পৌলোমী সেনগুপ্ত
“ঠিক পিলপিল করে যেন কালো সুড়সুড়ে পিঁপড়ের সার বেরিয়ে আসছে।
চোখটা এক বার, দু’ বার, তিন বার রগড়ালাম।
না, ভুল কিছু দেখিনি। আলোটা বেশ আবছা গোছের হলেও, যা দেখছি সেটা দৃষ্টিবিভ্রম ধরনের কিছু নয়।
সত্যিই ওদিকের টেবিলে রাখা মোটা সেকেলে বাঁধানো বইটাতে কাছের শেলফের ওই ধরনেরই একটা পুরনো বাঁধানো ঢাউস বই থেকে একসার কালচে পিঁপড়ের মতো কী যেন সুড়সুড় করে ঢুকছে।
কী ওগুলো? পিঁপড়ে? কীরকম পিঁপড়ে?
উইপোকা ছাড়া পিঁপড়ে কি পুরনো বইয়ের মধ্যে বাসা বাঁধে, না এক বই থেকে আরেক বইয়ে অমন পিলপিল করে গিয়ে ঢোকে?
হঠাৎ হাঁপানি রুগির খনখনে কাশির মতো একটা আওয়াজে চমকে উঠলাম।
হাঁপানি রুগির কাশি নয়, ডান দিকের দেয়ালে ঝোলানো মান্ধাতার আমলের দেয়াল-ঘড়িতে ঘণ্টা বাজার আওয়াজ। কমপক্ষে পঞ্চাশ বছরের জরায় আওয়াজটা অমন কেশো রোগীর মতো হয়েছে।
আওয়াজ যেমনই হোক, ঘড়িটা যে এখনও চলছে এইটেই আশ্চর্য! ও-ঘড়ির একটা বাজা মানে অবশ্য প্রায় পৌনে দুটো। দিনে পনেরো মিনিট করে পিছিয়ে পড়া এখন ওর দস্তুর। তিনদিন আগে আমি নিজেই যখন দম দিয়েছি, তখন হিসেব মতো পঁয়তাল্লিশ মিনিট পিছনে পড়েছে নিশ্চয়।
পৌনে দুটো।
মাথার ভেতর যেন একটা বিদ্যুতের চমক লাগল।
হ্যাঁ, এই তো সময়! সমানে তিন রাত্রি জাগার পর ঠিক রাত দেড়টা থেকে দুটোর মধ্যে যা দেখবার দেখতে পাব।
কিন্তু তা কি পেয়েছি?
দেখবার মধ্যে তো দেখেছি এক বই থেকে এক সার খুদে পিঁপড়ের আরেক বইয়ে গিয়ে ঢোকা।
এ ছাড়া আর কিছু তো দেখতে পাচ্ছি না।
এদিক ওদিক সবদিক তাকালাম। বেশি দূর তাকাবার তো নেই। প্রায় মান্ধাতার আমলের বাড়ির ছোট্ট একটা ঘর। ছাদের কড়িকাঠগুলো একটু লাফ দিয়ে হাত বাড়ালেই যেন ছোঁয়া যায়। নেহাত সেকেলে বর্মা টিকের বলে সে-কড়িকাঠ ভেঙে ছাদটা এখনও ধসে পড়েনি। দেয়ালগুলোর কিন্তু যেটুকু দেখা যায়, নোনা লেগে পালিশ-পলস্তরা ঝরে গিয়ে যেন পুরনো ইটের দাঁত বের করে আছে।
সে দেয়ালের কতটুকুই বা অবশ্য দেখা যায়। যেদিকে চাও, মেঝে থেকে ছাদ অবধি সব পুরনো বইয়ে ঠাসা কাঠের তাক আর আলমারি।
এই বইয়ের গাদা বাদে ঘরের মধ্যে একটি টেবিল, দুটি টিনের চেয়ার, যেটাতে হেলান দিয়ে বসে আছি সেই একটা সেকেলে আরামকেদারা, আর দক্ষিণ দিকের দেয়ালে তিন কাল গিয়ে এক কালে ঠেকা দেয়াল ঘড়িটা।
এ ছাড়া ঘরের ছাদ থেকে একটা বিজলি-বাতির ডুমও ঝোলানো আছে বটে, কিন্তু তার ধুলো-জমা কাচের খোলস পেরিয়ে যে মিটমিটে আলোটুকু আসে, তাতে ঘরটা আলো আঁধারির বেশি স্পষ্ট হয় না।
নিজের অজান্তে, একটু তন্দ্রার ঘোর কি এসেছিল? আর সেই ঘোরের মধ্যে ঘরের আলো-আঁধারিতে অর্ধ-স্বপ্নগোছের কিছু দেখলাম নাকি?
যাই হয়ে যাক, সরাসরি একবার পরীক্ষা না করলেই নয়।
কেদারা থেকে উঠে টেবিলের ধারের চেয়ারটায় বসে তার ওপরকার বইটা খুললাম।
অস্ফুট চিৎকারটা আর চাপতে পারলাম না তারপর!
সেই! সেই ছবি!
আর তার তলায় ছাপার অক্ষরে সেই এক লেখা…”
ওই পর্যন্ত পড়েই থামতে হল। তার পরে কী আছে তা জানতে হলে খেরোখাতাটার হলদে-হয়ে-আসা পিঁজতে শুরু করা পাতাটা সন্তর্পণে ওলটাতে হবে।
পাতা ওলটাতে সত্যিই ভয় করছে।
ভয়ংকর কী সেখানে লেখা থাকতে পারে শুধু সেইজন্যে ঠিক নয়, মোটেই কিছু পাব কি না সেই সংশয়ে আর উদ্বেগেও।
এ-খেরোখাতাকে কিছু মাত্র বিশ্বাস নেই। সত্যিই সেরকম কিছু হওয়া মোটেই অসম্ভব নয়।
এত ধুকপুকুনি নিয়ে পাতা উলটে হয়তো দেখব এতক্ষণ যা পড়ছিলাম, পরের পাতায় তা বেমালুম নিপাত্তা হয়ে গেছে।
মহাভারতের মতো বিরাট এলোমেলো এই খেরোখাতার যতটুকু পর্যন্ত এখনও হাঁটকাতে পেরেছি, তাতে এরকম হতাশ দু’-একবার হতে হয়নি এমন নয়।
হারিয়ে যাওয়া গল্পের খেই এ-খাতার গোলকধাঁধার মধ্যে আবার আচমকাও যে কখনও কখনও ফিরে পেয়ে গেছি, সে-কথাও অবশ্য স্বীকার করব।
পাতাটা ওলটাতে গিয়ে এই থমকে পড়ার মধ্যে এই খেরোখাতার ইতিহাসটাও একটু বোধহয় মনে করিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
হ্যাঁ, এই সেই খেরোখাতা, কলকাতার সবচেয়ে লম্বা দৌড়ের পঁয়তাল্লিশ নম্বর বাসের একটা খালি সিটে যেটা লাল শালুর পুঁটলি বাঁধা অবস্থায় পড়ে ছিল। বাসটা তখন ভি আই পি রোড ধরে এয়ারোড্রোমের দিকে যাচ্ছে। পুঁটলিটার কোনও দাবিদার পেয়ে টার্মিনালে পৌঁছবার পর কন্ডাক্টর সকলের সামনে সেটা খুলে দেখেছে। সোনাদানা গোছের দামি কিছু নয়, ছেঁড়া-খোঁড়া ময়লা বেরঙা কাগজের একটা হাতে-সেলাই পুরনো খেরোখাতা মাত্র পাওয়া গেছে তার ভেতর। একটু উলটে-পালটে কাগজগুলোয় জড়ানো সাবেকি ছাঁদের যে হাতের লেখা চোখে পড়েছে, তা যে দলিলপত্রের নয় তা বুঝতে দেরি হয়নি। ভাল করে নেড়ে চেড়ে ভেতরে নাম-ঠিকানা কিছু পেলে মালিকের কাছে পৌঁছে দেবার কড়ারে খাতাটা আমি চেয়ে নিয়েছিলাম তারপর।
যতটা ঘাঁটাঘাঁটি এ পর্যন্ত করতে পেরেছি, তাতে কোথাও পাঠাবার মতো নাম-ঠিকানা এখনও কিন্তু পাইনি। পেয়েছি শুধু মেজকর্তা বলে একটা নাম। তিনি যে কোথাকার কবেকার কে, কিছুই বলার উপায় নেই। এইটুকু শুধু জানা গেছে যে, বিষয় আশয় কিছু থাকার দরুন অবস্থাপন্ন হলেও সে-সব না-দেখে একটি নেশা নিয়েই তিনি দিন কাটাতেন। সে-নেশা হল ভূত-শিকার! সেই ভূত-শিকারের নেশায় তিনি চারিদিকে চর লাগিয়ে রাখতেন বলা যায়। কোথাও এতটুকু একটা খবর পেলেই তোড়জোড় করে ছুটতেন ভূতের খোঁজ নেবার জন্যে।
ঢাউস খেরোখাতাটা মেজকর্তার সেইসব ভূত-শিকারের বৃত্তান্তে ঠাসা। কিন্তু তাঁর সাবেকি ছাঁদের লেখা যেমন জড়ানো আর অস্পষ্ট, তাঁর বর্ণনা-টর্ননাও তেমনি এলোমেলো। তার ওপর খাতার অনেক পাতাই ছেঁড়া-খোঁড়া আর আলগা। কোথাকার লেখা যে কোথায় গিয়ে লুকিয়েছে, খুঁজে পাওয়াই দায়।
তবু পড়তে পড়তেই যেন একটা নেশা ধরে গেছে। এখন খেরোখাতার মধ্যে কোথাও সঠিক নাম-ঠিকানা খুঁজে পাওয়াটাই ভয়ের ব্যাপার! নাম-ঠিকানা পেলেও মনের জোর করে খাতাটা এখন ফেরত দিতে পারব কি না সন্দেহ। কারণ মেজকর্তার এই ছেঁড়াখোঁড়া খেরোখাতায় তাঁর জড়ানো অস্পষ্ট সেকেলে হাতের লেখার জঙ্গলে এমন সব অদ্ভুত সৃষ্টিছাড়া ভুতুড়ে গল্প ছড়িয়ে আছে, যা খুঁজে-পেতে উদ্ধার করাটাই এখন আমার ধ্যানজ্ঞান হয়েছে।
এবারের এই বৃত্তান্তটাই ধরা যাক। জলা জংলা কি অজ পাড়াগাঁর পোড়ো দালান কোঠা-টোটা নয়, এই কলকাতা শহরেরই একটি পুরনো বাড়ির বইয়ে ঠাসা একটা লাইব্রেরিঘর গোছের। সেই ঘরের অদ্ভুত-কিছু ব্যাপার শুনে সেখানে রাত জাগতে গেছেন মেজকর্তা। মেজকর্তা গলির নাম করেননি, কিন্তু গলি আর বাড়িটার যে বর্ণনা দিয়েছেন, তাতে সেটা উত্তর কলকাতার কোনও আদ্যিকালের ঘিঞ্জি, সিপাইযুদ্ধের আগেকার সব বসতির পাড়া বলেই মনে হয়।
সেই পাড়া, সেই গলি আর সেই বাড়ি বা লাইব্রেরি-ঘরের অস্তিত্ব এখন আর নেই নিশ্চয়। মেজকর্তা যখন সেখানে গেছেন, তখনই বাড়িটার জরাজীর্ণ অবস্থা। আর লাইব্রেরিঘরটা তো একটু জোরে নাড়া দিলেই যেন হুড়মুড় করে ধ্বসে পড়তে পারে।
তবু এমন একটা ঘরে রাত কাটাতে গেছলেন কেন মেজকর্তা? কীরকম ভূতের সন্ধানে?
মামুলি খোনাগলার কি চোখের পলকে বিদঘুটে চেহারায় দেখা-দেওয়া আর মিলিয়ে-যাওয়া ভূতটুত নয়, তাঁকে নাকি একেবারে উদ্ভুটে এক ভুতুড়ে কাণ্ডের খবর দিয়েছে তাঁর চর।
কী সে কান্ড, সে-র তা জানে না, বা বলতে পারেনি, কিন্তু পরপর তিন রাত্তির যে কেউ ওই বইঠাসা ঘরে কাটাতে না পেরে একেবারে উধাও হয়ে গিয়েছে, সে-কথাটা বলেছে জোর দিয়েই।
মেজকর্তা তাই গোঁ ধরে এই ঘরে রাতের আস্তানা করেছেন এ ক’দিন।
প্রথম দিন কেটেছে, তারপর দ্বিতীয় দিনও। আজ হলেই তিন রাত কাটবে।
কিন্তু কাটবে কী ভাবে!
মেজকর্তা আগের দু’ রাতের কথা কিছু লেখেননি, শুধু এই ভূতুড়ে লাইব্রেরিতে রাত জাগতে আসার ভূমিকাটুকু করে একেবারে তিন দিনের দিন রাত পৌনে দুটোয় ঘটনা দিয়েই শুরু করেছেন।
কিন্তু শুরু করে যতদূর এসেছেন, পরের পাতায় তার জের ঠিকমতো টেনেছেন কি?
কয়েক মুহূর্ত দ্বিধার মধ্যে কাটিয়ে বেপরোয়া হয়ে পাতাটা উলটেই ফেললাম এবার। সঙ্গে সঙ্গে আপনা থেকে বেরিয়ে-আসা অস্ফুট চিৎকারটুকুও চাপতে পারলাম না।
ওপিঠে মেজকর্তা আগের পাতার জের টানতে ভোলেননি। কিন্তু প্রথমে যা চোখে পড়ল, তা লেখা-টেখা নয়, একটা ছবি। মেজকর্তার হাত পাকা না হোক, ছবিটার আসল কাজ তাঁর আঁকায় হাসিল হয়েছে।
ছবিটা সামনের দিকে আঙুল-তুলে-দেখানো একটা হাতের কঙ্কালের। এমনভাবে আঁকা যে, আঙুলটা যেন যে পড়ছে তার দিকেই তোলা মনে হবে।
“হ্যাঁ, সেই ছবি!” এই বলে ছবিটার নীচে থেকে মেজকর্তার হাতের লেখা আবার শুরু হয়েছে, আর তার নীচে ছাপার অক্ষরের সেই শাসানি!
“যে-ই হও, এ ছবি দেখে এ-লেখা যখন পড়েছ, তখন তোমার আর নিষ্কৃতি নেই। আমি হলধর পাল। নিজের আসল সাধ মিটিয়ে আসতে পারিনি। কিন্তু তুমি, তুমি আমার আশ মেটাবে। না-মেটালে, যেখানেই পালাও না কেন, আমার এই হাত তোমার সঙ্গে সঙ্গে থাকবে। ভিড়ের মাঝে থাকবে, তোমার জামার তলায় পিঠের ওপর আঙুল বোলাবে, একলা ঘরে ঘুমের মধ্যে ঝুলবে তোমার চোখের সামনে। লিখতে বসলে তোমার হাতের সঙ্গে কলম চেপে ধরবে, আর আয়নার সামনের দাঁড়ালে দেখবে তার মধ্যে থেকে হাতছানি দিচ্ছে। যা বলছি, মন দিয়ে তাই শুনে নাও। উত্তর-পুব কোণের আলমারিটা খোলো। তার নীচের তাকে ছাপানো একটা বইয়ের বান্ডিল পাবে। বইয়ের নাম ‘বচনামৃত”। কবিতার বই। আমার লেখা। হরচন্দ্র রায়ের বাঙাল গেজেট বইটাকে গাল দিয়েছে। লিখেছে—‘পাল মশাই লাঙল চালাইলেই পারেন, তৎপরিবর্তে কলম চালাইবার নিমিত্ত অমৃত গরল হইয়াছে।’ এ-গালাগালের জবাব সমাচার দর্পণে বার করতে হবে। কালই বই নিয়ে গিয়ে দেখা করবে মার্শম্যান সাহেবের সঙ্গে। নইলে..”
শাসানিটা সব তুলে দিয়ে মেজকর্তা আবার সেই কঙ্কাল-হাতটা এঁকে তার তলা থেকে লিখেছেন—
“ওপরে নীচে কঙ্কাল-হাত-আঁকা এই শাসানি পড়ে ভয় যত পেলাম, তাজ্জব হলাম তার চেয়ে বেশি।
এ-ছবি আর এ-লেখা আমি আগেও এই পাঠাগারেই দেখেছি। একবার-দু’বার নয়। বেশ কয়েকবার। আগের দু’ রাত্রে নানা শেল্ফ থেকে যে ক’টা বইই টেনে বার করেছি, তা খুলে ধরতে প্রথমে এই ছবি-আঁকা এই লেখা-ছাপা পাতাটাই দেখা গেছে।
কিন্তু আজ রাত্রে টেবিলের ওপর পড়ে থাকা বইটায়, এ-লেখা আর ছবি আসে কী করে!
আজ রাত্রে এ-ঘরে ঢুকে শেল্ফের বইগুলো নাড়াচাড়া করতে করতে ওই বইটা পেয়েছিলাম। সেই একেবারে আদ্যিকালের বই, আঠারোশো বাইশে ছাপানো সংস্কৃত হাসির নাটকের অনুবাদ ‘হাস্যাৰ্ণব।’
বইটা ভাল করে উলটে-পালটে দেখে পরে পড়বার জন্যে টেবিলের ওপর রেখেছিলাম। বইটার কোথাও ও-ছবি বা শাসানির চিহ্নমাত্র ছিল না। তা হলে ও-লেখা ও-বইয়ের মধ্যে এল কী করে?
রাত পৌনে দুটোয় যে অদ্ভুত কাণ্ড দেখেছি তারই ভেতর কি এ-ব্যাপারের ব্যাখ্যা আছে? পিলপিল করে পিঁপড়ের সারের মতো শেল্ফের বইটা থেকে এ বইয়ের মধ্যে যা ঢুকতে দেখেছি, তা কি তা হলে এই লেখা আর ছবির ভুতুড়ে অক্ষর? হলধর পাল কি তাঁর ‘বচনামৃত’-এর নিন্দের শোধ নেবার জন্যে এমনি করে এখনও মানুষ খুঁজে বেড়াচ্ছেন?
কিন্তু আমি কী করতে পারি? ঘরের উত্তর-পূব কোণে কোনও আলমারি আর নেই। হলধর পালের ‘বচনামৃত’-এর কোনও কপিও কোথাও খুঁজে পাইনি৷ আর পেলেই বা করতাম কী? ‘বাঙাল গেজেটি’র নামই এখনও শুনি। আসল নাম ছিল ‘উইকলি বেঙ্গল গেজেট’। লোকে বলত ‘বাঙাল গেজেটি’। সেইটেই নামী প্রথম বাংলা সাপ্তাহিক। কিন্তু সে-কাগজের একটা নমুনাও কোথাও পাওয়া যায় না।
আর ‘সমাচার দর্পণ’ আঠারোশো আঠারো থেকে মরে-বেঁচে আঠারোশো একচল্লিশ পর্যন্ত কোনওরকমে টিকে থেকে একেবারে শিঙ্গে ফুঁকেছে। সে-কাগজ এখন পেতাম কোথায়?
না, এমন আজগুবি আবদার শুনতে এখানে থাকারই কোনও দরকার নেই।”
মেজকর্তার লেখা ওখানেই শেষ হয়েছে। তাঁর শেষ কথাগুলো পড়ে সন্দেহ হয় যে, তিনি সেই রাত্রেই বোধহয় ও-ঘর থেকে ভয়ে ভয়ে সরে পড়েছেন।
হলধর পালের কঙ্কাল-হাত কি তারপর তাঁর পিছু নিয়েছে? তাঁর খেরোখাতায় এখনও পর্যন্ত সেরকম কোনও হদিশ পাইনি।
১৩৮৩
অলংকরণ: শুভ্রাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন