অর্পিতা সরকার
পা টিপে টিপে বাথরুমে গেলো রাই। প্রেগন্যান্সি কিটটা বের করে ইউরিন দিল এক ফোঁটা। বুকের ভিতরটা টিপটিপ করছে। যথারীতি রিপোর্ট নেগেটিভ এল। না, তার মানে এবারেও প্রেগন্যান্ট হল না ও। ঘরে তাকিয়ে দেখলো নির্ঝর ঘুমাচ্ছে। ঘড়ির কাঁটা জানান দিচ্ছে সবে ভোর চারটে। যদিও চারটেকে মফসসলে ভোর বললেও তিলোত্তমা মধ্যরাত্রিই বলে। কারণ তিলোত্তমায় আলো ঝলমলে জীবন ক্লান্ত হয় গভীর রাতে। তাই এ শহরের ঘুম ভাঙে একটু দেরিতে। কিন্তু রাইয়ের ঘুম নেই চোখে। বেশ কয়েকটা রাত নির্ঘুম কাটছে ওর। নির্ঝর ওর চোখের আড়ালে লুকিয়ে রেখেছে প্রেগন্যান্সি টেস্টের কিটগুলো। রাইয়ের শাশুড়িমা কড়া নির্দেশ দিয়েছে ছেলেকে, খেয়াল রাখিস রাই যেন সন্তান সন্তান করে ক্ষেপে না ওঠে। রাইয়ের শাশুড়িমা অন্য ধাতুতে গড়া মানুষ। ভীষণরকমের আধুনিকমনস্ক ভদ্রমহিলা। রাইয়ের বার তিনেক মিসক্যারেজ হয়ে যাবার পরে ভদ্রমহিলা পরিষ্কার বলেছে, রাইয়ের জীবন আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। অদেখা ভ্রূণের থেকেও বেশি মূল্যবান। আর আমি ওসব মেকি বংশরক্ষা বা বংশধরে বিশ্বাসী নই। যারা বেঁচে আছে, যাদের ঘিরে আমি আছি তাদের ভালো থাকাটা আমার কাছে সব থেকে বেশি জরুরি। ছেলেও মায়ের মতোই উদারমনস্ক হয়েছে। নির্ঝরও বলেছে, প্লিজ রাই এসব ছেলেমানুষি করো না। বারবার মিসক্যারেজ হয়ে যাচ্ছে তোমার। তুমি জানো ডক্টর অরুণ গুহ বলেছেন, তোমার শরীরের কতটা ক্ষয় হচ্ছে? এভাবে তোমার শরীরটা খারাপ হয়ে যাবে। প্লিজ আগের মতো হাসিখুশি হয়ে যাও তুমি। রাই ভাগ্য করে এমন স্বামী আর শাশুড়িমা পেয়েছে। বধূহত্যা, সন্তান না হওয়ায় বাড়ির বউকে অত্যাচার, কন্যা সন্তান হবার অপরাধে বউকে মেরে ফেলা..এসব খবরের মাঝে ওর ছোট্ট সংসারটা যেন মরুদ্যান।
নির্ঝর আর ওর শাশুড়িমা সুচেতা দুজনেই বন্ধুর মতো। তবুও সুখ সেই অধরাই রয়ে গেল ছোটবেলায় মাতৃহারা রাইয়ের কাছে। মা ডাকটাই যে ওর কপালে নেই। মাত্র পাঁচ বছর বয়েসে মাকে হারিয়েছিল রাই। তখন থেকেই দেখত, স্কুলের যে কোনো ফেস্টে সকলের মা উপস্থিত আছে। সবাই মা, মা বলে ডাকছে একজন আদর করা এবং শাসন করা মহিলাকে। রাইয়ের বাবা উপস্থিত থাকত ওর স্কুলের অনুষ্ঠানে। ওর জীবনে মায়ের অনুপস্থিতি পূর্ণ করার জন্য বাবার চেষ্টার কমতি ছিল না। কিন্তু তবুও কাউকে একজনকে বড্ড মা বলে ডাকতে ইচ্ছে করত। ওই ইচ্ছেটাকে বুকের গোপন লকারে জোর করে চাবি দিয়ে রেখেই স্বাভাবিকভাবে বড় হয়ে উঠেছিল রাই। যখন খুব কান্না পেত তখন বুকের মধ্যে লুকিয়ে রাখা ওই অবাধ্য ঘরের দুয়ার যেত খুলে। আর বড্ড নিঃসঙ্গবোধ করত রাই।
যেমন এই পাখি ডাকা, সূর্য না ওঠা ভোরে ও ভীষণ একা বোধ করছে। অলস, মনখারাপি একাকীত্ব ওকে গ্রাস করছে ধীরে ধীরে। পাঁচ বছর পেরিয়ে গেছে ওর বিয়ে হয়েছে। রাইয়ের বয়েস বত্রিশ। ও আর নির্ঝর দুজনেই একই কোম্পানিতে চাকরি করে। কর্মসূত্রেই ওদের আলাপ। প্রেমটা জমে ওঠার আগেই বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল নির্ঝরের মা রাইদের বাড়িতে। তাই বিয়ের পরে দুটো বছর ওরা চুটিয়ে প্রেম করেছে। হানিমুন মেটার পরেও উইকেন্ডে কোথাও না কোথাও বেড়াতে যাওয়া ওদের লেগেই ছিল। ওই দু-বছর ওরা বাচ্চা নিয়ে কোনো কথাই ভাবেনি। তারপরেও এক বছর কেটে গেছে ছোট ফ্ল্যাট থেকে বড় ফ্ল্যাটে শিফ করা নিয়ে। শাশুড়িমাও রিটায়ার করেছেন ব্যাংক থেকে। এই শেষ দু-বছরেই রাই প্রতিমুহূর্তে চেয়ে এসেছে সে যেন মা হয়। সুচেতা শুনেই উচ্ছসিত হয়ে বলেছিল, বুঝেছি তোরা আমায় অবসরেও খাটিয়ে মারবি। তাই এমন পরিকল্পনা এঁটেছিস। বেশ তবে বাড়িতে একটা বিচ্চুকে নিয়েই আয়।
রাইয়ের প্রেগনেন্সির খবরে নির্ঝর আর ওর মা খুব আনন্দ পেয়েছিল। রাইয়ের বাবা এ বাড়ির সকলকে মিষ্টি খাইয়ে গিয়েছিল। কিন্তু মাত্র চারমাসের মাথায় মিসক্যারেজ। ভেঙে পড়েছিল রাই। সুচেতাই তখন মায়ের মতো আগলে রেখেছিল রাইকে। ওনার দেখা কত কত উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়েছিল, অনেকেরই প্রথমবার এমন হয়। তারা সকলে এখন মা হয়েছে সুস্থ ভাবে। চিন্তা করিস না, আমি ঠাকুমা হব খুব তাড়াতাড়ি। রাই শুয়ে শুয়ে ভেবেছিল, মামিমা নয়, কাকিমা নয়, কেউ একজন আসবে সে ওকে শুধু মা বলে ডাকবে। রাইয়ের ছোটবেলা কেটেছে মাতৃবিহীন। কিন্তু ওর সন্তানকে ও ঘিরে রাখবে সবসময়। তার মা ডাকে নিজের শৈশবের না পাওয়া মিটিয়ে নেবে প্রাণভরে। আস্তে আস্তে চারমাসের শরীরের সামান্য অস্বস্তিটুকুকে ভুলে গিয়েছিল রাই।
অফিস জয়েন করেছিল স্বাভাবিকভাবেই। আবার মাস ছয়েক বাদে এভাবেই এক ভোরে প্রেগনেন্সি কিট ওকে সুখবরের বার্তা দিয়েছিল। সঙ্গে একটা গা-গোলানো আনন্দানুভূতি জানান দিয়েছিল ও মা হতে চলেছে। আগেরবারের ঘটনায় সকলেই সতর্ক হয়েছিল, আর হাঁক ডাক, মিষ্টিমুখ কিছুই করেনি কেউ। বরং নির্ঝর আর সুচেতা রাইয়ের শরীরের দিকে তীক্ষ্ন নজর রেখেছিল। সেবারেও মধ্যরাতে ভিজে ভিজে উপলব্ধিতে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল রাইয়ের। বিছানায় রক্ত দেখে বুঝে গিয়েছিল কি হয়ে গেল! নির্ঝরের বুকে মুখ লুকিয়ে কেঁদেছিল অনেকক্ষণ।
সুচেতা বলেছিল, এরপর অফিস কামাই করে বেডরেস্ট নিতে হবে রাই। আমাদের অফিসের শুভাশীষ বলছিল ওর বউয়েরও নাকি এ ভাবেই মিসক্যারেজ হয়ে যাচ্ছিল, তারপর বেডরেস্টে থেকে তবে সুস্থ বাচ্চার জন্ম দিয়েছে।
তৃতীয়বার রাই সকলের কথা শুনেছিল। সুচেতা রাইকে এক গ্লাস জল নিয়েও খেতে দেয়নি। নির্ঝর পেনড্রাইভে করে যত কমেডি সিনেমার কালেকশন এনেছিল রাইয়ের মন ভালো রাখতে।
বাড়িতে সবসময় রাইয়ের পছন্দের খাবার রান্না করছিল কাকলীমাসি। যত্নের কোনো ত্রুটি করেনি কেউই। রাইও দিনরাত ঈশ্বরকে স্মরণ করেছিল। তারপরেও আবারও ডক্টর শোনালেন সেই ভয়ানক শব্দটা যেটা রাতের পর রাত তাড়া করে বেড়ায় রাইকে, মিসক্যারেজ।
না কেউ দোষ দেয়নি ওকে। বরং সকলে ওকে আরও বেশি করে আঁকড়ে রেখেছে। তবুও রাই যেন দিন দিন ডুবে যাচ্ছে ডিপ্রেশন নামক মনখারাপের জগতে। হাসতে ভুলে গেছে ও। কোভিডের প্যান্ডামিক সিচুয়েশনে নেহাত ওয়ার্ক ফ্রম হোম বলেই হয়তো এখনও টিকে আছে ওর চাকরিটা। নাহলে কি হত কে জানে। বাড়িতে বসে ল্যাপটপে অফিসের কাজটুকু করে কোনোমতে। বাকি সময় বড্ড চুপচাপ। নির্ঝর রাইয়ের পছন্দের গান বাজালেও বিরক্ত হয় রাই। সুচেতা ওর পছন্দের খাবার বানালেও রেগে যায় রাই। মনে হয় যেন সকলে ওকে করুণা করছে। ওর অক্ষমতা ঢাকার জন্য সকলে ব্যর্থ প্রয়াস করছে। সেই হাসিখুশি, সাজতে ভালোবাসা রাইটা যেন এখন সম্পূর্ণ অন্য এক মানুষ। চোখের নীচে কালো ছোপ। দৃষ্টিতে বিহ্বলতা। কেমন যেন বড্ড এলোমেলো।
সুচেতা আর নির্ঝরের একান্ত আলোচনাটাও সেদিন শুনে ফেলেছিল রাই।
সুচেতা বলেছিল, বাবু এখন তো অনেকে আইভিএফ পদ্ধতিতে মা হচ্ছে। তো তোরা তো এটা নিয়ে একটু ভাবতে পারিস। চোখের সামনে রাইয়ের এমন কালো মুখটা আমি সহ্য করতে পারছি না বাবু। আমি তো ওর মা বল। নির্ঝর গম্ভীরভাবে বলল, ডক্টরের সঙ্গে কথা বলেছিলাম মা। কিন্তু রাইয়ের ফ্যালোপিয়ান টিউবে ব্লক আছে। তাই আইভিএফ খুব বেশি কার্যকরী হবে না বলেই মনে হয়। আবার ওর শরীর আর মনের ওপরে প্রেশার দেবার কোনো ইচ্ছে আমার নেই।
সুচেতা বললো, তাহলে কোনো অনাথ আশ্রমে খোঁজ নে। নির্ঝর বলল, মা এখন তো চারিদিকে লকডাউন। তাছাড়া আমার অফিসের একজন বললেন, বাচ্চা এডাপ্ট করার ঝামেলা আছে অনেক। সেই প্রসেস করতেও তো বছর খানেক লাগবে। এদিকে রাই প্রেগনেন্সি কিট নিয়ে দিনরাত ছেলেমানুষি করে যাচ্ছে। কি যে করি!
সুচেতা বলল, ওর হাতের নাগালের বাইরে রেখে দে ওগুলো। ওকে সুস্থ করতে হবে বাবু আমাদের। কী হাল হয়েছে মেয়েটার! নির্ঝর বলল, লকডাউন, কোভিড এসব না থাকলে একটু বেরিয়ে আসা যেত। অন্তত চার দেওয়ালের মধ্যে দিনরাত এই এক ভাবনা ওকে এলোমেলো করে দিত না। তাছাড়া মা ডক্টর বলে দিয়েছেন, আপাতত একবছর ও কনসিভ করতেও পারবে না। ওর শরীর খারাপ হয়ে যাবে। রাই বড্ড অবুঝ হয়ে যাচ্ছে মা। কিছু শুনছে না।
রাই ওদের আলোচনা থেকেই বুঝতে পেরেছিল, ওর যেমন মা ডাকার কেউ ছিল না। তেমনই ওকে মা ডাকবে এমনও কেউ এল না।
অপলক তাকিয়ে আছে রাই প্রেগনেন্সি কিটটার দিকে। নেগেটিভ রিপোর্টটা ওকে আবারও জানান দিচ্ছে ও ব্যর্থ।
এ শহর ঘুমায় নিশ্চিন্তে। লকডাউন বলেই বোধহয় ভোর হয় দেরিতে। সময় যেন কিছুতেই কাটতে চায় না রাইয়ের। অসহ্য রাগে নিজের পেটের ওপরেই দুটো কিল বসিয়ে দিল ও। তবে কী মানসিক রোগী হয়ে যাচ্ছে ও ধীরে ধীরে।
ভোরের দিকে চোখটা লেগে গিয়েছিল রাইয়ের। নির্ঝরের ডাকে ধড়ফড় করে উঠে বসলো ও।
নির্ঝর বলল, চলো রেডি হয়ে নাও রাই আমরা বেরুব। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে জামা ইন করছিল নির্ঝর।
সেদিকে তাকিয়ে রাই বলল, আমি বেরুব না। আমার ভালো লাগছে না। তাছাড়া লকডাউনে যাবই বা কোথায়?
নির্ঝর হাত ধরে টেনে বলল, ওঠো বলছি। বেরুতে হবে। সকাল দশটায় মধ্যে পৌঁছাতে হবে।
রাই আজ একটা শাড়ি পরে চলো। নির্ঝর এভাবে কখনো জোর করে না ওকে।
বহুদিন পরে ও আর নির্ঝর ওদের প্রিয় গাড়িটাতে আবার চাপল। বললে না তো কোথায় যাচ্ছি আমরা? নির্ঝর বলল, আরেকটু ধৈর্য ধরে বসো তো। রাই বলল, কোনো বড় গাইনি? যে আবার মিথ্যে সান্ত্বনা দিয়ে আমাকে বলবে, হ্যাঁ তুমি মা হতে পারবে তেমন কারোর কাছে?
নির্ঝর কথা না বলে ফাঁকা রাস্তায় গাড়ি ছুটিয়ে দিল। একটু পরেই গাড়িটা দাঁড় করিয়ে ফোন করল কাউকে একটা। হ্যাঁ আমরা পৌঁছে গেছি। একটা পোস্টঅফিসের সামনে দাঁড়িয়ে আছি আমরা। কোনদিকে যাব একটু বলবেন?
রাইয়ের কোনো উৎসাহ নেই। ও দম দেওয়া পুতুলের মতো বসে আছে। একটা গলি রাস্তায় গিয়ে গাড়িটা থামাল নির্ঝর। বলল, চলো ওই বাড়িটাতে।
রাই নেমে অনুসরণ করল নির্ঝরকে। বাড়িতে ঢুকতেই একজন মধ্যবয়স্ক মহিলা বললেন, হ্যাঁ আমিই বিজ্ঞাপন দিয়েছিলাম। আমি ওর আয়া ছিলাম। ওর বাবা-মা দুজনেই করোনাক্রান্ত হয়ে মারা যায়। বাচ্চাটা অনাথ হয়ে গেছে। মাত্র এক বছর সাত মাস বয়েস ছেলেটার। ওর কোনো আত্মীয়ও নেই যে ওকে নেবে। বাবা-মায়ের সম্পত্তিটা নিয়ে নিয়েছে ওদের কোনো দূরসম্পর্কের আত্মীয়। কিন্তু ওকে ফেলে রেখে গেছে। তাই কেউ যদি দত্তক নিতে চায় বলে আমিই বিজ্ঞাপন দিয়েছিলাম ফেসবুকে।
আমার পক্ষে ওকে মানুষ করা সম্ভব নয়। তাই…
রাই নির্নিমেষ তাকিয়ে আছে বাচ্চাটার দিকে। একটা খেলনা নিয়ে আনমনে খেলে যাচ্ছে। ও জানে ও না ওর বাবা-মা দুজনেই আর নেই এই পৃথিবীতে।
রাই ফিসফিস করে বলল, নির্ঝর আমার থেকেও অভাগা তার মানে এ পৃথিবীতে আর কেউ আছে!
নির্ঝর বলল, কিন্তু ম্যাডাম দুদিন পরে যদি কেউ ওকে দাবি করতে আসে?
ভদ্রমহিলা বললেন, কে আসবে স্যার। সম্পত্তি গুছিয়ে নেবার পরে আর কে আসবে। তাছাড়া ওর কেউ নেই। রাই নির্ঝর আর ভদ্রমহিলার কথায় কর্ণপাত না করে এগিয়ে গেল বাচ্চাটার দিকে।
বাচ্চাটাকে কোলে নিতেই বাচ্চাটা আধো অস্পষ্ট স্বরে ডাকল মা।
রাই আর নির্ঝর ফিরেছে বাচ্চাটাকে নিয়ে। দরজা খুলতেই সুচেতা বরণডালা সাজিয়ে আনল ওদের বাইরে দাঁড় করিয়ে। তারপর বলল, বাড়ির নতুন অতিথিকে বরণ না করলে চলে!
নির্ঝর বলল, মা ওর নাম কি দেব? রাই বলল, ওর নামের প্রথম অক্ষর ”র” দিয়ে হবে আমার নামের সঙ্গে মিলিয়ে। রায়ান রাখলে কেমন হবে মা? সুচেতা বললো, ও তোর সন্তান রাই তাই তোর যা ইচ্ছে ওর নাম রাখ। দেখ ও তোকে কেমন দেখছে?
রাই বলল, জানো মা ও আমাকে মা বলে ডাকল। তুই তো ওর মা, তোকেই তো ডাকবে পাগলি।
তার মানে মহামারী সবকিছু কেড়ে নেয় না তাই না মা? কাউকে কাউকে ফিরিয়েও দেয়। সুচেতা বলল, ঠিক তাই। যেমন রায়ান তোদের বাবা-মা আর আমাকে ঠাম্মা করে দিল মুহূর্তে।
রাই নিজের মনেই বলল,
এ শহর জানে আমার সবকিছু। তাই তো দুঃখগুলোকে আপন করে একটুকরো সুখ দিল ফিরিয়ে। এ শহরের কাছে আমি ঋণী চিরকাল।
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন