দেবতার ভর – সুকুমার সেন

পৌলোমী সেনগুপ্ত

ভূত-চতুর্দশীর সন্ধ্যা। মহাকালের মন্দিরাধ্যক্ষের আবাসে কালিদাস ও কয়েক জন বন্ধুর আগমন হয়েছে। তার মধ্যে ধন্বন্তরিও আছেন।

কথায় কথায় সে দিন ধন্বন্তরির বাড়িতে তার অদ্ভুত ভূতের গল্পের আসরের কথা উঠল। কথায় কথায় ঘটকপর্ব কালিদাসকে অনুরোধ করলেন তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে একটি বিচিত্র ও অদ্ভুত ভূতের কথা শোনাতে। এ-প্রস্তাবে সকলেই মেতে উঠে সায়। দিলেন।

বিব্রত বোধ করে কালিদাস বললেন, সব কাহিনি মনে নেই। যে-সব কাহিনি মনে আছে, তা সব বলা যায় না, কেননা পাত্রপাত্রীকে অনেকেই চিনতে পারেন।’

বরাহমিহির বললেন, নাম বদল করে বলুন।

বছর পঁচিশ-তিরিশ আগেকার কথা। উজ্জয়িনী থেকে বেশ কয়েক ক্রোশ দূরে একটি পুরনো নামজাদা গ্রাম। সে গ্রামের প্রধান অধিবাসী ছিলেন ধরুন দিবাকর চন্দ্র। এঁর পূর্বপুরুষ গ্রামটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, এবং তা কত দিন আগে, তা কেউ বলতে পারে না। এঁরা শুধু ধনী ছিলেন না, পণ্ডিতও ছিলেন, মেয়ে পুরুষ। এঁরা উপাসনা করতেন বিষ্ণুর অথবা শিবের নয়, গন্ধর্ব বিশ্বাবসুর। ঋগ্‌বেদ থেকে জানা যায় যে, গন্ধর্ব বিশ্বাবসু কোনও কোনও সমাজে বিষ্ণুর মতো পূজিত হতেন। দিবাকর চন্দ্রদের বংশ বাড়েনি। তবে এবংশ খ্যাতি-প্রতিপত্তি যথাসম্ভব বজায় রেখে এসেছে। দিবাকরের সংসার ছোট। সে, স্ত্রী, তরুণ পুত্র, আর তরুণতর পুত্রবধূ।

পুত্র রাজকর্মচারী, সে বাইরে আছে। এক বছর অন্তর ছুটি পায় চার মাস—আষাঢ় থেকে আশ্বিন। তখন সে বাড়ি আসে। এবছর ছুটি নিলে না। সামনের আষাঢ়ে সে বাড়ি আসবে। ইতিমধ্যে বধূমাতা যে কাণ্ড বাধিয়েছে, তাতে দিবাকরের হাত-পা যেন পেটের মধ্যে সেঁধিয়ে গেছে।

দিবাকরের সঙ্গে একদা মহামন্ত্রীর খুব হৃদ্যতা ছিল। তখন তিনি ঘন ঘন উজ্জয়িনীতে আসতেন ছেলের তদারকি করতে। এখন আর বেশি আসেন না, তাই মহামন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ শিথিল হয়ে গেছে। এখন মহা বিপদে পড়ে তিনি মহামন্ত্রীর কাছে ছুটে এসেছেন। কাকার বন্ধু দিবাকর যে বিবরণ দিয়েছিলেন তা বলছি।

ওঁদের বাড়ি ছিল সেকালের বড়লোকদের যেমন হয়। পাঁচিল-ঘেরা বিরাট বড়। ভিতরে গোশালায় গোয়ালঘর, উঠোন, দু’মহল, একতলা ইট ও পাথরের ঘর। পুব দিকে সিংহদরজা। বেরিয়েই একটু খোলা জায়গা। তারপর রাজপথ। তারপর বিরাট দিঘি। হ্রদের মতো। পশ্চিমে খিড়কি দরজা। খুললেই চমৎকার একটি বাগান ও ছোট পুকুর। পুকুরের বাঁধানো পাড়ের ধারে সযত্নরোপিত ও রক্ষিত চমৎকার বিদেশি বাঁশের ঝাড়। তার চার দিক পাথরে বাঁধানো, বিষ্ণুমন্দিরে তুলসীমঞ্চের মতো। প্রাচুর্যের সংসার। যথেষ্ট দাসদাসী।

এইবার ঘটনায় আসি। সে দিন সন্ধ্যাবেলা। সন্ধ্যা অনেকক্ষণ উতরে গেছে, কিন্তু বউমা এখনও ঘাট থেকে ফেরেনি দেখে গিন্নি উদ্‌বিগ্ন হয়ে খিড়কি-ঘাটে গেলেন। গিয়ে দেখেন, বধূমাতা বাঁশঝাড়-মঞ্চের কাছে ধ্যানস্থ হয়ে বসে রয়েছে। বিস্মিত হয়ে কাছে গিয়ে তিনি বললেন, বউমা, এ কী কাণ্ড! তুমি এমন করে এখানে বসে রয়েছ কেন? কী হয়েছে?

মেয়েটি বললে, ‘বেশ ভাল লাগছিল বলে বসে আছি।’

কথা শুনে গিন্নি চমকে উঠলেন। এ তো বউমার কণ্ঠ নয়, এ তো পুরুষালি গলা। আর এমন ভাবে বউমা তো কখনও তার সঙ্গে কথা কয়নি। গিন্নির ভয় হল; আস্তে আস্তে বললেন, ‘চলো মা, ঘরে চলো।’

এই কথা শুনেই বউ উঠে পড়ল, তারপর গিন্নির আগে আগে বাড়িতে গিয়ে ঢুকল। তারপর তাকে সম্পূর্ণ প্রকৃতিস্থ দেখা গেল। গিন্নির মন কিছু ঠান্ডা হল। ভাবলেন, আমারই শোনার দোষ হয়ে থাকবে। বউমার কিছু হয়নি। স্বামীকে এ বিষয়ে তিনি কোনও কথা বললেন না।

পরের দিন সকালে বধূমাতা ঘুম থেকে উঠেই শাশুড়িকে বললে (এবং পুরুষালি কণ্ঠে), ‘দাসী গোয়ালঘর না কেড়েই উঠোন ঝাঁট দিয়েছে। আপনাকে জানালুম।’

বিস্মিত হয়ে শাশুড়ি বললেন, “সে কী রকম? তুমি তা জানলেই বা কী করে? উত্তর না দিয়ে বধূমাতা সেখান থেকে চলে গেল। গিন্নির বুক দুরুদুরু করতে লাগল। তিনি বাইরে গিয়ে দেখলেন উঠোন ঝাঁট দিয়ে পরিষ্কার করা হয়েছে। তারপর গোয়ালে ঢুকে দেখলেন, তা পরিষ্কার করা হয়নি। দুরুদুরু বুকে গিন্নি গিয়ে কর্তাকে এ কথা জানালেন। কর্তা হেসে উড়িয়ে দিয়ে বললেন, ‘স্বপ্ন দেখেছে। ভোরের স্বপ্ন সত্যি হয়। তখন গিন্নি আগের দিন সন্ধ্যার ঘটনা বললে পর কর্তা শুনে একটু গম্ভীর হলেন। বললেন, ‘দেখা যাক, আর কিছু ঘটে কি না। এইটুকুতে অস্থির হবার কিছু নেই।

তার পরে এমন একটি ছোট ঘটনা হল, যাতে দিবাকর চন্দ্র ছেলেমানুষ পুত্রবধূর মধ্যে পুরুষ-নারী দ্বন্দ্ব ব্যক্তিত্বের আবির্ভাব স্বীকার না করে পারলেন না। ঘটনাটি হল এই—একদিন বউমা সকালবেলাতেই শাশুড়িকে জানিয়ে দিলে যে, দু’চার দিনের মধ্যে তাদের রাঁধুনি দেশে যেতে চাইবে। তাকে যদি ছুটি দেওয়া হয়, তবে তার তল্পিতল্পা সব যেন যাবার সময় খুঁটিয়ে দেখা হয়। কারণ জিজ্ঞাসা করায় বউ বললে যে, সে আজকাল মশলাপাতি চুরি করছে।

দু’দিন পরে রাঁধুনি সত্যিই বললে, তার বাড়ি থেকে খবর এসেছে, তাকে যেতে হবে। দশ বারো দিন ছুটি চাই। ছুটি দেওয়া হল। যাবার সময় তার জিনিসপত্র তল্লাসি করা হল। চোরাই মাল পাওয়া গেল। তা কিন্তু তাকেই দিয়ে দেওয়া হল।

এই ব্যাপারে দিবাকর বিচলিত হয়ে পড়লেন। তিনি রোজা ডাকাবার কথা ভাবলেন। বধূমাতা তার মনের ভাব বুঝে বললেন, “রোজা-টোজা ডাকবেন না। যেমন চলছে চলুক।’

দিবাকর শুনলেন না, রোজা ডাকালেন। রোজা এসে বাইরের ঘরে মণ্ডলচক্র এঁকে নানা রকম তান্ত্রিক আচার-অনুষ্ঠান করতে লাগল। শেষে বধূমাতাকে আনাল। বধূমাতা ঘরে এসে দেখল যে, রোজা আগুনে হলুদ পোড়াচ্ছে। সে তা দেখে এক লাফে রোজার কাছে গিয়ে মারল তার গালে এক চড়। রোজা মাথা ঘুরে মাটিতে পড়ে গেল। বধূমাতা ভিতরে চলে গেল। মূৰ্ছাভঙ্গ হলে পর রোজা বিনা বাক্যব্যয়ে জিনিসপত্র গুটিয়ে চলে গেল।

দিবাকর এখন মহা ভাবনায় পড়লেন। কী করেন, কোথায় যান। তখন হঠাৎ মনে পড়ে গেল, তার এক যৌবন-সুহৃদের কথা। মহামন্ত্রী শারদানন্দের সঙ্গে একদা তার খুব অন্তরঙ্গতা ছিল। এখন মনে হল শারদানন্দের সঙ্গে পরামর্শ করা যাক। তখুনি তিনি চিঠি লিখতে বসলেন শারদানন্দকে।

‘ভাই আনন্দ, ভারী মুশকিলে পড়েছি। লিখে জানানো যায় না। এক্ষুনি তোমার কাছে যেতে চাই। কখন যাব তা পত্রপাঠ জানাও। ইতি, তোমার বিগত দিনের বান্ধব আকর।’

চিঠি লিখে দিবাকর তার গোমস্তার হাতে দিয়ে বললেন, এই চিঠি নিয়ে পালকি করে এখুনি উজ্জয়িনীতে যাও। গিয়ে মহামন্ত্রীর হাতে দাও এই চিঠি। তার উত্তর নিয়ে আসবে। যতক্ষণ তিনি উত্তর দেন, ততক্ষণ তার কাছ ছাড়বে না। কাল বিকেলের মধ্যে ফেরা চাই।’

চিঠি নিয়ে গোমস্তা উজ্জয়িনী দৌড়ল। পরের দিন সন্ধ্যার আগেই শারদানন্দের উত্তর এল, ‘আকর এখুনি চলে এসো।-আনন্দ।’

তার পরের দিন দুপুরের খানিকক্ষণ পরে আমার জরুরি ডাক এল মহামন্ত্রীর আপিস থেকে। আমি গিয়ে দেখলুম তিনি এক ভদ্রলোকের সঙ্গে আলোচনায় মগ্ন। দু’জনের মুখেই চিন্তার ছাপ। আমাকে দেখে কাকাবাবু হাঁফ ছেড়ে বলে উঠলেন, ‘এই তো কালিদাস এসে পড়েছে। তারপর আমার সঙ্গে দিবাকর চন্দ্রের পরিচয় করিয়ে দিয়ে তার পুত্রবধুর সব কাহিনি আমাকে বললেন। যেকথা আমি এতক্ষণ বললুম।

তারপর শারদানন্দ বললেন, ‘কালিদাস, তোমাকে তো এর বিহিত করতে হয়। এমন কাণ্ড তো কখনও শুনিনি।

আমি বললুম, “শোনেননি, সেকথা ঠিক। কিন্তু পড়েছেন। ভাল বইয়েই পড়েছেন। আপনার মনে নেই। সে-কথা পরে বলব। মনে হচ্ছে প্রতিকার সম্ভব, এবং তা আমি করতে পারব। তবে আমাকে অকুস্থলে যেতে হবে।’

দিবাকর চন্দ্র লাফিয়ে উঠে বললেন, ‘এখুনি চলুন। আপনার কোনও অসুবিধা হবে না।’

আমি বললুম, আমার একটু প্রস্তুতি দরকার। তাই আমি তো এক্ষুনি যেতে পারব না। তবে আপনি যদি রাত্রিতে এখানে থেকে যান, তো কাল সকালে দু’জনে একসঙ্গে যেতে পারি।’

কাকাবাবু কিন্তু দিবাকর চন্দ্রকে থাকতে দিলেন না। বললেন, “তোমার গিন্নি একলা আছে। অযথা তাকে রাত্রিকালের সংশয়-আতঙ্কে ফেলে রেখো না। কালিদাস কাল সকালেই যাত্রা করবে। ওর কথায় ভরসা করতে পারো।

দিবাকর চন্দ্র বললেন, তোমরাই তো আমার একমাত্র ভরসা। সন্ধ্যা পড়বার আগেই দিবাকর চন্দ্র বাড়িমুখো হলেন।

দিবাকর চন্দ্র চলে যাবার কিছুক্ষণ পরে মহামন্ত্রী আমাকে বললেন, কী বইয়ের কথা বলছিলে তুমি?

আমি বললুম, বৃহদারণ্যক উপনিষদের কথা। যাতে যাজ্ঞবল্কের কাহিনি আছে—এক গন্ধর্বগৃহীত নারীর কাছে অধ্যাত্ম-উপদেশ শোনা।

‘ওঃ হো। ঠিক বলেছ। এ-মেয়েটি তা হলে গন্ধর্ব গৃহীত?’ শারদানন্দ বললেন।

তাই তো মনে হচ্ছে, আমি বললুম।

‘ছাড়াতে পারবে তুমি?

‘আমার মনে হচ্ছে আপনার যৌবনসুহৃদ মহাশয়েরা কুলক্রমে গন্ধর্ব-উপাসক। তা যদি হয়, আমি ছাড়াতে পারব। নইলে কী হবে বলতে পারছি না।

তুমি ঠিকই ধরেছ। ওর দেবতা শিব বা বিষ্ণু নন, তার অন্য নাম। নামটা মনে পড়ছে না।

‘বিশ্বাবসু কি?

‘হাঁ হাঁ, তাই হবে।’

তা যদি হয়, কোনও ভয় নেই।

এ-গল্পের বাকিটুকু এবারে বলি। পরের দিন সকালে কালিদাসের বেরুতে একটু দেরি হয়ে গেল। তাকে একটি পুঁথি নিয়ে যেতে হবে সঙ্গে, সেটি খুঁজতে সময় লেগে গেল। কালিদাস যখন দিবাকর চন্দ্রের গ্রামে পৌঁছলেন, তখন দুপুর অনেকক্ষণ গড়িয়ে গেছে। কালিদাস স্নান করে বেরিয়েছিলেন, কিন্তু দুপুরের খাওয়া হয়নি। দিবাকরের বাড়ি পৌঁছে দেখলেন যে, অতিথির অনাগমনে সকলেই অভুক্ত রয়েছেন। কালিদাস খুব লজ্জায় পড়লেন। বলতে লাগলেন, ‘আপনাদের অভুক্ত রেখে বড় অন্যায় করেছি।

খাওয়া-দাওয়ার পর কালিদাস দিবাকরকে বললেন, ‘আপনার বাড়িটি সব দেখব। দিবাকর দেখালেন। প্রথমেই গেলেন দেবমন্দিরে। সেখানে দেখলেন বিশ্বাবসু দেবপ্রতিমা—একটি সোনার গাছ, তার এক ডালে বসে আছে অমৃতভাণ্ড নিয়ে সুবর্ণ (পাখি)। তারপর সব ঘরটর ঘুরে গেলেন খিড়কিতে। বাগানে সেই বংশমঞ্চের কাছে গিয়ে তিনি অনেকক্ষণ ধরে নিরীক্ষণ করতে লাগলেন। তারপর ঘরে ফিরে এসে বললেন, বউমাকে ডাকুন। তাকে দেখি।’

বউমা এল। বিনীত ভাবে কালিদাসকে নমস্কার করে এক ধারে নির্দিষ্ট আসনে বসল। কালিদাসও তাকে হাতজোড় করে নমস্কার করলেন। তারপর দু’জনে পরস্পরের দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন। দণ্ডখানেক এই রকম তাকিয়ে থাকবার পর বউমার চোখ নরম হয়ে নেমে পড়ল। কালিদাস স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়লেন। তারপর বললেন, বউমা, তোমাকে একটু পুরনো গল্প পড়ে শোনাব। মন দিয়ে শোনো। বউমা ঘাড় কাত করে সম্মতি জানাল।

যে-পুঁথিটি কালিদাস সঙ্গে করে এনেছিলেন, তা খুলে পড়তে লাগলেন। শতপথ ব্রাহ্মণের অন্তর্গত বৃহদারণ্যক উপনিষদ থেকে যাজ্ঞবল্ক্যের আত্মকথা। যেটুকু বউমার কাছে পড়েছিলেন, তা এখানে অনুবাদ করে দিই।

‘ভুজ্যু লাহ্যায়নির সঙ্গে কথাপ্রসঙ্গে যাজ্ঞবল্ক্য বললেন, তোমার হয়তো মনে আছে, একদা যখন আমরা শিক্ষার্থী অবস্থায় পরিব্রাজক হয়ে এখানে-ওখানে এর-ওর কাছে গিয়ে নতুন নতুন বিদ্যা সংগ্রহ করতে ব্যস্ত ছিলুম, তখন পতঞ্চল কাপ্যর ঘরে কিছুদিন থাকি। সেখানে তার স্ত্রী ছিল গন্ধর্ব-গৃহীত। তার মুখে অনেক ভাল ভাল তত্ত্বকথা শুনেছিলুম। নিশ্চয়ই সেসব তোমার মনে আছে? “

এই পর্যন্ত শুনেই বধূমাতা কাত হয়ে ঢলে পড়ল। সকলে ব্যস্ত হয়ে তাকে ধরতে গেল। কালিদাস নিষেধ করলেন। অল্পক্ষণ পরেই বধূমাতার চেতনা হল। লজ্জিত হয়ে সে গায়ের কাপড় টেনেটুনে ঠিক করে কালিদাসের কাছে গিয়ে তার পদস্পর্শ করে প্রণাম করলে। কালিদাস মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদ করলেন। তারপর দিবাকর চন্দ্রকে বললেন, “আর কোনও ভয় নেই।

মুহূর্তের মধ্যে বাড়ির আবহাওয়া বদলে গেল। গোরুবাছুর গাছপালা পর্যন্ত উৎফুল্ল হয়ে উঠল।

বিদায় নেবার আগে কালিদাস দিবাকর চন্দ্রকে বললেন, আপনার ছেলের বাড়ি আসতে যদি দেরি থাকে, তবে এক-আধমাসের জন্যে বউমাকে বাপের বাড়ি থেকে ঘুরিয়ে আনতে পারেন। নইলে সকলে মিলে দু’চার মাস উজ্জয়িনীতে কাটাতে পারেন।

আপনি যা বলেন, দিবাকর উত্তর দিলেন।

কালিদাসের গল্প শুনে সকলে চুপ করে রইল।

৫ সেপ্টেম্বর ১৯৮৪

সকল অধ্যায়

১. ভারত যুদ্ধে পিঁপড়ে – প্রেমেন্দ্র মিত্র
২. বিড়ালের চোখ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত
৩. শরচ্চন্দ্রের সন্ধিভেদ – শিবরাম চক্রবর্তী
৪. ঝুনুমাসির বিড়াল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
৫. বিধু দারোগা – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৬. সাধু কালাচাঁদের পালাকীর্তন – শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়
৭. ‘তেনা-রা’ – প্রেমেন্দ্র মিত্র
৮. লালটেম – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৯. অশরীরী – লীলা মজুমদার
১০. রাজপুত্তুরের অসুখ – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
১১. ভূতেরা বড় মিথ্যুক – প্রেমেন্দ্র মিত্র
১২. রুকু আর সুকু – সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
১৩. রাত তখন এগারোটা – বিমল মিত্র
১৪. ম্যাজিশিয়ান – বিমল কর
১৫. ঘণ্টাকর্ণের কান গেল – মনোজ বসু
১৬. খুনি – সমরেশ মজুমদার
১৭. বনকুঠির রহস্য – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়
১৮. একদম রূপকথা – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
১৯. তারিণীখুড়ো ও ডুমনিগড়ের মানুষখেকো – সত্যজিৎ রায়
২০. অম্বর সেন অন্তর্ধান রহস্য – সত্যজিৎ রায়
২১. দেবতার ভর – সুকুমার সেন
২২. মজারুমামা – আশাপূর্ণা দেবী
২৩. দুঃখহরা বড়ির শিশি – লীলা মজুমদার
২৪. গঙ্গারামের কপাল – সত্যজিৎ রায়
২৫. গোরক্ষনাথবাবুর নোটবুক – সমরেশ বসু
২৬. ভুনিকাকার চৌরশতম্‌ – বিমল কর
২৭. অনুকূল – সত্যজিৎ রায়
২৮. ক্যাপ্টেন – নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
২৯. তুরুপের তাস চুরি – প্রেমেন্দ্র মিত্র
৩০. নিখোঁজ নিরুদ্দেশ হতে গেলে – আশাপূর্ণা দেবী
৩১. রুপোর গাছ – বাণী বসু
৩২. বনঝাউয়ার রহস্য – ক্ষিতীন্দ্রনারায়ণ ভট্টাচার্য
৩৩. জ্বরের ঘোরে শোনা – সমরেশ বসু
৩৪. একটি লাল লঙ্কা – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
৩৫. টিকটিকি অতীন্দ্রিয় শক্তি ও বেদান্ত বর্ধন -আশাপূর্ণা দেবী
৩৬. নদুস্কোপ – রূপক সাহা
৩৭. আতাপুরের দৈত্য – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৩৮. নিখোঁজ চারু – অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়
৩৯. গাবু – দুলেন্দ্র ভৌমিক
৪০. কপালের নাম গোপাল – আশাপূর্ণা দেবী
৪১. শিমুলতলার মাধবী লজ – ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়
৪২. কানকাটা বাঘ – শৈলেন ঘোষ
৪৩. হিংসুটে – অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়
৪৪. হরিণ-শিকারির বাড়ি – হর্ষ দত্ত
৪৫. অর্জুন হতভম্ব – সমরেশ মজুমদার
৪৬. কেউ কি এসেছিলেন – বিমল কর
৪৭. হরিমতির বাগান – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
৪৮. মজাদার এক ফুটবল ম্যাচ আর দানাপুরি – বিমল কর
৪৯. চারুহাসিনীর দেওয়াল-সিন্দুক – সুচিত্রা ভট্টাচার্য
৫০. বন্ধু – তিলোত্তমা মজুমদার

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন