শকওয়েভ – ২৬

কাজী আনোয়ার হোসেন

ছাব্বিশ

দুর্যোগ-এলাকার চিত্র এগুলো। ঘুরে-ফিরে একই ধাঁচের জিনিস প্রতিটা ফাইলে। ধ্বংসস্তূপে একাকার হয়ে আছে রাস্তাঘাট। মুখ থুবড়ে পড়া ব্রিজ আর দরদালান। সর্বহারা মানুষ ঘুরে বেড়াচ্ছে ধ্বংসাবশেষের মাঝে। বেঁচে যাওয়াদের উদ্ধার করা হচ্ছে ভগ্নস্তূপ থেকে। ধুলোয় খেলছে উদ্বাস্তু শিশুরা।

‘ভূমিকম্পের ছবি,’ বিড়বিড় করল সেলেনা। ‘কারণটা কী? সাইসমোলজিস্ট কিংবা জিয়োলজিস্ট তো ছিল না ক্যারেন!’

‘এমনকী ওয়েব থেকেও কালেক্ট করা হয়নি ছবিগুলো,’ জুগিয়ে দিল রানা। ক্যারেন ল্যানকাউমের পাসপোর্টে দেখা ইমিগ্রেশন স্ট্যাম্পগুলোর কথা ভাবছে। ‘নিজেই গিয়ে ওসব জায়গার ছবি তুলেছে ক্যারেন। সেই একই প্রশ্ন—কেন? টেসলা রিসার্চের সঙ্গে কী সম্পর্ক এসবের?’

জবাব দিতে পারল না, পুরোপুরি হতভম্ব দেখাচ্ছে সেলেনাকে।

স্ক্রিনে যে-ছবিটা খোলা রয়েছে এ মুহূর্তে, ভূমিকম্পে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত এক শহরের প্যানোরামিক শট ওটা। এক সময়ের সুরম্য স্কাইস্ক্র্যাপারগুলোর জায়গায় ইটপাথরের বিস্তীর্ণ জঞ্জাল এখন। ধসে পড়া ঘরবাড়ি থেকে যে যা পারছে, বের করে আনছে দুর্গত মানুষ।

‘ভয়াবহ!’ থম মেরে গেছে সেলেনা। আরও কাছে চোখ নিয়ে এল ছবিটার। তার পর স্ক্রিনে আঙুল ঠেকিয়ে বলল, ‘ভাঙাচোরা এই স্ট্রাকচারটা দেখো… আর এই লোকগুলো! মনে হচ্ছে না, সেন্ট্রাল অথবা দক্ষিণ আমেরিকার কোনও জায়গা?’

‘সাউথ আমেরিকার ভিসা স্ট্যাম্প ছিল ক্যারেনের পাসপোর্টে।’ মনে পড়ল রানার। ‘রিপাবলিক অভ টারাকা।’

‘শোনা শোনা লাগছে নামটা…’ স্মরণ করার চেষ্টা করছে মেয়েটা। ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ… মনে পড়েছে! বছর দেড়েক আগে বিরাট এক ভূমিকম্প হয়েছিল ওখানে। বেশ কিছু দিন সংবাদমাধ্যমের প্রধান খবর ছিল ওটা।’

‘কিন্তু কী করছিল ও টারাকায়?’

‘প্রশ্ন তো আমারও!

‘আর একটাই ইমেজ ফাইল রয়েছে, দেখতে পাচ্ছি। দেখা যাক, কী রয়েছে এটায়।’

ফাইলটা ওপেন করল সেলেনা। উন্মুখ হয়ে নোটবুকের পর্দার দিকে তাকিয়ে রয়েছে ওরা।

ছায়ানিবিড় কোনও পল্লী এলাকার কোনও এক বাড়ির ছবি ওটা। বলা ভালো, রৌদ্রস্নাত ওক গাছে ঘেরা বাড়ি ছিল ওটা একদা।

একটা বাদে আর-সব পাথরের দেয়াল ধসে পড়েছে বাড়িটার। ছাতটাও।

‘কোন্ জায়গায় এটা?’ নৈর্ব্যক্তিকভাবে জিজ্ঞেস করল সেলেনা।

‘ফ্রান্স হতে পারে…’ রানার অনুমান। ‘না… সম্ভবত বেলজিয়াম।’ ধ্বংসের কবল থেকে বেঁচে যাওয়া দেয়ালটা দেখাল। ‘ওদেশের নির্মাণশৈলীই নির্দেশ করছে জানালার শাটারগুলো।’

‘ইয়োরোপের এই অংশে কবে এরকম ভয়াবহ ভূমিকম্প হলো?’ মাথা নাড়ল সেলেনা। ‘না, ভূমিকম্পের কারণে হতে পারে না এমনটা। গাছগুলো তো সব যেমন-কে-তেমনই রয়েছে!’

‘হ্যাঁ, ধোপে টেকে না। হয় বয়সের কারণে ভেঙে পড়েছে বাড়িটা, আর নয় তো…’

‘নয় তো কী, রানা?’

‘টেসলা মেশিনের কারসাজি,’ এমনভাবে মাথা নেড়ে বলল রানা, যেন নিজেই বোঝাপড়া করছে নিজের সাথে।

‘ক্যারেন?’

‘তবে আর কে?’

‘আরও কিছু ছবি-টবি থাকলে শিয়োর হওয়া যেত হয়তো,’ আফসোসের সুরে বলল সেলেনা। ‘এখন এই ডকুমেন্ট ফাইলগুলোই সম্বল। দেখতে থাকি একটা একটা করে। পেলেও পাওয়া যেতে পারে কিছু-না-কিছু।’

ছবিটা বন্ধ করল ও। ক্লিক করল পরের ফাইলে।

টেকনিকাল ডেটা দিয়ে বোঝাই ডকুমেন্টটা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঘটা ভূমিকম্পের তীব্রতা এবং ধ্বংসক্ষমতা বিশ্লেষণ করা হয়েছে তথ্যগুলোতে। রয়েছে রিখটার স্কেল রিডিঙের গ্রাফ আর চার্ট, মানচিত্র আর এরিয়াল ফোটো।

‘ঈশ্বর!’ গুঙিয়ে উঠল সেলেনা। ‘এগুলোও দেখছি সাইসমোলজির জিনিস। মাথায় ধরছে না ব্যাপারটা!’

নাভিশ্বাস উঠে গেল দেখতে দেখতে। তা-ও চোখ সরাতে পারছে না ওরা কমপিউটারের পর্দা থেকে। যতই দেখছে, ততই জড়িয়ে যাচ্ছে বিভ্রান্তির জালে।

‘হয় যথেচ্ছভাবে ড্রাইভে ভরেছে এগুলো ক্যারেন বলতে শুরু করেছিল রানা।

‘আর নয় তো যোগসূত্র রয়েছে কোনও কিছুর সঙ্গে, ‘ বাক্যটা শেষ করে দিল সেলেনা। ‘দ্বিতীয়টা হওয়ারই সম্ভাবনা বেশি। এলেবেলেভাবে কাজ করার মেয়ে ছিল না ক্যারেন। কোনও একটা কারণ নিশ্চয়ই রয়েছে এসব তথ্য জড়ো করার পিছনে। আর সেটাতেই ভয় আমার, রানা। এমন কিছুর সঙ্গে জড়িয়েছিল মেয়েটা, যা আমার ধারণারও বাইরে।’ নোটবুক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে রগড়াল চোখ দুটো। ‘আর নিতে পারছি না আমি। চোখের অবস্থা খারাপ।’

‘আরেকটু দেখো,’ অনুরোধ করল রানা।

ক্লিক করল সেলেনা পরের ফাইলে।

‘ক্রমেই সৃষ্টিছাড়া হয়ে উঠছে দেখছি ব্যাপারটা!’ আরও কনফিউজড হয়ে পড়েছে মেয়েটা। ‘কী লিখেছে, দেখো! ভবিষ্যৎ টের পাওয়া প্রাণীদের আচরণ নিয়ে এটা।’

পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে না, কেন—প্রাণীদের মনস্তত্ত্বের উপর নানান ধরনের গবেষণা নিয়ে পর্যালোচনা করেছে সেলেনার বান্ধবী। ঝড়বাদল এবং আরও সব প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসার আঁচ পায় কীভাবে বুনো অথবা বন্দি প্রাণী, গবেষণার প্রতিপাদ্য এটাই। বিষয়টা রহস্যাবৃত আজও। পাখিদের নীড় ছেড়ে পলায়ন, কুকুরের বিক্ষিপ্ত ঘেউ ঘেউ, চিড়িয়াখানায় জন্তুজানোয়ারের অস্থিরতা—আসন্ন দুর্যোগের ইঙ্গিত বলে মনে করা হয় এগুলোকে।

ক্যারেনের নিজস্ব মন্তব্যও রয়েছে ডকুমেন্টে।

‘গবেষণায় দেখা গেছে, প্রাণীদের এহেন আচরণ থেকে দুই ঘণ্টা বা তারও আগে থেকে আভাস পাওয়া যাচ্ছে দুর্যোগের,’‘ পড়ছে সেলেনা রানাকে শুনিয়ে। ‘বিশ্লেষণ থেকে প্রমাণও দেখতে পাচ্ছি আমরা গবেষণার স্বপক্ষে।’‘ ঘোঁত করে উঠল মেয়েটা। ‘বুঝলাম, ক্যারেন। যেটা বুঝছি না—টেসলার সঙ্গে এর সংযোগটা কোথায়?

‘একটা ভিডিয়ো ক্লিপও সংযুক্ত রয়েছে ডকুমেন্টে,’ বলল রানা।

লো-ডেফিনিশন ভিডিয়োটা চলতে শুরু করতেই ফুল স্ক্রিন ভিউতে দিল ওটা সেলেনা।

গ্রাম্য কোনও অঞ্চলের ফুটেজ ওটা। রৌদ্রদগ্ধ শুষ্ক এলাকা।

‘স্পেন নাকি?’ সেলেনার অনুমান।

‘ল্যাটিন আমেরিকার অন্য কোনও দেশও হতে পারে।’

ধূলিধূসরিত এক পাল ঘোড়া-সদৃশ জন্তুর প্যানোরামিক শট নেয়া হয়েছে কম্পমান ক্যামকর্ডারে। অস্থায়ী এক ব্যারিকেডের পিছনে অস্থির ভঙ্গিতে আগুপিছু করছে প্রাণীগুলো।

‘ঘোড়ার ফুটেজ নিল কেন ক্যারেন?’ প্রশ্ন সেলেনার।

‘খচ্চর এগুলো,’ ভুল সংশোধন করে দিল রানা। ‘তাতেই বা কী বুঝব?’

ভিডিয়োর ব্যাকগ্রাউণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির যে নমুনা দেখা যাচ্ছে, স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, ভূমিকম্পই দায়ী এর জন্য। কড়া সূর্যের নিচে ঘেমে নেয়ে জঞ্জাল সাফ করছে এক দল সাহসী লেবারার। তাপতরঙ্গের কারণে নাচছে বলে মনে হচ্ছে ভেঙে গুঁড়িয়ে যাওয়া লাইমস্টোন দালানের ভগ্নাবশেষ। আংশিক ধস নেমেছে গাছগাছালিতে ছাওয়া পাহাড়ের এক পাশে। পাথরের তলায় চাপা পড়ে আছে আস্ত এক ট্রাকের অর্ধেকটা।

ওরা ফুটেজ দেখছে, এ সময় এক সেকেণ্ডের জন্য টলে গেল ক্যামেরাটা। হঠাৎ একটা নারী অবয়ব ধরা পড়ল ক্যামেরায়। স্বাস্থ্য মোটামুটি, বয়স আটাশ থেকে তিরিশের মধ্যে। ঢিলেঢালা টি-শার্ট আর শর্টস পরেছে।

‘ক্যারেন!’ বলে উঠল সেলেনা। ফিসফিস করছে। ‘ক্যামেরার পিছনের মানুষটা কে তা হলে!’

এর পর ঢ্যাঙা এক ব্যক্তি উদয় হলো ক্যামেরার সামনে। ফরাসি টানের ইংরেজিতে সেনিয়োর পিয়েত্রো সিবিল বলে পরিচয় করিয়ে দিল তাকে ক্যামেরার আড়ালে থাকা ক্যারেন। স্যান ভিসেন্তে শহর থেকে সাত মাইল দূরে স্যান্টা সিলভানা মিউল স্যাংচুয়ারির মালিক-কাম-পরিচালক ভদ্রলোক।

‘নিশ্চিত আমি, আগেও শুনেছি শহরটার নাম,’ বলল সেলেনা। ‘কিন্তু মনে পড়ছে না, কোন্ দেশে ওটা।’

বাক্য ব্যয় করল না রানা। দেখছে ও ভিডিয়োটা। শুরু হয়েছে সাক্ষাৎকার। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পের আগে প্রাণীদের রিয়্যাকশন নিয়ে সেনিয়োর সিবিলকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ক্যারেন মন্থর ইংরেজিতে।

উনিশ শ’ ছিয়ানব্বই সালেও ছোটখাটো একটা ভূমিকম্প হয়েছিল ওই এলাকায়। অস্থির আচরণের মাধ্যমে পাক্কা দেড় ঘণ্টা আগে কীভাবে সেটার জানান দিয়েছিল স্যাংচুয়ারির মিউলগুলো, চোখমুখের ভঙ্গিমায় সেটারই বর্ণনা দিয়ে চলল খামারমালিক। কিন্তু এবারে নাকি সেরকম কোনও আভাসই দেখা যায়নি প্রাণীগুলোর মাঝে।

‘কোনও রকম জানান না দিয়ে ভূমিকম্প আসায় যতটা অপ্রস্তুত ওগুলো, ততটাই বিস্মিত হয়েছি আমরা।’ দীর্ঘশ্বাস ফেলে তাকাল লোকটা ধ্বংসস্তূপের দিকে। ‘ওরা যেন হারিয়ে ফেলেছে ওদের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের ক্ষমতা। টেরটিও পেল না, আসছে কম্পন!

শেষ হয়ে গেল ভিডিয়োটা।

‘সবটা মিলিয়ে কী দাঁড়াল তা হলে?’ রানার জিজ্ঞাসা।

‘মাই গড, ঘুমে ভেঙে আসছে শরীরটা!’ চেয়ারে হেলান দিয়ে দুই হাতে চোখ ঢাকল সেলেনা। কাঁপছে অল্প অল্প। দু’ঘণ্টা হলো, তাকিয়ে রয়েছে ওরা কমপিউটারের পর্দায়। ‘অটোয়া ছাড়ার পর থেকেই বিশ্রাম নেই এক ফোঁটা!’

‘আরেকটু বসো,’ ধাঁধাটার সুরাহা না হওয়ায় স্বস্তি পাচ্ছে না রানা।

‘মাফ চাই, রানা! আর কাজ করছে না মাথা!’

এটা-ওটা ধরে চেয়ার ছাড়ল মেয়েটা। ভেঙে পড়তে চাইছে শরীর। আরামকেদারাটার কাছে গিয়ে ডেড শট খাওয়া ঘুঘুর মত ‘ধুপ’ করে নরম গদিতে ছেড়ে দিল নিজেকে।

ওকে জোর করল না রানা। কমপিউটারটা কাছে টেনে নিল। ক্লিক করল শেষ একটা ফাইলে।

ক্যারেন ও জনৈক G-এর মধ্যকার কথোপকথনে ভর্তি ওটা। গত নয় মাসে চালাচালি হওয়া ই-মেইলগুলো সেভ করে রাখা হয়েছে এখানে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তিরা যে-ধরনের ওয়েবমেইল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে থাকে, তেমনই এক অ্যাকাউন্ট থেকে মেইলগুলো পাঠিয়েছে জি নামের চরিত্রটি।

‘তুমি হয়তো দেখতে চাইবে এগুলো,’ বলল রানা সেলেনাকে উদ্দেশ্য করে।

সকল অধ্যায়

১. শকওয়েভ – ১
২. শকওয়েভ – ২
৩. শকওয়েভ – ৩
৪. শকওয়েভ – ৪
৫. শকওয়েভ – ৫
৬. শকওয়েভ – ৬
৭. শকওয়েভ – ৭
৮. শকওয়েভ – ৮
৯. শকওয়েভ – ৯
১০. শকওয়েভ – ১০
১১. শকওয়েভ – ১১
১২. শকওয়েভ – ১২
১৩. শকওয়েভ – ১৩
১৪. শকওয়েভ – ১৪
১৫. শকওয়েভ – ১৫
১৬. শকওয়েভ – ১৬
১৭. শকওয়েভ – ১৭
১৮. শকওয়েভ – ১৮
১৯. শকওয়েভ – ১৯
২০. শকওয়েভ – ২০
২১. শকওয়েভ – ২১
২২. শকওয়েভ – ২২
২৩. শকওয়েভ – ২৩
২৪. শকওয়েভ – ২৪
২৫. শকওয়েভ – ২৫
২৬. শকওয়েভ – ২৬
২৭. শকওয়েভ – ২৭
২৮. শকওয়েভ – ২৮
২৯. শকওয়েভ – ২৯
৩০. শকওয়েভ – ৩০
৩১. শকওয়েভ – ৩১
৩২. শকওয়েভ – ৩২
৩৩. শকওয়েভ – ৩৩
৩৪. শকওয়েভ – ৩৪
৩৫. শকওয়েভ – ৩৫
৩৬. শকওয়েভ – ৩৬
৩৭. শকওয়েভ – ৩৭
৩৮. শকওয়েভ – ৩৮
৩৯. শকওয়েভ – ৩৯
৪০. শকওয়েভ – ৪০
৪১. শকওয়েভ – ৪১
৪২. শকওয়েভ – ৪২
৪৩. শকওয়েভ – ৪৩
৪৪. শকওয়েভ – ৪৪
৪৫. শকওয়েভ – ৪৫
৪৬. শকওয়েভ – ৪৬
৪৭. শকওয়েভ – ৪৭
৪৮. শকওয়েভ – ৪৮
৪৯. শকওয়েভ – ৪৯
৫০. শকওয়েভ – ৫০
৫১. শকওয়েভ – ৫১
৫২. শকওয়েভ – ৫২
৫৩. শকওয়েভ – ৫৩
৫৪. শকওয়েভ – ৫৪
৫৫. শকওয়েভ – ৫৫
৫৬. শকওয়েভ – ৫৬
৫৭. শকওয়েভ – ৫৭
৫৮. শকওয়েভ – ৫৮
৫৯. শকওয়েভ – ৫৯
৬০. শকওয়েভ – ৬০
৬১. শকওয়েভ – ৬১
৬২. শকওয়েভ – ৬২
৬৩. শকওয়েভ – ৬৩
৬৪. শকওয়েভ – ৬৪
৬৫. শকওয়েভ – ৬৫
৬৬. শকওয়েভ – ৬৬
৬৭. শকওয়েভ – ৬৭
৬৮. শকওয়েভ – ৬৮
৬৯. শকওয়েভ – ৬৯
৭০. শকওয়েভ – ৭০
৭১. শকওয়েভ – ৭১
৭২. শকওয়েভ – ৭২
৭৩. শকওয়েভ – ৭৩
৭৪. শকওয়েভ – ৭৪
৭৫. শকওয়েভ – ৭৫
৭৬. শকওয়েভ – ৭৬
৭৭. শকওয়েভ – ৭৭
৭৮. শকওয়েভ – ৭৮
৭৯. শকওয়েভ – ৭৯

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন