শকওয়েভ – ১৫

কাজী আনোয়ার হোসেন

পনেরো

সুডৌল পয়োধর থেকে ভরাট উরুর মাঝামাঝি পর্যন্ত ঢেকেছে ও দুধসাদা তোয়ালে দিয়ে। চিকচিক করছে মরাল গ্রীবার উপর লেপটে থাকা এক গাছি লাল চুল। পেশায় গবেষক হলেও নিজের আবেদনময় ফিগারের দিকেও খেয়াল রয়েছে ওর। ফিটনেস ঠিক রাখার জন্য জিমে যায় নিয়মিত। রানার দৃষ্টি সরছে না দেখে লাজুক হাসি হাসল।

‘সরি, রানা!’ বলল বিব্রত কণ্ঠে। ‘চিরুনি খুঁজছিলাম আমি। তাড়াহুড়োয় আনা হয়নি আমারটা।’

দেরাজ খুলে চিরুনি দিল ওকে রানা।

‘জিযাস!’ মাসুদ রানার ব্যায়ামপুষ্ট শরীরভরা ছুরি আর বুলেটের পুরানো ক্ষতগুলোয় চোখ বোলাচ্ছে সেলেনা। ইন্টেলিজেন্স বিভাগে বহু বছর কাটানোর পুরস্কার এগুলো। ‘গুলির ব্যাপারে নাকি ভাগ্যবান তুমি! এ-ই তার নমুনা?’

‘স্নান হয়ে গেছে তোমার?’ প্রসঙ্গটা ঘুরিয়ে দিল রানা।

‘হুম। সেরে এসো তুমি।’

পুরো আধঘণ্টা ব্যয় করল রানা বাথরুমে। ঈষদুষ্ণ জলস্রোতে পরিষ্কার হয়ে গেল শরীরের ক্লেদ। কিন্তু মনের কালি ঘুচল না… বড় বেশি সুন্দর মেয়েটা।

পরিষ্কার কাপড়চোপড় পরে ডিনার তৈরির জন্য ঢুকে পড়ল ছোট্ট কিচেনটায়। অসম্ভব খিদে পেয়েছে।

ধুলো পড়া ওঅর্ক-টপটা মুছে নিল ও ন্যাকড়া দিয়ে। এক বোতল দুধ ছিল ফ্রিযে। খুলে দেখে, ঘন হয়ে প্রায় পনিরে পরিণত হয়েছে জিনিসটা। খাওয়া যাবে না।

কাবার্ড খুলল রানা। ডাঁই করে রাখা খাবারের টিন থেকে বেছে বের করল দুটো। ভুলেই গিয়েছিল, লাভাসা ব্র্যাণ্ডের এক প্যাকেট গুঁড়ো কফি আর সস্তা এক বোতল রেড ওয়াইন রয়েছে সংগ্রহে। ও-দুটো নামিয়ে রেখে কর্কস্কু আর ক্যান ওপেনার খুঁজে নিল দেরাজ থেকে।

‘আগের বারের স্ট্যু দিয়েই কাজ সারবে নাকি?’ ছোট্ট টেবিলের সঙ্গে থাকা চেয়ার দুটোর একটাতে বসে জানতে চাইল সেলেনা, কণ্ঠে সন্দেহ। কুঁকড়ে এসেছে শুকনো চুলগুলো। স্নিগ্ধ আভা ফুটে বেরোচ্ছে পরিচ্ছন্ন ত্বক থেকে।

গ্যাসস্টোভের উপর সসপ্যান রেখে টিনের জিনিস ঢেলে নিচ্ছে রানা।

‘কনড বিফ যত দিন টিনে থাকে, ততই এর স্বাদ বাড়তে থাকে,’ বলল ও সসপ্যান নাড়তে নাড়তে।

‘শিয়োর! শিয়োর!’ কৃত্রিম সমর্থন সেলেনার কণ্ঠে। ‘হাঁসের চর্বিতে ডেলা পাকানো বিন আর ওভারকুড্ সসেজ দিয়ে ভাপে সিদ্ধ করলে যে-জিনিস দাঁড়ায়, সেটা মুখে তোলা মানে ভূমিকম্প ডেকে আনা। তবে… যতক্ষণ পর্যন্ত ওয়াইন দিয়ে ধুয়ে নামাতে পারছি ওগুলো, কোনও অভিযোগ নেই আমার।’

ওয়াইনের কর্ক খুলল রানা। দুটো গ্লাস ভরে নিল লাল তরলে। ভদ্রতা করে সেলেনার হাতে তুলে দিল ওরটা।

এক চুমুকে অর্ধেকটা ওয়াইন গলায় ঢেলে নিমিষেই যেন চাঙা হয়ে উঠল মেয়েটা।

ক্যাসুলে যখন ভাপ ছাড়তে লাগল, চামচ দিয়ে প্লেটে বাড়ল রানা। আরও ওয়াইন ঢেলে নিয়ে খাওয়া শুরু করল দু’জনে।

কাঁটাচামচ দিয়ে কিছু বিন মুখে তুলে সাবধানে চিবিয়ে দেখল সেলেনা। শেষমেশ রায় দিল: ‘বেঁচে থাকার জন্যে পেট ভরাচ্ছি বটে, তবে আসলে খারাপ নয় স্বাদটা।’

‘পুষ্টিকর খাবারের ধরনই এ-ই,’ বিজ্ঞ মত দিল রানা। ‘অত স্বাদের হয় না। তবে ব্যস্ততা রয়েছে সামনে, শরীরে পুষ্টি দরকার।’

চুপচাপ খেতে লাগল ওরা।

খাওয়া শেষে জানতে চাইল রানা, ‘বলো এবার, কেমন ছিলে এত দিন।’

‘মন্দ নয়।’

‘কী রকম মন্দ নয়, সেটাই তো শুনতে চাইছি।’

‘ঘুরেছি অনেক… ব্যস্ততার ফাঁকে সময় করে নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছি ক্যানাডার সাউদার্ন স্টেটগুলো।’

‘রিলেশন-টিলেশন হয়নি কারও সাথে?’

ঠোঁট ওল্টাল মেয়েটা। ‘তোমার সঙ্গে একবার যে-মেয়ে জড়িয়েছে, সে কি অন্য কাউকে মন দিতে পারে?’

‘কেন নয়?’

‘আছে ব্যাপার। তুমি বুঝবে না।’

কাঁধ ঝাঁকাল রানা। ‘ভ্যালা মুসিবত হয়ে গেল তো!’

‘কোনটা?’

‘কম মেয়ের সঙ্গে তো জড়াইনি জীবনে। এদের অধিকাংশই কি তবে আইবুড়োই রয়ে যাবে?’

খিলখিল করে হেসে উঠল সেলেনা।

ঘড়ি দেখল রানা।

ঘনিয়ে আসছে রাত্রি।

সহসা ছটফটানি অনুভব করল ও নিজের ভিতর।

‘ক্যারেনের দেয়া সঙ্কেতটা নিয়ে মাথা ঘামাতে চাই,’ বলল ও। ‘যদি কিছু বুঝে আসে।’

টেবিল ছাড়ল রানা। ডিশ দু’খানি দু’হাতে তুলে নিয়ে রেখে দিল সিঙ্কের মধ্যে। পরে ধোবে।

‘এর পর একটু কফি হতে পারে, প্রস্তাব দেয়ার সুরে বলল সেলেনা। ‘জবর ছিল ওয়াইনের ধকটা।’

‘নিশ্চয়ই। তবে ব্ল্যাক কফি কিন্তু। দুধে একটু—’

‘সমস্যা নেই, ব্ল্যাক ইজ ওকে। বাট নো সুগার।’

‘তথাস্তু।’

এসপ্রেসো পটটায় বগবগ আওয়াজে বলক তুলতে লাগল লাভাসা কফি।

দুটো কাপ ভরল রানা। ওয়াইনের তীব্রতা কমাতে দারুণ কাজের জিনিস এই পানীয়।

কফিকাপ আর কাগজের টুকরোটা নিয়ে টেবিলের উপর ঝুঁকে বসল দু’জনে।

কাগজটায় টোকা দিল সেলেনা। ‘তোমার কি এখনও ধারণা, জিপিএস লোকেশন উপরের লাইনটা?’

‘দাঁড়াও, বুঝিয়ে দিচ্ছি।’

ডেস্কের দেরাজ থেকে মোটা শিষের পেনসিল আর ফ্রেশ এক তা কাগজ নিয়ে লাইনটা কপি করল রানা। তার পর নিচে করল ওটার রূপান্তর:

49° 2’ 0’ N ।° 57’ 0’ E

‘বুঝলাম এবার।’ সমঝদারের মত মাথা দোলাল সেলেনা। ‘তা, কী বলছে ফিগারটা?’

‘সেটাও দেখছি,’ বলে, টেবিলে রাখা মোবাইল ফোনটার দিকে হাত বাড়াল ও। অ্যাকটিভেট করল জিপিএস অ্যাপ্লিকেশন। কো-অর্ডিনেট দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকেশনের ছোট্ট সবুজ ম্যাপ ভেসে উঠল স্ক্রিনে।

‘গ্রামাঞ্চল জায়গাটা।’ দেখাল ও সেলেনাকে। ‘দূর আছে মোটামুটি। প্যারিস থেকে চল্লিশ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে। খেতখামার আর জঙ্গল ছাড়া বড় কিছু নেই ওটার তিন কিলোমিটারের মধ্যে। কাছাকাছি শহরগুলো হলো কোঁদেকোর্ট আর টেসানকোর্ট-সুর-ওবেট।’

অনস্ক্রিন ম্যাপটার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে সেলেনা। ‘কিছুই যদি না থাকে, ওটার কথা লিখল কেন ক্যারেন? নিশ্চয়ই কোনও কারণ রয়েছে।’

‘কোনও আইডিয়া?’

‘কিচ্ছু না।’ ঠোঁট ওল্টাল সেলেনা। ‘এক মিনিট! হুম… হতে পারে এটা!’ মন্তব্য করল আপন মনে। ‘আরও ডিটেইলস জানাতে পারো, রানা, জায়গাটার ব্যাপারে?’

ডিফল্ট ম্যাপ ভিউ থেকে স্যাটেলাইট ইমেজে চলে গেল রানা। যতটা সম্ভব, জুম ইন করল। প্রথমে ঝাপসা দেখাল মানচিত্র, তার পর পরিষ্কার হলো। এরিয়াল ভিউ দেখা যাচ্ছে এখন।

সুবিশাল জায়গা জুড়ে ছড়ানো এক কান্ট্রি এস্টেটের হৃৎপিণ্ডে অবস্থিত বড়সড় একটা প্রপার্টি দেখা যাচ্ছে বলে মনে হলো ওর। শ্যাতো হতে পারে ওটা, হতে পারে ম্যানর হাউস।

‘মনে হচ্ছে, জবাব পেয়ে গেছি!’ ফোনটা নিল সেলেনা রানার হাত থেকে। চোখ জোড়া আঠার মত সেঁটে রয়েছে পর্দায়।

‘চেনো তুমি জায়গাটা?’

‘অবশ্যই। গ্যাসপারের কথা বলেছিলাম না?’

‘ক্যারেনের এক্স-বয়ফ্রেণ্ড?’

‘হ্যাঁ। ওখানেই থাকে লোকটা। বলেছিল আমাকে।’

‘কী কী জানো লোকটার ব্যাপারে?’

‘বিত্তশালী বেকার,’ ধারাভাষ্য দিচ্ছে যেন সেলেনা। ‘সেরাজো আর ক্রিস্টিন ইলিয়েলের একমাত্র সন্তান। কোনও একটা স্ক্যাণ্ডাল রয়েছে অভিজাত পরিবারটায়… সঠিক বলতে পারব না। ক্যারেনের সঙ্গে আলাপে সেরকমই কিছুটা আভাস পেয়েছি যেন।

‘ছেলেকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল বাপ-মায়ের। কিন্তু পঁচিশে পা দেয়ার আগেই মদ আর মাদকের কাছে নিজেকে সঁপে দেয় প্রেমিক প্রবরটি। দায়িত্বপূর্ণ কোনও কাজের ভার নেয়ার সামর্থ্য হারায়। এটাই হয়তো পরিবারটার কলঙ্ক। তবে আসল ঘটনা আরও চরম বলে ধারণা আমার। কে জানে, হয়তো অসহ্য রকমের হীন চরিত্রের লোকটা; নারীলিপ্স-টিপ্স।’

‘আজব তো! দায়িত্বশীল একজন ফিজিক্স লেকচারারের জন্যে আর কোনও মরদ ছিল না দুনিয়ায়?’

মাথা ঝাঁকাল সেলেনা। ‘সেটাই। কখনোই বুঝতে পারিনি, কী দেখেছিল ও লোকটার মাঝে! সামনাসামনি দেখিওনি কখনও লোকটাকে। তবে প্রেমিক প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কেমন এক ঘোরের মধ্যে চলে যেত ক্যারেন! মনে হতো, কোনও কিছুর আসর হয়েছে ওর ওপর।’

‘তার মানে, বাপের হোটেলেই থাকা-খাওয়া চলত এমবিবিএস মহাশয়ের?’

‘এমবিবিএস কী?’

‘মা-বাবার বেকার সন্তান।’

‘উঁহুঁ… এখন ওর নিজেরই হোটেল ওটা। ক্যারেনের কাছে শুনেছি, চমৎকার আবহাওয়া আর তুলনামূলক কম ট্যাক্স দিতে হয় বলে বছর কয়েক আগে পারিবারিক বসতবাড়ি ছেড়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমান মিস্টার অ্যাণ্ড মিসেস ইলিয়েল। একদম একা হয়ে পড়ে গ্যাসপার। অবশ্য ঠিক একাও বলা যায় না। রিভিয়েরায় উপস্থিত হলেই দুধের মাছিরা ছোঁক ছোঁক করে ওর চারপাশে। ড্রাগস, মদ আর জুয়ার নেশায় বুঁদ হয়ে থাকে আলালের ঘরের দুলালটি।’

‘এখন প্রশ্ন: কেন এটা দেখাতে চাইল ক্যারেন?’ কী যেন ভাবছে রানা স্যাটেলাইট ইমেজের দিকে চেয়ে।

‘একটা সম্ভাবনাই দেখতে পাচ্ছি আমি। এই মেসেজ দিতে চেয়েছে হয়তো: ওর যদি কিছু হয়ে যায়, আমি যেন যাই ওখানে।

‘গেলে, তার পর? যোগাযোগ করবে গ্যাসপারের সঙ্গে?’

‘সম্ভবত না। এসবের সঙ্গে ক্যারেন ওকে জড়িয়েছে কি না, যথেষ্ট সন্দেহ আছে আমার। অনেক আগে থেকেই আলাদা ওরা। আবার যদি নেশাখোরটাকে নিজের জীবনে ফেরার সুযোগ দিয়ে থাকে ও, দারুণ অবাক হব আমি। না, রানা; আমার ধারণা, অন্য কিছু অপেক্ষা করছে ওখানে আমাদের জন্যে। হতে পারে, গুরুত্বপূর্ণ কিছু একটা লুকানো আছে ওখানে। জায়গাটা তো বিশাল, তা-ই না? সহজেই লুকানো সম্ভব কোনও কিছু। ওটাই হয়তো খুঁজতে বলছে আমাদের। …বিরক্ত হচ্ছ নাকি তুমি?’

‘কী খুঁজতে হবে, সেটা না জেনে খড়ের গাদা তছনছ করাটা ভালো আইডিয়া বলে মনে হচ্ছে না আমার। বুনো হাঁসের পিছনে ছুটে সময় নষ্ট করার তো অর্থ হয় না কোনও।’

‘তুমিই বলো তা হলে, আর কী মানে হতে পারে চিঠির এই লোকেশনের!

‘বাকি নাম্বারগুলো কী মিন করছে, সেটা জানি না এখনও। জানলে হয়তো…’

‘আমার কী মনে হচ্ছে, জানো? ওখানে না গেলে মিলবে না পরের সূত্রটা। গুপ্তধন উদ্ধারের মত ধাপে ধাপে এগোতে হবে আমাদের। আর তো কোনও ব্লু নেই এ ছাড়া।’

কথাটা খতিয়ে দেখল রানা।

‘ওকে, ফাইন। প্রথমে মনমাট্রায় যাব আমরা। ক্যারেনের অ্যাপার্টমেন্টে। দেখা যাক, কোনও লিজ পাই কি না সেখানে। তার পর না হয় ঢুঁ মারব গ্যাসপারের শ্যাতোতে। আরেক কাপ কফি গিলে রওনা হই, চলো। মন বলছে, লম্বা সময় কাটাতে হবে ওখানে।’

সকল অধ্যায়

১. শকওয়েভ – ১
২. শকওয়েভ – ২
৩. শকওয়েভ – ৩
৪. শকওয়েভ – ৪
৫. শকওয়েভ – ৫
৬. শকওয়েভ – ৬
৭. শকওয়েভ – ৭
৮. শকওয়েভ – ৮
৯. শকওয়েভ – ৯
১০. শকওয়েভ – ১০
১১. শকওয়েভ – ১১
১২. শকওয়েভ – ১২
১৩. শকওয়েভ – ১৩
১৪. শকওয়েভ – ১৪
১৫. শকওয়েভ – ১৫
১৬. শকওয়েভ – ১৬
১৭. শকওয়েভ – ১৭
১৮. শকওয়েভ – ১৮
১৯. শকওয়েভ – ১৯
২০. শকওয়েভ – ২০
২১. শকওয়েভ – ২১
২২. শকওয়েভ – ২২
২৩. শকওয়েভ – ২৩
২৪. শকওয়েভ – ২৪
২৫. শকওয়েভ – ২৫
২৬. শকওয়েভ – ২৬
২৭. শকওয়েভ – ২৭
২৮. শকওয়েভ – ২৮
২৯. শকওয়েভ – ২৯
৩০. শকওয়েভ – ৩০
৩১. শকওয়েভ – ৩১
৩২. শকওয়েভ – ৩২
৩৩. শকওয়েভ – ৩৩
৩৪. শকওয়েভ – ৩৪
৩৫. শকওয়েভ – ৩৫
৩৬. শকওয়েভ – ৩৬
৩৭. শকওয়েভ – ৩৭
৩৮. শকওয়েভ – ৩৮
৩৯. শকওয়েভ – ৩৯
৪০. শকওয়েভ – ৪০
৪১. শকওয়েভ – ৪১
৪২. শকওয়েভ – ৪২
৪৩. শকওয়েভ – ৪৩
৪৪. শকওয়েভ – ৪৪
৪৫. শকওয়েভ – ৪৫
৪৬. শকওয়েভ – ৪৬
৪৭. শকওয়েভ – ৪৭
৪৮. শকওয়েভ – ৪৮
৪৯. শকওয়েভ – ৪৯
৫০. শকওয়েভ – ৫০
৫১. শকওয়েভ – ৫১
৫২. শকওয়েভ – ৫২
৫৩. শকওয়েভ – ৫৩
৫৪. শকওয়েভ – ৫৪
৫৫. শকওয়েভ – ৫৫
৫৬. শকওয়েভ – ৫৬
৫৭. শকওয়েভ – ৫৭
৫৮. শকওয়েভ – ৫৮
৫৯. শকওয়েভ – ৫৯
৬০. শকওয়েভ – ৬০
৬১. শকওয়েভ – ৬১
৬২. শকওয়েভ – ৬২
৬৩. শকওয়েভ – ৬৩
৬৪. শকওয়েভ – ৬৪
৬৫. শকওয়েভ – ৬৫
৬৬. শকওয়েভ – ৬৬
৬৭. শকওয়েভ – ৬৭
৬৮. শকওয়েভ – ৬৮
৬৯. শকওয়েভ – ৬৯
৭০. শকওয়েভ – ৭০
৭১. শকওয়েভ – ৭১
৭২. শকওয়েভ – ৭২
৭৩. শকওয়েভ – ৭৩
৭৪. শকওয়েভ – ৭৪
৭৫. শকওয়েভ – ৭৫
৭৬. শকওয়েভ – ৭৬
৭৭. শকওয়েভ – ৭৭
৭৮. শকওয়েভ – ৭৮
৭৯. শকওয়েভ – ৭৯

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন