ভাগের মা গঙ্গা পায় না

সমর পাল

ভাগের মা গঙ্গা পায় না

এমনিতেই বলা হয়- ভাই ভাই ঠাঁই ঠাঁই। অর্থাৎ তারা প্রায়ই মিলের অভাবে ঝগড়া বিবাদ করে পরস্পর পৃথক অবস্থায় থাকে। ভাইয়ে ভাইয়ে মিলেমিশে একমত হয়ে কাজ করার দৃষ্টান্ত আমাদের সমাজে বিরল।

আলোচ্য প্রবাদের অর্থ হচ্ছে—যে কাজ ভাগাভাগি করে করা হয় তা প্রায়ই সুচারুরূপে সম্পন্ন হয় না অথবা পণ্ড হয়ে যায়। কাজের দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট করা না থাকার কারণে ভাগাভাগির কাজ যথাযথ লক্ষ্য অর্জন করতে পারে না।

গঙ্গানদী বা গঙ্গার জল নিষ্ঠাবান হিন্দুর কাছে অতি পবিত্র। মৃত্যুর পূর্বমুহূর্তে গঙ্গার তীরে মুমূর্ষুর উপস্থিতি পুণ্যজনক হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে আদিকাল থেকে। গঙ্গালাভ বা গঙ্গাপ্রাপ্তি বলতে এ কারণে মৃত্যুকে বুঝায় আজকাল। বৃদ্ধবৃদ্ধার অনেকেরই মৃত্যুর আগে গঙ্গার তীরে প্রাণবিসর্জনের বাসনা থাকে। তাদের এই শেষ ইচ্ছে পূরণে সন্তানদের সদিচ্ছা থাকতে হয়। মুমূর্ষের গঙ্গাতীরে গমনকালে ‘এই গঙ্গা, আমি মরে যাচ্ছি’-এরূপ জ্ঞান থাকলে নাকি স্বর্গলাভ হয়। শাস্ত্রে তাই বলে।

মা সকল সন্তানের। মায়ের মৃত্যুকাল উপস্থিত হলে প্রায় সবাই মনে করে যে, কেউ না কেউ মায়ের শেষ ইচ্ছে পূরণ করবে। দৃঢ়ভাবে কেউ মাকে গঙ্গাযাত্রায় নিতে দায়িত্ব নেয় না। এ ওর ওপর দায়িত্ব ফেলতে চায়। ফলস্বরূপ মায়ের মৃত্যুকাল সন্নিকটবর্তী হলেও সমন্বিত দায়িত্ববোধ জন্মে না সন্তানদের মধ্যে। কারণ তাদের মধ্যে একতার অভাব স্বভাবজাতই হয়ে থাকে। এর কিছু ব্যতিক্রম থাকলেও সাধারণভাবে ভাগের মা গঙ্গালাভ করতে পারেন না প্রায়ই। ইংরেজি প্রবাদে বলা হয়—Everybody’s business is nobody’s business.

সকল অধ্যায়

১. অকাল কুষ্মাণ্ড
২. অগস্ত্যযাত্রা
৩. অজার যুদ্ধে আঁটুনি সার
৪. অতি দর্পে হত লঙ্কা
৫. অতি দানে বলির পাতালে হলো ঠাঁই
৬. অতি মন্থনে বিষ ওঠে
৭. অতি লোভে তাঁতি নষ্ট
৮. অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট
৯. অন্ধের হাতি দেখা
১০. অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী
১১. অশ্বত্থামা হত ইতি গজ
১২. আগ নাংলা যে দিকে যায় পাছ নাংলা সে দিকে যায়
১৩. আষাঢ়ে গল্প
১৪. আসলে মুষল নাই ঢেঁকিঘরে চাঁদোয়া
১৫. ইল্লত যায় না ধুলে খাসলত যায় না মলে
১৬. ওঝার ব্যাটা বনগরু
১৭. কংসমামা
১৮. কাকতালীয় ব্যাপার
১৯. কালনেমির লঙ্কাভাগ
২০. কুম্ভকর্ণের ঘুম
২১. কুরুক্ষেত্র কাণ্ড
২২. কড়ায় গণ্ডায়
২৩. খর দজ্জাল
২৪. খাঞ্জা খাঁ
২৫. খয়ের খাঁ
২৬. গজকচ্ছপের লড়াই
২৭. গজকপিত্থবৎ
২৮. গদাই লশকরি চাল
২৯. গন্ধমাদন বয়ে আনা
৩০. গোঁফ খেজুরে
৩১. গোকুলের ষাঁড়
৩২. গৌরচন্দ্রিকা
৩৩. ঘরভেদী বিভীষণ
৩৪. ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে
৩৫. ঘুঁটো জগন্নাথ
৩৬. চিত্রগুপ্তের খাতা
৩৭. চেনা বামুনের পৈতা লাগে না
৩৮. চোরে চোরে মাসতুতো ভাই
৩৯. ছকড়া নকড়া
৪০. জগা খিচুড়ি
৪১. জড়ভরত
৪২. ঢাক পেটানো
৪৩. ঢাকের বাঁয়া
৪৪. ঢাল নাই তলোয়ার নাই নিধিরাম সর্দার
৪৫. ত্রিশঙ্কু অবস্থা
৪৬. দক্ষযজ্ঞ ব্যাপার
৪৭. দশচক্রে ভগবান ভূত
৪৮. দেবতার বেলা লীলাখেলা পাপ লিখেছে মানুষের বেলা
৪৯. দৈত্যকুলে প্ৰহ্লাদ
৫০. ধনুর্ভঙ্গ পণ
৫১. ধন্বন্তরি
৫২. ধর লক্ষ্মণ
৫৩. ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির
৫৪. ধর্মের ষাঁড়
৫৫. ধান ভানতে শিবের গীত
৫৬. ধুন্ধুমার কাণ্ড
৫৭. নরাণাং মাতুলক্রমঃ
৫৮. পরশুরামের কুঠার
৫৯. পরের ধনে পোদ্দারি
৬০. পাততাড়ি গুটানো
৬১. পান্তা ভাতে ঘি নষ্ট বাপের বাড়ি ঝি নষ্ট
৬২. পিপুফিশু
৬৩. পোয়া বারো
৬৪. ফতো নবাব
৬৫. ফপর দালালি
৬৬. ফেউ লাগা
৬৭. বাজখাঁই আওয়াজ
৬৮. বিদুরের খুদ
৬৯. বিন্দেদূতী
৭০. ভবতি বিজ্ঞতমঃ ক্রমশো জনঃ
৭১. ভস্মে ঘি ঢালা
৭২. ভাগের মা গঙ্গা পায় না
৭৩. ভানুমতির খেল
৭৪. ভিজা বিড়াল
৭৫. ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা
৭৬. ভুশুণ্ডি কাক
৭৭. ভেড়াকান্ত
৭৮. ভেড়ার পাল
৭৯. মগের মুলুক
৮০. মরার সময় মকরধ্বজ
৮১. মাছি মারা কেরানি
৮২. মাছের মায়ের পুত্রশোক
৮৩. মান্ধাতার আমল
৮৪. মারের ওপর ওষুধ নাই
৮৫. মাৎস্যন্যায় অবস্থা
৮৬. যক্ষের ধন বা কুবেরের ধন
৮৭. যণ্ডামার্ক বা যণ্ডামার্কা
৮৮. যত দোষ নন্দ ঘোষ
৮৯. যে দামে কেনা সেই দামে বিক্রি
৯০. রথ দেখা ও কলাবেচা
৯১. রাবণের চিতা
৯২. লঙ্কাকাণ্ড
৯৩. লাগে টাকা দেবে গৌরীসেন
৯৪. লেফাফাদুরস্ত
৯৫. শকুনিমামা
৯৬. শনির দশা
৯৭. শাঁখের করাত
৯৮. শাপে বর
৯৯. শিখণ্ডী খাড়া করা
১০০. শিবরাত্রির সলতে
১০১. শুভঙ্করের ফাঁকি
১০২. শ্যাম রাখি কি কুল রাখি
১০৩. ষাঁড়ের গোবর
১০৪. সরফরাজি চাল
১০৫. সস্তার তিন অবস্থা
১০৬. সাক্ষীগোপাল
১০৭. সাত নকলে আসল খাস্তা
১০৮. হবুচন্দ্র রাজার গবুচন্দ্র মন্ত্রী
১০৯. হরি ঘোষের গোয়াল
১১০. হরিহর আত্মা

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন