মহাত্মা গান্ধি (১৮৬৯–১৯৪৮) – ‘সবকো সুমতি দে ভগবান’

ভবেশ রায়

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ একদা সত্য ও অহিংসার সাধনা, মানবপ্রেম ও সমাজসেবার জন্য যাঁকে মহাত্মা উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন, আজও বিশ্বে তিনি সেই নামেই পরিচিত। তাঁর সত্যিকার নাম আজ হারিয়ে গেছে এই বিশাল উপাধির উজ্জ্বলতায়। আজও সমগ্র ভারত, তথা সারা বিশ্বে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষদের একজন বলে তিনি সম্মানিত।

অথচ তিনি থাকতেন অত্যন্ত সাধারণ পোশাকে। পরনে থাকত সাধারণ ধুতি এবং তার আঁচলটি থাকত গায়ে জড়ানো। এ-ই তাঁর পোশাক। শরীর ছিল শীর্ণ। ইংরেজরা তাই তাঁকে চলন্ত কঙ্কাল (Walking Skeleton) বলে অভিহিত করতেন।

মহাত্মা গান্ধির সত্যিকার নাম মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধি। পিতা ছিলেন কাবা গান্ধি। তিনি ছিলেন রাজকোটের দেওয়ান। মা ছিলেন পুণ্যবতী রমণী—পুতলি বাঈ।

মহাত্মা গান্ধির জন্ম ১৮৬৯ সালে ২ অক্টোবর গুজরাট প্রদেশের পোরবন্দরের এক গ্রামে সম্ভ্রান্ত এক বণিক পরিবারে।

পোরবন্দরেই প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় গান্ধির। পরে রাজকোটে এক উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। বোম্বাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রবেশিকা পাস করে কিছুদিন ভবনগরে শ্যমলদাস কলেজেও পড়াশোনা করেছিলেন।

১৯ বছর বয়সে ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য যান বিলেতে। ১৮৯১ সালে বিলেতে থেকে ফিরে এসে বোম্বাই হাইকোর্টে শুরু করেন আইনব্যাবসা।

তিনি প্রথম বিলেতে গিয়ে খুব বেকায়দায় পড়ে গিয়েছিলেন। তিনি তো মাছমাংস খেতেন না, কিন্তু বিলেতে কোথায় কোন্ হোটেলে নিরামিষ রান্না হয়, তাও জানতেন না। আসলে বিলেতে কেবল নিরামিষ রান্না করে, এমন হোটেল বলে তখনও কিছু ছিলনা। তাই নিরামিষ খাবার না পেয়ে প্রথম দিকে তারা প্রায় অনাহারে মারা যাবার দশা হয়েছিল।

পরে অবশ্য অনেক ঠেলাধাক্কা খেয়ে তিনি কিছুটা পাশ্চাত্য পোশাক পরতে এবং খাবার খেতে আরম্ভ করেছিলেন। চেষ্টা করছিলেন নিজেকে আধুনিক করে নিতে।

এর জন্য লন্ডনে ব্যারিস্টারি পড়ার সময় তিনি কিছুদিন সংগীতচর্চা এবং নাচেরও তালিম নিয়েছিলেন। অবশ্য শিল্পী হওয়া তাঁর ভাগ্যে হয়নি। কিন্তু তাতে লাভ হয়েছিল একটি ব্যাপারে। তাঁর বাল্যকালের লাজুক ভাবটা কেটে গিয়েছিল, অর্জন করেছিলেন মানুষের মুখের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার সাহস।

লন্ডনে থাকার সময় তিনি সেখানে নিরামিষভোজীদের নিয়ে একটি সমিতিও গঠন করেছিলেন। তিনি ব্যারিস্টারি পড়তে গিয়ে লন্ডনে ছিলেন তিন বছর। এই সময়ই তিনি ভারতের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ দাদাভাই নওরোজি ও গোপালকৃষ্ণ গোখলের সঙ্গে পরিচিত হন এবং এখান থেকেই তিনি জাতীয়তাবাদের মহামন্ত্রে দীক্ষিত হন।

এর দু’বছর পর অর্থাৎ ১৮৯৩ সালে তিনি একটি জটিল মামলার দায়িত্বভার নিয়ে যান দক্ষিণ আফ্রিকায়। সে-সময় দক্ষিণ আফ্রিকায় অনেক ভারতীয় বাস করত। কিন্তু শ্বেতাঙ্গ সম্প্রদায়ের হাতে সবসময় তারা নির্যাতনের শিকার হতো। ভারতীয়দের প্রতি এ ধরনের নিষ্ঠুর আচরণে গান্ধির মন খুব ভারাক্রান্ত হয়। তাঁর মনে প্রবল হয়ে ওঠে আত্মসম্মানবোধ সেই সাথে দেশাত্মবোধও। পরাধীনতার কী মর্মজ্বালা, তিনি তখন থেকেই অন্তরে অনুভব করতে শুরু করেন।

দেশবাসীদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় তিনি সেখানেই শুরু করে দেন আন্দোলন। এ আন্দোলনে কোনো হিংসা নেই, শত্রুতার কোনো স্থান নেই, শত দুঃখকষ্ট ও নির্যাতন ভোগ করে অত্যাচারীর মন থেকে হিংসা দূর করার লক্ষ্যে এ ছিল এক আদর্শবাদী আন্দোলন।

তিনি আফ্রিকার ভারতীয় এবং স্থানীয় কৃষাঙ্গ আদিবাসীদের নিয়ে গঠন করেন একটি সমিতি। তাঁর উদ্যোগেই প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৯৪ সালের মে মাসে নাটাল ইন্ডিয়ান কংগ্রেস। এই সমিতির মাধ্যমেই তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাসরত ভারতীয় এবং কৃষাঙ্গদের খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থানের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলেন।

১৯০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গদের হাতে নির্যাতিত জুলুরা বিদ্রোহ করে। এই সময় গান্ধি জুলুদের পক্ষে কাজ করেন।

মহাত্মা গান্ধি দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রায় কুড়ি বছর ছিলেন। তিনি সেখানে ভারতীয়দের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য করেছেন অবিরাম সংগ্রাম। অসংখ্যবার ভোগ করেছেন নির্যাতন, অত্যাচার। বহুবার তাঁর জীবন পর্যন্ত বিপন্ন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কিন্তু তিনি ছিলেন তাঁর আদর্শে অবিচল।

এই আফ্রিকাই ছিল তাঁর পরবর্তীকালের মহৎ ও বৃহৎ জীবনগঠনের আদি পীঠস্থান। এখান থেকেই শুরু হয় তাঁর ভবিষ্যৎ ভারত রাষ্ট্রের নেতৃত্বদানের প্রস্তুতিপর্ব।

তিনি আফ্রিকা থেকে ভারতে প্রত্যাবর্তন করেন ১৯১৪ সালে। এই সময়ই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে তাঁকে ‘মহাত্মা’ উপাধিতে ভূষিত করেন। সেই থেকেই তিনি ভারতবাসীর কাছেও মহাত্মারূপে অভিহিত।

তিনি ভারতে ফিরে এসে প্রথমে সবরমতি নামক স্থানে একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠা। করে জনসেবা ও গঠনমূলক কাজে মনোনিবেশ করেন।

শুরু হয় প্রথম বিশযুদ্ধ। গান্ধিজি এই যুদ্ধে ব্রিটিশদের সমর্থন করেছিলেন। তবে তিনি তখন এই শর্তে ব্রিটিশদের সহায়তা করেছিলেন যে, যুদ্ধ শেষ হলে ব্রিটিশ সরকার ভারতবাসীদের স্বাধীনতা দেবে। কিন্তু ব্রিটিশরা তাদের সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। তারা শুধু চুক্তিভঙ্গই করেনি, উপরন্তু তারা পাঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালাবাগে অগণিত নরনারী ও শিশুকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যাও করে।

এই নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতায় সমগ্র ভারতবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ইংরেজ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত তাঁর ‘নাইট’ উপাধি পরিত্যাগ করেন, মহাত্মা গান্ধিও তাঁর ‘কাইজার-ই-হিন্দ’ পদক প্রত্যাখ্যান করেন।

দেশব্যাপী শুরু হয় আন্দোলন। হিমালয় থেকে কন্যাকুমারিকা পর্যন্ত সমগ্ৰ দেশ স্বাধীনতার সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হয়। মহাত্মা গান্ধিও যোগদান করেন এই মুক্তিসংগ্রামে। পরবর্তীকালে তাঁর নেতৃত্বেই শুরু হয় ভারতের জাতীয় স্বাধীনতার অনুষ্ঠিত সংগ্রাম।

১৯২১ সালে আহমেদাবাদে কংগ্রেসের নেতৃত্বে আইন অমান্য আন্দোলন চালানোর প্রস্তাব গৃহীত হয়। সারা ভারত মহাত্মা গান্ধির নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এটাই ছিল বৃহত্তম ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম। এই যে সমগ্র দেশের মধ্যে বৃহত্তর জাতীয় চেতনাবোধ সৃষ্টি করা, এটা মহাত্মা গান্ধিরই অবদান।

এই আন্দোলন চালাকালীন ১৯২২ সালের ২২ মার্চ হাজার হাজার সত্যাগ্রহীর সাথে মহাত্মা গান্ধিকেও গ্রেফতার করা হয়। বিচারে তাঁর ছয় বছরের কারাদণ্ড হয়। কিন্তু দুবছর পর অর্থাৎ ১৯২৪ সালে বিক্ষুব্ধ বিদ্রোহী ভারতীয় জনতার চাপে ইংরেজ সরকার গান্ধিকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।

১৯৩০ সালে আবার গান্ধি অসহযোগ আন্দোলনের ডাকদেন। এই ডাকে সাড়া দিয়ে ভারত জুড়ে শুরু হয়ে যায় ধর্মঘট, ব্রিটিশ পণ্যবর্জন এবং ব্রিটিশ সরকারের আইন অমান্য আন্দোলন। এই সময়ই মহাত্মা গান্ধিসহ প্রায় ষাট হাজার লোক কারাবরণ করে। অবস্থা বেগতিক দেখে ব্রিটিশ সরকার নিজেই এগিয়ে এসে গান্ধির সঙ্গে সন্ধি করে। ১৯৩১ সালে সম্পাদিত এই চুক্তিই ইতিহাসে গান্ধি-আরইউন চুক্তি নামে খ্যাত। এই চুক্তি হওয়ার পর কংগ্রেস অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেয়।

১৯৪২ সালে স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস ভারতে এসে মহাত্মা গান্ধির সঙ্গে ভারতের স্বাধীনতার প্রশ্নে আলোচনায় বসেন। কিন্তু ক্রিপস মিশনের প্রস্তাব গান্ধি প্রত্যাখ্যান করেন। এই মিশন ব্যর্থ হয়ে যাওয়ার পরই গান্ধি চূড়ান্তভাবে স্বাধীনতা সংগ্রামে নেমে পড়েন। শুরু হয় তাঁর ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলন।

এই আন্দোলন নস্যাৎ করার জন্য চলল দমননীতি। গান্ধী আবারও গ্রেফতার হলেন। ভারত জুড়ে শুরু হয়ে গেলো তীব্র আন্দোলন।

অবশেষে ১৯৪৪ সালে ইংল্যান্ডে লেবার পার্টি ক্ষমতায় এলে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়। ভারতের স্বাধীনতার প্রশ্নে শুরু হয় আলোচনা। ভাইসরয় লর্ড ওয়াভেল গান্ধিকে মুক্তি দিলেন। ভারতের স্বাধীনতার কাঠামো নির্ণয়ের জন্য ১৯৪৬ সালে ইংল্যান্ডে থেকে এল ক্যাবিনেট মিশন

কয়েক দফা আলোচনা চলার পর অবশেষে ১৯৪৭ সালের ৭ মার্চ লর্ড মাউন্টব্যাটেন স্বাক্ষরিত চুক্তির মাধ্যমে এর পরিসমাপ্তি ঘটল। ভারতের স্বাধীনতা স্বীকার করে নিল ব্রিটিশ সরকার। ফলে ১৯৪৭ সালের ১৪ ও ১৫ আগস্টে যথাক্রমে পাকিস্তান ও ভারত নামে দুটি পৃথক স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে অখণ্ড ভারত উপমহাদেশকে দ্বিখণ্ডিত করে।

মহাত্মা গান্ধি ছিলেন যেমন সত্যনিষ্ঠ, তেমনি মানবপ্রেমিক। তাঁর জীবনের মূলমন্ত্রই ছিল সত্য, অহিংসা এবং প্রেম। হরিজন আন্দোলন, হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতি, বুনিয়াদি শিক্ষা ব্যবস্থার পরির্তন, কুটির শিল্পের প্রসার কামনায় তিনি ছিলেন সদাতৎপর। অস্ত্রহীন, সৈন্যহীন, মাত্র আত্মার বলে বলীয়ান এই মহান পুরুষ কতিপয় সাথি নিয়ে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে পদব্রজে হেঁটে বেড়িয়েছেন। মুখে ছিল তাঁর একমাত্র শন্তির বাণী : “সবকো সুমতি দে ভগবান (সকল মানুষকে সুমতি দাও ঈশ্বর)।” পৃথিবীর ইতিহাসে এমন মানবের সংখ্যা শুধু বিরল নয়, তিনি তার একমাত্র দৃষ্টান্তও।

কিন্তু তবু দ্বেষ ও সাম্প্রদায়িকতার বিষ তাঁকে আকণ্ঠ পান করতে হয়েছিল, তাঁর মতো অহিংসবাদী মানুষকেও উগ্র হিন্দু সাম্প্রদায়িকতার শিকার হতে হয়েছিল। গান্ধিজির সাম্প্রাদায়িকতামুক্ত সত্যাশ্রয়ী উদার নীতিই এর কারণ। ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি এক বৈকালিক প্রার্থনাসভায় নাথুরাম গডসে নামক এক আততায়ীর পিস্তলের গুলিতে তিনি নিহত হন। অহিংসা ও প্রেমের পূজারি এই মহামানব তাঁর দেশবাসীর হাতেই নিহত হন। তবু তাঁর জীবনের সাধনা, তাঁর জীবনের আদর্শ সমগ্র ভারতবাসী তথা বিশ্ববাসীর অন্তরে চিরদিন দেদীপ্যমান থাকবে।

সকল অধ্যায়

১. হযরত মুহাম্মদ (দঃ) (৫৭০-৬৩২) – সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী
২. জরথুশত্র (৬২৮-৫৫১ খ্রি. পূ.) – পারশি ধর্মের প্রবর্তক
৩. বর্ধমান মহাবীর (৫৯৯–৫২৭ খ্রি. পূ.) – জৈন দর্শন ও ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা
৪. গৌতম বুদ্ধ (৫৬৩–৪৮৩ খ্রি. পূ.) – বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক
৫. কনফুসিয়াস (৫৫১–৪৭৯ খ্রি. পূ.) – চীনের প্রাচীনতম ধর্মমতবাদের প্রবর্তক
৬. সক্রেটিস (আনু. ৪৬৯–৩৯৯ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্রের আদিজনক
৭. প্লেটো (৪২৮–৩৪৭ খ্রি. পূ.) – দর্শনশাস্ত্র যাঁর হাতে পেয়েছিল পূর্নাঙ্গরূপ
৮. ডায়োজিনিস (৪১২–৩২২ খ্রি. পূ.) – একনিষ্ঠ জ্ঞান সাধক
৯. অ্যারিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খ্রি. পূ.) – যুক্তিশাস্ত্রের জনক
১০. যিশু খ্রিস্ট (আনু. ৬ খ্রি. পূ.–আনু. ২৯ খ্রি.) – খ্রিস্টানধর্মের প্রবর্তক
১১. অতীশ দীপঙ্কর (৯৮২–১০৫৩) – জ্ঞানসাধক বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক
১২. গুরু নানক (১৪৬৯–১৫৩৮) – শিখ ধর্মমতের প্রবর্তক
১৩. মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬) – ধর্মের সংস্কারক এবং ‘প্রটেস্টানিজম’ মতবাদের স্রষ্টা
১৪. মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩) – বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তক
১৫. রামমোহন রায় (১৭৭২–১৮৩৩) – ভারতবর্ষে নবযুগের প্রবর্তক
১৬. রামকৃষ্ণ পরমহংস (১৮৩৬–১৮৮৬) – ‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আমি ঈশ্বরকে দর্শন করেছি’
১৭. বারট্রান্ড রাসেল (১৮৭২–১৯৭০ ) – যুদ্ধ-বিরোধী ও মানবতাবাদী দার্শনিক
১৮. থ্যালিস (আনু. ৬২৪–৫৬৫ খ্রি. পূ.) – বিজ্ঞানশাস্ত্রের আদিপুরুষ
১৯. পিথাগোরাস (আনু. ৫৮২–৫০৭ খ্রি. পূ.) – তিনি বলেছিলেন—পৃথিবী গোলাকার
২০. হিপোক্র্যাটিস (আনু: ৪৬০–৩৭০ খ্রি. পূ.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আদিজনক
২১. আর্কিমিডিস (২৮৭–২১২ খ্রি. পূ.) – ঊর্ধ্বমুখী বল সূত্রের আবিষ্কারক
২২. ক্লডিয়াস টলেমি (১০০–১৮০ খ্রি.) – জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রথম কোষগ্রন্থ প্রণেতা
২৩. ক্লডিয়াস গ্যালেন (১৩১–২০১ খ্রি.) – চিকিৎসাশাস্ত্রের আধুনিক পদ্ধতির আদি জনক
২৪. ইবনে সিনা (৯৮০–১০৩৭) – জ্ঞানসাধনায় কাটিয়েছিলেন সমগ্র জীবন
২৫. কোপারনিকাস (১৪৭৩–১৫৪৩) – আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্ৰবক্তা
২৬. জিওর্দানো ব্রুনো (আনু. ১৫৪৮–১৬০০ ) – সত্যপ্রচারের অপরাধে যাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল
২৭. গ্যালিলিও গ্যালিলি (১৫৬৪-১৬৪২) – যাঁর গাণিতিক পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি
২৮. লিওয়েন হুক (১৬৩২–১৭৩৩) – মুদি দোকানদার থেকে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী
২৯. আইজাক নিউটন (১৬৪২–১৭২৭) – মাধ্যাকর্ষন শক্তির আবিষ্কারক
৩০. রিচার্ড আর্করাইট (১৭৩২–১৭৯২) – আধুনিক বস্ত্রশিল্পে বৈপ্লবিক ধারা প্রবর্তক
৩১. উইলিয়াম হার্শেল (১৭৩৮–১৮২২) – ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কারক
৩২. লরেঁ লাভোয়সিয়ের (১৭৪৩–১৭৯৪) – রসায়নশাস্ত্রের জনক
৩৩. মাইকেল ফ্যারাডে (১৭৯১-১৮৬৭) – তাড়িত-চুম্বক বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা
৩৪. চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) – প্রাণিজগতের বিবর্তনবাদের ব্যাখ্যাদাতা
৩৫. লুই পাস্তুর (১৮২২–১৮৯৫) – জীবাণু আর জলাতঙ্ক রোগ প্রতিষেধকের আবিষ্কারক
৩৬. আলফ্রেড নোবেল (১৮৩৩–১৮৯৬) – যাঁর নামে দেয়া হয় নোবেল পুরস্কার
৩৭. আলভা এডিসন (১৮৪৭–১৯৩১) – সর্বাধিক আবিষ্কারের জনক
৩৮. জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৯–১৯৩৭) – যিনি বলেছিলেন গাছেরও প্রাণ আছে
৩৯. মাদাম কুরি (১৮৬৭–১৯৩৪) – সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহিলা বিজ্ঞানী
৪০. মার্কোনি (১৮৭৪–১৯৩৭) – বেতারযন্ত্রের আবিষ্কারক
৪১. আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯–১৯৫৫) – আপেক্ষিক তত্ত্বের জনক
৪২. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১–১৯৫৫) – পেনিসিলিনের আবিষ্কারক
৪৩. হোমার (আনু. ৭০০-? খ্রি. পূ.) – বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দুটি মহাকাব্যের রচয়িতা
৪৪. ঈশপ (আ. কা. ৬২০–৫৬০ খ্রি. পূ.) – কালজয়ী নীতিগল্পকার
৪৫. সোফোক্লেস (আনু. ৪৯৫-৪০৬ খ্রি. পূ.) – গ্রিক ট্র্যাজেডি নাট্যধারার রূপকার
৪৬. হেরোডোটাস (আনু. ৪৮৫–৪২৫ খ্রি. পূ.) – ইতিহাসশাস্ত্রের জনক
৪৭. অ্যারিস্টোফানিস (আনু. ৪৪৪–৩৮৫ খ্রি. পূ.) – যাঁর সাহিত্যকর্মে আর্তমানবতার কথা প্রতিফলিত
৪৮. মহাকবি কালিদাস (আনু. ৫৭০-৬৫০ খ্রি.) – সংস্কৃতি সাহিত্যের অমর কবি
৪৯. লেওনার্দো দা ভিঞ্চি (১৪৫২–১৫১৯) – সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী
৫০. মিকেলাঞ্জেলো (১৪৭৫–১৫৬৪) – পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাস্কর শিল্পী
৫১. তানসেন (১৫০৬–১৫৮৫) – কিংবদন্তির গায়ক
৫২. শেকসপিয়ার (১৫৬৪-১৬১৬) – বিশ্বসাহিত্যের কালজয়ী নাট্যকার
৫৩. ভলতেয়ার (১৬৯৪-১৭৭৮) – বিখ্যাত ফরাসি চিন্তাবিদ
৫৪. জঁ-জাক্ রুসো (১৭১২–১৭৭৮) – ফরাসি বিপ্লবের রূপকার
৫৫. লর্ড বায়রন (১৭৮৮–১৮২৪) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি
৫৬. ভিক্টর হুগো (১৮০২-১৮৮৫) – ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৭. ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন (১৮০৫–১৮৭৫) – যাঁকে বলা হয় রূপকথার জাদুকর
৫৮. চার্লস ডিকেন্স (১৮১২–১৮৭০) – ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল
৫৯. ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯-১৮৯২) – মার্কিন সাহিত্যের যুগ-প্রবর্তক কবি
৬০. লিয়েফ তলস্তোয় (১৮২৮–১৯১০) – বিশ্বের মহান সাহিত্যিকদের অন্যতম
৬১. জুল ভের্ন (১৮২৮–১৯০৫) – কল্পবিজ্ঞান কাহিনীর স্রষ্টা
৬২. মার্ক টোয়েন (১৮৩৫–১৯১০) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রসস্রষ্টা
৬৩. জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৫৬–১৯৫০) – যিনি প্রথম নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন
৬৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১) – শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনীষা, পৃথিবীর মহত্তম সাহিত্য-ব্যক্তিত্ব
৬৫. ম্যাক্সিম গোর্কি (১৮৬৮–১৯৩৬) – যাঁর সাহিত্যকর্মের প্রধান উপজীব্য গণমানুষের কথা
৬৬. হেলেন কেলার (১৮৮০-১৯৬৮) – যাঁর খ্যাতিকে নেপোলিয়নের সঙ্গে তুলনা করা হতো
৬৭. আর্নেস্ট হেমিংওয়ে (১৮৯৮–১৯৬১) – জীবনবাদী মার্কিন কথাসাহিত্যিক
৬৮. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯–১৯৭৬) – বাংলার বিদ্রোহী কবি
৬৯. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২–১৭৯৯) – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৭০. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১) – ইতিহাসের কিংবদন্তির মহানায়ক
৭১. জুসেপ্পে গারিবলদি (১৮০৭–১৮৮২) – ইতালির জনক বলে যাঁর খ্যাতি
৭২. আব্রাহাম লিংকন (১৮০৯-১৮৬৫) – যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্রীতদাসপ্রথা রহিত করেছিলেন
৭৩. অটো ফন বিসমার্ক (১৮১৫–১৮৯৮) – জার্মান সাম্রাজ্যের স্থপতি
৭৪. মহাত্মা গান্ধি (১৮৬৯–১৯৪৮) – ‘সবকো সুমতি দে ভগবান’
৭৫. কমরেড লেনিন (১৮৭০–১৯২৪) – বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা
৭৬. উইনস্টন চার্চিল (১৮৭৪–১৯৬৫) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ডাকসাইটে প্রধানমন্ত্রী
৭৭. জোসেফ স্ট্যালিন (১৮৭৯–১৯৫৩) – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়েনের ‘লৌহমানব’
৭৮. কামাল আতাতুর্ক (১৮৮১–১৯৩৮) – নব্য-তুরস্কের জনক
৭৯. ডি ভ্যালেরা (১৮৮২-১৯৭৫) – আয়ারল্যান্ডের প্রথম প্রেসিডেন্ট
৮০. জওহরলাল নেহরু (১৮৮৯-১৯৬৪) – ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
৮১. আইসেনহাওয়ার (১৮৯০-১৯৬৯) – দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালীন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক
৮২. শার্ল দ্য গল (১৮৯০-১৯৭০) – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা
৮৩. হো-চি-মিন (১৮৯০-১৯৬৯) – ভিয়েতনামের মুক্তিদাতা পুরুষ
৮৪. মার্শাল টিটো (১৮৯২–১৯৮০) – জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা
৮৫. মাও-সে-তুং (১৮৯৫–১৯৭৬) – চীন সাধারণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা
৮৬. সুভাষচন্দ্র বসু (১৮৯৭–১৯৪৫) – ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’
৮৭. জন এফ কেনেডি (১৯১৭–১৯৬৩) – গুপ্তঘাতকের হাতে যাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছিল
৮৮. ইন্দিরা গান্ধি (১৯১৭–১৯৮৪) – বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
৮৯. নেলসন ম্যান্ডেলা (১৯১৮) – দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তিদাতা পুরুষ
৯০. শেখ মুজিবর রহমান (১৯২০–১৯৭৫) – বাংলাদেশের জাতির জনক
৯১. প্যাট্রিস লুমুম্বা (১৯২৫-১৯৬১) – কঙ্গোর মুক্তিদাতা পুরুষ
৯২. মার্কো পোলো (১২৫৬–১৩২৩) – দুঃসাহসিক অভিযাত্রী
৯৩. ক্রিস্টোফার কলম্বাস (আনু. ১৪৪৬-১৫০৬) – আমেরিকার আবিষ্কারক
৯৪. ডেভিড লিভিংস্টোন (১৮১৩-১৮৭৩) – আফ্রিকার আবিষ্কারক
৯৫. উইলিয়াম জোন্স (১৭৪৬–১৭৯৪) – এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৬. ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (১৮২০–১৯১০) – আধুনিক ‘নার্সিং’ বৃত্তির অগ্রপথিক
৯৭. হেনরি ডুনান্ট (১৮২৮–১৯১০) – রেডক্রস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা
৯৮. ব্যাডেন পাওয়েল (১৮৫৭–১৯৪১) – বয়স্কাউট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা
৯৯. মাদার তেরেসা (১৯১০–১৯৯৭) – প্রেম, করুণা ও ধর্মের মূর্ত প্রতিমা
১০০. অ্যাডাম স্মিথ (১৭২৩–১৭৯০) – রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিজ্ঞানের জনক

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন