শকওয়েভ – ৮

কাজী আনোয়ার হোসেন

আট

কাঠ আর গাছের বাকল চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে উড়তে লাগল ওদের চারপাশে। বিশ্ববিখ্যাত ‘ম্যাট্রিক্স’ সিনেমাটার বাস্তব দৃশ্য যেন।

সেলেনাকে দু’হাতে জড়িয়ে ধরে বেঞ্চের ব্যাকরেস্টের উপর দিয়ে লাফ দিল রানা চিতাবাঘের মত। মাটিতে পড়েই নিজের শরীর দিয়ে আড়াল করল ওকে।

মুহূর্তের জন্য থেমে গেছে গুলিগালাচ। নিশানা ঠিক করে নিচ্ছে বোধ হয় আততায়ী। নৈঃশব্দ্য যেন ইলাস্টিকের মত টান টান হয়ে আছে।

তার পরই আরেক পশলা গুলি খুবলে তুলল ঘাস-মাটি । মাটির সোঁদা গন্ধ এল নাকে। বেঞ্চের নিচের দিকটা নিরাপদ থাকল না আর। কাস্ট-আয়ার্নের যে-পায়াটার সঙ্গে শরীর ঠেসে রেখেছে রানা, একটা বুলেট বিচ্ছিরি বাজনা বাজাল ওতে লেগে। তামায় মোড়ানো তপ্ত সীসেটা সিঁথি কাটল সেলেনার চুলের মাঝ দিয়ে, কয়েক মিলিমিটারের জন্য ছোঁয়নি খুলি।

ধুলোর ভিতর দিয়ে দূরের ঝোপের ফাঁকে অতি সাবধানী নড়াচড়া ধরা পড়ল রানার চোখে।

নিজেদের সুরক্ষিত রাখার মরিয়া চেষ্টার মধ্যেও শত্রুর শক্তি ও অবস্থান সম্বন্ধে আন্দাজ পাওয়ার চেষ্টা করছে মনের একটা অংশ।

শুটার : একাধিক

রেঞ্জ: নব্বই গজ।

নয় মিলিমিটার ক্যালিবারের সাবসোনিক অ্যামিউনিশন। সাউণ্ড মডারেটরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র।

এয়ারগান হাতে স্থানীয় কোনও ছেলেছোকরা বেরোয়নি কাক-চড়ুই নিধন করতে! অতএব, বুলেটের ঘায়ে ছিন্নভিন্ন হওয়ার আগেই সরে যেতে হবে এই জায়গা থেকে।

কয়েক সেকেণ্ডেই দফা রফা অবস্থা হয়েছে বেঞ্চিটার। এক-একটা মুহূর্ত পেরোচ্ছে, আর দুর্বল থেকে দুর্বলতর হচ্ছে ওদের রক্ষাব্যূহ। কালের কশাঘাতে জর্জরিত কাঠের বুক বিদীর্ণ করছে গুলি, মাটিতে গুঁজছে মুখ, হিংস আঁচড় কাটছে গাছের গায়ে। ডানে আর বাঁয়ে, বাঁয়ে আর ডানে মুহুর্মুহু ছিটকে উঠছে মাটি।

গায়ে এসে লাগা পাথরকণাগুলো মনে করিয়ে দিল রানাকে পিছনের নিচু দেয়ালটার কথা। খালি হয়ে যাওয়া ম্যাগাজিন লোড করার জন্য গোলাগুলিতে বিরতি পড়তেই, স্প্রিঙের মত ঝটকা দিয়ে উঠে দাঁড়াল ও। হ্যাঁচকা টানে সেলেনাকে দাঁড় করিয়ে প্রায় ছুঁড়ে দিল দেয়ালের উপর দিয়ে। নিজেও ডাইভ দিল প্রায় সঙ্গে সঙ্গে।

ঘেসো ঢাল রয়েছে সাড়ে তিন ফুট উঁচু দেয়ালটার অন্য পাশে। নরম মাটিতে পড়েই উদ্যান সংলগ্ন সবুজ মাঠের দিকে গড়াতে শুরু করল দু’জনে।

রানাই উঠে দাঁড়াল প্রথমে। টলোমলো পায়ে সেলেনাকে সিধে হতে দেখে বিচলিত কণ্ঠে জানতে চাইল, ‘লেগেছে কোথাও?’

আপাতত থেমে গেছে গুলি। লাইন অভ ফায়ারের নিচে রয়েছে ওরা এ মুহূর্তে। তবে সেটা কতক্ষণের জন্য, বলার উপায় নেই।

‘মনে হয় না… কেমন দূরাগত কণ্ঠে জবাব দিল সেলেনা। আচমকা আক্রমণে হতবাক হয়ে গেছে বেচারি।

চটজলদি পরীক্ষা করল ওকে রানা। অভিজ্ঞতা থেকে জানা আছে ওর, মারাত্মকভাবে বুলেটবিদ্ধ হওয়ার পরও শকের কারণে কিছুক্ষণ টেরই পায় না অনেকে। কিন্তু সেলেনার একমাত্র ইনজুরি মনে হচ্ছে বাম ভ্রুর উপরের সামান্য কাটাটা। ছিটকে আসা কাঠের টুকরো চামড়া চিরেছে ওখানটায়।

‘নাহ, ঠিকই আছ তুমি!’ অনেকটা নিশ্চিন্ত বোধ করছে রানা এখন। ‘দাঁড়াও তো এখানে!’

তৃণাকীর্ণ ঢাল বেয়ে উপরে উঠল ও চার হাতপায়ে হামাগুড়ি দিয়ে। সন্তর্পণে মাথা জাগাল দেয়ালের উপর।

ঠিকই অনুমান করেছিল ও শুটারদের ব্যাপারে। সংখ্যায় দু’জন ওরা, দেখতে পাচ্ছে এখন। বেরিয়ে এসেছে ঝোপের আড়াল ছেড়ে। কমবয়সী গানম্যানের চুলের রং রুপালি। অপেক্ষাকৃত তাগড়া সে। অন্য দিকে, বয়স্ক লোকটা পাতলা- সাতলা ধরনের। দু’জনেই শক্তসমর্থ। হাতের আগ্নেয়াস্ত্ৰ লুকানোর চেষ্টা নেই কোনও। জনহীন উদ্যান পেরিয়ে লক্ষ্যের দিকে আসছে দৃঢ় পায়ে।

বেরেটা এমএক্সফোর স্টর্ম সাব-মেশিন গানের নধর কালো আউটলাইন চিনতে পারল রানা। পেশাদারদের প্রথম পছন্দ ওটা। অবশ্য কঠিন আছে এ জিনিস জোগাড় করা। তার কারণ, বেশির ভাগ দেশে পুরোপুরি অবৈধ এগুলো। খাঁটি যুদ্ধাস্ত্র বলা চলে এই অস্ত্রের মিলিটারি ভার্শনগুলোকে।

কারা এরা!?

অবকাশ নেই জবাব খোঁজার। তীরবেগে ছুটে আসছে দুই গানম্যান, এরই মাঝে পেরিয়ে এসেছে অর্ধেক পথ।

হড়কে মেয়েটার কাছে নেমে এল রানা।

‘আসছে ওরা!’ বলে উঠল জরুরি কণ্ঠে। ‘ভাগতে হবে, চলো!’

‘কোথায় পালাব, রানা?’ দম চাপল সেলেনা। হামলাটার আকস্মিকতা ও নির্দয়তা এখনও যেন হতবুদ্ধি করে রেখেছে ওকে। বিস্ফারিত চোখে চাইল চারপাশে।

খোলা মাঠ সামনে। লুকানোর লুকানোর মত কিচ্ছু নেই কাছেপিঠে। সবচেয়ে কাছের কাভারটা দু’শ’ গজ বা তারও বেশি দূরে। তপ্ত রোদে মরীচিকার মত কাঁপছে অসমাপ্ত হাউসিং এস্টেট।

সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল রানা। ছুটবে ওদিকেই। একটাই চাওয়া: নয় ফুট উঁচু যে তারের জালের বেড়া দেখতে পাচ্ছে সাইটের চারদিকে, তালা দেয়া যেন না থাকে ওটায়।

শক্ত মুঠোয় সেলেনার হাত ধরল ও, ছুটতে শুরু করল দূরের পাকা দালানগুলোর দিকে।

দীর্ঘ আর ঘন হয়ে বেড়ে ওঠা ঘাসের কারণে ব্যাহত হচ্ছে ছোটা। একটা খন্দে হোঁচট খেয়ে পড়েই গেল সেলেনা। ওকে দাঁড়াতে সাহায্য করছে, পিছনে তাকিয়ে দেখতে পেল রানা, দেয়ালে চড়ে বসেছে দুই যমদূত। মাঠের মাঝে শিকার দুটোকে দেখতে পেয়েই লাফ দিয়ে নেমে শুরু করল ধাওয়া।

টান দিল রানা সেলেনার হাত ধরে। ‘রান, সেলেনা, রান!’

সাইলেন্সার ফিট করা সাব-মেশিন গান জ্যান্ত হয়ে উঠল ওদের পিছনে। উড়তে লাগল ধুলো আর ঘাসের কুচি।

একটা ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে গেল রানা–জখম বা কানা- খোঁড়া করার ট্রেইনিং দেয়া হয়নি এদের—এরা জানে কেবল জানে খতম করতে।

হাত ছেড়ে দিল ও সেলেনার।

‘দৌড়াও এঁকেবেঁকে!’ নির্দেশ দিল ওকে।

রানার দিকে চকিতে চাইল মেয়েটা, পরক্ষণেই শুরু করল দৌড়। রোডরানারের মত ঘাস ভেদ করে ছুট দিয়েছে রানা। লেজে আগুন ধরেছে যেন। ক্ষণে ক্ষণে দিক পরিবর্তন করছে। যেন একটা খরগোস, এঁকেবেঁকে এড়ানোর চেষ্টা করছে ধাওয়াকারী কুকুর। মরিয়া প্রচেষ্টা যাকে বলে। এই রেঞ্জ থেকে এভাবে ছুটন্ত টার্গেটে হিট করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে ঘাতকদের জন্য। একটাই সমস্যা। পশ্চাদ্ধাবনকারী- দের তুলনায় বেশি পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে এর ফলে।

দ্রুত কাছিয়ে আসছে তারের বেড়া। বেড়ার খুঁটিতে লাগানো সাইনের লেখাগুলো স্পষ্ট হলো ওদের কাছে:

কনস্ট্রাকশন সাইট
বিপজ্জনক। দূরে থাকুন!

তারের ওদিকে রয়েছে ন্যাড়া ব্লকের দালানকোঠা, কনস্ট্রাকশন লিফট, সিমেন্ট মিক্সার, বিল্ডিং ক্রুদের জন্য পোর্টাকেবিন, আর অসংখ্য বালির ঢিবি।

ফটকে জড়ানো জগদ্দল শেকল আর প্যাডলক চোখে পড়তেই চোয়াল শক্ত হয়ে এল রানার। কেমন এক অব্যক্ত অসহায়তা জন্ম নিল বুকের ভিতর।

পিছনে চাইল সে এক নজর। কয়েক সেকেণ্ডের মধ্যেই রেঞ্জের মাঝে পেয়ে যাবে ওদের গানম্যানরা।

‘বেড়া বেয়ে উঠে যাও!’ বলল রানা।

বিনা দ্বিধায় জালের বুনুনির ফাঁকে আঙুল আটকে মাকড়সার মত বেড়া বাইতে শুরু করে দিল সেলেনা। জালের মাথায় পৌঁছে একটা পা প্রথমে উঠিয়ে দিল উপরে, ফেন্সের ভিতরদিকে পা-টা আটকে এর পর ওঠাল আরেক পা। বিকারগ্রস্তের মত হুড়োহুড়ি করে আধাআধি নেমেই ছেড়ে দিল বেড়া।

মৃদু ‘থপ’ শব্দে পা জোড়া পড়ল মাটিতে।

রানাও আসছে ওর পিছন পিছন। বোর্ডে সাঁটানো চাঁদমারির মত লেপটে রয়েছে বেড়ার সঙ্গে। খালি মনে হচ্ছে, এই বুঝি গুলি এসে বিঁধল পিঠে।

কানে এল বুলেটের চাপা আওয়াজ। বাম হাতের ইঞ্চি কয়েক দূরে ইস্পাতের ফেন্সপোস্টে ফুলকি ওড়াল গুলিটা।

ফেন্সের উপর দিয়ে লাফ দিল রানা। প্যারান্টারদের কায়দায় জমি স্পর্শ করল অন্য পাশে নেমে। একটা ডিগবাজি খেয়েই লাফিয়ে সিধে হলো, মুহূর্তেই ছুটতে শুরু করেছে আবার।

গায়ে গায়ে লেগে থাকা গোটা কতক দালানের নির্মাণকাজ শেষ দিকে প্রায়, চারদিকে মাচা বাঁধা। বাকিগুলো রয়েছে নির্মাণের প্রাথমিক পর্যায়ে—মাত্র কয়েক ফুট দেয়াল তোলা হয়েছে।

সবচেয়ে কাছের দালানটার কাছে প্রায় পৌঁছে গেছে সেলেনা। ছাতবিহীন একটা কোঠা ওটা, জানালা-দরজার জায়গায় খালি ফোকর।

আবার গুলি হলো পিছনে। পা আঁকড়ে ধরে ল্যাংচাতে ল্যাংচাতে বিল্ডিঙের ভিতর প্রবেশ করছে মেয়েটা, ধুলো আর ইটের কণা ছিটকে উঠল ডান দিকের দেয়াল থেকে।

যে-কোনও মুহূর্তে বুলেটের তপ্ত ছোবল খাওয়ার শঙ্কা নিয়ে ওর পিছনে ছুটে আসছে রানা।

আশঙ্কা অমূলক ওর। অক্ষত পিঠেই সেঁধোতে পারল দরজাপথে।

দালানের মধ্যে আত্মগোপন করেই দরজার পাশের দেয়ালে ঠেস দিয়েছে সেলেনা। হাপরের মত শব্দ করে শ্বাস ফেলতে ফেলতে বিপন্ন দৃষ্টিতে রানার দিকে তাকাল।

‘বলেছিলাম না তোমাকে?’ তড়পে উঠল শ্বাসের ফাঁকে। ‘খুব তো মহব্বত দেখালে পুলিসের প্রতি। এখন? এখন কী বলবে? সিরিয়াল কিলার, না? এখন বিশ্বাস হলো তো আমার কথা?’

‘পায়ে কী হয়েছে তোমার?’ হজমি ছাড়াই বিদ্রূপগুলো হজম করে ফেলেছে রানা।

‘উপর থেকে লাফ দিতে গিয়ে মচকে গেছে গোড়ালি। চলতে পারব, চিন্তা কোরো না।’ বলেই ব্যথায় মুখ কোঁচকাল মেয়েটা। ‘অত বেশি সিরিয়াস কিছু নয়।’

সেলেনার পায়ের উপর ঝুঁকে পড়ল রানা। কয়েক ইঞ্চি টেনে তুলল ফেডেড নীল জিনসের ডান পায়ের কাপড়। বেরিয়ে পড়ল নির্লোম ত্বক।

দুশ্চিন্তা করার মত খারাপ কিছু চোখে পড়ল না ওর—না কোথাও ফুলেছে, না হয়েছে রঙের হেরফের।

‘বাঁচবে তুমি,’ মত দিল টিভির স্বাস্থ্য বিষয়ক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া বিশেষজ্ঞের মত।

‘মজা নিচ্ছ, রানা? তা-ও আবার এরকম সময়ে!’ উৎকণ্ঠায় কাঁদো কাঁদো হয়ে গেল চেহারাটা। ‘কী করব আমরা?’

ঝড়ের গতিতে কাজ করে চলেছে রানার ক্ষুরধার মগজ। কঠোর প্রশিক্ষণ আর অঢেল অভিজ্ঞতার কারণে এন্তার ছুটোছুটির মাঝেও পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে ওর মনের উপর। এমনকী শিরায় শিরায় অ্যাড্রেনালিনের বাঁধ ভাঙা প্রবাহ সত্ত্বেও সব কিছু মনে হচ্ছে স্লো মোশনে চলছে।

ঝটিতি চলে গেল ও কাছের জানালাটার দিকে। কাঁচবিহীন ফোকর দিয়ে উঁকি দিল সাবধানে।

বেড়ার গেটের কাছে পৌঁছে গেছে দুই শুটার। একজন প্যাডলক বরাবর সই করল অস্ত্র। বুলেট আর তালার সংঘর্ষটা শোনাল নেহাইয়ের উপর কামারের হাতুড়ি পড়ার জোরদার আওয়াজের মত। তুবড়ে যাওয়া তালাটা ছিটকে পড়ল দূরে। সরসর করে খসে পড়ল বিচ্ছিন্ন শেকল।

প্রচণ্ড এক লাথি হাঁকিয়ে ফটক উন্মুক্ত করে দিল মৃত্যুর অপর প্রতিনিধি। শব্দ হলো— ঝনাৎ। ভিতরে প্রবেশ করল ওরা দীর্ঘ পদক্ষেপে।

‘এসে গেছে লোকগুলো,’ বলল রানা শান্ত কণ্ঠে।

‘হায়, যিশু!’ উচ্চারণ করতে গিয়ে কেঁপে গেল গলাটা। ‘কারা এরা, রানা?’

‘পরেও গবেষণা করা যাবে এ নিয়ে। এখনকার কাজ: সটকে পড়তে হবে এখান থেকে।’ নরম হলো দৃষ্টিটা। ‘দাঁড়াতে পারবে?’

‘পারব,’ বিনা দ্বিধায় জবাব দিল সেলেনা।

নিজের ঠোঁটে তর্জনী রেখে পিছন দরজার দিকে আঙুল নির্দেশ করল রানা। ফিসফিস করে বলল, ‘ওদিক দিয়ে।’

বেরিয়ে এল ওরা বাড়িটা থেকে। এগিয়ে চলল দালানঘেঁষা নিচু এক দেয়ালের ধার অনুসরণ করে। এর পর পাথরকুচি ছাওয়া চিলতে এক টুকরো জমিন পেরিয়ে চলল পরের বিল্ডিংটার উদ্দেশে।

ইংরেজি A আকৃতির চালা রয়েছে ওটার। ইতোমধ্যে উপরে তোলা হয়েছে কড়িবরগাগুলো, ঢেকে রাখা হয়েছে প্লাসটিকের আচ্ছাদন দিয়ে। মৃদু বাতাসে ফরফর আওয়াজ তুলছে নীলরঙা প্লাসটিক, সৃষ্টি করেছে ছায়ার নড়াচড়া।

এক কোনার আবছায়ার দিকে সেলেনাকে ঠেলে দিল রানা। নীরব অভিব্যক্তিতে বুঝিয়ে দিল: ‘ওখানেই থাকো।’

শব্দ না করে, দুলকি চালে চলে গেল এবার জানালার ফোকরের কাছে।

গজ তিরিশেক দূরে রয়েছে দুই সাব-মেশিন গানধারী, লম্বা লম্বা পা ফেলে অতিক্রম করছে সাইটটা। শিকারের সামান্যতম মুভমেন্টও যাতে চোখ না এড়ায়, চিলের দৃষ্টিতে নজর বুলাচ্ছে ইতিউতি। চেহারায় ইস্পাতের শীতলতা। কাঁধের উপর প্রস্তুত রয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র।

সঙ্গীকে সঙ্কেত দিল বয়স্ক গানম্যান। মাথা নাড়ল রুপালিচুলো।

দালান আর কনস্ট্রাকশন মেশিনারির মাঝে আলাদা হয়ে গেল দু’জনে, চলে গেল রানার চোখের আড়ালে।

চট্ করে নিজের চারপাশটা দেখে নিল রানা; বুঝে নিল, কোথায় কী রয়েছে। ফ্রন্ট ডোর, ব্যাক ডোর, প্যাটিয়ো উইণ্ডো, গ্যারাজ এবং আরও কয়েকটা ওপেনিং রয়েছে শুটারদের প্রবেশের জন্য। কিন্তু সেই অনুপাতে লুকানোর জায়গা নেই বেশি।

প্রবল অস্বস্তির সঙ্গে ভাবতে বাধ্য হলো, ওই দু’জন যদি নিজেদের কাজে কুশলী হয়, সেক্ষেত্রে মোটেই নিরাপদ নয় ওরা দু’জন।

সকল অধ্যায়

১. শকওয়েভ – ১
২. শকওয়েভ – ২
৩. শকওয়েভ – ৩
৪. শকওয়েভ – ৪
৫. শকওয়েভ – ৫
৬. শকওয়েভ – ৬
৭. শকওয়েভ – ৭
৮. শকওয়েভ – ৮
৯. শকওয়েভ – ৯
১০. শকওয়েভ – ১০
১১. শকওয়েভ – ১১
১২. শকওয়েভ – ১২
১৩. শকওয়েভ – ১৩
১৪. শকওয়েভ – ১৪
১৫. শকওয়েভ – ১৫
১৬. শকওয়েভ – ১৬
১৭. শকওয়েভ – ১৭
১৮. শকওয়েভ – ১৮
১৯. শকওয়েভ – ১৯
২০. শকওয়েভ – ২০
২১. শকওয়েভ – ২১
২২. শকওয়েভ – ২২
২৩. শকওয়েভ – ২৩
২৪. শকওয়েভ – ২৪
২৫. শকওয়েভ – ২৫
২৬. শকওয়েভ – ২৬
২৭. শকওয়েভ – ২৭
২৮. শকওয়েভ – ২৮
২৯. শকওয়েভ – ২৯
৩০. শকওয়েভ – ৩০
৩১. শকওয়েভ – ৩১
৩২. শকওয়েভ – ৩২
৩৩. শকওয়েভ – ৩৩
৩৪. শকওয়েভ – ৩৪
৩৫. শকওয়েভ – ৩৫
৩৬. শকওয়েভ – ৩৬
৩৭. শকওয়েভ – ৩৭
৩৮. শকওয়েভ – ৩৮
৩৯. শকওয়েভ – ৩৯
৪০. শকওয়েভ – ৪০
৪১. শকওয়েভ – ৪১
৪২. শকওয়েভ – ৪২
৪৩. শকওয়েভ – ৪৩
৪৪. শকওয়েভ – ৪৪
৪৫. শকওয়েভ – ৪৫
৪৬. শকওয়েভ – ৪৬
৪৭. শকওয়েভ – ৪৭
৪৮. শকওয়েভ – ৪৮
৪৯. শকওয়েভ – ৪৯
৫০. শকওয়েভ – ৫০
৫১. শকওয়েভ – ৫১
৫২. শকওয়েভ – ৫২
৫৩. শকওয়েভ – ৫৩
৫৪. শকওয়েভ – ৫৪
৫৫. শকওয়েভ – ৫৫
৫৬. শকওয়েভ – ৫৬
৫৭. শকওয়েভ – ৫৭
৫৮. শকওয়েভ – ৫৮
৫৯. শকওয়েভ – ৫৯
৬০. শকওয়েভ – ৬০
৬১. শকওয়েভ – ৬১
৬২. শকওয়েভ – ৬২
৬৩. শকওয়েভ – ৬৩
৬৪. শকওয়েভ – ৬৪
৬৫. শকওয়েভ – ৬৫
৬৬. শকওয়েভ – ৬৬
৬৭. শকওয়েভ – ৬৭
৬৮. শকওয়েভ – ৬৮
৬৯. শকওয়েভ – ৬৯
৭০. শকওয়েভ – ৭০
৭১. শকওয়েভ – ৭১
৭২. শকওয়েভ – ৭২
৭৩. শকওয়েভ – ৭৩
৭৪. শকওয়েভ – ৭৪
৭৫. শকওয়েভ – ৭৫
৭৬. শকওয়েভ – ৭৬
৭৭. শকওয়েভ – ৭৭
৭৮. শকওয়েভ – ৭৮
৭৯. শকওয়েভ – ৭৯

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন