পরশুরামের কুঠার

সমর পাল

পরশুরামের কুঠার হলো সর্বসংহারক অস্ত্র। এই অস্ত্র দিয়ে নিষ্ঠুরভাবে একুশবার ক্ষত্রিয়কুল ধ্বংস করে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়েছিলেন পরশুরাম।

পরশু শব্দের অর্থ কুঠার বা কুড়াল। পরশুরাম হলেন বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার কুঠারধারী রাম। পৌরাণিক উপাখ্যান হলো—

মগধদেশে ভাগরথী নদীর উপনদী কৌশিকীর তীরে ভোজকট নামে এক নগর ছিল। সেখানকার রাজা ছিলেন গাধি। এই গাধির পুত্র বিশ্বামিত্র এবং কন্যা সত্যবতী। মহর্ষি ঋচিকের সাথে সত্যবতীর বিয়ে হয়। মহর্ষি ভৃগুর পুত্র এই ঋচিক। তার পুত্র ঋষি জমদগ্নি। বিদর্ভরাজ প্রসেনজিতের মেয়ে রেণুকার সাথে জমদগ্নির বিয়ে হয়। রেণুকার পাঁচপুত্র যথাক্রমে রুষশ্বান, সুসেন, বসু, বিশ্বাবসু ও রাম (পরশুরাম)।

একদিন নদীর ঘাটে একাকী স্নান করতে গিয়ে রেণুকা দেখলেন, রাজা চিত্ররথ সস্ত্রীক অপ্সরাদের সাথে মিলে জলবিহার করছেন। এতে তিনি কামাতুর হয়ে পড়েন। পুত্ররা গেছেন বনে ফলমূল সংগ্রহ করতে, জমদগ্নিও বাইরে। জমদগ্নি বাড়ি ফিরে স্ত্রীর কামাতুর হওয়ার ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলেন। পুত্রদের বললেন মাতৃবধ করতে। প্রথম চার পুত্র রাজি না হওয়ায় কনিষ্ঠ রামকে তিনি আদেশ করলেন। রাম পিতৃআজ্ঞা শিরোধার্য করে পরশু বা কুঠার দিয়ে মায়ের শির েদ করেন। খুশি হয়ে জমদগ্নি পুত্রকে বর দিতে চাইলে তিনি মায়ের পুনর্জীবন কামনা করলেন। রেণুকা জীবিত হলেন। কিন্তু মাতৃহত্যার মহাপাপে বহুকাল রামের হাতে আটকে থাকলো পরশু। এজন্য এই রামের নাম হলো পরশুরাম অর্থাৎ কুঠারধারী রাম।

ক্ষত্রিয়রাজ কার্তবীর্য অন্যায়ভাবে পরশুরামের পিতা জমদগ্নিকে হত্যা করেছিলেন। পরশুরাম এ কারণে পৃথিবীকে ক্ষত্রিয়শূন্য করার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। তার কঠোর কুঠার দিয়ে তিনি একুশবার পৃথিবী থেকে ক্ষত্রিয়দের বিনাশ করেন। সমন্তপঞ্চক (কুরুক্ষেত্র) নামক স্থানে ক্ষত্রিয়দের রক্তে পাঁচটি হ্রদ সৃষ্টি করে সেই রক্তে পিতৃতর্পণ করেছিলেন তিনি নৃশংসভাবে প্রতিশোধ গ্রহণের অস্ত্রকে পরশুরামের কুঠারের সাথে তুলনা করা হয়।

সকল অধ্যায়

১. অকাল কুষ্মাণ্ড
২. অগস্ত্যযাত্রা
৩. অজার যুদ্ধে আঁটুনি সার
৪. অতি দর্পে হত লঙ্কা
৫. অতি দানে বলির পাতালে হলো ঠাঁই
৬. অতি মন্থনে বিষ ওঠে
৭. অতি লোভে তাঁতি নষ্ট
৮. অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট
৯. অন্ধের হাতি দেখা
১০. অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী
১১. অশ্বত্থামা হত ইতি গজ
১২. আগ নাংলা যে দিকে যায় পাছ নাংলা সে দিকে যায়
১৩. আষাঢ়ে গল্প
১৪. আসলে মুষল নাই ঢেঁকিঘরে চাঁদোয়া
১৫. ইল্লত যায় না ধুলে খাসলত যায় না মলে
১৬. ওঝার ব্যাটা বনগরু
১৭. কংসমামা
১৮. কাকতালীয় ব্যাপার
১৯. কালনেমির লঙ্কাভাগ
২০. কুম্ভকর্ণের ঘুম
২১. কুরুক্ষেত্র কাণ্ড
২২. কড়ায় গণ্ডায়
২৩. খর দজ্জাল
২৪. খাঞ্জা খাঁ
২৫. খয়ের খাঁ
২৬. গজকচ্ছপের লড়াই
২৭. গজকপিত্থবৎ
২৮. গদাই লশকরি চাল
২৯. গন্ধমাদন বয়ে আনা
৩০. গোঁফ খেজুরে
৩১. গোকুলের ষাঁড়
৩২. গৌরচন্দ্রিকা
৩৩. ঘরভেদী বিভীষণ
৩৪. ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে
৩৫. ঘুঁটো জগন্নাথ
৩৬. চিত্রগুপ্তের খাতা
৩৭. চেনা বামুনের পৈতা লাগে না
৩৮. চোরে চোরে মাসতুতো ভাই
৩৯. ছকড়া নকড়া
৪০. জগা খিচুড়ি
৪১. জড়ভরত
৪২. ঢাক পেটানো
৪৩. ঢাকের বাঁয়া
৪৪. ঢাল নাই তলোয়ার নাই নিধিরাম সর্দার
৪৫. ত্রিশঙ্কু অবস্থা
৪৬. দক্ষযজ্ঞ ব্যাপার
৪৭. দশচক্রে ভগবান ভূত
৪৮. দেবতার বেলা লীলাখেলা পাপ লিখেছে মানুষের বেলা
৪৯. দৈত্যকুলে প্ৰহ্লাদ
৫০. ধনুর্ভঙ্গ পণ
৫১. ধন্বন্তরি
৫২. ধর লক্ষ্মণ
৫৩. ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির
৫৪. ধর্মের ষাঁড়
৫৫. ধান ভানতে শিবের গীত
৫৬. ধুন্ধুমার কাণ্ড
৫৭. নরাণাং মাতুলক্রমঃ
৫৮. পরশুরামের কুঠার
৫৯. পরের ধনে পোদ্দারি
৬০. পাততাড়ি গুটানো
৬১. পান্তা ভাতে ঘি নষ্ট বাপের বাড়ি ঝি নষ্ট
৬২. পিপুফিশু
৬৩. পোয়া বারো
৬৪. ফতো নবাব
৬৫. ফপর দালালি
৬৬. ফেউ লাগা
৬৭. বাজখাঁই আওয়াজ
৬৮. বিদুরের খুদ
৬৯. বিন্দেদূতী
৭০. ভবতি বিজ্ঞতমঃ ক্রমশো জনঃ
৭১. ভস্মে ঘি ঢালা
৭২. ভাগের মা গঙ্গা পায় না
৭৩. ভানুমতির খেল
৭৪. ভিজা বিড়াল
৭৫. ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা
৭৬. ভুশুণ্ডি কাক
৭৭. ভেড়াকান্ত
৭৮. ভেড়ার পাল
৭৯. মগের মুলুক
৮০. মরার সময় মকরধ্বজ
৮১. মাছি মারা কেরানি
৮২. মাছের মায়ের পুত্রশোক
৮৩. মান্ধাতার আমল
৮৪. মারের ওপর ওষুধ নাই
৮৫. মাৎস্যন্যায় অবস্থা
৮৬. যক্ষের ধন বা কুবেরের ধন
৮৭. যণ্ডামার্ক বা যণ্ডামার্কা
৮৮. যত দোষ নন্দ ঘোষ
৮৯. যে দামে কেনা সেই দামে বিক্রি
৯০. রথ দেখা ও কলাবেচা
৯১. রাবণের চিতা
৯২. লঙ্কাকাণ্ড
৯৩. লাগে টাকা দেবে গৌরীসেন
৯৪. লেফাফাদুরস্ত
৯৫. শকুনিমামা
৯৬. শনির দশা
৯৭. শাঁখের করাত
৯৮. শাপে বর
৯৯. শিখণ্ডী খাড়া করা
১০০. শিবরাত্রির সলতে
১০১. শুভঙ্করের ফাঁকি
১০২. শ্যাম রাখি কি কুল রাখি
১০৩. ষাঁড়ের গোবর
১০৪. সরফরাজি চাল
১০৫. সস্তার তিন অবস্থা
১০৬. সাক্ষীগোপাল
১০৭. সাত নকলে আসল খাস্তা
১০৮. হবুচন্দ্র রাজার গবুচন্দ্র মন্ত্রী
১০৯. হরি ঘোষের গোয়াল
১১০. হরিহর আত্মা

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন