আইসেনহাওয়ার (১৮৯০-১৯৬৯) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক

ভবেশ রায়

তিনি যে একদা মার্কিন প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন, সেটা তাঁর বড় পরিচয় নয়। তাঁর সে পরিচয় ঢাকা পড়ে গেছে। তিনি ইতিহাস খ্যাত হয়ে আছেন অন্য কারণে। অন্য ঐতিহাসিক কারণে।

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের কৃষিখামার থেকে উঠে আসা এক ছেলে, যিনি বাল্যকালে নিজেদের খামারবাড়িতে হাঁড়ি-বাসন ধুয়ে সাফ করতেন, মোষের দুধ দোহন করতেন, তিনিই ছিলেন দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় সমগ্র সেক্টরে মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল আইসেনহাওয়ার। প্রকৃত নাম ডোয়াইট ডেভিড আইসেনহাওয়ার (Dweight David Eisenhower)। বাল্যকালে বন্ধুরা তাঁকে ডাকত ‘আইক’ বলে।

দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় তাঁকে এত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল যে, ইতিহাসে তাঁর নজিরই খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাঁর কমান্ডের অধীনে এত বৃহৎ সামরিক বাহিনী ছিল যা নেপোলিয়ন, জুলিয়াস সিজার ও শার্লিমান-এর সম্মিলিত বাহিনীর চাইতেও বহু গুণে বড় ছিল। তিনি এমন এক বিশাল নৌবাহিনীর অধিনায়ক ছিলেন, যা নেলসন, হকিন্স, ড্রেক, জুয়ান, পার্ল, জোন্স, অ্যাডমিরাল ও ডিউকের সম্মিলিত নৌবহরের চেয়েও ছিল বিশাল।

এই মহাশক্তিধর সামরিক জেনারেলের জন্ম ১৮৯০ সালে যুক্তরাস্ট্রের টেকসাসে। আইসেনহাওয়ারের পিতামহ ছিলেন একজন পাদরি—ইউনাইটেড ক্রিশ্চিয়ান ব্রাদারহুড নামের একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের কর্মকর্তা। তাঁর বাবা-মাও ছিলেন এই সংঘেরই সদস্য- সদস্যা। তাঁরাও গোঁড়াপন্থি ধর্মপ্রচারক ছিলেন। তাই আইসেনহাওয়ার যখন ওয়েস্ট পয়েন্টে মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে ভর্তি হতে চাইলেন, তখন বাবা-মা বাধা দিলেন। কারণ, তাঁরা ছিলেন ইউনাইটেড ক্রিশ্চিয়ান ব্রাদারহুডের সদস্য। এই ধর্মসম্প্রদায়টি সব ধরনের যুদ্ধ এবং খুনখারাবির ঘোর বিরোধী ছিল। আর তাঁদের ছেলে হয়ে কিনা সে মানুষ-মারার বিদ্যা শিখতে যাবে? তাই তাঁরা ছেলেকে সোজা নিষেধ করে বসলেন।

কিন্তু আইসেনহাওয়ার ছিলেন তাঁর সংকল্পে অটল। তিনি বাবা-মায়ের নিষেধ ও শত উপদেশ সত্ত্বেও মত পরিবর্তন করলেন না। ভর্তি হলেন সামরিক অ্যাকাডেমিতেই মজার ব্যাপার হলো, তাঁর আসলে ভর্তি হবার ইচ্ছে ছিল অ্যানাপোলিস নেভাল অ্যাকাডেমিতে। কারণ, সুইডি হ্যাজলেট নামের তাঁর এক বন্ধু এই কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁর ইচ্ছে ছিল শেষোক্ত সামরিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারলে দুবন্ধু একত্রে থাকতে পারবেন। কিন্তু একটি হিসেবের ভুলের জন্য তাঁর এ কলেজে পড়া হল না।

তিনি ভেবেছিলেন, তাঁর দ্বাদশতম জন্মদিবস পালন করেও সেখানে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। কিন্তু জন্মদিনের পরে দেখা গেল তাঁর ভর্তি হওয়ার বয়স পার হয়ে গেছে। সুতরাং তিনি আর সেখানে ভর্তি হতে পারলেন না।

তিনি কেন পিতামাতার আদেশ অমান্য করেও সামরিক অ্যকাডেমিতে ভর্তি হয়েছিলেন, তারও একটি ইতিহাস আছে। ঘটনাটা তাঁর স্কুলে পড়ার সময়েই ঘটেছিল। তিনি টেকসাস রাজ্যের একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার অফিসে গিয়েছিলেন একবার এক বন্ধুর সঙ্গে। সেখানেই তিনি সম্পাদকের টেবিলের ওপর পেয়েছিলেন একটি বই। সেটা ছিল বিখ্যাত সমরবিদ হ্যানিবলের সংগ্রামবহুল একটা জীবনী। এই বীরপুরুষ হাতির পিঠে চড়ে আস্‌ পর্বতমালা অতিক্রম করেছিলেন এবং পনেরো বছর পর্যন্ত ইতালিয়ানদের সঙ্গে লড়াই করেছিলেন। বালক আইসেনহাওয়ার বইয়ের পাতা উল্টিয়েই হ্যানিবলের রোমাঞ্চকর সংগ্রামবহুল জীবনকাহিনীটি মন্ত্রমুগ্ধের মতো পড়ে ফেললেন এক নিশ্বাসে।

শুধু তা-ই নয়, তিনি এর পর কয়েক মাস পর্যন্ত আমেরিকার ইতিহাস পড়তে থাকেন। লি গ্রান্ড, ওয়াশিংটন, জ্যাকসন প্রমুখ ব্যক্তির জীবনকাহিনী তাঁর মনে দারুণ প্রভাব বিস্তার করে। ইতিহাসপাঠের প্রতি তাঁর এত ঝোঁক ছিল যে, স্কুলের বার্ষিক রিপোর্টে তাঁর সম্পর্কে বলা হয়েছিল, এই ছেলে ভবিষ্যতে ইতিহাসের অধ্যাপক হতে পারবে।

কিন্তু সেই বালক পরবর্তীকালে ইতিহাসের অধ্যাপক হননি, বরং তিনি নিজেই সৃষ্টি করেছিলেন ইতিহাস, যে ইতিহাস বিশ্ববিদ্যালয় পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তিনি এমনভাবে ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়েছিলেন যে, হ্যানিবল এবং তাঁর হস্তীযূথ অপেক্ষাও তা বিশ্বের মানবজীবনে অনেক বেশি প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়।

আইসেনহাওয়ারের বাল্যকালে আরেকটি বড় গুণ ছিল। তিনি ছিলেন একজন চৌকস ফুটবল খেলোয়াড়। ওয়েস্ট পয়েন্টে মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে পড়ার সময় একজন স্বনামধন্য ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে তাঁর নাম কলেজে পেতলের পাত্রে লেখা হয়েছিল। তবে তাঁর পা ভেঙে যাওয়ার পর তিনি আর খেলতে পারেননি।

কিন্তু ফুটবল খেলা ছেড়ে দিলেও তিনি দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সমরক্ষেত্রে বিশ্বত্রাস হিটলারকে পরাজিত করে তাঁর গৌরবময় সামরিক জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটিয়েছিলেন।

মিলিটারি অ্যাকাডেমির পড়া শেষে তিনি যথারীতি সামরিক বাহিনীতে যোগদান করেন। চাকরিতে তাঁর প্রথম পোস্টিং হয় টেক্সাসের সান অ্যান্টোনিও ক্যান্টনমেন্টে। তখন তিনি সুদর্শন চেহারার একজন সামরিক অফিসার। এই ক্যান্টনমেন্টে চাকরি করার সময়েই একদিন এক অনুষ্ঠানে কলোরাডোর বাসিন্দা ম্যামি নামে এক শিক্ষিতা ও সুন্দরী মহিলার সঙ্গে তাঁর পরিচয় ঘটে। প্রথম দর্শনেই প্রেম। তারপর ঘনিষ্ঠতা। কয়েক মাসের মধ্যেই ম্যামির সঙ্গে বিয়ে হয়ে যায় আইসেনহাওয়ারের। তাঁর তীক্ষ্ণ বুদ্ধি, নিষ্ঠা আর সাহসিকতার জন্য দ্রুত তাঁর পদোন্নতি ঘটতে থাকে। তারপর তাঁর জীবনে আসে তাঁর সামরিক জীবনের সবচেয়ে গৌরবময় যুগ। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় আক্রমণকারী সৈনিকদের সুপ্রিম কমান্ডার মনোনয়নের প্রশ্ন উঠলে আইসেনহাওয়ারের নামই সর্বপ্রথম প্রস্তাবিত হয়। রুজভেল্ট ও চার্চিলই নন, স্ট্যালিনও এই প্রস্তাবকে সমর্থন দেন এবং অতঃপর আইসেনহাওয়ারকেই মিত্রবাহিনীর সুপ্রিম কমান্ডার হওয়ার যোগ্যতম ব্যক্তি বলে ঘোষণা করা হয়।

অথচ কলেজজীবনে তিনি তেমন কোনো মেধার পরিচয় দিতে পারেননি। ১৬৫ জন ছাত্রের মধ্যে তিনি মেধা তালিকার ৬১তম স্থানে ছিলেন। ওয়েস্ট পয়েন্টে মেধার ক্ষেত্রে কৃতিত্ব দেখাতে না পারলেও আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাঁর কৃতিত্ব সকল মেধাবী ছাত্রের কৃতিত্বকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল আর সেটা ছিল তাঁর দূরদর্শিতা।

দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের কয়েক বছর আগেই তিনি বাধতে যাওয়া যুদ্ধের ধরনধারণ সম্পর্কে ধারণা করতে সক্ষম হয়েছিলেন এবং এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলেন, এই যুদ্ধে বিমান এবং ট্যাংকবহরই সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তাই তিনি বিমানবাহিনীতে যোগ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পদস্থ একজন অফিসারের বিরোধিতার জন্য তা হয়নি। শেষে তিনি ট্যাংকবাহিনীতে যোগদান করেন।

তিনিই সর্বপ্রথম মার্কিন সৈন্যবাহিনীতে ট্যাংক ডিভিশন পুনর্গঠন করেন। ২৮ বছর বয়সে তিনি ট্যাংক ডিভিশনের লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে উন্নীত হন। ১৯১৮ সালের ১১ নভেম্বর তিনি তাঁর ট্যাংকবহর নিয়ে ইউরোপ রওনা হতে যাবেন, এমন সময় প্ৰথম মহাযুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে।

সেনাবাহিনীতে তিনি যে বিস্ময়কর সাফল্য অর্জন করেছিলেন, তার মূলে ছিল তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা, সুষ্ঠ প্রশিক্ষণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণের শক্তি, কর্মতৎপরতা এবং নেতৃত্বদানের ব্যাপারে যথার্থ যোগ্যতা।

প্রত্যেকটি লোক তাঁকে শ্রদ্ধা করত। যাকে সাধারণ কথায় আমরা ‘ব্যক্তিত্ব’ বলে থাকি, তিনি এ জিনিসটির পরিপূর্ণ অধিকারী ছিলেন।

তাঁর সামরিক বিজয়ের মূলমন্ত্রটি ছিল খুব সাদামাঠা। তিনি বলতেন, ছোট্ট বিষয়গুলোরও বিস্তারিত পর্যালোচনা করে পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিতে হবে, তারপর জীবনপণ করে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ইউরোপ আক্রমণের সময় নৌবাহিনী যেসব কার্যক্রম গ্রহণ করেছিল, তার মধ্যে ছিল আটশত পৃষ্ঠার বিস্তারিত পরিকল্পনা এবং সেই আক্রমণ সম্বন্ধে নৌবাহিনীর তৈরি ম্যাপগুলোর ওজন ছিল তিনশত পাউন্ড।

আইসেনহাওয়ারের স্ত্রী তাঁর স্বামী সম্পর্কে বলতেন, “আইকের ঠোঁটে সর্বক্ষণ হাসি লেগেই আছে। প্রায় সব ব্যাপারেই তিনি অগাধ জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। সহধর্মিণী হিসেবে তাঁর সঙ্গে আমার অনেকগুলো বছর কেটে গেছে, অথচ আজও আমি তাঁর প্রতি সেই প্রথম দিনকার মতো আকর্ষণ অনুভব করি।”

তাঁর সম্পর্কে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চার্চিল বলেছেন, “আইক, তোমার মধ্যে সবচেয়ে ভাল গুণ হচ্ছে এই যে, তুমি নামের কাঙাল নও।” বাস্তবিক, আইসেনহাওয়ার খ্যাতির লোভী ছিলেন না। জ্ঞানত তিনি সামনে আসার চেষ্টাই করতেন না। আব্রাহাম লিংকনের মতো তিনিও যশ-খ্যাতির তোয়াক্কা করতেন না। তাঁর সামরিক তকমাগুলোও তিনি পরতেন না।

তিনি মদ পান করতেন না। তিনি বলতেন, তাঁর ভিতরে এত গোপন কথা ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রক্ষিত আছে যে, মদ্যপানজনিত মাতালমির প্রভাবে মুখের বাঁধন আলগা হয়ে তা বেরিয়ে পড়া বিচিত্র কিছু নয়।

আইসেনহাওয়ারের ছেলে তাঁর বাবা সম্পর্কে বলেছেন, “বাবা একজন জবর পড়ুয়া। শান্তির সময়ে এক-এক রাতে তিনি কয়েকটি বই পড়ে শেষ করেন। কিন্তু তিনি যখন যুদ্ধক্ষেত্রে যেতেন, তখন তাঁর কাছে মাত্র একটি বই থাকত, আর সেটি ছিল বাইবেল।” আইসেনহাওয়ার প্রতিদিন ষোল থেকে আঠারো ঘণ্টা কাজ করতেন। পাঁচ ঘণ্টা ঘুমই তাঁর জন্য ছিল যথেষ্ট।

দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ শেষ হয়ে যাওয়ার পর এই অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে তিনি রচনা করেন একটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ ‘রিপোর্ট বাই দি সুপ্রিম কমান্ডার টু দি কম্বাইন্ড চিফ অব (Report by the Supreme Commander to the Combined Chief of Staff)। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ সম্পর্কে এটি একটি প্রামাণ্য দলিল বিশেষ।

যুদ্ধের পর বিজয়ের পুরস্কারস্বরূপ রাজা ষষ্ঠ জর্জ তাঁকে ‘অর্ডার অব মেরিট’ উপাধিতে ভূষিত করেন।

তবে তিনি অবসর গ্রহণ করার পর একবার নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, নিউইয়র্কে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যায়ের অধ্যক্ষ হবেন। কিন্তু সেটা হওয়া তাঁর আর হয়ে ওঠেনি। তাঁকে বরং আবার নতুন করে সামরিক দায়িত্বই নিতে হলো। ১৯৫০ সালে তাঁকে নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন, সংক্ষেপে ‘ন্যাটো’-র দায়িত্ব নিতে হয়। তিনি এই দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন ১৯৫৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত। এরপর তিনি রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন পেয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সমরনায়ক আইসেনহাওয়ারের মৃত্যু হয় ১৯৬৯ সালে।

সকল অধ্যায়

১. হযরত মুহাম্মদ (দঃ) (৫৭০-৬৩২) – সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী
২. জরথুশত্র (৬২৮-৫৫১ খ্রি. পূ.) – পারশি ধর্মের প্রবর্তক
৩. বর্ধমান মহাবীর (৫৯৯–৫২৭ খ্রি. পূ.) – জৈন দর্শন ও ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা
৪. গৌতম বুদ্ধ (৫৬৩–৪৮৩ খ্রি. পূ.) – বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক
৫. কনফুসিয়াস (৫৫১–৪৭৯ খ্রি. পূ.) – চীনের প্রাচীনতম ধর্মমতবাদের প্রবর্তক
৬. সক্রেটিস (আনু. ৪৬৯–৩৯৯ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্রের আদিজনক
৭. প্লেটো (৪২৮–৩৪৭ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্র যাঁর হাতে পেয়েছিল পূর্নাঙ্গরূপ
৮. ডায়োজিনিস (৪১২–৩২২ খ্রি. পূ.) – একনিষ্ঠ জ্ঞান সাধক
৯. অ্যারিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খ্রি. পূ.) – যুক্তিশাস্ত্রের জনক
১০. যিশু খ্রিস্ট (আনু. ৬ খ্রি. পূ.–আনু. ২৯ খ্রি.) – খ্রিস্টানধর্মের প্রবর্তক
১১. অতীশ দীপঙ্কর (৯৮২–১০৫৩) – জ্ঞানসাধক বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক
১২. গুরু নানক (১৪৬৯–১৫৩৮) – শিখ ধর্মমতের প্রবর্তক
১৩. মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬) – ধর্মের সংস্কারক এবং ‘প্রটেস্টানিজম’ মতবাদের স্রষ্টা
১৪. মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩) – বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তক
১৫. রামমোহন রায় (১৭৭২–১৮৩৩) – ভারতবর্ষে নবযুগের প্রবর্তক
১৬. রামকৃষ্ণ পরমহংস (১৮৩৬–১৮৮৬) – ‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আমি ঈশ্বরকে দর্শন করেছি’
১৭. বারট্রান্ড রাসেল (১৮৭২–১৯৭০ ) – যুদ্ধ-বিরোধী ও মানবতাবাদী দার্শনিক
১৮. থ্যালিস (আনু. ৬২৪–৫৬৫ খ্রি. পূ.) – বিজ্ঞানশাস্ত্রের আদিপুরুষ
১৯. পিথাগোরাস (আনু. ৫৮২–৫০৭ খ্রি. পূ.) – তিনি বলেছিলেন—পৃথিবী গোলাকার
২০. হিপোক্র্যাটিস (আনু: ৪৬০–৩৭০ খ্রি. পূ.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আদিজনক
২১. আর্কিমিডিস (২৮৭–২১২ খ্রি. পূ.) – ঊর্ধ্বমুখী বল সূত্রের আবিষ্কারক
২২. ক্লডিয়াস টলেমি (১০০–১৮০ খ্রি.) – জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রথম কোষগ্রন্থ প্রণেতা
২৩. ক্লডিয়াস গ্যালেন (১৩১–২০১ খ্রি.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আধুনিক পদ্ধতির আদি জনক
২৪. ইবনে সিনা (৯৮০–১০৩৭) – জ্ঞানসাধনায় কাটিয়েছিলেন সমগ্র জীবন
২৫. কোপারনিকাস (১৪৭৩–১৫৪৩) – আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্ৰবক্তা
২৬. জিওর্দানো ব্রুনো (আনু. ১৫৪৮–১৬০০ ) – সত্যপ্রচারের অপরাধে যাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল
২৭. গ্যালিলিও গ্যালিলি (১৫৬৪-১৬৪২) – যাঁর গাণিতিক পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি
২৮. লিওয়েন হুক (১৬৩২–১৭৩৩) – মুদি দোকানদার থেকে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী
২৯. আইজাক নিউটন (১৬৪২–১৭২৭) – মাধ্যাকর্ষন শক্তির আবিষ্কারক
৩০. রিচার্ড আর্করাইট (১৭৩২–১৭৯২) – আধুনিক বস্ত্রশিল্পে বৈপ্লবিক ধারা প্রবর্তক
৩১. উইলিয়াম হার্শেল (১৭৩৮–১৮২২) – ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কারক
৩২. লরেঁ লাভোয়সিয়ের (১৭৪৩–১৭৯৪) – রসায়নশাস্ত্রের জনক
৩৩. মাইকেল ফ্যারাডে (১৭৯১-১৮৬৭) – তাড়িত-চুম্বক বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা
৩৪. চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) – প্রাণিজগতের বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যাদাতা
৩৫. লুই পাস্তুর (১৮২২–১৮৯৫) – জীবাণু আর জলাতঙ্ক রোগ প্রতিষেধকের আবিষ্কারক
৩৬. আলফ্রেড নোবেল (১৮৩৩–১৮৯৬) – যাঁর নামে দেয়া হয় নোবেল পুরস্কার
৩৭. আলভা এডিসন (১৮৪৭–১৯৩১) – সর্বাধিক আবিষ্কারের জনক
৩৮. জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৯–১৯৩৭) – যিনি বলেছিলেন গাছেরও প্রাণ আছে
৩৯. মাদাম কুরি (১৮৬৭–১৯৩৪) – সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহিলা বিজ্ঞানী
৪০. মার্কোনি (১৮৭৪–১৯৩৭) – বেতারযন্ত্রের আবিষ্কারক
৪১. আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯–১৯৫৫) – আপেক্ষিক তত্ত্বের জনক
৪২. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১–১৯৫৫) – পেনিসিলিনের আবিষ্কারক
৪৩. হোমার (আনু. ৭০০-? খ্রি. পূ.) – বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দুটি মহাকাব্যের রচয়িতা
৪৪. ঈশপ (আ. কা. ৬২০–৫৬০ খ্রি. পূ.) – কালজয়ী নীতিগল্পকার
৪৫. সোফোক্লেস (আনু. ৪৯৫-৪০৬ খ্রি. পূ.) – গ্রিক ট্র্যাজেডি নাট্যধারার রূপকার
৪৬. হেরোডোটাস (আনু. ৪৮৫–৪২৫ খ্রি. পূ.) – ইতিহাসশাস্ত্রের জনক
৪৭. অ্যারিস্টোফানিস (আনু. ৪৪৪–৩৮৫ খ্রি. পূ.) – যাঁর সাহিত্যকর্মে আর্তমানবতার কথা প্রতিফলিত
৪৮. মহাকবি কালিদাস (আনু. ৫৭০-৬৫০ খ্রি.) – সংস্কৃতি সাহিত্যের অমর কবি
৪৯. লেওনার্দো দা ভিঞ্চি (১৪৫২–১৫১৯) – সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী
৫০. মিকেলাঞ্জেলো (১৪৭৫–১৫৬৪) – পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাস্কর শিল্পী
৫১. তানসেন (১৫০৬–১৫৮৫) – কিংবদন্তির গায়ক
৫২. শেকসপিয়ার (১৫৬৪-১৬১৬) – বিশ্বসাহিত্যের কালজয়ী নাট্যকার
৫৩. ভলতেয়ার (১৬৯৪-১৭৭৮) – বিখ্যাত ফরাসি চিন্তাবিদ
৫৪. জঁ-জাক্ রুসো (১৭১২–১৭৭৮) – ফরাসি বিপ্লবের রূপকার
৫৫. লর্ড বায়রন (১৭৮৮–১৮২৪) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি
৫৬. ভিক্টর হুগো (১৮০২-১৮৮৫) – ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৭. ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন (১৮০৫–১৮৭৫) – যাঁকে বলা হয় রূপকথার জাদুকর
৫৮. চার্লস ডিকেন্স (১৮১২–১৮৭০) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৯. ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯-১৮৯২) – মার্কিন সাহিত্যের যুগ-প্রবর্তক কবি
৬০. লিয়েফ তলস্তোয় (১৮২৮–১৯১০) – বিশ্বের মহান সাহিত্যিকদের অন্যতম
৬১. জুল ভের্ন (১৮২৮–১৯০৫) – কল্পবিজ্ঞান কাহিনীর স্রষ্টা
৬২. মার্ক টোয়েন (১৮৩৫–১৯১০) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রসস্রষ্টা
৬৩. জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৫৬–১৯৫০) – যিনি প্রথম নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন
৬৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১) – শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনীষা, পৃথিবীর মহত্তম সাহিত্য-ব্যক্তিত্ব
৬৫. ম্যাক্সিম গোর্কি (১৮৬৮–১৯৩৬) – যাঁর সাহিত্যকর্মের প্রধান উপজীব্য গণমানুষের কথা
৬৬. হেলেন কেলার (১৮৮০-১৯৬৮) – যাঁর খ্যাতিকে নেপোলিয়নের সঙ্গে তুলনা করা হতো
৬৭. আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (১৮৯৮–১৯৬১) – জীবনবাদী মার্কিন কথাসাহিত্যিক
৬৮. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯–১৯৭৬) – বাংলার বিদ্রোহী কবি
৬৯. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২–১৭৯৯) – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৭০. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১) – ইতিহাসের কিংবদন্তির মহানায়ক
৭১. জুসেপ্পে গারিবলদি (১৮০৭–১৮৮২) – ইতালির জনক বলে যাঁর খ্যাতি
৭২. আব্রাহাম লিংকন (১৮০৯-১৮৬৫) – যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্রীতদাসপ্রথা রহিত করেছিলেন
৭৩. অটো ফন বিসমার্ক (১৮১৫–১৮৯৮) – জার্মান সাম্রাজ্যের স্থপতি
৭৪. মহাত্মা গান্ধি (১৮৬৯–১৯৪৮) – ‘সবকো সুমতি দে ভগবান’
৭৫. কমরেড লেনিন (১৮৭০–১৯২৪) – বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা
৭৬. উইনস্টন চার্চিল (১৮৭৪–১৯৬৫) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ডাকসাইটে প্রধানমন্ত্রী
৭৭. জোসেফ স্ট্যালিন (১৮৭৯–১৯৫৩) – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়েনের ‘লৌহমানব’
৭৮. কামাল আতাতুর্ক (১৮৮১–১৯৩৮) – নব্য-তুরস্কের জনক
৭৯. ডি ভ্যালেরা (১৮৮২-১৯৭৫) – আয়ারল্যান্ডের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৮০. জওহরলাল নেহরু (১৮৮৯-১৯৬৪) – ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
৮১. আইসেনহাওয়ার (১৮৯০-১৯৬৯) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক
৮২. শার্ল দ্য গল (১৮৯০-১৯৭০) – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা
৮৩. হো-চি-মিন (১৮৯০-১৯৬৯) – ভিয়েতনামের মুক্তিদাতা পুরুষ
৮৪. মার্শাল টিটো (১৮৯২–১৯৮০) – জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা
৮৫. মাও-সে-তুং (১৮৯৫–১৯৭৬) – চীন সাধারণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা
৮৬. সুভাষচন্দ্র বসু (১৮৯৭–১৯৪৫) – ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’
৮৭. জন এফ কেনেডি (১৯১৭–১৯৬৩) – গুপ্তঘাতকের হাতে যাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছিল
৮৮. ইন্দিরা গান্ধি (১৯১৭–১৯৮৪) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
৮৯. নেলসন ম্যান্ডেলা (১৯১৮) – দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তিদাতা পুরুষ
৯০. শেখ মুজিবর রহমান (১৯২০–১৯৭৫) – বাংলাদেশের জাতির জনক
৯১. প্যাট্রিস লুমুম্বা (১৯২৫-১৯৬১) – কঙ্গোর মুক্তিদাতা পুরুষ
৯২. মার্কো পোলো (১২৫৬–১৩২৩) – দুঃসাহসিক অভিযাত্রী
৯৩. ক্রিস্টোফার কলম্বাস (আনু. ১৪৪৬-১৫০৬) – আমেরিকার আবিষ্কারক
৯৪. ডেভিড লিভিংস্টোন (১৮১৩-১৮৭৩) – আফ্রিকার আবিষ্কারক
৯৫. উইলিয়াম জোন্স (১৭৪৬–১৭৯৪) – এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৬. ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (১৮২০–১৯১০) – আধুনিক ‘নার্সিং’ বৃত্তির অগ্রপথিক
৯৭. হেনরি ডুনান্ট (১৮২৮–১৯১০) – রেডক্রস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৮. ব্যাডেন পাওয়েল (১৮৫৭–১৯৪১) – বয়স্কাউট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা
৯৯. মাদার তেরেসা (১৯১০–১৯৯৭) – প্রেম, করুণা ও ধর্মের মূর্ত প্রতিমা
১০০. অ্যাডাম স্মিথ (১৭২৩–১৭৯০) – রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিজ্ঞানের জনক

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন