মাইকেল ফ্যারাডে (১৭৯১-১৮৬৭) – তাড়িত-চুম্বক বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা

ভবেশ রায়

যিনি জীবনে কখনও উচ্চশিক্ষা লাভের সুযোগ পাননি, অঙ্কশাস্ত্রে যাঁর জ্ঞান ছিল না বললেই চলে, ছিল না কোনো অর্থসঙ্গতি কিংবা পারিবারিক ঐতিহ্য, পরবর্তী জীবনে সেই তিনিই হয়েছিলেন বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী। প্রচলিত শিক্ষার বিচারে তিনি ছিলেন অশিক্ষিত, অথচ তাঁকেই বিশ্ববিখ্যাত অনেক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনারারি ডিগ্রি দেয়া হলেও তিনি তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছিলেন, এমনকি সর্বাধিক সম্মানিত পুরস্কার ‘নাইট’ উপাধি গ্রহণ করতেও রাজি হননি।

এই বিস্ময়কর মানুষটিই মাইকেল ফ্যারাডে (Michael Faraday), বিশ্বের প্রতিটি শিক্ষিত মানুষই যাঁর নামের সঙ্গে পরিচিত।

তাঁর জীবন শুরু হয়েছিল একেবারেই নিম্নস্তর থেকে। জন্ম ১৭৯১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর লন্ডনের টেম্‌স্‌ নদীর তীরে নিউইংটন বাট্স্ নামের একটি শহরতলি এলাকায়। বাবা ছিলেন নিরক্ষর এক কর্মকার। নয় বছর বয়সেই তাঁকে হারান তিনি। ফলে তাঁদের আর্থিক অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়ে। এই সময় সরকারি দরিদ্র ভাতায় তাঁদের সংসার চলত। মাইকেলের ভাগ্যে সারা দিনে জুটত একটি মাত্র শুকনো রুটি। থাকতেন লন্ডনের একটি গাড়িঘরের ভাঙা চিলেকোঠায়।

অথচ অক্ষরজ্ঞানশূন্য এ-রকম একটি পরিবারের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও বিজ্ঞান গবেষণার প্রতি ছিল তাঁর প্রবল আগ্রহ। কিন্তু এই আগ্রহকে কাজে লাগানোর মতো কোনো সুযোগই তাঁর ছিল না।

বাল্যকালে বেশিদিন স্কুলে পড়াশোনা করার সুযোগ হয়নি তাঁর। বছর কয়েকের মাথাতেই অর্থের অভাবে তাঁর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। তারপর নেমে পড়তে হয় অর্থ রোজগারের ধান্ধায়।

প্রথমে তিনি পত্রিকা ফেরি করার কাজ নেন। তখনকার দিনে আজকের মতো ঘরে- ঘরে পত্রিকা কিনে পড়ার প্রচলন ছিল না। কেউ পত্রিকা কিনে পড়তেন না। পড়তে ভাড়া করে। পত্রিকার হকার একজন পাঠককে পয়সার বিনিময়ে কিছুক্ষণের জন্য পত্রিকা ভাড়া দিতেন। তারপর তার পড়া হয়ে গেলে আবার নিয়ে যেতেন আরেক জনের কাছে। এমনি করে পত্রিকা ভাড়া দেওয়ার কাজ চলত। আর এই পত্রিকা ভাড়া দেয়ারই কাজ নিয়েছিলেন কিশোর ফ্যারাডে। এরপর তিনি কাজ নেন বই বাঁধাইয়ের কারখানায়। এখানকার কাজ তাঁর ভালো না লাগলেও এখানে তিনি বেশকিছু মূল্যবান বই পড়বার সুযোগ পান।

তাঁর যখন উনিশ বছর বয়স, তখন একদিন প্রকৃতি-বিজ্ঞানের ওপর বক্তৃতানুষ্ঠান সংক্রান্ত একটা বিজ্ঞাপন তাঁর চোখে পড়ে। প্রবেশ-মূল্য এক শিলিং। পয়সা ধার করে নিয়ে ঢুকে পড়লেন হলে। তিনি শুধু বক্তৃতাই শুনলেন না, নোটও করে আনলেন। তারপর সেই নোট এবং তার সাথে ছবি সংযোজন করে রচনা করলেন একটি বিজ্ঞান বই।

যে-দোকানে তাঁদের বাঁধাইখানার বইপত্র বিক্রি করা হতো, সেই দোকানেরই একজন গ্রাহক তাঁকে একদিন বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্যার হামফ্রি ডেভির বক্তৃতা শোনার সুযোগ করে দিলেন। শোনার পর তিনি হামফ্রির বক্তৃতার ওপর একটি নোট তৈরি করলেন। তারপর সেই নোটখাতা পাঠিয়ে দিলেন স্যার হামফ্রির কাছে। তাঁর নোট পড়ে তো তিনি মহাখুশি! ফ্যারাডিকে তিনি ডেকে পাঠালেন এবং তাঁর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ করে দিলেন। ফলে ফ্যারাডি পুস্তক বাধাঁইখানার চাকরি ছেড়ে দিয়ে সোজা চলে এলেন হামফ্রি ডেভির ল্যাবরেটরিতে।

স্যার হামফ্রির সহযোগিতাতেই ফ্যারাডে বহু দেশ, তথা ইতালি, প্যারিস, ফ্লোরেন্স, রোম, নেপলস্, জেনেভা ও মিলানের মতো বিখ্যাত সব শহর ঘুরে বেড়ান এবং বহু স্বনামধন্য ব্যক্তির সংস্পর্শে আসারও সুযোগ লাভ করেন। ইতিমধ্যে তিনি হামফ্রির গবেষণা সহকারী হিসেবেও সম্মান লাভ করলেন। ফলে তাঁর চাকরিতেও পদোন্নতি হলো। তিনি এবার পুরোপুরি আত্মনিয়োগ করলেন বৈজ্ঞানিক গবেষণাকাজে।

এরপর থেকে তিনি তাঁর সম্পাদিত বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফল সবাইকে বোঝানোর জন্য বক্তৃতা দেয়ার অভ্যাস রপ্ত করতে শুরু করলেন। অচিরেই তিনি সিটি ফিলোসফিক্যাল সোসাইটিতে আয়োজন করলেন এক ধারাবাহিক বক্তৃতানুষ্ঠানের।

এ ছাড়া এসময় তিনি পত্রপত্রিকায় তাঁর বৈজ্ঞানিক গবেষণার ওপর বিভিন্ন প্রবন্ধও প্রকাশ করতে শুরু করেন। স্থানীয় ‘কোয়ার্টারলি জার্নাল অব সায়েন্স’ পত্রিকায় ‘কস্টিক লাইম’-এর ওপর একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। একই বছর ওই একই পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তাঁর আরও বেশ কিছু প্রবন্ধ।

এই সময় তিনি রয়্যাল ইনস্টিটিউটে প্রফেসার হামফ্রি এবং ব্রান্ডির সহযোগী হিসেবেও কাজ করতেন। ফ্যারাডে তাঁদের বক্তৃতা দেয়ার সময় যেসব যন্ত্রপাতি প্রদর্শন করা হতো, সেগুলো সাজিয়ে রাখতেন। সেইসাথে ইনস্টিটিউটে যেসব বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল আসত, সেগুলোও পড়তেন। এভাবে তিনি বিজ্ঞান বিষয়ের ওপর প্রত্যক্ষ ও পুঁথিগত জ্ঞান আহরণ করতে থাকেন, আবিষ্কার, করতে থাকেন নানারকমের বৈজ্ঞানিক দ্রব্য ও যন্ত্রপাতি।

তিনিই প্রথম বায়বীয় পদার্থ ক্লোরিনকে তরলীকরণের পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। এরপর তিনি আবিষ্কার করেন লোহা থেকে মরিচামুক্ত সংকর ধাতু স্টেইনলেস স্টিল। তাঁর এসময়কার আরেকটি বড় আবিষ্কার বেনজিন। তখনকার দিনে লন্ডন শহরের ধনীলোকেরা ঘর আলোকিত করার জন্য একধরনের গ্যাস ব্যবহার করতেন। মাছের তেল গরম করে এই তেল তৈরি করা হতো। লোহার সিলিন্ডারে বায়ু অপেক্ষা তিরিশ গুণ বেশি চাপে এই গ্যাস ব্যবহার করার পর সিলিন্ডারের গায়ে একধরনের তরল পদার্থ জমে থাকত। এটা ছিল কয়েকটি পদার্থের সংমিশ্রণে তৈরি। ফ্যারাডে এই তরল পদার্থ থেকে একটি পদার্থকে আলাদা করতে সক্ষম হন এবং এর নাম দেন বাইকারবুরেট অব হাইড্রোজেন। এটাকেই বর্তমানে বেনজিন বলা হয়ে থাকে। রঙের কারখানায় বেনজিন খুবই প্রয়োজনীয়।

রসায়নবিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করার সময়েই ১৮২০ সালে তিনি জানতে পারেন, বিদ্যুৎপ্রবাহ থেকে চুম্বক তৈরি করা যায়। ব্যাপারটা শোনার পরপরই তাঁর মাথায় খেলে যায় এক চমৎকার বুদ্ধি। বিদ্যুৎপ্রবাহ থেকে যদি চুম্বক তৈরি করা যায়, তা হলে এর উলটো কাজও, অর্থাৎ চুম্বক থেকেও বিদ্যুৎ তৈরি করা যাবে। ভাবনা শেষেই তিনি লেগে গেলেন কাজে। কিন্তু সহজে সাফল্য এল না। কেটে গেল প্রায় দশটি বছর। অবশেষে ১৮৩১ সালে তিনি লক্ষ্য করলেন, বিদ্যুৎসঞ্চালিত তারের কাছে চুম্বক আনলে চুম্বকের কাঁটা এদিক-সেদিক ঘোরে। তিনি পরীক্ষা করে দেখলেন, কুণ্ডলীকৃত তারের মধ্যে চুম্বকদণ্ড প্রবেশ করালে তাতেও বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। আর এ-ভাবেই তিনি আবিষ্কার করেন ডায়নামো।

কিন্তু এই আবিষ্কারেও তিনি খুশি হতে পারলেন না। ভাবতে লাগলেন, কেমন করে এই চৌম্বক আবেশের সৃষ্টি হয়। পরে তিনি গবেষণা করে এই রহস্যেরও উদ্‌ঘাটন করেন। জানতে পারেন, শূন্যমণ্ডল নানা শক্তিতে পূর্ণ। যেমন, বিদ্যুৎশক্তি, চৌম্বকশক্তি, তাপশক্তি, বিকিরণশক্তি এবং মাধ্যাকর্ষণশক্তি ইত্যাদি। এসব শক্তির প্রভাবেই এখানে বিদ্যুৎ আবেশের সৃষ্টি হয়ে থাকে।

ডায়নামো এবং বিদ্যুৎ সম্পর্কে এই তথ্য আবিষ্কার হবার পরই মাইকেল ফ্যারাডের নাম ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও দেশ থেকে একের পর এক লাভ করতে থাকেন স্বীকৃতি। কিন্তু তিনি ছিলেন বেশ অদ্ভুত প্রকৃতির মানুষ। কোনোরকম সুনাম স্বীকৃতি এবং অর্থের প্রতি কোনো রকম মোহই যেন তাঁর ছিল না। তাঁর আবিষ্কৃত বা উদ্ভাবিত কোনো কিছুকে কেউ ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করার উদ্যোগ নিলেই তিনি সঙ্গে সঙ্গে তা বন্ধ করে দিয়েছেন।

একবার ইংলন্ডের তৎকালীন প্রাধানমন্ত্রী উইলিয়াম গ্ল্যাডস্টোন তাঁর আবিষ্কার সম্পর্কে তাচ্ছিল্য দেখিয়ে বলেছিলেন, এ জাতীয় আবিষ্কার করে কী লাভ? ফ্যারাডে সঙ্গে সঙ্গে জবাব দিলেছিন, কেন, শিগিরই আপনারা এর ওপর ট্যাক্স ধার্য করতে পারবেন। এ-রকমেরই আরেকটি অস্বস্তিকর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, হ্যাঁ, কী লাভ একটি শিশুর পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে?

এই সময়েই তিনি সারাহ্ বার্নার্ড নামের এক সুন্দরী মহিলাকে বিয়ে করেন। এর দু বছর পর ১৮২৩ সালে তিনি রয়্যাল সোসাইটির সদস্য নির্বাচিত হন। উল্লেখ্য, তখন সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন বিজ্ঞানী হামফ্রি ডেভি স্বয়ং। মজার ঘটনা হলো তাঁর সদস্যভুক্তির ব্যাপারে সোসাইটির সকল সদস্য একমত হলেও ফ্যারাডের একান্ত আপন জন হামফ্রি ডেভি নিজেই তাতে বাধা দিয়ে বসেন।

এর পেছনে অবশ্য কারণও ছিল, কারণটা হলো, ফ্যারাডের ক্লোরিন আবিষ্কারের পেছনে হামফ্রির নিজেরও কিছু অবদান ছিল। কিন্তু ক্লোরিন আবিষ্কার হয়ে যাবার পর ফ্যারাডে তাঁর অবদানের কথা স্বীকার করলেন না। ফলে হামফ্রি তাঁর শিষ্যের ওপর ভয়ানক রেগে যান এবং প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে সোসাইটিতে ফ্যারাডের সদস্যপদ লাভে বাধা দিয়ে বসেন, কিন্তু প্রভাবশালী সকল সদস্যের সমর্থনের মুখে হামফ্রির একক বাধা শেষ পর্যন্ত ধোপে টেকেনি। শেষ পর্যন্ত এভাবেই তিনি লাভ করেন রয়্যাল সোসাইটির সদস্যপদ।।

পরে অবশ্য ফ্যারাডির প্রতি হামফ্রির রাগ পড়ে গিয়েছিল। এর দুবছর পর ১৮২৫ সালে তিনি নিজেই এক চিঠিতে শিষ্য ফ্যারাডেকে গবেষণাগারের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ করেন এবং প্রফেসার ব্রান্ডির তত্ত্বাবধানে কাজ করার অনুরোধ জানান।

এরপর দীর্ঘ চল্লিশ বছর ধরে তিনি রয়্যাল সোসাইটির গবেষণাকাজ পরিচালনা করেন এবং প্রায় ১৫৮টি মৌলিক গবেষণাপত্র তৈরি করেন। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে প্রভূত অবদান রাখার জন্য তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে লাভ করেন উপহার, পদবি ও পদক।

আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি ক্ষমতা বা যশের আকাঙ্ক্ষী ছিলেন না। জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে তিনি কাটিয়ে দেন গবেষণাকাজে। রয়্যাল ইনস্টিটিউশন এবং রয়্যাল সোসাইটির প্রেসিডেন্টপদ গ্রহণের প্রস্তাব পর্যন্ত তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। এমনকি নাইট উপাধি গ্রহণেও তিনি অস্বীকৃতি জানান। শেষোক্ত সম্মান প্রত্যাখ্যান করতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, “I must remain plain Michael Faraday to the last.”

কিন্তু মানুষের প্রতি ছিল তাঁর অসীম করুণা। তিনি বলতেন, মানুষ আমার প্রতি যে ভালোবাসা দেখিয়েছে, এটাই আমার জীবনের মধুরতম পুরস্কার। বিজ্ঞান গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মহারানি ভিক্টোরিয়া তাঁর জন্য একটি বার্ষিক ভাতার ব্যবস্থা এবং তাঁর থাকা ও গবেষণাকাজের জন্য লন্ডনের হ্যাম্পটন কোর্ট গ্রিনে একটি বাড়ি দান করেন। ফ্যারাডে সারাজীবন এই বাড়িতেই বাস করে গেছেন।

বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডে ১৮৬৭ সালের ২৫ আগস্ট পরলোকগমন করেন। লন্ডনের হাইগেট সমাধিক্ষেত্রে তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়।

সকল অধ্যায়

১. হযরত মুহাম্মদ (দঃ) (৫৭০-৬৩২) – সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী
২. জরথুশত্র (৬২৮-৫৫১ খ্রি. পূ.) – পারশি ধর্মের প্রবর্তক
৩. বর্ধমান মহাবীর (৫৯৯–৫২৭ খ্রি. পূ.) – জৈন দর্শন ও ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা
৪. গৌতম বুদ্ধ (৫৬৩–৪৮৩ খ্রি. পূ.) – বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক
৫. কনফুসিয়াস (৫৫১–৪৭৯ খ্রি. পূ.) – চীনের প্রাচীনতম ধর্মমতবাদের প্রবর্তক
৬. সক্রেটিস (আনু. ৪৬৯–৩৯৯ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্রের আদিজনক
৭. প্লেটো (৪২৮–৩৪৭ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্র যাঁর হাতে পেয়েছিল পূর্নাঙ্গরূপ
৮. ডায়োজিনিস (৪১২–৩২২ খ্রি. পূ.) – একনিষ্ঠ জ্ঞান সাধক
৯. অ্যারিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খ্রি. পূ.) – যুক্তিশাস্ত্রের জনক
১০. যিশু খ্রিস্ট (আনু. ৬ খ্রি. পূ.–আনু. ২৯ খ্রি.) – খ্রিস্টানধর্মের প্রবর্তক
১১. অতীশ দীপঙ্কর (৯৮২–১০৫৩) – জ্ঞানসাধক বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক
১২. গুরু নানক (১৪৬৯–১৫৩৮) – শিখ ধর্মমতের প্রবর্তক
১৩. মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬) – ধর্মের সংস্কারক এবং ‘প্রটেস্টানিজম’ মতবাদের স্রষ্টা
১৪. মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩) – বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তক
১৫. রামমোহন রায় (১৭৭২–১৮৩৩) – ভারতবর্ষে নবযুগের প্রবর্তক
১৬. রামকৃষ্ণ পরমহংস (১৮৩৬–১৮৮৬) – ‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আমি ঈশ্বরকে দর্শন করেছি’
১৭. বারট্রান্ড রাসেল (১৮৭২–১৯৭০ ) – যুদ্ধ-বিরোধী ও মানবতাবাদী দার্শনিক
১৮. থ্যালিস (আনু. ৬২৪–৫৬৫ খ্রি. পূ.) – বিজ্ঞানশাস্ত্রের আদিপুরুষ
১৯. পিথাগোরাস (আনু. ৫৮২–৫০৭ খ্রি. পূ.) – তিনি বলেছিলেন—পৃথিবী গোলাকার
২০. হিপোক্র্যাটিস (আনু: ৪৬০–৩৭০ খ্রি. পূ.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আদিজনক
২১. আর্কিমিডিস (২৮৭–২১২ খ্রি. পূ.) – ঊর্ধ্বমুখী বল সূত্রের আবিষ্কারক
২২. ক্লডিয়াস টলেমি (১০০–১৮০ খ্রি.) – জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রথম কোষগ্রন্থ প্রণেতা
২৩. ক্লডিয়াস গ্যালেন (১৩১–২০১ খ্রি.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আধুনিক পদ্ধতির আদি জনক
২৪. ইবনে সিনা (৯৮০–১০৩৭) – জ্ঞানসাধনায় কাটিয়েছিলেন সমগ্র জীবন
২৫. কোপারনিকাস (১৪৭৩–১৫৪৩) – আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্ৰবক্তা
২৬. জিওর্দানো ব্রুনো (আনু. ১৫৪৮–১৬০০ ) – সত্যপ্রচারের অপরাধে যাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল
২৭. গ্যালিলিও গ্যালিলি (১৫৬৪-১৬৪২) – যাঁর গাণিতিক পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি
২৮. লিওয়েন হুক (১৬৩২–১৭৩৩) – মুদি দোকানদার থেকে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী
২৯. আইজাক নিউটন (১৬৪২–১৭২৭) – মাধ্যাকর্ষন শক্তির আবিষ্কারক
৩০. রিচার্ড আর্করাইট (১৭৩২–১৭৯২) – আধুনিক বস্ত্রশিল্পে বৈপ্লবিক ধারা প্রবর্তক
৩১. উইলিয়াম হার্শেল (১৭৩৮–১৮২২) – ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কারক
৩২. লরেঁ লাভোয়সিয়ের (১৭৪৩–১৭৯৪) – রসায়নশাস্ত্রের জনক
৩৩. মাইকেল ফ্যারাডে (১৭৯১-১৮৬৭) – তাড়িত-চুম্বক বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা
৩৪. চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) – প্রাণিজগতের বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যাদাতা
৩৫. লুই পাস্তুর (১৮২২–১৮৯৫) – জীবাণু আর জলাতঙ্ক রোগ প্রতিষেধকের আবিষ্কারক
৩৬. আলফ্রেড নোবেল (১৮৩৩–১৮৯৬) – যাঁর নামে দেয়া হয় নোবেল পুরস্কার
৩৭. আলভা এডিসন (১৮৪৭–১৯৩১) – সর্বাধিক আবিষ্কারের জনক
৩৮. জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৯–১৯৩৭) – যিনি বলেছিলেন গাছেরও প্রাণ আছে
৩৯. মাদাম কুরি (১৮৬৭–১৯৩৪) – সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহিলা বিজ্ঞানী
৪০. মার্কোনি (১৮৭৪–১৯৩৭) – বেতারযন্ত্রের আবিষ্কারক
৪১. আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯–১৯৫৫) – আপেক্ষিক তত্ত্বের জনক
৪২. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১–১৯৫৫) – পেনিসিলিনের আবিষ্কারক
৪৩. হোমার (আনু. ৭০০-? খ্রি. পূ.) – বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দুটি মহাকাব্যের রচয়িতা
৪৪. ঈশপ (আ. কা. ৬২০–৫৬০ খ্রি. পূ.) – কালজয়ী নীতিগল্পকার
৪৫. সোফোক্লেস (আনু. ৪৯৫-৪০৬ খ্রি. পূ.) – গ্রিক ট্র্যাজেডি নাট্যধারার রূপকার
৪৬. হেরোডোটাস (আনু. ৪৮৫–৪২৫ খ্রি. পূ.) – ইতিহাসশাস্ত্রের জনক
৪৭. অ্যারিস্টোফানিস (আনু. ৪৪৪–৩৮৫ খ্রি. পূ.) – যাঁর সাহিত্যকর্মে আর্তমানবতার কথা প্রতিফলিত
৪৮. মহাকবি কালিদাস (আনু. ৫৭০-৬৫০ খ্রি.) – সংস্কৃতি সাহিত্যের অমর কবি
৪৯. লেওনার্দো দা ভিঞ্চি (১৪৫২–১৫১৯) – সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী
৫০. মিকেলাঞ্জেলো (১৪৭৫–১৫৬৪) – পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাস্কর শিল্পী
৫১. তানসেন (১৫০৬–১৫৮৫) – কিংবদন্তির গায়ক
৫২. শেকসপিয়ার (১৫৬৪-১৬১৬) – বিশ্বসাহিত্যের কালজয়ী নাট্যকার
৫৩. ভলতেয়ার (১৬৯৪-১৭৭৮) – বিখ্যাত ফরাসি চিন্তাবিদ
৫৪. জঁ-জাক্ রুসো (১৭১২–১৭৭৮) – ফরাসি বিপ্লবের রূপকার
৫৫. লর্ড বায়রন (১৭৮৮–১৮২৪) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি
৫৬. ভিক্টর হুগো (১৮০২-১৮৮৫) – ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৭. ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন (১৮০৫–১৮৭৫) – যাঁকে বলা হয় রূপকথার জাদুকর
৫৮. চার্লস ডিকেন্স (১৮১২–১৮৭০) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৯. ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯-১৮৯২) – মার্কিন সাহিত্যের যুগ-প্রবর্তক কবি
৬০. লিয়েফ তলস্তোয় (১৮২৮–১৯১০) – বিশ্বের মহান সাহিত্যিকদের অন্যতম
৬১. জুল ভের্ন (১৮২৮–১৯০৫) – কল্পবিজ্ঞান কাহিনীর স্রষ্টা
৬২. মার্ক টোয়েন (১৮৩৫–১৯১০) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রসস্রষ্টা
৬৩. জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৫৬–১৯৫০) – যিনি প্রথম নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন
৬৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১) – শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনীষা, পৃথিবীর মহত্তম সাহিত্য-ব্যক্তিত্ব
৬৫. ম্যাক্সিম গোর্কি (১৮৬৮–১৯৩৬) – যাঁর সাহিত্যকর্মের প্রধান উপজীব্য গণমানুষের কথা
৬৬. হেলেন কেলার (১৮৮০-১৯৬৮) – যাঁর খ্যাতিকে নেপোলিয়নের সঙ্গে তুলনা করা হতো
৬৭. আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (১৮৯৮–১৯৬১) – জীবনবাদী মার্কিন কথাসাহিত্যিক
৬৮. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯–১৯৭৬) – বাংলার বিদ্রোহী কবি
৬৯. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২–১৭৯৯) – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৭০. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১) – ইতিহাসের কিংবদন্তির মহানায়ক
৭১. জুসেপ্পে গারিবলদি (১৮০৭–১৮৮২) – ইতালির জনক বলে যাঁর খ্যাতি
৭২. আব্রাহাম লিংকন (১৮০৯-১৮৬৫) – যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্রীতদাসপ্রথা রহিত করেছিলেন
৭৩. অটো ফন বিসমার্ক (১৮১৫–১৮৯৮) – জার্মান সাম্রাজ্যের স্থপতি
৭৪. মহাত্মা গান্ধি (১৮৬৯–১৯৪৮) – ‘সবকো সুমতি দে ভগবান’
৭৫. কমরেড লেনিন (১৮৭০–১৯২৪) – বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা
৭৬. উইনস্টন চার্চিল (১৮৭৪–১৯৬৫) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ডাকসাইটে প্রধানমন্ত্রী
৭৭. জোসেফ স্ট্যালিন (১৮৭৯–১৯৫৩) – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়েনের ‘লৌহমানব’
৭৮. কামাল আতাতুর্ক (১৮৮১–১৯৩৮) – নব্য-তুরস্কের জনক
৭৯. ডি ভ্যালেরা (১৮৮২-১৯৭৫) – আয়ারল্যান্ডের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৮০. জওহরলাল নেহরু (১৮৮৯-১৯৬৪) – ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
৮১. আইসেনহাওয়ার (১৮৯০-১৯৬৯) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক
৮২. শার্ল দ্য গল (১৮৯০-১৯৭০) – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা
৮৩. হো-চি-মিন (১৮৯০-১৯৬৯) – ভিয়েতনামের মুক্তিদাতা পুরুষ
৮৪. মার্শাল টিটো (১৮৯২–১৯৮০) – জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা
৮৫. মাও-সে-তুং (১৮৯৫–১৯৭৬) – চীন সাধারণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা
৮৬. সুভাষচন্দ্র বসু (১৮৯৭–১৯৪৫) – ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’
৮৭. জন এফ কেনেডি (১৯১৭–১৯৬৩) – গুপ্তঘাতকের হাতে যাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছিল
৮৮. ইন্দিরা গান্ধি (১৯১৭–১৯৮৪) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
৮৯. নেলসন ম্যান্ডেলা (১৯১৮) – দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তিদাতা পুরুষ
৯০. শেখ মুজিবর রহমান (১৯২০–১৯৭৫) – বাংলাদেশের জাতির জনক
৯১. প্যাট্রিস লুমুম্বা (১৯২৫-১৯৬১) – কঙ্গোর মুক্তিদাতা পুরুষ
৯২. মার্কো পোলো (১২৫৬–১৩২৩) – দুঃসাহসিক অভিযাত্রী
৯৩. ক্রিস্টোফার কলম্বাস (আনু. ১৪৪৬-১৫০৬) – আমেরিকার আবিষ্কারক
৯৪. ডেভিড লিভিংস্টোন (১৮১৩-১৮৭৩) – আফ্রিকার আবিষ্কারক
৯৫. উইলিয়াম জোন্স (১৭৪৬–১৭৯৪) – এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৬. ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (১৮২০–১৯১০) – আধুনিক ‘নার্সিং’ বৃত্তির অগ্রপথিক
৯৭. হেনরি ডুনান্ট (১৮২৮–১৯১০) – রেডক্রস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৮. ব্যাডেন পাওয়েল (১৮৫৭–১৯৪১) – বয়স্কাউট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা
৯৯. মাদার তেরেসা (১৯১০–১৯৯৭) – প্রেম, করুণা ও ধর্মের মূর্ত প্রতিমা
১০০. অ্যাডাম স্মিথ (১৭২৩–১৭৯০) – রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিজ্ঞানের জনক

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন