শকওয়েভ – ৩

কাজী আনোয়ার হোসেন

তিন

গ্রামীণ অক্সফোর্ডশায়ারের শান্তিময় গ্রামটার নাম লিটল ডেণ্টন।

রোববারের উষ্ণ, কুয়াশা মাখা শেষ সকাল।

ফুলের বাগিচায় গুনগুন শব্দ তুলে উড়ে বেড়াচ্ছে কালো ভ্রমর। গোটা আঙিনা সুগন্ধে মাতোয়ারা। পাখপাখালি কিচিরমিচির জুড়েছে মনের আনন্দে।

এরকম পরিবেশের বর্ণনা পাওয়া যায় রূপকথার বইয়ে। কিন্তু পাথুরে দেয়ালের ওপাশ থেকে দেখলে তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণশক্তি না থাকলেও যে-কারও চোখে ধরা পড়বে, মরে গেছে গাছগাছড়ায় ঘেরা ছোট্ট বাড়িটার প্রাণভোমরা। জানালার শার্সি আর বাইরের দেয়াল জুড়ে না-ছাঁটা আইভি লতার অবাধ বিস্তার।

লনটার অবস্থা আরও শোচনীয়। ঘাসগুলো বাড়তে বাড়তে চলে গেছে দূরের নদীর দিকে। গেল-শীতের ঝরা পাতাগুলোর বেশির ভাগ এখনও বসন্ত-বাতাসে গড়াগড়ি খাচ্ছে প্রাঙ্গণে।

স্থানীয় লোকজন এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি আকস্মিক মৃত্যুর ধাক্কাটা।

মাস পাঁচেক আগে মর্মান্তিক এক গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে গ্রামের তরুণ যাজক চার্লস প্যাটিনসন। মানুষটা অত্যন্ত প্রিয়পাত্র ছিল লিটল ডেণ্টনের সহজসরল, নিরীহ অধিবাসীদের। যাজকের হাসি মাখা মুখটা দেখলে দিনটা ভালো যায়, এমনই বিশ্বাস ছিল এ গাঁয়ের সবার।

প্যাটিনসন পরিবারের কয়েক প্রজন্মের পুরানো বাড়িটার কর্তৃত্ব এখন বর্তেছে যাজকের স্ত্রী ডায়ানা প্যাটিনসনের উপর। একটু একটু করে বুঝে নিচ্ছে সে পুরুষালি দায়িত্বগুলো। সম্পত্তির দেখভাল—সেটাও শিখে নিতে হচ্ছে যথাসাধ্য।

বাগানের একটা বেঞ্চিতে বসে অনেক পুরানো এক বিচ গাছের দিকে বিষণ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ডায়ানা। শোকাহত কারও দীর্ঘশ্বাসের মত থেকে থেকে বইছে বাতাস।

একা নয় ও।

তরুণীর পাশে বসা মানুষটি দৈর্ঘ্যে পাঁচ ফুট এগারো ইঞ্চি, বয়স আটাশ প্রায়। চোখ আর চুলের রং কুচকুচে কালো। দৃষ্টিতে রাজ্যের মায়া। রোদে পোড়া সুঠাম দেহ যেন টান টান করে E-তে বাঁধা গিটারের প্রথম স্ট্রিং।

রানা এজেন্সি-র লণ্ডন শাখার কাজকর্ম কেমন চলছে, সরেজমিনে দেখতে এসেছিল মাসুদ রানা। আগেই প্ল্যান করা ছিল, এদিকে এলে ক’দিন বেড়িয়ে যাবে লিটল ডেণ্টনের এই শান্ত গ্রামে, দেখা করে যাবে ইটন কলেজের প্রিয় দুই সহপাঠীর সঙ্গে। সেই মোতাবেক আসা ওর অক্সফোর্ড- শায়ারের ছোট্ট এই গাঁয়ে।

বদলে কী পেল? চরম দুঃসংবাদ।

রানার মনটা এক ছুটে চলে গেছে ওর সেই স্বর্ণোজ্জ্বল দুরন্ত কৈশোরে। ছোটবেলা থেকেই খানিকটা অন্য রকম ছিল বলে ওর প্রতি আকৃষ্ট হতো মেয়েরা। ডায়ানা ওয়াটসন ও হয়েছিল। এবং আরও অনেক মেয়ের মত রানার কাছে সাড়া না পেয়ে রেগে গিয়েছিল ভীষণ। জেদের বশে জড়িয়ে পড়ে রানারই প্রিয় বন্ধু চার্লস প্যাটিনসনের সঙ্গে।

আগে থেকেই ডায়ানাকে পছন্দ করত চার্লস। ঝোঁকের মাথায় রিলেশনে জড়িয়ে হাসিখুশি ছেলেটার প্রতি আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়ে জেদি কিশোরীও। স্কুল পেরিয়ে কলেজে ওঠে ওরা একই সঙ্গে।

পরে অবশ্য রানার সঙ্গেও সহজ, স্বাভাবিক হয়ে যায় ডায়ানার সম্পর্কটা। ত্রিরত্ন হয়ে ওঠে ওরা একটা সময়ে।

সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পরিণত হয় কাঁচা বয়সের বন্ধুত্ব। যথাসময়ে পরিণয়ে আবদ্ধ হয় চার্লস ও ডায়ানা। লিটল ডেণ্টন নামের নিভৃত এ গাঁয়ে ঈশ্বর ও মানবতার সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করে ওরা দুই বন্ধু।

ওদিকে, ওদের সম্পূর্ণ বিপরীত পথে হেঁটে রানা বেছে নেয় মৃত্যুঝুঁকিপূর্ণ এক বিপজ্জনক পেশা।

আর এখন দেহমন জুড়ে অসংখ্য লড়াইয়ের ক্ষতচিহ্ন নিয়ে ভাবছে—আরও একটা নাম যুক্ত হলো হারিয়ে ফেলা প্রিয়জনের তালিকায়। ওর নিজের মা-বাবাকেও তো এমনই এক সড়ক-দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে বড্ড অসময়ে।

হাই-ভেলোসিটি রাইফেলের গুলির মত বুকটা ওর এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিয়েছে বন্ধু চার্লসের অকাল মৃত্যু।

দীর্ঘশ্বাস ফেলল একটা।

এখানে আসার পর, বোঝার জন্য গবেষণা করতে হয়নি রানাকে, বেকায়দায় পড়েছে ডায়ানা পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে গিয়ে।

এড়িয়ে যেতে পারেনি ও নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য। ঢাকায় টেলিফোন করে সংক্ষেপে সব কিছু জানায় বিসিআই চিফকে।

প্রিয় এজেন্টের বন্ধুবিয়োগে খুবই মর্মাহত হয়েছেন বাংলাদেশ কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের বিগবস, মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) রাহাত খান। নিজে থেকেই বাড়িয়ে দিয়েছেন সদ্য সফলভাবে মিশন শেষ করা রানার ছুটি।

গত কয়েক দিন ধরে যতভাবে সম্ভব, ডায়ানা ও তার ছোট্ট ছেলেটাকে নানাভাবে সাহায্য করে চলেছে রানা। ওরা একটু সামলে নিলে ফিরবে দেশে।

আর বিপদের সময়ে অযাচিতভাবে পুরানো বন্ধুকে পাশে পেয়ে ডায়ানাও যেন চাঁদ পেয়েছে হাতে। নানান কাজের ফাঁকে ফাঁকে নিজের আর চার্লসের বিষয়ে প্রচুর কথা বলে বলে হালকা করেছে নিজেকে। শুনতে শুনতে আরও ভারি হয়েছে অজস্র স্মৃতির ভারে ভারাক্রান্ত রানার হৃদয়।

পুরানো বিচ গাছটার পাতাশূন্য, মরা একটা মোটা ডালের দিকে তাকিয়ে থেকে ভাবছে এখন, আজই কেটে ফেলতে হবে ওটা। এ ছাড়া শুরু করে দিতে হবে ঘাস কাটানোর কাজটাও।

আগেই লক্ষ করেছে, চার্লসের প্রিয় সামার হাউসের কাঁচের ছাতের উপর ঝুঁকে রয়েছে মরা ডালটা। জোর বাতাসে ভেঙে পড়তে পারে যখন-তখন। সেক্ষেত্রে ছাত মেরামতির এলাহি খরচের ধাক্কা তো রয়েছেই; কারও গায়ে গিয়ে যদি পড়ে, অপয়া হিসাবে পাকাপাকিভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে প্যাটিনসন হাউসের নামটা।

আরও কী কী জরুরি কাজ সেরে নিতে হবে, মনে মনে গুছিয়ে নিচ্ছে রানা, এমন সময় ঝোপঝাড় ভেঙে বেরিয়ে এল পাইপার মারু।

বিচিত্র এই নামের মানেটা কী, জানতে চেয়েছে ও। জবাবে বলেছে ডায়ানা, প্রিয় টিভি সিরিজে দেখা ফরাসি এক স্যালভিজ শিপের নামে নাম রেখেছে ও কুকুরটার। তারের মত পাকানো পশমের সারমেয়টি আদতে কোন জাতের টেরিয়ার, জানা নেই কারও।

না-ছাঁটা উঠন ধরে ছুট লাগাল প্যাটিনসনদের পোষা কুকুর। ক’টা গোলাপ গাছের বারোটা বাজিয়ে তাড়া খাওয়া তেলাপোকার মত সুড়ত করে অন্তর্হিত হলো দূরপ্রান্তের গুল্মলতার দঙ্গলে। শোনা গেল ওটার ফুর্তির ডাক। খরগোস-টরগোস দেখেছে বোধ হয়।

চারপেয়েটার কাণ্ডকারখানায় স্নেহ ঝরে পড়ল ডায়ানার চোখ থেকে। ওটাও ওর মত শোক সামলে উঠেছে বেশ অনেকখানি।

ডাল কাটার জন্য যা যা প্রয়োজন, সবই পেল রানা বাড়ির পিছনের উডশেডে। দড়ির বাণ্ডিল নিল ও ওখান থেকে। মই ঠেকাল গাছের গায়ে।

উপরে ওঠার পর ধীরস্থির সাবধানতায় আঠারো ফুট আন্দাজ চলে এল ডাল বেয়ে।

দু’চোখে শঙ্কা নিয়ে নিচ থেকে চেয়ে রয়েছে ডায়ানা। বিপজ্জনকভাবে লটকে থাকা অবস্থায় বেয়াড়া ডালটায় রশি বাঁধল রানা। ঠিকভাবে বাঁধা হয়েছে, নিশ্চিত হওয়ার পর নিচে এসে তুলে নিল চেইন-স।

ভালভ নেড়েচেড়ে প্রাইম করল ও যন্ত্রটার কার্বুরেটর। স্টার্ট কর্ড ধরে টান দিতেই টু-স্ট্রোক ইঞ্জিনের তীক্ষ্ণ গুঞ্জনে খান খান হয়ে ভেঙে পড়ল সকালবেলার প্রশান্তি।

সময় লাগল খণ্ড খণ্ড করে বিরাট আকারের ডালটা কেটে আলাদা করতে। সুচারু কাজ করা গ্লাসরুফের উপর যাতে ফসকে না পড়ে, সেদিকে লক্ষ রেখে রশির সাহায্যে সাবধানে নামিয়ে আনা হলো টুকরোগুলো।

‘চার্লির প্রিয় গাছ ছিল এটা,’ মন্তব্য করল ডায়ানা রানা নেমে এলে। ‘ছোটবেলার অনেক অ্যাডভেঞ্চারের গল্প শুনেছি ওর মুখে। পাখির ডিম-বাচ্চার খোঁজে চড়ত নাকি ওটায়। একটুর জন্য বেঁচে গিয়েছিল একবার সাপের কামড় খাওয়া থেকে। …ভালো লাগছে না এত বড় ডালটা এভাবে কাটতে হলো বলে।’

দীর্ঘশ্বাস চেপে চোখ তুাে চাইল রানা গাছটার দিকে। কড়া রোদ থেকে রক্ষা করছে ওদের মত একই বয়সী গাছটা শীতল ছায়া দিয়ে। মমতার পরশ যেন প্রিয় বন্ধুর।

‘বরং এটা ভেবে মনকে সান্ত্বনা দিতে পারো–ভালো লাকড়ি হবে এ দিয়ে,’ বলল ও চোখ নামিয়ে। ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসি। ‘কার্বন নিউট্রাল ফিউল। পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব নেই বললেই চলে। …চলো, উডশেডে নিয়ে রাখি এগুলো; ফাড়ব ওখানে।’

দুপুর হয়ে এল হাড়ভাঙা খাটুনির কাজটা শেষ হতে হতে। দু’জনেরই তেষ্টা পেয়েছে প্রচণ্ড। পেটও চোঁ-চোঁ করছে খিদেয়।

কিচেনের ঠাণ্ডায় বসল ওরা লম্বা পাইন টেবিলটায়। আয়েশ করে চিবাল মাংসের পুর দেয়া স্যাণ্ডউইচ। সঙ্গে রয়েছে ফ্রি থেকে বের করা বিয়ার।

খাওয়া শেষ হওয়ার আগেই বাচ্চা প্যাটিনসন ‘চ্যাঁ’ করে ওঠায় দ্রুত পায়ে বেরিয়ে গেল ডায়ানা।

রানা বসে রইল ওখানেই। খোলা জানালা দিয়ে কানে এল পাইপার মারুর উত্তেজিত ঘেউ ঘেউ।

নিচতলার হলওয়েতে সদর-দরজার ঘণ্টি বেজে উঠল একটু পর।

কে এল?

আবার বাজল ঘণ্টি।

আবারও।

তখনই খেয়াল হলো ওর, এদের বহু বছরের পুরানো কেয়ারটেকার বৃদ্ধ বাড়ি নেই এ মুহূর্তে। গাঁয়ের হাটে গেছে সদাইপাতি কেনার জন্য।

এত তাড়াতাড়ি তো ফিরবে না জন!

ডায়ানা বোধ হয় বাচ্চা নিয়ে ব্যস্ত এখন।

কিচেনের জানালা দিয়ে মাথা বের করল রানা। দেখতে পেল মেয়েটাকে।

‘ডায়ানা!’ ডাক দিল। ‘দেখেছ নাকি, কে এল?’

বাতাসের বিপরীতে বলে কথাগুলো কানে পৌঁছল না বান্ধবীর। ব্যস্ত সে এ মুহূর্তে, নজর নেই এদিকে।

রানাকেই উঠতে হলো অগত্যা। কিচেন থেকে বেরিয়ে চলল ও এন্ট্রান্স হলের উদ্দেশে।

ওদিকে মুহুর্মুহু বেজেই চলেছে দরজার বেলটা.

আচ্ছা অধৈর্য লোক তো!

‘আসছি… আসছি!’ চেঁচিয়ে সাড়া দিল বিরক্ত রানা।

নব ঘুরিয়ে হ্যাচকা টান দিয়ে খুলল ও দরজাটা।

চৌকাঠের ওপাশে দাঁড়ানো মানুষটিকে দেখে শিরশিরে অনুভূতি জাগল ওর পেটের মধ্যে।

ছিপছিপে গড়নের এক তরুণী দাঁড়িয়ে দোরগোড়ায়। শেষ যতটা দেখেছিল রানা, তার চেয়ে লম্বায় বেড়েছে চুলগুলো। ছড়িয়ে রয়েছে কাঁধের উপর। আর সব কিছু ঠিক আগের মতই।

ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে তাকিয়ে আছে রানা মেয়েটার দিকে।

‘সেলেনা, তুমি!’

সকল অধ্যায়

১. শকওয়েভ – ১
২. শকওয়েভ – ২
৩. শকওয়েভ – ৩
৪. শকওয়েভ – ৪
৫. শকওয়েভ – ৫
৬. শকওয়েভ – ৬
৭. শকওয়েভ – ৭
৮. শকওয়েভ – ৮
৯. শকওয়েভ – ৯
১০. শকওয়েভ – ১০
১১. শকওয়েভ – ১১
১২. শকওয়েভ – ১২
১৩. শকওয়েভ – ১৩
১৪. শকওয়েভ – ১৪
১৫. শকওয়েভ – ১৫
১৬. শকওয়েভ – ১৬
১৭. শকওয়েভ – ১৭
১৮. শকওয়েভ – ১৮
১৯. শকওয়েভ – ১৯
২০. শকওয়েভ – ২০
২১. শকওয়েভ – ২১
২২. শকওয়েভ – ২২
২৩. শকওয়েভ – ২৩
২৪. শকওয়েভ – ২৪
২৫. শকওয়েভ – ২৫
২৬. শকওয়েভ – ২৬
২৭. শকওয়েভ – ২৭
২৮. শকওয়েভ – ২৮
২৯. শকওয়েভ – ২৯
৩০. শকওয়েভ – ৩০
৩১. শকওয়েভ – ৩১
৩২. শকওয়েভ – ৩২
৩৩. শকওয়েভ – ৩৩
৩৪. শকওয়েভ – ৩৪
৩৫. শকওয়েভ – ৩৫
৩৬. শকওয়েভ – ৩৬
৩৭. শকওয়েভ – ৩৭
৩৮. শকওয়েভ – ৩৮
৩৯. শকওয়েভ – ৩৯
৪০. শকওয়েভ – ৪০
৪১. শকওয়েভ – ৪১
৪২. শকওয়েভ – ৪২
৪৩. শকওয়েভ – ৪৩
৪৪. শকওয়েভ – ৪৪
৪৫. শকওয়েভ – ৪৫
৪৬. শকওয়েভ – ৪৬
৪৭. শকওয়েভ – ৪৭
৪৮. শকওয়েভ – ৪৮
৪৯. শকওয়েভ – ৪৯
৫০. শকওয়েভ – ৫০
৫১. শকওয়েভ – ৫১
৫২. শকওয়েভ – ৫২
৫৩. শকওয়েভ – ৫৩
৫৪. শকওয়েভ – ৫৪
৫৫. শকওয়েভ – ৫৫
৫৬. শকওয়েভ – ৫৬
৫৭. শকওয়েভ – ৫৭
৫৮. শকওয়েভ – ৫৮
৫৯. শকওয়েভ – ৫৯
৬০. শকওয়েভ – ৬০
৬১. শকওয়েভ – ৬১
৬২. শকওয়েভ – ৬২
৬৩. শকওয়েভ – ৬৩
৬৪. শকওয়েভ – ৬৪
৬৫. শকওয়েভ – ৬৫
৬৬. শকওয়েভ – ৬৬
৬৭. শকওয়েভ – ৬৭
৬৮. শকওয়েভ – ৬৮
৬৯. শকওয়েভ – ৬৯
৭০. শকওয়েভ – ৭০
৭১. শকওয়েভ – ৭১
৭২. শকওয়েভ – ৭২
৭৩. শকওয়েভ – ৭৩
৭৪. শকওয়েভ – ৭৪
৭৫. শকওয়েভ – ৭৫
৭৬. শকওয়েভ – ৭৬
৭৭. শকওয়েভ – ৭৭
৭৮. শকওয়েভ – ৭৮
৭৯. শকওয়েভ – ৭৯

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন