পৌলোমী সেনগুপ্ত
মাতঙ্গী ঠাকরুনের দৌর্দণ্ড প্রতাপ। বিধবা, খাটো খাটো চুল, বয়স হয়েছে, দেহে কিন্তু তাগত খুব। আপন কেউ নেই, মরে হেজে গেছে। ঘুরতে ঘুরতে নটবর তাঁর কাছে এসে পড়ল। খায়দায়, সংসারের এটা-ওটা করে—মাস মাইনে তিন টাকা। ভাঙাচুরো সেকেলে বাড়িতে ঠাকরুন একলাটি থাকতেন, এখন আর-একটি এসে জুটল—নটবর।
রকমারি রাঁধাবাড়া ও খাবার-দাবার বানানোয় ঠাকরুনের জুড়ি নেই। ঘোষেদের জামাই আসবে—বিকাল থেকে তিনি জলখাবার বানাতে লেগে গেছেন। চন্দ্রপুলি, ক্ষীরের ছাঁচ, নারকেলের চিড়া জিরা—ঝঞ্ঝাটের কাজকর্ম, বড্ড সময় লাগে। শেষ হতে বেশ খানিকটা রাত হয়ে গেল।
রান্নাঘরের দরজায় শিকল তুলে দিয়ে নটবরকে বললেন, রইল সব। গরম লাগছে, চানটা সেরে আসি। এসে তুলে পেড়ে রাখব। নজর রাখিস, বেড়াল-টেরাল না ঢুকে পড়ে।
বলে পুকুরঘাটে চললেন। খানিকটা গিয়ে মনে হল, খাবার জল কমে গেছে—কলসিটা নিয়ে এলে হয়, ঘাট থেকে অমনি কলসি ভরে আনা যাবে।
এসে অবাক। রান্নাঘরের দরজা হাঁ হাঁ করছে—বেড়াল ঢোকেনি, ঢুকে গেছে নটবর। নটবরের সব ভাল, খাবার জিনিস দেখলে মাথার ঠিক থাকে না। রান্নাঘরের ভিতর সে সদ্য-তৈরি খাবারগুলো পরখ করতে লেগে গেছে। সময় কম বলে যত রকম পদ আছে, একসঙ্গে মুখে ঢোকাচ্ছে। পায়ের শব্দে পিছন তাকাল—
ওরে বাবা, ওরে বাবা, আর করব না এমন কাজ—
দৌড়, দৌড়। বাঁশের চেলা নিয়ে মাতঙ্গী ঠাকরুন তাড়া করেছেন। ধরতে পারলে আস্ত রাখবেন না আজ। বাড়ির পিছনে কসাড় জঙ্গল, বাঁশবন। অন্ধকার এমন ঘন, নিজের হাত-পাগুলো অবধি নজরে আসে না। তিরের বেগে নটবর ছুটছে। জঙ্গলটা পার হয়ে ঘোষেদের গোয়াল। গোয়ালা ঘোষ—দুধের ব্যবসা, বিস্তর গোরু। গোয়ালে ঢুকে গোরুর পালের মধ্যে নটবর গুটিসুটি হয়ে রইল।
মাঝ রাত্রে চাঁদ উঠেছে। নির্মল জ্যোৎস্না, ঠিক যেন দিনমান। গোরুর শিঙের গুঁতো ও পায়ের লাথি খেয়ে গোবর ও চোনার মধ্যে এমনভাবে আর থাকা যায় না। ঠাকরুনের রাগ এতক্ষণে ঠিক পড়ে গেছে। গুটিগুটি সে বাড়ির দিকে চলল।
বাড়িতে কেউ নেই, শোবার ঘর রান্নাঘর খোলা। মাতঙ্গী ঠাকরুন ফেরেননি। এমন তো হয় না। ভাবনা হল। রাগের বশে অন্ধকারের মধ্যে তাড়া করেছিলেন—কোনও বিপদ আপদ ঘটল না তো? যে দিক দিয়ে তারা ছুটছিল, খুব সতর্কভাবে অন্ধিসন্ধি দেখতে দেখতে সে চলল। ভাঙাচোরা পরিত্যক্ত ইঁদারা—জলটল থাকে না কখনও, জঙ্গলে ঢেকে আছে—ক্ষীণ আওয়াজ আসে যেন সেখান থেকে। তবে কি ইঁদারায় পড়ে গেছেন ঠাকরুন?
ছুটে গেল নটবর, গিয়ে কান পাতল। হাঁ, পাতালতলে হুটোপুটি। ঠাকরুনের গলাও অস্পষ্ট যেন পাওয়া যায়। মাতঙ্গী ঠাকরুনই—সন্দেহমাত্র নেই। ছুটতে ছুটতে অন্ধকারে ঠাহর পাননি, ইঁদারায় পড়ে গেছেন। প্রাণের তাগিদে চেঁচামেচি লাগিয়েছেন।
মুহূর্তে নটবর মতলব ঠিক করে ফেলল—গেল চলে আবার ওই ঘোষেদের গোয়ালে। চারটে গোরুর গলার দড়ি খুলে একসঙ্গে মজবুত করে বাঁধল। এক প্রান্তে ইট বেঁধে নিল সহজে যাতে ইঁদারার তলায় দড়ির মাথা গিয়ে পড়ে। নামিয়ে দিল দড়ি। গর্তের দিকে মুখ করে চেঁচাচ্ছে: শক্ত করে দড়ি ধরুন—টেনে তুলব। ধরেছেনও তাই—আন্দাজ পাওয়া যাচ্ছে। টানছে নটবর প্রাণপণ শক্তিতে—উঃ, বিষম ভার। টানতে টানতে অবশেষে উঠে এল—মাতঙ্গী ঠাকরুন নন, কালোকালো দৈত্যাকার একজন। হাতে বাঁশের চেলা—মাতঙ্গী ঠাকরুনের হাতে যে বস্তু ছিল। দড়ি কড়কড় করছিল—ওই ওজন টেনে তুলতে কেন যে ছেঁড়েনি, তাই আশ্চর্য।
ফোঁত কোঁত করে কাঁদছে সেই প্রকাণ্ড পুরুষ। উপরে উঠে বাঁশের চেলা ছুড়ে দিল, চোখের জল মুছল। বলে, কে ভাই আমায় বাঁচালে? আমি তোমার কেনা হয়ে রইলাম।
নটবর বলে, কে আপনি? অত কাঁদছিলেন কেন?
পালোয়ান-দারোগার নাম শুনেছ নিশ্চয়—
নটবর বলে, আজ্ঞে হ্যাঁ, শুনেছি বই কী। সদর থানায় ছিলেন তিনি। ডনবৈঠক করে করে প্রকাণ্ড গতর বানিয়েছিলেন। পালোয়ান-দারোগার নামে চোর-ডাকাত থরহরি কাঁপত। শ্রাবণ মাসে হঠাৎ তিনি নিরুদ্দেশ হয়ে গেলেন।
আমিই সেই পালোয়ান-দারোগা, এখন পালোয়ান ভূত। নিরুদ্দেশ হইনি রে ভাই, স্রেফ পটল তুলেছি। ডাকাতেরা গুম করে রেখে শেষটা এই ইঁদারায় ফেলে দিল। বাতিল ইঁদারা দেখতে পাচ্ছ। ওঠা-নামার জন্য গাঁথনির গায়ে লোহা পোঁতা থাকে—মরচে ধরে সে-সব লোহার চিহ্নমাত্র নেই। উপরে উঠতে পারিনি, চাইওনি উঠতে। ইদারার মধ্যে তোফা ছিলাম এই আট মাস। উপরে এত গরম, ওখানে দিব্যি ঠান্ডা—এয়ার কণ্ডিসণ্ড। কিন্তু কাল রাত্তির থেকে সমস্ত সুখ বরবাদ। পালোয়ান বলে লোকে আমায় ডরায়—আরে সর্বনাশ! পালোয়ানের উপরেও চামুণ্ডা পালোয়ানি রয়েছে—
বলছে পালোয়ান-ভূত, আর শিউরে শিউরে উঠছে। বলে, বড্ড বাঁচান বাঁচিয়েছ। একটু জল খাওয়াতে পারো ভাই?
নটবর ডাকে: চলে এসো। মাতঙ্গী ঠাকরুনের বাড়ি গিয়ে জলের কলসি দেখিয়ে দিল। চকচক করে পুরো-কলসি জল গলায় ঢেলে ভূত একটু আরামের নিশ্বাস ফেলে বলে, আঃ!
বলছে, তোফা ছিলাম ভাই। আজকেই সন্ধ্যারাত্রে উপর থেকে ধপাস করে এক মেয়েলোক পড়ল। পড়েই অক্কা—সঙ্গে সঙ্গে পেত্নী। অবলা নারী জেনে সাহস দিতে কাছাকাছি গেছি। ভয় নেই, ইঁদারার তলায় খাসা থাকবে—এমনি সব বলতে না বলতে, হাতে ওই বাঁশের চেলা, চেলা বাঁশ নিয়েই উপর থেকে পড়েছে, মরে গিয়েও হাতের বাঁশ ছাড়েনি—আমার চুলের মুঠো না ধরে বাঁশের চেলায় দমাদম পিটুনি। বলে কেন খেয়েছিলি চন্দোরপুলি? খাইনি বলে দিব্যিদিশেলা করছি—কে বা শোনে কার কথা—পিটিয়েই যাচ্ছে। দুঁদে দারোগা ছিলাম আমি—ডাকাত-খুনি-দাঙ্গাবাজ নিয়ে কাজকারবার—কিন্তু এমন মারকুটে মেয়েলোক বাপের জন্মে দেখিনি ভাই।
নটবর বলে, আমার মনিব। তাঁরই এই ভিটে।
পালোয়ান-ভূত সবিস্ময়ে বলে, ওর কাছে ছিলে?
তিন বচ্ছর—
বাহাদুর তুমি। আমায় তো তিন ঘণ্টাতেই সর্ষেফুল দেখিয়ে দিল। না-পেরে একটানে তখন হাতের বাঁশ কেড়ে নিলাম। পেত্নী-মহিলার তারপরে যেন খুন চেপে গেল। হাতে আর পায়ে যে ওজনের কিল-চড় লাথি ঝাড়তে লাগল—রক্ষে কোনওমতেই ছিল না—ভাগ্যিস এই সময়ে তোমার দড়ি গিয়ে পড়ল। দড়ি ধরে বেঁচে এসেছি।
গদগদকষ্ঠে পালোয়ান-ভূত বলে, যা তুমি করেছ, তোমায় অদেয় কিছু নেই। মনিব বাড়ি এখানেই থাকো কয়েকটা দিন, আমি আবার আসব। অনেক টাকা পাইয়ে দেব তোমায়।
বলেই অদৃশ্য। কথা রেখেছে পালোয়ান-ভূত। কয়েকটা দিন পরে আবার দেখা দিল।
শোনো, মতলব ঠাউরেছি। পগেয়াপটির হরিরাম সাউ কালোবাজারের রাজা। যেসব ভাল ভাল জিনিস চক্ষেও দেখতে পাও না সাউর বাড়ি সমস্ত গোপন মজুত রয়েছে। রাস্তায় রাস্তায় ফেরি করে বেড়াত, এখন নোটের গদি বানিয়ে তার উপরে শোয়। হরিরামের বউয়ের ঘাড়ে আমি চাপব। বড়লোক মানুষ—চিকিচ্ছেয় মেলা খরচপত্র করবে। ভূতের রোজা হয়ে চলে যাও তুমি সেখানে। মোটা টাকার চুক্তি করে নিয়ে চিকিচ্ছেয় নেমো। দরজা বন্ধ করে পালোয়ানভাই বলে ডেকো, বুঝব এসে গেছ তুমি। মন্তোর হল—ক্রীং মীং ফ্বট। মন্তোর শুনলেই সরে পড়ব।
বলতে বলতে আবার কড়া সুরে সতর্ক করে দেয়: রোজাগিরি খাটিয়ো মাত্তোর এই একবার। বাইরে এসেছি, ভাল থাকা ভাল খাওয়া চাই এখন কিছুদিন। এর পরে আর আমার পিছনে লাগতে যেয়ো না। মুণ্ডু ছিঁড়ে নেব। তা হলে—খবরদার!
পগেয়াপটির হরিরাম সাউর বাড়ি তুমুল হইচই। বউয়ের ঘাড়ে ভূত লেগেছে। ওঝা-বদ্যি কত এল, টাকার বৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে, ভূত কিছুতে নামে না।
নটবর এসে বলল, ‘আমি নামিয়ে দেব। একশো খানি টাকা চাই—চিকিচ্ছে হয়ে গেলে তারপর টাকা দেবেন, এক পয়সাও অগ্রিম চাইনে।
হরিরাম এককথায় রাজি। ঘর থেকে সকলকে সরিয়ে নটবর দরজা বন্ধ করল। ঘরে শুধু রোজা আর রোগী—নটবর ও হরিরামের বউ।
নটবর বলে, এসে গেছি পালোয়ানভাই।
হরিরামের বউয়ের মুখ দিয়ে পালোয়ান-ভূত বলে, কতয় রফা হল?
একশো—
আরে ছ্যা ছ্যা, নজর বড্ড খাটো তোমার।
নটবরও বুঝছে সেটা এখন। বলে, তিন টাকা মাইনের চাকরি করে এসেছি—একশোর বেশি মুখ দিয়ে বেরুল না। বলে ফেলেছি, কী আর হবে! ক্রীং মীং ফ্বট—
হরিরামের বউ মুহূর্তে ভালমানুষ, কাপড় চোপড় সেরে সামলে লজ্জাশীলা হয়ে বসল। দরজা খুলে দিয়ে নটবর সকলকে ডাকল: চলে আসুন—
করকরে একশোখানা টাকা নিয়ে নটবর বাড়ি চলে গেল। বিষম স্ফুর্তি—এত টাকা একসঙ্গে কখনও দেখেনি। হপ্তাখানেক যেতে না যেতে হরিরামের ম্যানেজার খোঁজে খোঁজে এসে হাজির। বলে, রোজামশায়, পগেয়াপটি আর একবার যেতে হচ্ছে। সেই ভূত খেপে কর্তাবাবুকে ধরেছে।
সে কী?
বউঠাকরুনকে ধরেছিল—সে তবু মন্দের ভাল। ঘরের বউ মিন মিন করে কী বলল, বাইরের লোকে শুনতে যায় না। কর্তাবাবু হাটে হাঁড়ি ভাঙছেন— ভূতাবিষ্ট হয়ে কোথায় কী মাল সরানো আছে ফাঁস করে দিচ্ছেন। সবসুদ্ধ আমাদের জেলে যাবার গতিক। এক্ষুনি গিয়ে ভূত নামিয়ে আসুন। ডবল ফি, দু’শো টাকা এবারে। অগ্রিম দিয়ে দিচ্ছি—
ব্যাগ খুলে ম্যানেজার দুটো একশো টাকা নোট মেলে ধরল। লোভ ঠেকানো কঠিন বটে। কিন্তু ভয়ও আছে—মুণ্ডু ছিঁড়ে ফেলবে, পালোয়ান-ভূত শাসিয়ে রেখেছে।
ম্যানেজার নাছোড়বান্দা। খপ করে নটবরের হাত জড়িয়ে ধরল: যেতেই হবে রোজামশায়। আরও একশো টাকার মোটমাট তিনশো কবুল করছি।
ভাবছে নটবর। হাত ছেড়ে ম্যানেজার পা জড়িয়ে ধরতে যায়। যা থাকে কপালে—নটবর মন স্থির করে ফেলেছে। বলল, হাজারটি টাকা দেবেন— তবে বেরুব। দরাদরি করবেন তো পথ দেখুন। হাজারের অর্ধেক আগাম চাই—এক্ষুনি।
গুনে গুনে একশো টাকার পাঁচখানা নোট অগ্রিম নিয়ে নটবর ভূত নামাতে চলল। হরিরাম সাউর সামনাসামনি হতে চোখ পাকিয়ে দাত কিড়িমিড়ি করে উঠল সে:মানা করে দিয়েছি, তবু এসেছিস? মজা দেখাচ্ছি—ধড় থেকে মুণ্ডুটা খটাস করে ভেঙে ছুড়ে দেব, হাওড়া ইস্টিশানে গিয়ে পড়বে।
তর্জন গর্জন শুনে সবাই থরথর কাঁপছে। নটবর অবিচল, লোকজন সরিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল। গলা নামিয়ে অভিমানের সুরে বলল, রোজাগিরি করতে আসিনি পালোয়ান-ভাই। থাকো না চিরকাল বড়লোকের ঘাড়ে চেপে—সাঙাৎ তুমি, তোমার সুখেই আমার সুখ। ওদিকে সাংঘাতিক বিপদ—তোমায় শুধু খবরটা দিতে এসেছি।
কী?
মাতঙ্গী ঠাকরুন ইঁদারা থেকে উঠে পড়েছেন।
চোখ বড় বড় হল হরিরামের। মানে ভূতই ভয়ে বিস্ময়ে চোখ বড় করল বলো কী হে?
নটবর বলে, ঠাকরুনের অসাধ্য কাজ নেই। তিন বছর ছিলাম তো তার কাছে—দেখতাম আর চক্ষু ছানাবড়া হয়ে যেত। তুমি বেটাছেলে, তায় পালোয়ান হয়েও আট মাস ইদারার গর্ভে বন্দিদশায় রইলে, আর উনি নিরামিষভোজী বিধবা হওয়া সত্ত্বেও দেয়াল বেয়ে বেয়ে উপরে উঠে পড়েছেন। বাঘিনীর মতন গজরাতে গজরাতে তোমায় খুঁজে বেড়াচ্ছেন—হাত থেকে বাঁশের চেলা কেড়ে নিয়েছ, এত বড় আস্পর্ধা!
পালোয়ান-ভূত কাঁদো কাঁদো হয়ে বলে, কী করব, ঠেঙানি খেয়ে কুলোতে পারিনে যে।
ঠাকরুন সেই কথাই আমায় বলছিলেন—সেবারে তোর প্রাপ্য ঠেঙানি ভুল করে পালোয়ানের উপর ঝেড়েছিলাম, এবারে যা হবে ষোলোআনা তারই পাওনা। একবার পেলে হয়—আগাপাস্তলা ধোলাই দিয়ে হাড়গোড় চূর্ণবিচূর্ণ করব।
আঁতকে উঠে পালোয়ান-ভূত বলে, হদিস বলে দাওনি তো ভাই?
ঘাড় নেড়ে নটবর না না করে ওঠে খেপেছ? হলে হবে কী—ঠাকরুনের হাড়ে হাড়ে বুদ্ধি, আন্দাজে ধরেছেন। বললেন, পগেয়াপটিতেই পেয়ে যাব মনে হচ্ছে। হরিরামের বউকে ভূতে পেয়েছিল, পিঠ পিঠ আবার হরিরামকে। তোমার বেরুনোর পর থেকেই এই রকম কাণ্ডকারখানা—সেইজন্যে সন্দেহ এসেছে। বলছি তো—ডিটেকটিভের কান কেটে নেন আমাদের ঠাকরুন।
পালাই। উপায় কী?
পালোয়ান-ভূত ফোঁস করে প্রবল এক নিশ্বাস ছাড়ল: অট্টালিকা আর শাঁসালো মক্কেল পেয়ে ভেবেছিলাম, ভাল খেয়ে ভাল থেকে সুখ করে নেব দিন কতক। হল না, কপাল খারাপ। দেশই ছাড়ব—তোমার ঠাকরুন যখন খোজাখুঁজি লাগিয়েছে।
নটবর প্রশ্ন করে: যাবে কোথায়?
আপাতত দমদম এরোড্রামে। প্লেনের ছাতের উপর চেপে বসে পাহাড় সুমুদ্দুর পেরিয়ে যত দূর পারি চলে যাব। দেশে থাকলে গন্ধে গন্ধে ঠিক ধরে ফেলবে।
ভূত নেমে গিয়ে হরিরাম সম্পূর্ণ সুস্থ। ভূতের রোজা বলে নটবরের খুব নাম পড়ে গেল।
১৩৮০
অলংকরণ: সুবোধ দাশগুপ্ত
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন