উইনস্টন চার্চিল (১৮৭৪–১৯৬৫) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ডাকসাইটে প্রধানমন্ত্রী

ভবেশ রায়

বিশ্বের সেরা রাজনীতিবিদদের মধ্যে যাঁর জীবন সবচেয়ে বেশি ঘটনাবহুল এবং সবচেয়ে চমকপ্রদ ঘটনায় পরিপূর্ণ, তিনি ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিশ্বের সেরা রাজনীতিবিদদের অন্যতম উইনস্টন চার্চিল। পুরো নাম উইনস্টন স্পেনসার চার্চিল (Winston Spencer Churchill) |

তাঁর জীবনের বহু চমকপ্রদ কাহিনীর শুরু জন্মের পূর্ব থেকেই। মাতামহ লিওনার্ড জেরোম (Leonard Jerome) ছিলেন আমেরিকার একজন সাধারণ ব্যবসায়ী। কিন্তু ১৮৫৭ সালে সহসা তাঁর ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায়। তিনি একদিন স্টক মার্কেটে বারো লাখ পাউন্ড মুনাফা করে ফেললেন। তারপর তাই দিয়ে তিনি কিনে ফেললেন সাপ্তাহিক ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এর শেয়ার, তৈরি করলেন দুটো ঘোড়দৌড়ের মাঠ। টাকা আসতে লাগল স্রোতের মতো। তারপর সেই সুবাদে তিনি হয়ে গেলেন মার্কিন ধনকুবেরদের একজন। মেয়ে জিনাকে বিয়ে দিয়ে দিলেন ইংল্যান্ডের লর্ড পরিবারের ছেলে লর্ড র‍্যান্ডলফ্ চার্চিলের (Lord Randolph Churchill) সঙ্গে। এই দম্পতিরই প্রথম সন্তান উইনস্টন চার্চিল। জন্ম ১৮৭৪ সালের ৩০ নভেম্বর।

তাঁর জন্মের-ঘটনা নিয়ে পরবর্তী সময়ে চার্চিল রসিকতা করে বলতেন, যদি তাঁর মাতামহ সহসা সেদিন বারো লক্ষ পাউন্ড মুনাফা অর্জন করতে না পারতেন, তা হলে হয়তো পৃথিবীতে প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলেরও জন্ম হতো না। সেদিনের সেই সামান্য ঘটনাই পরবর্তীকালে জন্ম দিয়েছে এমন চমৎকার ইতিহাসের। ঘটনা ছিল আরো। মানবসন্তান ভূমিষ্ঠ হয় সাধারণত দশ মাসে। কিন্তু চার্চিলের জন্ম হয়েছিল সাত মাসে। সাত মাসে ভূমিষ্ঠ শিশুর বেঁচে ওঠা কঠিন ব্যাপার। কিন্তু চার্চিল বেঁচে উঠেছিলেন।

চার্চিল জন্মসূত্রে অর্ধেক আমেরিকান, হলেও তিনিই কালক্রমে হয়ে ওঠেন ইতিহাসের পাতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একজন ইংরেজ ব্যক্তিত্ব।

খুব ছোটবেলা থেকেই চার্চিলের শখ ছিল সৈনিক হওয়ার। ছেলেবেলায় তিনি প্রায়ই দিনভর পুতুল-সৈনিকদের সাথে খেলা করতেন। অবশেষে এই খেলাই বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করে। তিনি স্যান্ডহার্স্টের বিখ্যাত সামরিক কলেজ থেকে ডিগ্রি পাশ করে যোগ দেন ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে। সাহসিকতা ও বীরত্বের জন্য লাভ করেন প্রচুর খ্যাতি ও সম্মান। তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। যুদ্ধক্ষেত্রে সুনাম অর্জন করলেও তাঁর সত্যিকার নেশা ছিল সংবাদিকতায়। তাই তিনি সেনাবাহিনীর চাকরির পাশাপাশি সংবাদিকতার সাথে ও জড়িয়ে পড়েন। তিনি ডেইলি গ্রাফিক (Daily Graphic) পত্রিকার সংবাদদাতা নিযুক্ত হন। প্রতিটি সংবাদের জন্য পাঁচ পাউন্ড পারিশ্রমিকের বিনিময়ে পত্রিকায় তিনি যুদ্ধক্ষেত্রের সংবাদ পাঠাতেন।

এরপর ১৮৯৬ সালে তাঁর রেজিমেন্টের পোস্টিং হয় ভারতবর্ষে। তিনি ভারতবর্ষে এসে খেলাধুলার দিকেও মন দেন। শেখেন পোলো খেলা। এ ছাড়া অবসর সময়ে তিনি ইতিহাস, দর্শন ও বিজ্ঞান বিষয়ক বইপত্রও পড়াশোনা করতে থাকেন।

এরপর উত্তর-পশ্চিম রণাঙ্গনে যুদ্ধ শুরু হলে তিনি ‘ডেইলি টেলিগ্রাফ’ (Daily Telegraph) এবং ‘এলাহাবাদ পাইওনিয়ার’ (Allahabad Pioneer) পত্রিকায় যুদ্ধ বিষয়ক সংবাদ প্রেরণ করতে থাকেন।

১৮৯৮ সালে সুদান অভিযানে অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানানোর অপরাধে তাঁর সেনাবাহিনীর চাকরি চলে যায়। তখন তিনি ‘মর্নিং পোস্ট’ (Morning Post) পত্রিকায় যুদ্ধ বিষয়ক সংবাদদাতা হিসেবে যোগ দেন। ২৫০ পাউন্ড মাসিক বেতনের এই চাকরি নিয়ে তিনি চলে যান দক্ষিণ আফ্রিকায়। দিতে লাগলেন প্রচণ্ড সাহসিকতা ও বুদ্ধির পরিচয়। ঢুকে পড়তে লাগলেন শত্রুর এলাকায়। সংগ্রহ করে আনতে লাগলেন সব বিশ্বকাঁপানো গরম গরম খবর।

শুধু সংবাদই তিনি পাঠাতেন না, মাঝে মধ্যে তিনি নিজেও হয়ে যেতেন এমনই সব চমৎকার খবরের নায়ক। একবার তিনি নিজেই দক্ষিণ আফ্রিকার যুদ্ধক্ষেত্রে বুওর সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে যান। তাঁর এই ধরা পড়ে যাওয়ার খবরই মর্নিং পোস্টে ছাপা হয় ব্যানার হেডলাইনে।

তারপর তিনি যখন আবার জেলখানা থেকে সবার চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে আসেন, তখন সেই সংবাদকে আরও বেশি গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হয় পত্রপত্রিকায়। আসলে সংবাদটিও ছিল গুরুত্বপূর্ণ। যুদ্ধেক্ষেত্র থেকে বন্দি, পালিয়ে যাওয়া বিশেষ করে তিনি যখন ব্রিটেনের একজন লর্ডের ছেলে, সেটা কি তখন সামান্য খবর? তাই বুওয়রের সামরিক কর্তৃপক্ষ পলাতক চার্চিলকে জীবিত কিংবা মৃত অবস্থায় ধরে দেওয়ার জন্য ঘোষণা করলেন এক বিরাট অঙ্কের অর্থ পুরস্কার। কিন্তু ধরা সম্ভব হয়নি চার্চিলকে। তাঁকে পাকড়াও করার জন্য প্রতিটি স্টেশনে, সেতুসমূহে মোতায়েন করা হয়েছিল বুওয়রের সেনাবাহিনী। কিন্তু তবু কেউ তাঁর নাগাল পায়নি। কারণ, তিনি তো কোনো সাধারণ গাড়িতেই আরোহণ করেননি। তিনি জানতেন, তাঁকে ধরার জন্য ফাঁদ পাতা হয়েছে, তাই তিনি কোনো সোজা আর সহজ পথে না গিয়ে কখন পদব্ৰজে কখনও মালগাড়িতে করে পাড়ি দেন কয়েক শত কিলোমিটার পথ। রাতের বেলা জঙ্গলে, শস্যক্ষেতে অথবা কয়লার খনিতে রাত কাটাতেন। যখন তিনি ক্লান্ত শরীরে হেঁটে পাড়ি দিতেন আফ্রিকার বিস্তীর্ণ মাঠ, তখন ক্ষুধার্ত শকুনেরা তাঁর মাথার ওপরে চক্কর দিত। হয়তো তারা ভাবত এখুনি তিনি ক্লান্ত দেহ নিয়ে পড়ে গিয়ে প্রাণহীন মৃতদেহে পরিণত হবেন আর তারা তাঁর মাংস খেয়ে উদরপূর্তি করবে।

এ-রকম এক দুর্গম পথ পাড়ি দিয়েই তিনি অবশেষে এসে উঠলেন স্বদেশের মাটি—লন্ডনে। তারপর তাঁর পলায়নের এই রোমাঞ্চকর কাহিনী লিখলেন মর্নিং পোস্টের পাতায়। সমগ্র দেশবাসী তাঁর এই কাহিনী পড়ে স্তম্ভিত হয়ে গেলেন। ১৮৯৯ সালে প্রকাশিত এই কাহিনী সারা বছরের শ্রেষ্ঠ কাহিনী বলে স্বীকৃতি লাভ করে।

লন্ডনবাসী তাঁকে জাতীয় বীরের মর্যাদা দিয়ে সংবর্ধনা দান করল। লক্ষ লক্ষ লোক তাঁর বক্তৃতা শোনার জন্য সমবেত হলো। তাঁকে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয় পার্লামেন্টের সদস্য।

এরপর তিনি ক্রমে রাজনীতির সাথেও জড়িয়ে পড়েন। তাঁর পিতাও ছিলেন টোরি দলের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা। চার্চিল পিতার পরামর্শেই ঐ দলের সমর্থনে দি হুলিগান্‌স্‌ (The Hooligans) ছদ্মনামে একটি আধারাজনৈতিক দল গঠন করলেন। এর লক্ষ ছিল টোরি দলের আদর্শের ছত্রছায়ায় সমাজ সংস্কারমূলক কাজ করা।

১৯১১ সালে তিনি প্রথম লর্ড অব অ্যাডমিরালটি মনোনীত হন এবং ব্রিটিশ নৌবাহিনীর প্রচুর উন্নতি সাধন করেন। ১৯১১ সালে ৪ আগস্ট প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে তাঁর অধীনে ব্রিটিশ নৌবাহিনী উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়।

১৯২৯ সালে লেবার পার্টি ক্ষমতায় গেলেও কিছুদিনের মধ্যেই ঐ সরকারের পতন ঘটে এবং একটি জাতীয় সরকার গঠিত হয়। এই সরকারের প্রধান নির্বাচিত হন চার্চিল। এই সময় থেকে তিনি দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ পর্যন্ত ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলেন।

চার্চিলের জীবনের মূলমন্ত্র ছিল—ভয় দেখে ভীত না হওয়া। তিনি কেমন দুঃসাহসী ছিলেন তার আরেকটি প্রমাণ পাওয়া যায় অন্য একটি ঘটনা থেকে। ১৯২১ সালে তিনি ৪৫টি বক্তৃতা দেয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়ে আমেরিকায় যান। কিন্তু সেখানে গিয়েই তিনি স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের পুলিশবাহিনীসূত্রে খবর পান, তাঁকে হত্যা করার জন্য ঘাতক নিয়োগ করা হয়েছে।

কিন্তু পুলিশের নিষেধ সত্ত্বেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি তাঁর বক্তৃতাকর্মসূচি শেষ করেন। তবু বিপদের কাছে, ভয়ভীতির কছে তিনি মাথা নত করেননি। তাঁর জীবনের আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিশেষত্ব ছিল এই যে, তিনি ছিলেন প্রবল ইচ্ছাশক্তির অধিকারী। যৌবনে তাঁর লেখাপড়ার দৌড় বেশি ছিল না। একমাত্র মাতৃভাষা ইংরেজি ছাড়া অন্য কোনো ভাষাশিক্ষার প্রতিই তাঁর আগ্রহ ছিল না। বিদেশি ভাষা এবং অঙ্কের প্রতি বিরাগ ছিল বলে ক্লাসে শিক্ষকদের কাছে তিনি ছিলেন অপদার্থ ছেলে বা ব্যাড বয় বলে পরিচিত। অথচ সেই তিনিই পরবর্তীকালে চার বছর ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী এবং পরে গৌরবের সাথে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

স্যান্ডহার্স্ট সামরিক কলেজের ভর্তি পরীক্ষাতে তিনি তিন-তিনবার ফেল করেও হাল ছাড়েননি। পরে চতুর্থবারে পাস করে সেখানে ভর্তি হবার সুযোগ লাভ করেন।

সামরিক কলেজ থেকে পাস করার পর তিনি রাজকীয় বাহিনীতে যোগদান করেন। এই সময় তিনি ভারতে মোতায়েন একটি বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন।

এবার তিনি নতুন করে পড়াশোনায় মন দিলেন। জীবনী, ইতিহাস, দর্শন, অর্থনীতি ইত্যাদি বিষয়ের ওপর বই পাঠানোর জন্য ইংল্যান্ডে তিনি মাকে চিঠি লিখলেন। কাজের ফাঁকে ফাঁকে ডুবে যেতেন পড়াশোনায়। তিনি অ্যারিস্টটল থেকে শেকসপিয়ার পর্যন্ত সব কিছু পড়ে শেষ করে ফেললেন। এই সময়েই তিনি জ্বালাময়ী ভাষায় বক্তৃতাদেয়ার বিষয়টিও আয়ত্ত করে ফেললেন।

দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় তিনি হয়েছিলেন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী। এই সময় তিনি দিনে ১৪ থেকে ১৮ ঘণ্টা সময় পর্যন্ত কাজ করতেন। কোনো কোনো সময় এই অবিরাম কাজ চলত সারা সপ্তাহ জুড়ে। কিন্তু তিনি কখনও ক্লান্তি বোধ করতেন না। এই অবিরাম কাজ করার ক্ষেত্রে তাঁর আরেকটি মজার কৌশল ছিল। তিনি কাজ করতে করভেই জিরিয়ে নিতেন, এবং ক্লান্ত হয়ে যাবার আগেই পূর্ণ বিশ্রাম নিতেন যাতে পূর্ণ শক্তি ক্ষয় না হয়।

তিনি সকাল সাড়ে দশটার আগে শয্যা ছেড়ে উঠতেন না। কিন্তু বিছানা ছাড়ার আগেই তিন ঘণ্টা ধরে টেলিফোন করতে থাকতেন এবং চিঠিপত্রগুলো লিখিয়ে নিতেন। তিনি দুপুর একটার সময় মধ্যাহ্নভোজ শেষ করতেন। তারপর পুরো এক ঘণ্টার বিশ্রাম। তারপর আবার কাজের শুরু। পাঁচটার সময় আবার আধ ঘণ্টা বিশ্রাম। রাতে খাওয়ার পর প্রায়ই অধিক রাত পর্যন্ত ডুবে থাকতেন কাজে।

রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এবং দূরদর্শিতা ছিল তাঁর প্রায় আলৌকিক। ব্রিটেনের তথা সারা বিশ্বের রাজনৈতিক মহল যখন হিটলার সম্পর্কে সচেতন না হয়ে অন্য বিষয় নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছিলেন, তখনই চার্চিল হিটলারের দুরভিসন্ধি সম্পর্কে ব্রিটিশ জনগণকে সাবধান করে দিতে থাকেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি ভবিষ্যতে একটি ভয়াবহ যুদ্ধের জন্য দেশবাসীকে প্রস্তুত থাকারও পরামর্শ দিয়েছিলেন। ব্রিটেন যদি তখন তাঁর ভবিষ্যদ্বাণীর প্রতি গুরুত্ব দিত এবং সাড়া দিত, তা হলে হয়তো দ্বিতীয় মহাযুদ্ধই হতো না।

কিন্তু দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ সত্যি সত্যি হয়েছিল। ১৯৪০ সালের ১০ মে জার্মানি যুদ্ধ ঘোষণা করে বসে। এই দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময়ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি অপূর্ব দক্ষতার পরিচয় দেন।

চার্চিল ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ১৯৪০ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের প্রায় গোটা সময়পরিসর জুড়েই। তিনি অবশ্য ১৯৫১ সালে একবার প্রধানমন্ত্রীও হয়েছিলেন।

১৯৫২ সালের ৬ রাজা ৬ষ্ঠ ফেব্রুয়ারি জর্জ মারা যান। নতুন রানি হন দ্বিতীয় এলিজাবেথ। এই সময় থেকেই চার্চিল অবসরগ্রহণ করেন এবং তাঁকে ১৯৫৩ সালের ২৪ এপ্রিল নাইট উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

১৯৬২ সালে মার্কিন সরকার তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দান করে। তাঁর রচিত “দি সেকেন্ড ওয়ার্ল্ড ওয়ার’ (The Sccond World War) গ্রন্থের জন্য

তিনি ১৯৫৫ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৬৫ সালে বিশ্বের অন্যতম বিজ্ঞ এই রাজনীতিবিদের মৃত্যু হয়।

সকল অধ্যায়

১. হযরত মুহাম্মদ (দঃ) (৫৭০-৬৩২) – সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী
২. জরথুশত্র (৬২৮-৫৫১ খ্রি. পূ.) – পারশি ধর্মের প্রবর্তক
৩. বর্ধমান মহাবীর (৫৯৯–৫২৭ খ্রি. পূ.) – জৈন দর্শন ও ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা
৪. গৌতম বুদ্ধ (৫৬৩–৪৮৩ খ্রি. পূ.) – বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক
৫. কনফুসিয়াস (৫৫১–৪৭৯ খ্রি. পূ.) – চীনের প্রাচীনতম ধর্মমতবাদের প্রবর্তক
৬. সক্রেটিস (আনু. ৪৬৯–৩৯৯ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্রের আদিজনক
৭. প্লেটো (৪২৮–৩৪৭ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্র যাঁর হাতে পেয়েছিল পূর্নাঙ্গরূপ
৮. ডায়োজিনিস (৪১২–৩২২ খ্রি. পূ.) – একনিষ্ঠ জ্ঞান সাধক
৯. অ্যারিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খ্রি. পূ.) – যুক্তিশাস্ত্রের জনক
১০. যিশু খ্রিস্ট (আনু. ৬ খ্রি. পূ.–আনু. ২৯ খ্রি.) – খ্রিস্টানধর্মের প্রবর্তক
১১. অতীশ দীপঙ্কর (৯৮২–১০৫৩) – জ্ঞানসাধক বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক
১২. গুরু নানক (১৪৬৯–১৫৩৮) – শিখ ধর্মমতের প্রবর্তক
১৩. মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬) – ধর্মের সংস্কারক এবং ‘প্রটেস্টানিজম’ মতবাদের স্রষ্টা
১৪. মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩) – বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তক
১৫. রামমোহন রায় (১৭৭২–১৮৩৩) – ভারতবর্ষে নবযুগের প্রবর্তক
১৬. রামকৃষ্ণ পরমহংস (১৮৩৬–১৮৮৬) – ‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আমি ঈশ্বরকে দর্শন করেছি’
১৭. বারট্রান্ড রাসেল (১৮৭২–১৯৭০ ) – যুদ্ধ-বিরোধী ও মানবতাবাদী দার্শনিক
১৮. থ্যালিস (আনু. ৬২৪–৫৬৫ খ্রি. পূ.) – বিজ্ঞানশাস্ত্রের আদিপুরুষ
১৯. পিথাগোরাস (আনু. ৫৮২–৫০৭ খ্রি. পূ.) – তিনি বলেছিলেন—পৃথিবী গোলাকার
২০. হিপোক্র্যাটিস (আনু: ৪৬০–৩৭০ খ্রি. পূ.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আদিজনক
২১. আর্কিমিডিস (২৮৭–২১২ খ্রি. পূ.) – ঊর্ধ্বমুখী বল সূত্রের আবিষ্কারক
২২. ক্লডিয়াস টলেমি (১০০–১৮০ খ্রি.) – জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রথম কোষগ্রন্থ প্রণেতা
২৩. ক্লডিয়াস গ্যালেন (১৩১–২০১ খ্রি.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আধুনিক পদ্ধতির আদি জনক
২৪. ইবনে সিনা (৯৮০–১০৩৭) – জ্ঞানসাধনায় কাটিয়েছিলেন সমগ্র জীবন
২৫. কোপারনিকাস (১৪৭৩–১৫৪৩) – আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্ৰবক্তা
২৬. জিওর্দানো ব্রুনো (আনু. ১৫৪৮–১৬০০ ) – সত্যপ্রচারের অপরাধে যাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল
২৭. গ্যালিলিও গ্যালিলি (১৫৬৪-১৬৪২) – যাঁর গাণিতিক পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি
২৮. লিওয়েন হুক (১৬৩২–১৭৩৩) – মুদি দোকানদার থেকে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী
২৯. আইজাক নিউটন (১৬৪২–১৭২৭) – মাধ্যাকর্ষন শক্তির আবিষ্কারক
৩০. রিচার্ড আর্করাইট (১৭৩২–১৭৯২) – আধুনিক বস্ত্রশিল্পে বৈপ্লবিক ধারা প্রবর্তক
৩১. উইলিয়াম হার্শেল (১৭৩৮–১৮২২) – ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কারক
৩২. লরেঁ লাভোয়সিয়ের (১৭৪৩–১৭৯৪) – রসায়নশাস্ত্রের জনক
৩৩. মাইকেল ফ্যারাডে (১৭৯১-১৮৬৭) – তাড়িত-চুম্বক বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা
৩৪. চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) – প্রাণিজগতের বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যাদাতা
৩৫. লুই পাস্তুর (১৮২২–১৮৯৫) – জীবাণু আর জলাতঙ্ক রোগ প্রতিষেধকের আবিষ্কারক
৩৬. আলফ্রেড নোবেল (১৮৩৩–১৮৯৬) – যাঁর নামে দেয়া হয় নোবেল পুরস্কার
৩৭. আলভা এডিসন (১৮৪৭–১৯৩১) – সর্বাধিক আবিষ্কারের জনক
৩৮. জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৯–১৯৩৭) – যিনি বলেছিলেন গাছেরও প্রাণ আছে
৩৯. মাদাম কুরি (১৮৬৭–১৯৩৪) – সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহিলা বিজ্ঞানী
৪০. মার্কোনি (১৮৭৪–১৯৩৭) – বেতারযন্ত্রের আবিষ্কারক
৪১. আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯–১৯৫৫) – আপেক্ষিক তত্ত্বের জনক
৪২. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১–১৯৫৫) – পেনিসিলিনের আবিষ্কারক
৪৩. হোমার (আনু. ৭০০-? খ্রি. পূ.) – বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দুটি মহাকাব্যের রচয়িতা
৪৪. ঈশপ (আ. কা. ৬২০–৫৬০ খ্রি. পূ.) – কালজয়ী নীতিগল্পকার
৪৫. সোফোক্লেস (আনু. ৪৯৫-৪০৬ খ্রি. পূ.) – গ্রিক ট্র্যাজেডি নাট্যধারার রূপকার
৪৬. হেরোডোটাস (আনু. ৪৮৫–৪২৫ খ্রি. পূ.) – ইতিহাসশাস্ত্রের জনক
৪৭. অ্যারিস্টোফানিস (আনু. ৪৪৪–৩৮৫ খ্রি. পূ.) – যাঁর সাহিত্যকর্মে আর্তমানবতার কথা প্রতিফলিত
৪৮. মহাকবি কালিদাস (আনু. ৫৭০-৬৫০ খ্রি.) – সংস্কৃতি সাহিত্যের অমর কবি
৪৯. লেওনার্দো দা ভিঞ্চি (১৪৫২–১৫১৯) – সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী
৫০. মিকেলাঞ্জেলো (১৪৭৫–১৫৬৪) – পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাস্কর শিল্পী
৫১. তানসেন (১৫০৬–১৫৮৫) – কিংবদন্তির গায়ক
৫২. শেকসপিয়ার (১৫৬৪-১৬১৬) – বিশ্বসাহিত্যের কালজয়ী নাট্যকার
৫৩. ভলতেয়ার (১৬৯৪-১৭৭৮) – বিখ্যাত ফরাসি চিন্তাবিদ
৫৪. জঁ-জাক্ রুসো (১৭১২–১৭৭৮) – ফরাসি বিপ্লবের রূপকার
৫৫. লর্ড বায়রন (১৭৮৮–১৮২৪) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি
৫৬. ভিক্টর হুগো (১৮০২-১৮৮৫) – ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৭. ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন (১৮০৫–১৮৭৫) – যাঁকে বলা হয় রূপকথার জাদুকর
৫৮. চার্লস ডিকেন্স (১৮১২–১৮৭০) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৯. ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯-১৮৯২) – মার্কিন সাহিত্যের যুগ-প্রবর্তক কবি
৬০. লিয়েফ তলস্তোয় (১৮২৮–১৯১০) – বিশ্বের মহান সাহিত্যিকদের অন্যতম
৬১. জুল ভের্ন (১৮২৮–১৯০৫) – কল্পবিজ্ঞান কাহিনীর স্রষ্টা
৬২. মার্ক টোয়েন (১৮৩৫–১৯১০) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রসস্রষ্টা
৬৩. জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৫৬–১৯৫০) – যিনি প্রথম নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন
৬৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১) – শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনীষা, পৃথিবীর মহত্তম সাহিত্য-ব্যক্তিত্ব
৬৫. ম্যাক্সিম গোর্কি (১৮৬৮–১৯৩৬) – যাঁর সাহিত্যকর্মের প্রধান উপজীব্য গণমানুষের কথা
৬৬. হেলেন কেলার (১৮৮০-১৯৬৮) – যাঁর খ্যাতিকে নেপোলিয়নের সঙ্গে তুলনা করা হতো
৬৭. আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (১৮৯৮–১৯৬১) – জীবনবাদী মার্কিন কথাসাহিত্যিক
৬৮. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯–১৯৭৬) – বাংলার বিদ্রোহী কবি
৬৯. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২–১৭৯৯) – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৭০. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১) – ইতিহাসের কিংবদন্তির মহানায়ক
৭১. জুসেপ্পে গারিবলদি (১৮০৭–১৮৮২) – ইতালির জনক বলে যাঁর খ্যাতি
৭২. আব্রাহাম লিংকন (১৮০৯-১৮৬৫) – যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্রীতদাসপ্রথা রহিত করেছিলেন
৭৩. অটো ফন বিসমার্ক (১৮১৫–১৮৯৮) – জার্মান সাম্রাজ্যের স্থপতি
৭৪. মহাত্মা গান্ধি (১৮৬৯–১৯৪৮) – ‘সবকো সুমতি দে ভগবান’
৭৫. কমরেড লেনিন (১৮৭০–১৯২৪) – বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা
৭৬. উইনস্টন চার্চিল (১৮৭৪–১৯৬৫) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ডাকসাইটে প্রধানমন্ত্রী
৭৭. জোসেফ স্ট্যালিন (১৮৭৯–১৯৫৩) – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়েনের ‘লৌহমানব’
৭৮. কামাল আতাতুর্ক (১৮৮১–১৯৩৮) – নব্য-তুরস্কের জনক
৭৯. ডি ভ্যালেরা (১৮৮২-১৯৭৫) – আয়ারল্যান্ডের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৮০. জওহরলাল নেহরু (১৮৮৯-১৯৬৪) – ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
৮১. আইসেনহাওয়ার (১৮৯০-১৯৬৯) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক
৮২. শার্ল দ্য গল (১৮৯০-১৯৭০) – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা
৮৩. হো-চি-মিন (১৮৯০-১৯৬৯) – ভিয়েতনামের মুক্তিদাতা পুরুষ
৮৪. মার্শাল টিটো (১৮৯২–১৯৮০) – জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা
৮৫. মাও-সে-তুং (১৮৯৫–১৯৭৬) – চীন সাধারণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা
৮৬. সুভাষচন্দ্র বসু (১৮৯৭–১৯৪৫) – ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’
৮৭. জন এফ কেনেডি (১৯১৭–১৯৬৩) – গুপ্তঘাতকের হাতে যাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছিল
৮৮. ইন্দিরা গান্ধি (১৯১৭–১৯৮৪) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
৮৯. নেলসন ম্যান্ডেলা (১৯১৮) – দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তিদাতা পুরুষ
৯০. শেখ মুজিবর রহমান (১৯২০–১৯৭৫) – বাংলাদেশের জাতির জনক
৯১. প্যাট্রিস লুমুম্বা (১৯২৫-১৯৬১) – কঙ্গোর মুক্তিদাতা পুরুষ
৯২. মার্কো পোলো (১২৫৬–১৩২৩) – দুঃসাহসিক অভিযাত্রী
৯৩. ক্রিস্টোফার কলম্বাস (আনু. ১৪৪৬-১৫০৬) – আমেরিকার আবিষ্কারক
৯৪. ডেভিড লিভিংস্টোন (১৮১৩-১৮৭৩) – আফ্রিকার আবিষ্কারক
৯৫. উইলিয়াম জোন্স (১৭৪৬–১৭৯৪) – এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৬. ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (১৮২০–১৯১০) – আধুনিক ‘নার্সিং’ বৃত্তির অগ্রপথিক
৯৭. হেনরি ডুনান্ট (১৮২৮–১৯১০) – রেডক্রস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৮. ব্যাডেন পাওয়েল (১৮৫৭–১৯৪১) – বয়স্কাউট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা
৯৯. মাদার তেরেসা (১৯১০–১৯৯৭) – প্রেম, করুণা ও ধর্মের মূর্ত প্রতিমা
১০০. অ্যাডাম স্মিথ (১৭২৩–১৭৯০) – রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিজ্ঞানের জনক

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন