ইন্দিরা গান্ধি (১৯১৭–১৯৮৪) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব

ভবেশ রায়

সম্ভবত বিশ্বের কোনো কালে কোনো মহিলা এতখানি গৌরবময় আসনে অধিষ্ঠিত হননি, যতখানি হয়ছিলেন ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধি। তিনি দেশশাসন ও দেশের অগ্রগতিতে অভূতপূর্ব গৌরবময় অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। মূলত ইন্দিরা গান্ধি ছিলেন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনীতিবিদ।

এই মহীয়সী মহিলার জন্ম ১৯১৭ সালের ১৯ নভেম্বর, ভারতের বিখ্যাত নেহরু পরিবারে। পিতা ছিলেন ভারতবর্ষের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদ ও প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু, মা কমলা নেহরু। ইন্দিরা গান্ধি ছিলেন বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। ইন্দিরার পৈতৃক নিবাস ছিল ভারতের এলাহাবাদে। শিক্ষাদীক্ষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে এ পরিবারটি ছিল ভারত তথা সারা বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয়।

ইন্দিরা বাল্যকাল থেকেই ছিলেন অপূর্ব দৈহিক সৌন্দর্যের অধিকারিণী। তাই তাঁর পিতার সহযোগী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং সুধীমহল বাল্যকালে আদর করে তাঁকে ডাকতেন ‘প্রিয়দর্শিণী’ বলে।

১৯২২ সালে পাঁচ বছর বয়সে প্রিয়দর্শিনী ইন্দিরা সবরমতী গান্ধি আশ্রমে কয়েক মাস অবস্থান করেন। পরের বছর ১৯২৩ সালে তিনি প্রথম ভর্তি হন সেন্ট মিসিলিয়া স্কুলে।

১৯২৬ সালে হঠাৎ তাঁর মা কমলা নেহরু গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থ মাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় ইউরোপে, ঐ সময় ইন্দিরাও গিয়েছিলেন মায়ের সঙ্গে। দীর্ঘ দুবছর ইউরোপে মায়ের সঙ্গে কাটিয়ে আবার ফিরে আসেন স্বদেশে। ইউরোপ থেকে দেশে ফিরে এসে তিনি ভর্তি হলেন এলাহাবাদের সেন্ট মেরি কনভেন্টে।

পিতা জওহরলাল নেহরু ছিলেন মহাত্মা গান্ধির ভাবশিষ্য। সুতরাং সেই সূত্রে বল্যকালেই ইন্ধিরাও মহাত্মার সংস্পর্শে আসার এবং তাঁর আদর্শ গ্রহণের সুযোগ লাভ করেন। ১৯২৮ সালে এগারো বছর বয়সেই তিনি গান্ধিজির চরকা সংঘের শিশু বিভাগে যোগদান করেন। চরকায় সুতাকাটা ছিল ইংরেজ বিরোধী আন্দোলনের আদর্শের প্রতীকস্বরূপ। ইন্দিরা গান্ধিরও সেই শিশুবয়সেই স্বদেশি আন্দোলনের হাতেখড়ি হয় এভাবে। এরপর তিনি ১৯৩০ সালে ‘বানর সেনা’ নামে অন্য আরো একটি সংগঠনের সদস্য হন তিনি।

১৯৩৪ সালে ইন্দিরা পিপল্স্ ওন স্কুল থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে প্রবেশিকা পরীক্ষা পাস করেন। তারপর তিনি ভর্তি হন বিশ্বভারতীতে—সাহচর্য লাভ করেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের।

১৯৩৫ সালে ইন্দিরার মা কমলা নেহরু দ্বিতীয় বারের মতো গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে চিকিৎসার জন্য আবার নিয়ে যাওয়া হয় লন্ডনে। লন্ডনেই তিনি ১৯৩৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পরলোকগমন করেন।

মাকে হারিয়ে ইন্দিরা খুবই মর্মাহত ও নিঃসহায় হয়ে পড়েন। তার পর থেকেই মাতৃহারা কন্যার একমাত্র সম্বল ছিলেন পিতা জওহরলাল নেহেরু।

মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই ইন্দিরা ছিলেন পিতার প্রায় সার্বক্ষণিক সঙ্গী। পিতা জওহরলাল দীর্ঘদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি যখনই কোনো রাজনৈতিক সফরে যেতেন দেশে কিংবা বিদেশে, তাঁর সঙ্গী হতেন ইন্দিরা। এমনি করে তিনি অল্পবয়সেই পৃথিবীর বহু দেশ দেখার সৌভাগ্য অর্জন করেন।

শান্তিনিকেতনের পর তিনি ব্রিস্টল এবং অক্সফোর্ডেও পড়শোনা করেন। পড়াশোনা শেষ হওয়ার আগে থেকেই তিনি মাত্র ২১ বছর বয়সে রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়েয়ে পড়েন। ১৯৩৮ সালেই ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সদস্যপদ লাভ করেন (তখনও তিনি অক্সফোর্ডের ছাত্রী)।

তারপর ১৯৪১ সালে পড়াশোনা শেষ করে লন্ডন থেকে স্বদেশে ফিরে এসে কংগ্রেস নেতা লালবাহাদুর শাস্ত্রীর সঙ্গে সার্বক্ষণিকভাবে পার্টির কাজ করতে শুরু করেন।

এর পরের বছর ১৯৪২ সালের ২৬ মার্চ তিনি বিশিষ্ট সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ ফিরোজ গান্ধির সঙ্গে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন।

ইন্দিরার দু’ ছেলে। ১৯৪৪ সালে রাজীব (ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী) এবং এর দুবছর পরে ১৯৪৬ সালে সঞ্জয়ের জন্ম হয়।

১৯৪৭ সালে ভারতে ইংরেজশাসনের অবসান ঘটে—ভারত স্বাধীন হয়। এই সময় তিনি মহাত্মা গান্ধির সঙ্গে সারা দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেন। শেষ বয়সে, ১৯৪৮ সালের ২৯ জানুয়রি নিহত হওয়ার পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত গান্ধিজি যাঁদের কাঁধে ভর দিয়ে হাঁটাচলা করতেন, ইন্দিরা গান্ধি ছিলেন তাঁদের অন্যতম।

১৯৫৩ সালে ইন্দিরা সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন সফরে গিয়ে জোসেফ স্ট্যালিনের সঙ্গে পরিচিত হন। এবছরই পিতার সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার বান্দুং শহরে অনুষ্ঠিত জোট নিরপেক্ষ রাষ্ট্রের প্রথম সম্মেলনে গিয়ে তিনি চীনের প্রধানমন্ত্রী চৌ-এন লাই, যুগোস্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট মার্শাল টিটো, মিশরের প্রেসিডেন্ট গামাল নাসের, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট ড. সুকর্নর মতো বিশ্বনেতৃবৃন্দের সঙ্গে পরিচিত হন। সেই বছরেরই শেষভাগে ইন্দিরা যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন এবং সমাজসেবায় বিশেষ কৃতিত্বের জন্য মাদার অ্যাওয়ার্ডস লাভ করেন।

১৯৫৬ সালে তিনি এলাহাবাদ নগর কংগ্রেস কমিটির সভনেত্রী নির্বাচিত হন। ১৯৫৮ সালে হন নিখিল ভারত জাতীয় কংগ্রেসের সভানেত্রী।

এই সময় পিতা জওহরলাল নেহেরু ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু ইন্দিরা ছিলেন পিতার অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক উপদেষ্টা। শোনা যায়, এই সময় কন্যা ইন্দিরার পরামর্শ ছাড়া নেহেরু বড় কোনো রাজনৈতিক সিদ্ধান্তই নিতেন না। ইন্দিরাই ছিলেন পিতার নেপথ্য পরিচালিকা।

১৯৬০ সালে ইন্দিরার জীবনে নেমে আসে এক দুঃখময় ঘটনা। স্বামী ফিরোজ গান্ধি পরলোকগমন করেন। এর পর থেকেই তিনি হয়ে যান নিঃসঙ্গ। এই নিঃসঙ্গতা কাটানোর জন্য সর্বক্ষণই তিনি ডুবে থাকতেন কাজে।

দীর্ঘ একটানা ১৭ বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী থাকার পর ১৯৬৪ সালের ২৭ মে পিতা জওহরলাল নেহরু পরলোকগমন করেন।

নেহেরুর মৃত্যুর পর লালবাহাদুর শাস্ত্রী হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ইন্দিরা গান্ধিও এই প্রথম বারের মতো মন্ত্রিপরিষদে প্রবেশ করেন। তিনি হন তথ্য ও বেতারমন্ত্রী। ২০ আগস্ট (১৯৬৪ সাল) তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাজ্যসভার সদস্যপদ লাভ করেন।

এর পর ১৯৬৬ সালের ২৯ জানুয়ারি মোরারজি দেশাইকে পরাজিত করে তিনি সংসদে কংগ্রেস দলের নেত্রী নির্বাচিত হন। ১৯৬৬ সালে লালবাহাদুর শাস্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

১৯৬৭ সালের ১২ মার্চ তিনি কংগ্রেস সংসদীয় দলের নেত্রী নির্বাচিত হয়ে দ্বিতীয় দফা প্রধানমন্ত্রী হন।

১৯৭১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে লোকসভা বাতিল করা হয়। লোকসভা বাতিল করার প্রেক্ষিতে তাঁর প্রধানমন্ত্রীর পদ অব্যাহত থাকার বৈধতা নিয়ে মামলা হয়। তিনি সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন এবং আদালতের রায়ের ভিত্তিতে ১২ মার্চ মন্ত্রিসভা গঠন করেন।

ইন্দিরা গান্ধির জীবনের অন্যতম প্রধান কৃতিত্ব হলো ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সহায়তাদান।

তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে পাক সৈন্যবাহিনী আধুনিক মারণাস্ত্র নিয়ে বাঙালিদের উপর হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞের কয়েক মাসের মধ্যেই লক্ষ লক্ষ বাঙালি ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। শুরু হয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ।

ইন্দিরা গান্ধিও কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও পাক- সেনাদের গণহত্যার বিরুদ্ধে। তিনি দেশে দেশে প্রতিনিধি পাঠিয়ে শুরু করেন এই তৎপরতা। অবশেষে তিনি নিজেই সেপ্টেম্বর মাসে বের হন বিশ্বসফরে—বাংলাদেশের গণহত্যা ও শরণার্থী সমস্যা সম্পর্কে বিশ্বজনমত গঠনের জন্য। তিনি সফর করেন আমেরিকা ও রাশিয়াসহ ইউরোপের বহু দেশ।

৩ ডিসেম্বর (১৯৭১ ) পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। তখন ইন্দিরা সরকারও প্রবাসী মুজিবনগর সরকারকে স্বীকৃতি দিয়ে নেমে পড়ে যুদ্ধে। গঠিত হয় মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর এক যৌথ কমান্ড। বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণ সহযোগিতায় ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনীর হাতে পাকবাহিনী পরাজিত হয়। ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দি উদ্যান) পাকবাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং অভ্যুদয় ঘটে বাংলাদেশের। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ইন্দিরা গান্ধির দান অনস্বীকার্য।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭১ সালের ১৭ মার্চ তিনি এদেশ সফরে এসেছিলেন।

১৯৭৭ সালের নির্বাচনে ইন্দিরা গান্ধির কংগ্রেস পরাজিত হলে মোরারজি দেশাই ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন। দেশাই প্রধানমন্ত্রী হয়ে সর্বক্ষণ ইন্দিরা গান্ধিকে হেনস্থা করার অপচেষ্টা চালান। কিন্তু ইন্দিরা ধৈর্য ও তৎপরতার সঙ্গে সকল বাধা মোকাবেলা করেন। তার ফলে ১৯৮০ সালে সাধারণ নির্বাচনে পুনরায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে কংগ্রেস দল। তিনি পুনরায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন।

এই বছরেই তাঁর জীবনে আর একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। তাঁর ছোট ছেলে সঞ্জয় গান্ধি বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান।

তারপর আসে বিশ্বের ইতিহাসের সেই মর্মান্তিক ক্ষণটি। ১৯৮৪ সালের ৩১ অক্টোবর ব্রিটেনের খ্যাতনামা অভিনেতা ও পরিচালক পিটার উস্তিনভ-এর সঙ্গে এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকার দিতে এসে নিজ দেহরক্ষীর হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি মারা যান। এই হত্যাকাণ্ড ছিল বিশ্বের ইতিহাসের অন্যতম প্রধান কলঙ্কময় ঘটনা। তাঁর ঘাতকরা ছিল শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী দলের সদস্য। পাঞ্জাবের শিখ বিছিন্নতাবাদী প্রবণতাই ইন্দিরাহত্যার প্রধান কারণ। পরে সর্বোচ্চ আদালতের বিচারের রায়ের ভিত্তিতে ইন্দিরা গান্ধির হত্যাকারী বিয়ন্ত সিং ও কোহার সিংকে ফাঁসি দেওয়া হয় (১৯৮৯ সালের জানুয়ারি)।

ইন্দিরা গান্ধি ছিলেন সারা বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনীতিবিদ। প্রবল ছিল তাঁর আত্মবিশ্বাস ও ব্যক্তিত্ব। তাঁর মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বিশ্বে সত্যি বিরল।

সকল অধ্যায়

১. হযরত মুহাম্মদ (দঃ) (৫৭০-৬৩২) – সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী
২. জরথুশত্র (৬২৮-৫৫১ খ্রি. পূ.) – পারশি ধর্মের প্রবর্তক
৩. বর্ধমান মহাবীর (৫৯৯–৫২৭ খ্রি. পূ.) – জৈন দর্শন ও ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা
৪. গৌতম বুদ্ধ (৫৬৩–৪৮৩ খ্রি. পূ.) – বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক
৫. কনফুসিয়াস (৫৫১–৪৭৯ খ্রি. পূ.) – চীনের প্রাচীনতম ধর্মমতবাদের প্রবর্তক
৬. সক্রেটিস (আনু. ৪৬৯–৩৯৯ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্রের আদিজনক
৭. প্লেটো (৪২৮–৩৪৭ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্র যাঁর হাতে পেয়েছিল পূর্নাঙ্গরূপ
৮. ডায়োজিনিস (৪১২–৩২২ খ্রি. পূ.) – একনিষ্ঠ জ্ঞান সাধক
৯. অ্যারিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খ্রি. পূ.) – যুক্তিশাস্ত্রের জনক
১০. যিশু খ্রিস্ট (আনু. ৬ খ্রি. পূ.–আনু. ২৯ খ্রি.) – খ্রিস্টানধর্মের প্রবর্তক
১১. অতীশ দীপঙ্কর (৯৮২–১০৫৩) – জ্ঞানসাধক বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক
১২. গুরু নানক (১৪৬৯–১৫৩৮) – শিখ ধর্মমতের প্রবর্তক
১৩. মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬) – ধর্মের সংস্কারক এবং ‘প্রটেস্টানিজম’ মতবাদের স্রষ্টা
১৪. মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩) – বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তক
১৫. রামমোহন রায় (১৭৭২–১৮৩৩) – ভারতবর্ষে নবযুগের প্রবর্তক
১৬. রামকৃষ্ণ পরমহংস (১৮৩৬–১৮৮৬) – ‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আমি ঈশ্বরকে দর্শন করেছি’
১৭. বারট্রান্ড রাসেল (১৮৭২–১৯৭০ ) – যুদ্ধ-বিরোধী ও মানবতাবাদী দার্শনিক
১৮. থ্যালিস (আনু. ৬২৪–৫৬৫ খ্রি. পূ.) – বিজ্ঞানশাস্ত্রের আদিপুরুষ
১৯. পিথাগোরাস (আনু. ৫৮২–৫০৭ খ্রি. পূ.) – তিনি বলেছিলেন—পৃথিবী গোলাকার
২০. হিপোক্র্যাটিস (আনু: ৪৬০–৩৭০ খ্রি. পূ.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আদিজনক
২১. আর্কিমিডিস (২৮৭–২১২ খ্রি. পূ.) – ঊর্ধ্বমুখী বল সূত্রের আবিষ্কারক
২২. ক্লডিয়াস টলেমি (১০০–১৮০ খ্রি.) – জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রথম কোষগ্রন্থ প্রণেতা
২৩. ক্লডিয়াস গ্যালেন (১৩১–২০১ খ্রি.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আধুনিক পদ্ধতির আদি জনক
২৪. ইবনে সিনা (৯৮০–১০৩৭) – জ্ঞানসাধনায় কাটিয়েছিলেন সমগ্র জীবন
২৫. কোপারনিকাস (১৪৭৩–১৫৪৩) – আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্ৰবক্তা
২৬. জিওর্দানো ব্রুনো (আনু. ১৫৪৮–১৬০০ ) – সত্যপ্রচারের অপরাধে যাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল
২৭. গ্যালিলিও গ্যালিলি (১৫৬৪-১৬৪২) – যাঁর গাণিতিক পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি
২৮. লিওয়েন হুক (১৬৩২–১৭৩৩) – মুদি দোকানদার থেকে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী
২৯. আইজাক নিউটন (১৬৪২–১৭২৭) – মাধ্যাকর্ষন শক্তির আবিষ্কারক
৩০. রিচার্ড আর্করাইট (১৭৩২–১৭৯২) – আধুনিক বস্ত্রশিল্পে বৈপ্লবিক ধারা প্রবর্তক
৩১. উইলিয়াম হার্শেল (১৭৩৮–১৮২২) – ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কারক
৩২. লরেঁ লাভোয়সিয়ের (১৭৪৩–১৭৯৪) – রসায়নশাস্ত্রের জনক
৩৩. মাইকেল ফ্যারাডে (১৭৯১-১৮৬৭) – তাড়িত-চুম্বক বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা
৩৪. চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) – প্রাণিজগতের বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যাদাতা
৩৫. লুই পাস্তুর (১৮২২–১৮৯৫) – জীবাণু আর জলাতঙ্ক রোগ প্রতিষেধকের আবিষ্কারক
৩৬. আলফ্রেড নোবেল (১৮৩৩–১৮৯৬) – যাঁর নামে দেয়া হয় নোবেল পুরস্কার
৩৭. আলভা এডিসন (১৮৪৭–১৯৩১) – সর্বাধিক আবিষ্কারের জনক
৩৮. জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৯–১৯৩৭) – যিনি বলেছিলেন গাছেরও প্রাণ আছে
৩৯. মাদাম কুরি (১৮৬৭–১৯৩৪) – সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহিলা বিজ্ঞানী
৪০. মার্কোনি (১৮৭৪–১৯৩৭) – বেতারযন্ত্রের আবিষ্কারক
৪১. আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯–১৯৫৫) – আপেক্ষিক তত্ত্বের জনক
৪২. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১–১৯৫৫) – পেনিসিলিনের আবিষ্কারক
৪৩. হোমার (আনু. ৭০০-? খ্রি. পূ.) – বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দুটি মহাকাব্যের রচয়িতা
৪৪. ঈশপ (আ. কা. ৬২০–৫৬০ খ্রি. পূ.) – কালজয়ী নীতিগল্পকার
৪৫. সোফোক্লেস (আনু. ৪৯৫-৪০৬ খ্রি. পূ.) – গ্রিক ট্র্যাজেডি নাট্যধারার রূপকার
৪৬. হেরোডোটাস (আনু. ৪৮৫–৪২৫ খ্রি. পূ.) – ইতিহাসশাস্ত্রের জনক
৪৭. অ্যারিস্টোফানিস (আনু. ৪৪৪–৩৮৫ খ্রি. পূ.) – যাঁর সাহিত্যকর্মে আর্তমানবতার কথা প্রতিফলিত
৪৮. মহাকবি কালিদাস (আনু. ৫৭০-৬৫০ খ্রি.) – সংস্কৃতি সাহিত্যের অমর কবি
৪৯. লেওনার্দো দা ভিঞ্চি (১৪৫২–১৫১৯) – সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী
৫০. মিকেলাঞ্জেলো (১৪৭৫–১৫৬৪) – পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাস্কর শিল্পী
৫১. তানসেন (১৫০৬–১৫৮৫) – কিংবদন্তির গায়ক
৫২. শেকসপিয়ার (১৫৬৪-১৬১৬) – বিশ্বসাহিত্যের কালজয়ী নাট্যকার
৫৩. ভলতেয়ার (১৬৯৪-১৭৭৮) – বিখ্যাত ফরাসি চিন্তাবিদ
৫৪. জঁ-জাক্ রুসো (১৭১২–১৭৭৮) – ফরাসি বিপ্লবের রূপকার
৫৫. লর্ড বায়রন (১৭৮৮–১৮২৪) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি
৫৬. ভিক্টর হুগো (১৮০২-১৮৮৫) – ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৭. ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন (১৮০৫–১৮৭৫) – যাঁকে বলা হয় রূপকথার জাদুকর
৫৮. চার্লস ডিকেন্স (১৮১২–১৮৭০) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৯. ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯-১৮৯২) – মার্কিন সাহিত্যের যুগ-প্রবর্তক কবি
৬০. লিয়েফ তলস্তোয় (১৮২৮–১৯১০) – বিশ্বের মহান সাহিত্যিকদের অন্যতম
৬১. জুল ভের্ন (১৮২৮–১৯০৫) – কল্পবিজ্ঞান কাহিনীর স্রষ্টা
৬২. মার্ক টোয়েন (১৮৩৫–১৯১০) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রসস্রষ্টা
৬৩. জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৫৬–১৯৫০) – যিনি প্রথম নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন
৬৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১) – শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনীষা, পৃথিবীর মহত্তম সাহিত্য-ব্যক্তিত্ব
৬৫. ম্যাক্সিম গোর্কি (১৮৬৮–১৯৩৬) – যাঁর সাহিত্যকর্মের প্রধান উপজীব্য গণমানুষের কথা
৬৬. হেলেন কেলার (১৮৮০-১৯৬৮) – যাঁর খ্যাতিকে নেপোলিয়নের সঙ্গে তুলনা করা হতো
৬৭. আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (১৮৯৮–১৯৬১) – জীবনবাদী মার্কিন কথাসাহিত্যিক
৬৮. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯–১৯৭৬) – বাংলার বিদ্রোহী কবি
৬৯. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২–১৭৯৯) – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৭০. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১) – ইতিহাসের কিংবদন্তির মহানায়ক
৭১. জুসেপ্পে গারিবলদি (১৮০৭–১৮৮২) – ইতালির জনক বলে যাঁর খ্যাতি
৭২. আব্রাহাম লিংকন (১৮০৯-১৮৬৫) – যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্রীতদাসপ্রথা রহিত করেছিলেন
৭৩. অটো ফন বিসমার্ক (১৮১৫–১৮৯৮) – জার্মান সাম্রাজ্যের স্থপতি
৭৪. মহাত্মা গান্ধি (১৮৬৯–১৯৪৮) – ‘সবকো সুমতি দে ভগবান’
৭৫. কমরেড লেনিন (১৮৭০–১৯২৪) – বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা
৭৬. উইনস্টন চার্চিল (১৮৭৪–১৯৬৫) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ডাকসাইটে প্রধানমন্ত্রী
৭৭. জোসেফ স্ট্যালিন (১৮৭৯–১৯৫৩) – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়েনের ‘লৌহমানব’
৭৮. কামাল আতাতুর্ক (১৮৮১–১৯৩৮) – নব্য-তুরস্কের জনক
৭৯. ডি ভ্যালেরা (১৮৮২-১৯৭৫) – আয়ারল্যান্ডের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৮০. জওহরলাল নেহরু (১৮৮৯-১৯৬৪) – ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
৮১. আইসেনহাওয়ার (১৮৯০-১৯৬৯) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক
৮২. শার্ল দ্য গল (১৮৯০-১৯৭০) – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা
৮৩. হো-চি-মিন (১৮৯০-১৯৬৯) – ভিয়েতনামের মুক্তিদাতা পুরুষ
৮৪. মার্শাল টিটো (১৮৯২–১৯৮০) – জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা
৮৫. মাও-সে-তুং (১৮৯৫–১৯৭৬) – চীন সাধারণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা
৮৬. সুভাষচন্দ্র বসু (১৮৯৭–১৯৪৫) – ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’
৮৭. জন এফ কেনেডি (১৯১৭–১৯৬৩) – গুপ্তঘাতকের হাতে যাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছিল
৮৮. ইন্দিরা গান্ধি (১৯১৭–১৯৮৪) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
৮৯. নেলসন ম্যান্ডেলা (১৯১৮) – দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তিদাতা পুরুষ
৯০. শেখ মুজিবর রহমান (১৯২০–১৯৭৫) – বাংলাদেশের জাতির জনক
৯১. প্যাট্রিস লুমুম্বা (১৯২৫-১৯৬১) – কঙ্গোর মুক্তিদাতা পুরুষ
৯২. মার্কো পোলো (১২৫৬–১৩২৩) – দুঃসাহসিক অভিযাত্রী
৯৩. ক্রিস্টোফার কলম্বাস (আনু. ১৪৪৬-১৫০৬) – আমেরিকার আবিষ্কারক
৯৪. ডেভিড লিভিংস্টোন (১৮১৩-১৮৭৩) – আফ্রিকার আবিষ্কারক
৯৫. উইলিয়াম জোন্স (১৭৪৬–১৭৯৪) – এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৬. ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (১৮২০–১৯১০) – আধুনিক ‘নার্সিং’ বৃত্তির অগ্রপথিক
৯৭. হেনরি ডুনান্ট (১৮২৮–১৯১০) – রেডক্রস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৮. ব্যাডেন পাওয়েল (১৮৫৭–১৯৪১) – বয়স্কাউট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা
৯৯. মাদার তেরেসা (১৯১০–১৯৯৭) – প্রেম, করুণা ও ধর্মের মূর্ত প্রতিমা
১০০. অ্যাডাম স্মিথ (১৭২৩–১৭৯০) – রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিজ্ঞানের জনক

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন