গজকচ্ছপের লড়াই

সমর পাল

গজকচ্ছপের লড়াই

প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা দুই প্রবল পক্ষের মধ্যে দীর্ঘকালব্যাপী সংঘর্ষ অর্থে প্রবাদটি ব্যবহৃত হয়। ভাইয়ে ভাইয়ে যুদ্ধ-বিবাদ অথবা দুই মোটা মানুষের মধ্যে সংঘটিত লড়াইকেও গজকচ্ছপের লড়াই নামে অভিহিত করা হয়। বিষয়টিকে গজকচ্ছপীয় নামেও চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।

পুরাণকাহিনী অনুযায়ী অতীতকালে বিভাবসু নামে এক খ্যাপাটে ঋষি ছিলেন। তার রাগ ছিল সাংঘাতিক। তার ছোট ভাই সুপ্রতীক ধনসম্পদ বাঁটোয়ারা করার জন্য তাকে অনুরোধ করায় বিভাবসু বিরক্ত হন। একসময় ক্ষিপ্ত হয়ে ছোট ভাইকে অভিশাপ দেন— ‘তুমি গজ (হাতি) হও।’ সুপ্রতীকও ছাড়ার পাত্র নন। তিনিও বড় ভাইয়ের উপর বিরক্ত হয়ে বললেন— ‘তুমি কচ্ছপ হও।’

তারপর বড় ভাই কচ্ছপ আর ছোট ভাই হাতি হয়ে গেলেন পরস্পরের অভিশাপে। কিন্তু তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব থামলো না। সুযোগ পেলেই একজন আরেক জনকে আক্রমণ করতে ছাড়ে না। এভাবে বহু যুগ ধরে এক সরোবরে এই দুই ভাই পরস্পর সংঘর্ষে লিপ্ত থাকে।

দক্ষরাজের কন্যা কদ্রু ও বিনতা ছিলেন কশ্যপমুনির স্ত্রী। দুই বোন হলেন পরস্পর সতিন। কদ্রু হলেন নাগজননী অর্থাৎ তার সহস্র নাগ সন্তান। আর বিনতা হলেন অরুণ ও বিষ্ণুর বাহন পক্ষিরাজ গরুড়। কদ্রু তার বোন বিনতাকে দাসী করে রেখেছিলেন। সে জন্য সাপদের শত্রু ছিলেন গরুড়। সাপদের শর্ত ছিল যে, গরুড় যদি স্বর্গ হতে অমৃতভাণ্ড এনে তাদের দিতে পারেন তখনই তার মা দাসত্ব থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

সমুদ্র-মন্থনে প্রাপ্ত অমৃতভাণ্ড দেবতারা স্বর্গে নিয়ে গেছেন। যে কোনো উপায়ে তা আনতে হবে মায়ের দাসত্বমোচনের জন্য। গরুড় রওনা হলেন স্বর্গের উদ্দেশে। যাত্রাপথে তিনি খুব ক্ষুধার্ত হয়ে পড়লেন। পিতা কশ্যপের কাছে খাবার চাইলেন। তখন কশ্যপ দূরের জলাশয়ে যুদ্ধরত বিভাবসু ও সুপ্রতীককে দেখিয়ে গরুড়কে ভোজনপর্ব সারতে বললেন। বাবার আদেশে গরুড় গজকচ্ছপকে দু’নখে ধরে নিলেন এবং নানা ঘটনার পর এক পাহাড়- চূড়ায় নিয়ে খেয়ে ফেললেন।

সকল অধ্যায়

১. অকাল কুষ্মাণ্ড
২. অগস্ত্যযাত্রা
৩. অজার যুদ্ধে আঁটুনি সার
৪. অতি দর্পে হত লঙ্কা
৫. অতি দানে বলির পাতালে হলো ঠাঁই
৬. অতি মন্থনে বিষ ওঠে
৭. অতি লোভে তাঁতি নষ্ট
৮. অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট
৯. অন্ধের হাতি দেখা
১০. অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী
১১. অশ্বত্থামা হত ইতি গজ
১২. আগ নাংলা যে দিকে যায় পাছ নাংলা সে দিকে যায়
১৩. আষাঢ়ে গল্প
১৪. আসলে মুষল নাই ঢেঁকিঘরে চাঁদোয়া
১৫. ইল্লত যায় না ধুলে খাসলত যায় না মলে
১৬. ওঝার ব্যাটা বনগরু
১৭. কংসমামা
১৮. কাকতালীয় ব্যাপার
১৯. কালনেমির লঙ্কাভাগ
২০. কুম্ভকর্ণের ঘুম
২১. কুরুক্ষেত্র কাণ্ড
২২. কড়ায় গণ্ডায়
২৩. খর দজ্জাল
২৪. খাঞ্জা খাঁ
২৫. খয়ের খাঁ
২৬. গজকচ্ছপের লড়াই
২৭. গজকপিত্থবৎ
২৮. গদাই লশকরি চাল
২৯. গন্ধমাদন বয়ে আনা
৩০. গোঁফ খেজুরে
৩১. গোকুলের ষাঁড়
৩২. গৌরচন্দ্রিকা
৩৩. ঘরভেদী বিভীষণ
৩৪. ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে
৩৫. ঘুঁটো জগন্নাথ
৩৬. চিত্রগুপ্তের খাতা
৩৭. চেনা বামুনের পৈতা লাগে না
৩৮. চোরে চোরে মাসতুতো ভাই
৩৯. ছকড়া নকড়া
৪০. জগা খিচুড়ি
৪১. জড়ভরত
৪২. ঢাক পেটানো
৪৩. ঢাকের বাঁয়া
৪৪. ঢাল নাই তলোয়ার নাই নিধিরাম সর্দার
৪৫. ত্রিশঙ্কু অবস্থা
৪৬. দক্ষযজ্ঞ ব্যাপার
৪৭. দশচক্রে ভগবান ভূত
৪৮. দেবতার বেলা লীলাখেলা পাপ লিখেছে মানুষের বেলা
৪৯. দৈত্যকুলে প্ৰহ্লাদ
৫০. ধনুর্ভঙ্গ পণ
৫১. ধন্বন্তরি
৫২. ধর লক্ষ্মণ
৫৩. ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির
৫৪. ধর্মের ষাঁড়
৫৫. ধান ভানতে শিবের গীত
৫৬. ধুন্ধুমার কাণ্ড
৫৭. নরাণাং মাতুলক্রমঃ
৫৮. পরশুরামের কুঠার
৫৯. পরের ধনে পোদ্দারি
৬০. পাততাড়ি গুটানো
৬১. পান্তা ভাতে ঘি নষ্ট বাপের বাড়ি ঝি নষ্ট
৬২. পিপুফিশু
৬৩. পোয়া বারো
৬৪. ফতো নবাব
৬৫. ফপর দালালি
৬৬. ফেউ লাগা
৬৭. বাজখাঁই আওয়াজ
৬৮. বিদুরের খুদ
৬৯. বিন্দেদূতী
৭০. ভবতি বিজ্ঞতমঃ ক্রমশো জনঃ
৭১. ভস্মে ঘি ঢালা
৭২. ভাগের মা গঙ্গা পায় না
৭৩. ভানুমতির খেল
৭৪. ভিজা বিড়াল
৭৫. ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা
৭৬. ভুশুণ্ডি কাক
৭৭. ভেড়াকান্ত
৭৮. ভেড়ার পাল
৭৯. মগের মুলুক
৮০. মরার সময় মকরধ্বজ
৮১. মাছি মারা কেরানি
৮২. মাছের মায়ের পুত্রশোক
৮৩. মান্ধাতার আমল
৮৪. মারের ওপর ওষুধ নাই
৮৫. মাৎস্যন্যায় অবস্থা
৮৬. যক্ষের ধন বা কুবেরের ধন
৮৭. যণ্ডামার্ক বা যণ্ডামার্কা
৮৮. যত দোষ নন্দ ঘোষ
৮৯. যে দামে কেনা সেই দামে বিক্রি
৯০. রথ দেখা ও কলাবেচা
৯১. রাবণের চিতা
৯২. লঙ্কাকাণ্ড
৯৩. লাগে টাকা দেবে গৌরীসেন
৯৪. লেফাফাদুরস্ত
৯৫. শকুনিমামা
৯৬. শনির দশা
৯৭. শাঁখের করাত
৯৮. শাপে বর
৯৯. শিখণ্ডী খাড়া করা
১০০. শিবরাত্রির সলতে
১০১. শুভঙ্করের ফাঁকি
১০২. শ্যাম রাখি কি কুল রাখি
১০৩. ষাঁড়ের গোবর
১০৪. সরফরাজি চাল
১০৫. সস্তার তিন অবস্থা
১০৬. সাক্ষীগোপাল
১০৭. সাত নকলে আসল খাস্তা
১০৮. হবুচন্দ্র রাজার গবুচন্দ্র মন্ত্রী
১০৯. হরি ঘোষের গোয়াল
১১০. হরিহর আত্মা

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন