গৌতম বুদ্ধ (৫৬৩–৪৮৩ খ্রি. পূ.) – বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক

ভবেশ রায়

রাজার ছেলে রাজাই তো হবে। কিন্তু তিনি তা হলেন না। ভোগবিলাসের সোনার সিংহাসনে বসে লুটে নিতে চাইলেন না জাগতিক সমস্ত সুখ আর ধন-ঐশ্বর্যকে। তার পরিবর্তে তিনি নেমে এলেন পথের ধুলায়। দু হাতে বরণ করে নিলেন পৃথিবীর ধুলায় লোটানো মানুষের দুঃখ, তাপ আর ব্যথা-বেদনাকে।

পৃথিবীর মানুষের মুক্তিলাভের জন্য যিনি রাজসিংহাসন ছেড়ে এভাবে সন্ন্যাসধর্ম গ্রহণ করেছিলেন, তিনিই বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক ভগবান গৌতম বুদ্ধ। আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আগে বৈশাখী পূর্ণমা তিথিতে ৫৬৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তাঁর জন্ম। তিনি সিদ্ধার্থ নামেও পরিচিতি।

সেকালে নেপালের দক্ষিণাংশ এবং প্রাচীন ভারতবর্ষের যোধপুর রাজ্য নিয়ে ছিল একটি রাজপুত রাজ্য। এই রাজ্যেরই রাজা ছিলেন শুদ্ধোধন। এই রাজ্যের রাজধানী ছিল কপিলাবস্তু।

দীর্ঘকাল অপুত্রক থাকার পর রাজা শুদ্ধোধন এক পুত্রসন্তান লাভ করেন। তিনি পুত্রের নামকরণ করেন সিদ্ধার্থ। সিদ্ধার্থের মায়ের নাম ছিল মায়াদেবী। মায়ের মৃত্যুর পর তিনি প্রতিপালিত হন বিমাতা মহাপ্রজাবতী গৌতমীর কাছে।

গৌতম বুদ্ধের জন্ম নিয়ে অনেক রকমের কিংবাদন্তি প্রচলিত আছে।

রানি মায়াদেবী একদিন রাতে স্বপ্ন দেখলেন তিনি একাকী রাজোদ্যানে ভ্রমণ করছেন, এমন সময় একটি সাদা হাতি এসে দাঁড়াল তাঁর সামনে। শ্বেতপাথরের মতো তার গায়ের রঙ। হাতিটা আরও কাছে সরে এল, একসময় তাঁর শরীরকে স্পর্শ করল। তারপর ধীরে ধীরে প্রবেশ করল তাঁর পেটে। এর কিছুকাল পরেই রানি গর্ভবতী হলেন এবং গৌতম বুদ্ধের জন্ম হলো।

বৌদ্ধ পণ্ডিতরা রানি মায়াদেবীর এই স্বপ্নকে এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন : ভগবান বুদ্ধ স্বর্গ থেকে পৃথিবীর মাটিতে নেমে আসার ব্যাপারে উদ্বেল হয়ে উঠেছিলেন। তাই তাঁর জন্য প্রয়োজন ছিল একটি পবিত্র নৌকা বা বাহনের। বুদ্ধদেব সেই পবিত্ৰ যান বা অবলম্বন হিসেবে রানি মায়াদেবীকে বেছে নিয়েছিলেন।

তারপর মর্তে অবতীর্ণ হওয়ার বাসনায় বুদ্ধ যখন মায়াদেবীর গর্ভে আশ্রয় নেন, তখন তিনি ছিলেন অসহায়। নদী পারাপারের সময় মানুষ যেমন ডুবে যাওয়ার ভয় করে, তাঁরও লি সে-রকমেরই ভয়।

তাই এ-সময় ভগবান বুদ্ধের কেউ যাতে কোনো রকম ক্ষতি করতে না পারে, তার জন্য স্বর্গের চারজন দেবতা সর্বক্ষণ তাঁর প্রহরায় নিয়োজিত ছিলেন। তাঁরা গোটা বিশ্বজগতের এক-চতুর্থাংশ জায়গা তাঁদের দৃষ্টির প্রহরায় রেখেছিলেন, যাতে কোনো শত্রু তাঁর কোনো ক্ষতি করতে না পারে। তাঁরা জ্ঞানবান বুদ্ধের জন্মের পূর্ব-মুহূর্ত পর্যন্ত এই সতর্ক প্রহরা অটুট রেখেছিলেন।

গৌতম বুদ্ধের জন্ম নিয়ে এ-রকমের আরও অনেট মজার গল্প আছে।

গৌতম বুদ্ধের জন্ম হয়েছিল কুঞ্জবনে অর্থাৎ লুম্বিনী উদ্যানে।

গর্ভবতী রানি বসে ছিলেন কুঞ্জবনের এক বৃক্ষশাখায়। তখনই তিনি সন্তান প্রসব করেন। সন্তান তাঁর গর্ভ থেকে বের হয়ে পড়ে যেতে থাকে নিচের দিকে। কিন্তু মাটিতে পড়ার আগেই সেখানে সতর্ক প্রহরায় নিয়োজিত চারজন স্বর্গীয় দূত বা দেবতা তাঁকে তুলে নেন সোনার জালে।

ঠিক এই সময়ই স্বর্গ থেকে নেমে আসে এক পরিষ্কার ও পবিত্র জলের ধারা। স্বর্গীয় জলধারায় নবজাত গৌতম বুদ্ধের সারা অঙ্গ ধুয়েমুছে পরিষ্কার হয়ে যায়।

কথিত আছে, বুদ্ধ জন্মের পরমুহূর্ত থেকেই হাটতে শেখেন এবং কথা বলতে পারতেন। জন্মমুহূর্তে তাঁর গলার আওয়াজ ছিল সিংহ গর্জনের মতো। ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরমুহূর্তেই জলদগম্ভীর স্বরে ঘোষণা করেছিলেন, “আমিই সারা বিশ্বের সর্বময় কর্তা। মানুষরূপে পৃথিবীতে এটাই আমার সর্বশেষ আগমন।

জন্মের অল্পকাল পরেই সিদ্ধার্থ মাতৃহারা হন। লালিতপালিত হন বিমাতা গৌতমীর কাছে। তাই তাঁর আরেক নাম গৌতম। কথিত আছে, রাজজ্যোতিষী গৌতম সম্পর্কে এই বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, পরিণত বয়সে এই সন্তান সর্বত্যাগী সন্ন্যাসী হবেন। মানুষের দুর্দশা-দুঃখ দর্শন করেই তাঁর মনে জন্মাবে এই বৈরাগ্য-ভাব।

জ্যোতিষীর ভবিষ্যদ্বাণী শুনে রাজা শুদ্ধোধন খুব বিচলিত হয়ে পড়েছিলেন, সতর্ক হয়েছিলেন বিশেষভাবে। তাই ছেলেকে যাতে সংসারমুখী করা যায়, সংসারের যাবতীয় আরাম-আয়েশ আর ভোগবিলাসে ডুবিয়ে রাখা যায়, তার ব্যবস্থা করলেন। কয়েকজন সুন্দরী সেবিকা সর্বক্ষণ নিয়োজিত থাকতো তাঁর সেবাশুশ্রূষা আর আরাম-আয়েশের কাজে। রাজার কঠোর নির্দেশ ছিল, কুমার যেন কখনও সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দেখার সুযোগ না পান।

বয়স একটু বাড়তেই রাজা রাজকুমারকে বিয়ে দিলেন। গৌতমের বিয়ে হল যশোধরা নাম্নী এক পরমা সুন্দরী রাজকন্যার সঙ্গে। ২৯ বছর বয়সে তিনি এক পুত্রসন্তানও লাভ করেন। সন্তানের নাম রাখা হয় রাহুল।

কিন্তু এই সময়ই ঘটল তাঁর জীবনে এক মন আলোড়ন করা ঘটনা। তিনি নগর- পরিক্রমায় বের হয়ে রাজপথে এক ব্যাধিগ্রস্ত বৃদ্ধ এবং মৃতদেহ দেখে খুবই বিচলিত হয়ে পড়েন। এই ঘটনার পর থেকেই তিনি মানবজীবনের শোক, দুঃখ, জরা, ব্যাধি এবং মৃত্যুর হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য চিন্তা করতে লাগলেন। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, সংসারের ভোগ-বাসনা আর নয়। এ দুঃখময় সংসার থেকে তাঁকে পালাতে হবে।

এরপর সত্যি সত্যি একদিন তিনি ঘুমন্ত স্ত্রী ও পুত্রকে রেখে রাতের অন্ধকারে রাজপ্রাসাদ ছেড়ে পালালেন। গৃহত্যাগ করার পর তিনি বেশ কয়েক বছর ঘুরে বেড়ালেন নানা তীর্থস্থানে। সন্ধান করতে লাগলেন একজন গুরুর, যিনি তাঁর প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম হবেন এবং তাঁকে দিতে পারবেন সত্যিকার জ্ঞানের সন্ধান। কিন্তু তেমন কোনো গুরু বা শিক্ষকের সাক্ষাৎ তিনি কোথাও পেলেন না।

অবশেষে তিনি গহিন অরণ্যের ভেতরে এসে মগ্ন হলেন গভীর ধ্যানে। এই স্থানটি ছিল ভারতের বর্তমান বিহার প্রদেশের গয়া জেলায়। গয়া শহর থেকে ৯৬০ কিলোমিটার উত্তরে উরুবিল্বা নামক স্থানে একটি অশ্বথ গাছের নিচে চলে তাঁর এই ধ্যানসাধনা। একটানা ৬ বছর ধ্যানের ফলে অনাহারে, অনিদ্রায় তাঁর শরীরের মেদ-মাংস ক্ষয়ে যেতে থাকে। তিনি হয়ে পড়েন কঙ্কালসার।

ভগবান বুদ্ধের এই ধ্যানমগ্ন সময়কে ঘিরে প্রচলিত আছে অনেকগুলো সুন্দর গল্প।

বুদ্ধদেব যখন নৈরঞ্জনা নদীর তীরে ধ্যানমগ্ন অবস্থায় প্রায় অস্থিচর্মসার হতে বসেছেন, তখন সেখানে এসে হাজির হলেন সুজাতা নামের এক গৃহবধূ। সুজাতা এই ধ্যানমগ্ন সন্ন্যাসীর জন্য প্রতিদিন পায়েসের বাটি ও পূজার উপচার থালায় সাজিয়ে নিবেদন করতেন। সুজাতা ভক্তিভরে প্রতিদিন নীরবে তপস্বী বুদ্ধের সামনে নামিয়ে দিতেন তাঁর পূজার অর্ঘ্য। বুদ্ধদেবও নীরবে তা গ্রহণ করতেন। অথচ কখনও এই গুরু ও শিষ্যার মধ্যে বাক্য বিনিময় হয়নি। গৌতমের বুদ্ধত্ব লাভের আগে ও পরে তাঁর আহার জোগানোর পবিত্র ব্রত পালন করেছিলেন এই সাধ্বী রমণী।

এই সময়ে ঘটেছিল আরেকটি ঘটনা। বুদ্ধদেব যে অরণ্যে বসে ধ্যান করতেন, তাতে ছিল অঙ্গুলিমাল নামের এক দুর্ধর্ষ দস্যু। সারা দেশের মানুষ তার ভয়ে ছিল আতঙ্কগ্রস্ত। ফলে সেই বনের ধার দিয়ে সহজে কেউ যাতায়াত করত না। এই দুর্ধর্ষ অঙ্গুলিমালই একদিন পড়ে গেল ভগবান বুদ্ধের সামনে। প্রথমে সে হুঙ্কার দিয়ে উঠলেও বুদ্ধের জ্যোতির্ময় প্রশান্ত দৃষ্টির দিকে তাকাতে গিয়ে নিজেই ভয়ে বিহ্বল হয়ে পড়ে। তার যে হাত চোখের পলকে মানুষের মাথা কেটে ফেলতে পারত, তার সেই হাতখানাই কাঁপতে লাগল থরথর করে। ফলে পড়ে গেল তার হাতের তরবারি। নিজেও অবশ হয়ে লুটিয়ে পড়ল বুদ্ধের পদতলে। বুদ্ধ তাকে আশীর্বাদ করলেন। এরপর থেকে অঙ্গুলিমাল দস্যুবৃত্তি ছেড়ে দিয়ে ভিক্ষাপাত্র হাতে হয়ে গেল বুদ্ধের শিষ্য।

দীর্ঘ ছয় বছর তপস্যার পর অবশেষে এক শুভ পূর্ণিমায় গৌতম লাভ করেন বুদ্ধত্ব। তিনি বোধিপ্রাপ্ত হন ৩৫ বছর বয়সে।

বোধিপ্রাপ্ত হওয়ার পর তাঁর নাম হলো বুদ্ধ। তিনি যে অশ্বথ গাছের নিচে বসে বোধি লাভ করেছিলেন, সেই গাছটিরও নাম হলো বোধিবৃক্ষ।

এর পর তিনি দীর্ঘ ৪৫ বছর সারা ভারতবর্ষ পদব্রজে ঘুরে ঘুরে প্রচার করেন তাঁর প্রবর্তিত ধর্মমত– বৌদ্ধধর্ম।

তিনি ভারতের অন্যতম প্রাচীন তীর্থস্থান বারানসিতে নিশ্চুপ বসে থাকলেন না। প্রচার করতে লাগলেন তাঁর নির্বাণলাভের বাণী। তিনি বারানসির উত্তর অংশে এসে প্রথম যে বৌদ্ধ মন্দিরটি স্থাপন করেছিলেন তার নাম ছিল সারনাথ উদ্যান। পরবর্তী সময়ে তাঁর ধর্মের প্রধান পৃষ্ঠপোষক সম্রাট আশোক গৌতম বুদ্ধের স্থাপিত সারনাথ মন্দিরকে বিশালাকারে পুনর্নির্মাণ করেন। সে মন্দির আজও আছে।

৪৮০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ৮০ বছর বয়সে নেপালের কুশী নগরে ভগবান বুদ্ধ দেহত্যাগ করেন।

বৌদ্ধধর্মের প্রধান ধর্মগ্রন্থ ‘ত্রিপিটক’। এর অর্থ তিন টীকা। এই ত্রিপিটকের প্রধান তিনটি অংশ হচ্ছে-

১. বিনয় পিটক (অনুশাসন শিক্ষা)।

২. সূত্র পিটক (ধর্ম উপদেশ ও আলোচনা)।

৩. অভিধম্ম পিটক (তত্ত্ববিদ্যা)।

ত্রিপিটক-এ আছে ভগবান বুদ্ধের বাণী, শিক্ষা ও দর্শন।

বৌদ্ধধর্মের সার কথা হলো সংসার দুঃখময়। এই দুঃখকে জয় করতে হবে। এই ধর্মের চারটি মূল স্তম্ভ হলো : ১) জীবন দুঃখময়; ২) তৃষ্ণা বা কামনা থেকে দুঃখ জন্মলাভ করে; ৩) দুঃখ থেকে নির্বাণলাভ মানুষের কর্তব্য; ৪) দুঃখ থেকে মোক্ষ বা নির্বাণলাভের উপায় হলো সৎ জ্ঞান, সৎ ইচ্ছা, সৎ বাক্য, সৎ আচরণ, সৎ জীবনোপায়, সৎকর্ম, সৎ মানসিকতা এবং সৎ অনুষ্ঠান।

গৌতম বুদ্ধের মৃত্যুর পর বৌদ্ধধর্ম হীনযান ও মহাযান—এই দু ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। ভগবান বুদ্ধ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অস্তিত্ব সম্পর্কে কিছু বলেননি। ঈশ্বর আছেন কিংবা নেই, এ সম্পর্কেও কোনো মন্তব্য করেননি।

সকল অধ্যায়

১. হযরত মুহাম্মদ (দঃ) (৫৭০-৬৩২) – সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী
২. জরথুশত্র (৬২৮-৫৫১ খ্রি. পূ.) – পারশি ধর্মের প্রবর্তক
৩. বর্ধমান মহাবীর (৫৯৯–৫২৭ খ্রি. পূ.) – জৈন দর্শন ও ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা
৪. গৌতম বুদ্ধ (৫৬৩–৪৮৩ খ্রি. পূ.) – বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক
৫. কনফুসিয়াস (৫৫১–৪৭৯ খ্রি. পূ.) – চীনের প্রাচীনতম ধর্মমতবাদের প্রবর্তক
৬. সক্রেটিস (আনু. ৪৬৯–৩৯৯ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্রের আদিজনক
৭. প্লেটো (৪২৮–৩৪৭ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্র যাঁর হাতে পেয়েছিল পূর্নাঙ্গরূপ
৮. ডায়োজিনিস (৪১২–৩২২ খ্রি. পূ.) – একনিষ্ঠ জ্ঞান সাধক
৯. অ্যারিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খ্রি. পূ.) – যুক্তিশাস্ত্রের জনক
১০. যিশু খ্রিস্ট (আনু. ৬ খ্রি. পূ.–আনু. ২৯ খ্রি.) – খ্রিস্টানধর্মের প্রবর্তক
১১. অতীশ দীপঙ্কর (৯৮২–১০৫৩) – জ্ঞানসাধক বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক
১২. গুরু নানক (১৪৬৯–১৫৩৮) – শিখ ধর্মমতের প্রবর্তক
১৩. মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬) – ধর্মের সংস্কারক এবং ‘প্রটেস্টানিজম’ মতবাদের স্রষ্টা
১৪. মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩) – বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তক
১৫. রামমোহন রায় (১৭৭২–১৮৩৩) – ভারতবর্ষে নবযুগের প্রবর্তক
১৬. রামকৃষ্ণ পরমহংস (১৮৩৬–১৮৮৬) – ‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আমি ঈশ্বরকে দর্শন করেছি’
১৭. বারট্রান্ড রাসেল (১৮৭২–১৯৭০ ) – যুদ্ধ-বিরোধী ও মানবতাবাদী দার্শনিক
১৮. থ্যালিস (আনু. ৬২৪–৫৬৫ খ্রি. পূ.) – বিজ্ঞানশাস্ত্রের আদিপুরুষ
১৯. পিথাগোরাস (আনু. ৫৮২–৫০৭ খ্রি. পূ.) – তিনি বলেছিলেন—পৃথিবী গোলাকার
২০. হিপোক্র্যাটিস (আনু: ৪৬০–৩৭০ খ্রি. পূ.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আদিজনক
২১. আর্কিমিডিস (২৮৭–২১২ খ্রি. পূ.) – ঊর্ধ্বমুখী বল সূত্রের আবিষ্কারক
২২. ক্লডিয়াস টলেমি (১০০–১৮০ খ্রি.) – জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রথম কোষগ্রন্থ প্রণেতা
২৩. ক্লডিয়াস গ্যালেন (১৩১–২০১ খ্রি.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আধুনিক পদ্ধতির আদি জনক
২৪. ইবনে সিনা (৯৮০–১০৩৭) – জ্ঞানসাধনায় কাটিয়েছিলেন সমগ্র জীবন
২৫. কোপারনিকাস (১৪৭৩–১৫৪৩) – আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্ৰবক্তা
২৬. জিওর্দানো ব্রুনো (আনু. ১৫৪৮–১৬০০ ) – সত্যপ্রচারের অপরাধে যাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল
২৭. গ্যালিলিও গ্যালিলি (১৫৬৪-১৬৪২) – যাঁর গাণিতিক পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি
২৮. লিওয়েন হুক (১৬৩২–১৭৩৩) – মুদি দোকানদার থেকে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী
২৯. আইজাক নিউটন (১৬৪২–১৭২৭) – মাধ্যাকর্ষন শক্তির আবিষ্কারক
৩০. রিচার্ড আর্করাইট (১৭৩২–১৭৯২) – আধুনিক বস্ত্রশিল্পে বৈপ্লবিক ধারা প্রবর্তক
৩১. উইলিয়াম হার্শেল (১৭৩৮–১৮২২) – ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কারক
৩২. লরেঁ লাভোয়সিয়ের (১৭৪৩–১৭৯৪) – রসায়নশাস্ত্রের জনক
৩৩. মাইকেল ফ্যারাডে (১৭৯১-১৮৬৭) – তাড়িত-চুম্বক বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা
৩৪. চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) – প্রাণিজগতের বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যাদাতা
৩৫. লুই পাস্তুর (১৮২২–১৮৯৫) – জীবাণু আর জলাতঙ্ক রোগ প্রতিষেধকের আবিষ্কারক
৩৬. আলফ্রেড নোবেল (১৮৩৩–১৮৯৬) – যাঁর নামে দেয়া হয় নোবেল পুরস্কার
৩৭. আলভা এডিসন (১৮৪৭–১৯৩১) – সর্বাধিক আবিষ্কারের জনক
৩৮. জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৯–১৯৩৭) – যিনি বলেছিলেন গাছেরও প্রাণ আছে
৩৯. মাদাম কুরি (১৮৬৭–১৯৩৪) – সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহিলা বিজ্ঞানী
৪০. মার্কোনি (১৮৭৪–১৯৩৭) – বেতারযন্ত্রের আবিষ্কারক
৪১. আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯–১৯৫৫) – আপেক্ষিক তত্ত্বের জনক
৪২. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১–১৯৫৫) – পেনিসিলিনের আবিষ্কারক
৪৩. হোমার (আনু. ৭০০-? খ্রি. পূ.) – বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দুটি মহাকাব্যের রচয়িতা
৪৪. ঈশপ (আ. কা. ৬২০–৫৬০ খ্রি. পূ.) – কালজয়ী নীতিগল্পকার
৪৫. সোফোক্লেস (আনু. ৪৯৫-৪০৬ খ্রি. পূ.) – গ্রিক ট্র্যাজেডি নাট্যধারার রূপকার
৪৬. হেরোডোটাস (আনু. ৪৮৫–৪২৫ খ্রি. পূ.) – ইতিহাসশাস্ত্রের জনক
৪৭. অ্যারিস্টোফানিস (আনু. ৪৪৪–৩৮৫ খ্রি. পূ.) – যাঁর সাহিত্যকর্মে আর্তমানবতার কথা প্রতিফলিত
৪৮. মহাকবি কালিদাস (আনু. ৫৭০-৬৫০ খ্রি.) – সংস্কৃতি সাহিত্যের অমর কবি
৪৯. লেওনার্দো দা ভিঞ্চি (১৪৫২–১৫১৯) – সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী
৫০. মিকেলাঞ্জেলো (১৪৭৫–১৫৬৪) – পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাস্কর শিল্পী
৫১. তানসেন (১৫০৬–১৫৮৫) – কিংবদন্তির গায়ক
৫২. শেকসপিয়ার (১৫৬৪-১৬১৬) – বিশ্বসাহিত্যের কালজয়ী নাট্যকার
৫৩. ভলতেয়ার (১৬৯৪-১৭৭৮) – বিখ্যাত ফরাসি চিন্তাবিদ
৫৪. জঁ-জাক্ রুসো (১৭১২–১৭৭৮) – ফরাসি বিপ্লবের রূপকার
৫৫. লর্ড বায়রন (১৭৮৮–১৮২৪) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি
৫৬. ভিক্টর হুগো (১৮০২-১৮৮৫) – ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৭. ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন (১৮০৫–১৮৭৫) – যাঁকে বলা হয় রূপকথার জাদুকর
৫৮. চার্লস ডিকেন্স (১৮১২–১৮৭০) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৯. ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯-১৮৯২) – মার্কিন সাহিত্যের যুগ-প্রবর্তক কবি
৬০. লিয়েফ তলস্তোয় (১৮২৮–১৯১০) – বিশ্বের মহান সাহিত্যিকদের অন্যতম
৬১. জুল ভের্ন (১৮২৮–১৯০৫) – কল্পবিজ্ঞান কাহিনীর স্রষ্টা
৬২. মার্ক টোয়েন (১৮৩৫–১৯১০) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রসস্রষ্টা
৬৩. জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৫৬–১৯৫০) – যিনি প্রথম নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন
৬৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১) – শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনীষা, পৃথিবীর মহত্তম সাহিত্য-ব্যক্তিত্ব
৬৫. ম্যাক্সিম গোর্কি (১৮৬৮–১৯৩৬) – যাঁর সাহিত্যকর্মের প্রধান উপজীব্য গণমানুষের কথা
৬৬. হেলেন কেলার (১৮৮০-১৯৬৮) – যাঁর খ্যাতিকে নেপোলিয়নের সঙ্গে তুলনা করা হতো
৬৭. আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (১৮৯৮–১৯৬১) – জীবনবাদী মার্কিন কথাসাহিত্যিক
৬৮. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯–১৯৭৬) – বাংলার বিদ্রোহী কবি
৬৯. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২–১৭৯৯) – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৭০. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১) – ইতিহাসের কিংবদন্তির মহানায়ক
৭১. জুসেপ্পে গারিবলদি (১৮০৭–১৮৮২) – ইতালির জনক বলে যাঁর খ্যাতি
৭২. আব্রাহাম লিংকন (১৮০৯-১৮৬৫) – যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্রীতদাসপ্রথা রহিত করেছিলেন
৭৩. অটো ফন বিসমার্ক (১৮১৫–১৮৯৮) – জার্মান সাম্রাজ্যের স্থপতি
৭৪. মহাত্মা গান্ধি (১৮৬৯–১৯৪৮) – ‘সবকো সুমতি দে ভগবান’
৭৫. কমরেড লেনিন (১৮৭০–১৯২৪) – বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা
৭৬. উইনস্টন চার্চিল (১৮৭৪–১৯৬৫) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ডাকসাইটে প্রধানমন্ত্রী
৭৭. জোসেফ স্ট্যালিন (১৮৭৯–১৯৫৩) – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়েনের ‘লৌহমানব’
৭৮. কামাল আতাতুর্ক (১৮৮১–১৯৩৮) – নব্য-তুরস্কের জনক
৭৯. ডি ভ্যালেরা (১৮৮২-১৯৭৫) – আয়ারল্যান্ডের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৮০. জওহরলাল নেহরু (১৮৮৯-১৯৬৪) – ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
৮১. আইসেনহাওয়ার (১৮৯০-১৯৬৯) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক
৮২. শার্ল দ্য গল (১৮৯০-১৯৭০) – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা
৮৩. হো-চি-মিন (১৮৯০-১৯৬৯) – ভিয়েতনামের মুক্তিদাতা পুরুষ
৮৪. মার্শাল টিটো (১৮৯২–১৯৮০) – জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা
৮৫. মাও-সে-তুং (১৮৯৫–১৯৭৬) – চীন সাধারণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা
৮৬. সুভাষচন্দ্র বসু (১৮৯৭–১৯৪৫) – ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’
৮৭. জন এফ কেনেডি (১৯১৭–১৯৬৩) – গুপ্তঘাতকের হাতে যাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছিল
৮৮. ইন্দিরা গান্ধি (১৯১৭–১৯৮৪) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
৮৯. নেলসন ম্যান্ডেলা (১৯১৮) – দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তিদাতা পুরুষ
৯০. শেখ মুজিবর রহমান (১৯২০–১৯৭৫) – বাংলাদেশের জাতির জনক
৯১. প্যাট্রিস লুমুম্বা (১৯২৫-১৯৬১) – কঙ্গোর মুক্তিদাতা পুরুষ
৯২. মার্কো পোলো (১২৫৬–১৩২৩) – দুঃসাহসিক অভিযাত্রী
৯৩. ক্রিস্টোফার কলম্বাস (আনু. ১৪৪৬-১৫০৬) – আমেরিকার আবিষ্কারক
৯৪. ডেভিড লিভিংস্টোন (১৮১৩-১৮৭৩) – আফ্রিকার আবিষ্কারক
৯৫. উইলিয়াম জোন্স (১৭৪৬–১৭৯৪) – এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৬. ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (১৮২০–১৯১০) – আধুনিক ‘নার্সিং’ বৃত্তির অগ্রপথিক
৯৭. হেনরি ডুনান্ট (১৮২৮–১৯১০) – রেডক্রস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৮. ব্যাডেন পাওয়েল (১৮৫৭–১৯৪১) – বয়স্কাউট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা
৯৯. মাদার তেরেসা (১৯১০–১৯৯৭) – প্রেম, করুণা ও ধর্মের মূর্ত প্রতিমা
১০০. অ্যাডাম স্মিথ (১৭২৩–১৭৯০) – রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিজ্ঞানের জনক

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন