হিপোক্র্যাটিস (আনু: ৪৬০–৩৭০ খ্রি. পূ.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আদিজনক

ভবেশ রায়

কুসংস্কারের অন্ধকার—সে সত্যি বড় দীর্ঘ দীর্ঘকালের ইতিহাস। আদিম পৃথিবীতে প্রতিদিনই সূর্যোদয় হলেও জ্ঞানালোকের সূর্য উঠেছিল বড্ড দেরিতে। আজও তার আলো পৃথিবীর সমস্ত প্রান্তে পৌঁছুতে পারেনি।

কয়েক হাজার বছর আগে তার অবস্থা ছিল আরও করুণ। তবু সেই নিবিড় অন্ধকারেই জ্ঞানসূর্যের সন্তানেরা কেউ কেউ আলোর মশাল হাতে এগিয়ে এসেছিলেন। তাঁদের হাতের মশাল তাঁরা তুলে ধরেছিলেন ঘন অন্ধকারে ঢাকা দিক থেকে দিগন্তরে। আর সেই আলোয় কেউ কেউ খুঁজে পেয়েছিলেন নিজেদের পথের দিশা।

আদিকালের সেই আলোর মশাল হাতে এগিয়ে আসা তেমনি এক সূর্যসন্তান ছিলেন বিজ্ঞানী হিপোক্র্যাটিস (Hippocrates)।

তখন বলা হতো, মানুষের যে রোগব্যাধি, আপদবালাই—এসব কিছুর মূলে দেবতাদের আক্রোশ। মানুষের প্রতি তাঁদের অভিশাপের ফল। মানুষের পাপের শাস্তি। মানুষ দেবতার কাছে অপরাধ করলেই দেবতারা তাদের শাস্তি দিয়ে থাকেন।

কিন্তু এই ভ্রান্ত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রথম হিপোক্র্যাটিসই প্রতিবাদ করেন। তিনিই প্রথম বললেন যে, রোগবালায়ের জন্য স্বর্গের দেবতারা দায়ী নন। রোগব্যাধিতে মানুষ আক্রান্ত হয় একান্তই প্রাকৃতিক কারণে। এখানে দেবতাদের কোনো হাত নেই। এর মধ্যে রয়েছে মানুষের শরীরের বিভিন্ন অংশের নানারকম প্রতিক্রিয়া—একান্ত বাস্তবসম্মত কারণ। এর জন্য দায়ী কিছু বিজ্ঞানভিত্তিক তত্ত্ব। ইতিহাসে এই তত্ত্বই হিপোক্র্যাটিক তত্ত্ব (Hippocratic Method) নামে সুবিদিত।

মহাজ্ঞনী হিপোক্র্যাটিসের জন্ম হয়েছিল এশিয়া মাইনরের উপদ্বীপের নিকটবর্তী কস দ্বীপে ৪৬০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ। তিনি ছিলেন ওই দ্বীপের প্রাচীন বৈদ্য বা চিকিৎসক সম্প্রদায় এসক্লেপিয়াডার লোক। এই বিখ্যাত বৈদ্য সম্প্রদায়ের আদিপুরুষ ছিলেন চিকিৎসক- দেবতা এসক্লেপিয়স।

হিপোক্র্যাটিসের পিতাও ছিলেন একজন চিকিৎসক। তিনি ছিলেন রাজবৈদ্য। তাই চিকিৎসাশাস্ত্রে হিপোক্র্যাটিসের ছিল জন্মগত অধিকার। পিতার উৎসাহ এবং আগ্রহেই তিনিও চিকিৎসাশাস্ত্রে অধ্যয়ন করেন। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্তির পর উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি গ্রিক সাম্রাজ্যের বহু দেশে ঘুরে বেড়ান। বহু জ্ঞানীগুণী এবং রাজবৈদ্যের সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। তিনি তাঁদের সাথে জ্ঞানের আদান-প্রদান করেন।

জানা যায়, হিপোক্র্যাটিস তাঁর জীবিতকালেই গোটা গ্রিক সাম্রাজ্যে প্রচুর সুনাম অর্জন করেন। বহু দূরদূরান্তের দেশ থেকে রোগী এবং শিক্ষার্থীরা আসত তাঁর কাছে চিকিৎসা করাতে বা তাঁর কাছে এই বিদ্যা শিখতে। তিনি তাঁর জীবনের অভিজ্ঞতার ফসল হিসেবে চিকিৎসাশাস্ত্রের ওপর যে লেখা তৈরি করেছিলেন, সেগুলোই পরবর্তীকালে সংকলিত হয়ে প্রকাশিত হয়েছে ‘হিপোক্র্যাটিক সংকলন’ (Hippocratic Collection) নামে।

অবশ্য তাঁর এই রচনাবলির সংকলন প্রকাশিত হয় তাঁর মৃত্যুরও কয়েক শতাব্দী পরে। তাই অনেকে অনুমান করেন, তাঁর নামে সংকলিত ও প্রকাশিত রচনার সবগুলোই হয়ত তাঁর নিজের রচনা নয়। এমনও হতে পারে, তাঁর অনেক শিষ্যের রচনাও তাঁর নামেই প্রকাশিত হয়েছে। সংকলনের সব লেখা যে তাঁর নয়, এমনটা মনে করার পেছনে যুক্তি হলো, এখানে এমন অনেক তথ্য আছে, যা তিনি সর্বপ্রথম প্রবর্তন করেননি। এগুলো তাঁর সময়ের আগে বা পরের বিষয়। যেমন, চিকিৎসকদের আজও একটি নিয়ম পালন করতে হয়। আর সেটা হলো, এই পেশা শুরু করার আগে এর আদর্শ ও সততা সম্পর্কে প্রত্যেককে একটি শপথবাক্য পাঠ করতে হয়। বলা হয়ে থাকে, ডাক্তারদের শপথবাক্য পাঠ করার নিয়ম হিপোক্র্যাটিসই প্রথম প্রবর্তন করেন। কিন্তু প্রকৃত ঘটনা তা নয়। এ ধরনের শপথবাক্য পাঠের নিয়ম তাঁর জন্মেরও বহু বছর আগ থেকেই ইউরোপের বহু জায়গায় প্রচলিত ছিল। তাই এর প্রবর্তক হিপোক্র্যাটিস নন। অথচ তাঁর নামে এ ধরনের একটি রচনা গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে। এটা সম্ভবত গুরুর কৃতিত্ব জাহির করার জন্য তাঁর কোনো অতি উৎসাহী শিষ্য করে থাকতে পারেন। হিপোক্র্যাটিসের শপথবাক্যটি হলো এ-রকমের :

“আমি আমার সাধ্য ও বিবেকবুদ্ধি দ্বারাই একজন রোগীর সেবা ও চিকিৎসা করব। একজন রোগীর মঙ্গলসাধনই হবে আমার একমাত্র ব্রত। আমি পবিত্রতা, সততা ও নিষ্ঠার মধ্য দিয়ে আমার চিকিৎসক জীবন অতিবাহিত করতে চাই।”

তাঁর সংকলনে অন্তর্ভুক্ত বিখ্যাত রচনাগুলোর মধ্যে আছে রোগের লক্ষণ (Prognostics), মহামারী (Epidemics) এবং বায়ু-মাটি-স্থান (Air, Earth and Place) অর্থাৎ রোগ হওয়ার এবং আরোগ্যলাভের জন্য বায়ু, মাটি ও স্থান—এই এই তিনের সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে কার্যকর। অর্জিত জ্ঞান থেকেই তিনি উপলব্ধি করতে শেখেন যে, মানুষের রোগব্যাধির রয়েছে বিজ্ঞানসম্মত কারণ। এখানে অলৌকিকতার কোনো স্থান নেই। অথচ তখনকার যুগে লৌকিক বিশ্বাস বা কুসংস্কারের প্রভাব ছিল সমাজে প্রবল। দেবতাদের প্রভাব ছিল অসীম।

চিকিৎসাশাস্ত্রে এমন অনেক শব্দ প্রচলিত আছে, যেসবের উৎপত্তি সেই প্রাচীন অলৌকিক বিশ্বাস থেকেই। যেমন, প্লেগ রোগকে সেকালে বলা হতো দেবতার অভিশাপ বা আঘাত। প্লেগ শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ প্লাগা থেকে, যার অর্থ আঘাত। হাইজিন শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ হাইজিয়া থেকে। হাইজিয়া হলো ঔষধের দেবতা, এসক্লেপিয়স-এর কন্যা।

এসব থেকেই অনুমান করা যায়, সেকালে চিকিৎসাশাস্ত্রে অলৌকিক বিশ্বাস কেমন করে প্রভাব বিস্তার করেছিল। আর এসব কিছুর মূলে যিনি প্রথম আঘাত করেন, তিনি হলেন চিকিৎসাবিজ্ঞানী হিপোক্র্যাটিস। আর তাই তো তাঁকে আজও সম্মান করা হয় ‘চিকিৎসাশাস্ত্রের জনক’ হিসেবে।

হিপোক্র্যাটিসের চিকিৎসা গবেষণার মূল কেন্দ্রস্থল ছিল নিজের দ্বীপ কস-এ।

তাঁর সময়ে আর একটি চিকিৎসা গবেষণা কেন্দ্র ছিল এশিয়া মাইনরের দক্ষিণ- পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত স্নিডোস-এ। কিন্তু কস ও স্নিডোসের চিকিৎসাপদ্ধতির মধ্যে যেমন কিছু কিছু মিল ছিল, তেমনি অনেক অমিলও।

যেমন, স্নিডোসের চিকিৎসকদের বিশ্বাস ছিল, মানবদেহের চারটি প্রধান জলীয় পদার্থই মানসিক ও শারীরিক দিক থেকে তাকে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালিত করে থাকে। এই চারটি জলীয় পদার্থ হলো, কফ বা শ্লেষ্মা, রক্ত, পিত্তরস এবং জল।

কসের হিপোক্র্যাটিস গোত্রীয় চিকিৎসকদেরও ধারণা ছিল প্রায় একই রকমের। হিপোক্র্যাটিস বলেন, মানবদেহের মূল নিয়ন্ত্রক জলীয় পদার্থ হলো শ্লেষ্মা, রক্ত, পিত্তরস বা হলুদ পিত্ত এবং অবসাদ বা কালপিত্ত।

এখানে একটা বিষয় তাৎপর্যপূর্ণ, তা হলো, দুটো দলই মানবদেহের চারটি মৌলিক উপাদানের কথা বলেছেন এবং উভয় সম্প্রদায়ই আরও একটি বিষয়ে একমত ছিলেন যে, ঔষধ হলো যুক্তিসিদ্ধ চিকিৎসাপদ্ধতি, যা বিজ্ঞানভিত্তিক। এখানে ঐশ্বরিক বা অলৌকিক বলে কিছু নেই। এই দুটো সম্প্রদায়ই চিকিৎসাশাস্ত্রকে অলৌকিক স্বর্গ থেকে মাটির পৃথিবীতে নামিয়ে নিয়ে এসেছেন এবং চিকিৎসাশাস্ত্রের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা ও আবিষ্কারের পথ খুলে দিয়েছেন।

অবশ্য এ ধরনের আধুনিক চিন্তাভাবনা হিপোক্র্যাটিসের আগ থেকেই চলে আসছিল। যেমন, পূর্বসুরি চিকিৎসক ইম্‌পেডোক্লেস (৫০০–৪৩০ খ্রি. পূ.) বলেছিলেন, মানবদেহের রোগব্যাধি ঈশ্বরের দান নয়। এটা হলো শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও শারীরিক উপাদানসমূহের ত্রুটি কিংবা ভারসাম্যহীনতা।

হিপোক্র্যাটিসও তাই বলেছেন, মানুষের শরীরে তখনি রোগব্যাধি দেখা দেয়, যখন তার শরীরের কোনো একটি অংশ তার কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। তিনি আরও বলেছেন, শরীরের একটি রোগ ক্রমে অন্য রোগে রূপান্তরিত হতে পারে। এটা আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রেও স্বীকার করা হয়েছে। শরীরের একটি রোগ ক্রমে অন্য আরও জটিল রোগের জন্ম দিতে পারে।

অতীতে অনেক জটিল রোগের নিরাময় করা সম্ভব হতো না। কারণ, আধুনিক কারিগরি জ্ঞানের অভাবে এসব জটিল রোগের গতিপ্রকৃতি জানা সম্ভব ছিল না। আর তার ফলেই হিপোক্র্যাটিসের মতো সেকালের চিকিৎসাশাস্ত্রবিদদের পক্ষেও এসব রোগের নিরাময় করা সম্ভব হতো না। কারণ, তাদের জ্ঞান ছিল সীমাবদ্ধ এবং চিকিৎসাপদ্ধতিতেও ছিল না শৃঙ্খলা।

তবু হিপোক্র্যাটিসকেই চিকিৎসাশাস্ত্র বা মেডিসিনের আদি জনক বলা হয়। এ-রকমটা বলার কারণ হলো, সেকালের সীমিত জ্ঞান নিয়েও তিনিই সর্বপ্রথম রোগের কারণ নির্ণয় ও চিকিৎসাপদ্ধতিতে একটি নিয়ম বা নীতিমালা প্রণয়ন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তাঁর প্রণীত নিয়ম-শৃঙ্খলাগুলো ছিল সম্পূর্ণ বাস্তবসম্মত এবং বিজ্ঞানভিত্তিক।

কিন্তু তবু একটা প্রশ্ন থেকেই যায়। আর সেটা হলো, হিপোক্র্যাটিস কি তা হলে সত্যি সত্যি চিকিৎসাশাস্ত্রকে বিজ্ঞানভিত্তিক করতে সক্ষম হয়েছিলেন?

এর উত্তর হলো হ্যাঁ, কথাটা সত্যি। অবশ্য এখানে তাঁর অবদান ছিল খুবই সামান্য। তিনি বিষয়টির সূত্রপাত করেছিলেন মাত্র। বিরাট সাফল্যজনক কিছু করতে সক্ষম না হলেও অবশ্যই বলতে হবে, হিপোক্র্যাটিস চিকিৎসাশাস্ত্রের আদিতে যে সামান্য প্রাথমিক অবদানটুকু রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন, তা যদি না হতো তা হলে চিকিৎসাশাস্ত্রের আধুনিকায়নের ভিত্তি স্থাপনের কাজটিও অনেক দেরিতে হতো। ফলে চিকিৎসাশাস্ত্রের আজকের অগ্রগতিও নিঃসন্দেহে এতদূর আসতে পারত না। আর সেকারণেই তাঁকে চিকিৎসাশাস্ত্রের আদি জনক বলা হয় এবং সে মর্যাদা তাঁর অবশ্যই প্ৰাপ্য।

এই মহান জ্ঞানসাধকের বাণী ছিল : “জীবন খুব সংক্ষিপ্ত, কিন্তু শিক্ষা দীর্ঘতর। সুযোগ চলে যাচ্ছে। পরীক্ষানিরীক্ষা করা বিপজ্জনক এবং বিচার-বিবেচনা করাও খুব কঠিন কাজ। তবু আমাদের তৈরি থাকতে হবে, সে শুধু আমাদের নিজের সুখের জন্য নয়, অন্যের জন্যও।”

হিপোক্র্যাটিসের মৃত্যু হয় ৩৭০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে।

সকল অধ্যায়

১. হযরত মুহাম্মদ (দঃ) (৫৭০-৬৩২) – সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী
২. জরথুশত্র (৬২৮-৫৫১ খ্রি. পূ.) – পারশি ধর্মের প্রবর্তক
৩. বর্ধমান মহাবীর (৫৯৯–৫২৭ খ্রি. পূ.) – জৈন দর্শন ও ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা
৪. গৌতম বুদ্ধ (৫৬৩–৪৮৩ খ্রি. পূ.) – বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক
৫. কনফুসিয়াস (৫৫১–৪৭৯ খ্রি. পূ.) – চীনের প্রাচীনতম ধর্মমতবাদের প্রবর্তক
৬. সক্রেটিস (আনু. ৪৬৯–৩৯৯ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্রের আদিজনক
৭. প্লেটো (৪২৮–৩৪৭ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্র যাঁর হাতে পেয়েছিল পূর্নাঙ্গরূপ
৮. ডায়োজিনিস (৪১২–৩২২ খ্রি. পূ.) – একনিষ্ঠ জ্ঞান সাধক
৯. অ্যারিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খ্রি. পূ.) – যুক্তিশাস্ত্রের জনক
১০. যিশু খ্রিস্ট (আনু. ৬ খ্রি. পূ.–আনু. ২৯ খ্রি.) – খ্রিস্টানধর্মের প্রবর্তক
১১. অতীশ দীপঙ্কর (৯৮২–১০৫৩) – জ্ঞানসাধক বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক
১২. গুরু নানক (১৪৬৯–১৫৩৮) – শিখ ধর্মমতের প্রবর্তক
১৩. মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬) – ধর্মের সংস্কারক এবং ‘প্রটেস্টানিজম’ মতবাদের স্রষ্টা
১৪. মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩) – বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তক
১৫. রামমোহন রায় (১৭৭২–১৮৩৩) – ভারতবর্ষে নবযুগের প্রবর্তক
১৬. রামকৃষ্ণ পরমহংস (১৮৩৬–১৮৮৬) – ‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আমি ঈশ্বরকে দর্শন করেছি’
১৭. বারট্রান্ড রাসেল (১৮৭২–১৯৭০ ) – যুদ্ধ-বিরোধী ও মানবতাবাদী দার্শনিক
১৮. থ্যালিস (আনু. ৬২৪–৫৬৫ খ্রি. পূ.) – বিজ্ঞানশাস্ত্রের আদিপুরুষ
১৯. পিথাগোরাস (আনু. ৫৮২–৫০৭ খ্রি. পূ.) – তিনি বলেছিলেন—পৃথিবী গোলাকার
২০. হিপোক্র্যাটিস (আনু: ৪৬০–৩৭০ খ্রি. পূ.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আদিজনক
২১. আর্কিমিডিস (২৮৭–২১২ খ্রি. পূ.) – ঊর্ধ্বমুখী বল সূত্রের আবিষ্কারক
২২. ক্লডিয়াস টলেমি (১০০–১৮০ খ্রি.) – জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রথম কোষগ্রন্থ প্রণেতা
২৩. ক্লডিয়াস গ্যালেন (১৩১–২০১ খ্রি.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আধুনিক পদ্ধতির আদি জনক
২৪. ইবনে সিনা (৯৮০–১০৩৭) – জ্ঞানসাধনায় কাটিয়েছিলেন সমগ্র জীবন
২৫. কোপারনিকাস (১৪৭৩–১৫৪৩) – আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্ৰবক্তা
২৬. জিওর্দানো ব্রুনো (আনু. ১৫৪৮–১৬০০ ) – সত্যপ্রচারের অপরাধে যাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল
২৭. গ্যালিলিও গ্যালিলি (১৫৬৪-১৬৪২) – যাঁর গাণিতিক পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি
২৮. লিওয়েন হুক (১৬৩২–১৭৩৩) – মুদি দোকানদার থেকে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী
২৯. আইজাক নিউটন (১৬৪২–১৭২৭) – মাধ্যাকর্ষন শক্তির আবিষ্কারক
৩০. রিচার্ড আর্করাইট (১৭৩২–১৭৯২) – আধুনিক বস্ত্রশিল্পে বৈপ্লবিক ধারা প্রবর্তক
৩১. উইলিয়াম হার্শেল (১৭৩৮–১৮২২) – ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কারক
৩২. লরেঁ লাভোয়সিয়ের (১৭৪৩–১৭৯৪) – রসায়নশাস্ত্রের জনক
৩৩. মাইকেল ফ্যারাডে (১৭৯১-১৮৬৭) – তাড়িত-চুম্বক বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা
৩৪. চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) – প্রাণিজগতের বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যাদাতা
৩৫. লুই পাস্তুর (১৮২২–১৮৯৫) – জীবাণু আর জলাতঙ্ক রোগ প্রতিষেধকের আবিষ্কারক
৩৬. আলফ্রেড নোবেল (১৮৩৩–১৮৯৬) – যাঁর নামে দেয়া হয় নোবেল পুরস্কার
৩৭. আলভা এডিসন (১৮৪৭–১৯৩১) – সর্বাধিক আবিষ্কারের জনক
৩৮. জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৯–১৯৩৭) – যিনি বলেছিলেন গাছেরও প্রাণ আছে
৩৯. মাদাম কুরি (১৮৬৭–১৯৩৪) – সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহিলা বিজ্ঞানী
৪০. মার্কোনি (১৮৭৪–১৯৩৭) – বেতারযন্ত্রের আবিষ্কারক
৪১. আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯–১৯৫৫) – আপেক্ষিক তত্ত্বের জনক
৪২. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১–১৯৫৫) – পেনিসিলিনের আবিষ্কারক
৪৩. হোমার (আনু. ৭০০-? খ্রি. পূ.) – বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দুটি মহাকাব্যের রচয়িতা
৪৪. ঈশপ (আ. কা. ৬২০–৫৬০ খ্রি. পূ.) – কালজয়ী নীতিগল্পকার
৪৫. সোফোক্লেস (আনু. ৪৯৫-৪০৬ খ্রি. পূ.) – গ্রিক ট্র্যাজেডি নাট্যধারার রূপকার
৪৬. হেরোডোটাস (আনু. ৪৮৫–৪২৫ খ্রি. পূ.) – ইতিহাসশাস্ত্রের জনক
৪৭. অ্যারিস্টোফানিস (আনু. ৪৪৪–৩৮৫ খ্রি. পূ.) – যাঁর সাহিত্যকর্মে আর্তমানবতার কথা প্রতিফলিত
৪৮. মহাকবি কালিদাস (আনু. ৫৭০-৬৫০ খ্রি.) – সংস্কৃতি সাহিত্যের অমর কবি
৪৯. লেওনার্দো দা ভিঞ্চি (১৪৫২–১৫১৯) – সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী
৫০. মিকেলাঞ্জেলো (১৪৭৫–১৫৬৪) – পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাস্কর শিল্পী
৫১. তানসেন (১৫০৬–১৫৮৫) – কিংবদন্তির গায়ক
৫২. শেকসপিয়ার (১৫৬৪-১৬১৬) – বিশ্বসাহিত্যের কালজয়ী নাট্যকার
৫৩. ভলতেয়ার (১৬৯৪-১৭৭৮) – বিখ্যাত ফরাসি চিন্তাবিদ
৫৪. জঁ-জাক্ রুসো (১৭১২–১৭৭৮) – ফরাসি বিপ্লবের রূপকার
৫৫. লর্ড বায়রন (১৭৮৮–১৮২৪) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি
৫৬. ভিক্টর হুগো (১৮০২-১৮৮৫) – ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৭. ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন (১৮০৫–১৮৭৫) – যাঁকে বলা হয় রূপকথার জাদুকর
৫৮. চার্লস ডিকেন্স (১৮১২–১৮৭০) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৯. ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯-১৮৯২) – মার্কিন সাহিত্যের যুগ-প্রবর্তক কবি
৬০. লিয়েফ তলস্তোয় (১৮২৮–১৯১০) – বিশ্বের মহান সাহিত্যিকদের অন্যতম
৬১. জুল ভের্ন (১৮২৮–১৯০৫) – কল্পবিজ্ঞান কাহিনীর স্রষ্টা
৬২. মার্ক টোয়েন (১৮৩৫–১৯১০) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রসস্রষ্টা
৬৩. জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৫৬–১৯৫০) – যিনি প্রথম নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন
৬৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১) – শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনীষা, পৃথিবীর মহত্তম সাহিত্য-ব্যক্তিত্ব
৬৫. ম্যাক্সিম গোর্কি (১৮৬৮–১৯৩৬) – যাঁর সাহিত্যকর্মের প্রধান উপজীব্য গণমানুষের কথা
৬৬. হেলেন কেলার (১৮৮০-১৯৬৮) – যাঁর খ্যাতিকে নেপোলিয়নের সঙ্গে তুলনা করা হতো
৬৭. আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (১৮৯৮–১৯৬১) – জীবনবাদী মার্কিন কথাসাহিত্যিক
৬৮. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯–১৯৭৬) – বাংলার বিদ্রোহী কবি
৬৯. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২–১৭৯৯) – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৭০. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১) – ইতিহাসের কিংবদন্তির মহানায়ক
৭১. জুসেপ্পে গারিবলদি (১৮০৭–১৮৮২) – ইতালির জনক বলে যাঁর খ্যাতি
৭২. আব্রাহাম লিংকন (১৮০৯-১৮৬৫) – যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্রীতদাসপ্রথা রহিত করেছিলেন
৭৩. অটো ফন বিসমার্ক (১৮১৫–১৮৯৮) – জার্মান সাম্রাজ্যের স্থপতি
৭৪. মহাত্মা গান্ধি (১৮৬৯–১৯৪৮) – ‘সবকো সুমতি দে ভগবান’
৭৫. কমরেড লেনিন (১৮৭০–১৯২৪) – বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা
৭৬. উইনস্টন চার্চিল (১৮৭৪–১৯৬৫) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ডাকসাইটে প্রধানমন্ত্রী
৭৭. জোসেফ স্ট্যালিন (১৮৭৯–১৯৫৩) – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়েনের ‘লৌহমানব’
৭৮. কামাল আতাতুর্ক (১৮৮১–১৯৩৮) – নব্য-তুরস্কের জনক
৭৯. ডি ভ্যালেরা (১৮৮২-১৯৭৫) – আয়ারল্যান্ডের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৮০. জওহরলাল নেহরু (১৮৮৯-১৯৬৪) – ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
৮১. আইসেনহাওয়ার (১৮৯০-১৯৬৯) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক
৮২. শার্ল দ্য গল (১৮৯০-১৯৭০) – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা
৮৩. হো-চি-মিন (১৮৯০-১৯৬৯) – ভিয়েতনামের মুক্তিদাতা পুরুষ
৮৪. মার্শাল টিটো (১৮৯২–১৯৮০) – জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা
৮৫. মাও-সে-তুং (১৮৯৫–১৯৭৬) – চীন সাধারণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা
৮৬. সুভাষচন্দ্র বসু (১৮৯৭–১৯৪৫) – ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’
৮৭. জন এফ কেনেডি (১৯১৭–১৯৬৩) – গুপ্তঘাতকের হাতে যাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছিল
৮৮. ইন্দিরা গান্ধি (১৯১৭–১৯৮৪) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
৮৯. নেলসন ম্যান্ডেলা (১৯১৮) – দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তিদাতা পুরুষ
৯০. শেখ মুজিবর রহমান (১৯২০–১৯৭৫) – বাংলাদেশের জাতির জনক
৯১. প্যাট্রিস লুমুম্বা (১৯২৫-১৯৬১) – কঙ্গোর মুক্তিদাতা পুরুষ
৯২. মার্কো পোলো (১২৫৬–১৩২৩) – দুঃসাহসিক অভিযাত্রী
৯৩. ক্রিস্টোফার কলম্বাস (আনু. ১৪৪৬-১৫০৬) – আমেরিকার আবিষ্কারক
৯৪. ডেভিড লিভিংস্টোন (১৮১৩-১৮৭৩) – আফ্রিকার আবিষ্কারক
৯৫. উইলিয়াম জোন্স (১৭৪৬–১৭৯৪) – এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৬. ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (১৮২০–১৯১০) – আধুনিক ‘নার্সিং’ বৃত্তির অগ্রপথিক
৯৭. হেনরি ডুনান্ট (১৮২৮–১৯১০) – রেডক্রস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৮. ব্যাডেন পাওয়েল (১৮৫৭–১৯৪১) – বয়স্কাউট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা
৯৯. মাদার তেরেসা (১৯১০–১৯৯৭) – প্রেম, করুণা ও ধর্মের মূর্ত প্রতিমা
১০০. অ্যাডাম স্মিথ (১৭২৩–১৭৯০) – রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিজ্ঞানের জনক

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন