হেরোডোটাস (আনু. ৪৮৫–৪২৫ খ্রি. পূ.) – ইতিহাসশাস্ত্রের জনক

ভবেশ রায়

ইতিহাসশাস্ত্রের জনক বলে যিনি পরিচিত, তাঁর নাম হেরোডোটাস (Herodotus)। আজ যে ইতিহাসশাস্ত্র বিশ্ব জুড়ে এত বিস্তৃতি লাভ করেছে, তার আদি সূত্রপাত হয়েছিল মহাজ্ঞানী হেরোডোটাসের হাতেই।

তিনিই সর্বপ্রথম পঞ্চম খ্রিস্টপূর্বাব্দে গ্রিক-পার্শিয়ান যুদ্ধের ঘটনাবলিকে লিপিবদ্ধ করেন এবং তখন থেকেই শুরু হয় ঐতিহাসিক ঘটনার বিবরণী সংরক্ষণের প্রথা। শুরু হয় ইতিহাস রচনার কাজ।

মহাজ্ঞানী হেরোডোটাসের জন্ম ৪৮৫ খ্রিস্টপূর্বে। এশিয়া মাইনরের হেলিকারনাসাসের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে তাঁর জন্ম। শিক্ষাজীবনও এখানেই শুরু হয়। কিন্তু সারাজীবন জন্মভূমিতে কাটানো সম্ভব হয়নি হেরোডোটাসের।

যৌবনের প্রারম্ভেই তিনি বহিশত্রু টাইউরানানি লিগদামিসদের দ্বারা বিতাড়িত হন। কিন্তু কয়েক বছর পর আবার নিজের শক্তিতেই ফিরে আসেন স্বদেশভূমিতে। প্রতিষ্ঠা করেন প্রশাসনিক সরকার।

কথিত আছে, সেকালের প্রখ্যাত মহাকবি পানিয়াসিস-এর সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তাঁর সঙ্গে একত্রে তিনি দীর্ঘকাল সামোস দ্বীপেও অবস্থান করেছিলেন। কিন্তু দূরে অবস্থান করলেও দেশের প্রতি, হেলিকারনাসাসের প্রতি ছিল তাঁর সার্বক্ষণিক আকর্ষণ। তিনি দূরে বসেই স্বদেশের জন্য কাজ করে যেতেন।

কিন্তু তবু দুর্ভাগ্য হেরোডোটাসের, দেশের জন্য এত কাজ করেও তিনি দেশবাসীর মন জয় করতে পারেননি। হেলিকারনাসাসের অধিবাসীদের কাছে তিনি দিনদিনই যেন অপ্রিয় হয়ে উঠতে থাকেন। তাঁর জনপ্রিয়তা হ্রাস পেতে থাকে দ্রুত। তখন বাধ্য হয়েই তিনি স্বদেশত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি চিরদিনের জন্য হেলিকারনাসাস ছেড়ে চলে যান অ্যাথেন্সে। অবশ্য তিনি অ্যাথেন্সেও সবসময় ছিলেন না। এখানকার নতুন উপনিবেশ দক্ষিণ ইতালির থুরি নগরীতে তিনি বাস করতেন।

কথিত আছে, হেরোডোটাস তাঁর বাকি জীবন এখানেই অতিবাহিত করেন। তিনি মারা যান ৪২৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে। মৃত্যুর পর এখানেই তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়।

হেরোডোটাস ছিলেন প্রকৃতপক্ষে জন্মগতসূত্রে এশিয়ান গ্রিক। বাল্য ও যৌবনের কিছু সময় গ্রিসে কাটালেও তাঁর জীবনের পূর্ণ বিকাশ ঘটে এথেন্সে। হেরোডোটাসের সাথে সে-জন্যই এথেন্সের নাম জড়িয়ে আছে। অনেকে তাঁকে এথেন্সের অধিবাসী বলেই জানেন।

হেরোডোটাস ইতিহাসকেও বিজ্ঞান বলে মনে করতেন। বিজ্ঞানের মতোই ঐতিহাসিক তথ্যাবলি ও হাজারো প্রশ্নের সমাধানের ভিত্তিতে এবং অনুসন্ধানের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে হয়। তারপর বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে আসতে হয় সঠিক সিদ্ধান্তে। ঠিক বিজ্ঞানের মতো করে। যেমন, গ্রিক-পার্শিয়ান যুদ্ধ। এই যুদ্ধ কেন সংঘটিত হয়েছিল? এই যুদ্ধে কোন্ পক্ষ কী আদর্শ ও পটভূমিকায় যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিল, কী কৌশলে এই যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়েছিল—এসব প্রশ্নের সমাধান বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিতেই করতে হয়। আর তাই ইতিহাসকেও বিজ্ঞান থেকে আলাদা করে দেখা যায় না।

গ্রিক-পার্শিয়ান যুদ্ধের এই ইতিহাস লেখার কোনো ইচ্ছে ছিল না হেরোডোটাসের। তিনি শুধু এই যুদ্ধের স্থান ও পটভূমির একটি ভৌগোলিক বর্ণনা লিপিবদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। তাঁর আগে মাইলেটাসের হেকাটাকাস নামের এক পণ্ডিত ‘পেরিয়েগেসিস’ নামের একটি বই লিখেছিলেন। এতে তিনি ভূমধ্যসাগরের অনেক দ্বীপ, দেশ, সাগর ও উপসাগরের বর্ণনা তুলে ধরেছিলেন। হেরোডোটাসের ইচ্ছে ছিল, তিনিও হেকাটাকাসের অনুকরণেই, তবে এর চেয়ে উন্নত একটি গ্রন্থ রচনা করবেন, যার ভিত্তি হবে গ্রিক- পার্শিয়ান যুদ্ধ।

তাঁর ইতিহাসগ্রন্থ ‘হিস্টোরিস’ (Histories)-এর শুরুতেই তিনি লিপিবদ্ধ করেছেন সেইকালে এশিয়া মাইনরের সর্বাপেক্ষা বৃহৎ গ্রিক সাম্রাজ্য লিডিয়ার রাজা ক্রোসাসের কথা। রাজা ক্রোসাস কেমন করে গুরুত্বপূর্ণ হেলিস নদী কৌশলে অতিক্রম করেছিলেন, তার কথা। তিনি বলেন, রাজা ক্রোসাস এই বিশাল নদীতে একটি শক্ত সেতু তৈরি করে তবেই তা পার হতে সক্ষম হয়েছিলেন। আর এই শক্ত সেতুটি তৈরি করতে সহযোগিতা করেছিলেন আদি বিজ্ঞানী মাইলেটাসের থ্যালেস। মাইলেটাস এবং তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল সেকালে শিক্ষা ও শিল্পসাহিত্যে ছিল শীর্ষস্থানে। এই মাইলেটাস থেকেই শিক্ষা ও সংস্কৃতির ধারা গ্রিক সাম্রাজ্যে প্রবেশ করে। সেকালে থ্যালেস কেবল একজন বিজ্ঞানীই নন, মাইলেটাসের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিও ছিলেন।

সেকালে এ অঞ্চলের আরেক বিখ্যাত ব্যক্তি ছিলেন হেকাটাকাস। তিনি ছিলেন একজন শ্রেষ্ঠ পরিব্রাজক এবং গদ্যলেখকও।

হেকাটাকাসের কথা হেরোডোটাস তাঁর গ্রন্থে বহুবার উল্লেখও করেছেন। তাঁর মতোই তিনিও দেশের ঐতিহাসিক বিবরণ দিতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট দেশের ও কালের জনগণের মুখের কথার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেছেন। তারা যা বলেছে, তাকেই সত্য বলে ধরে নিয়ে তিনি লিপিবদ্ধ করেছেন গ্রন্থে।

একবার তিনি কৃষ্ণসাগরেও ভ্রমণে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সফরের পেছনে তাঁর কোনো ঐতিহাসিক তথ্যসংগ্রহের ব্যাপার ছিল না। তিনি গিয়েছিলেন একান্তই দ্বীপ- দীপান্তরের ভৌগোলিক অবস্থান জানার উদ্দেশ্যে। শুধু কৃষ্ণসাগর নয়, একবার সুদূর মিশরেও গিয়েছিলেন। মিশরে যাওয়ার সময় তিনি হেকাটাকাসের লেখা বইখানাও সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল বইতে আলেকজান্দ্রিয়ার যে ভৌগোলিক বর্ণনা আছে, তা পরীক্ষা করে দেখা। সম্ভব হলে তাকে আরও নিখুঁত এবং উন্নত করা।

হেরোডোটাসের এই মিশর ভ্রমণ সম্পর্কে ফরাসি বিশেষজ্ঞ মি. কামিল সৌরডিল ১৯১০ সালে বলেছেন, হিরোডোটাস সম্ভবত মিশরে প্রবেশ করেছিলেন পশ্চিম বদ্বীপের ক্যানোপাস দিয়ে, ডিসেম্বর মাসে। এই সফরের সময় তিনি মিশরের মেমফিস এবং পিরামিড সন্নিহিত অঞ্চলসমূহও পরিদর্শন করেছিলেন। গিয়েছিলেন নীলনদের তীরে প্রাচীন নগরী থিবস পর্যন্ত।

মিশরের নীলনদে প্রতিবছরই বন্যা হতো আর দুর্ভোগ ডেকে আনত মিশরবাসীর। হেরোডোটাস তাই নীলনদের এই বন্যার বিষয় নিয়েও গবেষণা করেছিলেন। বন্যার কারণসমূহ উল্লেখ করার চেষ্টা করে তিনি বলেছিলেন, নীলনদ যদি কোনো সময় লোহিত সাগরের দিকে সামান্য সরে আসে, তা হলে হয়তো আগামী পাঁচ হাজার বছরের মধ্যে এর মোহনায় জেগে উঠবে একটি নতুন ভূখণ্ড, যার আয়তন হবে বর্তমান মিশরের সমান। হেরোডোটাসের এই অনুমান অবশ্য সত্যি হবার কোনো সম্ভাবনা নেই। এমন একটি নতুন ভূখণ্ড জেগে উঠবার কিংবা নীলনদের সরে আসবারও কোনো লক্ষণ আজ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু তা হলেও সেই প্রাচীনকালেই ভূপৃষ্ঠের গঠন সম্পর্কে এমন চিন্তাভাবনা করা কম কথা নয়।

হেরোডোটাস মিশরের প্রাচীন পিরামিড সম্পর্কেও দিয়েছিলেন এরকম আরেকটা মজার ভুল তথ্য। তিনি পিরামিড অঞ্চল পরিদর্শন করে বলেছিলেন, এই পিরামিডগুলো যতটা প্রাচীন বলে মনে হয়, নিশ্চয়ই ততটা প্রাচীন নয়। কারণ, এই অঞ্চলটা প্রাচীনকালে নীলনদের প্লাবনে ডুবে থাকত। এখানে তাই অত আগে পিরামিড তৈরি করা সম্ভব ছিল না। এগুলো তৈরি হয়েছিল অনেক পরে। হেরোডোটাসের এই অনুমানও যে সত্যি নয়, তা আজ সবাই জানে। কারণ, মিশরের পিরামিডগুলো সত্যি সত্যি সুপ্রাচীনকালেই তৈরি হয়েছিল।

মিশরের প্রচীন প্যাপ্রিমিস নামক স্থানে মিশর-পার্শিয়ানদের যে যুদ্ধ হয়েছিল, হেরোডোটাসের ভ্রমণবৃত্তান্তে তারও বর্ণনা আছে। কিন্তু এই যুদ্ধ কখন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তার অবশ্য কোনো উল্লেখ তিনি করেননি। তবে পরবর্তীকালের গবেষকরা মনে করেন, এই যুদ্ধ সম্ভবত ৪৬০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের কিছু পরে সংঘটিত হয়েছিল।

তিনি মিশর সম্পর্কে আরও বলেছেন, মিশরীয়রাই সর্বপ্রথম সৌরবর্ষ আবিষ্কার করেন। তারাই সর্বপ্রথম সারা বছরকে ১২টি ভাগ করে মাসের সৃষ্টি করেন। তিনি স্বীকার করেছেন, মিশরীয়দের জ্যোতির্বিজ্ঞান গণনা গ্রিকদের চাইতেও উন্নত ছিল।

হেরোডোটাস শুধু দেশ ও অঞ্চলের ঐতিহাসিক বিবরণই লিপিবদ্ধ করেননি, সেসব দেশের জীবজন্তু ও পাখি সম্পর্কেও আগ্রহী ছিলেন। তিনি এমন বহু পশুপাখির নিখুঁত বর্ণনা দিয়ে গেছেন, যাদের অস্তিত্ব আজ লোপ পেয়েছে। এখনকার জীববিজ্ঞানীরাও ওইসব বিলুপ্ত পাখির বিবরণ সংগ্রহের কাজ অব্যাহত হেরোডোটাসের বর্ণনা অনুসারে।

অবশ্য তার কোনো-কোনো বর্ণনা আবার জীববিজ্ঞানের ইতিহাসের সাথে খাপ খায় না। যেমন—তিনি এমন এক জাতের পিঁপড়ের বর্ণনা দিয়েছেন, যেগুলোর আকৃতি ছিল একটি শেয়ালের সমান। বাস্তবে হয়তো এমন দানব-পিঁপড়ার অস্তিত্ব কোথাও ছিল না। তিনি যুদ্ধ-বিগ্রহের বর্ণনার মতোই এসব কথাও লোকের মুখে শুনেই বইতে লিখেছিল। নিজে দেখে পরীক্ষা করে লেখেননি, আর তাতেই এমন তিলের গল্প তাল হয়ে দেখা দিয়েছে।

কিন্তু তাঁর সম্পর্কে মজার ব্যাপার হলো, তিনি ভূগোলবিষয়ে আগ্রহী হলেও শেষ পর্যন্ত যে বিষয়ে গ্রন্থ রচনা করেছিলেন, তা ছিল ইতিহাস। তিনি ভূতত্ত্ব বিষয়ে গবেষণা না করে রচনা করেন গ্রিক-পার্শিয়ান যুদ্ধের কাহিনী। আর তার ফলেই তিনি পরবর্তীকালে পারিচিতি লাভ করেন একজন ঐতিহাসিক হিসেবে।

তিনি গ্রিক-পার্শিয়ান যুদ্ধের শুধু ঐতিহাসিক বর্ণনাই দেননি, এই যুদ্ধের ভিত্তিতে এর ধর্মীয় পরিবেশেরও বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি এই পটভূমিকাতেই প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সুদীর্ঘকালের সম্পর্কের ধারাবাহিক বর্ণনাও দিয়েছেন। তিনি ইতিহাসের ধারাকে দুটো ভাগে বিভক্ত করে দেখিয়েছেন—একটি ঐতিহাসিক পর্ব, অপরটি প্রাচীন প্রাগৈতিহাসিক পর্ব। এ ধরনের বিভাগ তিনিই প্রথম করে গেছেন।

মূলত হেরোডোটাস ছিলেন প্রাচীন গ্রিসের সর্বশ্রেষ্ঠ এবং প্রথম ঐতিহাসিক। এটাই তাঁর শ্রেষ্ঠ পরিচয়।

সকল অধ্যায়

১. হযরত মুহাম্মদ (দঃ) (৫৭০-৬৩২) – সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী
২. জরথুশত্র (৬২৮-৫৫১ খ্রি. পূ.) – পারশি ধর্মের প্রবর্তক
৩. বর্ধমান মহাবীর (৫৯৯–৫২৭ খ্রি. পূ.) – জৈন দর্শন ও ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা
৪. গৌতম বুদ্ধ (৫৬৩–৪৮৩ খ্রি. পূ.) – বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক
৫. কনফুসিয়াস (৫৫১–৪৭৯ খ্রি. পূ.) – চীনের প্রাচীনতম ধর্মমতবাদের প্রবর্তক
৬. সক্রেটিস (আনু. ৪৬৯–৩৯৯ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্রের আদিজনক
৭. প্লেটো (৪২৮–৩৪৭ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্র যাঁর হাতে পেয়েছিল পূর্নাঙ্গরূপ
৮. ডায়োজিনিস (৪১২–৩২২ খ্রি. পূ.) – একনিষ্ঠ জ্ঞান সাধক
৯. অ্যারিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খ্রি. পূ.) – যুক্তিশাস্ত্রের জনক
১০. যিশু খ্রিস্ট (আনু. ৬ খ্রি. পূ.–আনু. ২৯ খ্রি.) – খ্রিস্টানধর্মের প্রবর্তক
১১. অতীশ দীপঙ্কর (৯৮২–১০৫৩) – জ্ঞানসাধক বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক
১২. গুরু নানক (১৪৬৯–১৫৩৮) – শিখ ধর্মমতের প্রবর্তক
১৩. মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬) – ধর্মের সংস্কারক এবং ‘প্রটেস্টানিজম’ মতবাদের স্রষ্টা
১৪. মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩) – বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তক
১৫. রামমোহন রায় (১৭৭২–১৮৩৩) – ভারতবর্ষে নবযুগের প্রবর্তক
১৬. রামকৃষ্ণ পরমহংস (১৮৩৬–১৮৮৬) – ‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আমি ঈশ্বরকে দর্শন করেছি’
১৭. বারট্রান্ড রাসেল (১৮৭২–১৯৭০ ) – যুদ্ধ-বিরোধী ও মানবতাবাদী দার্শনিক
১৮. থ্যালিস (আনু. ৬২৪–৫৬৫ খ্রি. পূ.) – বিজ্ঞানশাস্ত্রের আদিপুরুষ
১৯. পিথাগোরাস (আনু. ৫৮২–৫০৭ খ্রি. পূ.) – তিনি বলেছিলেন—পৃথিবী গোলাকার
২০. হিপোক্র্যাটিস (আনু: ৪৬০–৩৭০ খ্রি. পূ.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আদিজনক
২১. আর্কিমিডিস (২৮৭–২১২ খ্রি. পূ.) – ঊর্ধ্বমুখী বল সূত্রের আবিষ্কারক
২২. ক্লডিয়াস টলেমি (১০০–১৮০ খ্রি.) – জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রথম কোষগ্রন্থ প্রণেতা
২৩. ক্লডিয়াস গ্যালেন (১৩১–২০১ খ্রি.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আধুনিক পদ্ধতির আদি জনক
২৪. ইবনে সিনা (৯৮০–১০৩৭) – জ্ঞানসাধনায় কাটিয়েছিলেন সমগ্র জীবন
২৫. কোপারনিকাস (১৪৭৩–১৫৪৩) – আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্ৰবক্তা
২৬. জিওর্দানো ব্রুনো (আনু. ১৫৪৮–১৬০০ ) – সত্যপ্রচারের অপরাধে যাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল
২৭. গ্যালিলিও গ্যালিলি (১৫৬৪-১৬৪২) – যাঁর গাণিতিক পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি
২৮. লিওয়েন হুক (১৬৩২–১৭৩৩) – মুদি দোকানদার থেকে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী
২৯. আইজাক নিউটন (১৬৪২–১৭২৭) – মাধ্যাকর্ষন শক্তির আবিষ্কারক
৩০. রিচার্ড আর্করাইট (১৭৩২–১৭৯২) – আধুনিক বস্ত্রশিল্পে বৈপ্লবিক ধারা প্রবর্তক
৩১. উইলিয়াম হার্শেল (১৭৩৮–১৮২২) – ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কারক
৩২. লরেঁ লাভোয়সিয়ের (১৭৪৩–১৭৯৪) – রসায়নশাস্ত্রের জনক
৩৩. মাইকেল ফ্যারাডে (১৭৯১-১৮৬৭) – তাড়িত-চুম্বক বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা
৩৪. চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) – প্রাণিজগতের বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যাদাতা
৩৫. লুই পাস্তুর (১৮২২–১৮৯৫) – জীবাণু আর জলাতঙ্ক রোগ প্রতিষেধকের আবিষ্কারক
৩৬. আলফ্রেড নোবেল (১৮৩৩–১৮৯৬) – যাঁর নামে দেয়া হয় নোবেল পুরস্কার
৩৭. আলভা এডিসন (১৮৪৭–১৯৩১) – সর্বাধিক আবিষ্কারের জনক
৩৮. জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৯–১৯৩৭) – যিনি বলেছিলেন গাছেরও প্রাণ আছে
৩৯. মাদাম কুরি (১৮৬৭–১৯৩৪) – সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহিলা বিজ্ঞানী
৪০. মার্কোনি (১৮৭৪–১৯৩৭) – বেতারযন্ত্রের আবিষ্কারক
৪১. আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯–১৯৫৫) – আপেক্ষিক তত্ত্বের জনক
৪২. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১–১৯৫৫) – পেনিসিলিনের আবিষ্কারক
৪৩. হোমার (আনু. ৭০০-? খ্রি. পূ.) – বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দুটি মহাকাব্যের রচয়িতা
৪৪. ঈশপ (আ. কা. ৬২০–৫৬০ খ্রি. পূ.) – কালজয়ী নীতিগল্পকার
৪৫. সোফোক্লেস (আনু. ৪৯৫-৪০৬ খ্রি. পূ.) – গ্রিক ট্র্যাজেডি নাট্যধারার রূপকার
৪৬. হেরোডোটাস (আনু. ৪৮৫–৪২৫ খ্রি. পূ.) – ইতিহাসশাস্ত্রের জনক
৪৭. অ্যারিস্টোফানিস (আনু. ৪৪৪–৩৮৫ খ্রি. পূ.) – যাঁর সাহিত্যকর্মে আর্তমানবতার কথা প্রতিফলিত
৪৮. মহাকবি কালিদাস (আনু. ৫৭০-৬৫০ খ্রি.) – সংস্কৃতি সাহিত্যের অমর কবি
৪৯. লেওনার্দো দা ভিঞ্চি (১৪৫২–১৫১৯) – সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী
৫০. মিকেলাঞ্জেলো (১৪৭৫–১৫৬৪) – পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাস্কর শিল্পী
৫১. তানসেন (১৫০৬–১৫৮৫) – কিংবদন্তির গায়ক
৫২. শেকসপিয়ার (১৫৬৪-১৬১৬) – বিশ্বসাহিত্যের কালজয়ী নাট্যকার
৫৩. ভলতেয়ার (১৬৯৪-১৭৭৮) – বিখ্যাত ফরাসি চিন্তাবিদ
৫৪. জঁ-জাক্ রুসো (১৭১২–১৭৭৮) – ফরাসি বিপ্লবের রূপকার
৫৫. লর্ড বায়রন (১৭৮৮–১৮২৪) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি
৫৬. ভিক্টর হুগো (১৮০২-১৮৮৫) – ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৭. ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন (১৮০৫–১৮৭৫) – যাঁকে বলা হয় রূপকথার জাদুকর
৫৮. চার্লস ডিকেন্স (১৮১২–১৮৭০) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৯. ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯-১৮৯২) – মার্কিন সাহিত্যের যুগ-প্রবর্তক কবি
৬০. লিয়েফ তলস্তোয় (১৮২৮–১৯১০) – বিশ্বের মহান সাহিত্যিকদের অন্যতম
৬১. জুল ভের্ন (১৮২৮–১৯০৫) – কল্পবিজ্ঞান কাহিনীর স্রষ্টা
৬২. মার্ক টোয়েন (১৮৩৫–১৯১০) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রসস্রষ্টা
৬৩. জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৫৬–১৯৫০) – যিনি প্রথম নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন
৬৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১) – শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনীষা, পৃথিবীর মহত্তম সাহিত্য-ব্যক্তিত্ব
৬৫. ম্যাক্সিম গোর্কি (১৮৬৮–১৯৩৬) – যাঁর সাহিত্যকর্মের প্রধান উপজীব্য গণমানুষের কথা
৬৬. হেলেন কেলার (১৮৮০-১৯৬৮) – যাঁর খ্যাতিকে নেপোলিয়নের সঙ্গে তুলনা করা হতো
৬৭. আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (১৮৯৮–১৯৬১) – জীবনবাদী মার্কিন কথাসাহিত্যিক
৬৮. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯–১৯৭৬) – বাংলার বিদ্রোহী কবি
৬৯. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২–১৭৯৯) – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৭০. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১) – ইতিহাসের কিংবদন্তির মহানায়ক
৭১. জুসেপ্পে গারিবলদি (১৮০৭–১৮৮২) – ইতালির জনক বলে যাঁর খ্যাতি
৭২. আব্রাহাম লিংকন (১৮০৯-১৮৬৫) – যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্রীতদাসপ্রথা রহিত করেছিলেন
৭৩. অটো ফন বিসমার্ক (১৮১৫–১৮৯৮) – জার্মান সাম্রাজ্যের স্থপতি
৭৪. মহাত্মা গান্ধি (১৮৬৯–১৯৪৮) – ‘সবকো সুমতি দে ভগবান’
৭৫. কমরেড লেনিন (১৮৭০–১৯২৪) – বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা
৭৬. উইনস্টন চার্চিল (১৮৭৪–১৯৬৫) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ডাকসাইটে প্রধানমন্ত্রী
৭৭. জোসেফ স্ট্যালিন (১৮৭৯–১৯৫৩) – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়েনের ‘লৌহমানব’
৭৮. কামাল আতাতুর্ক (১৮৮১–১৯৩৮) – নব্য-তুরস্কের জনক
৭৯. ডি ভ্যালেরা (১৮৮২-১৯৭৫) – আয়ারল্যান্ডের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৮০. জওহরলাল নেহরু (১৮৮৯-১৯৬৪) – ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
৮১. আইসেনহাওয়ার (১৮৯০-১৯৬৯) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক
৮২. শার্ল দ্য গল (১৮৯০-১৯৭০) – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা
৮৩. হো-চি-মিন (১৮৯০-১৯৬৯) – ভিয়েতনামের মুক্তিদাতা পুরুষ
৮৪. মার্শাল টিটো (১৮৯২–১৯৮০) – জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা
৮৫. মাও-সে-তুং (১৮৯৫–১৯৭৬) – চীন সাধারণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা
৮৬. সুভাষচন্দ্র বসু (১৮৯৭–১৯৪৫) – ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’
৮৭. জন এফ কেনেডি (১৯১৭–১৯৬৩) – গুপ্তঘাতকের হাতে যাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছিল
৮৮. ইন্দিরা গান্ধি (১৯১৭–১৯৮৪) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
৮৯. নেলসন ম্যান্ডেলা (১৯১৮) – দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তিদাতা পুরুষ
৯০. শেখ মুজিবর রহমান (১৯২০–১৯৭৫) – বাংলাদেশের জাতির জনক
৯১. প্যাট্রিস লুমুম্বা (১৯২৫-১৯৬১) – কঙ্গোর মুক্তিদাতা পুরুষ
৯২. মার্কো পোলো (১২৫৬–১৩২৩) – দুঃসাহসিক অভিযাত্রী
৯৩. ক্রিস্টোফার কলম্বাস (আনু. ১৪৪৬-১৫০৬) – আমেরিকার আবিষ্কারক
৯৪. ডেভিড লিভিংস্টোন (১৮১৩-১৮৭৩) – আফ্রিকার আবিষ্কারক
৯৫. উইলিয়াম জোন্স (১৭৪৬–১৭৯৪) – এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৬. ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (১৮২০–১৯১০) – আধুনিক ‘নার্সিং’ বৃত্তির অগ্রপথিক
৯৭. হেনরি ডুনান্ট (১৮২৮–১৯১০) – রেডক্রস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৮. ব্যাডেন পাওয়েল (১৮৫৭–১৯৪১) – বয়স্কাউট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা
৯৯. মাদার তেরেসা (১৯১০–১৯৯৭) – প্রেম, করুণা ও ধর্মের মূর্ত প্রতিমা
১০০. অ্যাডাম স্মিথ (১৭২৩–১৭৯০) – রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিজ্ঞানের জনক

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন