন বিপ্লবী সংগঠনের সঙ্গে। তিনি নাম লেখালেন মার্কসবাদী গোপন সংগঠন সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটসদের দলে। শুধু দলে যোগ দেওয়া নয়, অচিরেই তিনি দলের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা হয়ে উঠলেন।

লেনিনদের পরিবারের প্রতি আগে থেকেই পুলিশের নজর ছিল। তাঁর বড় ভাই ছিলেন জারশাসন বিরোধী সংগঠনের সদস্য। এবং সেই পরিবারেরই লেনিন নামের এই তুখোড় ছেলেটি কী করছে, কোথায় কোথায় যাচ্ছে, তার জন্যও পুলিশ লেগে ছিল তাঁর পেছনে।

এই গোপন সংগঠন থেকে ‘মেমোরিস’ (Memories) নামে একটি পুস্তিকা বিতরণ করা হতো। এই পুস্তিকা বিতরণের সার্বিক দায়িত্ব ছিল লেনিনের ওপর

তাঁদের সংগঠনের নিয়মিত বৈঠক হতো কোনো গোপন আস্তানায়। এখানেই সমাজতান্ত্রিক আদর্শ সম্পর্কে তাত্ত্বিক ব্যাখ্যার পাশাপাশি দলটির ভবিষ্যৎ কার্যক্রম এবং দেশে একটি সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব ঘটনোর বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হতো। এই গোপন বৈঠকের নাম ছিল ‘প্যানকেক টিস’ (Pancake Teas)।

পুলিশের চোখকে ফাঁকি দেওয়ার জন্য এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হতো একেক সময় একেক স্থানে অত্যন্ত সংগোপনে।

এইসব গোপন বৈঠকেই লেলিন তাঁর দলের সদস্যদের সমাজতন্ত্র সম্পর্কে শিক্ষা দিতেন। তাঁদের কী করণীয় তা বুঝিয়ে দিতেন। কিন্তু পুলিশের চোখ এড়িয়ে থাকা তাঁর পক্ষে বেশিদিন সম্ভব হলো না।

পুলিশের হাত থেকে আত্মরক্ষা করার জন্য তিনি দেশ থেকে পালিয়ে প্রথমে ১৮৯৫ সালে যান বার্লিনে। সেখানে তিনি মূলত গিয়েছিলেন চিকিৎসার জন্য। অসুখ ভালো হয়ে যাওয়ার পর তিনি বার্লিনেই শুরু করেন তাঁর সমাজতান্ত্রিক কর্মতৎপরতা। গড়ে তোলেন সংগঠন। সেখান থেকে যান জেনেভায়। জেনেভায় গিয়েও তিনি গঠন করেন একটি সংগঠন। যার নাম ছিল ‘রাশিয়ান সোশ্যাল ডেমোক্র্যাসি’ (Russian Social Democracy)।

এর কিছুদিন পর তিনি আবার ফিরে আসেন রাশিয়াতে। তখনও পুলিশ তাঁর পেছনে লেগে ছিল। দেশে আসার পরপরই তিনি ধরা পড়েন পুলিশের হাতে।

তার ফলেই সাতাশ বছর বয়সে তিনি তিন বছরের জন্য সাইবেরিয়ায় নির্বাসিত হলেন। এখানে নির্বাসিত থাকার সময়েই তিনি একটি গ্রন্থ প্রণয়ন করেছিলেন—’দি ডেভেলপমেন্ট অব ক্যাপিটালিজম ইন রাশিয়া’ (The Development of Capitalism in Russia)। এরপর ১৮৯৭ সালে তিনি আরেকটি গ্রন্থ রচনা করেন। নাম ছিল ‘দি হিস্টোরি অব ট্রেড ইউনিয়নিজম’ (The History of Trade Unionism )।

তিন বছর পর সাইবেরিয়া থেকে মুক্তিলাভের পর তিনি আবার চলে যান সুইজারল্যান্ডে। ১৯১৭ সালের বিপ্লব পর্যন্ত অধিকাংশ সময় তিনি সেখানেই কাটান। মাঝখানে অবশ্য একবার ১৯০৫ সালে তিনি বিপ্লবের সময় কিছুদিনের জন্য রাশিয়ায় এসেছিলেন।

প্রবাসে থাকাকালীন লেনিন ‘ইসক্রা’ নামে একটি পত্রিকা বের করতেন।

এর পরেই ঘটে ১৯১৭ সালের মার্চ মাসে সেই ঐতিহাসিক ঘটনা। এই সময় সেন্ট পিটার্সবার্গে এক বিরাট ধর্মঘট হয়। সারা দেশ জার সরকারের বিরুদ্ধে নেমে যায় আন্দোলনে। এই ধর্মঘট ও বিপ্লবের নেতৃত্ব দিচ্ছিল সমাজতান্ত্রিক দল। কিন্তু রাশিয়ার ভেতরে যাঁরা নেতা ছিলেন, তাঁদের পক্ষে এত বড় বিপ্লব সামাল দেওয়া সম্ভব ছিল না।

লেনিন তখন সুইজারল্যান্ডের জুরিখে নির্বাসিতের জীবনযাপন করছিলেন। খবর পেয়ে তিনি দ্রুত চলে এলেন রাশিয়ায়। সমাজতন্ত্রীরাও উপযুক্ত নেতা পেয়ে এবার আরও শক্তিশালী হয়ে উঠল

লেনিন রাশিয়ায় এসে আগে সবকিছু ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলেন। তারপর গুছিয়ে নিলেন নিজের দল। সংগ্রহ করা হলো গোলাবারুদ। তার পরই ১৯১৭ সালের ৭ নভেম্বর বিপ্লবীরা রাজধানী সেন্ট পিটার্সবার্গ দখল করে ফেলল। সৈন্যরাও বিপ্লবীদের সাথে যোগ দিল। এই বিপ্লব শুধু রাজধানী নয়, ছড়িয়ে পড়ল সারা দেশে।

লেনিন ইতিমধ্যে এই মর্মে ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, দেশের সমস্ত জমি হচ্ছে কৃষকদের।

লেনিন এবার যুদ্ধ বন্ধ করার দিকে মনোযোগ দিলেন। তিনি তাঁর প্রধান সহকারী ট্রটস্কিকে পাঠিয়ে দিলেন জার্মানির সাথে সন্ধি করতে। কিন্তু গণতান্ত্রিক দেশ ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স তবু ষড়যন্ত্র করে রাশিয়ার গোলযোগ সৃষ্টির চেষ্টা করে যেতে লাগল।

এবারও ট্রটস্কি চার লাখ লালফৌজের সাহায্যে দমন করলেন প্রতিবিপ্লব। ১৯১৭ সালের নভেম্বর মাসে বিপ্লব আরম্ভ হওয়ার পর তার অবসান হয় ১৯২০ সালে। বিপ্লবীরা রাশিয়ায় সর্বশেষ জার দ্বিতীয় নিকোলাসকে ১৯১৮ সালের ১৬ জুলাই সপরিবারে হত্যা করে। এইভাবে সমূলে উচ্ছেদ করা হলো জারের বাংশধরদের।

বিপ্লবের অবসান হওয়ার পর ১৯২২ সালে রাশিয়ায় এক নতুন ধরনের সরকার গঠিত হলো। লেনিন হলেন এই সরকারের প্রধান। নিয়ম হলো, এখন থেকে আর কেউ পৈতৃক সম্পত্তির ওপর বসে খেতে পারবে না। সবাইকে খেটে খেতে হবে।

এই বিপ্লব চলাকালীনই ১৯১৮ সালে লেনিনের ঘাড়ে একটি গুলি লাগে। তিনি তখন প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন বটে, কিন্তু সম্পূর্ণ সেরে উঠলেন না। তবু এই অসুস্থ শরীর নিয়েই তিনি আরও ছয় বছর কাজ করে যান। ১৯২১ সাল থেকে তিনি পুরোপুরি দেশগঠনমূলক কাজে হাত দেন। কিন্তু কাজ শেষ করে যেতে পারেননি। ১৯২৩ সালে তাঁর শরীরের ডানদিক পক্ষাঘাতে অবশ হয়ে যায় তাঁর কথা বলার শক্তি লোপ পেয়ে যায়। অবশেষে ১৯২৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পৃথিবীতে আজ পর্যন্ত যত বিপ্লবী নেতা জন্মগ্রহণ করেছেন, তাঁদের সাথে লেনিনের নামও চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

সকল অধ্যায়

১. হযরত মুহাম্মদ (দঃ) (৫৭০-৬৩২) – সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী
২. জরথুশত্র (৬২৮-৫৫১ খ্রি. পূ.) – পারশি ধর্মের প্রবর্তক
৩. বর্ধমান মহাবীর (৫৯৯–৫২৭ খ্রি. পূ.) – জৈন দর্শন ও ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা
৪. গৌতম বুদ্ধ (৫৬৩–৪৮৩ খ্রি. পূ.) – বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক
৫. কনফুসিয়াস (৫৫১–৪৭৯ খ্রি. পূ.) – চীনের প্রাচীনতম ধর্মমতবাদের প্রবর্তক
৬. সক্রেটিস (আনু. ৪৬৯–৩৯৯ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্রের আদিজনক
৭. প্লেটো (৪২৮–৩৪৭ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্র যাঁর হাতে পেয়েছিল পূর্নাঙ্গরূপ
৮. ডায়োজিনিস (৪১২–৩২২ খ্রি. পূ.) – একনিষ্ঠ জ্ঞান সাধক
৯. অ্যারিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খ্রি. পূ.) – যুক্তিশাস্ত্রের জনক
১০. যিশু খ্রিস্ট (আনু. ৬ খ্রি. পূ.–আনু. ২৯ খ্রি.) – খ্রিস্টানধর্মের প্রবর্তক
১১. অতীশ দীপঙ্কর (৯৮২–১০৫৩) – জ্ঞানসাধক বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক
১২. গুরু নানক (১৪৬৯–১৫৩৮) – শিখ ধর্মমতের প্রবর্তক
১৩. মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬) – ধর্মের সংস্কারক এবং ‘প্রটেস্টানিজম’ মতবাদের স্রষ্টা
১৪. মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩) – বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তক
১৫. রামমোহন রায় (১৭৭২–১৮৩৩) – ভারতবর্ষে নবযুগের প্রবর্তক
১৬. রামকৃষ্ণ পরমহংস (১৮৩৬–১৮৮৬) – ‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আমি ঈশ্বরকে দর্শন করেছি’
১৭. বারট্রান্ড রাসেল (১৮৭২–১৯৭০ ) – যুদ্ধ-বিরোধী ও মানবতাবাদী দার্শনিক
১৮. থ্যালিস (আনু. ৬২৪–৫৬৫ খ্রি. পূ.) – বিজ্ঞানশাস্ত্রের আদিপুরুষ
১৯. পিথাগোরাস (আনু. ৫৮২–৫০৭ খ্রি. পূ.) – তিনি বলেছিলেন—পৃথিবী গোলাকার
২০. হিপোক্র্যাটিস (আনু: ৪৬০–৩৭০ খ্রি. পূ.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আদিজনক
২১. আর্কিমিডিস (২৮৭–২১২ খ্রি. পূ.) – ঊর্ধ্বমুখী বল সূত্রের আবিষ্কারক
২২. ক্লডিয়াস টলেমি (১০০–১৮০ খ্রি.) – জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রথম কোষগ্রন্থ প্রণেতা
২৩. ক্লডিয়াস গ্যালেন (১৩১–২০১ খ্রি.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আধুনিক পদ্ধতির আদি জনক
২৪. ইবনে সিনা (৯৮০–১০৩৭) – জ্ঞানসাধনায় কাটিয়েছিলেন সমগ্র জীবন
২৫. কোপারনিকাস (১৪৭৩–১৫৪৩) – আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্ৰবক্তা
২৬. জিওর্দানো ব্রুনো (আনু. ১৫৪৮–১৬০০ ) – সত্যপ্রচারের অপরাধে যাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল
২৭. গ্যালিলিও গ্যালিলি (১৫৬৪-১৬৪২) – যাঁর গাণিতিক পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি
২৮. লিওয়েন হুক (১৬৩২–১৭৩৩) – মুদি দোকানদার থেকে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী
২৯. আইজাক নিউটন (১৬৪২–১৭২৭) – মাধ্যাকর্ষন শক্তির আবিষ্কারক
৩০. রিচার্ড আর্করাইট (১৭৩২–১৭৯২) – আধুনিক বস্ত্রশিল্পে বৈপ্লবিক ধারা প্রবর্তক
৩১. উইলিয়াম হার্শেল (১৭৩৮–১৮২২) – ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কারক
৩২. লরেঁ লাভোয়সিয়ের (১৭৪৩–১৭৯৪) – রসায়নশাস্ত্রের জনক
৩৩. মাইকেল ফ্যারাডে (১৭৯১-১৮৬৭) – তাড়িত-চুম্বক বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা
৩৪. চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) – প্রাণিজগতের বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যাদাতা
৩৫. লুই পাস্তুর (১৮২২–১৮৯৫) – জীবাণু আর জলাতঙ্ক রোগ প্রতিষেধকের আবিষ্কারক
৩৬. আলফ্রেড নোবেল (১৮৩৩–১৮৯৬) – যাঁর নামে দেয়া হয় নোবেল পুরস্কার
৩৭. আলভা এডিসন (১৮৪৭–১৯৩১) – সর্বাধিক আবিষ্কারের জনক
৩৮. জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৯–১৯৩৭) – যিনি বলেছিলেন গাছেরও প্রাণ আছে
৩৯. মাদাম কুরি (১৮৬৭–১৯৩৪) – সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহিলা বিজ্ঞানী
৪০. মার্কোনি (১৮৭৪–১৯৩৭) – বেতারযন্ত্রের আবিষ্কারক
৪১. আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯–১৯৫৫) – আপেক্ষিক তত্ত্বের জনক
৪২. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১–১৯৫৫) – পেনিসিলিনের আবিষ্কারক
৪৩. হোমার (আনু. ৭০০-? খ্রি. পূ.) – বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দুটি মহাকাব্যের রচয়িতা
৪৪. ঈশপ (আ. কা. ৬২০–৫৬০ খ্রি. পূ.) – কালজয়ী নীতিগল্পকার
৪৫. সোফোক্লেস (আনু. ৪৯৫-৪০৬ খ্রি. পূ.) – গ্রিক ট্র্যাজেডি নাট্যধারার রূপকার
৪৬. হেরোডোটাস (আনু. ৪৮৫–৪২৫ খ্রি. পূ.) – ইতিহাসশাস্ত্রের জনক
৪৭. অ্যারিস্টোফানিস (আনু. ৪৪৪–৩৮৫ খ্রি. পূ.) – যাঁর সাহিত্যকর্মে আর্তমানবতার কথা প্রতিফলিত
৪৮. মহাকবি কালিদাস (আনু. ৫৭০-৬৫০ খ্রি.) – সংস্কৃতি সাহিত্যের অমর কবি
৪৯. লেওনার্দো দা ভিঞ্চি (১৪৫২–১৫১৯) – সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী
৫০. মিকেলাঞ্জেলো (১৪৭৫–১৫৬৪) – পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাস্কর শিল্পী
৫১. তানসেন (১৫০৬–১৫৮৫) – কিংবদন্তির গায়ক
৫২. শেকসপিয়ার (১৫৬৪-১৬১৬) – বিশ্বসাহিত্যের কালজয়ী নাট্যকার
৫৩. ভলতেয়ার (১৬৯৪-১৭৭৮) – বিখ্যাত ফরাসি চিন্তাবিদ
৫৪. জঁ-জাক্ রুসো (১৭১২–১৭৭৮) – ফরাসি বিপ্লবের রূপকার
৫৫. লর্ড বায়রন (১৭৮৮–১৮২৪) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি
৫৬. ভিক্টর হুগো (১৮০২-১৮৮৫) – ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৭. ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন (১৮০৫–১৮৭৫) – যাঁকে বলা হয় রূপকথার জাদুকর
৫৮. চার্লস ডিকেন্স (১৮১২–১৮৭০) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৯. ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯-১৮৯২) – মার্কিন সাহিত্যের যুগ-প্রবর্তক কবি
৬০. লিয়েফ তলস্তোয় (১৮২৮–১৯১০) – বিশ্বের মহান সাহিত্যিকদের অন্যতম
৬১. জুল ভের্ন (১৮২৮–১৯০৫) – কল্পবিজ্ঞান কাহিনীর স্রষ্টা
৬২. মার্ক টোয়েন (১৮৩৫–১৯১০) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রসস্রষ্টা
৬৩. জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৫৬–১৯৫০) – যিনি প্রথম নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন
৬৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১) – শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনীষা, পৃথিবীর মহত্তম সাহিত্য-ব্যক্তিত্ব
৬৫. ম্যাক্সিম গোর্কি (১৮৬৮–১৯৩৬) – যাঁর সাহিত্যকর্মের প্রধান উপজীব্য গণমানুষের কথা
৬৬. হেলেন কেলার (১৮৮০-১৯৬৮) – যাঁর খ্যাতিকে নেপোলিয়নের সঙ্গে তুলনা করা হতো
৬৭. আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (১৮৯৮–১৯৬১) – জীবনবাদী মার্কিন কথাসাহিত্যিক
৬৮. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯–১৯৭৬) – বাংলার বিদ্রোহী কবি
৬৯. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২–১৭৯৯) – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৭০. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১) – ইতিহাসের কিংবদন্তির মহানায়ক
৭১. জুসেপ্পে গারিবলদি (১৮০৭–১৮৮২) – ইতালির জনক বলে যাঁর খ্যাতি
৭২. আব্রাহাম লিংকন (১৮০৯-১৮৬৫) – যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্রীতদাসপ্রথা রহিত করেছিলেন
৭৩. অটো ফন বিসমার্ক (১৮১৫–১৮৯৮) – জার্মান সাম্রাজ্যের স্থপতি
৭৪. মহাত্মা গান্ধি (১৮৬৯–১৯৪৮) – ‘সবকো সুমতি দে ভগবান’
৭৫. কমরেড লেনিন (১৮৭০–১৯২৪) – বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা
৭৬. উইনস্টন চার্চিল (১৮৭৪–১৯৬৫) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ডাকসাইটে প্রধানমন্ত্রী
৭৭. জোসেফ স্ট্যালিন (১৮৭৯–১৯৫৩) – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়েনের ‘লৌহমানব’
৭৮. কামাল আতাতুর্ক (১৮৮১–১৯৩৮) – নব্য-তুরস্কের জনক
৭৯. ডি ভ্যালেরা (১৮৮২-১৯৭৫) – আয়ারল্যান্ডের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৮০. জওহরলাল নেহরু (১৮৮৯-১৯৬৪) – ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
৮১. আইসেনহাওয়ার (১৮৯০-১৯৬৯) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক
৮২. শার্ল দ্য গল (১৮৯০-১৯৭০) – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা
৮৩. হো-চি-মিন (১৮৯০-১৯৬৯) – ভিয়েতনামের মুক্তিদাতা পুরুষ
৮৪. মার্শাল টিটো (১৮৯২–১৯৮০) – জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা
৮৫. মাও-সে-তুং (১৮৯৫–১৯৭৬) – চীন সাধারণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা
৮৬. সুভাষচন্দ্র বসু (১৮৯৭–১৯৪৫) – ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’
৮৭. জন এফ কেনেডি (১৯১৭–১৯৬৩) – গুপ্তঘাতকের হাতে যাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছিল
৮৮. ইন্দিরা গান্ধি (১৯১৭–১৯৮৪) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
৮৯. নেলসন ম্যান্ডেলা (১৯১৮) – দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তিদাতা পুরুষ
৯০. শেখ মুজিবর রহমান (১৯২০–১৯৭৫) – বাংলাদেশের জাতির জনক
৯১. প্যাট্রিস লুমুম্বা (১৯২৫-১৯৬১) – কঙ্গোর মুক্তিদাতা পুরুষ
৯২. মার্কো পোলো (১২৫৬–১৩২৩) – দুঃসাহসিক অভিযাত্রী
৯৩. ক্রিস্টোফার কলম্বাস (আনু. ১৪৪৬-১৫০৬) – আমেরিকার আবিষ্কারক
৯৪. ডেভিড লিভিংস্টোন (১৮১৩-১৮৭৩) – আফ্রিকার আবিষ্কারক
৯৫. উইলিয়াম জোন্স (১৭৪৬–১৭৯৪) – এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৬. ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (১৮২০–১৯১০) – আধুনিক ‘নার্সিং’ বৃত্তির অগ্রপথিক
৯৭. হেনরি ডুনান্ট (১৮২৮–১৯১০) – রেডক্রস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৮. ব্যাডেন পাওয়েল (১৮৫৭–১৯৪১) – বয়স্কাউট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা
৯৯. মাদার তেরেসা (১৯১০–১৯৯৭) – প্রেম, করুণা ও ধর্মের মূর্ত প্রতিমা
১০০. অ্যাডাম স্মিথ (১৭২৩–১৭৯০) – রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিজ্ঞানের জনক

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন