কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.১০২

বিমল মিত্র

তখন অনেক রাত। রঘু রান্না সেরে আবার গিয়ে ওপরে উঠলো। সনাতনবাবু চুপ করে তখনও বসে ছিলেন। রঘু আসতেই সনাতনবাবু চেয়ে দেখলেন। রঘু বললে—এখনও দিদিমণি তো এল না দাদাবাবু—

সনাতনবাবু বললেন—আসবেন ঠিক, তুমি কিছু ভেবো না—

—আপনি কি খেয়ে নেবেন? অনেক রাত হয়েছে—

—দিদিমণি আসুন, তারপর খাবো না-হয়।

—কিন্তু তাঁর যদি আসতে দেরি হয়?

সনাতনবাবু বললেন—দেরি হবে কেন? তিনি তো জানেন আমি এখানে আছি—

–তা হলে আমি একটু খুঁজে দেখবো?

হঠাৎ নিচেয় সদর দরজায় কে কড়া নাড়লে। রঘু বললে—ওই দিদিমণি এসেছে, যাই—

বলে তরতর করে সিঁড়ি দিয়ে নিচেয় নেমে সদর দরজাটার খিল খুলে দিলে। বললে—কী আক্কেল আপনার দিদিমণি, এত দেরি করতে হয়! আমরা ভাবছি কত। কোথায় গিয়েছিলেন?

—এ-বাড়িতে তোমাদের কোনও মেয়েমানুষ ছিল? সবাই বলছিল—এই বাড়িতে থাকতেন তিনি…….

এক দল লোক। সবাই হাঁপাচ্ছিল। দরজা খুলে দিতেই এত লোক দেখে রঘু একটু ঘাবড়ে গিয়েছিল। বললে—কী চান আপনারা? কাকে চান?

—তোমাদের বাড়ির কোনও মহিলা রেলে কাটা পড়েছে? জানো তুমি?

—রেলে কাটা পড়েছে? কে?

—তা জানি না। সবাই বলছে তিনি এই বাড়িতে থাকতেন, শীগগির চলো, দেখবে চলো…

রঘুর মাথায় তখন বজ্রাঘাত হয়েছে। দরজা খোলা পড়ে রইল। রঘু সেই অবস্থাতেই ছুটলো লেভেল ক্রসিং-এর দিতে। টিপ্‌টিপ্ করে বৃষ্টি পড়ছে তখনও। অনেক লোকের ভিড় জমেছে লাইনটার কাছে। ট্রেনটা খানিক দূর গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছে। ইঞ্জিনটা যেন রাগে লজ্জায় অপমানে আঘাতে আপন মনেই ফুঁসছে তখন দাঁড়িয়ে- দাঁড়িয়ে।

.

রাত যখন আরো অনেক গভীর হলো, তখন হঠাৎ ন’দিদির টেলিফোন বেজে উঠলো। ন’দিদি বললে—কে?

—আমি নয়ন। সর্বনাশ হয়েছে ন’দিদি, আমার বউমা রেলের তলায় কাটা পড়েছে—

—বলিস কী তুই?

নয়নরঞ্জিনী বললে—হ্যাঁ ন’দিদি, এই তো এখন পুলিস এসে আমায় খবর দিয়ে গেল। এখন কী করি? হাত-পা আমার থরথর করে কাঁপছে, তাই তোমায় টেলিফোন করলুম—। আমার ছেলেও সেখানে রয়েছে—

ন’দিদি কী বলবে যেন হঠাৎ বুঝতে পারলে না। বললে—তোর ছেলেকে সেখানে পাঠালি কেন আবার?

—আমি কি পাঠিয়েছি ন’দিদি! কখন গেছে খোকা টেরই পাইনি। বিকেল বেলা একটা লোক এসে খবর দিয়ে গেল খোকা নাকি সেখানে রাতে থাকবে। ভাবলুম সকালবেলাই তোমার কাছে পরামর্শ চেয়ে নেব, তা এখন এই কান্ড! এখন কী করি বলো দিকিনি! যদি একটা পুলিসের হ্যাঙ্গামের মধ্যে পড়ে যাই! তাই তোমাকে জিজ্ঞেস করছি আমার কি যাওয়া উচিত?

—তা তোর বউয়ের তো অনেক টাকা আছে শুনেছিলুম। বাপের অনেক টাকা তো পেয়েছিল?

—তা তো পেয়েছিল। দেড় লাখ টাকার মতন —

ন’দিদি বললে—তা হলে এক্ষুনি যা, এক্ষুনি যা, দেরি করিস নে। টাকা-কড়ির ব্যাপার, মরে যাবার পর টাকা হাত-ছাড়া হয় হামেশা—এমন ভুল করিস নে, কোথা থেকে কে এসে জুটবে শেষকালে, তখন হাত-পা কামড়াবি, যা—

নয়নরঞ্জিনী দাসী টেলিফোন রেখে দিলেন। তারপর সেই রাত্রেই শম্ভুকে ডেকে ট্যাক্সি ডাকতে বললেন।

.

কিন্তু ঠিক সেই সময়েই খবর পৌঁছুলো উনিশের একের-বি ঈশ্বর গাঙ্গুলী লেনের ভাড়াটে বাড়িতে। লক্ষ্মণ সরকার অনেক রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিল। লক্ষণ বলেছিল— তুমি বরং খেয়ে নাও, দীপঙ্কর আর আসবে না হয়ত আজকে—

ক্ষীরোদা সমস্ত দিন ধরে রান্না করেছে। কত দিনের সাধ তার। লক্ষণ সরকার বললে—আমি না-হয় খবর নিয়ে আসছি, একটু দাঁড়াও—

তারপর আপিসে টেলিফোন করে খবর পেলে জেনারেল ম্যানেজারের স্পেশ্যাল ক্যাসেলড্ হয়ে গেছে। এবার হয়ত দীপু সোজা এখানেই আসবে। বাড়িতে এসে বললে—তোমার সব তৈরী তো? দীপু এই এসে পড়লো বলে—

কিন্তু তারপর রাত সাতটা বাজলো, আটটা বাজলো, ন’টা বাজলো। শেষকালে ঢং- ঢং করে দশটাও বাজলো। আর খাওয়া হলো না। লক্ষণ একলাই খেয়ে নিলে। বললে—তুমি খাবে না? কতক্ষণ আর তার জন্যে বসে থাকবে?

ক্ষীরোদা কিছু বললে না। সারা রাত জেগেই হয়ত কাটতো। কিন্তু অনেক রাত্রে কে যেন দরজার কড়া নাড়তে লাগলো। গায়ে একটা ঠেলা লাগতেই লক্ষণ ধড়ফড় করে উঠলো। বললে—কে? কে ডাকছে?

ক্ষীরোদা বললে—নিচেয় কে যেন কড়া নাড়ছে—দেখো না—

লক্ষ্মণ তাড়াতাড়ি নিচে যেতেই সব শুনে অবাক। বললে—সেন-সাহেব? গড়িয়াহাট লেভেল ক্রসিং-এ? কী হয়েছিল?

কিন্তু খবরটা ক্ষীরোদার কানে যেতেই কেমন যেন টলে উঠলো মাথাটা। সেইখানেই পড়ে গেল মেঝের ওপর। সেদিন যে কী বিপদের মধ্যেই পড়েছিল লক্ষ্মণ! এদিকে ক্ষীরোদার মাথায় জল দিয়ে জ্ঞান ফেরানো, ওদিকে দীপঙ্করের অ্যাকসিডেন্ট। দীপঙ্কর যে কেন ওদিকে হাঁটতে হাঁটতে গিয়েছিল, কিছুতেই বুঝতে পারেনি সেদিন লক্ষ্মণ সরকার। শেষ পর্যন্ত ক্ষীরোদার যখন জ্ঞান ফিরলো, তখন লক্ষণ সরকার একলাই যেতে চেয়েছিল, কিন্তু ক্ষীরোদা ছাড়েনি। বলেছিল—ওগো আমিও যাবো, আমাকেও নিয়ে চলো—

.

মিস্টার ক্রফোর্ড নিজে এসেছিল খবর পেয়ে। জিজ্ঞেস করেছিল—এখানে তুমি কী করতে এসেছিলে সেন? হোয়াট ব্রট্‌ ইউ হিয়ার?

দীপঙ্কর তখনও কিছু উত্তর দেয়নি। উত্তর দেবার কী-ই বা ছিল! কেউ তো বুঝবে না কেন সে এসেছিল এখানে। সেই অল্প অন্ধকার জায়গাটা তখন লোকে লোকারণ্য। পুলিস এসেছে। মানুষের ভিড়ে জায়গাটা জমজমাট হয়ে উঠেছে। নয়নরঞ্জিনী দাসী এসেছেন। শম্ভু এসেছে। সনাতনবাবু এসেছেন, রঘু এসেছে। লক্ষ্মণ সরকার এসেছে। ছিটে-ফোঁটাও খবর পেয়ে এসেছে। ন’দিদিও এসে দেখে গেল। দীপঙ্করের তখন স্পষ্ট জ্ঞান ছিল। পায়ে খুব আঘাত লেগেছিল। রেলের লাইনের ওপর সতীর দেহটা তখন আড়াআড়ি পড়ে আছে। চাকাগুলো বোধ হয় একেবারে বুকের ওপর দিয়ে চলে গিয়েছিল। সমস্ত জায়গাটা রক্তে লাল হয়ে ভিজে গেছে। মুখখানা ছিঁড়ে-খুঁড়ে একাকার হয়ে গেছে। মাথার কোঁকড়ানো চুলের খোঁপাটা এলিয়ে পড়েছে ব্যালাস্টের ওপর। দু’ পাশে দুটো হাত পাতা। সব চাওয়া সব পাওয়া সব কামনা-বাসনা-আকাঙ্ক্ষার যেন সমাধি হয়ে গেছে এক মুহূর্তে। সেই দিকে চেয়ে দেয়ে দীপঙ্করের চোখে জল পড়েনি সেদিন। শুধু মনে হয়েছিল—এই মৃত্যুর মধ্যেই যেন তার জীবনের চরম জিজ্ঞাসার শেষ উত্তরটি পেয়ে গেছে সে। যে বোধ সকলের চেয়ে বড় সেই বিশ্ববোধ, যে লাভ সকলের চেয়ে শ্রেষ্ঠ সেই ব্রহ্মলাভই যেন তার হয়ে গেল একটি মৃত্যুর মধ্য দিয়ে। একটি মৃত্যুর মধ্যে দিয়েই যেন জীবনের পরম অর্থ সে খুঁজে পেলে। যে প্রশ্ন সে অমলবাবুকে করেছিল, যে প্রশ্ন সে প্রাণমথবাবুকে করেছিল, যে প্রশ্ন সে প্রতি দিন প্রতি মুহূর্তে বিশ্ববিধাতার কাছে নিবেদন করতো, সেই চরম প্রশ্নের পরম উত্তর যেন তাকে সতীই জানিয়ে গেল। সতীই যেন তাকে বুঝিয়ে দিয়ে গেল কড়ি দিয়ে জীবন কেনা যায় না। কড়ি দিয়ে মৃত্যুই কেনা যায় শুধু…..

তারপরেই তারা দীপঙ্করকে লেক হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। পুলিস রিপোর্ট দিলে—এ কেস্ অব্ সুইসাইড।

সকল অধ্যায়

১. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.১
২. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.২
৩. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৩
৪. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৪
৫. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৫
৬. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৬
৭. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৭
৮. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৮
৯. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৯
১০. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.১০
১১. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.১১
১২. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.১২
১৩. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.১৩
১৪. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.১৪
১৫. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.১৫
১৬. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.১৬
১৭. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.১৭
১৮. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.১৮
১৯. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.১৯
২০. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.২০
২১. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.২১
২২. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.২২
২৩. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.২৩
২৪. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.২৪
২৫. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.২৫
২৬. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.২৬
২৭. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.২৭
২৮. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.২৮
২৯. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.২৯
৩০. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৩০
৩১. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৩১
৩২. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৩২
৩৩. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৩৩
৩৪. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৩৪
৩৫. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৩৫
৩৬. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৩৬
৩৭. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৩৭
৩৮. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৩৮
৩৯. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৩৯
৪০. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৪০
৪১. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৪১
৪২. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৪২
৪৩. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৪৩
৪৪. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৪৪
৪৫. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৪৫
৪৬. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৪৬
৪৭. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৪৭
৪৮. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৪৮
৪৯. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৪৯
৫০. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৫০
৫১. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৫১
৫২. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৫২
৫৩. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৫৩
৫৪. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৫৪
৫৫. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৫৫
৫৬. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৫৬
৫৭. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৫৭
৫৮. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৫৮
৫৯. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৫৯
৬০. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৬০
৬১. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৬১
৬২. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৬২
৬৩. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৬৩
৬৪. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৬৪
৬৫. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৬৫
৬৬. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৬৬
৬৭. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৬৭
৬৮. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৬৮
৬৯. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৬৯
৭০. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৭০
৭১. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৭১
৭২. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৭২
৭৩. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৭৩
৭৪. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৭৪
৭৫. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৭৫
৭৬. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৭৬
৭৭. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৭৭
৭৮. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৭৮
৭৯. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৭৯
৮০. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৮০
৮১. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৮১
৮২. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৮২
৮৩. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৮৩
৮৪. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৮৪
৮৫. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৮৫
৮৬. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৮৬
৮৭. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৮৭
৮৮. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৮৮
৮৯. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৮৯
৯০. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৯০
৯১. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৯১
৯২. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৯২
৯৩. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৯৩
৯৪. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৯৪
৯৫. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৯৫ উপসংহার
৯৬. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৯৬
৯৭. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৯৭
৯৮. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৯৮
৯৯. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৯৯
১০০. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.১০০
১০১. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.১০১
১০২. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.১০২
১০৩. কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.১০৩
১০৪. নির্ঘণ্ট : কড়ি দিয়ে কিনলাম – ডঃ শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন