ইউসুফ লগ্নজিতা

অর্পিতা সরকার

 —এক কাজ করো। সরলাদেবীর প্রতিটা গতিবিধির ওপরে নজর রাখো আগামীকাল থেকেই। মহিলা একেবারেই সুবিধার নয়। মানসিক রোগী, সঙ্গে চূড়ান্ত ডার্ক একটা চরিত্র। উনি নিজেই জানেন না উনি কী চান।

ইউসুফ বলল, ‘ম্যাডাম, রাহুল বাইক নিয়ে বেরিয়েছিল। অফিসে যায়নি। একটা বস্তি টাইপ এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিল। দু-একজনকে ভুবনেশ্বর মণ্ডলের বাড়ি জিজ্ঞাসা করেছিল। শেষ অবধি একটা বুড়ো মতো লোককে ব্রজধামে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি ফিরে গেল।’

ইউসুফ কিছু বলার আগেই লগ্নজিতা বলল, ‘ভুবনেশ্বর মণ্ডল মন্টুর মামা। ওর কাছেই মানুষ হয়েছিল মন্টু। হয়তো মন্টুর পাওনা টাকা দিয়ে দিতে চায় ওকেই। আর কিছু খবর?’

ইউসুফ একটু ইতস্তত করে বলল, ‘ওই বাসুদেবের মেয়েটা সুবিধার নয় ম্যাডাম। একসঙ্গে জনা তিন চার ছেলেকে নাচিয়ে বেড়ায়। বাবাটাও সুবিধার নয়। যত গুন্ডা, স্মাগলারদের সঙ্গে আড্ডা দেয়। ওই মানিক চৌধুরী—যাকে ধরতে গিয়ে আপনার হাতে অ্যাক্সিডেন্ট হল ম্যাডাম, এ মালটার সঙ্গে ওই মানিক চৌধুরীর যোগাযোগ আছে। মানিক এ লাইনের অনেকদিনের লোক। সবরকম হাত সাফাইয়ে অভ্যস্ত। এই তো তিনদিন হল পুলিশের খাতায় নাম উঠেছে ওই স্কুলের ব্যাপারটা নিয়ে। এর আগেও ও অনেক কাজ করে বেরিয়েছে।’

লগ্নজিতা জানে ইউসুফের এসব ব্যাপার নখদর্পণে। ও নিজেও একসময় এটিএম হ্যাকিং করতে গিয়ে ধরা পড়েছিল। এখন অবশ্য এসব লাইন ছেড়ে পুলিশের ইনফর্মারের চাকরিতে জয়েন করেছে। তবে কলকাতার গলিঘুঁজি ওর মুখস্থ। তাই মানিক চৌধুরীর ইতিহাস যে ওর অজানা নয়, সেটা লগ্নজিতাও জানে।

লগ্নজিতা বলল, ‘মানিকের সঙ্গে বাসুবাবুর যোগাযোগ সূত্র খুঁজে পেয়েছো?’

ইউসুফ বলল, ‘হ্যাঁ, ম্যাডাম। দিন তিনেক আগে দুটো অষ্টধাতুর রেয়ার মূর্তি মানিক বাসুবাবুর হাতে দিয়ে গেছে। মূর্তি দুটো চোরাই। বলাইপুরের কৃষ্ণমন্দির থেকে চুরি করে এনেছে মানিক। বাসুবাবু এসব মূর্তি শুধু জমায় বলে আমার বিশ্বাস হয় না। মোটা দামে কাউকে বিক্রি করে বলেই আমার ধারণা। আরেকটা খবরও পেলাম। আমাদের ট্যাংরায় একটা অ্যাংলো ইন্ডিয়ান ফ্যামিলি বাস করত। ভদ্রলোক আগেই মারা গিয়েছিল। ভদ্রমহিলার বাড়িতে প্রায়ই বাসুদেববাবু যাতায়াত করছে। ভিতরের গল্পটা এখনও জানি না।’

লগ্নজিতা বলল, ‘ইউসুফ, মানিককে অ্যারেস্ট করতে হবে। হি ইজ এ ব্লাডি ক্রিমিনাল। মানিককে দেখতে পেলেই কল মি।’

ইউসুফ বলল, ‘হ্যাঁ ম্যাডাম জানি। কিন্তু বাসুবাবুকে মূর্তিদুটো মানিক দিয়েছিল এটা আমার কাছে খবর আছে। কিন্তু মানিক ঠিক কখন কোথায় দেখা করেছিল বাসুদেববাবুর সঙ্গে জানতাম না।’

লগ্নজিতা বলল, ‘দরকারে আরও সোর্স কাজে লাগাও ইউসুফ। মানিককে আমার লাগবে। আর সরলাদেবীর সব খবর চাই। ট্যাংরার ওই ফ্যামিলিতে বাসুবাবু কেন যেত খোঁজ করো। আমি তিনদিনের জন্য আউট অফ স্টেশন থাকব। প্রতিমুহূর্তের খবর আমার চাই ইউসুফ।’

ইউসুফ বলল, ‘ম্যাডাম, খবর পেয়ে যাবেন। তবে আরেকটা কথা আছে। মৃন্ময়বাবু আর অমিতবাবুকে গতকাল সন্ধেতে মোড়ের মাথায় দেখেছি। দুজনেই বেশ তর্কের মুডে ছিলেন। বিশেষ করে অমিতবাবু তো রীতিমতো চোটপাট করছিলেন। দু-একটা কথা কানে এসেছে, যেমন- ‘আমায় কষ্ট করে রোজগার করতে হয় মৃন্ময়। আমার টাকা বিলিয়ে দিতে আমি আসিনি। ব্রজদা আমার সঙ্গে যেটা করল সেটা অন্যায়। আজকে সে মারা গেছে বলেই তো তার সাতখুন মাফ হয়ে যায় না। আর নিজে ফেঁসেছে বলে আমায় ফাঁসিয়ে দিয়ে যাবে! তাছাড়া রাহুল অযথা সুব্রতর পিছনে পড়ে আছে।

বিষয়টা ঠিক বুঝতে পারিনি ম্যাম। তবে অমিতবাবুর ছোটশালা পুলিশে আছে। ব্রজমোহনের মেয়ের রেপ কেস ওই দেখছিল।’

লগ্নজিতা বলল, ‘দুটো ঠিকানা আমায় দাও তো।’

 দুজনের অ্যাড্রেস নিয়ে, ইউসুফকে আরও কয়েকটা কাজের দায়িত্ব দিয়ে বাড়ি ফিরে এলো। কাল ভোরে শান্তিনিকেতন যেতে হবে। কৌশিকের গোটা দুয়েক মিস কল দেখল ফোনে।

লগ্নজিতাকে বেরোতে হবে এখুনি। অমিতবাবুর জেরাটা সেরে নিতে হবে। কৌশিককে কল করতেই উত্তেজিত গলায় বলল, ‘তুমি কোথায় আছো? তুমি যে ছবিটা দেখালে সেদিন—ওই ব্রজমোহনের স্ত্রীর, আজ আমার চেম্বারে এসেছিলেন। একটা অল্পবয়সী মেয়েকে নিয়ে। এসেই বললেন, মেয়েটিকে চেক করে দেখতে সে প্রেগন্যান্ট কিনা। মেয়েটি ঘাড় নেড়ে বোঝাচ্ছিল সে প্রেগন্যান্ট নয়। কিন্তু সরলাদেবী কিছুতেই মানতে রাজি নয়। ভদ্রমহিলার মানসিক সমস্যার কথা তো সেদিন মাসিমণি বললই। তবে আমার মনে হল মানসিক সমস্যার সঙ্গে সঙ্গে ভদ্রমহিলার গায়েও খুব জোর।’

লগ্নজিতা বলল, ‘কৌশিক, তুমি কি ফ্রি আছো? তাহলে একবার চলে এসো ‘দিনক্ষণ’ ক্যাফেতে। কফি খেতে খেতে শুনছি সব। আর তোমাকেও কয়েকটা কথা বলার আছে আমার।’

কৌশিক বলল, ‘ঘণ্টাখানেকের মধ্যে আসছি। আর দুজন পেশেন্ট আছে, ওনাদের দেখে বেরোচ্ছি।’

লগ্নজিতা ঘড়িটা দেখে নিয়ে পোশাক বদলে বেরিয়ে পড়ল। গন্তব্য অমিতবাবুর বাড়ি।

বাড়িতে ঢুকলে ভালোই বোঝা যায় যে অমিতবাবু বেশ বিত্তশালী মানুষ। শখও আছে। লগ্নজিতাকে দেখেই বললেন, ‘সেদিন মর্নিংওয়াকে আপনাকে দেখেই একটু সন্দেহ হয়েছিল। বাসুদেবের কাছে জানতে পারলাম আপনি পুলিশ ইন্সপেক্টর লগ্নজিতা ভট্টাচার্য। তা বলুন, আমার কাছে কেন? ব্রজমোহনদার খুন সম্পর্কে আমি আপনার থেকে অনেক কম জানি। মন্টুর খুন সম্পর্কে আরোই অজ্ঞ। তবুও আপনাকে সাহায্য করতে পিছপা নই। চা চলবে তো?’

অমিতবাবু চায়ের জন্য উতলা হবার আগেই লগ্নজিতা বলল, ‘আমি জাস্ট চা খেয়েই আসছি স্যার। ব্যস্ত হবেন না। পনেরো মিনিট সময় নেব আপনার। কয়েকটা কথা জানার ছিল।’

অমিত তরফদার বললেন, ‘বলুন।’

লগ্নজিতা বলল, ‘ব্রজমোহনের সঙ্গে আপনার পরিচয়ের সূত্রটা কী?’

অমিতবাবু বললেন, ‘দেখুন, ব্রজদা আমার থেকে বয়সে বছর তিনেকের বড়ই হবে। একই পাড়ায় বাস করলেও কখনও পরিচয় হয়নি। কারণ ব্রজধামের সামনে দিয়ে গেলেও ওনাদের বাড়ির কাউকে সেভাবে বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে গল্প করতে দেখা যায় না। ব্রজদাকে দেখতাম নির্দিষ্ট সময়ে বাড়ির গেটে গাড়ি এসে দাঁড়াতো এবং উনি গাড়িতে উঠে কলেজে যেতেন। বেশ রাশভারী গম্ভীর টাইপ মানুষ। কখনও যেচে আলাপ করার কথা মনে হয়নি। আমি পেশায় ইঞ্জিনিয়ার ছিলাম। সদ্য রিটায়ার করেছি। তাই আমিও যে খুব সময় পেতাম তা নয়। ওই হয়তো পাড়ায় পুজোর সময় একটু আধটু মণ্ডপে বসা। তবে চক্রবর্তী পরিবার পুজোয় বাইরে বেড়াতে যাওয়ায় সেভাবে আলাপের সুযোগ হয়নি। আলাপ হল বছর চার-পাঁচ আগে। মৃন্ময় পরিচয় করিয়ে দিল। মৃন্ময় আমাদের সঙ্গেই মর্নিং ওয়াকে আসতো। আমরা আগে থেকেই পাড়াতুতো বন্ধু ছিলাম। চায়ের দোকানে আড্ডা হতো মাঝে মাঝে। ব্রজদা আমাদের থেকে একটু আলাদা। আসলে ইতিহাসের প্রফেসর, জ্ঞানী মানুষ। বংশ পরিচয়টাও বেশ গর্ব করার মতো। ব্রজধামের নেম প্লেটেই বেশ একটা ঐতিহ্য মিশে আছে। কিন্তু মেশার পরে বুঝলাম, মানুষটা একাকীত্বে ভুগছে। বন্ধু পেলে নিজেকে মেলে ধরতে চায়। আমাদের দলে মিশে গেল ব্রজদা। প্রায়ই আমাদের নিজের বাড়িতে ডেকে সন্ধেতে আসর বসাত। চা, ফিসফ্রাই, শিঙাড়া সাপ্লাই দিত মন্টু। হঠাৎই একদিন সরলাবৌদি এসে মৃন্ময়কে যাচ্ছেতাই অপমান করল। মৃন্ময় নাকি ওর সোনার কানের দুল চুরি করেছে, ও নিজে দেখেছে। ব্রজদার অনেক বকুনির পরে থামল সরলাবৌদি। আমাদের আড্ডার সুর কেটে গেল। ব্রজদা ক্ষমা চাইলেও কেউই আর ভয়ে ও বাড়িতে যেতাম না। সকালে হাঁটতে এসেই গল্প হত। কখনও সন্ধেতে কোনো রেস্টুরেন্টেও আড্ডা বসেছে আমাদের। আর শিবনাথের বাড়িতেও আড্ডা হয়েছে। ব্রজদা দিলখোলা মানুষ ছিল। বংশ নিয়ে একটু গর্ব করত ঠিকই।’

এসব কথা লগ্নজিতা প্রচুর শুনেছে। এগুলো নতুন তথ্য নয়। তাই অমিতবাবুকে থামিয়ে লগ্নজিতা বলল, ‘মৃন্ময়বাবুর সঙ্গে আপনার হঠাৎ ঝগড়া হল কী নিয়ে?’

চোখের দিকে স্থির তাকিয়ে থাকার কারণেই বেশ বুঝতে পারল অমিতবাবু চমকালেন। একটু থমকে বললেন, ‘ঝগড়া নয়। মৃন্ময় ব্রজদার কোনো দোষ দেখতে পায় না। কিন্তু মানুষ তো দোষে গুণে মেশানো। ব্রজদারও দোষ ছিল। মারা যাবার কিছুদিন আগেই শিবনাথ টাকা ধার চেয়েছিল। এ অবশ্য শিবনাথের নতুন কিছু নয়। আমি দিতে রাজি ছিলাম না। ব্রজদা বলল, বন্ধুর বিপদে পাশে দাঁড়াতে। বাধ্য হয়ে আমি ধার দিলাম। ব্রজদা তো প্রচুর ধার দিয়েছে শিবনাথকে। শোধ যে পায়নি সেটা আমায় বলল না। অযথা বলল, শিবনাথ ঠিক শোধ করে দেবে। মৃন্ময়ের মুখে শুনলাম, ব্রজদার কাছে শিবনাথের ধারের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় লাখ পাঁচেক। ব্রজদার কাছে হয়তো এটা তেমন কিছু নয়। কিন্তু আমার কাছে পঞ্চাশ হাজার অনেক টাকা। ব্রজদা ভরসা দিল বলেই ধার দিলাম। মৃন্ময়কে সেটাই বললাম। মৃন্ময় আবার ব্রজদার নামে কোনো বিরূপ কথা শুনতে রাজি নয়।’

লগ্নজিতা বলল, ‘আচ্ছা অমিতবাবু, রাহুলকে আপনার কেমন লাগে?’

অমিতবাবু বললেন, ‘এমনিতে ছেলে ভালো। তবে একটু অবুঝ টাইপের। কোনো কিছু বোঝালে বুঝতে চায় না ছেলেটা।’

লগ্নজিতা বলল, ‘আপনার শালার ওপরে রাহুলের রাগের কারণটা কি তৃষার রেপ কেস ঘটিত?’

অমিত একটু চুপ করে থেকে বলল, ‘দেখুন অফিসার, তৃষা যে রেপড হয়েছিল সেটাই ব্রজদারা প্রমাণ করতে পারেনি। হ্যাঁ কেসটা আমার ছোটশালা দেখছিল। কিন্তু ও এর করবেটা কী? প্রমাণের অভাবে ও কেস বন্ধ করতে বাধ্য হয়।’

লগ্নজিতা বলল, ‘রাহুল মনে হয় কেসটা রি-ওপেন করতে চেয়েছিল তাই না? আপনি রাহুলকে বুঝিয়েছিলেন, ও শোনেনি। তারপর ব্রজমোহনবাবুকেও বোঝাতে চেয়েছিলেন। উনিও বোধহয় বিরক্ত হয়েছিলেন আপনার ওপরে এই নিয়ে। আপনার এতে সমস্যা কোথায় অমিতবাবু? আপনার ছোটশালা তো আর দোষী নয়। তাহলে আপনি কেন কেসটা ওপেন করতে চাইলে বাধা দিতে চাইছেন?’

অমিতবাবু ঠান্ডা গলায় বললেন, ‘সুব্রতর চাকরি খেতে চায় রাহুল। ওর দিদির কেসটা নাকি সুব্রতই ধামাচাপা দিয়েছে। এটা মিথ্যে কথা। সুব্রত এমন ছেলে নয়। আমার শালা। আমি তাকে চিনি।’

লগ্নজিতা হেসে বলল, ‘আপনার স্ত্রীকে বলুন ঘরে আসতে। বাইরে থেকে আমাদের কথা শোনার দরকার নেই।’

দরজার সামনে থেকে একটা মুখ সরে গেল দ্রুত। অমিতবাবু বললেন, ‘দেখুন আমার ছোটশালাকে আমার স্ত্রী নিজের সন্তানের মতো মানুষ করেছে। সদ্য তার বিয়ে দিয়েছে। এখন রাহুল আর ব্রজদা উঠে পড়ে লেগেছিল সুব্রতকে ঘুষখোর প্রমাণ করে চাকরিটা খেতে। এটা তো অন্যায় বলুন। আজকে সে মারা গেছে বলেই সব দোষ তো আর গুণ হয়ে যাবে না। ব্রজদা ফালতু গোঁয়ার্তুমি করছিল এ ব্যাপারে। তাছাড়া তৃষাকে তো আর ফেরত পাওয়া যাবে না তাই না? এসব অশান্তি নিজেদের মধ্যে বাড়িয়ে লাভ কী?’

লগ্নজিতা বলল, ‘শালার চাকরি, সংসার বাঁচানোর জন্য কোনোদিন মনে হয়নি রাহুল বা ব্রজমোহনবাবুকে শেষ করে দিই?’

অমিত ভ্রু কুঁচকে বললেন, ‘এসব কী বলছেন? বিরক্তি প্রকাশ করা আর খুন করা কী এক? তাছাড়া ব্রজদার সঙ্গে আমার সম্পর্ক যথেষ্ট ভালো ছিল।’

লগ্নজিতা বলল, ‘স্ত্রী প্রেশার দেননি আপনার? যতই হোক ভাইকে নিয়ে টানাটানি করছে রাহুল বা ব্রজমোহন,—রাগ হওয়া তো স্বাভাবিক।’

অমিতবাবু আচমকা উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘শুনুন অফিসার, আপনি আগে প্রমাণ নিয়ে আসুন তারপর এ ব্যাপারে কথা বলবো। তাছাড়া তৃষার দুর্ঘটনার পর থেকেই ব্রজদা আপসেট ছিল। ডিপ্রেশনে ভুগত। সুইসাইড করা অস্বাভাবিক নয়। সরলাবৌদির অত্যাচারের কথাও ব্রজধামের পিলারে কান পাতলেই শুনতে পাবেন। এর মধ্যে আমরা জড়িত নয়।’

লগ্নজিতা বলল, ‘ওইদিন ভোরে আপনি কোথায় ছিলেন? কোনো অ্যালিবাই আছে?’

অমিত বলল, ‘নিশ্চয়ই আছে। আমি ওইদিন যেমন পৌনে পাঁচটায় বেরোই অমনই বেরিয়েছিলাম। এই তো দীপা সাক্ষী। ওই তো আমি বেরিয়ে যাবার পরে দরজা বন্ধ করে দিল।’

লগ্নজিতা হেসে বলল,’ হাসালেন অমিতবাবু। আপনার স্ট্রং অ্যালিবাই আপনার স্ত্রী? এনিওয়ে প্রমাণ পাওয়ার জন্য খুব শিগগির আবার আসবো।’

লগ্নজিতা বাইরে বেরিয়েই দেখল অমিতবাবুর স্ত্রী রাগী চোখে তাকিয়ে আছে। মুখটা থমথম করছে।

সকল অধ্যায়

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন