নরাণাং মাতুলক্রমঃ

সমর পাল

অর্থ হলো, মানুষ মাতুল বা আমার অনুসরণকারী। বলা হয়, যেমন মামা তেমন ভাগ্নে। মামার গুণ পায় ভাগ্নে। এ প্রবাদের উৎস অনুসন্ধানে প্ৰবৃত্ত হলে নিম্নোক্ত কাহিনী পাওয়া যায়।

মদ্রদেশের বুত্নীক- বংশীয় রাজা শল্যের বোন মাদ্রী হলেন পাণ্ডুর দ্বিতীয় স্ত্রী; মাদ্রীর গর্ভজাত সন্তান হলেন নকুল ও সহদেব। সুতরাং শল্য নকুল ও সহদেবের মামা। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে প্রথমে পাণ্ডবপক্ষে যোগদান করার ইচ্ছে থাকলেও শল্য দুর্যোধনের কাছে বিশেষ মর্যাদা ও সাদর আমন্ত্রণ পাওয়ায় কৌরবপক্ষে যোগদান করেন এবং মহাবীর কর্ণের সারথি হন। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের শেষ দিন অর্থাৎ অষ্টাদশ দিনে শল্য কৌরবদের সেনাপতি হিসেবে যুদ্ধ করেন এবং অবশেষে যুধিষ্ঠিরের শক্তি অস্ত্রের আঘাতে নিহত হন।

যুদ্ধের ষোড়শ দিনে দ্রোণের পর কৌরবপক্ষে সেনাপতিত্ব করেন কর্ণ অর্জুন ব্যতীত সকল পাণ্ডবই কর্ণ কর্তৃক তখন পরাজিত। এই যুদ্ধে মদ্ররাজ শল্য কর্ণের সারথি হন এবং কলহ করে তার মনোবল ক্ষুণ্ণ করতে চেষ্টা করেন। কারণ একজন সেনানায়ক হয়ে কর্ণের সারথি হতে মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন না শল্য।

কলহ চলাকালে কর্ণ শল্যকে ব্যঙ্গ করে বলেছিলেন যে, পাণ্ডবেরা অজ্ঞাতবাসে রাজা বিরাটের ভবনে থাকার সময় অন্যের সেবা করলেও তাদের মধ্যে যুধিষ্ঠির, ভীম ও অর্জুনের কাজ ছিল উন্নত শ্রেণীর। কিন্তু শল্যরাজের ভাগ্নে নকুল ছিলেন গোরক্ষক আর সহদেব অশ্বপালক। শল্য তাদের মামা। তিনি কর্ণের রথের সারথি মাত্র। সুতরাং তার ভাগ্নেরাও তার মতো কাজই করেছে। মামার গুণ ভাগ্নেরাও পেয়েছে। যার যা কাজ তাকেই তা মানায়।

গোরক্ষী সহদেবশ্চ নকুলো হয়রক্ষকঃ।
বৈরাটে কুরুদায়াদৌ নরাণাং মাতুলক্রমঃ ॥

সকল অধ্যায়

১. অকাল কুষ্মাণ্ড
২. অগস্ত্যযাত্রা
৩. অজার যুদ্ধে আঁটুনি সার
৪. অতি দর্পে হত লঙ্কা
৫. অতি দানে বলির পাতালে হলো ঠাঁই
৬. অতি মন্থনে বিষ ওঠে
৭. অতি লোভে তাঁতি নষ্ট
৮. অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট
৯. অন্ধের হাতি দেখা
১০. অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী
১১. অশ্বত্থামা হত ইতি গজ
১২. আগ নাংলা যে দিকে যায় পাছ নাংলা সে দিকে যায়
১৩. আষাঢ়ে গল্প
১৪. আসলে মুষল নাই ঢেঁকিঘরে চাঁদোয়া
১৫. ইল্লত যায় না ধুলে খাসলত যায় না মলে
১৬. ওঝার ব্যাটা বনগরু
১৭. কংসমামা
১৮. কাকতালীয় ব্যাপার
১৯. কালনেমির লঙ্কাভাগ
২০. কুম্ভকর্ণের ঘুম
২১. কুরুক্ষেত্র কাণ্ড
২২. কড়ায় গণ্ডায়
২৩. খর দজ্জাল
২৪. খাঞ্জা খাঁ
২৫. খয়ের খাঁ
২৬. গজকচ্ছপের লড়াই
২৭. গজকপিত্থবৎ
২৮. গদাই লশকরি চাল
২৯. গন্ধমাদন বয়ে আনা
৩০. গোঁফ খেজুরে
৩১. গোকুলের ষাঁড়
৩২. গৌরচন্দ্রিকা
৩৩. ঘরভেদী বিভীষণ
৩৪. ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে
৩৫. ঘুঁটো জগন্নাথ
৩৬. চিত্রগুপ্তের খাতা
৩৭. চেনা বামুনের পৈতা লাগে না
৩৮. চোরে চোরে মাসতুতো ভাই
৩৯. ছকড়া নকড়া
৪০. জগা খিচুড়ি
৪১. জড়ভরত
৪২. ঢাক পেটানো
৪৩. ঢাকের বাঁয়া
৪৪. ঢাল নাই তলোয়ার নাই নিধিরাম সর্দার
৪৫. ত্রিশঙ্কু অবস্থা
৪৬. দক্ষযজ্ঞ ব্যাপার
৪৭. দশচক্রে ভগবান ভূত
৪৮. দেবতার বেলা লীলাখেলা পাপ লিখেছে মানুষের বেলা
৪৯. দৈত্যকুলে প্ৰহ্লাদ
৫০. ধনুর্ভঙ্গ পণ
৫১. ধন্বন্তরি
৫২. ধর লক্ষ্মণ
৫৩. ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির
৫৪. ধর্মের ষাঁড়
৫৫. ধান ভানতে শিবের গীত
৫৬. ধুন্ধুমার কাণ্ড
৫৭. নরাণাং মাতুলক্রমঃ
৫৮. পরশুরামের কুঠার
৫৯. পরের ধনে পোদ্দারি
৬০. পাততাড়ি গুটানো
৬১. পান্তা ভাতে ঘি নষ্ট বাপের বাড়ি ঝি নষ্ট
৬২. পিপুফিশু
৬৩. পোয়া বারো
৬৪. ফতো নবাব
৬৫. ফপর দালালি
৬৬. ফেউ লাগা
৬৭. বাজখাঁই আওয়াজ
৬৮. বিদুরের খুদ
৬৯. বিন্দেদূতী
৭০. ভবতি বিজ্ঞতমঃ ক্রমশো জনঃ
৭১. ভস্মে ঘি ঢালা
৭২. ভাগের মা গঙ্গা পায় না
৭৩. ভানুমতির খেল
৭৪. ভিজা বিড়াল
৭৫. ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা
৭৬. ভুশুণ্ডি কাক
৭৭. ভেড়াকান্ত
৭৮. ভেড়ার পাল
৭৯. মগের মুলুক
৮০. মরার সময় মকরধ্বজ
৮১. মাছি মারা কেরানি
৮২. মাছের মায়ের পুত্রশোক
৮৩. মান্ধাতার আমল
৮৪. মারের ওপর ওষুধ নাই
৮৫. মাৎস্যন্যায় অবস্থা
৮৬. যক্ষের ধন বা কুবেরের ধন
৮৭. যণ্ডামার্ক বা যণ্ডামার্কা
৮৮. যত দোষ নন্দ ঘোষ
৮৯. যে দামে কেনা সেই দামে বিক্রি
৯০. রথ দেখা ও কলাবেচা
৯১. রাবণের চিতা
৯২. লঙ্কাকাণ্ড
৯৩. লাগে টাকা দেবে গৌরীসেন
৯৪. লেফাফাদুরস্ত
৯৫. শকুনিমামা
৯৬. শনির দশা
৯৭. শাঁখের করাত
৯৮. শাপে বর
৯৯. শিখণ্ডী খাড়া করা
১০০. শিবরাত্রির সলতে
১০১. শুভঙ্করের ফাঁকি
১০২. শ্যাম রাখি কি কুল রাখি
১০৩. ষাঁড়ের গোবর
১০৪. সরফরাজি চাল
১০৫. সস্তার তিন অবস্থা
১০৬. সাক্ষীগোপাল
১০৭. সাত নকলে আসল খাস্তা
১০৮. হবুচন্দ্র রাজার গবুচন্দ্র মন্ত্রী
১০৯. হরি ঘোষের গোয়াল
১১০. হরিহর আত্মা

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন