সমর পাল
রাবণের শক্তিশেলের আঘাতে মৃতপ্রায় লক্ষ্মণকে বাঁচিয়ে তুলতে চিন্তিত হলো সবাই। লঙ্কাযুদ্ধে দায়িত্ব পালনরত সুদক্ষ শল্য-চিকিৎসক সুষেণ হনুমানকে পাঠালেন হিমালয়ের উত্তরে ঋষভপর্বত ও কৈলাসের মধ্যবর্তী গন্ধমাদন পর্বতে। সেখানে পাওয়া যাবে ভেষজ উদ্ভিদ-বিশল্যকরণী, মৃতসঞ্জীবনী, সুবর্ণকরণী ও সন্ধানী। এই পর্বতে জাত ঔষধি-বৃক্ষের গন্ধ সকলকে মাতাল করে দেয় বলে এর নাম গন্ধমাদন।
বিশল্যকরণী অর্থ হলো শল্য (শলা, কাঁটা, শেল, বাণ Splinter) বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিদ্ধকারী অস্ত্রশস্ত্র, লোহা বা পাথরের টুকরা উদ্ধারকারী। লক্ষ্মণের দেহে বিদ্ধ অস্ত্রের টুকরা বা splinter বের করতে বিশল্যকরণী ছিল তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় ভেষজ।
হনুমান নানা বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে পৌঁছলেন গন্ধমাদন পর্বতে। কিন্তু ঔষধি গাছ চিনতে না পেরে সমগ্র পর্বতশৃঙ্গ উপড়ে ফেলে তা নিয়ে হাজির হলেন মৃতপ্রায় লক্ষ্মণের কাছে। যাহোক, শেলব্যথানাশিনী বিশল্যকরণীর সাহায্যে চিকিৎসা করে তাকে সুস্থ করে তোলেন শল্য- চিকিৎসক সুষেণ। এক্ষেত্রে হনুমানকে কিঞ্চিৎ মোটাবুদ্ধির বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
আমাদের পরিবার বা সমাজে কাউকে কোনো জিনিস আনতে দিলে সে যদি একাধিক জিনিস টেনে আনে তাহলে গন্ধমাদন বয়ে আনা প্রবাদের প্রসঙ্গ এসে যায়।
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন