জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৯–১৯৩৭) – যিনি বলেছিলেন গাছেরও প্রাণ আছে

ভবেশ রায়

আজ থেকে প্রায় শতবর্ষ আগের অর্থাৎ ১৮৯৫ সালের ঘটনা। নেহায়েত তরুণ এক বিজ্ঞানী প্রদশন করলেন এক ভৌতিক কাণ্ড। সেই বিচিত্র কাণ্ড দেখার জন্য সেদিন প্রদর্শনস্থলটি ছিল লোকে লোকারণ্য।

তরুণ বিজ্ঞানী তাঁর সামনে বিচিত্র সব যন্ত্রপাতি নিয়ে ডায়াসে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা দিচ্ছেন। আর বক্তৃতা দিতে দিতেই ঘটিয়ে বসলেন তিনি সেই আশ্চর্য কাণ্ডটি।

একটি পিস্তলের গুলির আওয়াজ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেখান থেকে পুরো পঁচাত্তর ফুট দূরে তালাবদ্ধ ঘরে রাখা একটি বারুদের স্তূপে ঘটে গেল বিস্ফোরণ। পিস্তলের সেই গুলির আওয়াজের সাথে বদ্ধ ঘরের বারুদস্তূপের কোনোই যোগাযোগ ছিল না। তা হলে ব্যাপারটা ঘটল কেমন করে? উপস্থিত সকলের তো দু’চোখ ছানাবড়া। তাদের বিস্ময়ের সীমা নেই।

কিন্তু খানিক বাদেই সেই তরুণ বিজ্ঞানী নিজেই বুঝিয়ে দিলেন আসল ব্যাপারখানা কী!

বক্তৃতা মঞ্চে দাঁড়ানো তাঁর সামনে যে যন্ত্রটি রয়েছে, তার ভেতর থেকে বিদ্যুৎ তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়েই ঘটিয়েছে এই কাণ্ড। আর এই অদ্ভুত ব্যাপার স্যাপারের মধ্যেই লুকিয়ে ছিল মস্তবড় একটি বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের মূল—বিনা তারে বার্তা প্রেরণের সূত্র।

এই তত্ত্বের উদ্ভাবক বিজ্ঞানীই বাংলার গৌরব এবং শ্রেষ্ঠ বাঙালি বিজ্ঞানী স্যার জগদীশচন্দ্র বসু। তিনিই সর্বপ্রথম বিনাতারে সংকেত আদান-প্রদানের বৈজ্ঞানিক কৌশল উদ্ভাবন করেন। আর এর সাহায্যে তিনিই প্রথম দেড় কিলোমিটার দূর পর্যন্ত বিনা তারে বার্তা প্রেরণে সক্ষম হন।

কিন্তু ভারতীয়দের প্রতি তৎকলীন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সরকারের বৈষম্য মূলক আচরণের কারণে ও আর্থিক সাহায্যের অভাবে জগদীশ বসু তাঁর এই আবিষ্কারকে যথাসময়ে সহজে বিশ্বজনসমক্ষে তুলে ধরতে সক্ষম হননি। অথচ অন্যদিকে ইতালির বিজ্ঞানী মার্কনি সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে বিনা তারে বার্তা প্রেরণে সক্ষম হন। আর তাঁর কল্যানেই তিনি বেতারবার্তা আবিষ্কারের বিজয়মুকুট ছিনিয়ে নেন।

বাংলার এই কৃতীসন্তান ও বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসুর জন্ম পিতার কর্মস্থল ময়মনসিংহের ১৮৫৯ সালের ৩০ নভেম্বর। পিতা ভগবানচন্দ্র বসু ছিলেন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মচারি-ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট।

পিতার কর্মস্থল ফরিদপুরেই প্রাথমিক শিক্ষাজীবন শুরু হল জগদীশের। গ্রামের পড়া শেষ হলে কলকাতা এসে ভর্তি হন সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে। তারপর কৃতিত্বের সাথে এন্ট্রান্স পাস করে ভর্তি হন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে। তখন থেকেই ১৮৭৮ সালে এফ এ. এবং ১৮৮০ সালে বিজ্ঞান শাখায় বি. এ. পাস করেন।

তাঁর ইচ্ছা ছিল, তিনিও পিতার মতো সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দিয়ে বড় সরকারি চাকুর হবেন। কিন্তু পিতা তাঁকে চাকরিতে ঢুকতে দিলেন না। বিজ্ঞানে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য পাঠালেন বিলেতে। পিতার ইচ্ছে জগদীশ মস্ত বড় ডাক্তার হোক। কিন্তু তাঁর সেই ডাক্তারি পড়াও হলো না। অথচ চিকিৎশাস্ত্র অধ্যয়ন করার জন্যই লন্ডনে যাওয়া। সেখানকার মেডিক্যাল ইনস্টিটিউটে ভর্তিও হয়েছিলেন। পড়েওছিলেন একবছর। কিন্তু ম্যালেরিয়ায় স্বাস্থ্যভঙ্গের কারণে ডাক্তারি পড়া ছেড়ে দেন। এরপর তিনি ১৮৮১ সালে কেমব্রিজে ভর্তি হন বিজ্ঞান বিভাগে। পদার্থবিদ্যা, রসায়নশাস্ত্র এবং উদ্ভিদবিদ্যার প্রতি তাঁর ঝোঁক ছিল খুবই প্রবল। চার বছর পড়াশোনা করে জগদীশ বসু কেমব্রিজ থেকে বিজ্ঞানে ট্রাইপস লাভ করেন। তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও লাভ করেন বি. এস- সি. ডিগ্রি।

অধ্যয়ন শেষে স্বদেশে ফিরে এসে জগদীশের শুরু হয় বিরামবিহীন কর্মজীবন। ১৮৮৫ সালে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে বিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। কিন্তু এসময় প্রেসিডেন্সি কলেজে ভারতীয় ও ইংরেজ শিক্ষকদের মধ্যে বেতন-ভাতাদির ব্যাপারে প্রায় আকাশ-পাতাল বৈষম্য ছিল। যেমন, একই পদে একজন ইংরেজ যে বেতন পেতেন, একজন ভারতীয় অধ্যাপক তার তুলনায় পেতেন অনেক কম বেতন।

এই বৈষম্য জগদীশ খুবই পীড়িত করে। তিনি এর প্রতিবাদে সোচ্চার হন। কিন্তু তাতে ফল হলো না। ফলে তিনি শুরু করলেন এক অভিনব সত্যাগ্রহ। এই বৈষম্যের প্রতিবাদে কলেজ থেকে বেতন নেয়া বন্ধ করে দিলেন। এইভাবে দীর্ঘ তিন বছর সংগ্রাম করার পর ইংরেজ কর্তৃপক্ষ এই তেজস্বী তরুণ অধ্যাপকের কর্তব্যনিষ্ঠার কাছে নতি স্বীকারে বাধ্য হন। তিনি একসাথে তিন বছরের পুরো বেতন লাভ করেন ইংরেজ অধ্যাপকদের সমান হারে।

অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি গবেষণার কাজও চালিয়ে যেতে থাকেন। কিন্তু এই গবেষণার জন্য তিনি এক কপর্দকও সরকারি সাহায্য পাননি। প্রেসিডেন্সি কলেজেও তেমন উন্নত ধরনের কোনো বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ছিল না, ছিল না কোনো গবেষণাগার পর্যন্ত। তবুও এর মধ্যেই তাঁর গবেষণার কাজ চলতে থাকে। ১৮৯৪-৯৫ সালে তাঁর বিদ্যুৎ বিষয়ক মৌলিক গবেষণার বিবরণ বিলেতের রয়্যাল সোসাইটির জার্নালে প্রকাশিত হয়।

জগদীশ বসুর বিজ্ঞান গবেষণার বিষয়বস্তু কয়েকটি পর্যায়ে বিভক্ত। প্রথম পর্যায় পদার্থবিদ্যা বিষয়ক। এই সময়ই তিনি বিনা তারে বার্তা প্রেরণের যন্ত্র আবিষ্কার করেন, যদিও এই কৃতিত্ব তাঁর ভাগ্যে জোটেনি।

১৮৯৬ সালে তিনি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ও সম্মেলনে বক্তৃতা করার জন্য ইউরোপ গমন করেন। তিনি সেখানকার অনেক বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপকের পদ গ্রহণ করার আমন্ত্রণও লাভ করেন। কিন্তু দেশের মাটি ছেড়ে বিদেশে থাকতে তাঁর মন সায় দেয়নি। তাই তিনি সেসব লোভনীয় আমন্ত্রণ প্রতাখ্যান করেন। ফলে দেশে ফিরে আসেন ১৮৯৭ সালে।

দেশে ফিরে এসেই জগদীশ বসু তাঁর গবেষণারও দিক পরিবর্তন করেন। তিনি পদার্থবিজ্ঞান ছেড়ে মনোনিবেশ করেন উদ্ভিদবিজ্ঞানের প্রতি। এটা ছিল তাঁর বিজ্ঞান গবেষণার দ্বিতীয় পৰ্যায়।

তখন থেকেই তাঁর মনন-ক্ষমতা তীক্ষ্ণ এবং কল্পনাদৃষ্টি অন্তর্ভেদী হয়ে উঠতে শুরু করে। তিনি গবেষণাগত পর্যবেক্ষণের ভেতর দিয়ে এই প্রমাণ পান যে, সাড়া দেবার ক্ষমতা কেবল জীবের মধ্যেই আছে, আর কারও নেই, সেটা সত্যি নয়। তিনিই প্রথম অনুভব করেন, জীবের মতোই তথাকথিত জড়বস্তুও সাড়া দেয় এবং উদ্ভিদজীবনে এর ক্রিয়া অধিকতর পরিস্ফুট।

তিনি নিজের তৈরি যন্ত্রের সাহয্যে দেখালেন, আঘাতপ্রাপ্ত কিংবা উত্তেজিত জড়বস্তু, উদ্ভিদ এবং প্রাণীর স্পন্দনলিপি অবিকল একই রকমের। এর থেকে কী প্রমাণিত হয়? প্রামাণিত হয় যে, পৃথিবীর যাবতীয় প্রাণী, বৃক্ষলতা এবং চেতনাশূন্য পদার্থসমূহ পরস্পর বিচ্ছিন্ন ও আলাদা হলেও তারা এক অদৃশ্য বন্ধনে আবদ্ধ এবং একই নিয়মে পরিচালিত। বিশেষ করে বৃক্ষজীবন ও মানবজীবনের ওপর শক্তির ক্রিয়ার কোনো পার্থক্য নেই। এদের সকলের স্পন্দনলিপি একই।

তিনি নিজের আবিষ্কৃত যে যন্ত্রটির সাহায্যে উদ্ভিদের চেতনাশক্তি ধরতে সক্ষম হন তার নাম Resonant Recorder। এই যন্ত্রের সাহায্যেই বৃক্ষের বিবিধ স্পন্দন লিপিবদ্ধ করা হয় এবং উদ্ভিদটির বৃদ্ধির পরিমাণও মুহূর্তে নির্ণয় করা যায়। এতে উদ্ভিদের বৃদ্ধিকে কোটিগুণ বাড়িয়ে লিপিবদ্ধ করা হয়।

জগদীশচন্দ্র বসু যেসব উদ্ভিদ নিয়ে গবেষণা করেছিলেন সেগুলো হলো-

ক. Root — Carrot, Radish.

খ. Stem – Geranium, Vine.

গ. Leaf stalk – Horse Chestnut, turnip.

Cauli-flower, Celery, Eucharis lily.

ঘ. Flower stalk-Arum lily.

ঙ. Fruit – Egg-plant.

জগদীশচন্দ্র তাঁর এই অত্যাশ্চর্য যন্ত্র সম্পর্কে বক্তৃতাদানের জন্যই আরও তিনবার যথাক্রমে ১৯০৭, ১৯১৪ এবং ১৯২৮ সালে বিদেশ ভ্রমণ করেন।

তিনি চাকরি থেকে অবসর নেন ১৯১৫ সালে। এর দু বছর পর অর্থাৎ ১৯১৭ সালে তিনি তাঁর ৫৯তম জন্মদিবসে সারা জীবনের সঞ্চিত অর্থ দিয়ে কোলকাতায় প্রতিষ্ঠা করেন একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান। এটাই আজকের ‘বসু বিজ্ঞান মন্দির”।

১৯২০ সালে তিনি ইংল্যান্ডের রয়্যাল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হন। ১৯২৭ সালে নির্বাচিত হন ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের সভাপতি। ১৯২৮ সালে ভিয়েনার অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স-এর বৈদেশিক সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯৩৫ সালে তাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয় থেকে ডি. এস-সি. (D. Sc.) ডিগ্রি প্রদান

করা হয়।

তাঁর এই অত্যাশ্চর্য আবিষ্কার দেখে বিজ্ঞানী আইনস্টাইন সশ্রদ্ধচিত্তে বলেছিলেন, “জগদীশচন্দ্রের প্রত্যেকটি আবিষ্কার বিজ্ঞানজগতে এক-একটি বিজয়স্তম্ভ।” মনীষী রম্যা রলার ভাষায়, “জগদীশচন্দ্র হলেন Revealer of a New World।” আর আমাদের বাংলা ভাষার কবি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ এই বিজ্ঞানতাপসকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বলছিলেন, “ভারতের কোন বৃদ্ধ-ঋষির তরুণ মূর্তি তুমি।”

জগদীশচন্দ্র শুধু যে একজন বিজ্ঞানী ছিলেন, তা-ই নয়, একান্ত সংগোপনে তাঁর মধ্যে লুকিয়ে ছিল একটি সুন্দর কবিমন, একটি লেখকসত্তাও। তাঁর বিজ্ঞান বিষয়ক বাংলা ভাষায় রচিত গ্রন্থ ‘অব্যক্ত’ বাংলা সাহিত্যেরও একটি বিশিষ্ট সংযোজন।

উল্লেখ্য, বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসুর সহধর্মিনী লেডি অবলা বসু (১৮৬৫-১৯৫১) এ-দেশের নারী জাগরণের অন্যতম অগ্রদূতী ছিলেন। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে তাঁরই একান্ত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় নারী শিক্ষা সমিতি। মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত তিনি কলকাতার ব্রাহ্ম বালিকা শিক্ষালয়ের সম্পাদিকার দায়িত্ব পালন করে যান।

এই মহান তাপস জগদীশচন্দ্রের মৃত্যু হয় ১৯৩৭ সালে ২৩ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের ছোটনাগপুরের গিরিডিতে।

সকল অধ্যায়

১. হযরত মুহাম্মদ (দঃ) (৫৭০-৬৩২) – সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী
২. জরথুশত্র (৬২৮-৫৫১ খ্রি. পূ.) – পারশি ধর্মের প্রবর্তক
৩. বর্ধমান মহাবীর (৫৯৯–৫২৭ খ্রি. পূ.) – জৈন দর্শন ও ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা
৪. গৌতম বুদ্ধ (৫৬৩–৪৮৩ খ্রি. পূ.) – বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক
৫. কনফুসিয়াস (৫৫১–৪৭৯ খ্রি. পূ.) – চীনের প্রাচীনতম ধর্মমতবাদের প্রবর্তক
৬. সক্রেটিস (আনু. ৪৬৯–৩৯৯ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্রের আদিজনক
৭. প্লেটো (৪২৮–৩৪৭ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্র যাঁর হাতে পেয়েছিল পূর্নাঙ্গরূপ
৮. ডায়োজিনিস (৪১২–৩২২ খ্রি. পূ.) – একনিষ্ঠ জ্ঞান সাধক
৯. অ্যারিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খ্রি. পূ.) – যুক্তিশাস্ত্রের জনক
১০. যিশু খ্রিস্ট (আনু. ৬ খ্রি. পূ.–আনু. ২৯ খ্রি.) – খ্রিস্টানধর্মের প্রবর্তক
১১. অতীশ দীপঙ্কর (৯৮২–১০৫৩) – জ্ঞানসাধক বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক
১২. গুরু নানক (১৪৬৯–১৫৩৮) – শিখ ধর্মমতের প্রবর্তক
১৩. মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬) – ধর্মের সংস্কারক এবং ‘প্রটেস্টানিজম’ মতবাদের স্রষ্টা
১৪. মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩) – বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তক
১৫. রামমোহন রায় (১৭৭২–১৮৩৩) – ভারতবর্ষে নবযুগের প্রবর্তক
১৬. রামকৃষ্ণ পরমহংস (১৮৩৬–১৮৮৬) – ‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আমি ঈশ্বরকে দর্শন করেছি’
১৭. বারট্রান্ড রাসেল (১৮৭২–১৯৭০ ) – যুদ্ধ-বিরোধী ও মানবতাবাদী দার্শনিক
১৮. থ্যালিস (আনু. ৬২৪–৫৬৫ খ্রি. পূ.) – বিজ্ঞানশাস্ত্রের আদিপুরুষ
১৯. পিথাগোরাস (আনু. ৫৮২–৫০৭ খ্রি. পূ.) – তিনি বলেছিলেন—পৃথিবী গোলাকার
২০. হিপোক্র্যাটিস (আনু: ৪৬০–৩৭০ খ্রি. পূ.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আদিজনক
২১. আর্কিমিডিস (২৮৭–২১২ খ্রি. পূ.) – ঊর্ধ্বমুখী বল সূত্রের আবিষ্কারক
২২. ক্লডিয়াস টলেমি (১০০–১৮০ খ্রি.) – জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রথম কোষগ্রন্থ প্রণেতা
২৩. ক্লডিয়াস গ্যালেন (১৩১–২০১ খ্রি.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আধুনিক পদ্ধতির আদি জনক
২৪. ইবনে সিনা (৯৮০–১০৩৭) – জ্ঞানসাধনায় কাটিয়েছিলেন সমগ্র জীবন
২৫. কোপারনিকাস (১৪৭৩–১৫৪৩) – আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্ৰবক্তা
২৬. জিওর্দানো ব্রুনো (আনু. ১৫৪৮–১৬০০ ) – সত্যপ্রচারের অপরাধে যাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল
২৭. গ্যালিলিও গ্যালিলি (১৫৬৪-১৬৪২) – যাঁর গাণিতিক পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি
২৮. লিওয়েন হুক (১৬৩২–১৭৩৩) – মুদি দোকানদার থেকে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী
২৯. আইজাক নিউটন (১৬৪২–১৭২৭) – মাধ্যাকর্ষন শক্তির আবিষ্কারক
৩০. রিচার্ড আর্করাইট (১৭৩২–১৭৯২) – আধুনিক বস্ত্রশিল্পে বৈপ্লবিক ধারা প্রবর্তক
৩১. উইলিয়াম হার্শেল (১৭৩৮–১৮২২) – ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কারক
৩২. লরেঁ লাভোয়সিয়ের (১৭৪৩–১৭৯৪) – রসায়নশাস্ত্রের জনক
৩৩. মাইকেল ফ্যারাডে (১৭৯১-১৮৬৭) – তাড়িত-চুম্বক বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা
৩৪. চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) – প্রাণিজগতের বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যাদাতা
৩৫. লুই পাস্তুর (১৮২২–১৮৯৫) – জীবাণু আর জলাতঙ্ক রোগ প্রতিষেধকের আবিষ্কারক
৩৬. আলফ্রেড নোবেল (১৮৩৩–১৮৯৬) – যাঁর নামে দেয়া হয় নোবেল পুরস্কার
৩৭. আলভা এডিসন (১৮৪৭–১৯৩১) – সর্বাধিক আবিষ্কারের জনক
৩৮. জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৯–১৯৩৭) – যিনি বলেছিলেন গাছেরও প্রাণ আছে
৩৯. মাদাম কুরি (১৮৬৭–১৯৩৪) – সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহিলা বিজ্ঞানী
৪০. মার্কোনি (১৮৭৪–১৯৩৭) – বেতারযন্ত্রের আবিষ্কারক
৪১. আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯–১৯৫৫) – আপেক্ষিক তত্ত্বের জনক
৪২. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১–১৯৫৫) – পেনিসিলিনের আবিষ্কারক
৪৩. হোমার (আনু. ৭০০-? খ্রি. পূ.) – বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দুটি মহাকাব্যের রচয়িতা
৪৪. ঈশপ (আ. কা. ৬২০–৫৬০ খ্রি. পূ.) – কালজয়ী নীতিগল্পকার
৪৫. সোফোক্লেস (আনু. ৪৯৫-৪০৬ খ্রি. পূ.) – গ্রিক ট্র্যাজেডি নাট্যধারার রূপকার
৪৬. হেরোডোটাস (আনু. ৪৮৫–৪২৫ খ্রি. পূ.) – ইতিহাসশাস্ত্রের জনক
৪৭. অ্যারিস্টোফানিস (আনু. ৪৪৪–৩৮৫ খ্রি. পূ.) – যাঁর সাহিত্যকর্মে আর্তমানবতার কথা প্রতিফলিত
৪৮. মহাকবি কালিদাস (আনু. ৫৭০-৬৫০ খ্রি.) – সংস্কৃতি সাহিত্যের অমর কবি
৪৯. লেওনার্দো দা ভিঞ্চি (১৪৫২–১৫১৯) – সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী
৫০. মিকেলাঞ্জেলো (১৪৭৫–১৫৬৪) – পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাস্কর শিল্পী
৫১. তানসেন (১৫০৬–১৫৮৫) – কিংবদন্তির গায়ক
৫২. শেকসপিয়ার (১৫৬৪-১৬১৬) – বিশ্বসাহিত্যের কালজয়ী নাট্যকার
৫৩. ভলতেয়ার (১৬৯৪-১৭৭৮) – বিখ্যাত ফরাসি চিন্তাবিদ
৫৪. জঁ-জাক্ রুসো (১৭১২–১৭৭৮) – ফরাসি বিপ্লবের রূপকার
৫৫. লর্ড বায়রন (১৭৮৮–১৮২৪) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি
৫৬. ভিক্টর হুগো (১৮০২-১৮৮৫) – ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৭. ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন (১৮০৫–১৮৭৫) – যাঁকে বলা হয় রূপকথার জাদুকর
৫৮. চার্লস ডিকেন্স (১৮১২–১৮৭০) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৯. ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯-১৮৯২) – মার্কিন সাহিত্যের যুগ-প্রবর্তক কবি
৬০. লিয়েফ তলস্তোয় (১৮২৮–১৯১০) – বিশ্বের মহান সাহিত্যিকদের অন্যতম
৬১. জুল ভের্ন (১৮২৮–১৯০৫) – কল্পবিজ্ঞান কাহিনীর স্রষ্টা
৬২. মার্ক টোয়েন (১৮৩৫–১৯১০) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রসস্রষ্টা
৬৩. জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৫৬–১৯৫০) – যিনি প্রথম নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন
৬৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১) – শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনীষা, পৃথিবীর মহত্তম সাহিত্য-ব্যক্তিত্ব
৬৫. ম্যাক্সিম গোর্কি (১৮৬৮–১৯৩৬) – যাঁর সাহিত্যকর্মের প্রধান উপজীব্য গণমানুষের কথা
৬৬. হেলেন কেলার (১৮৮০-১৯৬৮) – যাঁর খ্যাতিকে নেপোলিয়নের সঙ্গে তুলনা করা হতো
৬৭. আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (১৮৯৮–১৯৬১) – জীবনবাদী মার্কিন কথাসাহিত্যিক
৬৮. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯–১৯৭৬) – বাংলার বিদ্রোহী কবি
৬৯. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২–১৭৯৯) – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৭০. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১) – ইতিহাসের কিংবদন্তির মহানায়ক
৭১. জুসেপ্পে গারিবলদি (১৮০৭–১৮৮২) – ইতালির জনক বলে যাঁর খ্যাতি
৭২. আব্রাহাম লিংকন (১৮০৯-১৮৬৫) – যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্রীতদাসপ্রথা রহিত করেছিলেন
৭৩. অটো ফন বিসমার্ক (১৮১৫–১৮৯৮) – জার্মান সাম্রাজ্যের স্থপতি
৭৪. মহাত্মা গান্ধি (১৮৬৯–১৯৪৮) – ‘সবকো সুমতি দে ভগবান’
৭৫. কমরেড লেনিন (১৮৭০–১৯২৪) – বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা
৭৬. উইনস্টন চার্চিল (১৮৭৪–১৯৬৫) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ডাকসাইটে প্রধানমন্ত্রী
৭৭. জোসেফ স্ট্যালিন (১৮৭৯–১৯৫৩) – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়েনের ‘লৌহমানব’
৭৮. কামাল আতাতুর্ক (১৮৮১–১৯৩৮) – নব্য-তুরস্কের জনক
৭৯. ডি ভ্যালেরা (১৮৮২-১৯৭৫) – আয়ারল্যান্ডের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৮০. জওহরলাল নেহরু (১৮৮৯-১৯৬৪) – ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
৮১. আইসেনহাওয়ার (১৮৯০-১৯৬৯) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক
৮২. শার্ল দ্য গল (১৮৯০-১৯৭০) – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা
৮৩. হো-চি-মিন (১৮৯০-১৯৬৯) – ভিয়েতনামের মুক্তিদাতা পুরুষ
৮৪. মার্শাল টিটো (১৮৯২–১৯৮০) – জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা
৮৫. মাও-সে-তুং (১৮৯৫–১৯৭৬) – চীন সাধারণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা
৮৬. সুভাষচন্দ্র বসু (১৮৯৭–১৯৪৫) – ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’
৮৭. জন এফ কেনেডি (১৯১৭–১৯৬৩) – গুপ্তঘাতকের হাতে যাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছিল
৮৮. ইন্দিরা গান্ধি (১৯১৭–১৯৮৪) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
৮৯. নেলসন ম্যান্ডেলা (১৯১৮) – দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তিদাতা পুরুষ
৯০. শেখ মুজিবর রহমান (১৯২০–১৯৭৫) – বাংলাদেশের জাতির জনক
৯১. প্যাট্রিস লুমুম্বা (১৯২৫-১৯৬১) – কঙ্গোর মুক্তিদাতা পুরুষ
৯২. মার্কো পোলো (১২৫৬–১৩২৩) – দুঃসাহসিক অভিযাত্রী
৯৩. ক্রিস্টোফার কলম্বাস (আনু. ১৪৪৬-১৫০৬) – আমেরিকার আবিষ্কারক
৯৪. ডেভিড লিভিংস্টোন (১৮১৩-১৮৭৩) – আফ্রিকার আবিষ্কারক
৯৫. উইলিয়াম জোন্স (১৭৪৬–১৭৯৪) – এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৬. ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (১৮২০–১৯১০) – আধুনিক ‘নার্সিং’ বৃত্তির অগ্রপথিক
৯৭. হেনরি ডুনান্ট (১৮২৮–১৯১০) – রেডক্রস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৮. ব্যাডেন পাওয়েল (১৮৫৭–১৯৪১) – বয়স্কাউট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা
৯৯. মাদার তেরেসা (১৯১০–১৯৯৭) – প্রেম, করুণা ও ধর্মের মূর্ত প্রতিমা
১০০. অ্যাডাম স্মিথ (১৭২৩–১৭৯০) – রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিজ্ঞানের জনক

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন