আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (১৮৯৮–১৯৬১) – জীবনবাদী মার্কিন কথাসাহিত্যিক

ভবেশ রায়

একেবারে বখাটে ছেলে বললেও তাকে কম বলা হয়। পড়শোনায় মন নেই, পরীক্ষাতেও রেজাল্টও ভালো হয় না। হবে কেমন করে? যে-ছেলে রাইফেল নিয়ে ঘুরে বেড়ায় বনেজঙ্গলে, লেকের জলে নৌকা ভাসিয়ে মাছ শিকার করে বেড়ায় এবং মুষ্টিযুদ্ধের কসরত দেখাতে গিয়ে নাকের হাড় ভেঙে ফেলে, চোখে আঘাত পেয়ে দৃষ্টিশক্তি কমে যায়—তার রেজাল্ট কী করে ভালো হতে পারে? কিন্তু ছোটবেলায় রেজাল্ট ভালো না হলেও পরবর্তী জীবনে এই বখাটে ছেলেটিই হয়েছিলেন ইংরেজি সাহিত্যের এক দিকপাল লেখক।

বিশ্ববিখ্যাত মার্কিন ঔপন্যাসিক আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (Ernest Hemingway ) বাল্যকালে এমনই দুরন্ত আর উচ্ছন্নে যাওয়া ছেলেই ছিলেন। তাঁর বাল্যজীবন দেখে কেউ সেদিন কল্পনাও করে নি এই ছেলেই একদিন সারা বিশ্বে বরেণ্য ব্যক্তিত্বে পরিণত হবেন।

আর্নেস্ট হেমিংওয়ের জন্ম ১৮৯৮ সালে ২১ জুলাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের ওক পার্কে। বাবা ক্লারেন্স এডমন্ড হেমিংওয়ে ছিলেন ডাক্তার। মা গ্রেস বিয়ের আগে ছিলেন পেশাদার গায়িকা। বাবার ইচ্ছে ছিল তাঁর ছেলেও ডাক্তার হোক। ভালো লেখাপড়া করে আয়ের পথ ধরুক। কিন্তু আর্নেস্ট বাবার সে আশা পূরণ করতে পারেননি। পড়াশোনায় তাঁর মন বসেনি। ১৯১৭ সালে তিনি কোনোমতে হাইস্কুল পাস করেন, পরে গ্র্যাজুয়েশন করেন। বলতে গেলে তাঁর লেখাপড়ার এখানেই ইতি ঘটে। তারপর আর এগুতে পারেননি আর্নেস্ট।

এই সময় চলছিল প্রথম মহাযুদ্ধ। চিরকালের দুরন্ত ছেলে তাই উচ্চাশিক্ষার জন্য কলেজে ভর্তি না হয়ে নাম লেখাতে গেলেন সেনাবাহিনীতে। কিন্তু তাঁর সে আশা পূরণ হলো না দৃষ্টিশক্তি কম ছিল বলে— শারীরিক পরীক্ষায় অযোগ্য বলে ঘোষিত হলেন।

কিন্তু যুদ্ধে যোগদান করতে না পারলেও অনেক চেষ্টা-তদ্বির করে ১৯১৮ সালে আমেরিকান রেডক্রসে তিনি যোগদান করতে সক্ষম হলেন।

তাঁকে পাঠানো হলো ইতালিয়ান সেক্টরে অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার হিসেবে। এখানে তিনি মাস তিনেক কাজ করেন। এই সময় তিনি স্থানীয় পিয়েভ নদী পার হতে গিয়ে গুরুতর আহত হন। তিনি আহত হয়েছিলেন নদীর তীরের জঙ্গলের পথে পুঁতে রাখা মাইনের বিস্ফোরণে।

আহত অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। হাসপাতালে তিনি তিন মাস ছিলেন। কিন্তু এই হাসপাতালে থাকার সময়েই তিনি এক ঘটনা ঘটিয়ে বসেন। যে নার্স- মেয়েটি তাঁর সেবাযত্নে নিয়োজিত ছিলেন, তিনি তাঁর প্রেমে পড়ে যান। তিনি ব্যাকুল হয়ে মেয়েটির কাছে প্রেম নিবেদন করে বসেন। কিন্তু মেয়েটি হেমিংওয়েকে পাত্তা দেননি। ফলে তাঁর প্রেম ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।

কিন্তু প্রেম ব্যর্থ হলেও মেয়েটিকে তিনি সহজে ভুলতে পারেননি। যুদ্ধের পর তিনি একটি উপন্যাস লেখেন, যে উপন্যাসটি তাঁর জন্য বয়ে আনে সুনাম এবং অর্থ। ‘এ ফেয়ারওয়েল টু আর্মস’ (A Farewell to Arms) নামের এই উপন্যাসের যিনি নায়িকা, তিনিই ছিলেন হাসপাতালের সেই ব্যর্থ প্রেমের নায়িকা নার্স-মেয়েটি। এখানে অবশ্য তাঁর নাম পালটে রাখা হয়েছিল ক্যাথেরিন বার্কলে।

যুদ্ধ শেষ হয়ে যাওয়ার পর তাঁর রেডক্রসের চাকরিটিও চলে যায়। ফলে বেকার হয়ে কিছুদিন তিনি পথে পথে ঘুরে বেড়ান। চাকরির চেস্টা করেও ব্যর্থ হন।

অবশেষে টরোন্টোতে এসে র‍্যাফ্ কন্যেবল নামের এক ভদ্রলোকের ছেলের গৃহশিক্ষক নিযুক্ত হন। এই কন্যেবল সাহেব ছিলেন অসম্ভব ভালো লোক। তিনিই একদিন হেমিংওয়েকে নিয়ে পরিচয় করে দিলেন টরোন্টো থেকে প্রকাশিত ‘স্টার’ (Star) পত্রিকার সম্পাদকের সঙ্গে। তিনি এই পত্রিকায় যুদ্ধ বিষয়ক খবরাখবর এবং নিবন্ধ প্রকাশ করতে লাগলেন। কিন্তু তাতে করে তাঁর আর্থিক অবস্থার কোনো উন্নতি হলো না। তিনি ‘স্টার’ পত্রিকায় মোট ১৪টি প্রবন্ধ প্রকাশ করে সম্মানী পেলেন মাত্র ১৫০ ডলার। এই সামান্য আয় দিয়ে তাঁর নিজেরই চলা মুশকিল ছিল।

আর কোনো উপায় না দেখে তিনি ফিরে এলেন তাঁদের কাছে। বাবা-মায়ের এতদিন ধারণা ছিল, তাঁদের ছেলে যখন দূরে থাকে, তা হলে নিশ্চয়ই ভালোই আয়- উপার্জন করে। কিন্তু তাদের সে আশা নিরাশায় পরিণত হলো।

কিন্তু বাড়িতে এসেও তাঁর মন টিকল না। ১৯২০ সালে তিনি আবার বাড়ি থেকে বের হয়ে পড়লেন। চলে এলেন মিশিগানে।

এখানে এসেও তিনি ঘটিয়ে বসলেন আরেক ঘটনা। হ্যাডলি নামের এক উদীয়মানা লেখিকার প্রেমে পড়ে গেলেন। এবার আর প্রত্যাখ্যান নয়। প্রেম শুরু হওয়ার এক বছরের মধ্যেই ১৯২১ সালের ডিসেম্বরে তিনি হ্যাডলিকে বিয়ে করে ফেললেন।

তখনও অবশ্য তাঁর সাথে ‘স্টার’ পত্রিকার সম্পর্ক ছিন্ন হয়নি। তখনও তিনি নিয়মিত লিখতেন। যৎসামান্য আয়ও হতো। কিন্তু এই সামান্য আয় দিয়ে সংসার পাতা সম্ভব ছিল না।

এর মধ্যে তিনি ‘স্টার’ পত্রিকার সাথে পাকাপাকা চুক্তিতে উপনীত হলেন। তিনি পত্রিকার স্পেশাল করেসপন্ডেন্টের দায়িত্ব নিয়ে ইউরোপে আসেন। পত্রিকা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়, তিনি লেখার জন্য নিয়মিত সম্মানী পাবেন এবং পত্রিকার প্রচারের ও সার্কুলেশন বৃদ্ধির জন্যও কাজ করবেন। এজন্যও তিনি আলাদা বেতন এবং অন্যান্য খরচ পাবেন। ফলে তাঁর ভালোই আয় হতে লাগল। তিনি সপ্তাহে প্রায় ৭৫ ডলার করে উপার্জন করতে লাগলেন। এতে তাঁদের দুজনের সংসারেও এল সচ্ছলতা।

এই সময় থেকে পত্রিকায় ফিচার লিখতে লিখতেই সহসা তাঁর লেখার ব্যাপারে ঝোঁক এসে যায়। তাঁর স্ত্রী হ্যাডলিও ছিলেন লেখিকা। তাই স্ত্রীর অনুপ্রেরণাতেই তিনিও লিখতে শুরু করেন।

তিনি প্রথম তিনি তার সাহিত্যিকজীবন শুরু করেন ব্যঙ্গরস্যাত্মক লেখা দিয়ে। তাঁর প্রথম ব্যঙ্গ রচনার নাম ‘শেকসপিয়ার অ্যান্ড কোং’ (Shakespeare and Co)। লেখাটি হালকা ধরনের হলেও বেশ খ্যাতি অর্জন করে।

ফলে তিনি নিজেও অনুপ্রাণিত হন এবং দু’হাতে লিখতে থাকেন। প্রকাশিতও হতে থাকে। তাঁর দ্বিতীয় গল্পর বই “থ্রি স্টোরিস অ্যান্ড টেন পোয়েমস’ (Three Stories and Ten Poems)। এর পরে প্রকাশিত হয় একটি গল্প গ্রন্থ ‘ইন আওয়ার টাইম’ (In our Time)। প্রকাশিত হয় ১৯২৫ সালে।

হেমিংওয়ে তাঁর প্রথম সন্তানের জন্মের পরই একবার দেশে ফিরে আসেন। কিন্তু এই সময় নানারকম নারীঘটিত কেলেঙ্কারিতেও জড়িয়ে পড়েন তিনি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘স্টার’ পত্রিকার সঙ্গে পর্যন্ত তাঁর সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে। পরে তিনি আবার তাঁর স্ত্রী এবং সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে প্যারিসে ফিরে আসেন।

১৯২৪ সালে তিনি প্যাম্পলোনা ভ্রমণ করেন। সেখানে যাওয়ার পরই ১৯২৫ সালে তাঁর প্রথম উপন্যাস “দি সান অলসো রাইজেস’ (The Sun Also Rises) প্রকাশিত হয়। আর্নেস্ট হেমিংওয়ের প্রথম বিয়ে সুখের হয়নি। ১৯২৭ সালে হ্যাডলির সাথে তাঁর ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পরে তিনি বিয়ে করেন ‘ভোগ’ (Vogue) পত্রিকার অন্যতম সম্পাদিকা সুন্দরী পলিনকে এবং ১৯২৭ সালেই প্রকাশিত হয় তাঁর দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ “দি মেন উইদাউট উইমেন’ (The Men Without Women)। হেমিংওয়ের সবচেয়ে বিখ্যাত গ্রন্থ, প্রকাশের পর যার আশি হাজার কপি মাত্র তিন মাসে বিক্রি হয়ে বেস্ট সেলারের গৌরব অর্জন করেছিল, সেই ‘এ ফেয়ারওয়েল টু আর্মস’ (A Farewell to Arms) উপন্যাস প্রকাশিত হয় ১৯২৭ সালে। এই গ্রন্থটি প্রকাশের পর থেকে হেমিংওয়ের আর্থিক অনটন কেটে যায়।

১৯৩৬ সালে হেমিংওয়ে আবার ছুটে আসেন স্পেনের যুদ্ধক্ষেত্রে। তিনি মার্কিন পত্রপত্রিকার জন্য যুদ্ধের খবর সরবরাহ করতে থাকেন। এই সময় প্রকাশিত তাঁর প্রথম নাটক ‘দি ফাইট কলাম’ (The Fight Column)। এই নাটকটি তিনি স্পেনের জেনারেল ফ্রাঙ্কোকে ব্যঙ্গ করে লিখেছিলেন।

১৯৪০ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর আর একটি পাঠকনন্দিত উপন্যাস ‘ফর হুম দি বেল টোলস’ (For Whom the Bell Tolls)। সেই বছরেই তাঁর জীবনে ঘটে যায় আর একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী পলিনের সঙ্গেও তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে এবং মার্থজিল হার্নকে গ্রহণ করেন তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে।

এরই মধ্যেই শুরু হয়ে যায় দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ। ১৯৪২ সালে তিনি আবার ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্স থেকে যুদ্ধকালীন সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন। যুদ্ধশেষে তিনি ফিরে আসেন কিউবায় নিজের বাড়িতে। এই সময় আবার ঘটে বিবাহবিচ্ছেদ। এবার তিনি বিয়ে করেন টাইম ম্যাগাজিনের মেরি ওয়েলশকে। এই মেরি ওয়েলশই হেমিংওয়ের সঙ্গে তাঁর জীবনে শেষ দিন পর্যন্ত ছিলেন।

১৯৫০ সালে প্রকাশিত হয় হেমিংওয়ের আরেকটি গ্রন্থ ‘অ্যাক্রস দি রিভার অ্যান্ড দি ট্রিস’ (Across the River and the Trees)। কিন্তু বইটি খুব একটা পাঠক সমাদর লাভ করেনি। অবশ্য তাতে তিনি নিরুদ্যম হননি।

হেমিংওয়ের সবচাইতে উল্যেখযোগ্য গ্রন্থ এবং যে গ্রন্থ তাঁকে বিশ্বসাহিত্যে অমরত্বের আসন দান করেছে, এনে দিয়েছে জগৎজোড়া সম্মান, সেই ‘ওল্ডম্যান অ্যান্ড দি সি’ (The Oldman and the Sea) গ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৯৫২ সালে। এই গ্রন্থের অপূর্ব প্রকাশভঙ্গি এবং রচনাকৌশল বিশ্বের পাঠকসমাজকে হতবাক করে দিয়েছিল। আর সেইসাথে তাঁর জন্য বয়ে এনেছিল অজস্র খ্যাতি আর অর্থ।

তাঁর এই ‘ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দি সি’ বইটির জন্যই পেলেন যুক্তরাস্ট্রের বিখ্যাত পুলিৎজার পুরস্কার। শুধু পুলিত্জার পুরস্কার নয়, এই গ্রন্থটির জন্যই তিনি ১৯৫৪ সালে লাভ করেন সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার।

হেমিংওয়েরে এই বিখ্যাত উপন্যাসটি রচিত হয়েছিল কোহিমার জেলেপল্লীর বাস্তব কাহিনী নিয়ে। এই পল্লীর সঙ্গে ছিল তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। তিনি ছিলেন তাদের প্রিয় পাপা। হেমিংওয়েরও তাদের জন্য ছিল আন্তরিক ভালবাসা। তাই ‘ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দি সি’ গ্রন্থটির জন্য নোবেল পুরস্কার বাবদ যে অর্থ তিনি পেয়েছিলেন, তার সমস্তটাই তিনি ব্যয় করেছিলেন কোহিমার গরিব জেলেদের অবস্থার উন্নয়নের জন্য।

এত খ্যাতি এত অর্থ পাওয়ার পরও আর্নেস্ট হোমিংওয়ের মনে কোনো শান্তি ছিল না, জীবনে কখনও তাঁর স্থিরতা আসেনি। দাম্পত্যজীবনেও তিনি শান্তি খুঁজে পাননি।

এই হতাশা তাঁকে ঘিরে ধরেছিল শেষ জীবনে আরও বেশি করে। আর তারই পরিণামে তিনি ১৯৬১ সালের ২ জুলাই রাইফেলের গুলিতে আত্মহননের পথ বেছে নেন।

সকল অধ্যায়

১. হযরত মুহাম্মদ (দঃ) (৫৭০-৬৩২) – সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী
২. জরথুশত্র (৬২৮-৫৫১ খ্রি. পূ.) – পারশি ধর্মের প্রবর্তক
৩. বর্ধমান মহাবীর (৫৯৯–৫২৭ খ্রি. পূ.) – জৈন দর্শন ও ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা
৪. গৌতম বুদ্ধ (৫৬৩–৪৮৩ খ্রি. পূ.) – বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক
৫. কনফুসিয়াস (৫৫১–৪৭৯ খ্রি. পূ.) – চীনের প্রাচীনতম ধর্মমতবাদের প্রবর্তক
৬. সক্রেটিস (আনু. ৪৬৯–৩৯৯ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্রের আদিজনক
৭. প্লেটো (৪২৮–৩৪৭ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্র যাঁর হাতে পেয়েছিল পূর্নাঙ্গরূপ
৮. ডায়োজিনিস (৪১২–৩২২ খ্রি. পূ.) – একনিষ্ঠ জ্ঞান সাধক
৯. অ্যারিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খ্রি. পূ.) – যুক্তিশাস্ত্রের জনক
১০. যিশু খ্রিস্ট (আনু. ৬ খ্রি. পূ.–আনু. ২৯ খ্রি.) – খ্রিস্টানধর্মের প্রবর্তক
১১. অতীশ দীপঙ্কর (৯৮২–১০৫৩) – জ্ঞানসাধক বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক
১২. গুরু নানক (১৪৬৯–১৫৩৮) – শিখ ধর্মমতের প্রবর্তক
১৩. মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬) – ধর্মের সংস্কারক এবং ‘প্রটেস্টানিজম’ মতবাদের স্রষ্টা
১৪. মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩) – বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তক
১৫. রামমোহন রায় (১৭৭২–১৮৩৩) – ভারতবর্ষে নবযুগের প্রবর্তক
১৬. রামকৃষ্ণ পরমহংস (১৮৩৬–১৮৮৬) – ‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আমি ঈশ্বরকে দর্শন করেছি’
১৭. বারট্রান্ড রাসেল (১৮৭২–১৯৭০ ) – যুদ্ধ-বিরোধী ও মানবতাবাদী দার্শনিক
১৮. থ্যালিস (আনু. ৬২৪–৫৬৫ খ্রি. পূ.) – বিজ্ঞানশাস্ত্রের আদিপুরুষ
১৯. পিথাগোরাস (আনু. ৫৮২–৫০৭ খ্রি. পূ.) – তিনি বলেছিলেন—পৃথিবী গোলাকার
২০. হিপোক্র্যাটিস (আনু: ৪৬০–৩৭০ খ্রি. পূ.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আদিজনক
২১. আর্কিমিডিস (২৮৭–২১২ খ্রি. পূ.) – ঊর্ধ্বমুখী বল সূত্রের আবিষ্কারক
২২. ক্লডিয়াস টলেমি (১০০–১৮০ খ্রি.) – জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রথম কোষগ্রন্থ প্রণেতা
২৩. ক্লডিয়াস গ্যালেন (১৩১–২০১ খ্রি.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আধুনিক পদ্ধতির আদি জনক
২৪. ইবনে সিনা (৯৮০–১০৩৭) – জ্ঞানসাধনায় কাটিয়েছিলেন সমগ্র জীবন
২৫. কোপারনিকাস (১৪৭৩–১৫৪৩) – আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্ৰবক্তা
২৬. জিওর্দানো ব্রুনো (আনু. ১৫৪৮–১৬০০ ) – সত্যপ্রচারের অপরাধে যাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল
২৭. গ্যালিলিও গ্যালিলি (১৫৬৪-১৬৪২) – যাঁর গাণিতিক পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি
২৮. লিওয়েন হুক (১৬৩২–১৭৩৩) – মুদি দোকানদার থেকে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী
২৯. আইজাক নিউটন (১৬৪২–১৭২৭) – মাধ্যাকর্ষন শক্তির আবিষ্কারক
৩০. রিচার্ড আর্করাইট (১৭৩২–১৭৯২) – আধুনিক বস্ত্রশিল্পে বৈপ্লবিক ধারা প্রবর্তক
৩১. উইলিয়াম হার্শেল (১৭৩৮–১৮২২) – ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কারক
৩২. লরেঁ লাভোয়সিয়ের (১৭৪৩–১৭৯৪) – রসায়নশাস্ত্রের জনক
৩৩. মাইকেল ফ্যারাডে (১৭৯১-১৮৬৭) – তাড়িত-চুম্বক বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা
৩৪. চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) – প্রাণিজগতের বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যাদাতা
৩৫. লুই পাস্তুর (১৮২২–১৮৯৫) – জীবাণু আর জলাতঙ্ক রোগ প্রতিষেধকের আবিষ্কারক
৩৬. আলফ্রেড নোবেল (১৮৩৩–১৮৯৬) – যাঁর নামে দেয়া হয় নোবেল পুরস্কার
৩৭. আলভা এডিসন (১৮৪৭–১৯৩১) – সর্বাধিক আবিষ্কারের জনক
৩৮. জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৯–১৯৩৭) – যিনি বলেছিলেন গাছেরও প্রাণ আছে
৩৯. মাদাম কুরি (১৮৬৭–১৯৩৪) – সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহিলা বিজ্ঞানী
৪০. মার্কোনি (১৮৭৪–১৯৩৭) – বেতারযন্ত্রের আবিষ্কারক
৪১. আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯–১৯৫৫) – আপেক্ষিক তত্ত্বের জনক
৪২. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১–১৯৫৫) – পেনিসিলিনের আবিষ্কারক
৪৩. হোমার (আনু. ৭০০-? খ্রি. পূ.) – বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দুটি মহাকাব্যের রচয়িতা
৪৪. ঈশপ (আ. কা. ৬২০–৫৬০ খ্রি. পূ.) – কালজয়ী নীতিগল্পকার
৪৫. সোফোক্লেস (আনু. ৪৯৫-৪০৬ খ্রি. পূ.) – গ্রিক ট্র্যাজেডি নাট্যধারার রূপকার
৪৬. হেরোডোটাস (আনু. ৪৮৫–৪২৫ খ্রি. পূ.) – ইতিহাসশাস্ত্রের জনক
৪৭. অ্যারিস্টোফানিস (আনু. ৪৪৪–৩৮৫ খ্রি. পূ.) – যাঁর সাহিত্যকর্মে আর্তমানবতার কথা প্রতিফলিত
৪৮. মহাকবি কালিদাস (আনু. ৫৭০-৬৫০ খ্রি.) – সংস্কৃতি সাহিত্যের অমর কবি
৪৯. লেওনার্দো দা ভিঞ্চি (১৪৫২–১৫১৯) – সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী
৫০. মিকেলাঞ্জেলো (১৪৭৫–১৫৬৪) – পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাস্কর শিল্পী
৫১. তানসেন (১৫০৬–১৫৮৫) – কিংবদন্তির গায়ক
৫২. শেকসপিয়ার (১৫৬৪-১৬১৬) – বিশ্বসাহিত্যের কালজয়ী নাট্যকার
৫৩. ভলতেয়ার (১৬৯৪-১৭৭৮) – বিখ্যাত ফরাসি চিন্তাবিদ
৫৪. জঁ-জাক্ রুসো (১৭১২–১৭৭৮) – ফরাসি বিপ্লবের রূপকার
৫৫. লর্ড বায়রন (১৭৮৮–১৮২৪) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি
৫৬. ভিক্টর হুগো (১৮০২-১৮৮৫) – ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৭. ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন (১৮০৫–১৮৭৫) – যাঁকে বলা হয় রূপকথার জাদুকর
৫৮. চার্লস ডিকেন্স (১৮১২–১৮৭০) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৯. ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯-১৮৯২) – মার্কিন সাহিত্যের যুগ-প্রবর্তক কবি
৬০. লিয়েফ তলস্তোয় (১৮২৮–১৯১০) – বিশ্বের মহান সাহিত্যিকদের অন্যতম
৬১. জুল ভের্ন (১৮২৮–১৯০৫) – কল্পবিজ্ঞান কাহিনীর স্রষ্টা
৬২. মার্ক টোয়েন (১৮৩৫–১৯১০) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রসস্রষ্টা
৬৩. জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৫৬–১৯৫০) – যিনি প্রথম নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন
৬৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১) – শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনীষা, পৃথিবীর মহত্তম সাহিত্য-ব্যক্তিত্ব
৬৫. ম্যাক্সিম গোর্কি (১৮৬৮–১৯৩৬) – যাঁর সাহিত্যকর্মের প্রধান উপজীব্য গণমানুষের কথা
৬৬. হেলেন কেলার (১৮৮০-১৯৬৮) – যাঁর খ্যাতিকে নেপোলিয়নের সঙ্গে তুলনা করা হতো
৬৭. আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (১৮৯৮–১৯৬১) – জীবনবাদী মার্কিন কথাসাহিত্যিক
৬৮. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯–১৯৭৬) – বাংলার বিদ্রোহী কবি
৬৯. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২–১৭৯৯) – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৭০. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১) – ইতিহাসের কিংবদন্তির মহানায়ক
৭১. জুসেপ্পে গারিবলদি (১৮০৭–১৮৮২) – ইতালির জনক বলে যাঁর খ্যাতি
৭২. আব্রাহাম লিংকন (১৮০৯-১৮৬৫) – যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্রীতদাসপ্রথা রহিত করেছিলেন
৭৩. অটো ফন বিসমার্ক (১৮১৫–১৮৯৮) – জার্মান সাম্রাজ্যের স্থপতি
৭৪. মহাত্মা গান্ধি (১৮৬৯–১৯৪৮) – ‘সবকো সুমতি দে ভগবান’
৭৫. কমরেড লেনিন (১৮৭০–১৯২৪) – বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা
৭৬. উইনস্টন চার্চিল (১৮৭৪–১৯৬৫) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ডাকসাইটে প্রধানমন্ত্রী
৭৭. জোসেফ স্ট্যালিন (১৮৭৯–১৯৫৩) – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়েনের ‘লৌহমানব’
৭৮. কামাল আতাতুর্ক (১৮৮১–১৯৩৮) – নব্য-তুরস্কের জনক
৭৯. ডি ভ্যালেরা (১৮৮২-১৯৭৫) – আয়ারল্যান্ডের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৮০. জওহরলাল নেহরু (১৮৮৯-১৯৬৪) – ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
৮১. আইসেনহাওয়ার (১৮৯০-১৯৬৯) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক
৮২. শার্ল দ্য গল (১৮৯০-১৯৭০) – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা
৮৩. হো-চি-মিন (১৮৯০-১৯৬৯) – ভিয়েতনামের মুক্তিদাতা পুরুষ
৮৪. মার্শাল টিটো (১৮৯২–১৯৮০) – জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা
৮৫. মাও-সে-তুং (১৮৯৫–১৯৭৬) – চীন সাধারণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা
৮৬. সুভাষচন্দ্র বসু (১৮৯৭–১৯৪৫) – ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’
৮৭. জন এফ কেনেডি (১৯১৭–১৯৬৩) – গুপ্তঘাতকের হাতে যাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছিল
৮৮. ইন্দিরা গান্ধি (১৯১৭–১৯৮৪) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
৮৯. নেলসন ম্যান্ডেলা (১৯১৮) – দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তিদাতা পুরুষ
৯০. শেখ মুজিবর রহমান (১৯২০–১৯৭৫) – বাংলাদেশের জাতির জনক
৯১. প্যাট্রিস লুমুম্বা (১৯২৫-১৯৬১) – কঙ্গোর মুক্তিদাতা পুরুষ
৯২. মার্কো পোলো (১২৫৬–১৩২৩) – দুঃসাহসিক অভিযাত্রী
৯৩. ক্রিস্টোফার কলম্বাস (আনু. ১৪৪৬-১৫০৬) – আমেরিকার আবিষ্কারক
৯৪. ডেভিড লিভিংস্টোন (১৮১৩-১৮৭৩) – আফ্রিকার আবিষ্কারক
৯৫. উইলিয়াম জোন্স (১৭৪৬–১৭৯৪) – এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৬. ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (১৮২০–১৯১০) – আধুনিক ‘নার্সিং’ বৃত্তির অগ্রপথিক
৯৭. হেনরি ডুনান্ট (১৮২৮–১৯১০) – রেডক্রস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৮. ব্যাডেন পাওয়েল (১৮৫৭–১৯৪১) – বয়স্কাউট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা
৯৯. মাদার তেরেসা (১৯১০–১৯৯৭) – প্রেম, করুণা ও ধর্মের মূর্ত প্রতিমা
১০০. অ্যাডাম স্মিথ (১৭২৩–১৭৯০) – রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিজ্ঞানের জনক

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন