ষাঁড়ের গোবর

সমর পাল

ষাঁড়ের গোবর

সাধারণত গরুর গোবর আঙ্গিনা পরিষ্কার করা, মাটির ঘরদোর লেপা, ঘুঁটে বানানো বা জ্বালানির কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ষাঁড়ের গোবর প্রবাদের অর্থ হচ্ছে অকেজো বা অকর্মণ্য মানুষ। ষাঁড়ের গোবর সত্যিই কোনো কাজে লাগে না তা কিন্তু নয়। বিষয়টি ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন। আমাদের জানামতে গরুর (গাভীই হোক আর ষাঁড় অথবা বলদই হোক) গোবর মাত্রই নানা কাজে ব্যবহৃত হয়। তাহলে কোন্ ষাঁড়ের গোবর কাজে লাগে না?

আমরা জানি যে, হিন্দুদের মৃত্যু হলে নির্দিষ্ট নিয়মে শ্রাদ্ধ করা হয় মৃত ব্যক্তির আত্মার শান্তির জন্য। শ্রাদ্ধের আবার নানা প্রকারভেদ হয় দান বা উৎসর্গের প্রকারান্তরে শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান মৃতের শান্তিকামনায় শ্রাদ্ধ পরিচালনাকারী ব্রাহ্মণে উদ্দেশে দান করা) পরিমাণ অনুযায়ী। এর মধ্যে এক রকম শ্রাদ্ধ হচ্ছে বৃষোৎসর্গ বা ষাঁড় উৎসর্গ করা শ্রাদ্ধ। শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে, মৃত ব্যক্তির উদ্দেশে বৃষোৎসর্গ করলে তার প্রেতরূপী আত্মা মুক্তিপ্রাপ্ত হয়। পতিপুত্রবতী মৃত নারীর উদ্দেশে আবার বৃষোৎসর্গ করা যায় না। শ্রাদ্ধে উৎসর্গীকৃত ষাঁড় কাউকে না দান করে ছেড়ে দিতে হয়। আজকাল অবশ্য এ ধরনের উৎসর্গ বাস্তবরূপে দেখা যায় না।

বৃষোৎসর্গ শ্রাদ্ধে শ্রাদ্ধকর্তা চারটি বকনা বাছুরসহ ষাঁড় উৎসর্গ করে ছেড়ে দেয়। এই উৎসর্গ করা ষাঁড়ের গোবর স্থানীয় লোকেরা কোনো মাঙ্গলিক কাজ, ঘরদোর লেপা কিংবা জ্বালানির কাজে ব্যবহার করে না। সে কারণে এ ধরনের ষাঁড়ের গোবর মূল্যহীন বা অকেজো হিসেবে বিবেচিত হয়। আবার অন্যান্য ষাঁড়ের গোবরও ধর্মীয় বা মাঙ্গলিক কাজে ব্যবহৃত হয় না। সেজন্য আমাদের দেশে অকর্মণ্য বা অকেজো, অথর্ব লোককে ষাঁড়ের গোবর নামে চিহ্নিত করা হয় ব্যঙ্গ করে।

সকল অধ্যায়

১. অকাল কুষ্মাণ্ড
২. অগস্ত্যযাত্রা
৩. অজার যুদ্ধে আঁটুনি সার
৪. অতি দর্পে হত লঙ্কা
৫. অতি দানে বলির পাতালে হলো ঠাঁই
৬. অতি মন্থনে বিষ ওঠে
৭. অতি লোভে তাঁতি নষ্ট
৮. অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট
৯. অন্ধের হাতি দেখা
১০. অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী
১১. অশ্বত্থামা হত ইতি গজ
১২. আগ নাংলা যে দিকে যায় পাছ নাংলা সে দিকে যায়
১৩. আষাঢ়ে গল্প
১৪. আসলে মুষল নাই ঢেঁকিঘরে চাঁদোয়া
১৫. ইল্লত যায় না ধুলে খাসলত যায় না মলে
১৬. ওঝার ব্যাটা বনগরু
১৭. কংসমামা
১৮. কাকতালীয় ব্যাপার
১৯. কালনেমির লঙ্কাভাগ
২০. কুম্ভকর্ণের ঘুম
২১. কুরুক্ষেত্র কাণ্ড
২২. কড়ায় গণ্ডায়
২৩. খর দজ্জাল
২৪. খাঞ্জা খাঁ
২৫. খয়ের খাঁ
২৬. গজকচ্ছপের লড়াই
২৭. গজকপিত্থবৎ
২৮. গদাই লশকরি চাল
২৯. গন্ধমাদন বয়ে আনা
৩০. গোঁফ খেজুরে
৩১. গোকুলের ষাঁড়
৩২. গৌরচন্দ্রিকা
৩৩. ঘরভেদী বিভীষণ
৩৪. ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে
৩৫. ঘুঁটো জগন্নাথ
৩৬. চিত্রগুপ্তের খাতা
৩৭. চেনা বামুনের পৈতা লাগে না
৩৮. চোরে চোরে মাসতুতো ভাই
৩৯. ছকড়া নকড়া
৪০. জগা খিচুড়ি
৪১. জড়ভরত
৪২. ঢাক পেটানো
৪৩. ঢাকের বাঁয়া
৪৪. ঢাল নাই তলোয়ার নাই নিধিরাম সর্দার
৪৫. ত্রিশঙ্কু অবস্থা
৪৬. দক্ষযজ্ঞ ব্যাপার
৪৭. দশচক্রে ভগবান ভূত
৪৮. দেবতার বেলা লীলাখেলা পাপ লিখেছে মানুষের বেলা
৪৯. দৈত্যকুলে প্ৰহ্লাদ
৫০. ধনুর্ভঙ্গ পণ
৫১. ধন্বন্তরি
৫২. ধর লক্ষ্মণ
৫৩. ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির
৫৪. ধর্মের ষাঁড়
৫৫. ধান ভানতে শিবের গীত
৫৬. ধুন্ধুমার কাণ্ড
৫৭. নরাণাং মাতুলক্রমঃ
৫৮. পরশুরামের কুঠার
৫৯. পরের ধনে পোদ্দারি
৬০. পাততাড়ি গুটানো
৬১. পান্তা ভাতে ঘি নষ্ট বাপের বাড়ি ঝি নষ্ট
৬২. পিপুফিশু
৬৩. পোয়া বারো
৬৪. ফতো নবাব
৬৫. ফপর দালালি
৬৬. ফেউ লাগা
৬৭. বাজখাঁই আওয়াজ
৬৮. বিদুরের খুদ
৬৯. বিন্দেদূতী
৭০. ভবতি বিজ্ঞতমঃ ক্রমশো জনঃ
৭১. ভস্মে ঘি ঢালা
৭২. ভাগের মা গঙ্গা পায় না
৭৩. ভানুমতির খেল
৭৪. ভিজা বিড়াল
৭৫. ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা
৭৬. ভুশুণ্ডি কাক
৭৭. ভেড়াকান্ত
৭৮. ভেড়ার পাল
৭৯. মগের মুলুক
৮০. মরার সময় মকরধ্বজ
৮১. মাছি মারা কেরানি
৮২. মাছের মায়ের পুত্রশোক
৮৩. মান্ধাতার আমল
৮৪. মারের ওপর ওষুধ নাই
৮৫. মাৎস্যন্যায় অবস্থা
৮৬. যক্ষের ধন বা কুবেরের ধন
৮৭. যণ্ডামার্ক বা যণ্ডামার্কা
৮৮. যত দোষ নন্দ ঘোষ
৮৯. যে দামে কেনা সেই দামে বিক্রি
৯০. রথ দেখা ও কলাবেচা
৯১. রাবণের চিতা
৯২. লঙ্কাকাণ্ড
৯৩. লাগে টাকা দেবে গৌরীসেন
৯৪. লেফাফাদুরস্ত
৯৫. শকুনিমামা
৯৬. শনির দশা
৯৭. শাঁখের করাত
৯৮. শাপে বর
৯৯. শিখণ্ডী খাড়া করা
১০০. শিবরাত্রির সলতে
১০১. শুভঙ্করের ফাঁকি
১০২. শ্যাম রাখি কি কুল রাখি
১০৩. ষাঁড়ের গোবর
১০৪. সরফরাজি চাল
১০৫. সস্তার তিন অবস্থা
১০৬. সাক্ষীগোপাল
১০৭. সাত নকলে আসল খাস্তা
১০৮. হবুচন্দ্র রাজার গবুচন্দ্র মন্ত্রী
১০৯. হরি ঘোষের গোয়াল
১১০. হরিহর আত্মা

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন