কোপারনিকাস (১৪৭৩–১৫৪৩) – আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্ৰবক্তা

ভবেশ রায়

প্রাচীন জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মধ্যে একটা ভুল ধারণা প্রচলিত ছিল। গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান সম্পর্কে তাঁরা মনে করতেন যে, বিশ্বের কেন্দ্রস্থলে রয়েছে পৃথিবী। পৃথিবীকে কেন্দ্র করেই সূর্য এবং অন্য গ্রহ-নক্ষত্রগুলো আবর্তিত হচ্ছে। সেই তখন এই ভুল ধারণার প্রবল প্রবক্তা ছিলেন দ্বিতীয় শতকের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ক্লডিয়াস টলেমি।

তবে মজার ব্যাপর হলো—সৌরজগৎ সম্পর্কিত এই ভ্রান্ত ধারণাটিই সুদীর্ঘ বারোশো বছর ধরে প্রচলিত ছিল। তাঁদের সবাই এর সমর্থকও ছিলেন। এমনকি ধর্মশাস্ত্রেও একে সমর্থন করা হয়েছিল।

কিন্তু যিনি সর্বপ্রথম এই ভ্রান্ত ধারণাকে খণ্ডন এবং আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক চিন্তাধারার প্রবর্তন করেন, তাঁর নাম নিকোলাস কোপারনিকাস (Nicolus Copernicus)। তাই খুবই সঙ্গত কারণে বলা যায়, কোপারনিকাসই মহাকাশের গ্রহ- নক্ষত্রের অবস্থান সম্পর্কে সঠিক মতের প্রথম প্রবর্তক। তিনিই প্রথম বলেন, পৃথিবী নয়, সৌরজগতের কেন্দ্রবিন্দু হল সূর্য। সূর্যই সমগ্র সৌরজগৎকে আলোকিত করে থাকে।

কোপারনিকাস তাঁর জীবনকালে তাঁর এই মতবাদকে প্রতিষ্ঠা করতে না পারলেও আধুনিক জোতির্বিজ্ঞানের এই সঠিক ধারণার তিনিই প্রথম প্রবক্তা, যা ‘কোপারনিকাসীয় মতবাদ’ (Copernican System) হিসেবে পরিগণিত।

নিকোলাস কোপারনিকাসের জন্ম পোলান্ডের তোরান শহরের এক অভিজাত পরিবারে ১৪৭৩ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি। জার্মান বংশোদ্ভূত বাবা নিকোলাস কোপারনিগ ছিলেন মস্তবড় ধনী ব্যবসায়ী। মা বারবারা ওয়াকজেনরোড ছিলেন এরম্যালান্ডের বিশপের বোন।

কোপারনিকাসেরা ছিলেন দু ভাই দু বোন। ভাই-বোনদের মধ্যে কোপারনিকাস ছিলেন সকলের ছোট।

মাত্র দশ বছর বয়সেই পিতৃহীন হন তিনি। পিতার মৃত্যুর পর মামা লুকাস ওয়াকজেনরোডই তাঁদের দেখাশোনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মামা ছিলেন একজন ধর্মযাজক ও পণ্ডিত মানুষ। তাই ছোটোবেলায় কোপারনিকাসের ইচ্ছে ছিল তিনিও বড় হয়ে মামার মতোই ধর্মমাজক হবেন।

১৪৯১ খ্রিস্টাব্দে তিনি পোল্যান্ডের ক্র্যাকো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেইকালে রাজধানী ক্র্যাকো ছিল শিল্প-সাহিত্য ও ঐশ্বর্যের দিক দিয়ে গোটা ইউরোপের মধ্যে শীর্ষস্থানীয়।

ক্র্যাকো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার জন্য সেকালে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ তথা জার্মানি, ইতালি, সুইজারল্যান্ড, হাঙ্গেরি, সুইডেন প্রভৃতি দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা ছুটে আসত।

এখানে যা কিছু পাঠ্য ছিল, তার বেশিরভাগই ছিল ল্যাটিন ভাষায় রচিত। ফলে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সবার আগে শিখতে হতো ল্যাটিন ভাষা।

কোপারনিকাসও অল্প বয়সেই ল্যাটিন ভাষা শিখে ফেললেন। ক্র্যাকো বিশ্ববিদ্যালয়েই তিনি দর্শন, জ্যোতির্বিজ্ঞান, ভূগোল ও জ্যামিতি শিক্ষা করেন।

এখানে পড়ার সময়ই তাঁর সাথে পরিচয় ঘটে সেখানকার বিখ্যাত পণ্ডিত অধ্যাপক ব্রডজেভস্কির সাথে। তিনি ছিলেন টলেমির ভূকেন্দ্রিক মতবাদে বিশ্বাসী। তাঁর কাছেই কোপারনিকাস গণিতশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন।

ক্র্যাকো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাজীবন শেষে ১৪৯৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি নিজেদের বাড়িতে ফিরে আসেন। আসার পরই মামা সিদ্ধান্ত নিলেন ভাগ্নেকে এবার গির্জার যাজকের পদে অধিষ্ঠিত করবেন। কিন্তু পরক্ষণেই তাঁর মনে হলো একজন ভালো যাজক হতে হলে কোপারনিকাসকে আরও জ্ঞানের অধিকারী হতে হবে। এ পড়াই যথেষ্ট নয়। এবার তাঁকে বিদেশে পাঠাতে হবে।

১৪৯৪ খ্রিস্টাব্দে মামা তাঁকে ইতালিতে পাঠান। সেখানে তিনি কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা, আইন ও ধর্মীয় শাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করতে শুরু করেন। ইতালিতে এসে প্রথমে তিনি বালোনিয়ার আইন স্কুলে ভর্তি হন। এখানেই তিনি দার্শনিক প্লেটোর রচনার সাথে প্রথম পরিচিত হন এবং ইতালির তখনকার বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ডোমিনিকো নোবার সান্নিধ্য লাভ করেন। এই ডোমিনিকোর সংস্পর্শে এসেই কোপারনিকাস মহাকাশের গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

এই সময় তাঁর পড়াশোনার প্রধান বিষয় ছিল জ্যোতির্বিজ্ঞান। তখন নৌবাণিজ্য ব্যাপক প্রসারলাভ রলেও সমুদ্রে জাহাজ চলাচল তখনও পুরোপুরি নির্ভরশীল ছিল জ্যোতির্বিজ্ঞানের ওপর।

১৫০০ খ্রিস্টাব্দে তিনি রোম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। কিন্তু কিছুদিন পরেই তিনি ছেড়ে দেন এই চাকরি। ফিরে আসেন ক্র্যাকোর বিখ্যাত ফ্রুয়েনবার্গ গির্জায়। এসেই কাজ করতে শুরু করেন প্রধান যাজকের পদে।

এর কিছুদিন পর ১৫০১ খ্রিস্টাব্দে তিনি আবার পড়াশোনার জন্য চলে আসেন ইতালিতে। তখনকার পাদুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন আইন ও চিকিৎসাশাস্ত্র।

১৫০৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি ফেরারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ধর্মশাস্ত্রের ওপর ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। এ ছাড়াও তিনি পড়াশোনা করেন ইতালির আরও বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

মামার মৃত্যুর পর তিনি ১৫১২ খ্রিস্টাব্দে ফ্লুয়েনবার্গের গির্জার সর্বময় কর্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন। এই গির্জায় কাজ করার সময়ই তিনি মহাকাশ সম্পর্কে গবেষণার অবারিত সুযোগ পান। তিনি গির্জার দেয়ালের একটি উঁচু চূড়োয় দাঁড়িয়ে আকাশের চন্দ্র, সূর্য এবং অন্যান্য গ্রহের গতিবিধি লক্ষ করার কাজ শুরু করেন।

যতই এই কাজ এগুতে থাকে, টলেমির মতবাদের প্রতি ততই তিনি সন্দিহান হয়ে উঠতে থাকেন। অবশেষে তিনি টলেমির ভুল ধরতেও সক্ষম হন। তিনি বুঝতে পারেন, আসলে পৃথিবী নয়, সূর্যই হলো সৌরজগতের কেন্দ্রবিন্দু। তিনি আরও বুঝতে পারেন, সূর্যের চারদিকে পৃথিবী ঘোরে বলেই ঋতুর পরিবর্তন হয়। আর পৃথিবী তার নিজ অক্ষের ওপর আবর্তিত হয় বলেই দিন ও রাত্রির এই পালাক্রম।

এরপর থেকেই জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্পর্কে তাঁর উৎসাহ আরও বেড়ে যায়। তিনি শুরু করেন পড়াশোনা। প্রাচীন তথ্যাবলি পর্যালোচনা করে জানতে পারেন, দু হাজার বছর আগে পিথাগোরাস সর্বপ্রথম গ্রহ-নক্ষত্রের গতি সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিয়ে গেছেন। পিথাগোরাস বলেছিলেন, সূর্যই হলো মহাবিশ্বের কেন্দ্রস্থল। এটাই ছিল সঠিক তথ্য।

কিন্তু পরবর্তীকালে অ্যারিস্টটল প্রথম সৃষ্টি করেন গোলমালের এবং টলেমি সেই বিভ্রান্তিকে আরও জোরদার করেন দ্বিতীয় শতকে এসে। তাঁরাই পিথাগোরাসের সঠিক মত উলটে দিয়ে ভুল করে বললেন, পৃথিবীই হলো বিশ্বের কেন্দ্র।

কোপারনিকাসের আবিষ্কারের পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত এই ভ্রান্ত মতই প্রচলিত ছিল। কিন্তু এই বিভ্রান্তি দূর করে কোপারনিকাস বিজ্ঞানসম্মতভাবে প্রমাণ করেন যে, পৃথিবী নয়, সূর্যই সৌরজগতের কেন্দ্র। টলেমির মতবাদ সঠিক নয়।

কিন্তু কোপারনিকাস সত্য প্রমাণ করলেও সৎ সাহস ও দৃঢ়তার অভাবে তাঁর এই মতকে তিনি জীবিতকালে প্রতিষ্ঠিত করে পারেননি।

কোপারনিকাস তাঁর এই মতবাদ ১৫৩১ খ্রিস্টাব্দে লিপিবদ্ধ করলেও ছাপার অক্ষরে প্রকাশ করতে সাহস পাননি। কারণ, তিনি ছিলেন গির্জার একজন ধর্মযাজক। আরও তাঁর গবেষণার ফল ছিল গির্জা ও প্রচলিত ধর্মবিশ্বাসের সম্পূর্ণ বিরোধী। তিনি জানতেন, তাঁর এই মতবাদ প্রচারিত হলে তাঁকে ধর্মদ্রোহী হিসেবে আখ্যায়িত করা হতে পারে। তিনি ধর্মীয় বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কথা বলে বিতর্কে জড়িয়ে পড়তে চাননি।

তাই পাণ্ডুলিপি তৈরি হওয়ার পরও দীর্ঘ তেরো বছর পর্যন্ত তাঁর গ্রন্থ অপ্রকাশিতই থেকে যায়।

অবশেষে এগিয়ে আসেন উইটেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক জর্জ জোয়াকিম রেটিকাস। তিনিই কোপারনিকাসের কাছ থেকে পাণ্ডুলিপি চেয়ে নিয়ে যান এবং দীর্ঘ দু বছর ধরে তা অধ্যয়ন করেন। তিনি অনেক বলে-কয়ে অবশেষে পাণ্ডুলিপিটি প্রকাশের ব্যাপারে কোপারনিকাসের অনুমোদন লাভ করেন।

এর পর তাঁর তত্ত্বাবধানেই জ্যোতির্বিজ্ঞানী কোপারনিকাসের বৈপ্লবিক মতবাদ- সংবলিত গ্রন্থ ‘ডে রেভোলিউশনিবাস অরবিউম সেলেস্ট্রম’ বা ‘রেভোলিউশনস’ (De Revolutionibus Orbium Celestum) প্রকাশিত হয় ১৫৪৩ খ্রিস্টাব্দে। গ্রন্থটি যখন প্রকাশিত হয়, তখন কোপারনিকাসেরও প্রায় অন্তিম মুহূর্ত। তিনি পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে তখন মৃত্যুশয্যায় শায়িত। মৃত্যুর মাত্র ঘণ্টাখানেক আগে মুদ্রিত পুস্তকটি তাঁর হাতে পৌঁছয়। এই গ্রন্থে মাধ্যমেই তিনি সৌরজগতের একটি সঠিক নকশা তুলে ধরেন এবং নির্ণয় করে দেখান পৃথিবীর অবস্থান।

৭০ বছর বয়সে কোপারনিকাসের মৃত্যু হয় ১৫৪৩ খ্রিস্টাব্দের ২২ মে।

তাঁর ‘রেভোলিউশনস’’ গ্রন্থটি মোট ছয় খণ্ডে সমাপ্ত। এর প্রথম খণ্ডে আছে পৃথিবীর গোলতত্ত্ব ও গতি সম্পর্কিত বর্ণনা। দ্বিতীয় খণ্ডে আলোচনা করা হয়েছে সূর্যের অয়নবৃত্ত বিষয়ে, তৃতীয় খণ্ডে আছে সূর্যের আপাত গতির বিষয়টি এবং চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ খণ্ড পর্যন্ত অংশে আলোচনা করা হয়েছে যথাক্রমে চন্দ্র ও গ্রহ-নক্ষত্রের ওপর

কোপারনিকাস তাঁর এই বিতর্কিত গ্রন্থটির উৎসর্গপত্রে পোপকে এই বলে অনুরোধ করেছিলেন যে, গণিতশাস্ত্রে বিশেষ জ্ঞান না থাকলে কেউ যেন তাঁর গ্রন্থের সমালোচনা এবং আপন স্বার্থসিদ্ধির জন্য কেউ যেন ধর্মীয় শাস্ত্রের অপব্যাখ্যা করে তাঁর গ্রন্থটির সমালোচনা না করেন।

কিন্তু সেই সমালোচনা থেকে রেহাই পেলেন না কোপারনিকাস। বিতর্কিত গ্রন্থটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই তিনি মারা গিয়ে রক্ষা পান। তিনি নিজে সব ধরনের তর্কবিতর্ক আর সমালোচনার ঊর্ধ্বে চলে গেলেও তাঁর রেখে যাওয়া গ্রন্থ তখনকার সমাজে সৃষ্টি করে প্রবল বিতর্কের।

যে ভয় কোপারনিকাসের মনেও ছিল, অবশেষে তা-ই সত্যে পরিণত হলো। রক্ষণশীল ধর্মযাজক সম্প্রদায় তাঁর এই নতুন মতবাদকে সহজভবে গ্রহণ করলেন না। তাকে তাঁরা ধর্মবিরুদ্ধ বলে ঘোষণা করলেন। শুধু ধর্মযাজকরাই নন, সেকালের অনেক বড় বড় জ্যোতির্বিদও এই নতুন মতবাদের সাথে একমত হতে পারেননি। যেমন, সেকালের প্রখ্যাত জ্যোতির্বিদ টাইকো ব্রাহেও এর ঘোর বিরোধী ছিলেন। তিনি ছিলেন টলেমি প্রচারিত মতবাদের সমর্থক।

কোপারনিকাস গ্রহ-নক্ষত্র সম্পর্কে যেসব তথ্য দিয়ে গিয়েছিলেন, তা ছিল অনেকাংশে সঠিক। যদিও পরবর্তীকালে কোপারনিকাসীয় মতবাদের কিছু কিছু ভ্রান্তি সংশোধন করা হয়েছে। তবু মূল তথ্যগুলো ছিল অভ্রান্ত।

যেমন, কোপারনিকাস বলেছিলেন, সূর্যকে ঘিরে পৃথিবীসহ অন্য যেসব গ্রহ কক্ষপথে ঘোরে তা বৃত্তাকার; কিন্তু পরবর্তীকালে উন্নত যন্ত্রপাতির সাহয্যে পরীক্ষা করে আধুনিককালের বিজ্ঞানীরা সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন যে, পৃথিবীর কক্ষপথ বৃত্তকার নয়, উপবৃত্তাকার।

তবু সেই আদিকালে যখন টেলিস্কোপও আবিষ্কৃত হয়নি, সেই তখন অতটা নির্ভুল গণনা করা কারও পক্ষেই সম্ভব ছিল না। কোপারনিকাসের হাতে তো যন্ত্রপাতি কিছুই ছিল না; তিনি গ্রহ-নক্ষত্রের গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন কেবল গাণিতিক পদ্ধতিতে এবং অনুমানের ওপর নির্ভর করে। সেখানে এই সামান্য ত্রুটি-বিচ্যুতি তেমন বড় কথা নয়।

তাই আজও আধুনিক বিজ্ঞানীদের কাছে কোপারনিকাসীয় মতবাদ একটি মস্ত বড় বিষয়। পরবর্তীকালে আরও উন্নত গবেষণার মাধ্যমে কেপলার (১৫৭১–১৬৩০), গ্যালিলিও (১৫৬৪–১৬৪২), এবং নিউটনের (১৬৪২–১৭২৭) মতো বিজ্ঞানীরা কোপারনিকাসের মতবাদকে নির্ভুলভাবে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। আর তাই আজও তাঁকে অভিহিত করা হয় আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের স্থপতি।

সকল অধ্যায়

১. হযরত মুহাম্মদ (দঃ) (৫৭০-৬৩২) – সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী
২. জরথুশত্র (৬২৮-৫৫১ খ্রি. পূ.) – পারশি ধর্মের প্রবর্তক
৩. বর্ধমান মহাবীর (৫৯৯–৫২৭ খ্রি. পূ.) – জৈন দর্শন ও ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা
৪. গৌতম বুদ্ধ (৫৬৩–৪৮৩ খ্রি. পূ.) – বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক
৫. কনফুসিয়াস (৫৫১–৪৭৯ খ্রি. পূ.) – চীনের প্রাচীনতম ধর্মমতবাদের প্রবর্তক
৬. সক্রেটিস (আনু. ৪৬৯–৩৯৯ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্রের আদিজনক
৭. প্লেটো (৪২৮–৩৪৭ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্র যাঁর হাতে পেয়েছিল পূর্নাঙ্গরূপ
৮. ডায়োজিনিস (৪১২–৩২২ খ্রি. পূ.) – একনিষ্ঠ জ্ঞান সাধক
৯. অ্যারিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খ্রি. পূ.) – যুক্তিশাস্ত্রের জনক
১০. যিশু খ্রিস্ট (আনু. ৬ খ্রি. পূ.–আনু. ২৯ খ্রি.) – খ্রিস্টানধর্মের প্রবর্তক
১১. অতীশ দীপঙ্কর (৯৮২–১০৫৩) – জ্ঞানসাধক বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক
১২. গুরু নানক (১৪৬৯–১৫৩৮) – শিখ ধর্মমতের প্রবর্তক
১৩. মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬) – ধর্মের সংস্কারক এবং ‘প্রটেস্টানিজম’ মতবাদের স্রষ্টা
১৪. মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩) – বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তক
১৫. রামমোহন রায় (১৭৭২–১৮৩৩) – ভারতবর্ষে নবযুগের প্রবর্তক
১৬. রামকৃষ্ণ পরমহংস (১৮৩৬–১৮৮৬) – ‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আমি ঈশ্বরকে দর্শন করেছি’
১৭. বারট্রান্ড রাসেল (১৮৭২–১৯৭০ ) – যুদ্ধ-বিরোধী ও মানবতাবাদী দার্শনিক
১৮. থ্যালিস (আনু. ৬২৪–৫৬৫ খ্রি. পূ.) – বিজ্ঞানশাস্ত্রের আদিপুরুষ
১৯. পিথাগোরাস (আনু. ৫৮২–৫০৭ খ্রি. পূ.) – তিনি বলেছিলেন—পৃথিবী গোলাকার
২০. হিপোক্র্যাটিস (আনু: ৪৬০–৩৭০ খ্রি. পূ.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আদিজনক
২১. আর্কিমিডিস (২৮৭–২১২ খ্রি. পূ.) – ঊর্ধ্বমুখী বল সূত্রের আবিষ্কারক
২২. ক্লডিয়াস টলেমি (১০০–১৮০ খ্রি.) – জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রথম কোষগ্রন্থ প্রণেতা
২৩. ক্লডিয়াস গ্যালেন (১৩১–২০১ খ্রি.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আধুনিক পদ্ধতির আদি জনক
২৪. ইবনে সিনা (৯৮০–১০৩৭) – জ্ঞানসাধনায় কাটিয়েছিলেন সমগ্র জীবন
২৫. কোপারনিকাস (১৪৭৩–১৫৪৩) – আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্ৰবক্তা
২৬. জিওর্দানো ব্রুনো (আনু. ১৫৪৮–১৬০০ ) – সত্যপ্রচারের অপরাধে যাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল
২৭. গ্যালিলিও গ্যালিলি (১৫৬৪-১৬৪২) – যাঁর গাণিতিক পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি
২৮. লিওয়েন হুক (১৬৩২–১৭৩৩) – মুদি দোকানদার থেকে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী
২৯. আইজাক নিউটন (১৬৪২–১৭২৭) – মাধ্যাকর্ষন শক্তির আবিষ্কারক
৩০. রিচার্ড আর্করাইট (১৭৩২–১৭৯২) – আধুনিক বস্ত্রশিল্পে বৈপ্লবিক ধারা প্রবর্তক
৩১. উইলিয়াম হার্শেল (১৭৩৮–১৮২২) – ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কারক
৩২. লরেঁ লাভোয়সিয়ের (১৭৪৩–১৭৯৪) – রসায়নশাস্ত্রের জনক
৩৩. মাইকেল ফ্যারাডে (১৭৯১-১৮৬৭) – তাড়িত-চুম্বক বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা
৩৪. চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) – প্রাণিজগতের বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যাদাতা
৩৫. লুই পাস্তুর (১৮২২–১৮৯৫) – জীবাণু আর জলাতঙ্ক রোগ প্রতিষেধকের আবিষ্কারক
৩৬. আলফ্রেড নোবেল (১৮৩৩–১৮৯৬) – যাঁর নামে দেয়া হয় নোবেল পুরস্কার
৩৭. আলভা এডিসন (১৮৪৭–১৯৩১) – সর্বাধিক আবিষ্কারের জনক
৩৮. জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৯–১৯৩৭) – যিনি বলেছিলেন গাছেরও প্রাণ আছে
৩৯. মাদাম কুরি (১৮৬৭–১৯৩৪) – সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহিলা বিজ্ঞানী
৪০. মার্কোনি (১৮৭৪–১৯৩৭) – বেতারযন্ত্রের আবিষ্কারক
৪১. আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯–১৯৫৫) – আপেক্ষিক তত্ত্বের জনক
৪২. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১–১৯৫৫) – পেনিসিলিনের আবিষ্কারক
৪৩. হোমার (আনু. ৭০০-? খ্রি. পূ.) – বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দুটি মহাকাব্যের রচয়িতা
৪৪. ঈশপ (আ. কা. ৬২০–৫৬০ খ্রি. পূ.) – কালজয়ী নীতিগল্পকার
৪৫. সোফোক্লেস (আনু. ৪৯৫-৪০৬ খ্রি. পূ.) – গ্রিক ট্র্যাজেডি নাট্যধারার রূপকার
৪৬. হেরোডোটাস (আনু. ৪৮৫–৪২৫ খ্রি. পূ.) – ইতিহাসশাস্ত্রের জনক
৪৭. অ্যারিস্টোফানিস (আনু. ৪৪৪–৩৮৫ খ্রি. পূ.) – যাঁর সাহিত্যকর্মে আর্তমানবতার কথা প্রতিফলিত
৪৮. মহাকবি কালিদাস (আনু. ৫৭০-৬৫০ খ্রি.) – সংস্কৃতি সাহিত্যের অমর কবি
৪৯. লেওনার্দো দা ভিঞ্চি (১৪৫২–১৫১৯) – সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী
৫০. মিকেলাঞ্জেলো (১৪৭৫–১৫৬৪) – পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাস্কর শিল্পী
৫১. তানসেন (১৫০৬–১৫৮৫) – কিংবদন্তির গায়ক
৫২. শেকসপিয়ার (১৫৬৪-১৬১৬) – বিশ্বসাহিত্যের কালজয়ী নাট্যকার
৫৩. ভলতেয়ার (১৬৯৪-১৭৭৮) – বিখ্যাত ফরাসি চিন্তাবিদ
৫৪. জঁ-জাক্ রুসো (১৭১২–১৭৭৮) – ফরাসি বিপ্লবের রূপকার
৫৫. লর্ড বায়রন (১৭৮৮–১৮২৪) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি
৫৬. ভিক্টর হুগো (১৮০২-১৮৮৫) – ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৭. ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন (১৮০৫–১৮৭৫) – যাঁকে বলা হয় রূপকথার জাদুকর
৫৮. চার্লস ডিকেন্স (১৮১২–১৮৭০) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৯. ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯-১৮৯২) – মার্কিন সাহিত্যের যুগ-প্রবর্তক কবি
৬০. লিয়েফ তলস্তোয় (১৮২৮–১৯১০) – বিশ্বের মহান সাহিত্যিকদের অন্যতম
৬১. জুল ভের্ন (১৮২৮–১৯০৫) – কল্পবিজ্ঞান কাহিনীর স্রষ্টা
৬২. মার্ক টোয়েন (১৮৩৫–১৯১০) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রসস্রষ্টা
৬৩. জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৫৬–১৯৫০) – যিনি প্রথম নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন
৬৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১) – শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনীষা, পৃথিবীর মহত্তম সাহিত্য-ব্যক্তিত্ব
৬৫. ম্যাক্সিম গোর্কি (১৮৬৮–১৯৩৬) – যাঁর সাহিত্যকর্মের প্রধান উপজীব্য গণমানুষের কথা
৬৬. হেলেন কেলার (১৮৮০-১৯৬৮) – যাঁর খ্যাতিকে নেপোলিয়নের সঙ্গে তুলনা করা হতো
৬৭. আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (১৮৯৮–১৯৬১) – জীবনবাদী মার্কিন কথাসাহিত্যিক
৬৮. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯–১৯৭৬) – বাংলার বিদ্রোহী কবি
৬৯. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২–১৭৯৯) – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৭০. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১) – ইতিহাসের কিংবদন্তির মহানায়ক
৭১. জুসেপ্পে গারিবলদি (১৮০৭–১৮৮২) – ইতালির জনক বলে যাঁর খ্যাতি
৭২. আব্রাহাম লিংকন (১৮০৯-১৮৬৫) – যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্রীতদাসপ্রথা রহিত করেছিলেন
৭৩. অটো ফন বিসমার্ক (১৮১৫–১৮৯৮) – জার্মান সাম্রাজ্যের স্থপতি
৭৪. মহাত্মা গান্ধি (১৮৬৯–১৯৪৮) – ‘সবকো সুমতি দে ভগবান’
৭৫. কমরেড লেনিন (১৮৭০–১৯২৪) – বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা
৭৬. উইনস্টন চার্চিল (১৮৭৪–১৯৬৫) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ডাকসাইটে প্রধানমন্ত্রী
৭৭. জোসেফ স্ট্যালিন (১৮৭৯–১৯৫৩) – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়েনের ‘লৌহমানব’
৭৮. কামাল আতাতুর্ক (১৮৮১–১৯৩৮) – নব্য-তুরস্কের জনক
৭৯. ডি ভ্যালেরা (১৮৮২-১৯৭৫) – আয়ারল্যান্ডের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৮০. জওহরলাল নেহরু (১৮৮৯-১৯৬৪) – ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
৮১. আইসেনহাওয়ার (১৮৯০-১৯৬৯) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক
৮২. শার্ল দ্য গল (১৮৯০-১৯৭০) – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা
৮৩. হো-চি-মিন (১৮৯০-১৯৬৯) – ভিয়েতনামের মুক্তিদাতা পুরুষ
৮৪. মার্শাল টিটো (১৮৯২–১৯৮০) – জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা
৮৫. মাও-সে-তুং (১৮৯৫–১৯৭৬) – চীন সাধারণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা
৮৬. সুভাষচন্দ্র বসু (১৮৯৭–১৯৪৫) – ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’
৮৭. জন এফ কেনেডি (১৯১৭–১৯৬৩) – গুপ্তঘাতকের হাতে যাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছিল
৮৮. ইন্দিরা গান্ধি (১৯১৭–১৯৮৪) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
৮৯. নেলসন ম্যান্ডেলা (১৯১৮) – দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তিদাতা পুরুষ
৯০. শেখ মুজিবর রহমান (১৯২০–১৯৭৫) – বাংলাদেশের জাতির জনক
৯১. প্যাট্রিস লুমুম্বা (১৯২৫-১৯৬১) – কঙ্গোর মুক্তিদাতা পুরুষ
৯২. মার্কো পোলো (১২৫৬–১৩২৩) – দুঃসাহসিক অভিযাত্রী
৯৩. ক্রিস্টোফার কলম্বাস (আনু. ১৪৪৬-১৫০৬) – আমেরিকার আবিষ্কারক
৯৪. ডেভিড লিভিংস্টোন (১৮১৩-১৮৭৩) – আফ্রিকার আবিষ্কারক
৯৫. উইলিয়াম জোন্স (১৭৪৬–১৭৯৪) – এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৬. ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (১৮২০–১৯১০) – আধুনিক ‘নার্সিং’ বৃত্তির অগ্রপথিক
৯৭. হেনরি ডুনান্ট (১৮২৮–১৯১০) – রেডক্রস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৮. ব্যাডেন পাওয়েল (১৮৫৭–১৯৪১) – বয়স্কাউট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা
৯৯. মাদার তেরেসা (১৯১০–১৯৯৭) – প্রেম, করুণা ও ধর্মের মূর্ত প্রতিমা
১০০. অ্যাডাম স্মিথ (১৭২৩–১৭৯০) – রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিজ্ঞানের জনক

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন