শকওয়েভ – ৩৩

কাজী আনোয়ার হোসেন

তেত্রিশ

এক কি দু’সেকেণ্ডের জন্য অদৃশ্য পাখনা গজাল ওটার। যেন রোলার কোস্টারে চেপে বসেছে ওরা। ওজনহীনতার বিচিত্র অনুভূতি পেটের মধ্যে। নাড়িভুঁড়ি যেন উঠে আসতে চাইছে গলার কাছে। কিন্তু ঠিক অপ্রীতিকর নয় অনুভূতিটা, তাতে বরং মুক্তির আস্বাদ। ইঞ্জিনের গোঁ গোঁ আর সেলেনার চিৎকার মনে হচ্ছে বহু দূর থেকে আসছে।

ভয়ানক গতিতে মিসাইলের মত পতন শুরু হতেই পরিস্থিতি সম্বন্ধে সজাগ হতে হলো রানাকে।

পোর্টে দে সেভরেসগামী দ্বিমুখী রাস্তায় নামতে চলেছে মার্সিডিস। বিপরীত দিক থেকে বিশাল এক আর্টিকুলেটেড ট্রাকের রাগী, কঠোর নাকমুখ দেখতে পেল ও পতনের মাঝে। পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে গেল—ওটার ঠিক সামনেই পড়তে যাচ্ছে ওরা। ভেঙে চুরে, দুমড়ে মুচড়ে টারমাকে গড়াগড়ি খেতে চলেছে ট্যাক্সিটা।

ঘূর্ণমান চাকা ট্রাকের উপরটা স্পর্শ করতেই হাড়ে- মজ্জায় প্রচণ্ড ঝাঁকুনির সঙ্গে উপলব্ধি করল রানা, এখনই অদৃষ্টে মরণ লেখা নেই।

কড়কড় আওয়াজে হড়কে যাচ্ছে মার্সিডিস ট্রাকের উপর দিয়ে। শব্দে মনে হচ্ছে, দফা রফা হয়ে যাচ্ছে ছাতটার।

ছিটকে গেল গাড়ি ট্রাকের ছাত থেকে। শূন্যে থাকা অবস্থাতেই রাস্তার ধারে রাখা মালসামানগুলোর উদ্দেশে ডাইভ দিল দর্শনীয় এক মোচড় খেয়ে।

এক ইঞ্চির ব্যবধানে বেঁচে গেল ওরা ইস্পাতের জঞ্জালে পড়ে মোরব্বা হওয়া থেকে। ওগুলোকে ছাড়িয়ে দশ টনের একটা বালিস্তূপের উপর বাম দিকে কাত হয়ে ল্যাণ্ড করল মার্সিডিস। বোমা বিস্ফোরণের ভঙ্গিতে চতুর্দিকে ছিটকে উঠল বালিকণা।

ঝাঁকির চোটে হুমড়ি খেতেই এয়ারব্যাগের প্রচণ্ড এক নক-আউট পাঞ্চ লাগল রানার নাকে-মুখে। এক সেকেণ্ডের জন্য হকচকিয়ে গেল রানা, পরমুহূর্তেই সচকিত ও উদ্বিগ্ন হয়ে উঠল সেলেনার অবস্থা ভেবে।

শরীর ঘোরাল ও এয়ারব্যাগের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে। ডাকল নাম ধরে।

‘ঠ-ঠিক আছি আমি…’ জবাব এল ভোঁতা স্বরে। রিয়ার সিট আর ছাতের মাঝখানে পড়ে আছে সেলেনা। হাঁপাতে হাঁপাতে জিজ্ঞেস করল, ‘…ত্-তোমার কী অবস্থা?’

‘খারাপ না!’ যে-কারণেই হোক, ডান চোখটাতে দেখতে পাচ্ছে না রানা। রক্তের নোনতা স্বাদ জিভে। একটা সেলেনাকে দুটো দেখছে। টানাহেঁচড়া শুরু করল সিটবেল্টের বাঁধন থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য।

ওভারপাসের কিনারা দিয়ে মার্সিডিসটা বেরিয়ে যাওয়ার সময়, ত্রিমুখী সংঘর্ষ এড়াতে সর্বশক্তিতে ব্রেক চাপতে হয়েছে তিন অডিকে। অনেকটা জায়গা জুড়ে পিছলাতে পিছলাতে নিয়ন্ত্রণ হারাল তিন নম্বরটা। দর্শনীয়ভাবে ডিগবাজি খেতে খেতে উড়াল দিল ওটা ব্যারিকেডের হাঁ-টা দিয়ে। মুহূর্ত পরেই পিঠ দিয়ে পড়ল নিচের রাস্তায়।

একই সময়ে, আর্টিকুলেটেড ট্রাকের ট্রেলার ঘুরে গিয়ে ধাক্কা লাগিয়ে বসল ওভারপাস ব্রিজের ভারবাহী স্টিলের খাম্বাগুলোর একটাতে।

ব্রিজের যে-অংশে ব্যারিকেড ভেঙেছে, ওটার কাছাকাছি ভেসে রয়েছে ‘কপ্টারের চালক। স্থির করতে পারছে না ইতিকর্তব্য।

ট্রাকের বাড়িতে ভারসাম্য টলে উঠেছে ক্ষতিগ্রস্ত পাওয়ার মাস্টের, ধরাশায়ী হওয়ার জোগাড় কেইবলের ওজনে। পাইলট তার সিদ্ধান্ত নেয়ার আগেই, ডিম-সুতোর মত পটপট করে ছিঁড়ে গেল স্টিলের পুরু ওয়াওয়ার, জড়িয়ে গেল ওর টেইল রোটরের সঙ্গে। ফুলকিবৃষ্টি ঝরিয়ে তৎক্ষণাৎ অকেজো হলো ব্লেডগুলো।

এয়ারক্রাফটের লেজ ধরে টান মারল যেন ইস্পাতের কেইবল। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাক খেতে খেতে ভর্তা হলো ওটা ওভারপাসের গায়ে আছাড় খেয়ে। ফিউলের কারণে বিস্ফোরিত হলো যেন ছোটখাটো একটা সুপারনোভা। জ্বলন্ত জঞ্জালের টুকরো ঝরে পড়তে লাগল খোলা রাস্তায়।

বিস্ফোরণের প্রভাবে আগুন ধরে গেছে চেপ্টে যাওয়া তেলাপোকার মত রাস্তায় পড়ে থাকা অডিটাতে, আরোহীরা—যদি চেতনা থাকে তখনও – ওখান থেকে বেরোতে পারার আগেই জ্বলে উঠল দাউ দাউ করে।

ট্রাকের ভাঙা ক্যাব থেকে লাফ দিল ড্রাইভার। জ্বলন্ত জঞ্জালগুলো ছিটকে উড়ছে চতুর্দিকে, এর মাঝ দিয়েই অলিম্পিকের প্রতিযোগীর মত ছুট লাগাল সে জান হাতে নিয়ে।

ওভারপাসের আরেক অডির অবস্থাও করুণ। ভিতরের লোকগুলো বেরিয়ে আসার আগেই লেলিহান আগুন গ্রাস করে নিয়েছে ওটাকে।

মাত্র কয়েকটা সেকেণ্ডেই যুদ্ধের ময়দানে পরিণত হয়েছে যেন এলাকাটা। গলগল করে ওপরে উঠে মেঘেদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে ঘন, ধূসর ধোঁয়া।

ভাঙা উইণ্ডস্ক্রিনের যতখানি অবশিষ্ট রয়েছে, লাথি মেরে খসিয়ে ফেলল রানা। স্রোতের মত বালি ঢুকছে ক্যাবের মধ্যে, তারই মাঝ দিয়ে বেরিয়ে এল আছড়ে-পিছড়ে। পেট্রোল আর ছড়িয়ে পড়া ফ্লুইডের কড়া গন্ধ আসছে নাকে। কানের পর্দায় পীড়া দিচ্ছে ধাতু পোড়ার ফটফট আওয়াজ। ডান চোখটার অবস্থা আগের মতই, এখনও দেখতে পাচ্ছে না কিছু।

ভচকে যাওয়া আণ্ডারসাইড ঘুরে, টলমল করতে করতে এসে দাঁড়াল ও ঊর্ধ্বমুখী প্যাসেঞ্জার ডোরটার কাছে। আঁচড়ে-পাছড়ে ক্ষতবিক্ষত দরজাটার উপর উঠে ‘হেঁইয়ো’ বলে টান মারল প্রচণ্ড শক্তিতে।

খুলে গেল দরজা।

ঝুলে থাকা দুটো সেলেনার উদ্দেশে হাত বাড়িয়ে দিল রানা গাড়ির ভিতর।

হাতটা আঁকড়ে ধরে এখানে-ওখানে পা বাধিয়ে বেরিয়ে এল মেয়েটা।

নরম বালিতে বসে পড়ল ওরা কাত হয়ে থাকা মার্সিডিস থেকে পিছলে নেমে।

‘ঠিক আছ তুমি?’ জোর গলায় জিজ্ঞেস করল আবার রানা। ‘কোথাও লাগে-টাগেনি তো?’

‘নৃ-না… সামান্য ব্যথা পেয়েছি শুধু। কিন্তু তুমি তো দেখছি একেবারে নেয়ে গেছ রক্তে! কোত্থেকে এল এত রক্ত?’

কপালের ডান পাশটায় আঙুল ছোঁয়াল রানা। লাল রঙের ঘন প্রলেপ লেগে গেল আঙুলে। এতক্ষণে বুঝতে পারল, রক্তের ধারাই অন্ধ করে দিয়েছে ওর ডান চোখটা। আস্তিনের পিঠ দিয়ে চোখ মুছে নিয়ে পলক ফেলল বার কয়েক। হ্যাঁ… দুটো সেলেনা এখন একটা হয়ে গেছে।

‘অতটা খারাপ কিছু নয়,’ আশ্বস্ত করল ও সেলেনাকে। ‘সামান্য কেটেছে বোধ হয় মাথার কোথাও।

‘ওদিক দেখো, রানা!’ উঠে দাঁড়াল সেলেনা।

সিধে হয়ে দাঁড়িয়ে, তাকাল রানা ওভারপাসের দিকে অনেক উপরে মাথা তুলেছে জ্বলন্ত অডির অগ্নিশিখা। ট্যাপ খেয়ে যাওয়া স্কিডের সাহায্যে ব্রিজের গায়ে আটকে রয়েছে এখনও ‘কপ্টারের গনগনে ধ্বংসাবশেষ। কদাকার কোনও দানবীয় পতঙ্গ আত্মাহুতি দিয়েছে যেন আগুনে। ধ্বংসস্তূপ থেকে আকাশ ছুঁতে চাওয়া ধোঁয়ার বিশাল স্তম্ভ শুষে নিচ্ছে সূর্যের আলো।

মাথার ঘায়ে কুত্তা পাগল দশা ড্রাইভারগুলোর। অকস্মাৎ ব্রেক চেপে ইউ-টার্ন নিচ্ছে তারা কোনও মতে অ্যাকসিডেন্টটা এড়িয়েই। রাস্তার দু’পাশেই শত শত মিটার জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে যানজট। কে কার চেয়ে উঁচুতে গলা তুলতে পারে, সেটারই প্রতিযোগিতায় মেতেছে যেন হর্নগুলো।

দ্বিতীয় আরেকটা এক্সপ্লোশন দ্বিখণ্ডিত করে ফেলল যান্ত্রিক পতঙ্গটাকে। ওভারপাসের মায়া কাটিয়ে জ্বলন্ত খোলস ছিটকে পড়ল নিচের অডিটার পোড়া কঙ্কালের উপর।

দমকা এক পশলা হাওয়ায় ধোঁয়া সরে গেলে দেখতে পেল রানা, একটা মাত্র অডিই রক্ষা পেয়েছে এ বিপর্যয় থেকে।

পুরো এক শ’ আশি ডিগ্রি স্কিড করে থেমেছে ওটা। বাঁ পাশের ড্যামেজ থেকে বুঝতে পারল ও—ওটাকেই ধাক্কা মেরেছিল সুড়ঙ্গের ভিতর।

বেরিয়ে এসেছে অডির চার আরোহী। ট্রাফিক জ্যামের কারণে এমনই অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে রাস্তায়, কোণঠাসা হয়ে পড়েছে গাড়িটা। উপায় নেই পায়ে হেঁটে মঞ্চ ত্যাগ করা ছাড়া।

নিচের অবস্থা দেখার জন্য ওদের একজন উঁকি দিল ওভারপাস ব্যারিয়ার থেকে। অত দূর থেকেও চোখাচোখি হলো রানার সঙ্গে।

কঠোর চেহারার সোনালিচুলোকে চিনতে পারল রানা। ছ’ফুট দুই কি তিন হবে ষাঁড়ের মত চওড়া কাঁধের অধিকারী ড্রাইভার।

মাত্র একটা মুহূর্তই চোখে চোখে চেয়ে রইল ওরা। তার পরই ধোঁয়া আর গোলমালের মধ্যে হারিয়ে গেল দলটা।

আলোর ঝলকানি দেখা গেল ওভারপাসের উপর। হর্নের কোরাসের সঙ্গে যুক্ত হলো এবার সাইরেনের তীক্ষ্ণ আগমনধ্বনি। ধুপধুপ আওয়াজে যথাসম্ভব নিচে নেমে আসছে পুলিসের হেলিকপ্টার।

‘জলদি কেটে পড়তে হবে এখান থেকে,’ রানার বিজ্ঞ মতামত।

দ্বিমত করল না সেলেনা।

চেহারা থেকে রক্ত মুছে নিয়ে গাড়ির ভিতর আবার হাত ঢোকাল রানা। ব্যাগটা কাঁধে ঝুলিয়েই দৌড় শুরু করল রক্ত মাখা হাতে মেয়েটার কবজি আঁকড়ে ধরে। শ’খানেক গজ দূরের বিল্ডিংগুলোই লক্ষ্য।

আচমকা থামাতে হলো দৌড়। সেলেনাকেও ফেলে দেয়ার জোগাড় করল রানা হ্যাঁচকা টান মেরে। সাইড স্ট্রিট থেকে কথা-নেই-বার্তা-নেই, বেরিয়ে এসেছে একটা রংচঙা গাড়ি। আরেকটু হলেই পড়ত ওরা ওটার তলায়।

অপ্রস্তুতভাবে ব্রেক কষতে হওয়ায় কোষ্ঠকাঠিন্যের রোগীর মত ককিয়ে উঠল গাড়িটা। ঝটকা দিয়ে খুলে গেল ড্রাইভারের দরজা।

আদ্যি কালের এক সিত্রোঁ ডায়ান ওটা। কোঁকড়াচুলো, দাড়িঅলা ড্রাইভারের চেয়েও বয়স অন্তত এক যুগ বেশি গাড়িটার। বহুরঙা ফুলের ছোপছাপ সারা বডিতে।

সতর্ক ভঙ্গিতে স্টিয়ারিঙের পিছন থেকে বেরিয়ে এল লোকটা।

‘ও, মোর খোদা!’ ওভারপাসের প্রলয়কাণ্ড আর সামনে দাঁড়ানো বিপর্যস্ত জুটিটিকে দেখে চোয়াল ঝুলে পড়েছে দেড়েলটার। ‘আস্ত আছ তো তোমরা?’

‘গাড়িটা কি আপনার?’ সেলেনার হাত ছেড়ে দিয়েছে রানা।

‘মাথাটা যে তরমুজের মত ফাটিয়ে ফেলেছ, টের পেয়েছ, ভায়া?’

‘জিজ্ঞেস করেছি, গাড়িটা আপনার নাকি?’

জোরে জোরে মাথা ঝাঁকাল হিপ্পি।

‘সার্ভিস দেয় কেমন? সত্যি কথা বলুন।’

দৃশ্যপটে এবার অ্যামবুলেন্স এসে হাজির হতেই বেড়ে গেল নানান স্কেলে সাইরেনের তীক্ষ্ণ নাদ। সেই সঙ্গে বাতাস কাঁপাচ্ছে আরও কয়েকটা পুলিস চপার।

‘সার্ভিস তো রীতিমত ফাস কেলাস… যেরকমটা হওয়া উচিত আর কী,’ নিজের গাড়ির তারিফ করল দেড়েল। ‘কেন জানতে চাইছ, ভায়া?’

ওটার মালিকানা চাই আমার। কততে ছাড়বেন?’

‘আরিশশালা!’ বিস্ময় ধরে না হিপ্পির। ‘আমিও তো ভাবছিলাম পার করে দেয়ার কথা! …মানে… পাঁচ শ’?’

দ্রুত টাকা গুনে বুঝিয়ে দিল রানা লোকটাকে। দামদর করার সময় নয় এটা।

ছোট এক ঝোলা এবং আরও কয়েকটা জিনিস গাড়ি থেকে বের করে নিল সিত্রোঁর পুরানো মালিক।

সামনে আসীন হলো রানা-সেলেনা।

খড়খড় আওয়াজে গলা সাফ করতে লাগল টুইন- সিলিণ্ডার ইঞ্জিন।

শার্প টার্ন নিল রানা।

ধোঁয়ার মেঘকে সঙ্গী করে ছুটে চলেছে হিপ্পি-গাড়ি।

সকল অধ্যায়

১. শকওয়েভ – ১
২. শকওয়েভ – ২
৩. শকওয়েভ – ৩
৪. শকওয়েভ – ৪
৫. শকওয়েভ – ৫
৬. শকওয়েভ – ৬
৭. শকওয়েভ – ৭
৮. শকওয়েভ – ৮
৯. শকওয়েভ – ৯
১০. শকওয়েভ – ১০
১১. শকওয়েভ – ১১
১২. শকওয়েভ – ১২
১৩. শকওয়েভ – ১৩
১৪. শকওয়েভ – ১৪
১৫. শকওয়েভ – ১৫
১৬. শকওয়েভ – ১৬
১৭. শকওয়েভ – ১৭
১৮. শকওয়েভ – ১৮
১৯. শকওয়েভ – ১৯
২০. শকওয়েভ – ২০
২১. শকওয়েভ – ২১
২২. শকওয়েভ – ২২
২৩. শকওয়েভ – ২৩
২৪. শকওয়েভ – ২৪
২৫. শকওয়েভ – ২৫
২৬. শকওয়েভ – ২৬
২৭. শকওয়েভ – ২৭
২৮. শকওয়েভ – ২৮
২৯. শকওয়েভ – ২৯
৩০. শকওয়েভ – ৩০
৩১. শকওয়েভ – ৩১
৩২. শকওয়েভ – ৩২
৩৩. শকওয়েভ – ৩৩
৩৪. শকওয়েভ – ৩৪
৩৫. শকওয়েভ – ৩৫
৩৬. শকওয়েভ – ৩৬
৩৭. শকওয়েভ – ৩৭
৩৮. শকওয়েভ – ৩৮
৩৯. শকওয়েভ – ৩৯
৪০. শকওয়েভ – ৪০
৪১. শকওয়েভ – ৪১
৪২. শকওয়েভ – ৪২
৪৩. শকওয়েভ – ৪৩
৪৪. শকওয়েভ – ৪৪
৪৫. শকওয়েভ – ৪৫
৪৬. শকওয়েভ – ৪৬
৪৭. শকওয়েভ – ৪৭
৪৮. শকওয়েভ – ৪৮
৪৯. শকওয়েভ – ৪৯
৫০. শকওয়েভ – ৫০
৫১. শকওয়েভ – ৫১
৫২. শকওয়েভ – ৫২
৫৩. শকওয়েভ – ৫৩
৫৪. শকওয়েভ – ৫৪
৫৫. শকওয়েভ – ৫৫
৫৬. শকওয়েভ – ৫৬
৫৭. শকওয়েভ – ৫৭
৫৮. শকওয়েভ – ৫৮
৫৯. শকওয়েভ – ৫৯
৬০. শকওয়েভ – ৬০
৬১. শকওয়েভ – ৬১
৬২. শকওয়েভ – ৬২
৬৩. শকওয়েভ – ৬৩
৬৪. শকওয়েভ – ৬৪
৬৫. শকওয়েভ – ৬৫
৬৬. শকওয়েভ – ৬৬
৬৭. শকওয়েভ – ৬৭
৬৮. শকওয়েভ – ৬৮
৬৯. শকওয়েভ – ৬৯
৭০. শকওয়েভ – ৭০
৭১. শকওয়েভ – ৭১
৭২. শকওয়েভ – ৭২
৭৩. শকওয়েভ – ৭৩
৭৪. শকওয়েভ – ৭৪
৭৫. শকওয়েভ – ৭৫
৭৬. শকওয়েভ – ৭৬
৭৭. শকওয়েভ – ৭৭
৭৮. শকওয়েভ – ৭৮
৭৯. শকওয়েভ – ৭৯

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন